এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  গপ্পো

  • কফি হাউস

    Anirban M লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ০৪ জুলাই ২০২১ | ২৫৫৫ বার পঠিত | রেটিং ৪ (৪ জন)
  • কফিহাউসের সিঁড়িতে দাঁড়িয়েই মনটা ভাল হয়ে গেল ধীমানের। কফিহাউস বলতে যাদবপুর কফিহাউস। কলকাতায় কফিহাউস মোট তিনটে, অন্তত ধীমান তাই জানে। কিন্তু অন্য দুটো কফিহাউস ওর তেমন পছন্দ নয়। কলেজ স্ট্রীটের কফিহাউসটা একটা প্রাগৈতিহাসিক, অন্ধকার গুহার মত মনে হয় আর সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউ-এরটায় ঢুকলেই মনে হয় কোন অফিসের ক্যান্টিন। যাদবপুর কফিহাউস সে তুলনায় অনেক বেশী খোলামেলা, অনেক বেশী আলো হাওয়া। যাদবপুর কফিহাউসে সবাই নিয়ম মেনে বারান্দায় গিয়ে সিগারেট খায়। ধীমান নিজে মাঝে সাঝে সিগারেট খেলেও এই নিয়ম মেনে চলাটা ওর ভালো লাগে। কখনো দরকার হলে ও বারান্দায় এসেই সিগারেট খায়। কফিহাউসে ঢুকে ধীমান খেয়াল করল ডানদিকের অনেক গুলো চেয়ার খালি। কিন্তু ধীমান ওদিকে গেল না। ওটা সুধীনদার এলাকা। মানে ওই দিকের টেবিলগুলোতে যিনি পরিবেশন করেন তাঁর নাম সুধীন। খিটখিটেমি যদি কোনদিন অলিম্পিকে যায় তাহলে সুধীনদা পদক আনবেই এব্যাপারে ধীমান নিশ্চিত। বেঁটে খাটো, চশমা পরা সুধীনদার হাবভাব অনেকটা সরকারি অফিসের বড়বাবুর মত। অনেকদিন আগে একবার ধীমান ভুল করে ওদিকের টেবিলে গিয়ে বসে পড়েছিল। সুধীনদার সাথে সম্যক পরিচয় ছিল না তখনও। সেদিন সুধীনদা টেবিলে অর্ডার নিতে আসায় অভ্যাসবশত ধীমান বলেছিল,

    “একটা ইনফিউশন”।
    “আর?”
    “পরে বলছি”। ফোন থেকে মুখ না তুলেই বলেছিল ধীমান।
    “কেন? পরে কেন? এইতো মেনু রয়েছে এখানে?” বেশ রাগী গলায় বলে উঠেছিল সুধীনদা।

    অবাক হয়ে সুধীনদার মুখের দিকে তাকিয়ে ধীমান বোঝে কেস সিরিয়াস। মেনু হাতড়ে আর কিছু খুঁজে না পেয়ে ধীমান এক প্লেট চাউমিন অর্ডার দিয়ে ফেলেছিল। কফিহাউসের একপ্লেট চাউমিন হজম করা হেঁজিপেঁজি লোকের কাজ না। ধীমানও পারে নি। ফলে সেদিন বাড়ি ফিরে অনেক ইনো, জেলুসিলকে মাঠে নামাতে হয় পরিস্থিতি সামলানোর জন্য। তারপর থেকে সুধীনদার এলাকায় ধীমান আর বসে না। কিন্তু সুধীনদাকে নিরাপদ দূরত্ব থেকে লক্ষ্য করতে বেশ মজাই পায় ধীমান। ধীমান লক্ষ্য করে দেখেছে সুধীনদা বেশি খিটখিট করে তার মত অর্বাচীন ছেলে ছোকরাদের। কফিহাউসে কিছু বিশিষ্ট, বয়স্ক লোক আসেন, তাদের সুধীনদা মোটের ওপর খাতিরই করে। তার মধ্যে একজনকে ধীমান চেনে। ভদ্রলোক ইতিহাসের নামকরা অধ্যাপক, তাঁর লেখা দু-একটা বইও ধীমান পড়েছে। ধীমান লক্ষ্য করে দেখেছে অধ্যাপক ভদ্রলোক কারো না কারো সাথে দেখে করতেই কফিহাউস আসেন আর সাধারণত দুধ কফি আর ডিমভাজা খান।

    ধীমানের কফিহাউসে আসার মূল উদ্দেশ্যই অবশ্য লক্ষ্য করা। কফিহাউসে নিয়মিত আসে কিছু মানুষ যাদের একটা নির্দিষ্ট রুটিন আছে। ধীমান তাঁদের বিভিন্ন নাম দিয়েছে মনে রাখার জন্য। যেমন এক ভদ্রলোক রোজ সকালে এসে টেবিলে বসে স্টেটসম্যান পড়েন। ধীমান তাঁর নামকরণ করেছে স্টেটসম্যান। আরেক ভদ্রলোকের চোখে মুখে একটা অসম্ভব নিস্পৃহতা, অনেকটা টিনটিন কমিক্সের নেস্টরের মত। ধীমান তাঁকে মনে মনে নেস্টর বলেই ডাকে। এছাড়া একটু বেলার দিকে একটি ছেলে আর একটি মেয়ে আসে যারা চেয়ারে বসেই খাতা খুলে লম্বা, লম্বা অঙ্ক করে। তাদের দেখলে মনে হয় কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট তারা চুকিয়েছে অনেকদিন। তবু অঙ্ক কেন করে সেটা ধীমান বুঝতে পারে না। অবশ্য কেউ অন্য যেকোন কাজই বা কেন করে সেটাও ধীমান ভাল জানে না। তার মনে পড়ে তাদের স্কুলে এক বাংলার মাস্টারমশায় ছিলেন যিনি ক্লাসে এসে তাঁর লেখা একটা ব্যাকরণ বই-এর প্রুফ দেখতেন। ধীমান স্কুলে কাটিয়েছে সাত বছর কিন্তু সেই সাত বছরেও সেই প্রুফ দেখা শেষ হয় নি। সত্যি কথা বলতে কি কেউ কেন ব্যাকরণ বই লেখে এটাও ধীমানের বুদ্ধির অগম্য। অবশ্য এটাও ঠিক যে কেউ না লিখলে ছাত্রছাত্রীরা পড়বেই বা কী? প্রশ্ন হল ব্যাকরণ বই লেখকরা কী ব্যাকরণ বই লিখে আনন্দ পান না কি শুধুমাত্র সমাজের কথা ভেবে তাঁদের এই আত্মবলিদান? এসব প্রশ্নের উত্তর ধীমান জানে না। কখনো জানতে পারবে বলেও মনে হয় না। কিন্তু কফিহাউসের এলেই ওর মনে এসব প্রশ্ন জেগে ওঠে।

    যাদবপুর কফিহাউসে তেমন বিখ্যাত কেউ আসে না। ওই ইতিহাসবিদ ভদ্রলোক মাঝে মাঝে। এছাড়া দুচারজন অধ্যাপককেও দেখেছে ধীমান। কিন্তু তাঁদের ঠিক সেলেব বলা যায় না। মিডিয়াতে চেনামুখের মধ্যে একজনকেই দেখেছে ধীমান। ছোটখাট চেহারা, টাকমাথা, ফতুয়া পড়ে আসে। লোকটা কবি বা ওই জাতীয় কিছু। টিভিতে দেখেছে ধীমান। লোকটার সঙ্গে আরেকটা ছোটখাট চেহারার লোক থাকে। তার মাথায় টাক ধরছে। লোকটা একটা ঝুলঝুলে সিক্স পকেট পায়জামা আর ফতুয়া পরে আসে, হাতে সবসময় একটা প্লাস্টিকের প্যাকেট। লোকটাকে দেখে কল মিস্ত্রি বলে মনে হয়, অথবা ইলেক্ট্রিক। ধীমান এর নাম দিয়েছে নাটা মিস্ত্রি। ধীমান দেখেছে কবি ও নাটা মিস্ত্রি সারাক্ষণ খুব নিচু স্বরে কিছু একটা আলোচনা করে। একবার ধীমান ওদের পাশ দিয়ে যেতে যেতে শুনেছিল কোন একটা ভাগ্যহীন ছেলেকে নিয়ে তারা আলোচনা করছে যে নাকি নব্বই-এর দশকে মাসিক তিনশ টাকার বিনিময়ে টালিগঞ্জ থেকে পাইকপাড়াতে চোলাই মদ সাপ্লাই দিত। এ কী সত্যি না কবির কোন উপন্যাসের প্লট? ধীমান বোঝে নি। তবে কোনটা সত্যি আর কোনটা গল্প কেই বা বলতে পারে?

    আজ কফিহাউসে ঢুকে ধীমান দেখল চেনা লোকেরাই টেবিলে টেবিলে বসে আছে। তাদের মধ্যে এই টেবিল, ওই টেবিলে ঘুরে ঘুরে আড্ডাও চলছে। ধীমানের সাথে কারোরই পরিচয় নেই। ধীমান তাই শুধু দূর থেকে লক্ষ্য করে। ধীমান আজ খেয়াল করল একটা লোক একটা কাগজের প্যাকেট নিয়ে এই টেবিল ঘুরছে। আর এদিক ওদিক তাকিয়ে বিভিন্ন লোকের হাতে একটা বই গুঁজে দিচ্ছে, একটা লাল বই। তারপর যাকে দিচ্ছে তার কানে কানে ফিশফিশ করে কিছু বলছে আর সেও চট করে বইটা ব্যাগে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। গোপনে লালবই বিতরণ দেখলে কলকাতা শহরে একটা কথাই মনে পড়ে, যদিও সত্তর দশকের পরে প্রায় পঞ্চাশ বছর কেটে গেছে। ধীমান কৌতুহলি হয়। ধীমানের দুটো টেবিল পরেই কবি ও নাটা মিস্ত্রি বসে আছে। লোকটা একসময় সন্তর্পণে কবির দিকে এগিয়ে আসে এবং একই ভাবে লাল বইটি দেয়। ধীমান শুনতে পায় লোকটি কবিকে বলছে “লিখলাম, পড়ে দেখবেন”। এবার ধীমান আরো কৌতুহলি হয়। একটু সুবিধে হয় অন্যদের মত কবি বইটি ব্যাগে না ঢোকানোয়। ধীমান কিছুটা গলা বাড়িয়ে চট করে পড়ে নেয় বইটির শিরোনাম। টকটকে লাল প্রচ্ছদের ওপর সোনালি হরফে লেখা -- মোল্লা নাসিরুদ্দিনের গল্প। যারা নিয়মিত যাদবপুর কফিহাউসে আসে তারা কোন কিছুতেই শক পায় না। এটাই কফিহাউসের শিক্ষা। ধীমানও মোটের ওপর স্বাভাবিকই থাকে। পেটের ভেতর সামান্য হাসি গুড়গুড় করে উঠলেও তা বাইরে বেরোয় না।

    ধীমান এবার ফোনে মন দেয়। সুচরিতা কালকে ওদের সিএএ-এন আর সি বিরোধী সভার ভিডিও পাঠিয়েছে। নতুন আইন এনেছে সরকার। বলছে একাত্তর সালের পরে ওপার বাংলা থেকে আসা মানুষ আর তাদের ছেলেমেয়েদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেবে। আসামে অনেক লোককে ধরে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়েছে। ধীমানের পরিবার অবশ্য খাঁটি এদেশী। বহুপুরুষের ভিটে আছে তাদের জয়নগরে। কিন্তু তার অনেক বন্ধুর পরিবারই এসেছে ওদিক থেকে। তাদের কি নিয়ে যেতে পারে ডিটেনশন ক্যাম্পে? একটা দুর্ভাবনা মনে আসে। কিন্তু তার পাশাপাশি একটা স্বস্তিও কাজ করে যে তাকে অন্তত পাঠাবে না। তার পরিবার এদেশের আদি বাসিন্দা। তারা অন্তত বহিরাগত নয়। এটা মনে হতে একটু লজ্জাও পায় ধীমান। এত মানুষ যেখানে বিপন্ন সেখানে এই স্বস্তি পাওয়াটা বোধহয় অন্যায়। তারপর মনে পড়ে কাল অমিতাভ একটা হোয়াটস্যাপ পাঠিয়েছে পশ্চিমবাংলা কিভাবে অনুপ্রবেশকারীতে ভরে যাচ্ছে তাই নিয়ে। এটাও কী ভাবার বিষয় নয়? এই যে সব লোক আসছে বাইরে থেকে, এসে বাচ্চা-কাচ্চা পয়দা করে জমিয়ে বসছে, তাদের তো ফেরত পাঠানোই উচিত। অমিতাভ এরকম কিছু একটা লিখেছিল কাল। কিন্তু কে ঠিক তাহলে? অমিতাভ না সুচরিতা? ধীমান ভাবে দুজনের সাথেই একবার কথা বলে বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করবে। তবে তার পরিবার যে নিরাপদ এটা ভেবে সে মোটের ওপর স্বস্তিই বোধ করে।

    এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে ধীমান অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল। হঠাৎ ঘোর ভাঙ্গতে দেখে তার সামনে একটা লোক বসে আছে। মধ্য বয়সী, সাদা জামা, নীল ঝোলা। নির্ঘাত লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক। ধীমান এই ধরনটা চেনে। চোখাচুখি হতে ভদ্রলোক মৃদু হাসলেন। ধীমানও হাসিতেই তার উত্তর দিল। ভদ্রলোক হাত নেড়ে ওয়েটারকে ডাকলেন। ব্যাপারটা একটু অদ্ভুত। কফিহাউসে্র খদ্দেরদের সাধারণত বড় একটা খাওয়ার তাড়া থাকে না। অনেকেই ইনফিউশন নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দেয়। সাধারণত প্রেমিক প্রেমিকারা এলে খাবার অর্ডার করে বা বন্ধুদের দল। কিন্তু সেটাও বসার সঙ্গে সঙ্গে না। একটু রয়ে বসে। ওয়েটার মইদুলদা এলে ভদ্রলোক এক নিঃশ্বাসে দুটো ফিশ কবিরাজি আর একটা চিকেন আফগানি অর্ডার করলেন। যদিও কফিহাউসে এসে কিছুতেই অবাক হতে নেই, তাহলেও ধীমানের মুখটা হাঁ হয়ে গেল। মইদুলদা অবশ্যই নির্বিকার। খানিকটা অস্বস্তি চাপার জন্যই ধীমানও একটা ইনফিউশন অর্ডার করে। কিন্তু ধীমানের হাঁ মুখ ভদ্রলোকের চোখ এড়ায় না। মইদুলদা চলে গেলে ভদ্রলোক হাত বাড়ান হ্যান্ডশেকের জন্য।

    - “অবনী”।

    - “ধীমান”।

    - “তুমি বোধহয় আমার অর্ডার দেখে অবাক হলে”? অবনী সরাসরি তুমিতে চলে যান। তবে তাতে ধীমান কিছু মনে করে না। ভদ্রলোক তার থেকে প্রায় পঁচিশ বছরের বড়। এ ধরনের প্রশ্নের কোন উত্তর হয় না। ধীমান তাই একটা হাসি ঝুলিয়ে রাখে যার মানে যে কোন কিছুই হতে পারে।

    - “আসলে আজ আমাকে ওরা ডিপোর্ট করে দেবে”।

    - “ডিপোর্ট? মানে ডিটেনশন ক্যাম্প? এই এন আর সি র জন্য? বাংলায় ডিটেনশন ক্যাম্প হয়েছে নাকি? আমি তো জানতাম শুধু আসামেই হয়েছে”।

    ধীমান রহস্যের গন্ধ পেয়ে নড়েচড়ে বসে।

    - “এখানে না। ইন্দোনেশিয়াতে। এশিয়াতে ওটাই সেন্টার”।

    ধীমান বিভ্রান্ত বোধ করে। বুঝতে পারে কিছু একটা গোলমাল হচ্ছে। ও যা ভাবছে তা নয়। অবনী বাবু অন্য কিছু বলতে চাইছেন। ধীমান তাই জিজ্ঞাসাই করে ফেলে।

    - “আপনি কিসের কথা বলছেন? আপনি কে? আপনাকে কোথায় ডিপোর্ট করে দেবে”?

    - “আমার গ্রহে। আমি আসলে এলিয়েন”।

    ধীমান আবারও অবাক হয়। লোকটা নিশ্চয়ই পাগল। কিন্তু ভাদ্র মাসের অলস দুপুরে ধীমানের খুব কিছু করারও নেই। তার থেকে আলোচনাটা চালালে ভাল খোরাক পাওয়া যেতে পারে।

    - “তার মানে আপনি বলছেন এটা আপনার ছদ্মবেশ? মানে যেকোন সময় আপনি এই খোলস ফেলে দিয়ে আসল রূপ ধারণ করতে পারেন? তা একটু দেখি না হয় সেই আসল রূপ”?

    ধীমানের গলায় ঠাট্টার সুরটা আর প্রচ্ছন্ন থাকে না।

    - “তুমি বোধ হয় কখনো আসল এলিয়েন দেখ নি, তাই না”? শান্ত গলায় অবনী জিজ্ঞেস করেন।

    - “নাহ! সে সৌভাগ্য আর হল কোথায়”?

    - “আসলে তুমি যা ভাবছ তা নয়। এলিয়েনরা ঠিক হলিউডের সিনেমার মত নয়। তাদের আসল রূপ বলে কিছু নেই। তারাও তোমার মত দেখতে মানুষ। বিভিন্ন ভিন গ্রহ থেকে এখানে প্রাণীরা আসছে অনেকদিন ধরেই। তারা এখানেই থেকেছে, বিয়ে করে সংসারী হয়েছে, সন্তানের জন্ম দিয়েছে। তাই এলিয়েনের চিহ্ন রয়ে গেছে, তবে খুব লুকোনো অবস্থায়”।

    - “মানে আপনি বলছেন ডি এন এ টেস্টে পাওয়া যাবে”?

    - “সাধারণ টেস্টে পাওয়া যাবে না। মানুষের জিন বলে বিজ্ঞানীরা যা জানেন তার মধ্যে তো বিভিন্ন গ্রহ থেকে আসা প্রাণীদের জিন মিশে আছে। এর আলাদা টেস্ট আছে। তাছাড়া অনেক ভিনগ্রহীদের বিশেষ ক্ষমতাও থাকে। আবার কারো শরীরেও বিশেষ বিশেষ চিহ্ন থাকে। তা দেখেও অনেক সময় আন্দাজ পাওয়া যায়। তবে সরকার টেস্ট করেই ঠিক করে”।

    - “তাই নাকি? তা আপনার আছে? বিশেষ ক্ষমতা”?

    - “হুমম…আমি আবহাওয়া বলতে পারি। এখন কটা বাজে”?

    - “দুপুর আড়াইটে”।

    - “বিকেল তিনটে বাইশ মিনিটে জোর বৃষ্টি আসবে”।

    ধীমান বাইরে তাকিয়ে দেখে বাইরে খটখটে রোদ। মেঘের নামগন্ধ নেই। যাক, আর খানিকক্ষণ বাদেই লোকটার বুজরুকি ফাঁস হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে মইদুলদা অবনীর খাবার আর ধীমানের ইনফিউশন নিয়ে এসেছে। অবনী খুব আরাম করে কবিরাজি খেতে থাকে। ধীমান ইনফিউশনে চুমুক দিয়ে কথা শুরু করে।

    -“আপনি যে গ্রহের লোক তার নাম কী”?

    -“কুসুমপুর”।

    -“কুসুমপুর? গ্রহের এরকম নাম হয় নাকি”? ধীমান এবার মজা পেতে থাকে।

    -“গ্রহের আসল নাম মানে আমরা যা ডাকি তা হল…@#@#@#@#@#”

    বলে অবনী মুখ দিয়ে যে শব্দটা বের করল ধীমান সেটা বুঝেই উঠতে পারল না উচ্চারণ তো পরের কথা। ধীমানের ভ্যাবাচাকা মুখের দিকে তাকিয়ে অবনী বলে চলে,

    - “এছাড়া মানুষ সেই গ্রহের একটা নাম দিয়েছে বটে সংখ্যা আর বর্ণ মিলিয়ে, কিন্তু সে ভারী খটখটে, শুকনো ধরনের। আমি তাই কুসুমপুর বলেই ডাকি”।

    - “তা এই কুসুমপুর, যারা এতদিন আগে পৃথিবীতে মানুষ পাঠিয়েছিল তারা নিশ্চয়ই খুব উন্নত প্রজাতি”।

    - “সে আর বলতে! সাঙ্ঘাতিক উন্নত! যখন তখন লাখ লাখ আলোকবর্ষ পার করে দিচ্ছে। পরশুদিন এসে ওরা ওদের স্পেসশিপেই আমাকে নিয়ে যাবে। তারপর ধর খাওয়ার সমস্যা তো ওরা সমাধান করেই ফেলেছে। জন্মের তিন মাসের মাথায় একটা ট্যাবলেট, ব্যস! সারা জীবন আর কিছু খেতে হবে না”।

    - “তাহলে? এরকম একটা গ্রহে আপনি যেতে চান না কেন”?

    - “ওই জন্যই তো! যেখানে ট্যাবলেটে ক্ষিদে মেটে সেখানে ফিশ কবিরাজি আর চিকেন আফগানি কোথায় পাবো? তাই ধরে নাও আজই শেষ খাওয়া খেয়ে নিলাম”।

    - “ওহ”!

    ধীমান এই দিকটা কখনও ভেবে দেখে নি।

    - “কিন্তু আরো বড় একটা সমস্যা আছে। আমি আসলে বাংলা কবিতা লিখি। এবার কুসুমপুর গেলে আর কোনদিন রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দের কবিতা পড়তে পারব না। তারপর সেখানে পেন, পেন্সিলের ব্যাপার নেই। লোকজন ভাবে আর কম্পুটারে লেখা হয়ে যায়। কিন্তু সেখানে বাংলা ফন্টই বা পাবো কোথায়? আর সব থেকে বড় কথা সেখানে আমার কবিতা পড়ার লোকই বা পাবো কোথায়”?

    - “তা আপনার মত আরো বাঙালি কুসুমপুরিয়া নিশ্চয়ই আছে সেখানে। তারা পড়বে না”?

    - “আমার চেনা জানা লোকের মধ্যে ডিপোর্ট হচ্ছে বাদল। তার কবিতায় কোন উৎসাহ নেই”!

    - বাদল কে?

    - “কফিহাউস থেকে বেরিয়ে ডানদিকে ঘুরে তারপর আবার ডানদিকে গিয়ে বাঁদিক গেলে একটা তেলেভাজার দোকান আছে জান? বাদলের তেলেভাজার দোকান”।

    ধীমান বাদলের তেলেভাজার দোকান বিলক্ষণ চেনে। বাদলের বেগুনি এ অঞ্চলে বিখ্যাত। কিন্তু বাদল যে এলিয়েন এটা কখনও মাথায় আসে নি। তার মানে কী তার চারপাশে অনেক এলিয়েন ঘুরে বেড়াচ্ছে তার চারপাশে? ধীমানের কেমন যেন ভয় ভয় লাগতে থাকে। সে জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা, কফিহাউসের ভেতরেও কী অনেক এলিয়েন আছে”?

    -“আছে তো বটেই! ওই যে জানলার ধারে বসা পাকানো গোঁফ লোকটাকে দেখছ? খাতায় কীসব লিখছে”?

    ধীমান এনাকে আগেও দেখেছে। উনি রোজ কিছু ব্যালান্স শিট নিয়ে মেলাবার চেষ্টা করেন। ধীমান ভাবত কমার্সের ছাত্র। তবে নাও হতে পারে।

    - “হ্যাঁ। উনিও”?

    - একদম। ওদের পুর্বপুরুষ এসেছিল সুলতানগঞ্জ থেকে।

    ধীমান বুঝে নেয় কোন এক গ্রহকে অবনী সুলতানগঞ্জ বলে ডাকেন।

    --"তারপর, তারপর…” অবনীর চোখ ঘুরতে থাকে চারদিকে। ঘুরতে ঘুরতে হঠাতই ধীমানের মুখের ওপর স্থির হয়।

    - দেখি তোমার হাত দুটো।

    ধীমান একটু ইতস্তত করে হাত দুটো বাড়িয়ে দেয়। হাতদুটো উলটে পালটে দেখে অবনী বলেন,

    -যা ভেবেছি তাই। তুমি হয় ভুটভুটিয়ার লোক আর না হয় জবরখাকি। ভুটভুটিয়া আমাদের গ্যালাক্সিরই গ্রহ তবে একটু দূর আছে। যদিও টেস্ট না করে পাকাপাকি কিছু বলা সম্ভব না।

    ধীমান এতক্ষণ মজা করে কথা চালাচ্ছিল। এবার রেগে যায়। মানেটা কী? সে বহিরাগত? উদ্বাস্তু? তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে?

    - “অবনীবাবু, এবার কিন্তু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে। আমি একটা জলজ্যান্ত মানুষ, খাঁটি বাঙালি। আপনি আমার হাত দেখে আমাকে এলিয়েন বানিয়ে দিলেন? আপনি জানেন জয়নগরে আমাদের সাত পুরুষের ভিটে আছে”?

    - “আহা, রাগ করছ কেন? দেখ, খাঁটি মানুষ বা খাঁটি বাঙালি বলে তো কিছু নেই। সবই তো মেশামিশি। এবার বাকিটা সংখ্যার খেলা। তোমার মিশ্রণ যদি ধর ৩০ ভাগের কম হয় তো তুমি রয়ে গেলেন, একটু বেশী হলেই ডিপোর্ট। এই ধর না, আমাদের পাড়ার রমেনবাবু। বিকাশ ভবনে আপার ডিভিশন ক্লার্ক। ওনার মিশ্রণ ধরা পড়ল ২৯.৩৫ তাই রয়ে গেলেন। আমার ৩০.৪৫, তাই আমাকে যেতে হচ্ছে।

    ধীমান কী বলবে বুঝতে না পেরে চুপ করে থাকে। এতক্ষণ মজা ভেবে নিলেও এবার তার অল্প অল্প ভয় করতে থাকে। সত্যিই তাকে অন্য গ্রহে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে? অবনী খাওয়া শেষ করে একগ্লাস জল খেয়ে একটা তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন। তারপর বলেন,

    - “আমি একটা লিটল ম্যাগাজিন বের করতাম, বুঝলে? নাম কালপুরুষ। আর তো সেসব কিছু হবে না। কালই পত্রিকার নতুন সংখ্যাটা হাতে পেলাম। তোমাকে গোটা দশেক দিয়ে যাচ্ছি। প্লিজ একটু বিলি করে দিও বন্ধু বান্ধবদের মধ্যে। পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার আগে এটাই আমার শেষ কাজ। দেবে তো”? অবনীর গলা ভারি হয়ে আসে।

    এখন আর ধীমান ঠিক পুরোটা ইয়ার্কি ভাবতে পারছে না। ধীমানের মনটা একটু খারাপই হয়ে আসে অবনীর কথা শুনে। সে মাথা নাড়ে। অবনী কাঁধের ঝোলা থেকে দশকপি কালপুরুষ পত্রিকা টেবিলে নামিয়ে রেখে বেরিয়ে যান। ধীমান উলটে পালটে দেখে পত্রিকাটা। আর পাঁচটা লিটল ম্যাগাজিনের মতই। কিছু কবিতা, দুটো গল্প, একটা প্রবন্ধ। সবই খুব সাধারণ মানের। অবনীর লেখা একটা কবিতাও পেয়ে যায় ধীমান। খুব খারাপ না হলেও আহামরি কিছু নয়। ধীমান আরেকবার ভাবার চেষ্টা করে পুরো ঘটনাটা। এটা কী স্টান্ট? পত্রিকা বিলি করার জন্য? কিন্তু অবনী দশটা পত্রিকার দাম চান নি। তারপর পৃথিবীতে শেষ কাজ বলার সময় যে অবনীর চোখ ছলছল করে উঠেছিল সেটাও মিথ্যে নয়। আচ্ছা এমন কি হতে পারে যে অবনী কোন রোগে আক্রান্ত এবং উনি জানেন ওনার শেষ দিন এসে গেছে প্রায়? হয়ত সেটা ঢাকার জন্য এই রসিকতা। একটা সিগারেট খাওয়া দরকার। ধীমান কফিহাউসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দুটো টান দিতে দিতে না দিতেই হঠাৎ আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে ধীমান দেখতে থাকে বৃষ্টিতে চারপাশটা আস্তে আস্তে আবছা হয়ে আসছে। ধীমান ঘড়ির দিকে তাকায়। তিনটে বাইশ।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • গপ্পো | ০৪ জুলাই ২০২১ | ২৫৫৫ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    ইঁদুর  - Anirban M
    আরও পড়ুন
    বটগাছ - Anirban M
    আরও পড়ুন
    লাইক-ইট - Anirban M
    আরও পড়ুন
    বর্ম - Anirban M
    আরও পড়ুন
    প্লাবন - Anirban M
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • rhishin sinha | ০৪ জুলাই ২০২১ ২১:২৮495610
  • বাহ্। 

  • Ramit Chatterjee | ০৪ জুলাই ২০২১ ২১:৪৬495611
  • খুব সুন্দর। শ্রীজাত র ক্যামিও টা ভালো ছিল।


    কিন্তু এটাও তো হতে পারে অবনী গুগল এ ওয়েদার ফোরকাস্ট দেখে রেখেছিল।


    তবে বেশ ভাল লাগল গল্পটা।

  • সংহিতা | 155.245.58.186 | ০৫ জুলাই ২০২১ ১৬:১১495624
  • খুব ভালো লাগল আরও গল্প পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। 

  • সুদক্ষিণা গুপ্ত | 42.110.172.120 | ০৫ জুলাই ২০২১ ১৯:৪৮495628
  • ভাল লাগল। কল্পনা আর বর্তমান মিশে বেশ ভালো। আরও লেখা চাই এরকম একটানে পড়ে ফেলার মত। 

  • Ranjan Roy | ০৬ জুলাই ২০২১ ১৫:৪৬495637
  • আগেও বলেছি, আমি আপনার ছোটগল্পের পাংখা।

  • বিপ্লব রহমান | ১৮ জুলাই ২০২১ ০৭:৫৫495893
  • বেশ লিখেছেন, ব্রাভো! 


    #


    ফন্ট খুব চোখে লাগছে, অনুগ্রহ করে আগামীতে বদলে দেওয়ার অনুরোধ রইল। আর লেখায় কিছু প্যারা যোগ করলে চোখের আরাম হয়। 


    আরও লিখুন 

  • dc | 122.174.104.8 | ১৮ জুলাই ২০২১ ০৯:২৭495896
  • ভালো গল্প। অবনী বাবুর একটা তোয়ালে ভারি দরকার। 

  • dc | 122.174.104.8 | ১৮ জুলাই ২০২১ ০৯:২৯495897
  • আর হ্যাঁ, "...কেউ কেন ব্যাকরণ বই লেখে এটাও ধীমানের বুদ্ধির অগম্য" - এ এক ​​​​​​​মোক্ষম প্রশ্ন। ​​​​​​​ব্যাকরন বই ​​​​​​​লেখা ​​​​​​​আর ​​​​​​​অন্যকে ​​​​​​​ব্যাকরন ​​​​​​​বই পড়ানো, ​​​​​​​এ ​​​​​​​দুটোই ​​​​​​​ওয়ার ​​​​​​​ক্রাইম ​​​​​​​হিসেবে ​​​​​​​গণ্য হওয়া ​​​​​​​উচিত। ​​​​​​​অথত ​​​​​​​সমাজ ​​​​​​​এ ​​​​​​​ব্যপারে ​​​​​​​নিরুত্তর। ​​​​​​​

  • kumarjit mandal | ২৬ জুলাই ২০২১ ১৯:১৫496109
  • খাসা নিটোল একখানা গল্প।


    কফি হাউসের চরিত্রগুলোর কথা যেহেতু আগে শোনা তাই বেশ উপভোগ্য লাগল।

  • Sekhar Sengupta | ২৭ জুলাই ২০২১ ২০:৪৮496141
  • গল্পটা এক নিঃশ্বাসে শেষ করেই আপনার গ্রাহক হয়ে গেলাম। অনেকদিন পর ুকটা ভাল ছোট গল্প পড়লাম।

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু প্রতিক্রিয়া দিন