এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • মৎস্য শিকার ও শিকারী বৃত্তান্ত

    সুকান্ত ঘোষ লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৮ নভেম্বর ২০১৪ | ২১৫৮ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • মাছ ধরার সাথে আমার সম্পর্ক মোটামুটি ডিকুরির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। ডিকুরি হল আমার বাড়ির পাশের পুকুর যার অন্য পাড়ে আমাদের যৌথ পরিবারের পুরানো বাড়ি। সেই অর্থে ডিকুরির একদিকে আমার বাল্যকাল আর অন্যদিকে কৈশোর সহ যৌবন। আমাদের নিমো গ্রামের অন্য পুকুর গুলি ছিল - পচাগেরে, বিশ্বেসদের ডোবা, হাজরাদের ডোবা, বামুনগেড়ে, বড় বামনা, ছোট বামনা, লালতেগড়ে, জুঙগিইতে, চেয়ো, ঠাকুরঝি এই সব। গাঁয়ের সীমানায় আছে পূবে গরাঙ্গে, পশ্চিমে বনধারা, উত্তরে ত্রিশূল ও দক্ষিণে পদ্‌দেরে। বলাই বাহুল্য এই সব পুকুরের নামকরণের ইতিহাস আমরা কেউই জানতাম না – আমার ঠাকুমা চোদ্দ বছরে শ্বশুর বাড়ি আসার আগেই থেকেই সব পুকুর জলে ভরে থাকত নিমোতে।

    ডিকুরিতে আমার ধরা মাছেদের মধ্যে ছিল মূলত পুঁটি (আটার টোপ দিয়ে), আর কেঁচোর টোপ দিয়ে কই, ট্যাঙরা এবং ভাগ্য খারাপ থাকলে ল্যাঠা মাছ। হাতিয়ার বলতে ছিল বাঁশের কঞ্চির ছিপ, চিক, ফতা, সীসে ও বঁড়শি – আমার ছোটবেলায় হুইল, সুতো, ওয়েট, হুক এরা ছিল সম্ভ্রম জাগানো বস্তু। মাছ ধরা নিয়ে আমি দীর্ঘদিন মাথা ঘামাই নি – গত বছর পূজাতে বাড়ি গেলে আমার ভগ্নিপতি বলল তোমাদের ব্রুনাইতে তো মাছ ধরার দারুণ জিনিস পত্র পাওয়া যায়! আমি তো অবাক, প্রথমত সহজে ব্রুনাই এর নাম মনে রেখেছে বলে আর প্রধানত ও কি করে জানল যে এখানে পাবলিক দুরদার মাছ ধরে! ব্রুনাই এর লোকেরা সত্যিই মাছ ধরা নিয়ে মাথা ঘামায় – এর এক জলন্ত উদাহরন হচ্ছে আমার কলিগ ফ্রেড তবে তার গল্প অন্যদিনে। তো এই বার দেশে পূজাতে যাবার সময় এই ফ্রেডের সাহায্য নিয়েই একটা ছিপের সেট কিনে বাড়ি ফিরলাম। এর মাঝে ছিল কোলকাতা এয়ারপোর্টে কাষ্টমস্‌ অফিসারের ছিপ সংক্রান্ত অবিশ্বাস।

    ফ্রেডের পুরো না ফ্রেডেরিক ওং – চাইনীজ মাল। খুব মাই ডিয়ার লোক, বেশ জ্ঞানও আছে, কিন্তু ব্রুনাই এর আরো অনেক লোকের মতই টেকনিক্যাল কাজে কোন দিলচস্তি নেই যদি না সেই টেকনিক্যাল কাজ মাছ ধরা রিলেটেড হয়। ফ্রেডের মাছ ধরার ছিপের সংখ্যা প্রায় ১০০ কাছাকাছি, তার দুই খানা গাড়ি (জিপ টাইপের) যা রাতের বেলা মাছ ধরার উপযুক্ত করে কাষ্টমাইজড করা, আর আছে একটা মাছ ধরার বোট! সেই গাড়ি নিয়ে ফ্রেড অফিসে এলে পিলে চমকে যাবার মত অবস্থা প্রথম বার দেখলে। যে কি গাড়ি নাকি মিডিল ইষ্টে যুদ্ধের জন্য বানানো আমেরিকানদের স্পেশাল জিপ কে জানে! কি তার আওয়াজ, গাড়ির মাথায় বিশাল বিশাল ল্যাম্প ফিট করা, কি তার টায়ারের আকৃতি! তবে এখানে তেমন কেউ আশ্চর্য হয় না, কারণ ফ্রেডের মত আরো অনেকেই এই ধরণের গাড়ি নিয়ে আসে। ফ্রেড প্রায় দিনই অফিসে পৌঁছতে পারে না – বাড়ি থেকে তার অফিস প্রায় ১০০ কি মি। বাড়ি থেকে ঠিক সময়ে বেরোয়, কিন্তু পথে মাঝে মাঝে মাছ ধরতে নেমে পড়ে। আবার আগের রাতে সমুদ্রে মাছ ধরার অনুকূল অবস্থা হলে, সেই সারা রাত ফ্রেড মাছ ধরবে এবং আমাকে সকালে ফোন করে জানাবে তার ভাইরাল ফিভার, অফিসে আসতে পারবে না! ফলতঃ কোম্পানির এইচ আর প্রায়ই চেতাগ্নি দেয় ফ্রেডকে চাকুরী নিয়ে – খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম সেই থ্রেট নিয়েই ৫০ বছর চাকুরী পার করে দিয়েছে এবং খুবই কনফিডেন্ট যে বাকি বছর গুলিও থ্রেট রিসিভ করেই কেটে যাবে।

    শালা জামাইবাবুর সম্পর্কের কথা মাথায় রেখে ভাবলাম যে একবার যখন আমাকে ভগ্নিপতি বলল ব্রুনাই থেকে ছিপ নিয়ে আসতে, তা হলে ব্যাপারটা একটু অন্তত খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। আমি তাই ফ্রেডকে বলেছিলাম যে আমাকে একটা মাছের সরঞ্জামের দোকানে নিয়ে গিয়ে ও কিছু অ্যাডভাইস দিয়ে ছিপ কিনতে সাহায্য করতে পারবে কিনা। তা ফ্রেডের এই হেল্পে যা ইন্টারেষ্ট দেখা গেল, আমাকে অফিসের কাজে হেল্প করতে তার শতকরা ২০ ভাগও সে দেখায় না! মাঝে নানা কাজে ব্যস্ত থেকে আমি ব্যাপারটা ভুলে গিয়েছিলাম – এদিকে দূর্গাপূজায় বাড়ি যাবার সময় এগিয়ে আসছে। আমি ভুলে যাই – আমাকে ফ্রেড মনে করায়। তো যাই হোক এক দিন অফিস শেষে আমরা দুজন গেলাম ছিপ কিনতে। আমি ভাবলাম ছিপ কিনতে আর কি বা সময় লাগবে – বড়জোর ১৫-২০ মিনিট! দোকানে ঢুকলাম, আমার দূর্ভাগ্য বশতঃ বা সৌভাগ্যবশতঃ যাই হোক না কেন দোকানের মালিক ও চাইনীজ ভদ্রমহিলা। ব্যাস আর পায় কে – ফ্রেড মাছ ছাড়াও মেয়েদের প্রতিও একটু বেশী ফ্রেন্ডলি! মাছ – মেয়ে – মাছ – চাইনীজ ভাষায় কথা বলার সুযোগ, এই সব নিয়ে সিচ্যুয়েশন পুরো খিচুড়ি হয়ে গেল। আমি মিডিয়াম রেঞ্জের ছিপ কিনব বললাম – ফ্রেড একের পর এক ছিপ তুলে নেয় –

    কি রঙের ছিপ চাই?
    যে কোন রঙের হলেই হল।
    ভারী ছিপ নাকি হালকা ছিপ?
    ভারী আর হালকার রেফেরেন্সটাই তো নেই আমার কাছে (স্বগোক্তি)!
    ছিপের দৈর্ঘ্য কেমন চাই?
    মোটামুটি
    ডাঙা থেকে কতদূরে ফেলা হবে
    আমি হাত দিয়ে সামনের জাপানী সুসি রেষ্টুরাণ্ট টা পর্যন্ত দেখালাম
    হুইল কেমন হবে?
    খুব দামী না হলেই ভালো

    এই সবের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে ফ্রেডের পরামর্শ – এক একটা ছিপ ফ্রেড তুলে নেয়, আর চোখের সামনে সোজা করে কি যেন দেখে, গোড়া ধরে নাড়িয়ে দেখে, দিয়ে বলে ছিপের নাকি ব্যালেন্স নেই! আমি ফ্রেডের পর্যবেক্ষণে সম্মতি জানালাম, বললাম যে পিছল পুকুর পাড়ে নিজেরই ব্যালেন্স ঠিক রাখা কষ্টের, তায় আবার ব্যালেন্স হীন ছিপ কিনে লাইফ জটিল করার কোন অর্থ হয় না! তা ঠিক আছে – ব্যালন্স যুক্ত ছিপ পাবার পর ফ্রেড তার ডগা ধরে বাঁকাতে লাগল! ব্যালেন্স ঠিক থাকে তো ডগা বাঁকে না ফ্রেডের মন মত। সময় পেরিয়ে যায় – প্রায় দুই ঘন্টা নাড়াচাড়া করার পরে একটা ছিপ পছন্দ হল যার পিছন মোটামুটি হ্যান্ডেল করা যাবে, ব্যালেন্স ঠিক আছে, আর আগার দিকটা অনেকটা বাঁকে। এর পর সুতো কেনার পালা – কি রঙের থ্রেড চাই সেই নিয়ে ফ্রেড আমাকে হালকা লেকচার দিল। আমাকে জানালো যে চকচকে থ্রেড নাকি আমার দেশের লোকে বেশী পছন্দ করবে। পরের প্রশ্ন কত পাউণ্ডের থ্রেড – আমি জানি না – তবে জানালাম যে আমরা মোটামুটি ৫-৬ কেজি সাইজের মাছই সবচেয়ে বড় ধরব হয়ত। ফ্রেড ২০ পাউণ্ডের সুতো কিনে দিল কচি কলাপাতা রঙের। ভাবলাম শেষ হয়ে এল – কিন্তু তা, ফ্রেড তারপর আমাকে দোকানের ভিতরেই প্র্যক্টিক্যাল করে দেখাবে যে ওই সুতো কিভাবে বঁড়শিতে লাগানো হবে! এই সব করে আমরা প্রায় তিন ঘন্টা পরে দোকান থেকে বার হলাম! সেই ছিপ কি ভাবে ফ্লাইটে করে অক্ষত অবস্থায় গ্রামে নিয়ে যাবো সেও এক এপিসোড হল। শেষ পর্যন্ত আমি ২.৫ ইঞ্চির একটা পিভিসি প্লাষ্টীক পাইপ কিনে তার ভিতরে ছিপ ঢুকিয়ে বাড়ি নিয়ে এলাম। বলাই বাহুল্য আমাকে এয়ারপোর্টে তার জন্য বেশ ব্যাখ্যা করতে হয়েছিল।

    তা ছিপ তো এল গ্রামে – এবার ঘটনা হল মাছ কোথা থেকে ধরা যাবে! আগের মত এখন যার তার পুকুরে বলে কয়ে মাছ ধরতে বসে পড়লে চলবে না। কারণ স্বরূপ আছে জটিল মনস্বাত্ত্বিক এবং ততসহ অর্থনৈতিক কারণ। আমাদের দিকে মাছ ধরা এখন এক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে, আগে যারা মেছুরে ছিল তারা এখন হয়েছে মৎসশিকারী! চেনা কারো পুকুরে আমি শুধু মাছ ধরছি সেটা বড় ব্যাপার নয়, কিন্তু সেই পুকুরে মাছ ধরার ট্রেণ্ড সেট করাটাই বড় ব্যাপার। একের দেখাদেখি অনেক – মাছ ধরা তখন আনকন্ট্রোল্ড হয়ে যায়। আমাদের গ্রামের মধ্যে বড় পুকুর গুলির মালিকানা বেশী ছিল শৈলেনের – কিন্তু তার পুকুরে মাছ ধরা স্ট্রিক্টলি নিষেধ। তা এই শৈলেন এবং তার ছেলে সোমনাথ জীবনের অনেক বিনিদ্র রাত কাটিয়েছিল সেই পুকুরগুলি পাহারা দিয়ে গিয়ে। শোনা গেছে এই রাত জেগে বাইরে থাকার জন্য তাদের দাম্পত্য জীবনেও নাকি কিছু প্রভাব পড়েছিল – বিশেষ করে পুকুর পাড়ের পাহারা দেবার কুঁড়ের কাছাকাছি ডাগর দুলে বউদের ঘোরাফেরা করতে দেখা যাওয়া হেতু। তবে সেই গল্প অন্য জায়গায় – আমরা এখানে মাছে মনোযোগ দেব, মেছুনীদের উপর নয়!

    এই সব ব্যাপারে আমার মুসকিল আসান সাধারণত বাল্যবন্ধু আলম যার কাছে আমি গুলি, ভেঁটা, তাস, ক্রিকেট, ফুটবল খেলা সহ আরো অনেক কিছু শিখেছি কেবল তার পরিণত বয়েসে নেশা লটারী ও কিঞ্চিত জুয়া ছাড়া। আলম বলতে লাগল এঃ তুই একটু আগে আমাকে জানালি না! কি করে এখন ব্যবস্থা করি বলত – মাছ ধরার সিজিন এখন প্রায় শেষের দিকে। রইল বন্ধ পূজার মুখে আলমের মেয়েদের প্রসাধনী ও ইমিটেশনের গয়নার দোকান “ভাই ভাই স্টোর্স”। সেই আগে যেমন আলম ক্রিকেট প্লেয়ার তুলতে যেত গ্রামে গ্রামে ঘুরে, এই একই ভাবে সে এই কাজে মনোনিবেশ করল। সৈকতের ও অভিজিৎদার বাইকের পিছনে চড়ে এবং ততসহ আলমের বৃহত্তর নেট ওয়ার্ককে কাজে লাগিয়ে দুটো পুকুরের খোঁজ পাওয়া গেল – বৈঁচী গ্রাম ও ভবানন্দপুর। আর মধ্যে বৈঁচী গ্রামে পুকুরের ডেট প্রায় শেষ হয়ে গেছে – আমরা কেবল একটা দিন পেলাম, মাছ ধরার ১০ম দিন। আর ভবানন্দপুরে ডেটে পেলাম পুকুর যে দিন খুলল অর্থাৎ প্রথম দিন। বৈঁচী গ্রামের টিকিট ২০০০ টাকা ভবানন্দপুরে ২৪০০ টাকা। টিপিক্যাল নিয়মাবলী দেখতে সঙ্গের লিফলেট টি দেখতে হবে।



    সকাল ছয়টা থেকে বিকেল ছয়টা পর্যন্ত মাছ ধরা – তাই পাবলিক খুব ভোর বেলা রওনা দেয়। সিজিনের প্রথম দিকে যখন ব্যাপার আরো সিরিয়াস থাকে তখন অনেক পাবলিক সারা রাত পুকুর পাড়েই কাটায় – ভোর রাতে লটারী করে ঠিক হয় কে কোন সিটে বসে মাছ ধরবে! পুকুরের সাইজ অনুযায়ী নাম্বার অব সিট ডিসাইড করা হয়। গড়ে মোটামুটি ৩০-৫০ টি সিট থাকে পুকুর প্রতি। কোন সীট ভালো তা ঠিক করতে নানা ফ্যাক্টর ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে প্রধান ফ্যাক্টর হল আগের বছর বা অন্যদিনে কোন সিটে বেশী মাছ ধরা হয়েছে! আর ট্যাকনিক্যাল দিক থেকে দেখতে হলে, পুকুরের নীচের মাটি ভালো কাটানো হতে হবে, কোনের দিকে হলে মাছ বেশী আসে না, খুব বেশী গাছের ছায়া চলে এলে প্রবলেম। আর তার পর তো আছেই প্রগাঢ কুসংস্কার।



    আমি আলমকে বলে দিলাম পুকুর পাড়ে রাতে আমি থাকতে পারব না – তাই আমাকে প্রায় জোর করে ভোর চারটে সময় বাড়ি থেকে বের হলাম। মাছ ধরার সময় সকাল ছটা থেকে বিকেল ছটা – লেট মানে পয়সা নষ্ট, তাই আমাকে ভোর ৩.৩০ মিনিটে তোলা হল ঘুম থেকে – ৪ টের মধ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাইকে করে ৩৫ কিমি পথ গিয়ে পুকুর পাড়ে ৫.৩০ মধ্যে ছিপ পড়ার কথা।



    মাছ ধরতে টিম লাগে – একজন ছিপ ফেলবে, অন্য জনে চার বানাবে, টোপ বানাতে সাহায্য করবে, অন্য জন ছিপ রেডি করবে, মাছ পেলে বঁড়শি থেকে ছাড়াবে একজনা, একজনা সেই মাছগুলি নেটে ভরবে। শুনতে অনেক জন মনে হলেও সত্যই অনেক কাজ থাকে - তবে যদি মাছ ঠিক মত খায় তবেই। ঠিক ঠাক মাছ খেলে ব্যস্ততার চূড়ান্ত, আর মাছ না খেলে খিস্তি – বাবা-মায়ের-বউয়ের শ্রাদ্ধ, হাতে অনন্ত সময়। আমাদের টিমে ছিল আলম, অভিজিতদা, বাবু, সৈকত, তাপস ও আমি। সেই ভোর ভোর আমি বাবুর বাইকে চেপে রওনা দিলাম – শরতের শেষে হিম পড়া শুরু হয়ে গেছে – জি টি রোড দিয়ে বাইক চলছে, আমি শীতে একটু একটু কুঁকড়ে যাচ্ছি প্রায়। রাস্তার অবস্থা খারাপ – বাবুর বাইক মাঝে মাঝে শূন্যে উঠে যাচ্ছে, আমি প্রায় জোরে চেপে ধরে বসে আছি। রাস্তায় গাড়ি আটকে কালী পূজার চাঁদা তোলা শুরু হয়ে গেছে – অগুণতি মানুষ রাস্তার ধারে হাগতে বেরিয়ে পড়েছে মনোরম ভোরে। এমন শিউলি ঝড়া, হিম লাগানো ভোরে মাঠে প্রাতকৃত্য করার মজাই আলাদা তা বাড়িতে সে যতই পায়খানা থাকুক। আমরা স্টপ দিলাম বৈঁচী রেলগেটে চা খাবার জন্য – বাবু বলল এখানকার চা টা নাকি ভালো। আমার কাকার ছেলে বাবু ছোট থেকেই একটু খাদ্য রসিক, একবার আমি ওকে শক্তিগড়ে ল্যাঙচা কিনতে পাঠিয়েছিলাম, বলেছিলাম যে সব থেকে ভালো টা নিবি। তাই ভাই আমার ১৪টা দোকানে ল্যাংচা টেষ্ট করে তবেই ভালোটা কিনে এনেছিল। তাই ওর ভালোর প্রতি আস্থা থাকলেও চায়ের কোয়ালিটি বিচারের প্রতি সেই দিন আস্থা হারিয়ে ফেললাম!



    যাই হোক আমরা সূর্য ওঠার আগে ৩২ নাম্বার সিটে গিয়ে জাঁকিয়ে বসলাম। সাধারনত একটা টিকিটে দুই গাছা ছিপ অ্যালাও করা হয়, কিন্তু সেটা শেষ দিন ছিল বলে আমাদের চার গাছা ছিপ দেখেও পুকুর কমিটি কিছু বলে নি। শেষের গল্প আগে বলে দিই – আমরা আশাতীত বেশী মাছ পেলে গেলাম বৈঁচীতে। শেষ দিনে নাকি এত মাছ পাবার কথা নয় – আমি এই সুযোগে আমার লাকি চার্ম এবং তত সহ বিদেশী ছিপের কেরামতির কথা প্রচার করলাম। সেই ছিপ দেখতে লোক জড়ো হয়ে গিয়েছিল – আর সেই বিদেশী ছিপের জন্যই আমি সকাল থেকে টেনশনে ছিলাম। মাছ যদি না পাওয়া যায়, আর যদি পাবলিক এই বিদেশী ছিপ দেখে তা হলে আমাদের অবস্থা আমাদের ছোটবেলার ক্যাপ্টেন অমিতের মতই হবে সেই সম্পর্কে নিশ্চিত ছিলাম। আমরা যখন যে কোন প্যান্ট পরে খেলতে নামতাম অমিত তখন সাদা ধপধপে ক্রিকেটিয় পোষাক এবং আমাদের খালি পায়ের মাঝে তার থাকত স্পোর্টস জুতো। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশঃ অমিত ১০ রানে লিমিটেড থাকত এবং ততসহ ক্যাচ মিস – ফলতঃ পাবলিকের খেসস্যা। এই সব স্মৃতি জলজ্যান্ত থাকার জন্য আমি বিদেশী ছিপ বের করি কিছু মাছ ধরার পর।



    মাছ ধরা যে এক উৎসব হতে পারে, এক মেলার মত হতে পারে তা অনেক দিন পরে আমি অনুভব করলাম। মাছ ধরা এখান এক খেলার মতই – সেখানে মৎস শিকারীদের মধ্যে পরিচিত আছে, ভালো মৎস শিকারীর নাম আছে আর আছে অগুণতি কুসংস্কার। খাবারের হোটেল দেওয়া হয় অস্থায়ী পুকুর পাড়ে – সকাল থেকে চা, টিফিন, ভাত, বিকেলের চা সব ওরাই সাপ্লাই দেয়। সারাদিন শুধু সিট নাম্বার বলে খেয়ে যাও, দিনের শেষে পয়সা মিটিয়ে বাড়ি। সকাল থেকে ভালো মাছ খাচ্ছে দেখে আলমের মেজাজ ফূর্তিতে পরিণত হল। মাছ না পাওয়া মানে আলমের কাছে প্রেস্টিজের ব্যাপার। আমাকে বলল, বুঝলি সেই দিন কাকা (আমার বাবা) বলল যা সুকান্তকে নিয়ে মাছ ধরে আয়। তা মাছ যদি না পাই কাকার কাছে মুখ দেখাব কি করে! ভালো মাছের লাক উদযাপন করতে দুপুরে মাংস ভাত ওর্ডার দেওয়া হল। দুপুরের পর দলে কাবলিদাও এসে জুটল – যে রেলে চাকুরী করলেও এখন পরিচিত হয় “মিরাক্কেলে” যোগদান করেছিল বলে। মাছ খাচ্ছে, ছিপ পড়ছে আর মাছে মাছে কাবলিদা ছিপের উপর জল ছেটাচ্ছে ‘দে মা হুইল ঘুরিয়ে’বলে।



    মাঝে বাবু আর আলম দুপুরের ভাতের অর্ডার দিতে গেল – যে লোকটা রাঁধছিল যে বাবুকে দেখে জিজ্ঞাসা করল আপনারা খাবেন তো – হ্যাঁ বলাতে ঝট করে ভাতের হাঁড়িতে আরো কিছু চাল ঢেলে দিল। দিয়ে বল মাংস ভাত ৭০ টাকা করে নিচ্ছি, আপনারা আর ৫ টাকা করে বেশী দেবেন – বাবুর চেহারা দেখে এই বিষয় নিয়ে আর তর্ক করাও গেল না। আলম ফিরে এসে বলল এমন জানলে ও বাবুকে নিয়ে ভাতের অর্ডার দিতে যেত না! বাবুর চেহারা মোটেই আমাদের গ্রুপের রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়!





    আরো লক্ষ্য করলাম মাছের খাদ্যও অনেক উন্নত হয়েছে – মাছ ছাতু খাচ্ছে, খাচ্ছে সুজি, পিঁপড়ের ডিম, মিষ্টির রস, মধু, ফার্ষ্ট কাটের ধেনো, বাটার এবং ততসহ কিছু সিক্রেট রেসিপি। অভিজিতদা বলল এই মাছেদের যা ভালো খাওয়াচ্ছি, নিজের ছেলেকে তা খাওয়াই না! সন্ধ্যেবেলা বাড়ি ফিরছি – আমাদের বাইকের পিছনে বাঁধা রয়েছে মাছ ভর্তি নেটটা – কাতলা, মৃগেল, রুই আর আমেরিকান রুই তখনো ছটফট করছে। যে বাইক গুলো আমাদের পেরিয়ে চলে যাচ্ছে তারা ছুঁড়ে দিচ্ছে কিছু প্রশংসা সূচক বাক্য। মেমারীতে আগমণি মিষ্টির দোকানে শেষ স্টপ – আমরা মিষ্টি দই খেলাম, রসগোল্লা আর সন্দেশ। দোকানের সামনে দাঁড় করানো বাইকের চারপাশে লোক জড়ো হয়ে গেছে মাছ দেখতে। আলম একটু ফুরফুরে ভাবে ঘাড় উঁচু করে ঘুরছে!



    ব্রুনাই তে মাছ ধরে ছেড়ে দেয় ফ্রেড – আর আমি বাড়িতে ফোন করে মাকে বঁটি নিয়ে রেডি হতে বললাম – আড়াই কেজি দেশী জীবন্ত কাৎলার স্বাদই আলাদা! আমি যে দিন ফিরে আসছি, ট্রেনে ওঠার আগে আলম চেঁচিয়ে বলল পরের বার আসার আগে জানাস, একটা পাল্লার (পাঁচ কেজি) মাছ তোকে খাওয়াবই!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৮ নভেম্বর ২০১৪ | ২১৫৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dd | 132.172.33.164 (*) | ০৮ নভেম্বর ২০১৪ ০৪:৪৫73289
  • বাঃ বাঃ।
  • ন্যাড়া | 172.233.205.42 (*) | ০৮ নভেম্বর ২০১৪ ০৫:৪০73290
  • আবার বেড়ে হয়েছে। আপনার লেখার ফ্রিকোয়েন্সি বড় কমে গেছে। বাড়ান।
  • lcm | 118.91.116.131 (*) | ০৮ নভেম্বর ২০১৪ ০৬:৩০73291
  • বাহ! দারুণ লাগল ।

    ছোটোবেলায় আমি দু-একবার মাছ ধরার আসরে গেছিলাম। চার বানানোর জন্য বাজার থেকে পিঁপড়ের ডিম কেনা হয়েছিল। ঘুড়ির মাঞ্জা তৈরীর উপাদান নিয়ে জনগণের মধ্যে নিয়ে যে সিরিয়াসনেস্‌ দেখতাম তার থেকেও বেশি সিরিয়াস ব্যাপার ছিল মাছের চার বানানো। একবার একটা জিনিস দেখেছিলাম, ডালহাউসির লালদিঘিতে, পেতলের থালা জলে ডুবিয়ে তাতে একটা চামচ দিয়ে টুং-টাং আওয়াজ করছে একজন, ঐ আওয়াজে নাকি মাছ আসে।

    এর বহু বছর পরে, আমেরিকায় এসে মিড-ওয়েস্টে থাকাকালীন মাছধরার লাইসেন্স কিনে মাছ ধরা শুরু করি। ওয়ালমার্টে মাছ ধরার সরঞ্জামের একটা সেকশন ছিল। তাতে নানারকমের ছিপ, বড়্শি, ফাতনা, সুতো। ওখানে এক ডলারে এক ছোট কোটোতে মাটির মধ্যে কেঁচো বিক্রি হত, ঐটা আমি কিনতাম, ক্যাট মাছ কেঁচো ছাড়া খেত না। এক নদীর ধারে ছিল অ্যাপার্টমেন্ট, গরমকালে ভাল মাছ উঠত। শীতকালে নদী জমে বরফ, তাতে একবার বরফের মধ্যে গর্ত করে মাছ ধরার চেষ্টা হয়েছি - আইস ফিশিং। কিন্তু একজন বলল যে খুব বড় মাছ বড়শিঁতে যদি গাঁথে আর সেই মাছ যদি ঐ গর্ত নিয়ে না বের করা যায় তাইলে নাকি ভারি মুশকিল হয়। বরফের লেয়ারের নীচে মাছ ছটফট করে, খুব মুশকিল হয়। সেই টেনশনে আর মাছ ধরতে যাই নি। অবশ্য আমার কেমন ভরসা হত না, যদি বরফের চাঁই ভেঙ্গে হুড়মুড় করে জলে পরে যাই - তাই নিয়ে টেনশন বেশি হত।
    এদেশে নিয়ম আছে - সব মাছ ধরে ভেজে খাওয়া যায় না। কিছু প্রজাতির মাছ উঠলে ফেলে দিতে হয়। একবার এক পুলিশ গাড়ি থামিয়ে কাছে এসে লাইসেন্স চেয়েছিল, আর বালতিতে কোনো বেআইনি মাছ রেখেছি কিনা দেখেছিল।

    অনেকদিন বাদে সুকান্তর এই লেখা পড়ে... নাহ, এবার একটা লাইসেন্স আবার নিতে হবে।
  • Tim | 12.133.35.113 (*) | ০৮ নভেম্বর ২০১৪ ০৬:৩৪73292
  • দিব্য সহজ সুন্দর সরস লেখা। ভালো লাগলো।
  • ranjan roy | 132.176.168.168 (*) | ০৮ নভেম্বর ২০১৪ ০৭:১৮73293
  • এক অন্য জগতের খবর। দারুণ।
  • 0 | 220.245.20.170 (*) | ০৮ নভেম্বর ২০১৪ ১১:৪৬73294
  • লিফ্লেটের তিন্নং পয়েন - অনিবার্য কারণবশতঃ মাছ না খেলে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকিবে না :-)
  • subhankar | 220.195.5.19 (*) | ০৯ নভেম্বর ২০১৪ ০১:১৮73295
  • পুরোতা পড়লাম। জমিয়ে দিয়েছো গুরু। আরও লেখা চাই।
  • Abhyu | 81.12.53.207 (*) | ০৯ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৩73296
  • বেশ লাগল। খেরোর খাতা মনে পড়ে গেল।
  • Abhyu | 81.12.53.207 (*) | ০৯ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৬73297
  • লীলা মজুমদার লিখেছিলেন যে ওনার বড় জ্যাঠামশাই একটা চার বানিয়েছিলেন ইধর আও নাম দিয়ে। তার দেখাদেখি যোগীন সরকারও একটা চার বানিয়েছিলেন যার নাম ছিল উধর মৎ যাও।
  • Abhyu | 81.12.53.207 (*) | ০৯ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৯73298



  • amitava | 190.148.69.210 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৪ ০৪:৪৩73299
  • লেখা টা পড়ে এবার মনে হচ্ছে মাছ ধরার চেষ্টা একবার করতেই হবে। তবে ব্রুনেই এর মত ও রকম নদী তে মাছ ধরার এডভেঞ্চার-ই আলাদা। আমার এক ডাচ কল্লিগ গল্প করেছিল যে বোট-এ চেপে মাছ ধরতে গেছে, আর মাঝ নদী তে আশে পাশে বেশ কটা গোদা কুমির এসে হাজির, হাসি হাসি মুখে ওদের দেখছে আর জিভ চাটছে। মাছ আর কি ধরবে, নিজে বেচে ফিরেছে, এটাই ঢের। এই গল্প-টা শুনে আর কোনদিন ওখানে মাছ ধরার কথা ভাবি নি। তবে ধরতে গেলেও যে পেতাম, তা নয়।
  • সুকান্ত ঘোষ | 129.160.188.238 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৪ ১০:০৯73300
  • সবাইকে ধন্যবাদ লেখা পড়ার জন্য।

    ন্যাড়া (দা), আসলে লেখা হয়ে উঠছে না। আর লেখা হলেও টাইপ করার ভয়ে লেখা বেশী এগুচ্ছে না। জটিল প্যাঁচে পড়ে গেছি।

    আমার বড় জ্যাঠা ছোটবেলায় বলত, "লিখিবে, পড়িবে, মরিবে দুখে - মৎস্য ধরিবে খাইবে সুখে" - এ এক অমোঘ সত্য

    অভ্যুকে ধন্যবাদ লীলা মজুমদারের লেখা মনে করিয়ে দেবার জন্য।

    অমিতাভদা, তোমার নিশ্চিয়ই মনে আছে ব্রুনাই-এর পাবলিকরা কেমন রাতের বেলায় ব্রীজের মাঝখান হতে মাছ ধরে মাঝ নদীতে! কিছুদিন আগে বোট ক্লাবের গায়ে গায়ে একটা কুমীরকে আরাম করে রোদ পোয়াতে দেখা গেছে।
  • de | 69.185.236.51 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৪ ১০:৪১73301
  • কি ভালো লেখাটা হয়েছে!
  • utpal | 212.191.212.178 (*) | ১১ মে ২০১৫ ০৫:৪৬73302
  • দারুন।।।।।।
  • নাজিম | 178.235.194.179 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৫:০০73303
  • ছিপ দিয়ে মাছ ধরার টুপ
  • ম ল য় | 122.79.36.2 (*) | ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:২৫73304
  • ভালো লাগল কিন্তু গল্প পড়ে তো কোন মাছ ধরার আইডিয়া পেলাম না।কি চার করে ছিলে কি টোপ ব্যাবহার করেছিলে সেসব তো কিছুই বল্লেনা সেগুলো তো সবি গোপন রেখে দিলে।তাহলে গল্প শুনে টাইম নষ্ট করার কোন মানেই হয়্না ফাল্তু।
  • মাছর চার | 18.37.233.119 (*) | ০৮ জুলাই ২০১৬ ০৭:২৮73305
  • মাছের চার তোরি
  • মাহাবুব হাসান | 178.235.205.151 (*) | ২৩ জুলাই ২০১৬ ০৭:৩২73306
  • মাছের চার তোরি
  • Md:Roton | 192.48.64.62 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:১৩73307
  • নদী থেকে বড় বোয়ল,চিতল,আঈর, &বাঘাআঈর মাছ ধরার পারফেক্ট টোপ কী?
    প্লিজ বলবেন!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন