এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • সাত রঙা ফুল / ভালেন্টিভ কাতায়েভ

    Bratin Das লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ | ৭৩২ বার পঠিত | রেটিং ৪ (২ জন)
  • মেয়েটির নাম জ্যেনা। সে তার পরিবারের জন্যে রুটি সংগ্রহ করতে গেছে। মোট সাতটা রুটি কিনলো জেন্যা। কালো জিরা দেওয়া
    দুটো রুটি বাবার জন্যে। মায়ের জন্যে দুটো রুটি পোস্ত দেওয়া, তার নিজের দুটি রুটি মিষ্টি দেওয়া আর ছোট্ট ভাই পাভলকের জন্যে একটা। জেন্যা এদিক ওদিক যায় অবাক হয়ে দেখে। এই সুযোগে একটা কুকুর তার সাত সাত টা রুটি খেয়ে নেয়। জেন্যা তাকে তাড়া করে। কিন্তু কুকুরের নাগাল পায় না। হঠাৎ সে নিজেই হারিয়ে যায়। ভয় পেয়ে সে কাঁদতে লাগে। হঠাৎ এক বুড়ি আসে। বলে এই মেয়ে কাঁদছিস কেন। জেন্যা সব ঘটনা খুলে বলে বুড়ি কে। বুড়ি বলে রুটি আমি কোথায় পাবো?তবে এই সাত রঙা ফুল টা নিয়ে যা। যার একটা পাপড়ি হলুদ, একটা লাল, একটা নীল,একটা সবুজ, একটা কমলা, একটা সবুজ আর একটা আসমানি।কিছু চাইতে হলেই একটা পাপড়ি ছিঁড়ে
    বলতে হবে ঃ-

    " পাপড়ি আমার, যা উড়ে যা,
    পূর্ব পশ্চিম যা ঘুরে যা,
    যা উত্তর, যা দক্ষিণ,
    সাঙ্গ করে প্রদক্ষিণ
    যেই না এসে পরবি ভুৃঁইয়ে-
    ইচ্ছে উঠুক সফল হয়ে।"

    এটা বললেই তুমি যা চাও হয়ে যাবে।এই বলে বুড়ি হঠাৎ কোথায় মিলিয়ে গেল। জেন্যা আবার কাঁদতে শুরু করলো।হঠাৎ তার মনে পরলো সেই ফুল টার কথা। তাড়াতাড়ি হলদে পাপড়ি টি ছিঁড়ে সে বললো সে বাড়ি ফিরতে চায়। আর তার হাতে যেন থলে ভর্তি রুটি থাকে। ওমনিসে তো অবাক। বললো এমন চমৎকার ফুল টিকে একটা ফুলদানি তে না রাখলেই নয়।এই বলে মায়ের সব থেকে প্রিয় ফুলদানি টা যেই না সে পারতে গেল। ঠিক সেই সময়েই জানলা দিয়ে দেখতে পেল কটা কাক। এমনি তার ইচ্ছে হল কটা কাক গুণে দেখে। আঙুল পাঁজি করে গুণতে গিয়ে দুম করে ওপর থেকে পরে ফুলদানি টা গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গেল। রান্নাঘর থেকে মায়ের কন্ঠস্বর শোনা গেল "অকম্মার ধাড়ি, কিছু ভাঙলি বুঝি?"। না না কিছু নয় মা। তুমি কাজ করো। এইবার লাল রঙের পাপড়ি ছিঁড়ে সেই পদ্য টা বলতেই ফুলদানি জুড়ে গেল। খামোখা দু দুটো পাপড়ি খোওয়া গেল মনের দুঃখে বাইরে খেলতে
    গেল জেন্যা। দেখে ছেলে রা একটা তক্তা বেঁধে উত্তর মেরু তে যাবার প্ল্যান করছে। সে বললো আমাকে নে ভাই। তুই মেয়ে।কোন মেয়ে কে নিয়ে আমরা উত্তর মেরু তে যাবো না।ছেলেদের সাফ জবাব। জেন্যা বললো নিবি না তো নিবি না, এই বলে সে নীল পাপড়ি টি ছিঁড়ে ফেললো।ওমনি সাঁ করে পৌঁছে গেল উত্তর মেরু তে। এই আত্তো আত্তো
    বরফের মধ্যে। সেই বরফে সে কাঁপতে লাগলো। এমন সময় সাত সাতটা শ্বেত ভল্লুক তাকে তাড়া করলো। তাদের প্রথমটা থমথমে , দ্বিতীয় টার ঝাঁড়কা লোম, তার পরের টা গরগরেটা, চতুর্থ টা অতি ধূর্ত, পঞ্চম টা রাগে টই টম্বর, ছয়ের টা ভয়ে র টা আর শেষের টা সব থেকে বড়।কোন রকমে সবুজ পাপড়ি টা ছিঁড়ে জেন্যা আবার নিজের জায়গায় ফিরে এল। ছেলে রা তাকে নিয়ে তামাশা শুরু করে দিল।কী রে খুব তো যাবি বলেছিলি উত্তর মেরু তে।তো কী হল? জেন্যা বললো গিয়েছিলাম তো।এই দেখ এখনো নাকে বরফ লেগে আছে। কেউ তার কথা বিশ্বাস করলো না উল্টে হাসতে থাকলো। জেন্যার খুব রাগ হল। সে ওখান থেকে চলে গিয়ে মেয়েদের খেলা র ওখানে গেল।মেয়েরা কত কিছু নিয়ে খেলছে কারো কাছে ঠেলা গাড়ি, কারোর কাছে কথা বলা পুতুল, কারো কাছে তিন চাকার সাইকেল। হিংসে তে সে হলদে হয়ে গেল। কমলা রঙের পাপড়ি টা ছিঁড়ে সে বললো দুনিয়ায় খেলনা আমার হোক। সাথে সাথে কী কান্ড!! শয়ে শয়ে খেলনা উড়ে আসতে লাগলো তার দিকে। কথা বলা পুতুল, তিন চাকা র সাইকেল, এমন আরো কত কী!! প্রথমে মস্কোর দোকানের পুতুল তারপরে লেলিনগ্রাদ, খার্কভ,কিয়েভ, লভভ আর অন্য সব সোভিয়েত শহর থেকে। রাস্তা জ্যাম হয়ে গেল। তখনও আমেরিকা বা পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে পুতুল আসা বাকি৷ এইবার ভয় পেয়ে গেল জেন্যা।বেগুনি পাপড়ি টি ছিঁড়ে বাতাসে উড়িয়ে দিয়ে বললে চাই না, চাই না।আমার একটা খেলনাও চাইনা। ওমনি চোখের নিমিষে সব খেলনা
    হাওয়া। জেন্যা বসে বসে ভাবতে লাগলো তাইতো আমার ছ ছটা পাপড়ি চলে গেল একটাও কাজের কাজ হল না। ভাবতে ভাবতে ই হঠাৎ তার চোখ পরলো ভারী সুন্দর একটা ছেলের দিকে। তার খুব ইচ্ছে হল ছেলেটা র সাথে সে খেলা করে। কিন্তু সেকথা ছেলে টিকে বলতে ছেলে টি বললো তা হবার যো নেই। এই দেখো আমার একটা পা যে খোঁড়া। ও এই ব্যাপার। রোসো। বলে সে তার শেষ আসমানি পাপড়ি টা বাতাসে উড়িয়ে দিল।ওমনি ঘটলো অদ্ভুত ঘটনা। ছেলে টির পা একদম ঠিক হয়ে গেল।সে তাড়া করলো জেন্যা কে। তারা খেলতে লাগলো...

    সাত রঙা ফুল / ভালেন্টিভ কাতায়েভ/দ্যু
     
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Bratin Das | ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ২০:৩৩514867
  • সেল থেকে এডিট করার অপশন পাচ্ছি না 
    তাই বই এর ফটো টা দিতে পারছি না। 
     
    অথচ ল্যাপটপ  থেকে দিব্যি " সম্পাদনা করুন" দেখতে পাচ্ছি। কী চাপ জীবনে। sad
  • kk | 103.252.164.123 | ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:০১514870
  • এইটা আমার খুব প্রিয় বই।
  • Ranjan Roy | ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:৪২514919
  • Bratin 
    খুব ভালো লাগল. 
    মূল লেখাটি এবং তোমার অনুবাদ. অনবদ্য। 
    থেমো না, চালিয়ে যাও।
  • Nirmalya Nag | ০২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:৫৯514977
  • আমার এক সময়ের অতি প্রিয় বই। সম্ভবত ননী ভৌমিকের অনুবাদ। পুরোটা পেলে ভাল হত। প্রতিটা পাপড়ির ছড়া গুলো সহ। ভালুকের ছড়াটা মনে আছে - প্রথমটা থমথমেটা/ দোসরাজন ঝাকড়া লোম / তারপরেটা গরগরেটা / চতুর্থ অতি ধূর্ত / পাাঁচ নম্বর রাগে টম্বর / ছয়েরটা ভয়েরটা / আর সপ্তম একেবারে বৃহত্তম। 
  • Nirmalya Nag | ০২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:৫৯514978
  • বই এর ফটো দিয়ে দিলাম
  • @Nirmalya Nag | 43.251.171.123 | ০২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:৩২514981
  • https://sovietbooksinbengali.blogspot.com/p/blog-page_1.html
    এখান থেকে যেকোনো সোভিয়েত বাংলা বই ফ্রিতে ডাউনলোড করতে পারবেন। মাঝে গুগুল ড্রাইভের সমস্যা ছিল, সেটা কেটে গেছে। তবু কোনো লিংক ডাউন পেলে ব্লগে রিপোর্ট করবেন, ঠিক করে দেওয়া যাবে। 
    ইন্টারনেট এ কোনো সোভিয়েত বাংলা বইয়ের সফট কপি পেলে একটু মিলিয়ে দেখে নেবেন, সেটা এই ব্লগ থেকেই নেওয়া এবং কোয়ালিটি কমিয়ে সাইজ কমানো না থাকলে পিডিএফ-এর ফাইল সাইজও একই হবে। আমার জানা আর কেউ এই বই ডিজিটাইজ করে না। 
    দ্যু প্রকাশনা বা বাংলাদেশ ও এ দেশের অনেক প্রকাশনাই এই বই নতুন প্রিন্ট করছে। কখনও কখনও বইতে এক লাইনে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে, কখনও তাও করে না। তবে বইয়ের ইমেজগুলো মন দিয়ে লক্ষ করে দেখলেই বুঝতে পারবেন সেগুলো এই ব্লগ থেকে নেওয়া কি না।
  • Bratin Das | ০৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১৮:৫৮515061
  • মনে হয় না।ওরাই অনুবাদ  করেছে কারণ " প্রথম শিকার" গল্পে পানি শব্দ  টা ব্যবহার  করা হয়েছে। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন