ঋতুপর্ণ ঘোষের মৃত্যুদিনে ..."জানা হবে না নিজের মৃত্যুদিন" : স্মরণে ঋতুপর্ণ ঘোষ -- লিখেছেন শুভংকর ঘোষ রায় চৌধুরীতাঁর চলে যাওয়ার দিনে, আজ, মনে আছে শহরে বৃষ্টি হয়েছিল খুব। মনে আছে, যে গাড়িতে শায়িত ছিলেন তিনি, জলের ধারা গড়িয়ে পড়ছিল তার কাঁচ বেয়ে। যেমনটা নিজেই লিখেছিলেন, নিজের মৃত্যুদিন জেনে যেতে পারেন নি তিনি; পারে না কেউই। কারণ, মৃত্যু তো আসলে তাঁদের যারা রয়ে গেল সেই খবর শোনার জন্য। পুরোটা পড়ুন ... ...
রক্তচোষা জমিদারের বাচ্চাগুলো কোথায় বলতে পারেন? / ঐ যে গল্প-সাহিত্য-উপন্যাসে পড়া, গরিবের হক মারা অমানুষগুলো
হয়তো বা বেঁচে আছে পিশাচেরা জঙ্গলেমরে যারা ভূত হলো দোষী নয়, ডিসপ্লে!
ঠাকুমা (নানা) র বাপের বাড়ির দেশ ছিল সুকিন্দে। কে জানে কোথায় সে। একবারই মাত্র যাওয়া হয়েছিল সেখানে। কার যেন বিয়ে ছিল। বিরাট একটা বাসে চড়ে খুব ভোর ভোর রওনা দিয়েছিল ওরা। পৌঁছতে পৌঁছতে সন্ধ্যে পেরিয়ে রাতের হাত ধরেছিল প্রায়। বর-বউয়ের কথা এখন আর মনে নেই তুলির। শুধু মনে আছে, খাওয়া শেষ হতেই ঢালাও বিছানায় শুতেই ঘুম বুড়ি হাত ধরেছিল সবার। শুধু তুলির ঘুম আসছিল না। ... ...
প্রাক উপনিবেশ মোঘল ভারত ছিল ধনী দেশ। বৃটিশ অর্থনীতির তুলনায় মোঘল অর্থনীতি ছিল প্রবল মুদ্রা সঞ্চালন নির্ভর উন্নত অর্থনীতি। শুধু সমৃদ্ধ কৃষি নির্ভর বাণিজ্যিক কার্যকলাপ নয় রপ্তানি নির্ভর শিল্প ভিত্তিক এই অর্থনীতিকে ঠিক পূজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থা নির্ভর আর্থনীতির আগের পর্যায় অর্থাৎ প্রোটো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পর্যায়ের অর্থনীতি বলা যায়। বিশেষত সবচেয়ে সমৃদ্ধ মোঘল সুবা বাংলা ছিল এই নানারকম অর্থনৈতিক কার্যকলাপের কেন্দ্রে যার প্রাণ ছিল ঢাকা শহর। মোঘল অর্থনীতিতে ... ...
এক বন্ধুর সঙ্গে দেখে এলাম "অপরাজিত" ৷ একটা দৃশ্যে আমার চোখ ভিজে গেল, সেটা হরিহরের ঘরে ফেরার পরের দৃশ্য ৷ পথের পাঁচালী দেখতে গিয়েও ওইখানেই চোখ ভেজে , এখানেও ভিজল দূর্গার কথা ভেবেই ৷ প্রাণের প্রাচূর্যে উচ্ছল এক কিশোরী যাকে মেনে নিতে হয়েছে, জীবনে আনন্দের সব উপকরনে তার অধিকার নেই I তার ভাই অপুকে তার মা বেশী ভালবাসে , অন্যায়ভাবে বেশী ভালবাসে । পরের ঘরে চুরি করতে গিয়ে সে প্রায় ধরা পড়ে যায় .. একঘর লোকের সামনে ৷ বড় নির্মমভাবে তাকে মেরেছিলেন বিভূতিভূষন I আমি পথের পাঁচালী পড়েছিলাম ক্লাস সেভেনে ৷ সেই জন্যেই হয়ত পথের পাঁচালী সিনেমাটা কোনোদিনই আমার পুরোটা ... ...
অমলেন্দুবাবু অনেকদিন বাদে চারতলার ছাদে উঠলেন। চারতলার ছাদে চিলেকোঠার ঘর। ঠাকুর্দার করা একান্নবর্তী পরিবারের এতবড় বাড়ি । বাড়িতে লোক অনেক। কিন্তু বাড়ি দেখভাল করার মতো মানুষের নিতান্তই অভাব।
প্রাক-কথন : বিঝু ফেগ ডাকে "বিঝু বিঝু"... করোনাক্রান্তিতে এপারে বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ে ভিন্ন ভাষাভাষী ১৩টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর উৎসব অনেক ম্লান।নাই প্রাণের উচ্ছাস, নতুন সাজ পোষাকে শিশুদের শোভাযাত্রা, মেলা ঘিরে বর্ণিল আয়োজন, ফানুসের আলো। তবু কোথায় যেন বিঝু পাখি অহেতুক ডাকছে, "হাত্তোল পাগোক, বিঝু এজোক" (কাঁঠাল পাকুক, বিঝু আসুক, চাকমা ভাষা।.)...
(‘বাইশ গজের বাইরে’ শারদীয় ১৪২৮ সংখ্যায় প্রকাশিত, লেখকঃ বিশুপাল) (১) চশমার কাচটা থেকে থেকে ভিজে উঠছে। আকাশের মিডফিল্ডে বিকেল এখন ফুল ফর্মে, এই মাঝ অক্টোবরেও আগ্রাসী হৈমন্তী সন্ধেকে যথাসাধ্য ডি-বক্সের বাইরে ঠেকিয়ে রেখেছে। দুটো পানকৌড়ি অস্তরাগের আভা ডানায় মেখে জলের সীমানা বরাবর ওড়াউড়ি করছিল। সেদিকে আনমনে তাকানো অবস্থাতেই ধুতির খুঁটে আলগোছে চশমার অবতলগুলো মুছে নিলেন নবীনবাবু। কাচে বাষ্প লেগে থাকলে বরাবর বড্ড অস্বস্তিতে ভোগেন তিনি, সেই কৈশোর থেকেই। এ নিয়ে কম গঞ্জনা তো শুনতে হয়নি লতিকার কাছে। বাবার আদর্শে আশৈশব তিনি ভারি টিপটপ আর পরিচ্ছন্ন। শার্টের কলারে কোথাও এতটুকু ময়লা, কিংবা প্যান্টের ঘেরে শুকিয়ে যাওয়া ঘামের নুনদাগের আভাস--- ব্যস, পাঠাও আবার সদ্য কাচা হয়ে ... ...
১৮৭০ এবং ১৮৭১ সালের মধ্যে যখন ফ্রাঙ্কো-প্রাশিয়ান যুদ্ধ চলছে জার্মান দার্শনিক নীৎশে প্রাশিয়ান বাহিনিতে কাজ করছেন। তার প্রথম বই "দ্যা বারথ অব ট্র্যাজিডি" প্রকাশিত হয় ১৮৭২ সালে। ১৮৮২ সালে তার বই "দ্যা গে সায়েন্স" এর প্রথম সংস্করন প্রকাশিত হয়। এখানেই তিনি প্রথম "চিরস্থায়ী সংঘটন" (eternal occurrence) এবং "ঈশ্বরের মৃত্যু" ধারণাগুলি আলোচনা করেন। তার পরবর্তী বই দর্শন সম্বন্ধীয় উপন্যাস "দাস্ স্পেক জরাথুষ্ট্র" লেখা হয় ১৮৪৩ এবং ১৮৮৫ এর মধ্যে। এই উপন্যাসের চারটি অংশ এবং প্রথম অংশটি তিনি মাত্র ১০ দিনে লিখেছিলেন। ... ...
পুজো এসে যাচ্ছে। এসে যাচ্ছে আমেরিকার ভোট। আর পুজোসংখ্যা। আর নতুন জামা। হিলেলিদের অ্যাজেন্ডা অনেক। এরই মাঝে জেস্যুইট পাদ্রি, রাঁচিতে কর্মরত ৮৩ বছরের স্ট্যান স্বামী গ্রেফতার হয়েছেন। এন আই এ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। ভীমা কোরেগাঁও মামলায়। স্ট্যান স্বামীর কাজকর্ম সামান্য গুগল করলেই জানা যাবে। এও জানা যাবে যে তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য প্রথম থেকেই ষড়যন্ত্র চলছিল। অশীতিপর মানুষগুলো কেমন ভয়াবহ, রাষ্ট্রের কাছে, ভাবলে বেশ চমৎকৃত লাগে। মিলেনিয়াল আর বুমারদেরকে একমাত্র লক্ষ্য রেখে ঘুঁটি সাজান যাঁরা, তাঁরা এদিকটা ভাবতে পারেন কিন্তু। ... ...
হোটেল সুখসাগর। বেলা এগারোটা বাজে। ডাইনিং হলে এক কাপ কফি নিয়ে বসে আছে স্পন্দন। জলন্ধরে এসেছে ন্যাশানাল অ্যাথলেটিক মিটে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে। স্পন্দন রায় একজন প্রাক্তন চারশো এবং আটশো মিটার স্প্রিন্টার। জাতীয় স্তরের অ্যাথলিট নি:সন্দেহে।
আজ, এই বিশ্ব স্বীকারোক্তি দিবসে, আমার মনে পড়ছে কুড়ি বছর আগে, আমার (বা গুরুচণ্ডালির) প্রথম করা পাপের কথা। গুরু প্রথম পয়সা খায় মিঃ পাল নামক (পুরো নাম বললাম না, অকারণে নাম নিয়ে কী হবে) এক অনাবাসী বাঙালি ব্যবসায়ীর কাছে। ক্যাশে নয়, কাইন্ডসে। তাঁর সার্ভারের ব্যবসা ছিল, দাতব্য করে একটা সার্ভার গুরুর সাইটের জন্য ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন। এইটা আমি প্রায় চেপে দিতে পেরেছিলাম। কিন্তু পুরো থ্রিলারের মতো হঠাৎ করে আমার একটা মেলের অংশবিশেষ ফাঁস হয়ে ... ...
রাজার সঙ্গে আমার পরিচয়, ২০০৬ সালে। সে পরিচয়ে রাজনীতি একেবারেই ছিল না, ছিল পেশা সংযোগ। ২০১২ অবধিই বোধহয় আমরা একসঙ্গে একই অফিসে চাকরি করি। রাজার সঙ্গে আমার শেষ দেখা হয়েছিল বেলেঘাটার সুকান্ত মঞ্চে। সে ছিল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। মাঝেও দুয়েকবার দেখা হয়েছে, পথ চলতি মিছিলে। শেষ দেখা হবার পর, আমরা দুজন এক সিগারেটে টান দিয়েছিলাম। রাজা বলছিল, বইমেলার পুলিশ পেটাইয়ের কথা। পুলিশ পেটাইয়ের গল্প অনেক শুনেছি, নিজের অভিজ্ঞতাও একেবারে নেই, তা নয়। রাজার কাছ থেকে শোনা গল্পটা অন্যরকম লেগেছিল, তার কারণ, বইমেলায় রাজাকে যখন পুলিশ টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন আমি অন্যদিকে, ছবি তুলছিলাম। সে ঘটনার নৃশংসতা আমার প্রত্যক্ষ। আর রাজা ... ...
দূরদর্শনের দিলীপ পাল, মন্দিরা পালেদের বাড়ি থেকে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস আর তাঁর পত্নী সুরাইয়া ইলিয়াস যাচ্ছেন বালিগঞ্জ ফাঁড়িতে অন্নদাশঙ্কর রায়ের বাড়িতে। সময়টা নয়ের দশকের মাঝামাঝি। একটা মিনি বাসের সাওয়ারি হয়েছেন তাঁরা। তখনো 'খোয়াবনামা' বই আকারে প্রকাশিত হয় নি। বাংলাদেশের ছোটখাট কয়েকটি পত্র পত্রিকায় ইতিউতি বেরিয়েছে। যাঁদের বাংলাদেশের সঙ্গে খুব নিবিড় সংযোগ নেই, তাঁদের পক্ষে সেই লেখা পড়বার সুযোগ ঘটে নি। কারন, পশ্চিমবঙ্গ তো কোন ছাড়, বাংলাদেশের ও সেইসময়ের নামীদামী পত্রপত্রিকাগুলির তাঁকে ঘিরে খুব একটা আগ্রহ ছিল না। ইলিয়াস লেখার নেশাতে লিখে যেতেন। বাজার চলতি লেখক হওয়ার কোনো নেশাই তাঁর কোনো কালে ছিল না। আর রাজনৈতিক অবস্থান ও ছিল একটু অতি বামঝোঁক সম্পন্ন। ... ...
ঘড়িতে সকাল আটটা । রান্নাঘর থেকে মা ডাক দিল দেবু..ও দেবু .. খোকা ও খোকা.. আরে ওঠ আজ না তোর ইন্টারভিউ । বালিশের তলা থেকে উঁকি দিয়ে দেখি সূর্য মহাশয় কোন সকালে উঠেছে । বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম । দেবু আমার ডাক নাম । দেখলাম জানালার মধ্য দিয়ে সূর্যের কিরণ এসে পড়েছে পড়ার টেবিলে । টেবিলের মধ্যে আহামরি তেমন কিছু নেই । একটা খাতা তাতে ঘুমের ঘোরে রাত্রে লেখা কিছু অস্পষ্ট জড়ানো কয়েকটি লাইন । যা স্বয়ং বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পক্ষেও পাঠোদ্ধার করা সম্ভব নয় । ... ...
এই মুহুর্তের বিবিধ দুসংবাদ প্রবাহের মাঝে নিউজ চ্যানেলের প্রভাতী রবীন্দ্র সঙ্গীতের অনুষ্ঠান। ********************** টিভিতে দেখছিলাম এক বিখ্যাত বাঙলা নিউজ চ্যানেলের প্রভাতী রবীন্দ্রসঙ্গীতের অনুষ্ঠান 'ভালো বেসে সখী'। এই অনুষ্ঠানে অনেক প্রথিতযশা শিল্পীরা রবীন্দ্রনাথের গান পরিবেশন করেন। একঘন্টার এই লাইভ অনুষ্ঠানে বিজ্ঞাপন বিরতি ছাড়াও শিল্পীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য ফোন-ইন করার ব্যবস্থাও আছে খানিকটা সময়। অর্থাৎ এই যেমন: কে বলছেন? আমি ভুবনডাঙা থেকে অলীক চৌধুরী (কাল্পনিক নাম) বলছি। হ্যাঁ বলুন অলীক বাবু। আমি আপনাদের এই অনুষ্ঠান শুনছি। খুব ভাল লাগছে ... ...
রাত আমাকে কিনে নিয়েছে / দিন তাই আসে না