অশোকতরু মুখোপাধ্যায় হুইলচেয়ারে ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না। তার ছায়াসঙ্গী হল বিনোদ। বিনোদবিহারি জাতে বিহারি। সে-ই অশোকতরুবাবুর অন্ধের যষ্ঠি। রান্নাবান্না, বাজারহাট থেকে শুরু করে অশোকতরুবাবুর যাবতীয় পরিচর্যা সবই করে সে। কাজের একজন মাসি আছে অবশ্য। বাসন মাজা, ঘর মোছা, জামাকাপড় কাচার জন্য।অশোকতরুবাবু রুরকি আই আই টি -র অধ্যাপক ছিলেন মেটালার্জি বিভাগে। ষাট বছরে রিটায়ারমেন্ট। তার পরে বছর তিনেক এক্সটেনশান। কিন্তু স্বাভাবিক মেয়াদই তিনি শেষ করতে পারেননি। ... ...
Environmental Refugee/Migrant কথাটা আমাদের কাছে নতুন নয়। যারা পরিবেশ নিয়ে খোঁজ খবর রাখেন তাঁরা এ বিষয়ে পূর্ব পরিচিত। আমরা মতো মোটামাথার লোকজন বোধহয় একটু কনফিউজড, কেউ বলছেন কংক্রিটের বাঁধ চাই, কেউ বলছে ম্যানগ্রোভ গাছ পুঁততে হবে, মাটির বাঁধ চাই নয়তো পরিবেশের ক্ষতি হবে। নানা মুনির নানা মত কিন্তু সুন্দর বনের ভবিষৎ থেকে যায় অন্ধকারে। ... ...
আরও তীব্রতায় আছড়ে পড়ছে মারী ও মৃত্যু,এতদিন আমরা ব্যস্ত ছিলাম পবিত্র কুম্ভস্নান, গণতান্ত্রিক উৎসব এবং যুদ্ধের আগেই জয়োল্লাসে,সুতরাং আপাতত গঙ্গা,যমুনা দিয়ে লাশ বয়ে যাক। আমরা অন্ধের মতো শুধু কল্পিত শত্রুকে আঘাত করেছি হাওয়ায় হাওয়ায়,এখন প্রাণবায়ুর জন্য হাহাকার আর ওষুধের জন্য হাত পেতে আছি।চারদিকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দরজা,প্রভুরা নিরুদ্দেশ। যারা সতর্ক করেছিল, তাদের অবজ্ঞা করেছি,আমরা বুঁদ হয়েছিলাম আফিমের অমোঘ নেশায়।এখন চোরাবালি টেনে নিচ্ছে পা, রাতের স্বপ্নভেঙে দিচ্ছে উদ্যত ক্ষুধা আর মৃত্যুভয়।আমাদের কাণ্ডারী লাশের ওপর গড়ছে প্রাসাদ, আর আমাদের নৌকা ডুবে যাচ্ছে মৃত্যুর সমুদ্রে। ... ...
সোশ্যাল অ্যানথ্রোপলোজিস্ট জোসেফ ড্যানিয়েল আনউইন ৫,০০০ বছরের ইতিহাস ঘেঁটে ৮৬টি আদিম গোত্র এবং ৬টি সভ্যতার ওপর এক পর্যালোচনা করেন।.আনউইন এ গবেষণা শুরু করেন সভ্যতাকে অবদমিত কামনা-বাসনার ফসল হিসেবে দাবি করা ফ্রয়েডীয় থিওরি যাচাই করার জন্যে। কিন্তু ফলাফল দেখে হকচকিয়ে যান আনউইন নিজেই।.১৯৩৪ সালে প্রকাশিত Sex & Culture বইতে দীর্ঘ এ গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন তিনি। বিভিন্ন সভ্যতা ও সেগুলোর পতনে আনউইন দেখতে পান একটা স্পষ্ট প্যাটার্ন......কোনো সভ্যতার বিকাশ সেই সভ্যতার যৌনসংযমের সাথে সম্পর্কিত। যৌনতার ব্যাপারে কোনো সমাজ যত বেশি সংযমী হবে তত বৃদ্ধি পাবে বিকাশ ও অগ্রগতির হার।.সহজ ভাষায় বললে , সভ্যতার বিকাশের জন্য সুনির্দিষ্ট নিয়মে বাঁধা স্বাভাবিক যৌনাচার আবশ্যিক। ... ...
২১শে ফেব্রুয়ারী, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ফেসবুকে বড়সড় হ্যাজ নামাব... এঃ! দেখেছ? ফের 'হ্যাজ নামাব'!! আজকের দিনেও? ছিঃ! শেম অন মি... হ্যাঁ, যতই চেষ্টা করি, আমাদের আবেগ-টাবেগ সব এখন হিন্দি কিম্বা ইংরেজিতেই প্রথমে আসে। দরকারে- অদরকারে বাঙালী এখন হিন্দি কিম্বা ইংরেজীতেই গ্ল্যামার খোঁজে। কিন্তু, তাতে দোষের কী? ছেলেপুলেরা হিন্দিতে কথা বলুক, ইংরেজিতে ভাবনাচিন্তা করুক, ফরাসী কায়দায় হাঁচুক-কাশুক, অসুবিধে কী? ভাষাই তো। একটার জায়গায় পাঁচটা শিখলেই-বা ক্ষতি কী? ক্ষতি নেই। কিন্তু, বাংলাটা পড়তে পারাটা যে বড্ড জরুরী। বাংলা সাহিত্যের মত ধনী সাহিত্য খুব কম ভাষায় আছে। আমি নিজে চেষ্টা করে চলি, বাচ্চাদের বাংলা গল্প-উপন্যাস-নাটক পড়ে শোনাতে। সপ্তাহে একটা ক্লাস অফ করেও ওদের দিয়ে কবিতা পড়াতে, নাটক করাতে। ... ...
১.আগুনের সাথে কয়লার যে সম্পর্ক, তোমার সাথে আমার সমপর্যায়েরই সম্পর্ক। আমি কয়লা তুমি আগুন , তুমি ছাড়া বোঝা যায় না আমার শক্তি আসলে কতগুন ।২. যদি হ্যারিকেন ফিতেয় কেরোসিন না পোড়ে , যদি উনুনে কাঠ কয়লা না পোড়ে মোমের মাঝে সুতোটাও না পোড়ে তবে তার থেকে আলো বেড়োয় না। তেমনি টানাপোড়েনমুক্ত প্রেম হয় না। হতে পারে না। টানাটানিতে অন্তর পোড়ে। না পুড়লে প্রেম হয় না। আলো হয় না। সম্পর্কও হয় না।৩.সারা দেশে যতো চোর-ডাকাত রয়েছে তারা সারা জীবনে যে পরিমাণ সম্পদ আয় করে- একটি দূর্নীতিবাজ সরকার একদিনেই তার চেয়ে অনেকগুণ বেশী সম্পদ লুট করে। দূর্নীতি, লুটপাট, গুম, খুন, গণহত্যা, পুলিশী ... ...
বহুবছর এই লাইনে যাতায়াত। কলকাতায় কাজ থাকলে সারাদিনের কাজ সেরে ফেরার পক্ষে এর জুড়ি নেই। সপ্তাহের কজের দিনগুলোতে ট্রেনে জায়গা পাওয়া যেত না। ডেইলি প্যাসেঞ্জারদেরদের ভিড়। জায়গা পাওয়া একটা টেনশন এর বিষয় ছিল।
বিমল করের 'সুখ' গল্পটার কথা মনে করিয়ে দেয় এই ছবি।বছরের এই দিনটি এঁদের কাছে না গেলে মন বর্ণহীন হয়ে ওঠে।যাওয়া ঠিক হবে কি?দ্বিধান্বিত।ফোন করি।এসো।আমার বাবা-মায়ের কাছে গেলে যে শান্তি পেতাম, এ যেন তার মতোই।কলকাতার শেষ সামাজিক মানুষ। শেষ সামাজিক দম্পতিও। আমাদের পার্টি সমাজ, ক্লাব সমাজ, গোষ্ঠী সমাজ, ধর্মীয় সমাজ, ফেসবুকে খাপে খাপ সমাজ --- সামাজিক সমাজ মরে গেছে।শঙ্খ ঘোষের বাড়িতে সবাই যেতে পারতেন। পরস্পরের গলা কেটে নেওয়ার ইচ্ছে নিয়ে পাশাপাশি বসে থাকতে বাধ্য হতো লোকে, লেখকে। ... ...
নমস্কার ভদ্রমণ্ডলী । মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পরে আবার ফিরে এলাম । শেষ চৈত্রের এই দ্বিপ্রহরে কোকিলপুর কবিতা উৎসবের দ্বিতীয়ার্ধে আপনাদের সকলকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাই । যদিও আবহাওয়া এখন এমনিতেই যথেষ্ট উষ্ণ, তথাপি আমরা আপনাদের অভ্যর্থনায় কোনোরকম শীতলতা থাকুক এটা চাইছি না । বাংলার নানা প্রান্ত থেকে আপনারা যে এই অখ্যাত গণ্ডগ্রামে কবিতা পড়তে এবং শুনতে ... মাফ করবেন, তথ্যে একটু ভুল ছিল, শুনতে এখনও পর্যন্ত কেউ আসেননি । সবাই পড়বেন । ... ...
দামোদর নদীতে বান আসছে। / বাঁধের রাস্তা। / কাঁধে স্কুলের ব্যাগ। / চটি খুলে এক হাতে নিয়ে অন্য হাতে ছাতার ভার সহ্য করে
বহুমত ও বহুস্বরঃ কঃ বর্ষাকালে সজনেডাঁটা খাওয়া ঠিক নয়, আমার বিশ্বাস। খঃ আমার গভীর বিশ্বাস যে খাওয়া যেতেই পারে ও খাওয়া উচিত আমি বলব। গঃ গভীর বিশ্বাস হলেই কি পাওয়া যায় বর্ষাকালে? ঘঃ পাওয়া যায় তো আমাদের ওদিকে। গঃ ওগুলো সজনে ডাঁটা নয়। অন্য কিছু। কঃ আমি বিশ্বাস করি, পুঁই ডাঁটা ছাড়া অন্য কোনও ডাঁটা বর্ষাকালে... ... ...
রাজ্যে চিত্রটা আজ ভয়াবহ। অনেকেই এখানে প্রকৃত দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতে পোস্ট করছে। এক ধরনের প্রতিক্রিয়াশীল চক্র এটা। সম্পূর্ণ প্রশাসনিক ও সরকারি ব্যর্থতা এটা মেনে নিতে হবে। কারণ কত হাজার কোটি টাকা কবে বরাদ্দ হয়েছিল সুন্দরবনের নদীবাঁধ নির্মানের জন্য। এখনও ১২ বছর পরেও কেন সেই কাজ সম্পূর্ণ হল না এই প্রশ্নই সমীচিন এখন। আয়লা থেকে ইয়াস এর মত ঝড়ের কাছে অসহায় ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে। আর তোমাদের ত্রান নিয়ে ভিক্ষারির মতো বেঁচে থাকবে? ... ...
ঝিকিমিকি ঝিকিমিকি ................................ লাল নীল সবুজ কমলা / সব রঙ মিশে হয় বেরঙা / মানে — সাদা। / আবার রঙ যখন অগোচর / তখন ... কালো।
আমেরিকান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গ্রাহাম টি এলিসন 2017 সালে Destined For War: Can America and China escape Thucydides's Trap? নামে একটি বই লেখেন। ওই বইতে তিনি 'থুসিডাইডিস ট্র্যাপ' নামে একটি শব্দ বহুল ব্যবহারে জনপ্রিয় করে তোলেন।.বিশ্ব ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য নিয়ে কোন উদীয়মান পরাশক্তি ও বর্তমান পরাশক্তির মধ্যে যে উত্তেজনা ও ছায়া যুদ্ধ চলে তাকে বর্ণনা করতে তিনি থুসিডাইডিস ট্র্যাপ শব্দটি ব্যবহার করেন।.দুটি পরা শক্তির ভেতরের উত্তেজনা এইভাবে প্রথম ব্যাখ্যা করেন গ্রিক জেনারেল ও দার্শনিক থুসিডাইসিস। ইতিহাসখ্যাত পেলোপনেশিয়ান যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল গ্রীসের দুটি পরাশক্তি এথেন্স এবং স্পার্টার মধ্যে। তখন স্পার্টা ছিল ডমিনেন্ট পাওয়া এবং এথেন্স ছিল রাইজিং পাওয়ার।.অর্থনৈতিক, সামরিক ও রাজনৈতিকভাবে এথেন্সের ... ...
রেললাইনটাকে একটা সাপের মত লাগে রুকসানার। এখান দিয়ে সোজা গিয়ে কোশখানিক দূরে কেমন বেঁকে গাছপালার আড়লে ঢুকে গেছে। রোজই দেখে আর রোজই এই কথা মনে হয় ওর। সাপের মতই রেলগাড়িও ছোবল মারে সুযোগ পেলেই – তাহমিনার ভাইটাকে গত বছরেই খেল। কখন হুট করে ট্রেন চলে আসে বোঝা দায়। তাই লাইনের একেবারে ধারে না বসে একটু সরে বসে ও – ঝোপঝাড়ের আড়ালে। প্রত্যেক ট্রেনেই কিছু লোক থাকে যারা এই ভোরের সময়টা হাঁ করে জানলা দিয়ে তাকিয়ে থাকে - নির্লজ্জের মত। মনে মনে খিস্তি দেয় রুকসানা – যেন একটা কী দেখার জিনিষ। পোড়ারমুখো নিখাউন্তির দল সব।আজও ঝোপের ধারে এসে বসতে যাবে, হঠাৎ ... ...
আসুন আজ কিছু নতুন বিষয় নিয়ে কথা বলি। নতুন ? না... খুব নতুন নয় , সেই একই গল্প। পুঁজির সর্বগ্রাসী লোভ, নিজেদের সম্পদের পাহাড় আরও বাড়িয়ে তোলার পৈশাচিক লালসা এবং তাদের লালসা চরিতার্থ করার জন্য তাদের দ্বারা পরিচালিত রাষ্ট্রযন্ত্রের শোষণ। শোষণ প্রকৃতির, শোষণ আদিবাসীদের, শোষণ সাধারণ মানুষদের। আমি দেখতে পাচ্ছি হয়তো আবার একটি নিয়মগিরি, বাস্তার উঠে আসবে ভারতের মানচিত্রে। ... ...
ঠাকুমা কাক ভোরে উঠতেন। তারপর চান করে, সূর্য প্রণাম করে রোজকার পূজা করতেন। বাতাসা প্রসাদে আমাদের দিন শুরু হত। আমরা ভাইবোনেরা ছিলাম একে অপরের বন্ধু, সবচেয়ে স্নেহময়ী বন্ধু - ঠাকুমা কখনো ঝুলি থেকে গল্পের মণিমাণিক্য উপহার, কখনো নাটুকে ছড়া বলতেন যেমন - 'নাকচাবি গহনা কবে দেবে বলো না? যদি বল কাল দেবো ভোরে উঠে চলে যাবো, বলে যাবো না। ' ... ...
ডলি আর আমার প্রেম মহাকাব্যিক। সেই সময়টায় ডলি আর আমাকে যখন তখন যত্রতত্র যেভাবে দেখা যাচ্ছিল, তাতে এ ঘটনা ঘটারই কথা! ওরকম একে অপরের দিকে নিষ্পলক, তা-ও যেখানে সেখানে। ঠিক ভাবে বলতে গেলে কোথায় নয়? নন্দন চত্ত্বরে, সিটি সেন্টারে, শুধু অরিজিনালেই নয়, এমনকী টু-তেও।
কর্ট ভোনেগাটের কিছু কন্সপিরেসি থিওরি উনি যে একটা কথা বলেছে নিজে নিজে একটা কবিতা লিখে ছিড়ে ফেলা - যেটা ভালো হয়েছে কিন্তু কেউ পড়েনি - নিজে নিজে জানা ভালো হয়েছে। ইমেজ রিসাইজ করতে হয় কিভাবে ? ইমেজ তো সব স্পেস নিয়ে নিলো। স্কুলে থাকতে এমন কাজ করেছিলাম - বেশির ভাগই কয়েকজনকে পড়িয়ে ছিড়েছি, কয়েকটা একদম যে পাশে ছিলো তাকে শুধু একটু দেখতে দিয়ে - ছিড়ে ফেলেছিলাম - ও বেশ হতভম্ব হয়েছিলো - তার অন্যতম কারণ যেটুক সে পড়তে পেরেছিলো সেটুক বেশ চিৎকার ছিলো - মানুষ চিৎকার দেখলেই রিয়েল মনে করে, এগুলো আসলে সত্তর আর আশির টেকনিক - সত্তর থেকে পৃথিবী কোথাও একটা বোকাবোকা গা-জোয়ারি মোনোপলি ... ...