এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • এক দুগুণে শূণ্য -৩

    Kishore Ghosal লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ | ৬৭৯ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)


  • কুমুদিনী উদ্যানের গরুর অগম্য লোহার গেট দিয়ে ঢুকেই গোপাল বলল, “নেপালদা, ওই যে... দুই বুড়ো ওই দিকের বেঞ্চে বসে আছে”। 
    বিপদতারণ বলল, “আঃ খদ্দের লক্ষ্মী, বুড়ো বলতে নেই। আর “নেপালদা” “নেপালদা বলছিস”, আমি বিপদতারণ আর তুই গোপাল, ভুলে যাচ্ছিস?”
    গোপাল বলল, “আহা, সে তো ওদের সামনে। এখনতো আর ওরা সামনে নেই”!
    “তা না থাক, তবু আসল নাম ধরে ডাকবি না, ভুল হয়ে যাবে। আমি নেপাল নই, তুইও এখন হরি নোস। আর তুই প্রথম থেকে কথার মাঝখানে ফুট কাটছিলি কেন রে? সবে চার ধরেছে, ফাৎনা নড়ছে, তার মধ্যে তোর বুজকুরি, মাছ পালালে?”
    “কী করবো বেরিয়ে যায় যে, আচ্ছা এই কুলুপ দিলাম, আর কথা বলবো না। এখন থেকে চেষ্টা করবো মিউট মোডে থাকতে”।
    বেঞ্চে বসা সনৎবাবু আর কমলবাবু ওদের দেখতে পেয়ে, হাত নাড়লেন, বিপদতারণও হাত নাড়ল, তারপর গোপালকে বলল, “মনে থাকে যেন। ওই যে আমাদের দেখতে পেয়েছেন, ওঁরা হাত নাড়ছেন, চল ওই দিকেই যাই”।

    পার্কে তেমন আর লোকজন নেই। দু একজন জলহস্তী মানুষ, হাঁসফাঁস করে অকারণ হাঁটছে। তিন চারজন ঘাসে বসে প্রাণায়াম করছে। ওরা দুজনে ইঁট বাঁধানো হাঁটা পথ দিয়ে আস্তে আস্তে বেঞ্চের দিকে গেল। সনৎবাবুদের সামনে গিয়ে বিপদতারণ বলল, “আপনাদের পার্কটা কিন্তু বেশ। চারদিকে সাজানো সবুজ, প্রচুর অক্সিজেনে ভরা বাতাস। মন-টন একদম ঝরঝরে হয়ে যায়”।
    গোপাল মিউট মোড ভুলে বলে উঠল, “ইহকাল ঝরঝরে হয়ে যায়, কিন্তু পরকাল হয় কিনা জানা যায় না”।
    বিপদতারণ কটমট করে গোপালের দিকে তাকাল। কিন্তু কমলবাবু কী বুঝলেন কে জানে, বললেন, “বেশ বলেছো গোপাল, ইহকাল ঝরঝরে হয়ে যায়...হা হা হা হা...বসো হে, বেঞ্চে এসে বসো, সনৎ আমার দিকে একটু সরে আয়”!
    বিপদতারণ ঘোর আপত্তি করে বলল, “ছি ছি তা কী করে হয়? আপনাদের সঙ্গে একই আসনে, পাশাপাশি? আমার আবার লঘুগুরু জ্ঞান খুব টনটনে। আপনারা ওই উঁচুতে বেঞ্চে বসুন, আমরা বসি আপনাদের পায়ের কাছে, এই ঘাসে”।
    সনৎবাবু হৈ হৈ করে উঠে বললেন, “আরে না না, সেটা আবার কথা হল নাকি? তার থেকে আমরা সবাই মিলেই ঘাসে বসি। কি বল কমল, তাতে মুখোমুখি বসে কথাবার্তা বলতেও সুবিধে হবে”।
    কমলবাবু বন্ধুকে সতর্ক করে দিয়ে বললেন, “কিন্তু হাঁটু? ঘাসে হাঁটু মুড়ে বসতে পারবি তো?”
    বিপদতারণ লুফে নিল কথাটা, বলল, “এঃহে, আপনাদের হাঁটুতে ব্যথা বুঝি? মোটে আটান্নতেই এই! অবিশ্যি আজকাল হাঁটুর আর দোষ কী, হাঁটুর আর বয়েস কী? এই আমারই দেখুন না, পূর্ণিমা, অমাবস্যায় হাঁটুদুটো কেমন কন্‌কন্‌ করে। গোপাল তেল মালিশ করে দিলে বেশ আরাম হয়। গোপাল সেই তেলের শিশিটা তোর ব্যাগে নেই?”
    গোপাল অনর্থক ব্যাগ হাতড়ে দেখে বলল, “না গো, বিপদদা, তাড়াহুড়োতে ভুলে গেছি”।
    কমলবাবু সহানুভূতি মাখা গলায় বললেন, “তোমারও হাঁটুতে ব্যথা? বল কী হে?”
    “দোষ তো হাঁটুর নয় কাকু, দোষ ভেজালের। কোন্‌ খাঁটি জিনিষটা আমরা খাচ্ছি বলুন? আপনাদের সময় তাও কিছু পাওয়া যেত। এখন? ভেজালের বিষ পেটে গিয়ে হাঁটু, চোখ, কান, নাক সব বিগড়োচ্ছে। কদিন পরে দেখবেন, হাঁটুর বয়সী ছেলেমেয়েরাও বাতের ব্যথায় কাতরাচ্ছে! মাঠে খেলবে কী? হাতে ছড়ি নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা ফেরা করবে!”
    “ঠিকই বলেছ, বিপদ, আমাদের সে সব দিনই ছিল আলাদা, গয়লাদের খাঁটি ঘি, দুধ, কলুদের ঘানির তেল, পুকুরের টাটকা মাছ তুলে আনত জেলেরা, আর সরল চাষিদের ফলানো ফনফনে সবজি...” অতীতের স্বপ্নমাখানো সুরে সনৎবাবু বললেন।
    বিপদতারণ সনৎবাবুকে আর বাড়তে না দিয়ে বলল, “আমার তেলটা হাঁটুতে মালিশ করলে খুব আরাম পাবেন। তেলটা বাড়িতে আপনারাও বানিয়ে নিতে পারেন, কাকু। কাকিমাকে বলবেন বানিয়ে দিতে। ঘৃতকুমারী, অশ্বগন্ধা, শ্বেতবেড়েলার মূল আর আকন্দপাতা – কুচিকুচি করে কেটে, খাঁটি সরষের তেলে ভিজিয়ে দিন সাতেক কড়া রোদ্দুরে রাখবেন। ব্যস্‌ আপনার মালিশের তেল তৈরি!” 
    কমলবাবু আহ্লাদে বলে উঠলেন, “বাবা, তোমার আয়ুর্বেদও জানা আছে বুঝি?”
    গোপাল চুপ করে থাকতে পারল না, বলে উঠল, “দাদা, ওই সব নিয়েই তো আছেন। দাদার অনেক বিদ্যা। আয়ুর্বেদ বিদ্যার কোন সাইড এফেক্ট নেই, কিন্তু অন্য বিদ্যেগুলোর সাংঘাতিক সাইড এফেক্ট”।
    হতাশ গলায় বিপদতারণ বলল, “গোপাল, কতবার বলবো, বড়দের কথার মধ্যে কথা বলতে নেই?”
    সনৎবাবু একটু প্রশ্রয়ের সুরে বললেন, “আহা, গোপালকে বকছো কেন, বিপদ? ও তো খারাপ কথা কিছু বলেনি! তোমার গুণের কথা বললেই, তুমি দেখছি রেগে যাও। কী বিনয় আহা, তোমার মা খুবই পুণ্যবতী মহিলা, তাঁর বিপত্তারিণী ব্রত করা সার্থক। তাঁর সঙ্গে অন্ততঃ একবার দেখা করতে খুব ইচ্ছে হয়...”।
    বিপদতারণ ক্ষুণ্ণ মুখে বলল, “কিন্তু আমি চাই না, আমার মায়ের সঙ্গে এখনই আপনাদের দেখা হোক”!
    এই কথায় চমকে উঠে দুজনেই একসঙ্গে বলে উঠলেন, “কেন? কেন? চাও না কেন?”
    নেপাল শোক সন্তপ্ত স্বরে বলল, “আপনাদের এত তাড়াতাড়ি ছাড়তে ইচ্ছে হয় না, আপনাদের স্নেহের ছায়ায় আমরা আরও বেশ কিছুদিন নিশ্চিন্তে থাকি, এই আমাদের লোভ”!
    সনৎবাবু আরো আশ্চর্য হয়ে বললেন, “সে আবার কী? তোমার কথা কিছুই বুঝতে পারছি না, বিপদ, বড়ো বিপদে ফেলছো, তুমি!”
    “আমার মা দেহ রেখেছেন, বহুদিন। ইহকালে তাঁর সঙ্গে আর দেখা করা সম্ভব নয়”।
    “ইস্‌, চলে গেছেন। দেখা হল না?” কমলবাবু খুব আক্ষেপ নিয়ে বললেন।
    সনৎবাবু বললেন,  “আহা রে, মা-মরা ছেলে, বড়ো দুঃখ কষ্টে মানুষ”।
    কমলবাবু তাঁকে সমর্থন করে বললেন, “কতো বিপদ আপদ সামলে, তবেই তো আজকের বিপদতারণ! ও নিয়ে দুঃখ করো না, বিপদ, বাপ-মা চিরদিন কারো থাকে? থাকে না”। নেপাল মুখ নিচু করে রইল, তার দু চোখ ছলছল করছে।
    সনৎবাবু বললেন, “মায়ের কথায় বড়ো দাগা পেয়েছে ছেলেটা। আহা রে, বেচারা! দুঃখ কোরো না, বিপদ, তাঁর ব্রতের কথা মনে করে, আমাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করো”। 
    চোখ নাক মুছে বিপদতারণ ধরা গলায় বলল, “সে কথা একশ বার কাকাবাবু, বলুন আপনাদের বিপদে আমি কীভাবে সাহায্য করতে পারি? আমি কিন্তু শুধু টাকার সুরাহা করে দিতে পারি, অন্য কিছু পারি না”।
    সনৎবাবু একটু যেন হতাশ হলেন, বললেন, “যাচ্চলে! টাকার সুরাহা মানে? কম সুদে লোন? লোন নিয়ে শুধবো কী করে?”
    কমলবাবুও ঘাড় নেড়ে বললেন, “না, না, তবে আর আমাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করে লাভ নেই বিপদ, লোন নিয়ে কি নতুন বিপদ ডেকে আনবো? ব্যাংকের থেকে রোজ দুটো-তিনটে ফোন আসে, আমার জন্যেই নাকি লোন অ্যাপ্রুভ্‌ড্‌ হয়ে পড়ে আছে, “হ্যাঁ” বললেই হয়। ওই রকম লোন নিয়ে ডুববো, পাগল হয়েছো?”
    বিপদতারণ এবার মুখে ফিকে হাসি নিয়ে বলল, “ওফ্‌, কাকাবাবু, আপনারা আমার কথা তো শুনলেনই না, উলটে লোন ভেবে বসলেন। আপনার যা টাকা আছে, তাকে আমি ডবল করে দিতে পারি”।
    সনৎবাবু আঁতকে উঠলেন, “ওই ফেরেব্বাজ মংলার মতো? ইয়ে...মানে সজ্জন মঙ্গলের মতো? চার বছরে ডবল? তারপর কোম্পানি উলটে যাবে?”
    কমলবাবুও মাথা নেড়ে আপত্তি করে বললেন, “ওই চক্করে আমরা পড়বো না, বিপদ”।
    বিপদতারণ দমে যাবার পাত্র নয়, বলল, “চার বছরে নয়, মাত্র চব্বিশ ঘন্টায়! আপনাদের চোখের সামনে। আজকে যা নেবো, আগামীকাল আপনার হাতে ডবল তুলে দেব”।
    গোপাল আরো পরিষ্কার করে বলল, “আজ দশ দিলে কাল বিশ। আজ বিশ দিলে কাল চল্লিশ”!
    অবিশ্বাসের সুরে সনৎবাবু জিগ্‌গেস করলেন, “সত্যি বলছো?”
    এই কথায় অত্যন্ত হতাশ হয়ে বিপদতারণ বলল, “দেখলি গোপাল, তখনই বললাম, আমার নামে সাতকাহন করে বলিস না, কেউই বিশ্বাস করবে না। এখন হলো তো?”
    একটু অপ্রস্তুত হয়ে কমলবাবু বললেন, “আহা, তুমি অত উতলা হয়ো না, বিপদ। আমরা সাধারণ ছাপোষা মানুষ তো! এই সব অলৌকিক ব্যাপার স্যাপার শুনলে চমকে উঠি”।
    সনৎবাবুর এসব কথায় মন নেই, তিনি হিসেবে মজেছিলেন, জিগ্‌গেস করলেন, “তার মানে, আজকে এখন আমি যদি তোমাকে দুলাখ দিই, কাল তুমি আমাকে চার লাখ দেবে?”
    বিপদতারণ সম্পূর্ণ আস্থা নিয়ে বলল, “ব্যাপারটা তাই। কিন্তু প্রথমে ছোট করে শুরু করুন না, আমি লোকটা কেমন আগে সেটা যাচাই করে নিন। আজকে ধরুন পাঁচহাজার দিলেন, আর আপনাদের চোখে ধুলো দিয়ে রাত্রে আমরা বেপাত্তা হয়ে গেলাম! তখন? আপনার পাঁচহাজারই লস হবে। সেটুকু আপনারা সামলে নিতে পারবেন। কিন্তু দুলাখের ধাক্কা কি সামলাতে পারবেন?”
    “আমরা যদি চিটিংবাজ, ফেরেব্বাজ হই, আপনাদের আমও যাবে, ছালাও যাবে!”
    গোপালের এই মন্তব্যে বিপদতারণ খুশিই হল, তাকে সমর্থন করে বলল, “ওটা ছাড়াও আরেকটা আছে, খাচ্ছিল তাঁতি তাঁত বুনে, কাল হল তার এঁড়ে কিনে”।
    অন্য কথায় সনৎবাবুর মন নেই, মনে হল, তিনি গভীর চিন্তায় মগ্ন রয়েছেন, বললেন, “এই চব্বিশ ঘন্টা কি তুমি আমাদের সঙ্গেই থাকবে?”
    বিপদতারণ একটু গম্ভীর হয়ে বলল, “তবে? আপনাদের বাড়িতেই তো থাকবো! আজ সিঙ্গল নিয়ে যাবো, কাল আবার ডবল নিয়ে ফিরে আসবো? আমাদের যাতায়াতের খরচ, ট্রেনভাড়া, বাস ভাড়া...”।
    গোপাল আরো জুড়লো, “খাই খরচও আছে একটা...”।
    বিপদতারণ আরো নিশ্চিত করে বলল, “ঠিক। আমরা আপনাদের বাড়িতেই রইলাম। দুটো শাকভাত যা খাওয়ালেন খেলাম, রাতটা আপনাদের বাড়িতেই কাটিয়ে, সকালে আপনার হিসেবপত্র বুঝিয়ে তবে আমাদের ছুটি!”
    সনৎবাবুর মনের সংশয় অনেকটাই ফিকে হয়েছে এতক্ষণে, বন্ধুকে জিগ্‌গেস করলেন, “কী বলছিস্‌, কমল?”
    কমলবাবু বললেন, “আমি তো খারাপ কিছু দেখছি না”।
    “আমিও না, এমন সুযোগ হাত ছাড়া করা কি উচিৎ?”
    সনৎবাবুর এই কথায় কমলবাবু বললেন, “কক্ষণো না, যে ছাড়ে সে আহাম্মক!”
    আহাম্মকের কথায় গোপাল আবার উথলে উঠল, “আহাম্মকের এক, যে পরকে ধার দিয়ে, নিজের খালি রাখে ট্যাঁক। আহাম্মকের দুই, যে নিজের চালে তুলতে দেয় পড়শী জনের পুঁই”।।
    বিপদতারণ তার বাচালতায় একটু বিরক্ত হয়ে বলল, “আঃ গোপাল, তুই চুপ করবি? এখানে অত্যন্ত সিরিয়াস একটা ব্যাপার নিয়ে কথা চলছে, আর তুই চ্যাংড়ামি করছিস?”
    কমলবাবু প্রশ্রয় মাখা গলায় বললেন, “আহা, বিপদ, ছেলেমানুষ একটু বাচালতা করবে বৈকি! আর তোমার মতো ধীর স্থির গুণী কী আর সবাই হতে পারে?” তাহলে কী ঠিক করলি, সনৎ?”
    সনৎবাবু এখন আবার একটু গম্ভীর, বললেন, “একটা কথা আমার খটকা লাগছে, সেটা বলি, বিপদ?”
    কমলবাবু একটু অবাক হয়ে জিগ্‌গেস করলেন, “তোর আবার কিসের খটকা রে, সনৎ! আমি তো কিছুই দেখছি না?”
    সনৎবাবু বললেন, “তুমি অন্যের বিপদ মাথায় নিয়ে অন্যের টাকা ডবল করে বেড়াচ্ছো, বিপদ, অথচ নিজের টাকা ডবল করে তুমি বড়োলোক হওনি কেন?”
    বিপদতারণ যেন অভিভূত হয়ে গেল একথায়, বলল, “মোক্ষম প্রশ্ন করেছেন, কাকাবাবু। আপনার পায়ের ধুলো দিন, যাবার সময় আরো নিয়ে যাবো। মাদুলিতে ভরে ঊর্ধ্ববাহুতে বেঁধে রাখবো। আপনি এ প্রশ্নটা না করলে, আপনার সরলতায় আমি মুগ্ধ হতাম, কিন্তু শ্রদ্ধা করতে পারতাম না। এখন পারবো, আপনার মতো বিচক্ষণ মানুষকে শ্রদ্ধা না করে, অন্য উপায় আছে?”
    কমলবাবু ঘাড় মাথা চুলকে বললেন, “ঠিকই তো! এ কথাটা আমার মাথায় আসে নি তো! সনৎটা চিরকালই আমার থেকে ভালো ছাত্র ছিল। অঙ্কে বরাবর আমার থেকে দশবারো নম্বর বেশি পেত”।
    বিপদতারণ বলল, “আমার মন্ত্রের যে শক্তিতে টাকা ডবল হয়, সেটা আমি নিজের জন্যে ব্যবহার করতে পারি না। সে নিয়ম নেই। মায়ের কঠোর নির্দেশ আছে। নিজের জন্যে কিংবা নিজের কোন আত্মীয় পরিজনের জন্যে আমি এই মন্ত্র ব্যবহার করতে পারবো না। করলেই মন্ত্রের শক্তি হাপিস হয়ে যাবে!”
    সনৎবাবু অবাক হয়ে জিগ্‌গেস করলেন, “তাই? তাহলে তোমাদের স্বার্থ কী?”
    “স্বার্থের জন্যে তো আমরা করি না, কাকাবাবু। আর্তপীড়িতের সেবার জন্যেই এই ব্রত”।
    কমলবাবু চট করে যেন বুঝে ফেললেন, বললেন, “ওসব মন্ত্রের অনেক নিয়ম কানুন আছে রে, সনৎ। আমরা পাপীতাপী মানুষ ওসবের কী বুঝবো?”
    “তাই তো মনে হচ্ছে রে”। এখন অনেকটা নিশ্চিন্ত হয়ে সনৎবাবু বললেন, তার উত্তরে বিপদতারণ বলল, “তবে একেবারে কোন স্বার্থই নেই তাও বলবো না”। বিপদতারণের এই কথায়, সনৎবাবু আর কমলবাবু নিজেদের মধ্যে মুখ চাওয়াচাওয়ি করলেন, তাঁদের ভাবখানা – এইবার আসল পথে এসো চাঁদু, এতক্ষণ অনেক ধানাই পানাই করেছো!
    “কী স্বার্থ বিপদ?” কমলবাবুর প্রশ্নে বিপদতারণ বলল, “আমি সামান্য কিছু কমিশন নিয়ে থাকি, মাত্র দশ পার্সেন্ট। মানে যে টাকাটা আপনার বাড়ছে, তার দশ পার্সেন্ট। ধরুন আপনি পাঁচ হাজার দিলেন, আমি আপনাকে দেব দশ। বাড়তি এই পাঁচের দশ পার্সেন্ট - মানে পাঁচশো টাকা আমি নেব! ইয়ে, মানে, এটাও না নিতে পারলে ভালো হত, কিন্তু আমাদের জীবন ধারণের জন্যে, গ্রাসাচ্ছাদনের জন্যেও তো কিছু অর্থের প্রয়োজন হয়ই! তা ছাড়া বিপত্তারিণী মায়ের নিয়মিত পুজো দিতে হয়, তারও একটা ব্যয় আছে!”
    কমলবাবু উল্লসিত গলায় বললেন, “আরে, এর জন্যে এত সংকোচ করছো কেন? ওটুকু না পেলে তোমাদের চলবে কী করে? ওটা তো তোমাদের পাওনা”!
    “জিএসটির কথাটা ভুলে গেলে, দাদা? আঠেরো পার্সেন্ট ওই পাঁচশোটাকার ওপর”। গোপাল মনে করিয়ে দিল।
    বিপদতারণ বলল, “ও হ্যাঁ, এর ওপর আছে জিএসটি। ওটা তো আমারও নয়, আপনাদেরও নয়, সরকারের টাকা। উন্নয়নের টাকা। জিএসটি জমা করে, চালানের জেরক্স আপনাদের পাঠিয়ে দেব”।
    কমলবাবু এইটুকু শর্তে খুব খুশি, তিনি বললেন, “ঠিক আছে, বাবা, ঠিক আছে। বুঝে গেছি, তোমাকে আর অত সবিস্তারে না বললেও চলবে”।
    কিন্তু সনৎবাবু খপ করে বিপদতারণের দুই হাত ধরে, অনুনয়ের সুরে বললেন, “আমার একটা অনুরোধ ছিল বাবা, না করতে পারবে না”।
    বিপদতারণ একটু চমকে উঠে বলল, “ছি ছি এ কী বলছেন, কাকাবাবু। অনুরোধ নয়, আদেশ করুন”।
    সনৎবাবু খুব কাতর মুখে বললেন, “ভাবছি তোমাকে পাঁচলাখ দিয়ে আমি দশলাখ ঘরে তুলবো! সেক্ষেত্রে তোমার কমিশন হবে পঞ্চাশ হাজার টাকা, তার ওপর আবার আঠের পার্সেন্ট জিএসটি, আমি যে ধনে প্রাণে মরে যাবো, বাবা! বুড়ো কাকাবাবুর মুখ চেয়ে একটু কনসিডারেশন কী হতে পারে না, বাবা? এই ধরো পঞ্চাশের জায়গায় পঁচিশ?”
    বিপদতারণ মাথা চুলকে বলল, “আপনাদের মতো শ্রদ্ধেয় গুরুজনের সঙ্গে দরদাম করতে লজ্জা করছে, কাকাবাবু। আপনি যখন এভাবে বলছেন, তখন না বলি কী করে? তবে পঁচিশ নয় কাকাবাবু, ওটা চল্লিশ করুন। আমার একটু লস হয়ে যাবে, তা হোক!”
    “আচ্ছা বাবা, তোমার কথাও থাক আমার কথাও থাক, তিরিশের বেশি দিতে পারবো না, বাবা”। 
    সনৎবাবুর এই আকুল কথায়, গোপালও বিপদতারণকে অনুরোধ করল, “আর না করো না, দাদা, গুরুজন এত করে বলছেন?”
    “বলছিস?”
    “বলছি দাদা, তোমার ব্রত সকলকে বিপদের থেকে তুলে আনন্দে রাখা! ওটুকু স্যাক্রিফাইস তোমায় করতেই হবে, দাদা। আমরা না হয় কটাদিন আলুচোখা আর ভাত খেয়েই কাটাবো!”
    একটু চিন্তা করে বিপদতারণ রাজি হয়ে গেল, বলল, “ঠিক আছে, তুইও যখন বলছিস, তখন তাই হোক”।
    পুলকিত গোপাল বলল, “তোমার দয়ার শরীর দাদা, তুমি না দেখলে, আর আছে কে? তবে কাকাবাবু, জিএসটি কিন্তু পুরোই দিতে হবে। ওই পঞ্চাশের ওপর আঠেরো পার্সেন্ট!”
    সনৎবাবু একটু যেন বেঁকে বসলেন, বললেন, “তা কেন? তিরিশের ওপর হবে”!
    গোপাল বেশ মাতব্বর অ্যাকাউন্ট্যান্টের চালে বলল, “আমাদের কোয়ার্টারলি জিএসটি রিটার্ন সাবমিট করতে হয় তো, প্রত্যেকবারই আমরা দশ পার্সেন্টের ওপর জিএসটি জমা দিই, এবার তিরিশ নিয়েছি বললে, ডিপার্টমেন্ট থোড়ি শুনবে? তারা পঞ্চাশের ওপরেই হিসেব করবে, তখন আমাদের ওই তিরিশ থেকে আবার বকেয়া জিএসটি গুনতে হবে”।
    সনৎবাবু খুব সহজ উপায় বাৎলে দিলেন, “আহা, পুরোটা দেখাবে কেন? তিন লাখ দেখাবে, তাহলেই তো চুকে যাবে”।
    এই কথায় বিপদতারণ একটু রেগেই গেল, বলল, “মিথ্যের আশ্রয় আমি নিতে পারবো না, কাকাবাবু। তাহলে আমাদের ছেড়ে দিন। আর ভারতীয় কারেন্সি নোট আসবে রিজার্ভ ব্যাংকের কোষাগার থেকে। এতো আর জাল নোট নয়, যে তার কোন হিসেব নেই! রিজার্ভ ব্যাংক হিসেব ভুল করবে? পাঁচলাখ দিয়ে, তারা আমার কথায় তিনলাখ মেনে নেবে?”
    সনৎবাবু এবার একটু ঘাবড়ে গেলেন, বললেন, “ও বাবা, এতো কাণ্ড? ব্যাপার রিজার্ভ ব্যাংক অব্দি গড়াবে?”
    কমলবাবু বিশাল বোদ্ধার মতো বন্ধুকে ঝাড়লেন, “যা বুঝিস না, তা নিয়ে কথা বলিস কেন? পাঁচলাখ ডবল করে কি তোকে বিদেশী নোট দেবে? সে নোট তোর কী কাজে আসবে? দেশি নোট রিজার্ভ ব্যাংক ছাড়া আর কে দেবে? ও বিপদ, তুমি রাগ করো না, বাবা, তুমি যেমন বলছো তেমনই হবে”। 
    বিপদতারণ রাগ-রাগ ভাবটা আরো একটু ধরে রেখে সনৎবাবুকে বলল, “কী করবেন, দেখুন ভাবনা চিন্তা করে। আপনাদের ভালো লেগেছিল বলে, এত কথা বললাম, তা নইলে আমরা তো মঙ্গলস্যারের বাড়িই যাচ্ছিলাম”।
    সনৎবাবু এমন দাঁও ফস্কে যেতে দিলেন না, বললেন, “বুড়ো মানুষ কী বলতে কী বলে ফেলেছি, ওসব মনে রাখতে নেই, বাবা। আর ভাবনা চিন্তার কিচ্ছু নেই, আমরা মনস্থির করেই ফেলেছি, আমি পাঁচলাখ, কমল তুই কত করবি?”
    কমলবাবুও স্বস্তির শ্বাস ফেলে বললেন, “আমিও তাই, পাঁচ কিংবা ছয় লাখ। দেখি কতটা তুলতে পারি। ব্যাংক থেকেই ক্যাশ তুলতে হবে তো। অত কী আর ঘরে থাকে? এখন তো সবে সোয়া সাতটা বাজে, ব্যাংক খুলবে সেই দশটায়। ততক্ষণ তোমরা কী করবে, বাবা?”
    “আমরা ততক্ষণ এই পার্কেই বসি”।
    বিপদতারণের উত্তরে কমলবাবু বেশ অবাক হলেন, জিগ্‌গেস করলেন, “মঙ্গলের বাড়ি যাবে না?”
    বিপদতারণ বলল, “তা কী করে হবে? যে বাড়ির কাজ সে বাড়িতে আমাদের থাকতে হবে যে! আপনাদের কাজ করলে, অন্য বাড়ির কাজ করবো কী করে?”
    সনৎবাবু উচ্ছ্বসিত হলেন আনন্দে, বললেন, “তাই তো! সেই ভালো হবে, বাবা বিপদ তুমি আমার বাড়িতে চলো। কমল, তুইও আমার বাড়িতেই চলে আয়। আমার বাড়িতে কাজকম্মো সেরে, রাত কাটিয়ে, কাল সকালে আমাদের হিসেবপত্র চুকিয়ে, তারপর না হয়, মঙ্গলের বাড়ি যেও”।
    “আমিও সেটাই ভাবছি”। খুব চিন্তার ভাব নিয়ে বিপদতারণ বলল।
    সেকথায় কমলবাবু বললেন, “আর কিচ্‌ছু ভাবতে হবে না, ওটাই ফাইন্যাল, বিপদ আর গোপাল তোর বাড়িতেই থাকবে। আমিও টাকা তুলে ব্যাংক থেকে তোর ওখানে সোজা চলে আসবো”।
    বিপদতারণ বলল, “এখন আমরা তাহলে এই পার্কেই থাকি?”
    সনৎবাবু চমকে উঠে বললেন, “সে কি? কেন? আমার সঙ্গেই চলো।”
    “না, না, বলা নেই কওয়া নেই, আমরা দুজন উটকো বিপদ হুম হুম করে ঘরে ঢুকে পড়বো, কাকিমা কী ভাববেন? আপনি বাড়ি গিয়ে কাকিমাকে সব কথা খুলে বলুন, আমরা আসছি এই ঘন্টা খানেকের মধ্যেই!”
    বিপদতারণের এই কথায় সনৎবাবু নিজের ক্ষমতা জাহির করার জন্যে বললেন, “বাড়ির কর্তা কে, আমি না তোমার কাকিমা? ওসব তোমায় চিন্তা করতে হবে না, বাড়িতে আমার কথাই শেষ কথা। তোমার কাকিমা আমাকে কী বলে জানো? হে হে হে হে, পুরুষসিংহ!”
    কমলবাবু একটু বিরক্ত হলেন বন্ধুর কথায়, বললেন, “যাঃ যাঃ নিজের কথা অত ফলাও করে বলতে হয় না, বিপদকে দেখে শিখলি না, কেমন বিনয়ী! নিজের কথা বলা তো দূরের কথা, শুনতে অব্দি চায় না! ওরা যদি কিছুক্ষণ পার্কে থাকতে চায় তো থাক না! বাবা বিপদ, সনতের বাড়ি এখান থেকে মিনিট পনেরোর হাঁটা পথ। ইলেক্ট্রিক অফিসের উল্টোদিকে, বললেই যে কেউ দেখিয়ে দেবে, বিপদ! সনতের বাড়ি খুঁজতে কোন অসুবিধে হয় না”।
    বিপদতারণ বলল, “ওঃ তাহলে তো কোন ব্যাপারই নেই, আমরা ঠিক পৌঁছে যাবো। আপনারা আসুন, ওদিকের যোগাড়-টোগাড় করে, শুভকাজ যত শিগ্‌গির শুরু করা যায়, ততই ভালো। তবে ব্যাপারটা পাঁচকান করবেন না। সবাই তো আপনাদের মতো লোক নয়, কার মনে কী আছে, কে জানে?”
    কমলবাবু আঁতকে উঠে বললেন, “পাগল হয়েছো? এ সব কথা কেউ পাঁচকান করে? পড়শীদের চোখ টাটাবে না? তাহলে আসি?”
    হঠাৎ গোপাল বলে উঠল, “কাকু, কিছু টাকা অ্যাডভান্স পাওয়া যাবে? হাজার খানেক? একটু দরকার ছিল”।
    সনৎবাবু একটু আতান্তরে পড়লেন, “হাজার খানেক? না তো বাবা, মর্নিংওয়াকে বেরিয়ে, অত টাকা সঙ্গে থাকে কি? আমার কাছে শ দেড়েক হবে। কমল, তোর কাছে?”
    কমলবাবু বললেন, “আমারও তাই, ওই শ দুয়েক”।
    “তাই দিন না, সাড়ে তিনশোতেই চালিয়ে নেবো”।
    গোপালের আব্দার শুনে সনৎবাবু এবং কমলবাবু পকেট ঝেড়ে নিঃস্ব হয়ে সব টাকা দিয়ে দিলেন। গোপাল টাকা নিয়ে একগাল হেসে বলল, “থ্যাংকিউ, কাকু”।
    সনৎবাবুও হাসলেন, বললেন, “আমরা তাহলে এখন আসি, তোমরা আমার বাড়ি আটটা - সাড়ে আটটার মধ্যে চলে আসছো!”
    “পাক্কা, কথার খেলাপ হবে না, কাকাবাবু”।
    বিপদতারণের আশ্বাসবাক্যে সনৎবাবু হাসলেন, বললেন, “সে আমি তোমায় প্রথম দেখাতেই বুঝেছি, বাবা” বিপদতারণ হাসল, কিছু বলল না। দুই বন্ধু নিজেদের মধ্যে নিচু স্বরে কথা বলতে বলতে এগিয়ে গেলেন পার্কের গেটের দিকে।
    কিছুটা দূরে যেতে বিপদতারণ গোপালকে জিগ্‌গেস করল, “হঠাৎ ভিখিরির মতো টাকা চেয়ে বসলি কেন? ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ করতে ভালো লাগে?”
    “পকেটে একটা পয়সা নেই, দাদা! নিজের ইচ্ছেমতো একটু চা সিগারেট খাবো, তারও উপায় ছিল না। পতিত তোমাকে ধারের খাতায় আবার চা সিগারেট খাওয়াতো বুঝি?”
    বিপদতারণ হাসল, “তা অবশ্য ঠিক। মামার বাড়িতে আদরটুকুই জোটে, যখন ছেড়ে দেয় তখন আমরা ট্যাঁক-খালির জমিদার। চ’ একটু চা খাই, পতিতের দোকানে নয়, অন্য কোথাও। শালার ডিম-টুচ খেয়ে অম্বলে গলা জ্বলছে, আর চা তো নয়, যেন ঘোড়ার হিসু!”
    গোপাল বলল, “সেই জন্যেই, বুঝেছো দাদা, পতিতের দোকান ভারে নয়, ধারে কাটে”!
     
    (ক্রমশঃ - সামনের বছর!)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ | ৬৭৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন