...রাত শেষ হয়ে যাবে শব্দের শেষ তরঙ্গ হবে আগামী নদীর ডাক প্রতিটি ঘাট ছুঁয়ে রেখে যাবে নিজস্ব এই রোগ যেখানে দাঁড়িয়ে কেউ মুক্তি পাবেনা ... ... ...
বর্তমানে সোশাল মিডিয়াতে তর্জার একটা মূল ধারা হল আমাদের ধর্মচেতনা। শুধু মাত্র ভারতে নয়, বা এই উপনিবেশে নয়, কিছু স্ক্যান্ডেনেভিয়ান দেশ বাদ দিলে সম্ভবতঃ বেশিরভাগ দেশেই একধরনের বিবাদমান যুযুধান কিছু গোষ্ঠী পাওয়া যাবে, যারা সদাই এই নিয়ে মাথা কুটে মরছে। ফলতঃ নানান কূট প্রশ্ন মাথায় ঘোরাফেরা করে যে এই ধর্মের সূত্রপাত কোথায়? কৈ বাকি জীবেরা তো ধর্ম অধর্ম নিয়ে মাথা ঘামায় না। আমাদের মধ্যেই এর প্রকাশ কেন? সেই উদ্দেশ্যেই এই লেখার অবতারনা। এই লেখাটি মূলতঃ ইউনিভার্সিটি অব ভিক্টোরিয়ার প্যালিওএন্থ্রোপোলজিস্ট জেনিভিয়েভ ভন পেটজিঙ্গারের টেড টক আর কিছু পেপারের সার। ... ...
রাস্তা পেরিয়ে ঢুকল সেই বাড়িটায়। সাদা ফলকের ওপর লেখা প্রফেসর বিমলানন্দ রায়। সে বাগানের কল থেকে জল নিয়ে একটু একটু করে গাছগুলোয় জল দিল। তারপর আবার দরজায় কান রাখল। অবিকল গতকালকের মতো শব্দ। তকমক, কচতক। সে বোঝার চেষ্টা করলো, নাহ, টাইপরাইটার তো নয়। কীসের শব্দ? খাবার চিবানোর শব্দ কি? হ্যাঁ। তা-ই তো মনে হচ্ছে। দুটো মানুষ যেন কিছু খাচ্ছে। ফাঁকা ঘরে প্রতিধ্বনিত হয়ে তা বিকট আকার নিচ্ছে। দেওয়ালে দেওয়ালে ধাক্কা খাচ্ছে সেই শব্দ। জল খাওয়ার শব্দ। জলের গ্লাস ঠক করে টেবিলের ওপর নামিয়ে রাখার শব্দ। সে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ডাকল, প্রফেসর রায়! মিসেস রায়! শুনছেন? বাড়িতে কেউ আছেন? তারপর বন্ধ তালাটা ঠকঠক করে দু'বার ঠুকলো সে দরজার ওপর। কোন সাড়াশব্দ পেল না। কেবল সেই এক শব্দের ওঠা নাম। যেন চোয়াল, দাঁতের মাড়ি, জিভ, লালা আর পিষন যন্ত্রের অদ্ভুত ককটেল। চর্বিত চর্বন। ... ...
জলে ঝাঁপাচ্ছে যে শিশুর দল, তাদের কেউ প্রশ্ন করে তার পরিচয় কী? সে বসনিয়াক না সার্ব না ক্রোয়াট? জিজ্ঞাসে কোনজন? পথের দু-পাশ সবুজে ভরে আছে। আকাশ কী উজ্জ্বল! বিশ বছর আগে এই রাস্তায় দেখা গেছে ট্যাঙ্কের সারি, জ্বলন্ত বাড়ির আড়ালে আড়ালে স্নাইপারের ছায়া, কখনো আকাশে সারবিয়ান বোমারু বিমান, কোনো বাড়ির উঠোনে বসে সেই বিমানের দিকে বন্দুক তাক করছে এক যুবক। সারি সারি দেহকে একই সঙ্গে গোর দেওয়া হচ্ছে, কোথাও ক্যাথলিক কোথাও অর্থোডক্স ক্রসের নিচে। দু-হাত দূরে মুসলিম মাজার। এই সেদিন। ... ...
বৈশাখ মাসের ভারতীতে নজরুল ইসলাম লিখল বিদ্রোহী বাণী নামে এক কবিতা। লোকের মুখে মুখে এই কবিতা প্রচার হয়ে এমন আবেগের সৃষ্টি করল যে সত্যাগ্রহের উদ্বোধনের দিন মাঠে আর লোক ধরে না। আন্দোলনের উদ্বোধনের দিন সকাল থেকেই মন্দির-সংলগ্ন বিশাল মাঠে জনসমাগম। আর সেই সমাগমকে ঘিরে আছে সত্য ও তার দলবল। কর্তৃপক্ষের সঙ্কেত পেলেই শুরু হবে নিধনযজ্ঞ। নির্দিষ্ট সময়ে কাজির দিকে তাকিয়ে দেশবন্ধু বললেন, সত্যাগ্রহ শুরু হোক কাজির উদ্বোধন সঙ্গীত দিয়ে। দৃপ্ত কণ্ঠে কাজি গান ধরে।লাঠিয়ালরা প্রস্তুত। সঙ্কেতমাত্র ঝাঁপিয়ে পড়বে। মন্দিরের পাশেই এই গান! এ কি ভাবা যায়! এই মঞ্চেরই এক কোণে দাঁড়িয়ে সত্য নিজে, নীরব। অনেকগুলো চোখ তার দিকে। গান শেষ হলে সে বলে, কাজি, আর একবার গাও। ... ...
কর্ণাটকের নির্বাচনে এক অনন্য পরীক্ষা চলছে। "ইয়েদেলু কর্ণাটক" এর নামে রাজ্য ও দেশের অনেক সামাজিক সংগঠন এবং আন্দোলনকারী গোষ্ঠী কর্ণাটকের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে, যাকে বলা যায় এক রকমের, প্রয়োজনীয় আবিষ্কারের জননী। দেশের ইতিহাসের এই পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হওয়া এই ব্যতিক্রমী নির্বাচন অস্বাভাবিক হস্তক্ষেপের জন্ম দিয়েছে। ১০ মে আসন্ন কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচন দেশের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন কেবল গণতন্ত্রই নয়, আমাদের প্রজাতন্ত্রের অস্তিত্বও হুমকির মুখে দাঁড়িয়ে আছে। গত কয়েক বছরে, ভারতের স্বধর্মের তিনটি স্তম্ভ (সহানুভূতি, বন্ধুত্ব এবং বিনয়) একযোগে মারাত্মক আক্রমণের শিকার হয়েছে। ... ...
জম্মু ও কাশ্মীরের তৎকালীন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের চাঞ্চল্যকর সাক্ষাৎকার প্রকাশের পর থেকে টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রগুলো সাপের গন্ধ পেয়েছে। গুলাব নবি আজাদের ছোট-বড় অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘ অনুষ্ঠান চালাতে থাকা চ্যানেলগুলোর কাছে এই উদ্ঘাটন নিয়ে আলোচনার জন্য এক মিনিটও সময় নেই। ১৫ এপ্রিলের সংবাদপত্রে কোথাও এই খবরের উল্লেখ ছিল না। এটি উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১-এ যখন পুলওয়ামা ঘটনা ঘটেছিল, তখন সত্যপাল মালিক জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল ছিলেন। প্রকাশ ট্যান্ডন এবং তারপরে করণ থাপারকে দেওয়া একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে, তিনি প্রকাশ করেছিলেন যে সরকারের ভুলের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিনি ওই দিনই প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আমাদের ভুলের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং এটা এড়ানো যেত।’ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তারপর অজিত ডোভাল তাঁকে এ বিষয়ে চুপ থাকতে বলেছেন। ... ...
পরনের ফতুয়াটি দুইমাসাধিক ধীরেও নয় ধৌতি, মাদনে গন্ধ, মাতনে নালকৃষ্ণ হে মাতঃ, তত্রাচ এই গোকুল সন্ধ্যা এই ঘিরি ঘিরি কর্দম মর্তম পালং জুড়িয়া বেডশিটে সমাসীনা কার্পাস কল্লকাগুলি, শ্রীলঙ্কার নিকট অই নিউ বেঙ্গল বস্ত্রালয় ব্লকছাপখানি, এ নেহাৎ ঘন্টাঘরের কেন্দ্ররূপ বৈ ত নয়। মনোময় সেই কেন্দ্রগতে দণ্ডবৎ হইবার পারে। তাহার হস্তের অঙ্গুলিমাল নখাগ্রে ওতপ্রোত, নখাগ্র টিউলাইটের ম্লানালোকে থিরকম্প্র। আজ দুইদিবস কেহ দরোজাকরে আঘাত করে নাই। আজি মাসাধিক দ্বারদ্রুম বন্ধ। ... ...
তখন পরীক্ষার আগের দিন ইদ পরতো। পরেরদিনও। স্নাতক সাম্মানিক বা স্নাতকোত্তর পর্বে বাড়ি যাওয়াই হতো না। একবার হোস্টেল ছেড়ে একটা মেসে আছি। মুসলিম ছেলেদের মেস। মনখারাপ। শহর তো গ্রামের মতো নয়। কে খাচ্ছে আর কে খাচ্ছে না, খবর রাখে কতজন? শরীর যেন অনেকটাই আত্মঘাতক আত্মকেন্দ্রিক। ... ...
চন্দ্রোদয়। ছোটদের সামনেই বলতে হবে, বুঝলে? ওদের মনটা এখন জলের মত স্বচ্ছ, আমাদের এই স্বচ্ছ স্বর্গভূমির মতো। ভালো খারাপ চিনতে শিখুক, আদর্শ কাকে বলে সেটা বুঝতে শিখুক, ওরাই তো আমাদের নতুন স্বর্গভূমির ভবিষ্যৎ। সামনের নির্বাচন থেকে আমরা সব অবোধ শিশুকে ভোট দেবার অধিকার দেব, জান না? শিশুরাই ভোট দেবে এখন থেকে, বিধর্মী আর না-ধর্মীরা সব বাতিল। হুঁঃ, দেশছাড়া করে ছাড়ব সব কটাকে। (বলরামকে) কী বলরাম, সেই ধর্ষণের কেসটা... মেয়েটাকে যখন হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল এক্স-রে করবার জন্যে, তখন সেই অ্যাম্বুলেন্সকে তোমার ওই নম্বরহীন লরিটা দিয়ে ধাক্কা মারার ব্যবস্থা করনি তুমি? বলরাম। আমিই করেছিলুম গুরুজি। কিন্তু সে তো আপনার পরামর্শেই। ... ...
একটি সন্ধ্যা হচ্ছে, যেন সব সন্তান দূরে চলে গেছে একা কোনো মা শাঁখ বাজাচ্ছে, ঘরের আলোয় ফুটে ফুটে উঠছে চলে যাওয়া মেয়েদের পা শ্যামলা সবুজ তরল মুখের ছায়াগুলো পালং... ... ...
আমার মা দিনের পর দিন আমার জন্য অপেক্ষা করত। কেবল, জন্মদিনগুলো মায়ের সঙ্গে কাটাতাম প্রত্যেক বছর। রুচিরাও কোনও কোনওবার আসত। আমার মেয়েও আসত। নাতনিকে চোখে হারাত মা। ঠাকুমা মারা যাবার পর, পিসি মারা যাবার পর ওই ভূতগ্রস্ত বাড়িতে কেবল মা একলা। বহুবার বলেছি আমাদের সঙ্গে এসে থাকো। সামান্য দু-একদিন এসে থাকলেও ওই বাড়ি ছেড়ে আসতে চাইত না মা। হয়তো শ্বশুরবাড়ি, স্বামীর স্মৃতি আঁকড়ে বাঁচতে চাইত। গোটা জীবনই একা হাতে আমাদের বড়ো করে তুলেছিল মা। নার্সিং হোম থেকে বলল, প্রায় একলাখ টাকা বাকি। কোভিড পেশেন্টের বডি ওরা বাড়ির লোকের হাতে তুলে দেবে না। কর্পোরেশনের গাড়ি আসবে। ওরাই যোগাযোগ করবে। ... ...
কালো পৃষ্ঠা, লাল কালি, সাদা পিঁপড়ে সবটাই অদেখা ও না-ছোঁয়া। এবং, এই পরিপ্রেক্ষিতে সপাট তানে একটি আধখাওয়া হিউম্যান বডিকে, যার মুন্ডটি পুরুষ, যার দেহটি নারী, তাকে ছিন্ন করে দেওয়া হল। দৃশ্যটি ঘটিবামাত্র, পৃষ্ঠাটি নারী হয়ে ওঠে, কলমটি পুরুষ, পিঁপড়েটি লাল, সাদা ও কালো হয়ে ওঠে। ... ...
তোমার ভেতর একটি পতঙ্গ আছে, অবাক ডানার হাসিমুখে সারাদিন ফুলে ফুলে ঘোরে। কিন্তু তুমি জানো বি-কিপার সরল মেশিন হাতে বন্দরের দিকে গেছে। লুব্ধ ক্ষারের মেশিন অতি দ্রুত প্রহরকে খায়, জলযান খায়, ভাষাভঙ্গি খায় মাতাদোর ও ষাঁড়ের মধ্যে পড়ে থাকা চিৎকার হামাগুড়ি দিয়ে মেশিনের পেটের ভেতর ঢোকে তবু পতঙ্গ তোমার বিকেলবেলায় অর্কিড-হাউস ঘুরে পাইনের দিকে আসে। ... ...
ব্রিজভূষণ উত্তর প্রদেশের গোন্ডা জেলার কাইজারগঞ্জ থেকে শাসকদলের সাংসদ। কুস্তি নিয়ে বরাবরের একটা আগ্রহ ছিল, তাই বিভিন্ন আখড়ায় স্থানীয় কুস্তির প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে করতে সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি হয়ে গেছেন সে প্রায় এক দশক হল। তবে তাঁর বায়োডেটার দুটি উল্লেখযোগ্য অঙ্গ হল, ১৯৯২তে দায়ুদ ইব্রাহিমকে সাহায্য করার অভিযোগে টাডায় গ্রেফতার হন, ছাড়া পান ১৯৯৯তে। আর অবশ্যই বাবরি মসজিদ ধ্বংসের অভিযোগে সিবিআই দ্বারা অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত। যদিও ২০২০তে সুপ্রিম কোর্ট থেকে ক্লিন চিট পেয়ে গেছেন। তবুও অভিযোগগুলো ছিল। ... ...