এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  দেখেছি পথে যেতে

  • চৌখাম্বার চত্বরে - ৫ (শেষ পর্ব)

    সুদীপ্ত লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | দেখেছি পথে যেতে | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ | ৪১৬ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • দিনটা শুরু হল একজোড়া হিমালয়ান গ্রিফন-এর (সাদা বাংলায় হিমালয়ের শকুন, তবে এর সোনালী-বাদামী মেশানো রঙ আর চেহারা বেশ আকর্ষণীয়, আর অবশ্যই দেখার মতো সুবঙ্কিম ওষ্ঠাধর) দীর্ঘ ডানা মেলে ওড়াউড়ি দেখে। প্রায় আধঘন্টা ধরে আমাদের ক্যাম্পের আশপাশ দিয়ে ঘুরে ফিরে চলে গেল অন্য কোথাও! পবন-কে বলা ছিল, গাড়ি নিয়ে চলে আসবে চোপতা বাজারে ঠিক আটটায়, আমরা কফি আর ম্যাগি দিয়ে প্রাতঃরাশ শেষ করে, পাওনা-গন্ডা মিটিয়ে আবার সেই রাস্তায় শেষবারের মত উঠে চললাম ক্যাম্পসাইটকে বিদায় জানিয়ে; আজও রৌদ্রোজ্জ্বল দিন, নীল আকাশে যথারীতি চৌখাম্বা, কেদার সবাই দিগন্ত জুড়ে বিদ্যমান। উপরে উঠে খেয়াল করলাম আমার আর প্রার্থনার ট্রেকিং পোলের ডগা-দুটি যে প্লাস্টিকের কভারে ছিল, সেগুলি অদৃশ্য। কোনো পাথরের খাঁজে দেহ রেখেছে হয়ত। আজ আমরা উখীমঠে হয়ে কনকচৌরি নামব, ওঙ্কারেশ্বর মন্দির দেখে নেবো, ওখানেই দুই কেদার - কেদারনাথের আর মদ্ মহেশ্বরের শীতকালীন আস্তানা।  চোপতা থেকে উখীমঠের সেই সুন্দর সর্পিল পথ বেয়ে যাত্রা শুরু হল, সারি যাওয়ার রাস্তাকে পিছনে ফেলে এলাম, এত সকালে এ-পথে গাড়ির ভিড় নেই। উখীমঠের বেশ উপর দিকে ওঙ্কারেশ্বর মন্দির, বাইরে বড় প্রবেশদ্বার, ভিতরে চাতাল, মাঝে মাঝারি আকারের মন্দির, এখানকার মন্দিরের গড়ন প্রায় সবই এক-রকম। ভিতরে পাঁচ কেদারের অবয়ব ইত্যাদি। কথিত আছে রামচন্দ্রের পূর্বপুরুষ মান্ধাতা নাকি এখানে বারো বছর তপস্যা করার পর শিব তাঁকে ওঙ্কার রূপে দেখা দেন, সেই অনুসারে মন্দিরের নাম ওঙ্কারেশ্বর মন্দির। কৃষ্ণের নাতি অনিরুদ্ধের বিবাহ-ও নাকি এই মন্দিরে হয়েছিল। মন্দির দেখে আমরা আবার মন্দাকিনীর পাশে পাশে চলতে থাকি। কেদারনাথ যাওয়ার ব্রিজ থেকে কিছুদূর আসার পর রুদ্রপ্রয়াগের রাস্তা ছেড়ে বাঁদিকের ছোটো রাস্তা ধরে কনকচৌরির দিকে এগোই; এই রাস্তায় একটা গাড়িই যেতে পারে, তবে একেবারেই ফাঁকা, পর্যটকের ভিড়-ভাট্টা নেই;  মোহনখাল এখানকার একটা বড় গ্রাম, এখানে এসে মিশেছে কর্ণপ্রয়াগ আর নন্দপ্রয়াগ যাওয়ার রাস্তা। মোহনখালের কাছাকাছি আসার পর দূর থেকে কার্তিকস্বামীর পাহাড় ঠিক ডানপাশে দেখা যাচ্ছিল, আশপাশে ওই উচ্চতায় আর কিছুই নেই, বেশ বোঝা গেল কেন ওখান থেকে ৩৬০ ডিগ্রী ভিউ পাওয়া যায়! কিন্তু শেষের ন্যাড়া পাহাড়টুকু বাদ দিলে  বাকি রাস্তা পুরোটাই ঘন জঙ্গলে ঢাকা। কনকচৌরিতে আমরা যে রাস্তা ধরে এলাম, সেটা প্রায় বৃত্তের মতো ঘুরে গিয়ে আবার রুদ্রপ্রয়াগের রাস্তায় গিয়ে মেশে।  
     
    হিমালয়ান গ্রিফন 


    ওঙ্কারেশ্বর মন্দিরের প্রবেশদ্বার 


    ওঙ্কারেশ্বর মন্দির 


    কার্তিকস্বামী মন্দিরের পাহাড়ের শিখরদেশ সবচেয়ে উঁচু জায়গাটি


    কনকচৌরিতে আমাদের আস্তানা কার্তিকেয় প্যালেস, সঞ্জয়-জী বেশ মাই ডিয়ার লোক, অমায়িক ব্যবহার, উনিই আমাদের গাড়ির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। একাই থাকেন এখানে, পরিবার থাকে একটু দূরে পোখারি-তে, সেখানে ছেলে-মেয়ের স্কুল-কলেজের সুবিধা। নিজেই রান্না করে খাওয়ান, এমনকি নিজেরাও জিনিসপত্র জুটিয়ে এখানে রান্না করে নেওয়া যায়। একজন সবসময়ের  সাহায্যকারী রয়েছেন। কনকচৌরিতে বিদ্যুৎ রয়েছে, এমনকি বাথরুমে গিজার পর্যন্ত। অবশেষে চার দিন পর আরামে স্নান করা গেল। নইলে ঠান্ডা এখানেও কম কিছু না। এখানে আবার আমিষ-ও মেলে। চিকেন অবশ্য আগে বলে পোখারি থেকে আনাতে হয়, আমরা সে ঝামেলায় না গিয়ে ডিমেই মন রাখলাম। খেয়ে দেয়ে কনকচৌরি ঘুরে দেখা গেল বিকেলের রোদ গায়ে মেখে, পাঁচ-ছটা দোকান, বাড়ি-হোটেল মিলিয়ে আট-দশটা – এই হল কনকচৌরি, আসা যাওয়ার উপায় বলতে হরিদ্বার থেকে দিনে দুটো বাস আপ-ডাউন। কার্তিকস্বামী যাত্রার প্রবেশদ্বার কয়েক পা এগোলেই; কনকচৌরি থেকে কার্তিকস্বামী দিনের বেলায় গাইড ছাড়াই উঠে যাওয়া যায়, দু-তিনটে জায়গায় শুধু পথ ভুল হওয়ার সম্ভাবনা, তবে পুরোটাই ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে, আর চিতাবাঘ বা ভালুকের দৌরাত্ম্য আছে। দুদিন আগেই নাকি একটা লেপার্ড কনকচৌরির রাস্তায় রাতে ঘুরতে দেখা গেছে। আমরা যেহেতু ভোর চারটেয় রওনা হব, তখন ঘুটঘুটে অন্ধকার থাকবে, সুতরাং সঞ্জয়জী-কে বলে একজন গাইডের ব্যবস্থা করে রাখলাম, গাইড আর কেউ নয়, সেই সাহায্যকারী রতন সিং নেগি। এখানে দুটো ঘর, আরেকটিতেও এক বাঙালী পরিবার রয়েছেন, তাঁরা কাল ভোরে হরিদ্বারের বাস ধরবেন। ইতিমধ্যেই দিনে দিনে কার্তিকস্বামী ঘুরে এসেছেন। রাতে আটটার মধ্যেই রুটি, ডাল আর সব্জী দিয়ে খাওয়া সেরে কম্বলের তলায় সেঁধিয়ে যাওয়া গেল, পরের দিন চারটেয় বেরনো। খানিক পরে হলেও চলত, কিন্তু যে ব্যথা নিয়ে তুঙ্গনাথ থেকে নেমেছিলাম, সেই ভয়ে হাতে সময় রাখলাম। অনেকে অবশ্য এখান থেকে দিনের বেলায় এগিয়ে গিয়ে মন্দিরের গেস্ট হাউজে থাকেন, সেখান থেকে আর আধ-এক কিলোমিটার উঠলেই মন্দির। তবে আমরা এই অন্ধকারে জঙ্গল পেরিয়ে উঠব বলে নীচেই থাকবো ঠিক করেছিলাম।

    ভোর চারটেয় আমরা তৈরী হয়ে নিলাম, বেরিয়ে দেখি রতন-জীও  তৈরী। লোহার ঝাঁপ তুলে টর্চ নিয়ে আমরা যখন বেরোলাম, তখনও নিশুতি রাত বলা চলে। কনকচৌরি থেকে কার্তিকস্বামীর মন্দির প্রায়  সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরত্বে। আর মন্দিরে গেস্ট হাউজ প্রায় আড়াই কিলোমিটার। প্রবেশদ্বার দিয়ে যখন ঢুকলাম, দুশো মিটার মত বাঁধানো রাস্তা পেরনোর পর শুরু হল মাটির রাস্তা, ঘন জঙ্গলের পথ। এতক্ষণ বুঝিনি, জঙ্গলে ঢোকার মুহূর্তে বুঝলাম চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে চতুর্দিক, মনে পড়ল আজ কোজাগরী পূর্ণিমা। আকাশে থালার মত চাঁদ। একপাশে মেঘ হালকা রয়েছে যদিও, তবু আশায় বুক বেঁধে চলা। রাস্তা কখনো সমতল, কখনো চড়াই, কিন্তু এর আগের যেসব চড়াই পেরিয়ে এসেছি তার থেকে অনেক কম, আরও আশ্চর্য, পায়ের ব্যথা টের পাচ্ছি না একেবারেই, অতএব ভালো গতিতেই উঠছি।  যত রাস্তা এগোচ্ছে, জঙ্গলের ছমছমে ভাব জাঁকিয়ে বসছে, চাঁদের আলোর আলপনা পথে, মাঝে মধ্যে খস খস, সর সর আওয়াজ! সেসব শুনলেই রতন-জী মুখে আওয়াজ করছেন যাতে জানোয়ার থাকলে দূরে সরে যায়। এক-দেড় কিলোমিটার পার হওয়ার পর হঠাৎ একটা কাকর হরিণ ডেকে উঠল একেবারে গায়ের কাছে, আশেপাশে কি থাকতে পারে সে সহজেই অনুমেয়। আমাদের সাবধান করে গাইড বলে দিলেন গায়ে গায়ে একসাথে চলতে, টর্চ তো জ্বালানোই। এদিকে সে কাকর হরিণ ডেকেই চলে ডেকেই চলে, কখনো একেবারে সামনে, আবার কখনো একটু দূরে। এর মধ্যে দু-এক জায়গায় একটু খাড়া চড়াই-ও ভাঙতে হলো। প্রায় দু-কিলোমিটার চলার পর ধীরে ধীরে কাকরটা অন্যদিকে দূরে সরে গেল ডাকতে ডাকতে; আমরা হাঁফ ছাড়লাম। এখানে একটা প্রশস্ত জায়গায় পৌঁছে দেখি সামনে জ্যোৎস্নায় ভেসে যাচ্ছে পাহাড়ের সারি, তার-ই মাঝে বিন্দু বিন্দু আলো। রতন আমাদের বুঝিয়ে দিলেন এখান থেকে তিন জেলার কিছু অংশ একসাথে দেখা যায়। চামোলি, পৌরি আর রুদ্রপ্রয়াগ। সে যে কি সুন্দর দৃশ্য, স্বপ্নের মতো! এখান থেকে জঙ্গলের রাস্তা শেষ হয়ে সিঁড়ি ভাঙা আর চড়াই শুরু হল, এরকমভাবে চলল গেস্ট হাউজ পর্যন্ত। গেস্ট হাউজ বেশ ছড়ানো মতো একটা জায়গায়, পাঁচ-ছটা ঘর, সামনে তাঁবুতে দেখি পূজারী বসে চা বানাচ্ছেন তখন, আমরা ও-রসে বঞ্চিত, সেকথা জানিয়ে উঠে চলি। কিছুটা উঠে সমতল, তারপরই দেখি এসে গেছি, সোজা উপরের সিঁড়ি নব্বইটা, তারপরেই মন্দিরের চাতাল, সুন্দরভাবে বাঁধানো, এখন চাঁদের আলোয় টর্চের আর দরকারই নেই কোনো!
     
    চন্দ্রাহত - জ্যোৎস্নারাতে বন পার হয়ে এসেছি, নীচে চামোলি-পৌরি-রুদ্রপ্রয়াগের পাহাড়
     
    পশ্চিমে চন্দ্রাস্ত
     
    পূর্বে সূর্যোদয়ের তোড়জোড় 
     
    উপরে উঠে দেখলাম তিন-চারজনের একটি দল রয়েছে, এঁরা সবাই বাঙালী, গেস্ট হাউজেই ছিলেন রাত্রে। ঘড়িতে সাড়ে পাঁচটা, আরও প্রায় এক ঘন্টা সূর্যোদয় হতে। কথায় কথায় জানা গেল, এঁরা আসছেন বদ্রীনাথ হয়ে, তুঙ্গনাথ যাননি, তবে কার্তিকস্বামীর চড়াই তুলনায় সহজ হওয়ায় একেই বেছে নিয়েছেন। চারপাশ ৩৬০ ডিগ্রী উন্মুক্ত। বাঁদিকে আবছা দেখা যায় চৌখাম্বার অবয়ব, সামনে সেই হাতি পর্বত থেকে ত্রিশূল অবধি দিগন্ত-জোড়া শিখরশ্রেণী। আমাদের ঠিক মাথার উপরে মেঘ জমা হয়েছে, কিন্তু পূব আর পশ্চিমের আকাশ এখনো পরিষ্কার। ছ’টা বাজতেই শুরু হল আকাশে রঙের খেলা। চোপতার গোধূলি যেমন মন ভরিয়েছিল, তেমনি এই কার্তিকস্বামীর ঊষা! পুবের আকাশ লাল, কমলা হয়ে হলুদ, যেন দিগন্ত জুড়ে কোনো দাবানল ধিক ধিক করে জ্বলে উঠে গনগনে আগুন হয়ে ছড়িয়ে পড়ল! এখানেও পাহাড়ের পিছন থেকে সূর্যোদয়, সুতরাং সামনের শিখরেরা আঁধারে; বরং বাঁপাশে চৌখাম্বা ইত্যাদির গায়ে হালকা আলোর ছোঁয়া। কার্তিকস্বামী থেকে বাঁপাশে আরও দুটো পাহাড়ের সামনে দেখা যায় চন্দ্রশিলাকে, দেখে বেশ পুলক লাগে মনে যে ওইখানে উঠেছিলাম, একেবারে চৌখাম্বার নাকের ডগায়! চন্দ্রশিলায় সূর্যোদয় হয়েছিল বেথারটোলির গা ঘেঁষে, এখানে সূর্যোদয় হবে ত্রিশূলের ডানপাশ থেকে। কিন্তু মেঘ-ও তার খেলা শুরু করেছে, ওদিকের পাহাড় ঢাকবে ঢাকবে করছে। আমরা এসে দাঁড়িয়েছি কার্তিকস্বামীর একচালা মন্দিরের ঠিক পেছনের চাতালে। জনা পনেরো পর্যটক এসে হাজির হয়েছেন ততক্ষণে। একজন টেলিস্কোপওয়ালা-ও এসেছেন, সবাইকে টেলিস্কোপ দিয়ে দেখতে বলছেন, তবে টাকার বিনিময়ে, এটাই ওনার পেশা। একজন বাচ্চামত গাইড বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে পঞ্চচুল্লী চিনিয়ে দিচ্ছে সঙ্গে আসা পর্যটক-কে, এক আইটিওয়ালা তার বন্ধুর সাথে অফার লেটার পাওয়া নিয়ে গল্পে  মশগুল, এমনকি শেয়ারবাজারের ওঠানামা নিয়েও দুই ভদ্রলোক গল্প জুড়েছেন – তো এইসব হচ্ছে। ভাগ্যিস চন্দ্রশিলায় এমনটা হয়নি, পথ যত সুগম, প্রকৃতিকে মনোমত উপভোগ করার পরিবেশ পাওয়ার সম্ভাবনা তত-ই দুর্গম হয়ে পড়ে হয়ত! এইবার সূর্যের আলো জোরালো হয়, ত্রিশূলের পাশ থেকে উঠে আসে সহস্ররশ্মি, মনোরম সূর্যোদয়! ঘুরে ঘুরে নরম আলোয় আলোকিত শিখরদের দেখতে থাকি, দুপাশে আর পিছনে ছড়িয়ে থাকা উত্তরাখন্ডের তিন জেলা, ভোরের আলোয় পাহাড়ের গায়ে গায়ে ভেসে ওঠা ওক, দেওদার, পাইনের বন, বাড়ি-ঘর, সরু ফিতের মতো রাস্তা, চাষের জমি। একই আকাশে পশ্চিমে তখনও চাঁদের অবস্থান, আর এদিকে পূবে সূর্যের শোভা! সূর্য অবশ্য বেশীক্ষণ রইল না, মেঘের আড়ালে চলে গেল খানিক পরেই। আর মেঘের প্রসার বাড়তে থাকল। আমরাও আর দেরী না করে নামার পথ ধরলাম। নামার সময় বুঝলাম কি গভীর জঙ্গল পার হয়ে এসেছিলাম! গাছের ফাঁক দিয়ে পাহাড় দেখতে দেখতে কখন যে নেমে এলাম টের পেলাম না। উঠেছিলাম ঘন্টা দেড়েক সময়ে, নামতে মাত্র পঁয়তাল্লিশ মিনিট, গাইড অবাক হয়ে বল, আপনার না পায়ে ব্যথা! আমি-ও বিজয়ীর হাসি দিলুম! ব্যাগপত্র গোছানোই ছিল, ফিরে এসে সঞ্জয়-জীর বানানো আলুর পরোটা খেয়ে বিদায় জানিয়ে গাড়িতে উঠে বসলাম।
     
    "তারই কিছু রঙ নাও তুমি" - আকাশের রঙ পরিবর্তন 

    কার্তিকস্বামী মন্দিরের চাতালের পিছন দিক থেকে 


    কার্তিকস্বামী মন্দির 


    কনকচৌরি থেকে কার্তিকস্বামীর পথ - দুপাশে গভীর জঙ্গল  


    নেমে আসার পথে গাছের ফাঁকে নন্দাঘুন্টি,ত্রিশূল - বাঁপাশে আবছা নন্দাদেবী বেথারটোলি


    আরও একবার দেখে নেওয়া মেঘ আসার আগে 


    নন্দাঘুন্টি,ত্রিশূল - নামার সময় জঙ্গলের ফাঁকে 


    নন্দাদেবী - নামার পথে 


    আমাদের যাত্রার মূলপর্ব শেষ, হৃষীকেশ শুধুই বিশ্রামপর্ব, যেহেতু দেরাদুন থেকে ফেরার বিমান ধরব। কনকচৌরি থেকে বেরিয়ে রুদ্রপ্রয়াগ হয়ে দেবপ্রয়াগ যাওয়ার পথে দেখে নিলাম ধারিদেবীর মন্দির। অলকানন্দার প্রায় মাঝ বরাবর নদীর তলদেশ থেকে অনেকটা উঁচুতে পিলার বানিয়ে তৈরী মন্দির আর তার প্রবেশপথ। এখানকার লোকজনের বিশ্বাস অলকানন্দা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্যে ২০১৩-তে ধারি দেবীর মন্দির অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয় আর তারপরেই নাকি দেবীর রোষে উত্তরাখন্ডের সেই অভূতপূর্ব বন্যা আর কেদারনাথের বিপর্যয় যা আবার দেবীর মন্দিরকে তার স্বস্থানে ফিরিয়ে আনে।  রাস্তা থেকে নীচে প্রবেশপথ অবধি প্রায় আধ কিলোমিটারের মত পথ নামলেও মন্দিরে ঢোকার মুখে প্রচন্ড ভিড় য়ার হৈ-হট্টগোল দেখে ভেতরে যাওয়ার ইচ্ছে হল না আর, উপরে ফিরে এসে আবার রওনা দিলাম দেবপ্রয়াগের দিকে। ইতিমধ্যে আকাশে মেঘ জমেছে বেশ, গত চার-পাঁচদিনের ঔজ্জ্বল্য আর নেই, যা দেখেছি তা পরম পাওয়া বলতে হবে, হিমালয়ের আবহাওয়া বলে কথা! দেবপ্রয়াগের সঙ্গম পার হয়ে আসার পথের সেই ধাবাতেই আবার মধ্যাহ্নভোজ সেরে নেওয়া গেল। এরপর সোজা হৃষীকেশ; সোজা বলছি বটে, শিবপুরী পার হওয়ার পর শেষ পাঁচ কিলোমিটার লাগল প্রায় দু-ঘন্টা, সেকি জ্যাম রে ভাই! পবন বলে এ নাকি কিছুই না, বিশেষ দিনে এই জ্যাম সকালে-বিকেলে দশ কিলোমিটার লম্বা হয়ে যায়! অথচ জ্যামের কারণ তেমন কিছুই বুঝলাম না নীচে নেমে আসা অবধি! আমাদের বুকিং ছিল জি এম ভি এন-এর গঙ্গা রিসর্টে, বিকেল চারটের দিকে এসে পৌঁছলাম।
     
    ধারিদেবীর মন্দির - পাশে অলকানন্দার পায়ে চলা পুল 


     প্ল্যান ছিল সেদিন বাকি বিকেল, সন্ধ্যেটুকু পুরোটাই ব্যালকনিতে বসে প্রবহমান গঙ্গার শোভা দেখেই কাটাবো, পরের দিন সকালে ঘুরে দেখে আসবো জানকী সেতু পার হয়ে পরমার্থ আশ্রমের দিকটা। এই রিসর্টের সামনে সুন্দর পায়ে চলার পথ আর তারপরেই গঙ্গার বিস্তার। সন্ধ্যে হতেই গান-বাজনার শব্দ ভেসে আসছিল, প্রথমে ভাবলাম ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিছু, মন দিয়ে শুনে দেখি ইংরাজী গান, পরিচিত সুর, তবে এত দূর থেকে খুব ভালো বুঝতে পারছিলাম না। পরে জেনেছিলাম ওটি বিটলস-দের স্মরণে গঙ্গা ফেস্ট হচ্ছিল, একদম পুরোদস্তুর বিভিন্ন ব্যান্ডের পরিবেশনায় বিটলস-এর গান। আহা, আগে যদি জানতাম! পরদিন সকালে কফি খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম, গঙ্গার ধার ধরে চলতে বেশ লাগছিল, রেলিঙ্-এর ওপাশেই নদীর তীরে শ্মশান, তবে সেখানে প্রাতঃকৃত্যের-ও কোনো বাধা নেই; কিছুটা এগোলেই জানকী সেতু, নবতম নির্মাণ, সেতুর দুপাশে গ্রাফিটি-ও রয়েছে তবে সেটি হনুমানের আর লব-কুশ সহ সীতার। জানকী সেতুর মাঝ বরাবর পায়ে চলার রাস্তা, আর দুপাশে দু-চাকার গাড়ির যাওয়া আর আসার জন্যে আলাদা রাস্তা, রেলিং দিয়ে আলাদা করা। এই প্রথম একসঙ্গে এত সাধু-সন্ন্যাসীর সাক্ষাৎ পেলাম এযাত্রায়, দূর-দূরান্ত থেকে নানা মানুষ মাথায় পোঁটলা চাপিয়ে চলেছে, কেউ তীর্থ করতে, কেউ কোনো আশ্রমে ঠাঁই নিতে বা কেউ অন্য কোনো কাজে। ওপাশে গিয়ে বাঁদিকে ঘুরে সোজা পথ চলে গেছে রামসেতু হয়ে লছমনঝুলার দিকে। রামসেতুর আগেই অবশ্য পরমার্থ আশ্রম। তবে এ-পথে গরু আর ষাঁড়ের ছড়াছড়ি, তাদের সাথে গা ঘষাঘষি না করলে বা নিদেনপক্ষে তাদের ল্যাজের ঝালরের পরশ না পেয়ে গন্তব্যে পৌঁছনো মুশকিল। একটু এগোতেই চোখে পড়ল বিটলসের স্মরণে সেই গঙ্গা ফেস্ট অনুষ্ঠানের চিহ্ন সব। বিটলস আশ্রম এপারেই, যেদিকে আসছি ঠিক তার বিপরীতে আধ কিলোমিটার পথ, ওপাশে পরে যাবো। আরও খাবার-দাবারের দোকান, স্যুভেনির-এর দোকান পার হয়ে পৌঁছলাম পরমার্থ আশ্রমের কাছে, কৃষ্ণার্জুনের রথের ভাস্কর্য নিয়ে গঙ্গার ঘাটে প্রবেশদ্বার, ওপাশে প্রতিষ্ঠিত সেই বিখ্যাত মহাদেবের ধ্যানস্থ মূর্তি। বাঁপাশে একটি ক্লক টাওয়ার, ডানপাশে একটি পেল্লায় হনুমানের মূর্তি, বুক চিরে রাম-সীতাকে দর্শন করাচ্ছে। আর রাস্তার ওপাশে পরমার্থ আশ্রমের মূল প্রবেশপথ, হিন্দুত্বের নানা বার্তা ঘোষণা করা রয়েছে সেখানে। এগিয়ে চলি, রাম সেতুর দেখা পাই। এ-রাস্তার পরমার্থ ঠিক আমার জন্যে নয় বুঝে এখানেই ক্ষান্ত দিই। রাম সেতুর পাশে গঙ্গার ঘাটে নেমে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ সকালের নির্মল শোভা দেখি সমতলের দিকে ছুটে চলা গঙ্গার, আশে পাশের সবুজ পাহাড় তাকে যেন অতন্দ্র প্রহরীর মত আগলে রেখেছে। জলে হাত রাখি, ঠান্ডা পরিষ্কার জল, হাতমুখে জলের ঝাপটা দিয়ে উঠে এসে আবার ফেরার পথ ধরি; বিটলস আশ্রম এবারের মত মুলতুবি রেখে বেদ নিকেতনের দিক থেকে ফিরে আসি, আবার জানকী সেতু পার হই।  এরপর বেলা বাড়লে পবনের গাড়িতে  আধঘন্টার পথ পার হয়ে দেরাদুনের জলিগ্র্যান্ট এয়ারপোর্ট আর প্রত্যাবর্তন।
     
    গঙ্গা রিসর্টের সামনে থেকে

    সামনে শ্মশান ও প্রাকৃতিক শৌচালয়, ওপাশে জানকী সেতু
     
    যা একটুর জন্যে দেখা হল না! 
     
    পরমার্থ নিকেতনের সামনের ঘাট কৃষ্ণার্জুনের রথ এবং সেই বিখ্যাত শিবের ভাস্কর্য 
     
    ঘাটের বাকি অংশ

     বেদ নিকেতন 

    যাত্রা তো শেষ হল, ফিরে এলাম চৌখাম্বার চত্বর থেকে, পায়ে পায়ে দেখে এলাম হিমালয়কে, ঠিক যেমনটি দেখার আকাঙ্ক্ষা ছিল, কটা দিন গাড়োয়ালের পাহাড়-বন-জঙ্গল-মানুষকে অনুভব করে এলাম আন্তরিকভাবে, শহুরে  হৈ-হট্টগোল, কর্পোরেট দামামা, দূষণ সব কিছু থেকে দূরে, দু-দন্ড বসে একেবারে চিন্তামুক্ত হয়ে শুধু হিমালয়ের শোভা দেখে আর প্রকৃতির নিজস্ব শব্দ-গন্ধ-স্পর্শে বিভোর হয়ে। দেখলাম প্রতি পলে সূর্যের ওঠানামার সঙ্গে শিখরশ্রেণীর বদলাতে থাকা রূপ, দেখলাম অলকানন্দা, মন্দাকিনী, ভাগীরথীর নানা রঙের চঞ্চল ধারা কেমনভাবে ধাপে ধাপে তৈরী করে দিল গঙ্গার প্রবাহ একে অন্যের সাথে মিলে গিয়ে! কিন্তু হিমালয়ের সঙ্গে এই দেখাশোনার তো কোনো শেষ নেই, কারণ ওই যে, “পূর্ণ থেকে পূর্ণ নিলে পূর্ণ থাকে বাকি” – হিমালয় যে তেমন-ই!

    সুতরাং এ-পথে আবার ফিরে আসা, সময়ের অপেক্ষা মাত্র!
     
    গল্পের মুখ্য চরিত্ররা - তুঙ্গনাথ থেকে চোপতা নেমে আসার পথে 
     
     
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ | ৪১৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • গোবু | 202.8.116.158 | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০১:০১527056
  • "রুদ্রপ্রয়াগে আমাদের আস্তানা কার্তিকেয় প্যালেস" - কনকচৌরি হবে, তাইতো? 
  • সুদীপ্ত | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৪527057
  •  গোবু, হ্যাঁ অবশ্যই কনকচৌরি, ঠিক করে দিলাম
  • | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:১৬527061
  • লেখা ছবি মিলিয়ে এক্কেরে পূর্ণ প্যাকেজ।  ঘুরতে থাক লিখতে থাক।
    আহ কবে যে যাবো।
  • সুদীপ্ত | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:৩০527067
  • থ্যাংকিউ দমদি। হাঁটাহাঁটি চালিয়ে যাও। তবে গেলে অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের শুরুতে যেও, আবহাওয়া ভালো পাওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে। তুঙ্গনাথের আরেকটা সমস্যা বছরের প্রথম স্নোফল হলেই মন্দির বন্ধ করার তোড়জোড় করে, দিওয়ালি পর্যন্ত অপেক্ষা করে না কেদারের মতো। এবারে ৩১ শে অক্টোবর বন্ধ হয়ে গেছে, ওটা খেয়াল রাখতে হবে।
  • দীমু | 223.191.51.79 | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৩২527075
  • হিমালয়ান গ্রিফন, চন্দ্রাহত এবং চন্দ্রাস্তর ছবি খুব ভাল লাগল yes
  • সুদীপ্ত | ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:৪৮527093
  • ধন্যবাদ দীমু,  আপনার লেখাটা পড়ে মনে হলো, হয়ত একটা প্যানোরামা তুলে নিলে ভালো হত, পশ্চিমে ডুবতে বসা চাঁদ, মাঝে হিমালয়ের সু-উচ্চ শিখরশ্রেণী আর তারপরেই পূবে সূর্য,  একসাথে একই দৃশ্যে! যাক, চোখে দেখেছি তাই বা কম কী!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন