এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • চিলেকোঠা

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৬ জুন ২০২০ | ৯৭৬ বার পঠিত
  • অমলেন্দুবাবু অনেকদিন বাদে চারতলার ছাদে উঠলেন। চারতলার ছাদে চিলেকোঠার ঘর। ঠাকুর্দার করা একান্নবর্তী পরিবারের এতবড় বাড়ি । বাড়িতে লোক অনেক। কিন্তু বাড়ি দেখভাল করার মতো মানুষের নিতান্তই অভাব। সকলেরই গা বাঁচিয়ে চলা স্বভাব। অমলেন্দুবাবুর বয়স প্রায় আশি হল। মুখ ঘুরিয়ে থাকতে পারেন না। গায়ে জ্বালা ধরে। বাড়ির দেখভাল যা করার তিনিই করেন।
    আজ প্রায় দু বছর পরে তিনি চিলেকোঠা ঘরের তালা খুললেন। দেখা দরকার ভেতরে কি অবস্থা হয়ে আছে।
    দরজার আদ্যিকালের পুরনো পাল্লা ঠেলে অন্ধকার ঘরের দোরগোড়ায় দাঁড়ালেন।জানলাগুলো বন্ধ। ঘরের ভেতর আরামকেদারায় থুম মেরে বসে আছে অন্ধকার।
    আকাশের এক কোনে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডে আচমকা কিসের যেন পাক লাগল। পারমাণবিক সরণি প্রকৃতির কোন খেয়ালে কে জানে হঠাৎ উল্টোদিকে পাক খেতে লাগল অতি ধীরে ধীরে এই চিলেকোঠার ঘরখানাকে কেন্দ্র করে।
    হৈহৈ ব্যাপার রৈরৈ কান্ড। ঠাকুর্দার গায়ে তেল মাখিয়ে দলাই মলাই করছে দুটো লোক। ঠাকুর্দার ইয়া পালোয়ান চেহারা। একটা এক ঘোড়ায় টানা ফিটন দাঁড়িয়ে আছে সদর দরজার বাইরে। ঘোড়াটা মাঝেমাঝে মাথা নাড়ছে। আর গলায় বাঁধা ঘন্টাটা টুং টুং করে বাজছে।
    মা, জেঠিমা আর দুই কাকীমা ছাদে আমসত্ত্ব শুকোতে দিচ্ছে। দুই কাকা ছাদের একপাশে ঘুড়িতে মাঞ্জা দিচ্ছে। সামনেই বিশ্বকর্মাপুজো। ওই যে কালীপদ বাগচি মশায় আসছে। অমলেন্দুর মতো আরো অনেক পাঁচ ছ বছরের বাচ্চা ঘুরঘুর করছে তার চারপাশে। কালীপদ বাগচি দাদুর বন্ধু। উনি সব বাচ্চাকে লজেন্স দেন। দাদু বাগচিবাবুকে বললেন ‘কি হে কালীপদ, চল যাবে নাকি ?বাগবাজারে বটতলার ঘাটে গঙ্গায় একটা চুবুন দিয়ে আসি।’ কালীপদদাদু ‘ হ্যাঁ হ্যাঁ যাব যাব.... দাঁড়াও আগে তেতলায় মেজোকত্তার সঙ্গে একটু কথা কয়ে আসি’ বলতে বলতে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠে গেলেন।
    বিকেল হয়ে এল।বারান্দায় মা-র সঙ্গে বসেছিল অমলেন্দু অঙ্ক বইটা খুলে। হোস পাইপ দিয়ে রোজকার মতো একটা লোক রাস্তা ধুচ্ছে হুসহুস করে। একটু পরেই অঙ্কের মাস্টারমশাই আসবেন। অঙ্কের মাস্টারমশাই কোন ইস্কুলে যেন অঙ্ক পড়ান। মাস্টারমশাই খুব ভাল লোক। অঙ্ক না পারলে একটুও বকেন না।বলেন, ‘বারবার প্র্যাকটিস করতে হবে, তা’লে দেখবে অঙ্ক তোমার মুঠোয় চলে আসবে।’ কিন্তু অমলেন্দুর একটুও অঙ্ক করতে ভাল লাগে না। প্র্যাকটিস করে অঙ্ক মুঠোয় আনতে একদম ইচ্ছে করে না। মাস্টারমশাই খুব ভাল ।অমলেন্দু অঙ্ক না পারলেও তাকে বকেন না। মাথায় হাত বুলিয়ে দেন আদর করে। অমলেন্দু ভাবে বড় হয়ে সে অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের মতো ভাল লোক হবে।
    মেজকাকুর ছেলে ঘন্ট আসছে ছুটে ছুটে । ও কোন সময়ে হাঁটে না। সবসময়ে ছোটে।ছুটে এসে বলল, ‘ রাজবল্লভ পাড়ায় একটা পার্ক হয়েছে। বাবা বিকেলে নিয়ে যাবে বলেছে। ওখানে স্লিপে চড়ব । বাবা বলেছে মটন চপ খাওয়াবে দীনবন্ধু কেবিনে।তুই যাবি তো ? চল না খুব মজা হবে। বান্টুকেও নিয়ে যাব। বাবা বলেছে সবাইকে নিয়ে যাবে। কর্নওয়ালিস স্ট্রীটেও নিয়ে যাবে ট্রামগাড়ি দেখাতে ।’
    মানিক এসেছে বান্টুর চুল কাটতে। বান্টু ভীষণ কাঁদে চুল কাটার সময়।একটা খবরের কাগজ ফুটো করে মাথায় গলিয়ে দেওয়া হয় শরীরটা ঢেকে রাখার জন্য চুল কাটার সময়ে। কাকীমা
    চেপে ধরে আছে আর মানিক কাঁচি চালিয়ে যাচ্ছে।বান্টু চিল চিৎকার করে যাচ্ছে।
    বান্টুর কি একটা অসুখ করল। কেমন অজ্ঞান হয়ে গেল। বাবা, জেঠু কাকারা মিলে বান্টুকে হাসপাতালে নিয়ে গেল। অমলেন্দু মায়ের কাছ রইল। বান্টু আর ফিরে এল না। এখন শরৎকাল।খুব ভোরবেলা। আকাশ সবে ফর্সা হচ্ছে। জেঠু বসে আছে নীচে বৈঠকখানার ঘরে। কারা যেন ফুটবল নিয়ে রাস্তায় ঢপঢপ ঢপঢপ করতে করতে মাঠের দিকে যাচ্ছে।অবিনাশ মামা মাথা নীচু করে ঘরে ঢুকল। জেঠু নিষ্পলকে তাকিয়ে আছে ওর দিকে।অবিনাশ মামা ধুতি আর শার্ট পরে । চশমা খুলে জামা তুলে চোখ মুছল। তারপর বলল, ‘ ওরা একটু পরে আসছে বডি নিয়ে।’ জেঠু কোন কথা না বলে নিষ্পলকে তাকিয়ে রইল।
    একটু পরে অঙ্কের মাস্টারমশাই এসে একপাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলেন। মা আজকে আর পড়তে বসতে বলল না। অমলেন্দু বুঝতে পারল বান্টুর সঙ্গে আর কোনদিন তার দীনবন্ধু কেবিনে মটন চপ খেতে যাওয়া হবে না।
    অমলেন্দু খুব ছোট। ছোটরা তাড়াতাড়ি ভুলে যায়। সে আবার বারান্দায় চকখড়ির দাগ কেটে বাড়ির বোনেদের সঙ্গে এক্কাদোক্কা খেলতে লাগল। অমলেন্দু একপায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে দাগ কাটা ঘর পেরোচ্ছে।নি:ঝুম দুপুরবেলা। গরমের ছুটি এখন। স্কুলে এত্ত হোমওয়ার্ক দিয়েছে। ওসব ভাবতে একদম ভাল লাগে না। মা শুয়ে ঘুমোচ্ছে মেঝেয় মাদুর পেতে। অমলেন্দু চুপিচুপি উঠে এসেছে বোনেদের সঙ্গে এক্কাদোক্কা খেলতে। দোতলার কার্নিশে গলা ফুলিয়ে গোলা পায়রা ডেকে যাচ্ছে দুপুরভর। আজ রবিবার । বাবা বারান্দায় বসে সারা দুপুর ধরে খবরের কাগজ আর বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প পড়বে। তার বোন মায়ের পাশে শুয়ে ঘুমোচ্ছে।
    গল্পের বই পড়তে পড়তে বাবার কি একটা কথা মনে পড়ল।বোধহয় ক্যাপসটান সিগারেটের কৌটোর কথা। বাবা খুব আস্তে ডেকে উঠল — অ..ম...ল ।
    অমল এক্কাদোক্কা ফেলে তাড়াতাড়ি বারান্দার দিকে ছুটল।নিঝুম দুপুরে পায়রারা বকুম বকুম করে যাচ্ছে। বাবার কাছে গিয়ে দাঁড়াল।যা ভেবেছিল ঠি ক তাই। বাবা বলল, ‘ ক্যাপসটানের কৌটোটা একটু এনে দে তো বাবা।
    দাদুর খুব অসুখ করেছে। গায়ে তেল মেখে আর গঙ্গায় নাইতে যেতে পারে না। বাবা একদিন মাকে বলল, ‘ কঠিন অসুখ । পেটে জল জমেছে।’ রাতদিন ডাক্তার আসছে বাড়িতে।

    দাদু মারা গেল। অত বড় শরীরটা নিয়ে শুয়ে রইল। আর উঠল না। কালীপদদাদু মাথা নীচু করে চুপ করে বসে আছে একটা চেয়ারে। একটাও কথা বলছে না। কাউকে লজেন্সও দিচ্ছে না।কালীপদদাদুকে দেখে অমলের খুব কষ্ট হল। অমলেরও এমনি কষ্ট হয়েছিল যখন বান্টু হাসপাতাল থেকে আর ফিরে এল না। তারপর থেকে সেজকা আর কাকীমা কেমন যেন হয়ে গেল। কোন কথা বলত না কারো সঙ্গে।
    বাবার কাছে গল্প শুনতে অমলেন্দু মানে, অমলের খুব ভাল লাগে।বাবা কত গল্প বলে। এখন বলল, ‘ আয় আমার কাছে বোস। তোকে সুন্দরবনের বাঘের গল্প বলব।’ অমল আর খেলতে গেল না। বাবার কোলের ওপর বসল । বাবা সুন্দরবনের বাঘের গল্প বলতে লাগল..... সুন্দরবনে একটা বাঘ ছিল.... বাঘটা নদীতে একদিন জল খেতে গিয়ে দেখল.... দেখল যে একটা মাঝি....
    অমল কোলে বসে বসে পা দোলাচ্ছে। বাঘটা দেখল যে জলের ঢেউয়ে একটা নৌকো দুলছে । নৌকোয় একটা মাঝি বসে জাল বুনছে। নৌকো দুলছে, মাঝিও দুলছে .....বাঘ একটা গরান গাছের আড়াল থেকে দেখছে....
    অমলেন্দু অস্থির হয়ে ওঠে— ‘ তারপর.... বাবা বলনা... তারপর কি হল ? তাড়াতাড়ি বলনা .....

    দমকা হাওয়ার ঝাপটায় চিলেকোঠার তিন তিনটে জানলা হাট করে খুলে গেল সহসা। হু হু করে ঢুকতে লাগল আলো আর হাওয়া। কি কারণে কি জানি থেমে গেল পারমাণবিক সরণির উল্টোদিকে পাক খাওয়া। আশি বছরের অমলেন্দুবাবু দেখলেন, একটা প্রাচীনকালের ঘুনধরা আবলুশ কাঠের আলমারির সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলে চলেছেন — তারপর বাবা... তারপর .... বলনা... তাড়াতাড়ি ....
    জানলা দিয়ে হু হু করে ঢোকা হাওয়ার ঝাপটায় এদিক ওদিক দোল খাচ্ছে পাল্লা দুটো। আলমারির ভেতরে খাঁ খাঁ করছে শূন্যতা।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন