এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ফোর টোয়েন্টি

    Avik Mukherjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৫ মে ২০১৪ | ১৮০২ বার পঠিত
  • ফোর টোয়েন্টি
    অভীক মুখোপাধ্যায়
    ‘হুজুর একটু দেখবেন। আপনারাই মা- বাপ।’ আচমকা একথা কানে আসতেই ঘাড় ঘোরালাম, যে দৃশ্য চোখে পড়ল তাতে অবাক না হয়ে পারলাম না। মার্চের প্রথম সপ্তাহের দুপুর, গরম খুব বেশী না হলেও নেহাত কমও বলা চলে না। এই গরমে কমলা রঙের হনুমান টুপি পরা বেঁটে খাটো চেহারার একজন মানুষকে দেখে একটু অবাক হলাম। গায়ে কটে যাওয়া নীল কোট। উদ্ভট লাগায় কৌতুহল আরও বেড়ে গেলো। ডান হাতের তর্জনীটাকে এমন ভাবে আমার দিকে তুলে মুখে চোখে একটা সনির্বন্ধ অনুরোধ নিয়ে তাকিয়ে আছেন যেন ‘একটাই মাত্র কোনও কথা’ উনি আমাকে বলতে চান। ‘আপনি কিছু বলবেন?’ আমি হাসি মুখে বললাম। ‘হ্যাঁ, স্যার মানে ............’ বলেই হনুমান টুপি ওর পাশে রাখা নাইলনের বাজার করার দুটো হাত ব্যাগের একটা থেকে ইনহেলার বের করে ফসফস করে দুবার মুখে দিলেন। খানিক স্বস্তি পেয়েছেন এমন মুখ করে আমার দিকে হাসলেন। আমি উনাকে কথার সূত্র ধরিয়ে দেবার জন্যে বললাম, ‘কিছু একটা বলছিলেন!’
    ‘হ্যাঁ, মানে কিছু কেস দিন না স্যার?’
    ‘কেস? কেস কি দেবো? ঠিক বুঝলাম না।’
    ‘আমি এই পোস্ট অফিসেরই এজেন্ট।’, বলে হনুমান টুপিটা খুলে আমার টেবিলে রাখলেন। আসলে দুদিন মাত্র জয়েন করেছি তাই ডিপারটমেনটের নানা তথ্য, ভাষার সাথে ওয়াকিবহাল হতে পারিনি এখনও। যাই হোক হনুমান টুপির নীচের চেহারা সামনে আসতেই প্রথম একটাই কথা অস্ফুটভাবে বললাম, ‘বাঞ্ছারাম।’; আসলে ভদ্রলোকের চেহারার সাথে মনোজ মিত্রের বিখ্যাত সিনেমা ‘বাঞ্ছারামের বাগান’-এর মূল চরিত্রের চেহারার মিল পেয়েই খানিক অজ্ঞাতসারে ওটাই বেরিয়ে এল। খাটো শরীর, মাথার চুল সাদা আর কদম ছাঁট, তবে দাড়ি নেই, সামনের দুটো দাঁত ভাঙা, ভারি কিন্তু ছোট মুখে উজ্জ্বল দুটো চোখ ঘুরছে।
    ‘ও, আপনি এজেন্ট! তা কেস বলতে ইনভেস্টমেন্টের কথা বলছেন তো? নতুন চাকরিতে দুদিন মাত্র জয়েন করেছি। পরে কিছু কাজ থাকলে আপনাকেই বলব।’ ‘না, মানে আজ কিছুই হবেনা?’ ‘আরে কি যে বলেন? সঙ্গে কি সঞয় করার মত টাকা নিয়ে ঘুরব নাকি!’, বলেই দূরের টেবিলে বসে থাকা অনলদার দিকে তাকাতে ওর চোখে মুখে একটা কৌ্তুক মিশ্রিত হাসির ভাব খেলতে দেখলাম। ভদ্রলোক আবার ‘হুজুর’ বলে ঠিক বাঞ্ছারামের মতই হাঁটু একটু ভাঁজ করে দাঁড়িয়ে দুহাত জোড় করে নমস্কার করে চলে গেলেন। উনি যেতেই অনলদা নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে কাঁধে হাত রেখে বললেন, ‘কথা শুনেই বুঝেছি একে তো এখনও চেনা হয়নি। তা বলতে পারবে বয়স কত হবে এর?’ ‘কত আর, ষাট-বাষট্টি হবে।’
    ‘উঁহু, মোটেই না সত্তরের ওপর দিকে হবেই। একটা চিজ। পুরো ফোর টোয়েন্টি। ওর নাম রঘুপতি বারুই। সবাই পিছনে ওকে বলে ঘুঘুপতি চড়ুই। মাথায় এমন প্যাঁচ যদি একটা পেরেক ঢোকানো যায় তাহলে বের করলে দেখবে স্ক্রু হয়ে গেছে।’
    জানিনা অনলদা কেন অমন বলল মানুষটাকে! একজন বয়স্ক মানুষ তাকে সবাই ফোর টোয়েন্টি বলে। বিজ্ঞানের ছাত্র হলেও চাকরি পাবার আগে আমাকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সংবিধান এসব নিয়েও পড়তে হয়েছে কিছুটা। কারণ জেনারেল নলেজ বিভাগে এই সংক্রান্ত প্রশ্ন আসেই। তাতে যতদূর জানি যারা লোকজনকে ঠকায় তাদের নামে ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের ৪২০ ধারায় মামলা দায়ের হয়। আর কথাটা সেই থেকেই সাধারন লোকমুখে জাল-জোচ্চোর লোকদের নির্দিষ্ট করে বলা হয়ে থাকে।
    ‘এরকম কেন বলছ উনাকে? কথা শুনে তো মনে হবে না উনি ওরকম!’
    ‘চাঁদু তুমি দুদিনের যোগী। ওর যোগ মাহাত্ম্য বুঝতে তোমার অনেক সময় লাগবে। দেখলে না তোমার সন্ধান পেয়ে এসেই কেমন হাত করে নিল। অকারণে একটা ভক্তিতে গদগদ ভাব। ভাই, অকারন তৈলাক্তকরণ ভাল জিনিস নয়।’
    ভারী ভারী কথা শুনে একটু দমে গেলাম। তবে সেদিনের বাকী বেশ অনেকটা সময় ‘চড়ুই বাবু’ আমার মনে আনাগোনা করলেন। পরের দিন থেকে গোটা একমাসের জন্যে আমায় আর রঘুপতি বাবুর সাথে দেখা হয়নি। কারণ একমাসের ট্রেনিং –এ যেতে হয় দ্বারভাঙ্গায়।
    ফিরে যেদিন অফিস জয়েন করতে এলাম অফিসের ভিতর ঢোকার সময় দেখি যেখানে সিঁড়ি শুরু হয়েছে তার এক পাশে রঘুপতি বাবু বসে। ইতিমধ্যে গরম অনেক বেড়ে যাবার ফলে সেই হনুমান টুপি আর কোট নেই বটে তবে গায়ে একটা ফ্লানেলের জামা, যেটা সচরাচর আমরা শীতকাল ছাড়া পরতে পারিনা। হাতে একটা টিফিন বক্সে দুটো পাউরুটি, একটুকরো পাকা পেঁপে আর একটা বিস্কুট। পাশে ছোট একটা বোতলে জল। তারও পাশে পূর্বনির্দিষ্ট সেই নাইলনের দুটো বাজার করার হাত ব্যাগ। খেতে খেতেই আমায় দেখে উঠে দাঁড়িয়ে দুই হাত জোড় করে মুখে বিনম্র ভাব নিয়ে হাসলেন। আমি কিংকরতব্যবিমূড় হয়ে হাসিমুখে মাথাটা ডানদিকে কাত করে এগিয়ে অফিসে ঢুকলাম। জয়েনিং চার্জ রিপোর্ট জমা দিয়ে সেকশনে ঢুকতেই অনলদা একমুখ হেসে বলল, ‘এস কুমার, খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন হল।’ জবাবে আমি বললাম, ‘কেন এই যে কদিন আগেই ফোনে কথা হল? তখন তো বলেইছিলাম আজ জয়েন করছি।’ ‘আরে ফোনে কি জমে ছোটভাই! অনেক গল্প জমে আছে। যত কাণ্ড আমার এই ভাণ্ডে জমিয়ে রেখেছি’, বলে অনলদা নিজের মাথার দিকে ইঙ্গিত করলো। ‘আসছি তোমার কাছে’, বলে এগিয়ে আমি আগে সুপারভাইজারের সাথে দেখা করে এলাম। সুপারভাইজার অনুজদা ট্রেনিং- এর খোঁজ নিলেন, কেমন কেটেছে ওখানে তাও বিশদে জানলেন। কথা মিটিয়ে প্রায় মিনিট কুড়ি বাদে এলাম অনলদার টেবিলে। ‘বোসো আমি বলাইকে ক্যান্টিনে বলে আসি দুটো ডাবল ডিমের অমলেট আর দু কাপ চা’, বলেই অনলদা উঠে দাঁড়ালো। আমি সঙ্গে সঙ্গে মানা করলাম কারণ চা আমি এমনিও খাই না আর ওই গরমে ডিম খাবার ইচ্ছে করছিলো না। তখন অনলদা শুধু এক কাপ চা অর্ডার দিয়ে ফিরে এল। এসেই আমার দিকে খানিকটা উত্তম কুমারের মত নাকের ওপর চশমা নামিয়ে বলল, ‘ঘুঘুকে ভিটে ছাড়া করা হয়েছিল তবে আবার ফিরেছে।’ উদ্দিষ্ট ব্যাক্তি কে তা বুঝতে আমার অসুবিধা হয়নি। কিন্তু কথার বাকী শ্লেষ মাথায় এলনা। তাই বোকা বোকা ভাবে জিজ্ঞেস করলাম যে আবার কি করলো রঘুপতি বাবু? ‘না, মানে ওর এজেন্সি বাতিল হয়েছিল। অবিশ্যি ও জালিয়াত আবার জোগাড় করেছে পায়ে ধরে। তুমি এখান থেকে যাবার পরের দিনই রঘুপতি কাউন্টারে সত্তর হাজার টাকার সার্টিফিকেট করান, প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবার পর ক্লার্ক সার্টিফিকেটটা ওনার হাতে দেবার আগে টাকাটা জমা করতে বলে।
    এজেন্টরা চেনা হয় বলে এভাবেই কাজ চলে। যাই হোক রঘুপতি অম্লানবদনে বলেন উনি নাকি টাকাটা আগেই দিয়েছেন। এদিকে ক্লার্ক বলে দেননি। তুমুল তর্কের শুরু এবং শেষে সেটা থানা পুলিশ অব্দি গড়ায়। পোস্টমাস্টার পুলিশ ডেকে সার্চ করালে উনার নাইলনের হাত ব্যাগের ভিতরে আলাদা ভাবে মোড়া সত্তর হাজার টাকা মেলে। উনি প্রাথমিক ভাবে মানতে নারাজ হলেও পরে ঐ টাকা তিনি মিটিয়ে দেন। এরপর উনার নামে বি.ডি.ও. অফিসের ডিসট্রিক্ট সেভিংস অফিসারের কাছে কমপ্লেইন্ট করা হয়। ব্যস, ঘুঘুর ডানা ছাঁটা। এজেন্সি বাতিল। তবে রঘুপতিও জাঁদরেল বস্তু। ঐ অফিসারের হাতে পায়ে ধরে, নিজের হাঁপানি রোগ, বার্ধক্য, মৃত স্ত্রীর দোহাই দিয়ে তার এক সপ্তাহর ভিতর আবার লাইসেন্সটা জোগাড় করে এনেছে।’
    সব শুনে কি মন্তব্য করা উচিৎ বুঝে উঠলাম না। আমার মুখ দেখে অনলদা বোধহয় ব্যাপারটা আন্দাজ করলো। বলল, ‘তুমি আসলে নতুন তো তাই এখন ভাল মন্দ বুঝবে না, আরে চশমখোর এক নম্বরের। নাহলে স্ত্রী মারা গেছে, মৃতদেহ তখনও পোড়ান হয়নি আর নিজেও গুরুতর অসুস্থ, স্যালাইন চলছে, সেই অবস্থায় একহাতে স্যালাইনের বোতল ধরে কেউ অফিসে কাজ নিয়ে আসে! জানো তুমি কতো বুড়ি মানুষের টাকা নিজের নামে নমিনি করে নিয়েছে? এমনি এমনি ওকে সবাই ফোর টোয়েন্টি বলে নাকি? কারণ আছে তাই বলে।’
    বেশ কয়েকটা দিন জলের মতই কেটে গেল কাজ শিখতে। যদিও পুরোদস্তুর প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরেছি সবেই তবু আমার অভিজ্ঞতা যা হল তাতে বুঝে গেলাম যে অফিসে সিনিওরদের কাছে কাজ যদি শিখতে না পারা যায় তো খুব অসুবিধে হবেই। নতুন জিনিস শেখা আর তার প্রয়োগেই মেতে থাকলাম কদিন ধরে। এইভাবে দিন দশেক কাটল। হঠাৎ সপ্তাহের শুরুতেই একদিন গেল অফিসের কম্পিউটার সার্ভার বিগড়ে। যন্ত্রনির্ভর যুগে যে যন্ত্র ছাড়া আমরা প্রত্যেকেই কতটা অসহায় সেটা টের পেলাম। কোনও কাজই করা গেল না। কিছু ম্যানুয়াল কাজ সেরে চেয়ারে একটু গা এলিয়ে দিলাম। অনলদা আসেনি যে গল্প করতে পারা যাবে। অবশ্য অনলদার গল্প মানে অফিসের গসিপ। ভাল না লাগলেও শুনতে হয়। এখন শুনলে অসুবিধা ছিল না, সময়টা কেটে যেত। সামনের টেবিলে খুলে রাখা রেজিস্টারে পেনটা রেখে ভাবছি যে এবার ডিপার্টমেনটাল পরীক্ষার ব্যাপারে খোজ-খবর নিতে শুরু করতে হবে। এমন সময় কানে এল আগে শোনা অথচ অচেনা গলা, ‘স্যার, কোনও খবর আছে নাকি?’ চোখ খুলেই দেখি সেই, ‘হেঁট মুণ্ড, জোড় কর।’ ‘বসুন না’, বলেই হাতের ইঙ্গিতে সামনের একটা খালি চেয়ার দেখালাম। দুই হাতের সেই দুটো নাইলনের বাজার করার ব্যাগকে চেয়ারের দুদিকে রেখে আর হাতের মধ্যে ধরা একটা কাগজ সামনে রেখে ভদ্রলোক বললেন, ‘বলছি স্যার কিছু কাজ এবার দিন না? যা হবে কিছু আপনার বাকিটা আমার।’
    ‘কিছু আপনার কিছু আমার মানে?’
    ‘মানে আর কি বলি বাবু? আপনি তো সবই বোঝেন। ঐ কমিশন বাবদ যা পাব কিছু আপনাকে দেবো বাকিটা এই অধমের ভাত জোগাড় করতে লাগবে।’ কথাটা শুনে একটু অবাকই হলাম বইকি। যাকে সবাই চশমখোর বলে সেই লোক কমিশনের টাকা পার্টিকেও দেয়! মানুষটার কথা-বার্তাও খুব ভাল। আর দ্বিধা না রেখে উনাকে বললাম, ‘ আপনাকে দেখে একটু অবাকই হচ্ছি জানেন? লোকে আপনাকে গালমন্দ করে। অথচ আমি না চাইতেই আপনি আমাকে কমিশনের ভাগ দেবেন বললেন।’
    ‘স্যার...............’
    ‘প্লিজ, আমাকে স্যার বলবেন না। আপনি বয়সে আমার বাবার থেকেও বড় হবেন। আমি আপনার থেকে অনেক ছোট।’
    ‘সেতো হবেই, হংস যদি ডুবে ডুবে গুগলি খেতে পারে, তবে হংসীও তা পারে। আপনি আমার থেকে বয়সে ছোট হলে যে আমি আপনার থেকে বড় হব তাই তো স্বাভাবিক। তবে কিনা আপনার চেয়ারটার একটা দাম আছে তো! আপনাকে ও সব নিয়ে ওত ভাবতে হবেনা।’
    ভদ্রলোকের বাকপটুতায় বিব্রত হয়ে অগত্যা আমি বললাম, ‘যাক ছাড়ুন, আমি যেটা বলছিলাম, লোকে আপনাকে...............’
    ‘আজ্ঞে লোকে আমাকে চশমখোর, অর্থপিশাচ, ঘুঘু, ফোর টোয়েন্টি বলে।’, বলেই পাশে মেঝেতে রাখা ব্যাগ থেকে ইনহেলার বের করে দুটো পাম্প নিলেন মুখে। উনি হঠাৎ ওরকম বলায় আমি পরিস্থিতি হাল্কা করতে প্রসঙ্গ ঘোরাবার জন্যে বললাম, ‘ইনভেস্টমেন্ট যে করব হাতে এখন কিছুই নেই। যাক না এখন কিছুদিন হাজার দশেক করব এখন।’
    ‘আরে সেটা কি কোনও কথা নাকি! আমি এখন করে দেবো আমার থেকে টাকা দিয়ে। আপনার হাতে টাকা এলে আপনি পাশবইটা বা সার্টিফিকেটটা আমার থেকে নিয়ে নেবেন।’
    এতক্ষণ আমি অবাক ছিলাম, এবারে হতবাক হলাম। বলেই ফেললাম, ‘বাজারে আপনার নামে যে কথাগুলো ওড়ে সেগুলো কতটা ঠিক কে জানে? আপনাকে তো একদমই ওরকম মনে হয়না।’ রঘুপতি বাবুর চোখ দুটো উজ্জ্বল হয়ে উঠল। যেন বেশ মজা পেয়েছেন এরকম ভাব করে উনি নড়ে চড়ে বসে হাতগুলো টেবিলে রেখে বললেন, ‘আজ তো সার্ভার ডাউন, আপনারও কাজ কম আমারও। সচরাচর কথা বলার সুযোগ হয়না। একটু বলে হাল্কা হই। আমি এক চলমান ইতিহাস বুঝলেন কিনা! লোকে আমার ব্যাপারে জানে কম। কিন্তু কৌতূহল খুব, তাই যা পারে রটায়।’
    ‘কিন্তু যা রটে তার কিছু তো বটে।’ উনার কথার মাঝে বাধা পরায় খানিক বিরক্ত হয়েও না থেমেই আবার বলে উঠলেন, ‘জন্মেছিলাম হুগলি জেলার হরিপালে। জন্ম ১৯৪৭। মানুষ হিসাবে আমি স্মরণীয় কিছু কাজ না করলেও আমার জন্ম কিন্তু স্মরণীয় বছরেই। একটু বড় হতেই টের পেলাম যে জন্ম সূত্রে আমি বনেদি বাড়ির ছেলে হলেও বাড়ির বনেদিয়ানা আর বিন্দমাত্র অবশিষ্ট নেই। যাকে বলে তালপুকুরে ঘটি ডোবেনা। বাবা নাকি ব্যারিস্টার! যদিও তাঁর কাজ ছিল শুধু একটা প্রকাণ্ড পুরানো ঘরে বইয়ের ভিড়ে বসে থেকে ছদ্ম ব্যস্ততা দেখানো। কোনও মক্কেল আমি দেখিনি কখনও। সংসারে চরম অভাব কিন্তু বাবার মানে বাধবে বলে উনি অন্য কোনও কাজ করবেন না। ক্লাস এইটে পড়ি যখন একদিন স্কুলে যাব বলে খেতে বসেছি বাবা এসে মাকে বলল কি হবে ভাত দিয়ে খানিকটা ছাই বেড়ে দাও পাতে। দোষ কিছুই করিনি। বাবার ধারনা ছিল চাকরি না পেলে পড়াশোনা করেও হয়ত অভাবের জীবনই জুটবে আমার। রাগে না খেয়ে বেরিয়ে এসে আর ফিরে যাইনি। তবে আজ বুঝি বাবার বলার কারণ কি ছিল।
    চোদ্দ ভাইবোনের সংসারে সবার থেকে ছোট হলেও আগাছার মত বেড়ে উঠছিলাম। সম্ভব ছিল না আর টানা বাবার পক্ষে। চলে এলাম এই রেল শহরে। বেশ কিছুদিন
    কাজ করেছি ঠিকের শ্রমিকের। তার পরে শুনলাম ডাক বিভাগের এজেন্সি পাওয়া যাচ্ছে। আবেদন মাফিক পেয়েও গেলাম। দিন গুজরান হতে থাকল। টাকা পয়সা ভালই রোজগার করেছি। ছেলেপুলে হয়নি আর স্ত্রীও একা ফেলে চলে গেল। আমিও এক পা বাড়িয়ে। ডাক এলেই যাব।’
    ‘তা কেউ নেই যখন এই বয়সে আর এতো খাটেন কেন? কথা শুনে যা বুঝলাম টাকার অভাব আপনার নেই। খাবার লোকেরই বরং অভাব। একটা অপবাদ শুনেছি, যদি কিছু না মনে করেন তো বলি। কথা শুনে আপনাকে বেশ ভাল মানুষই তো লাগছে। জানিনা কেন সবাই ওরকম বলে?’ ‘এই তো আপনাদের ভুল, খানিক কথা বলে বা শুনেই ঠিক করে নেন কাউকে ভুল ভাববেন না ঠিক। যাক বলুন...।’ ‘না মানে......, শুনেছি আপনি নাকি স্ত্রীর মৃতদেহ ফেলে রেখে এসে নিজের অসুস্থ শরীরে স্যালাইন হাতে ধরে অফিসে কাজ করেছেন। এটা কি খুব দরকারি ছিল?’
    ভারী গোল মুখে হাসিটা ফিরে এল। রঘুপতি সরস গলায় জবাব দিলেন, ‘ঐ যে বললাম সব রটনা। শুনুন তবে। যেদিন এই ঘটনা ঘটে তার দিন পাঁচেক আগে এই এলাকার বড় ব্যবসায়ি মোহিত কাপুড়িয়া আমায় তাঁর বাড়ি ডেকে পাঠান। অনেক দিনের চেনা কাস্টমার আমার। রশিদ ছাড়াই পাঁচ লাখ টাকা দেন আর বলেন যে ওটা সার্টিফিকেট হবে উনার ছেলের নামে। আমিও যথারীতি কাগজের কাজ ওখানেই মিটিয়ে নিয়েছিলাম। আর ঠিক তার পরের দিন থেকেই আমি ও আমার স্ত্রী কলেরায় অসুস্থ হয়ে পড়ি। ফলে সেই টাকা জমা করার মত সুযোগ পাইনি। আমার স্ত্রীর মৃত্যু ঘটে। সেই মুহূর্তে ঠিক করি টাকাটা যেন তেন প্রকারেণ আমাকে জমা করতেই হবে। কারণ আমার ভাল মন্দ কিছু হয়ে গেলে উনি হয়ত টাকাটা আর পাবেন না। কাপুড়িয়া সপরিবারে তখন দিল্লি গেছেন। এসে সেদিন উনার পাসবইতে যে জমা করব তাঁর উপায়ও ছিল না। কারণ পোস্ট অফিসের পাসবইতে তখন দুলাখের ওপর জমা করা যেত না, যেটা এখন হলে সম্ভব হত। তাই অগত্যা আমি সার্টিফিকেট করে দিতে বাধ্য হই। বাকীটা লোকমুখে ইতিহাস হয়ে আছে। সবাই এই বাইরের কাজটা দেখেছিল সেদিন। রোগশোক সয়ে কেন কাজটা করেছিলাম তা জিজ্ঞেস করেনি।’
    আমি ভীষণ লজ্জা পেয়ে কি যে বলব তা বুঝতে পারছি না। তখন উনিই বলে উঠলেন, ‘থামলেন কেন? আমি জানি এইটা যখন শুনেছেন আর শুনে থাকবেন। নমিনির কোনও গল্প শোনেননি? আমি এক বুড়ির টাকা নিজের নামে নমিনি করে নিয়েছিলাম এরকম কিছু? যদি নাও শুনে থাকেন তো আমি বলি শুনুন।’ আমার চোখে মুখে ইতস্তত ভাব ফুটে ওঠে। তবু উনি থামলেন না। ‘ঐ বুড়ির সাতকুলে কেউ ছিলনা। লেখাপড়া উনি জানতেন না। আমি নমিনির ব্যাপারে বুঝিয়ে বললে উনিই আমাকে বলেন যে কেউ নেই। তাই উনার সম্মতি নিয়েই আমি নিজের নাম নমিনি করি। সাক্ষী রেখেই। যাই হোক, উনি মারা গেলে কিছুদিন পরে কোথা থেকে এক দূর সম্পর্কের ভাইপো যে হঠাৎ উদয় হল জানিনা।সে টাকা দাবি করে বসলো। বুড়ির পারলৌকিক কাজ বিশেষ কিছু না করলেও আমি মুখাগ্নি করেছিলাম। আমিও রাজি হলাম না টাকা দিতে। ব্যস বাজারে গল্প এসে গেল আমি নাকি টাকা নিজের নামে হাতিয়ে নিয়েছি।’
    উনি যখন এতো কথা নিজে থেকে বলছেন তখন একটু সাহস করে বলেই দিলাম, ‘আর ঐ যে কিছুদিন আগে কাউন্টারের টাকা নিয়ে একটা গোলযোগ হয়েছিল সেটা?’ ‘ আরে আপনি পোস্টাল সার্ভিসে কাজ করেন না পুলিশ সার্ভিসে? প্রশ্নের শেষ নেই যে!’ একটু বিরতি। আবার বলে উঠলেন, ‘টিফিন দিই না তো তাই আর কি।’
    ‘টিফিন?’, আমি খানিক আকাশ থেকে পরার মত আঁতকে উঠলাম।
    ‘টিফিন মানে টিফিন। এতে চমকানোর কি আছে শুনি? হতে পারে আপনি নতুন বলে এগুলো শুনে এরকম লাগছে। জানেন না তো তাই বোধহয়। অনেক অফিসেই কাউন্টারে এজেন্টদের থেকে তাদের কাজের কমিশন বাবদ পাওয়া টাকার একটা শেয়ার দাবি করা হয় ক্লার্কদের তরফ থেকে। এখানে সেটা ক্যাশ না হয়ে কাইন্ড। মানে টিফিনের সময় এক এক দিন এক এক জন এজেন্ট টিফিন এর ব্যবস্থাটা করে আর কি। আমি দিই না। কেন দেবো? খাটি খাই। আমায় তাই নানা আইন দেখানো হয়। যেগুলোতে অন্যেরা ছাড় পায়।’
    ‘ঐটুকু ব্যাপারে এতো কিছু হয় নাকি? আপনি এটা কি সত্যি বলছেন? এই নিয়ে থানা-পুলিশ করা আপনার লাইসেন্স বাতিল।’
    এবার বেশ বিরক্ত হয়ে উঠে পরলেন রঘুপতি, বললেন, ‘যেটা সত্যি তাই আমি বলেছি। মানবেন কি না আপনি বুঝবেন নিজে। আমার লাইসেন্স ক্যান্সেল করেও তো লাভ হয়নি। আমি আবার যোগাড় করেছি। এখন উঠি। কাজ থাকলে আমায় খবর দেবেন।’
    দুহাত একটু ব্যস্ত ভাবে কচলে উনি উঠে পরলেন। ‘আসি’, বলে দুহাতে ব্যাগ তুলে নিয়ে একটু এগিয়ে দরজার দিকে যেতেই আমার চোখে পড়ল টেবিলে রাখা কাগজটা ফেলে যাচ্ছেন। আমি ডাকতেই ফিরে এলেন। ওটার কথা বলতেই হেসে আমার সামনে ওটা তুলে নিয়ে দেখিয়ে বললেন, ‘আমার লাইসেন্সের কপিটা।’ অনেক লেখার মাঝে একটা লেখা বড় বড় করে লেখা। সেই জন্যেই বোধহয় নজর কাড়ল। এজেন্সির নম্বরটা, ‘CA NO. – S 420 ’। ফোর টোয়েন্টি...............
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৫ মে ২০১৪ | ১৮০২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Anish | 125.119.195.226 (*) | ০৫ মে ২০১৪ ০৮:৪৬72921
  • বাহ বেশ লাগলো কিন্তু!
  • ARiN | 233.29.205.2 (*) | ০৬ মে ২০১৪ ০৩:১৪72927
  • darun hoyeche Avik da.. keep it up. erakom aro valo golpo asha korchi tomar kache.
  • Aditi Halder... darun laglo... | 125.250.100.214 (*) | ০৬ মে ২০১৪ ০৩:৫০72928
  • khub bhalo laglo.... all d best!!!!!
  • শ্রী সদা | 127.194.193.22 (*) | ০৬ মে ২০১৪ ০৪:০১72929
  • ঠিক পোষালো না। ইস্কুল ম্যাগাজিনের লেখা মনে হল।
  • অভীক | 125.253.25.210 (*) | ০৬ মে ২০১৪ ০৫:১৬72922
  • ধন্যবাদ অনীশ।
  • sudipta | 127.241.232.206 (*) | ০৬ মে ২০১৪ ০৭:৪৫72923
  • দারুন লাগলো অভীক দা
  • অভীক | 111.62.81.192 (*) | ০৬ মে ২০১৪ ০৭:৪৭72924
  • প্রিয় সুদীপ্ত সময় দিয়ে পড়েছ আমি আপ্লুত।
  • purabi mukherjee | 127.194.239.79 (*) | ০৬ মে ২০১৪ ০৯:১০72925
  • darun darun .besh onno dhoroner lekha
  • অভীক | 125.253.51.94 (*) | ০৬ মে ২০১৪ ০৯:৪৫72926
  • বেশ ভাল লাগছে পুরবীদি যে আপনাদের পছন্দ হয়েছে।
  • অভীক | 125.243.91.134 (*) | ০৭ মে ২০১৪ ১১:৪১72930
  • ধন্যবাদ অদিতি,অরিন। শ্রী সদা চেষ্টা করব ইস্কুল থেকে পাশ করতে, পড়ার জন্যে আমি কৃতজ্ঞ।
  • mainak bhowmick | 213.171.244.26 (*) | ০৮ মে ২০১৪ ০৫:৩৩72931
  • অসাধারন লাগলো
  • de | 69.185.236.53 (*) | ০৮ মে ২০১৪ ০৭:১০72932
  • ভালো লেগেছে -
  • অভীক | 125.250.62.125 (*) | ০৮ মে ২০১৪ ০৯:২২72933
  • মৈনাক পড়েছিস তাহলে!
  • অভীক | 125.250.62.125 (*) | ০৮ মে ২০১৪ ০৯:২৩72934
  • আর এক বন্ধু যিনি 'ভাল লেগেছে' বললেন উনাকেও ধন্যবাদ। ওনার নামটা বুঝতে পারলাম না। মাফ করবেন।
  • prabuddha das | 123.21.72.114 (*) | ১৬ মে ২০১৪ ০৭:৩৯72935
  • ভালো লেগেছে অভিক
  • Avik Mukherjee | 125.250.112.102 (*) | ১৮ মে ২০১৪ ০৪:৩০72936
  • থাঙ্কস প্রbuদ্ধ
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন