এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • পুলিশ, ওরে পুলিশ!

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ | ১৫৫১ বার পঠিত
  • [মহাজনপদাঙ্ক অনুসরণ করে খেরোর খাতা শুরু হচ্ছে বাংলালাইভে পূর্ব প্রকাশিত কিছু লেখা দিয়ে।]
    খেরোর খাতাঃ ১
    পুলিশ, ওরে পুলিশ!
    (এক)
    গৌরচন্দ্রিকা
    সাতসকালে রায়গড় স্টেশন থেকে মুম্বাই মেল চড়ে গরম কফির কাপে চুমুক দিয়ে সবে খবরের কাগজে চোখ বোলাচ্ছি, বুকটা ছ্যাঁত করে উঠল।প্রথম পাতায় হেডলাইনঃ রানিবোদলি গ্রামে নকশাল আক্রমণে পঞ্চান্নজন পুলিশ নিহত।
    বস্তারের যে জায়গাটার কথা বলা হয়েছে বিশেষ বাহিনীতে ভর্তি হয়ে গত মাসে সেখানেই গেছে আমাদের নাটকের দলের সক্রিয় সদস্য অবিনাশ চোপড়ে।অবিনাশ হিন্দি সাহিত্যে এম এ পাশ করে একটি স্কুলে পড়াচ্ছিল। কোন মাসে মাইনে পেত, কোন মাসে হরিমটর।এর মধ্যে বিয়ে করল আমাদের দলেরই একটি মেয়েকে। মেয়েটি হাসপাতালের নার্স।তার কয়েক মাস পরেই স্ত্রীভাগ্যে ধনলাভ। জুটে গেল বিশেষ পুলিশ বাহিনীতে সাব ইন্সপেক্টরের চাকরি।
    নিহতদের তালিকায় নামগুলো আঁতিপাতি করে দেখি। তারপর একটা শ্বাস ছাড়ি। ততক্ষণে আড়মোড়া ভেঙে রেলের কামরা জেগে উঠেছে। চারদিকে উত্তেজিত কথাবার্তা শুরু হয়ে গিয়েছে।
    : এ সরকার অপদার্থ, বস্তারকে মিলিটারির হাতে তুলে দেওয়া উচিৎ।
    :ছত্তিশগড়ের পান্তাভাতখেকো পুলিশ কোন কম্মের নয়।লড়াই না করে পালিয়ে গেছে।বিহার ইউপি থেকে শিক্ষিত বেকার ছেলেদের দলে দলে পুলিশে ভর্তি করে হাতে বন্দুক দিয়ে দেখুন, নকশালদের সোজা নকশালবাড়ি পাঠিয়ে দেবে।
    : মশাই, ট্রেনের কামরায় বসে এমন উড়ন ছুঁ কথাবার্তা বলা সহজ; যান তো দেখি অবুঝমাঢ় কি বাসাগুড়ায়!
    : ছত্তিশগড়ি পুলিশ ডরপোক? খালি পান্তাভাত খায় আর ঘুমোয়? হুঁ:!
    সেই ছকে বাঁধা কথাবার্তা; আমার একঘেয়ে লাগে। অন্যমনস্ক হয়ে পড়ি।

    (২)
    আমার চেতনায় পুলিশ নির্মাণ
    আরে আরে মারবি নাকি? দাঁড়া, একটা পুলিশ ডাকি!
    বাচ্চা রবীন্দ্রনাথকে ভাগ্নে সত্যপ্রসাদ পুলিশ আসছে বলে ভয় দেখাতেন।
    পুলিশ মানে খাঁকি টুপি, বেল্ট, বুটজুতো! লাঠি, বন্দুক!বেশ, কিন্তু আমার ফোর্ট উইলিয়মে চাকরি করা ফৌজিবাবা?উনিও তো খাঁকি পরেন, বেল্ট বাঁধেন, বুটজুতো পরে খটখটিয়ে চলেন।তফাৎ কোথায়? মাকে জিজ্ঞেস করি।
    মার সরল সমাধানঃ পুলিশ নিজের দেশের লোককে মারে, মিলিটারি দেশের দুশমনকে। কাজেই মিলিটারি, মানে তোমার বাবা, ভাল। তাই মিলিটারি সম্মান পায়, পুলিশ পায় না।
    একটু বড় হয়ে কানে এলঃ পুলিশ তুমি যতই মারো, মাইনে তোমার একশ বারো।
    অর্থাৎ পুলিশ শব্দটির সঙ্গে মারামারি ব্যাপারটা কেমন যেন জড়িয়ে রয়েছে।ময়দানে ফুটবল ম্যাচ নিয়মিত দেখতে যান, অথচ টিকিটের লাইনে ঘোড়সোয়ার পুলিশের তাড়া কিংবা ব্যাটনের গুঁতো খাননি এমন কেউ আছেন কি?
    কিন্তু দক্ষিণ কোলকাতার নাকতলায় লুঙ্গি পরে বাজার করা পুলিশ অনুকুলবাবুকে দেখে কোনদিনই ভয় পাইনি কেন?ষাটের দশকের শেষে বাংলাবন্ধের দিনগুলোতে খাঁকি হাফপ্যান্ট পরে শুকনো মুখে লাঠি ঘোরাতে দেখেও না।বরং নাদাপেটে অমন পোশাকে ওঁকে কমেডিয়ান জহর রায়ের মত লাগত।
    এল ঃসত্তরের দশক, মুক্তির দশক।
    কোলকাতার রাস্তায় রাস্তায়, অলিতে গলিতে, পুলিশ মরছে। মরছে আর মারছে, মারছে আর মরছে।
    তারপর?
    রক্তমাখা অস্ত্রহাতে যত রক্তআঁখি, শিশুপাঠ্য কাহিনিতে থাকে মুখ ঢাকি।শুনেছি, বিয়ের বাজারে জামাই হিসেবে পুলিশদের বাজারদর তখন বেশ পড়ে গিয়েছিল।
    ছত্তিশগড়ে এসে দেখি পুলিশজামাতা পেয়ে শ্বশুরের নাক বেশ উঁচু হচ্ছে। মাইনে যাই হোক উপরি টুপরি ভালই, মেয়ে সুখে থাকবে।

    (৩)
    উটের নুনু ঠিক কোনখানে?
    ট্রেনে করে আমরা কজন ভোপাল যাচ্ছি একটা ইন্টারভিউ দিতে। দুর্গ থেকে উঠলেন একজন পুলিশ অফিসার। কথায় কথায় বললেনঃ আজকাল যেসব ছেলেছোকরার দল নতুন নতুন গ্র্যাজুয়েট বা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট হয়ে পুলিশের চাকরিতে আসছে এরা সব ভুষিমাল, কিস্যু জানে না।কত করে বোঝাই যে দিনকাল পাল্টেছে, হিসেব করে চল। পুরো মাইনেটাই ব্যাংকে জমা কর, আর এদিক সেদিক করে যা পাবে তাই দিয়ে সংসার চালাও। কিন্তু শোনে কে! এরা জানে শুধু ছুটি আর বদলির দরখাস্ত লিখতে। কোন্ও বাস্তববুদ্ধি নেই। জিজ্ঞেস করুন: উটের নুনু ঠিক কোনখানে? বলতে পারবে না।
    পশুর অ্যানাটমি নিয়ে অমন উচ্চস্তরের জ্ঞানলাভের কথা শোনাচ্ছিলাম কোরবা শহরের সদর থানা বা কোতোয়ালির থানেদার উত্তম সিং রনধাওয়াকে। উনি রবিশংকর ইউনিভার্সিটিতে আমার সিনিয়র ছিলেন।উত্তমজী হাসলেন না।
    গম্ভীর হয়ে বললেনঃ রায়, একটা কথা ভেবেছিস, আমরা পুলিশেরা কত একা? আমাদের সমাজ কেন এড়িয়ে চলে? সেদিন রকের আড্ডায় বসে হেসে গড়াচ্ছিলি। কিন্তু আমি গিয়ে যেই বললাম ক্যা চল রহা ভাই? হমে ভি বাতাও, আমি্ও তোমাদের সঙ্গে হেসে নিই; ব্যস্, তোদের মুখে কুলুপ এঁটে গেল। কেন? পুলিশের কি হাসি পেতে নেই?
    হোলির দিনের কথাই ধর। সবাই একে তাকে রং মাখাবে, কিন্তু পুলিশ বাদ। আমরা সেদিন ডিউটি দেব, শান্তিরক্ষা করব।আমাদের ছুটি পরের দিন।সেদিন পুলিশেরা খালি নিজেদের মধ্যে হোলি খেলবে।মানে, পুলিশেরা খালি খাঁকি বৌদিদের রং মাখাবে। কেন? আমাদের কি পাড়ার অন্য বৌদিদের রং মাখাতে ইচ্ছে করে না?
    আর দেখেছিস, হেড কোয়ার্টারে থাকলে আমাদের কোন ছুটি নেই!আমাকে যদি তোর মেয়ের জন্মদিনের পার্টিতে যেতে হয় তো রোজনামচায় তোদের পাড়ার কাছে কোথাও ইনস্পেকশনে বা ইনভেস্টিগেশনে যাচ্ছি দেখিয়ে রেজিস্টারে এন্ট্রি করে তবে যেতে পারব।
    আমাদের শালা রাতে ঘুম পেতে নেই। পরপর দুদিন না ঘুমোলেও কিছু হয় না!এসব তো সামান্য ব্যাপার। আমাদের বৌদের জন্যেই তোদের বাঙালী কবি লিখে গিয়েছেন: ঘরে তার প্রিয়া একা শয্যায় বিনিদ্র রাত জাগে।
    এরপর কিছু উল্টোপাল্টা হয়ে গেলে রে রে করে ঝাঁপিয়ে পড়বে মানবাধিকার কমিশন।ওদের হিসেবে চোরডাকাত, খুনি, টেররিস্ট সবারই হিউম্যান রাইটস্ আছে, নেই শুধু পুলিশের। আমরা তো হিউম্যান নই।
    ওরা শেখাবে: অপরাধিদের বাবাবাছা, আপনি আজ্ঞে করে কথা বলতে হবে।ওরা আমার মা বোন তুলে মুখখারাপ করলে্ আমাদের বাধ্য ছাত্রের মত সোনামুখ করে শুনতে হবে, ওদের পেঁদিয়ে বিন্দাবন দেখানো চলবে না।


    আমি বলিঃ আপনি দাদা হিউম্যান রাইটস্ এর ব্যাপারটা কিচ্ছু বোঝেন নি।
    তারপর ঝাড়ি একটা মাস্টারজি মার্কা লম্বা লেকচার। রাজা জন, ম্যাগনাকার্টা, রাষ্ট্রসংঘ, চার্টার অফ হিউম্যান রাইটস্ পেরিয়ে সোজা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালে এসে দম নিই।
    রনধা্ওয়াজি আমাকে টেরচা চোখে দেখতে লাগলেন।আমার উৎসাহ কমে না। বলিঃ দোষ আপনার একার নয়, দোষ আপনাদের সিস্টেমের।ভাবটা হল যার একমাস পরে ফাঁসি হবে তার এখন থেকেই খাওয়া বন্ধ করে দাও।সরকারের খরচা বাঁচে।এখানেই মানবাধিকারের প্রশ্ন।আচ্ছা, আপনাকে দিয়েই শুরু করি। এই থানার লক আপে পুরুষ ও মহিলাদের আলাদা ব্যবস্থা আছে?
    : বিলকুল আছে; যা না, এগিয়ে গিয়ে দ্যাখ। দুধনাথ, রায়সাবকো ইঁহা কী ব্যবস্থা জরা দিখা দো।
    দুধনাথ বা থানার মুন্সীজির সঙ্গে ওঁর চোখে চোখে কিছু কথা হয়।ও আমাকে একটা লক আপের দিকে নিয়ে গিয়ে তালা খোলে।বলে, যান, দেখুন গে।
    চোখে পড়ে কোণের দিকে একটা গোটানো কম্বল আর একটা এলুমিনিয়ামের সানকি। কিন্তু বাথরুম পায়খানার ব্যবস্থা? কিছুই তো দেখছিনে!
    কানে আসে থানেদারের কণ্ঠস্বরঃ সবই আছে, আরেকটু এগিয়ে যা, ঠিক দেখতে পাবি।
    ভেতরে কোন বাল্ব নেই।তবু দু পা এগিয়ে যাই।এমন সময় পেছনে আওয়াজ, ঘড় ঘড় ঘড়াৎ।দুধনাথ লক আপের গেট বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
    আমার বুকটা ধড়াস করে ওঠে। বলি: রনধাওয়াজি, এটা কি হচ্ছে? অ্যাই দুধনাথ, তালা খোল, এসব ইয়ার্কি ভাল লাগে না।
    দুধনাথ বোবা চোখে তাকায়, তালা খোলার কোন চেষ্টা করে না।
    থানেদার উবাচঃ এটা ইয়ার্কি কে বললে?
    আমার গলা শুকোতে থাকে, এর মানে? মামার বাড়ি নাকি!
    : মামার বাড়ি কি শ্বশুরবাড়ি ভাল করে বুঝবি যখন ভাবীজি এসে তোকে জামিনে ছাড়িয়ে নিয়ে যাবেন।
    : আমার অপরাধ?
    : অপরাধ অনেক।
    এক, কোরবা বাজারের সব্জিওয়ালি জামুনবাঈকে যৌনসংসর্গের জন্য প্ররোচিত করা।দুই, উক্ত জামুনবাঈ অস্বীকূত হইলে তাহার সহিত জোরজবরদস্তি করা।তিন, প্রকাশ্য বাজারে তাহার গায়ে হাত তোলা।চার, উহার চিৎকার শুনিয়া বাজারে কর্তব্যরত পুলিশ সিপাহী দুধনাথ সিং শান্তিরক্ষা করিতে গেলে তাহাকে বাধা দেওয়া। পাঁচ, তাহাকে চপেটাঘাত করা। ছয়, তাহাকে মাতূগমনকারী নরাধম বলিয়া অভিহিত করা।
    দুধনাথ!এবার রায়জিকে এই ছয় অপরাধ পেনাল কোডের কোন কোন ধারায় দন্ডনীয় তা বুঝিয়ে দে।
    দুধনাথ বলির সময় পুরুতঠাকুরের মন্ত্র পড়ার মত কিছু অং বং চং বলে।আমার মাথা ঘুরতে থাকে, হাত পা কাঁপে। কাঁপা গলায় শেষ চেষ্টা করি।
    : এ সব ডাহা মিথ্যে। সব জানেন, শুধু শুধু ।
    : সত্যি মিথ্যে আদালত ঠিক করবে।
    :মানে? আপনি আমাকে কোর্টে তুলবেন!চালান পেশ করবেন?
    : আলবাৎ, আইন আইনের পথে চলবে।
    : প্রমাণ করতে পারবেন? তাছাড়া কে এই জামুনবাঈ? আমি চিনি না।আমি তো হাটবাজার করিনে, আমার স্ত্রী করে।কাজেই আপনার ওসব গুলপট্টি ওকে খাওয়াতে পারবেন না। ও আমাকে ভাল করে চেনে।
    : এগজ্যাক্টলি! বৌদি নিজে বাজার করেন। তাই তরকারিওয়ালি জামুনবাঈকে ভাল করে চেনেন।হার্ডকোর রেণ্ডি। আর ও হচ্ছে পুলিশের খবরি! গোপন খবর দেয়। মাসোহারা পায়। পুলিশের যেমনটি চাই তেমনই সাক্ষী দেবে।তারপর বৌদি তোকেও নতুন করে চিনবেন।চিন্তা করিসনে। যে কদিন জামিন না হয় তোর মানবাধিকারের হিসেবে সব সুবিধে পাবি।জামাকাপড়, টুথব্রাশ, খবরের কাগজ।বাড়ি থেকে খাবার আসবে। উকিলের সাথে কথা বলতে পারবি।
    আমার হাঁটু আর ভার সামলাতে পারে না, গরাদের ওপাশে মাটিতে বসে পড়ি।নিজের গলার স্বর চিনতে পারিনে।একটা ফ্যাঁসফেঁসে গলা বলেঃ আমায় ছেড়ে দিন, ঘাট হয়েছে।
    :দুধনাথ! লক আপের তালা খুলে দে। রায়কে বাইরে নিয়ে আয়। ও আর কোনদিন থানায় বসে মানবাধিকার নিয়ে লেকচার দেবে না।আরে! বেচারার হাত পা কাঁপছে।যা, ওকে মোটরবাইকে বসিয়ে বাসস্টপে ছেড়ে দে।
    দুধনাথ বলেঃ চলুন রায়জি, গাড়ি স্টার্ট করছি।

    গিন্নি দেখি আরও এককাঠি সরেস। তৎক্ষণাৎ আলমারি খুলে একটা বাঁধানো খাতা বার করল, তাতে কোলাজের ঢংয়ে খবরের কাগজের নানান কাটিং আঠা দিয়ে সাঁটা।
    :পুলিশ কী পারে আর কী পারে না দেখে না্ও।

    না:, আমি হাল ছাড়িনি। পুলিশ সম্বন্ধে শেষ কথা বলার সময় এখন্ও আসে নি।মহাশ্বেতা দেবী বলেছেন যে সংসদে একতূতীয়াংশ মহিলা হলে সেশন অনেক সংযত ও উন্নতমানের হবে।
    আমার বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয় যে ওখানে সনিয়া গান্ধী, রেণুকা চৌধুরি, সুষমা স্বরাজ, বূন্দা কারাতদের সংখ্যা বেড়ে গেলে অমুকভাইয়া বা তমুকউদ্দিনদের হাতের গুলি ফোলানো বা বিরোধীদের সংগে শকারবকার বিনিময়ে কিছুটা ভাটা পড়বে।
    মাথায় টিউবলাইট জ্বলে ওঠে।তাহলে পুলিশ কেন বাদ যায়?
    ইউরেকা! চাই পুলিশবাহিনীতে তেত্রিশ পার্সেন্ট মহিলা আরক্ষণ! তবেই পুলিশি বর্বরতা কমবে, পুলিশ আরও গণমুখী হবে।মার দিয়া কেল্লা! এই আইডিয়াটা লিখে পাঠাতে হবে।পাঠাবো দুজনকে, মাননীয়া কিরণ বেদী ও মাননীয়া মমতা ব্যানার্জীকে।
    কদিন পরে যেতে হল থানায়।রাতের অন্ধকারে আমার পরিচিত এক ভদ্রলোকের গলায় ফাঁস লাগিয়ে মারার চেষ্টা হয়েছে। হামলাকারীরা পরিচিত। কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক দলের চাপে পুলিশ ডায়েরি নিচ্ছে না।
    থানায় মুন্সীজি বললেন: দেখুন, আপনি যে ভাবে লিখে এনেছেন তাতে কেসটা উইক হয়ে যাবে।শব্দগুলো আর ঘটনার ক্রমপরম্পরা একটু বদলে নিলে এটাই অন্তত: হাজার চল্লিশের কেস, কী বুঝলেন? আর আপনি যেমন লিখে এনেছেন তাতে মাত্র দশহাজার, ক্যা সমঝে আপ?
    বলতে লজ্জা করছে, আমাদের এত বড় থানার স্টেশনারি খরচা বাবদ মাসিক বরাদ্দ মাত্র চল্লিশ টাকা! সেতো মাসের পহেলা হপ্তাতেই শেষ হয়ে যায়। এখন মাসের কুড়ি তারিখ। কাজেই কাগজ কার্বন পেপার ইত্যাদি কেনার জন্যে কিছু দিন, আর স্টাফদের জন্যে নাস্তা। তারপর দেখুন মজা!
    শালেলোগোকোঁ হাতকড়ি লগওয়াকে দোচার লাথমুক্কা লাগাতে হুয়ে ঘর সে খিঁচকর লায়েংগে। তব না উনকে ঘরওয়ালোঁ নে হাতকড়ি খুলওয়ানে কে লিয়ে অউর কুছ মালপানি দেঙ্গে?
    (ব্যাটাদের হাতকড়ি পরিয়ে ঠুঁসোলাথ মারতে মারতে ঘর থেকে টেনে আনা হবে, তবে তো ওদের ঘরের লোকজন কিছু মালপানি উপুড় করবে?)
    আমি পকেট থেকে দুটো নম্বরি নোট বের করে চা জলখাবারের নামে একজন সেপাইয়ের হাতে দিলাম।
    এমনসময় থানার ভেতরে শোনা গেল এক চাপা উল্লাসধ্বনি।তাকিয়ে দেখি একজন সেপাইয়ের পেছন পেছন সলজ্জমুখে ঢুকছেন দুই মহিলাপুলিশ।ভাবটা যেন দ্বিরাগমনের পর নতুন বৌ ছোটবোনকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ফিরছে।
    তক্ষুণি চাওয়ালা এসে সবাইকে চায়ের গেলাস ধরিয়ে দিল।তারপর পাশের একটি কামরায় ছোটবোনপুলিশ একটু গড়িয়ে নিলে।আর পেছনের বারান্দায় জনতা স্টোভ জ্বেলে বৌপুলিশ সবার জন্যে খিচুড়ি চড়িয়ে দিল।
    আমি আলাপ জমাই।আপনারা কোন কেসের ব্যাপারে এসেছেন?
    : বড়সড় সিঁদেল চুরির কেস।কোরবা শহরে কেলো করে জবড়াপাড়ায় গা ঢাকা দিয়ে আছে।দলের লীডার একজন মেয়েছেলে, তাই আমরা এসেছি।
    : আপনার বেশ সাহস তো!
    :দূর! একা যাব নাকি?দুজন সেপাইয়ের মোটরবাইকের পেছনে বসে যাব।
    উনি শরীরে ঢেউ তুলে হাসলেন।
    মহিলাদের উপস্থিতি যে থানাকে একটু সভ্যভব্য করে তুলবে আমার এই বিশ্বাস দূঢ হল।

    বিকেলে হঠাৎ উদয় হলেন আমার কলেজ জীবনের দুই দোস্ত, বিজয় আর প্রসাদ।রাত্তিরে গিন্নির কূপায় খ্যাটন বেশ ভাল হল।মে মাস। গরমকাল।বেশ গরম হাওয়া দিচ্ছে, ঘুম আসছে না।তাই আমরা তিনবন্ধু রাস্তায় একটু হাঁটাহাঁটি করতে বেরোলাম।পায়ে পায়ে অনেকটা এগিয়ে এসেছি। রাত বারোটা, ফিরতে হবে।পাড়াটা একটু নির্জন,আলোগুলো প্রায় নিভে গেছে।
    হঠাৎ কেউ যেন কঁকিয়ে এল।কোথায়? কোনদিকে, নাকি মনের ভুল!এবার একটা আর্তনাদ, তারপর চাপা গোঙানি।কোথাও কোন ভুল নেই, আওয়াজটা আসছে সামনের কোতোয়ালি থানা থেকে।
    চারদিকের নিকষকালো অন্ধকারের মধ্যে প্রায় দেড়শো মিটার দূরের থানার আলোজ্বলা হলঘর টিভির পর্দার মত স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। দুজন সেপাই একটা গেঁয়ো লোকের হাত টেনে ধরে রয়েছে আর একটা খেঁটে লাঠি দিয়ে তাকে মেরে পাটপাট করে দিচ্ছে সকালে আলাপ হওয়া সেই বৌপুলিশ!মারতে মারতে খুলে যাচ্ছে তার শাড়ি।হাঁফাতে হাঁফাতে কাপড়চোপড় সামলে নিয়ে জলটল খেয়ে আবার মার!
    না, মহিলা পুলিশমন্ত্রী দ শ্রীমতী কিরণ বেদীকে সেই চিঠি আজও পোষ্ট করা হয়ে ওঠেনি।
    (আগামী কিস্তিতে সমাপ্য)

    (৫)
    ভয়ের রং খাঁকি!
    বর্ষশেষ।৩১ ডিসেম্বরের রাত।মোবাইল ও এসএমএস এর দৌলতে নিমন্ত্রণ পেয়ে গিন্নির ও বাচ্চাদের চোখ এড়িয়ে পৌঁছেচি আমার এক বন্ধু গজ্জুশেঠের হোটেলে।মধ্যরাতে নববর্ষ বরণ করতে হবে।জড়ো হয়েছি আমরা ক’জন্– কলেজজীবনের জনাদশেক বন্ধু।একটা হলঘরে মাটিতে গদি আঁটা বিছানা, তাকিয়া।সামনে প্লেটে সাজানো ফিশফ্রাই,কাবাব,টিকিয়া ইত্যাদি পাকস্থলীকে বিরক্ত করার মত কিছু খাদ্যদ্রব্য।গেলাসে গেলাসে রঙিন জল।অদীক্ষিতদের জন্যে কোকস্।
    কিন্তু একি!একপাশে হাসিমুখে বসে জনাদুই খাঁকি পোশাক।কেন?এদের কে ভিসা দিয়েছে?
    আমার বাঁকা ভুরু দেখেই গজ্জুশেঠ সাফাই গাইল– ‘এরা দুজন আমার বিশেষ অতিথি’।
    আমি রাগ চাপতে পারলাম না।এখন এদের সামনে মেপে মেপে কথা বলতে হবে।খেয়াল রাখতে হবে আমিষ চুটকিগুলো পলিটিক্যালি কারেক্ট হচ্ছে কি না! কী চাপ!
    গজ্জু হেসে বলল–‘ শান্ত হয়ে বস দিকি!একটু পরে টের পাবি যে এঁরা লোকাল থানার কেউ ন’ন।বিলাসপুরেই বাড়ি, ছুটিতে এসেছেন।কাজেই বিশ্বাস করতে পারিস যে এঁরা আমার হোটেলে হপ্তা নিতে আসেননি।এসেছেন পুরনো বন্ধুত্বের খাতিরে’।
    লম্বাটে চেহারার তিওয়ারি বললেন– বুঝতে পারছি খাঁকি পোশাকে আপনার এলার্জি। বেশ, খুলে রাখলাম’। এই বলে তিনি গেঞ্জি গায়ে বসে পড়লেন।সবাই খেলার ক্রিকেট মাঠের ‘হাউজ দ্যাট’ এর মতন চেঁচিয়ে উঠল।
    চুটকি, পান–ভোজন, একে তাকে চিমটি কাটা–– এর মধ্যে কেউ গান ধরল।দু’পাত্তর চড়ানোর ফলে ওর গলা যেন ভুল স্পীডে চলা পঁচাত্তর আরপিএম এর গ্রামোফোন রেকর্ড।পাবলিক হেসে গড়াচ্ছে।কেউ বলছে গুলাম আলির গজল চাই তো কেউ বলছে সুফি শুনবো।
    এর মধ্যে দেখি গজ্জু ওই তিওয়ারির কানে কানে কী যেন গুজগুজ ফুসফুস করছে আর পুলিশ–তিওয়ারি নতুন কনেবৌটির মত সলজ্জ মাথা নাড়ছে।
    তারপর পাশের কামরা থেকে এসে গেল একটি হারমোনিয়াম। আর তাজ্জব কী বাৎ, গজব কী বাৎ, ওই বাদ্যযন্ত্রটি এসে নামল সোজা ওই পুলিশ ইনস্পেক্টরের সামনে!
    তাকিয়ে দেখি হারমোনিয়ামে হাত ছোঁয়াতে্ই ওর চেহারা বদলে গেছে।খানিকটা বেলো করে চাপা গলায় একটু আলাপ করে ধরল–‘তুম আপনি রঞ্জোগম, আপনি পরেশানি মুঝে দে দো।কুছ দিন কে লিয়ে ইয়ে নিগেবানি মুঝে দে দো’।
    আমরা ভুলে গেলাম গালগল্প। সুর চড়ছে।
    ‘তোমার সব ব্যথার বোঝা, দু:খের ভার আমায় দাও’।
    গলা ছুঁয়ে যাচ্ছে তারার কোমলগান্ধার।
    ‘ম্যায় দেখুঁ তো দুনিয়া তুমে ক্যায়সে সতাতী হ্যায়?কুছ দিনকে লিয়ে ইয়ে নিগেবানি মুঝে দে দো’।
    আমার বুকের ভেতরটা কেমন মুচড়ে মুচড়ে উঠছে।
    ‘দেখি তো তোমায় কে এত কষ্ট দেয়?ক’দিনের জন্যে তোমার সব ভার আমায় দাও’।
    কিসের এত কষ্ট?খাঁকি পোশাক তো দু:খ দেওয়ার জন্যে, পাওয়ার জন্যে তো নয়।
    সাতদিন পর সাতসকালে স্টেশন গেছি, কোলকাতা থেকে মা আসছেন।দেখি সেই তিওয়ারিজি।পরনে যথারীতি খাঁকি ধরাচূড়া। আমাকে দেখেও দেখলেন না প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে কামরার জানালা দিয়ে হাত গলিয়ে আদর করে যাচ্ছেন একটি ষোড়শীকে, আর কিমাশ্চর্য্যম!রুমাল দিয়ে চোখ মুছে চলেছেন। কাঁধে চাপ পড়তেই দেখি গজ্জু শেঠ।বন্ধুর জন্যে নিয়ে এসেছে কিছু আপেল আর কমলালেবু।কী ব্যাপার রে? গজ্জু ইশারায় সরে আসতে বলে।তারপর ব্যাখ্যা করে:
    তিওয়ারির হয়েছে মাওবাদী বেল্টে ট্রান্সফার।অনেক ধরাধরি করেও আটকাতে পারেনি।এদিকে ওই একটি মেয়ে। ভিলাইয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে।বাপের সঙ্গে দেখা করে ফিরে যাচ্ছে।পরশুদিন । তি্ওয়ারি গিন্নি স্বামীর ললাটে তিলক লাগিয়ে ‘জয়যাত্রায় যাও গো’ বলে বস্তারের নারায়ণপুরের জন্যে টা–টা করবে আর প্রার্থনা করবে যেন জগদলপুরের দন্তেশ্বরীমাতা স্বামীকে ভালোয় ভালোয় বছরখানেকের মধ্যে বিলাসপুরে ফিরিয়ে দেন।আজকাল ছত্তিশগড়ে পুলিশের জীবনের কোন ভরসা নেই যে!

    আমি পুলিশকে আর ডরাইনে; তা সে ধরাচূড়া পরেই থাকুক বা না পরে।
    বুঝে গেছি যে খাঁকি হল পুলিশের সাপের খোলস, ওদের প্রোটেকশন।
    কিন্তু পুলিশ সামনে এলে মনে মনে প্রয়াত কবি তুষার রাযের দেওয়া মন্ত্রটি বিড়বিড় করি:
    ‘পুলিশ!ওরে পুলিশ!
    কবির সামনে আসার আগে টুপিটা তোর খুলিস্’।
    ============================*******======================================
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ | ১৫৫১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Pubদা | 202.193.171.150 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৩৫46836
  • ছোটোবেলায় কেউ একটু বেশী ডানপিটে - মানে মারামারি করবার মতন ছেলেপিলে গুলোকে বলা হত - পুলিশ হবে এ ছেলে । পুলিশ ও ঠ্যাঙ্গানী দুটো শব্দই সমার্থক ছিল ।
    তবে আপনার শেষ লাইন পরে এক শিক্ষক আত্মিয়ার কথা মনে পরে গেল । আজকের দিনে শিক্ষক আর পুলিশের অবস্থা একই রকম ।
  • সিকি | 131.243.33.212 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:৪৩46837
  • ভারতে পুলিশের অবস্থা খুবই খারাপ, সবই জানা। তা সেগুলো কি সাধারণ মানুষ, যারা কোনওভাবেই "অপরাধী" নয়, তাদের সাথে নোংরা ব্যবহার করাটাকে জাস্টিফাই করে?
  • Ekak | 125.115.139.226 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ১০:০৫46838
  • ভারতের পাবলিক যেমন পুলিশ ও তেমন তাই পাবলিক ও সেমন । এই আরকি :/
  • Ekak | 132.167.208.228 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ১০:১৭46839
  • সাইড বার এ দেখাচ্ছে এককের পরে একজনের নাম যাঁর পোস্ট এখানে দেখছিনা ! মদারেতেদ পোস্ট ?
  • | 18.37.227.159 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৩ ১১:৩৮46841
  • দুগ্গাপূজা গেল ইদ গেল, কোলকাতার বুকে টানা দিনদশ রাত জাগল পুলিশ।
    কোনও কোনও দিন টানা 12 ঘণ্টা 14 ঘণ্টা দাঁড়িয়ে কাটাল। পুলিশের ঘুম পেতে নেই, খিদেও নেই।
    ডিউটিস্থলের কাছাকাছি একটা চাউমিনের স্টলে হয়তো চাউ খাচ্চে, শান্তশিষ্ট ভদ্র যুবক পাশ দিয়ে যাবার সময় শুনিয়ে শুনিয়ে বলে গেল বোকা**টা চাউমিন খাচ্চে....
  • সিকি | 131.243.33.212 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৩ ১১:৪৮46842
  • সেটা অবশ্যই ঐ লোকটার দোষ। কিন্তু পুজোর সময়ে পুলিশ ১২ ঘণ্টা ১৪ ঘণ্টা কি ফ্রি-তে দাঁড়ায়? মাইনে পায় না দাঁড়াবার জন্য?

    আমাদেরও কাজের চাপে অনেক সময়ে খিদে সইতে হয়, রাত জাগতে হয়। কই আমাদের জবকে তো কেউ গ্লোরিফাই করে না? আমরা তো সে জন্য অত রেলা নিই না? তা হলে পুলিশ কেন অত বাজে রেলা নেয়?
  • π | 118.12.173.94 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৩ ১২:৩৫46840
  • আমিও দেখছি । কেন কে জানে !

    ' রাজা জন, ম্যাগনাকার্টা, রাষ্ট্রসংঘ, চার্টার অফ হিউম্যান রাইটস্ পেরিয়ে সোজা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল' ... মাস্টারজি মার্কা লম্বা লেকচার ও শুনতে চাই !
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন