এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • সিলগালা মহল্লার ব্যালকনিরা

    আহমেদ খান হীরক লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৪ এপ্রিল ২০২০ | ২০৮৪ বার পঠিত
  • রিকশা ঠেলেও এই গলিতে ঢোকা যায় না। দূর থেকে তাই মানুষেরা নামে, হেঁটে হেঁটে তারা ঘরে ফেরে। তাদের হাঁটায় অদ্ভুত চনমনেভাব। মনেই হয় না অফিস থেকে ফিরছে। এই গলির অফিসফেরত মানুষগুলো বোধহয় অন্যরকম। আর এই গলিতে এলে, গলি ধরে পিঠে পিঠ লাগিয়ে অ্যাপার্টমেন্টে ছোট ছোট ঘরগুলো নিয়ে গড়া এই মহল্লায় এলে, মনে হয় এটা এক অদ্ভুত সুন্দর জায়গা। ছিমছাম। আর অন্যরকম।

    অবশ্য কিছুদিন আগেও এরকম অবস্থা ছিল না। মানে গলিটা আর দশটা-পাঁচটা গলির মতোই সাধারণ ছিল। সকাল হলেই বাড়ির পুরুষেরা আর কিছুকিছু নারীও হন্তদন্ত বেরুত অফিসের দিকে। তাদের হাঁটায় তাড়া থাকত, তাদের চোখে থাকত ভরসাহীনতা। তাদের হাতে দুপুরের খাবারের ব্যাগ বা টিনের টুকরা থাকত। আর তারা রাস্তায় নেমেই রিকশার খোঁজ করত। তখন এ গলি ছিল অবাধ। রিকশা ভেতর পর্যন্ত ঢুকত। রিকশার বেলের টুংটাং শব্দ এ গলির দুপুরের অখণ্ডতাকে ভেঙে ফেলতে পারত। কোনো কোনো রিকশাওয়ালা অন্ধগলির কোণায় গিয়ে গাঁজা খেত। গাঁজার মাদকীয় গন্ধ তখন ফ্ল্যাটে ফ্ল্যাটে ঢুকত। শাড়ি আর ম্যাক্সিপরা গৃহিণীরা এই গন্ধ ঠিক বুঝে উঠতে পারত না। তবে ছুটির দিনের পুরুষেরা প্রায়শ গন্ধটা ধরতে পারত। তারা তখন ব্যালকনিতে এসে দাঁড়াত, দেখার চেষ্টা করত। রিকশাওয়ালা থাকলে গালাগালি করত, পাড়ার লাফাঙ্গা থাকলে অবশ্য চুপ করে থাকত।

    ব্যাপারটা প্রথম খেয়াল করেছিল মিজানুর। সে তখন সিগারেট খেতে তার ভাড়া ফ্ল্যাটের তিনতলার ব্যালকনিতে ছিল। জ্বরজ্বর লাগছিল বলে সেদিন অফিসে যায়নি। সিগারেট ধরিয়ে মুখটা তিতা হয়ে গেলে সে থুতু ফেলতে চেয়েছিল দুপুরের খোলা ও ফাঁকা রাস্তায়। তখন সে খেয়াল করেছিল তিনটা লাফাঙ্গা গোল হয়ে বসে আছে আর তাকিয়ে আছে পাশের একটা ফ্ল্যাটের ব্যালকনির দিকে। আর তারা হাসছে। তারা কেন হাসছে তা দেখতে মিজানুরও ব্যালকনির দিকে নজর দিয়েছিল আর তখন দেখেছিল ব্যালকনিতে একটা সবুজ ব্রা ঝুলছে। বাতাসে মৃদু দুলছে। ব্রায়ের রঙ হিসেবে সবুজ কিছুটা দুর্লভ, মিজানুর আর কারো ফ্ল্যাটে এরকম রঙ ঝুলে থাকতে দেখেনি।

    তবে রিকশাওয়ালারা যত না তার চেয়ে বেশি পাড়ার লাফাঙ্গারাই থাকত। এরা বিনা ডরে হাতের তালুতে কচলে কচলে গাঁজা বানাত, সস্তা সিগারেটের ততোধিক সস্তা তামাক ফেলে তাতে গাঁজা ভরত। ধরাত। টানত। বারবার টানত। কষে কষে টানত। তারপর চোখ লাল করে ফ্ল্যাটের দিকে তাকিয়ে থাকত। ফ্ল্যাটের ভাবীরাই ছিল সম্ভবত তাদের উদ্দেশ্য। ব্যালকনিতে মেলে দেওয়া মেয়েলী অন্তর্বাসও তাদের উদ্দেশ্য হয়ে থাকতে পারে। অন্তর্বাস দেখলে তারা খ্যাকখ্যাক করে হাসত।

    তার চল্লিশোর্ধ্ব বউও কখনো কোনোদিন সবুজ ব্রা পরেছে বলে সে স্মরণ করতে পারে না। আসলে তার বউয়ের কোনো ব্রায়ের রঙই সে মনে করতে পারে না। সবুজ ব্রা দেখে মিজানুরও তাই একটু আশ্চর্য হয়। পরক্ষণেই সে নিজেকে সামলে নেয় আর বোঝার চেষ্টা করে লাফাঙ্গাগুলো কেন ওটা দেখে হাসছে। হয়ত তারাও সবুজরঙের ব্রা কখনো দেখেনি বা হতে পারে ব্রায়ের আকৃতিটা তাদের কাছে হাস্যকর ঠেকেছে। কিন্তু ঘটনা যাই হোক না কেন, মিজানুরের ব্যাপারটা ভালো লাগে না। রিকশাওয়ালারা হলে এতক্ষণ সে ধমক দিত। এদের ধমক দিতে পারছে না দেখে তার বিরক্তি আরো বাড়ে। তার মনে হয় বিরক্তির সাথে সাথে তার জ্বরটাও বেড়ে যাচ্ছে। সে সিগারেট দেয়ালে ঠেসে নিভিয়ে দেয়। খালি প্যাকেটের ভেতর সিগারেটের বাকি অংশটা ফেলে ঘরে ঢুকে যায়।

    ঘরে তখন মিজানুরের চল্লিশোর্ধ্ব বউ শুয়েছিল। তবে শোয়াটা ছিল অদ্ভুত। এমনভাবে তার বউকে সে রাতেও দেখে না কখনো। সে দেখে তার বউ একটা অফ হোয়াইট ব্রা পরে শুয়ে আছে। নিচে পেটিকোট। শাড়ি নেই। মিজানুর অত্যন্ত বিরক্ত হয়। বলে, আরে তুমি এমনে শুয়া আছো ক্যান?

    বউ বলে, তো কেমনে শুয়া থাকব?

    মিজানুর বলে, কাপড়চোপড় কই তোমার? কাপড় পরো! লজ্জা লাগে না?

    বউ বলে, তোমার সামনে কিসের লজ্জা! বাড়িতে তো আর কেউ নাই। যে গরম পড়ছে... আমার খালি হাঁসফাঁস লাগে!

    মিজানুর বউয়ের দিকে কঠিন চোখে তাকিয়ে থাকে।

    বউ বলে, তুমরা তো ব্লাউজ পরো না তাই জানো না। ব্লাউজ পরলে বুকের ওপর পাত্থর চাইপা থাকে!

    মিজানুর বলে, গরমে তুমি এইরকমই থাকো নাকি আজকাল?

    বউ বলে, তোমরা তো উদাম গায়ে থাকতে পারো, ব্যালকনিতে বুক খুইলা সিগারেট টানতে পারো, আমি কি কখনো তোমারে কিছু বলছি?

    মিজানুর বলে, তুমি ব্রা কই শুকাইতে দাও?

    বউ বলে, ক্যান?

    মিজানুর বলে, যা বলছি কও!

    বউ বলে, বাইরে... তারে... ক্যান?

    মিজানুর বলে, আর দিবা না। ব্রা বাথরুমে শুকাইবা... ঠিক আছে?

    এরপর থেকে অফিস যাতায়াতে মিজানুর প্রথমে নিজের ব্যালকনির দিকে তাকায়, দেখে ব্রা ঝুলছে কিনা, তারপর দেখে অন্যদের ব্যালকনি। প্রথম প্রথম মিজানুরের এই দেখা কেউ দেখে না, খেয়াল করে না কেউ। কিন্তু একদিন ব্যাপারটা লক্ষ্য করে রিয়াজরহিম। সে তখন আরো কয়েকদিন মিজানুরের যাতায়াত দেখে। এবং সপ্তমদিনের দিন সে নিশ্চিত হয় মিজানুর আসলে এফ্ল্যাটে ওফ্ল্যাটে মেয়েদের অন্তর্বাস দেখার চেষ্টা করে। আর এটা বুঝতে পেরে মিজানুরের ওপর খুব মেজাজ খারাপ হয় তার, কিন্তু মিজানুরকে সে কিছু বলে না। সে তার ত্রিশোর্ধ্ব বউয়ের কাছে ভাত খেতে খেতে জানতে চায়, তুমি ব্রা মেলো কই?

    ত্রিশোর্ধ্ব বউ কথার সূত্র ধরতে পারে না। বলে, কী বললা?

    রিয়াজরহিম মুখের ভাত এলাতে এলাতে বলে, ব্রা পরো না তুমি?

    বউ হাসে। রসিয়ে বলে, ক্যান? তুমি য্যান দেখো নাই?

    রিয়াজরহিম রসের ধার দিয়েও যায় না। বলে, দেখি কি দেখি নাই সেইটা কথা না। তুমি ব্রা খাইচা মেলো কই?

    বউ তাড়াতাড়ি বলে, ক্যান বাইরে!

    রিয়াজরহিম বলে, ব্যালকনিতে?

    বউ মাথা ঝাঁকায়। তারপর বলে, ক্যান কী হইছে?

    রিয়াজরহিম বলে, আর মেলবা না। ব্রা ভিতরে শুকাবা!

    বউ বলে, ক্যান?

    রিয়াজরহিম বলে, মহল্লায় সব বদলোক তোমাদের ব্রা দেইখা দেইখা চোখের সুখ নেয়!

    বউ বলে, কারা?

    রিয়াজরহিম কারো নাম নেয় না। কিন্তু রিয়াজ রহিমের খোঁজ চলতে থাকে। সে খেয়াল করে দেখে তার বউ ব্রা মেলছে কিনা ব্যালকনিতে। তার সাথে সাথে সে এও দেখে যে অন্য ফ্ল্যাটের আর কে কে ব্রা মেলে ব্যালকনিতে। আর তার চোখ সবসময় তীরের ফলার মতো বিঁধে থাকে মিজানুরের দিকে। লোকটা বদ। সবসময় ব্যালকনির দিকে নজর তার। তার দৃষ্টি ধরে রিয়াজরহিমের নজরও এ ব্যালকনি থেকে ও ব্যালকনিতে ঘুরঘুর করে।

    রিয়াজরহিমের এহেন তাকানো আমজাদ সাহেবের চোখে পড়ে। তার বউ পঞ্চাশোর্ধ্ব এবং মৃত্যুর সাথে লড়াইরত। তার বউ ব্রা পরার সুযোগ পায় না। তবু আমজাদ সাহেবের মেজাজ খারাপ লাগে। ঘরে তার দুইটা বৌমা। দুইটাই বিশোর্ধ্ব। এরা ঘনঘন ব্রা পাল্টায় আর মেলে দেয় ব্যালকনিতে। বাতাসে ব্রাগুলো বেহায়ার মতো ঝুলতে থাকে। আমজাদ সাহেব এতদিন দেখেও কিছু বলেননি। কিন্তু রিয়াজরহিম, এমনকি ওই মিজানুরও যেভাবে ব্যালকনি ব্যালকনিতে লোলুপ দৃষ্টি হানে তাতে এ মহল্লায় বাস করাই দুরূহ। কিন্তু ফ্ল্যাটটা তার নিজের। চাইলেই মহল্লা চেঞ্জ করা সম্ভব না। তিনি তাই ছেলেদের ডাকেন। বলেন, তোমাদের সাথে কিছু কথা আছে।

    ছেলেরা বলে, বলেন আব্বা।

    আমজাদ সাহেব বলেন, দরজাটা বন্ধ করে দাও।

    ছেলেরা দরজা বন্ধ করে দেয় দ্বিধার মধ্যে। আমজাদ সাহেব বলেন, মহল্লার অবস্থা দিনকেদিন খারাপ হচ্ছে। আগে এটা ভদ্রলোকের মহল্লা ছিল। সেইটা দেখেই এইখানে ফ্ল্যাট কিনছিলাম। কিন্তু এখন সেই দিন আর নাই।

    ছেলেরা বলে, কী হইছে আব্বা? কেউ আপনার সাথে দুর্ব্যবহার করছে? নাম বলেন খালি!

    আমজাদ সাহেব বলেন, দুর্ব্যবহার না। কিন্তু মহল্লায় এখন লম্পটের কোনো অভাব নাই।

    ছেলেরা কিছু বলতে পারে না। মুখ চাওয়াচাওয়ি করে। আমজাদ সাহেব আবার শুরু করেন। বলেন, এখন তোমাদের বউরা যে...

    বিশোর্ধ্ব বউদের কথা আসতেই সচকিত হয়ে ওঠে ছেলেরা। তাড়াতাড়ি বলে, কী হইছে ওদের? ওদের কেউ কিছু বলছে? স্ল্যাং বলছে? টিজ করছে নাকি? কই ওরা তো কিছু বলে নাই! কে করছে?

    আমজাদ সাহেব বলেন, ওইসব না। কিন্তু তবু বউমাদের নিষেধ করিও যে ওই ইয়েগুলো যেন ব্যালকনিতে না মেলে...

    ছেলেরা বলে, কী বাবা? কী মেলে ওরা ব্যালকনিতে?

    আমজাদ সাহেব ইতস্তত করেন। বলেন, ওইযে ব্রাগুলা... ওইগুলা যেন বাথরুমেই শুকায়! মহল্লার লোকেরা খালি বদনজর দেয় ওইগুলাতে!

    ছেলেরা তাদের বিশোর্ধ্ব বউদের বলে। বউরা নিজেদের মধ্যে আলাপ করে। তারা কিছুদিন ভুল করে ব্যালকনিতে ব্রা মেলে দিতে থাকে। আর এই ভুল বারবার করছে কিনা তা জানতে ছেলেরা নিজেদের ব্যালকনিতে নজর রাখা শুরু করে। নিজেদের ব্যালকনিতে নজর রাখতে রাখতে তারা অন্যের ব্যালকনিও দেখতে শুরু করে। অন্যের ব্যালকনি দেখতে দেখতে তারা মিজানুরকে দেখে, রিয়াজরহিমকে দেখে, তাদের বাবাকেও দেখে। দেখে যে তারাও অন্যের ব্যালকনি দেখছে। আর ব্যালকনিতে তখনো কয়েকটা ব্রা, যারা ভুল করে এখনো মেলে দিচ্ছে, সেগুলো দুলছে। আর তারা ভাবে বাবা ঠিকই বলেছিল যে এই মহল্লাটা আর আগের মতো ভদ্র নাই, এমনকি বাবাও আর ভদ্র নাই। এ নিয়ে তারা হতাশ হয়ে পড়ে। সেই হতাশা এমনকি তাদের বউদের মধ্যেও ছড়ায়। আর হতাশা খানিকটা আগুনের মতো। ছড়াতেই থাকে। ছড়াতেই থাকে। ফলে প্রতিটি ফ্ল্যাটেই মহল্লার আগের পরিস্থিতি আর এখনের পরিস্থিতি নিয়ে তুলনামূলক বিচার হয়। আর বিচার করতে করতে সবাই আরো বেশি করে হতাশ হয়ে পড়ে। তবে এ হতাশাদৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে থাকে স্বামীরা। তাদের হতাশা শ্বাসপ্রশ্বাসের মতো অবারিত হয়ে ওঠে।

    পরের সপ্তাহের শেষের দিকে স্বামীরা একটা ব্যাপার একযোগে কিন্তু আলাদা আলাদাভাবে লক্ষ্য করে। তারা দেখে তাদের বিশোর্ধ্ব, ত্রিশোর্ধ্ব, চল্লিশোর্ধ্ব এমনকি পঞ্চাশোর্ধ্ব বউদের বুকের কাছ থেকে কেমন মরা একটা গন্ধ আসছে। যেন তাদের বউদের বুক শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। এরকম গন্ধ ভাগাড় থেকে কখনো কখনো পাওয়া যায়। কিন্তু জীবন্ত মানুষ ও ততোধিক জ্যান্ত মাংসপিণ্ড থেকে এরকম গন্ধ কেন আসছে তারা বুঝতে পারে না। তারা তখন তাদের বউদের প্রশ্ন করে। জানতে চায় এরকম গন্ধ কেন? তারা কি নতুন কোনো লোশন ব্যবহার করছে, নাকি তাদের বডিস্প্রের ধরন পাল্টে গেছে? এরকম গন্ধ বড়জোর লাশের শরীর থেকে পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু তাদের শরীরে কেন? তারা কি লাশ হয়ে যাচ্ছে?

    বউরা কিছুদিন এই গন্ধের উৎস খুঁজে পায় না। বিশোর্ধ্ব বউরা নিজেদের গন্ধ শুঁকে শুঁকে দেখে। তারাও স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে একটা চিমসা গন্ধ তাদের বুক অধিগ্রহণ করেছে। তখন এ নিয়ে তারা ত্রিশোর্ধ্ব বউদের কাছে যায়। ত্রিশোর্ধ্বরা জানায় তারাও বিষয়টা জেনেছে তাদের স্বামীদের কাছ থেকে আর তারাও নিজেদের শরীর শুঁকে শুঁকে দেখেছে এবং চামচিকার মতো গন্ধটা তারাও পেয়েছে। এটা কি লাশের গন্ধ? এরকম একটা সন্দেহ তাদের মনেও হয়। বিশোর্ধ্ব তখন ত্রিশোর্ধ্বদের বুকের গন্ধ শুঁকে দেখে এবং নাক কুঁচকে ফেলে। তারা সবাই মিলে তখন চল্লিশোর্ধ্ব বউদের নিকটে যায়। সেখানে আগে থেকেই পঞ্চাশোর্ধ্ব বউয়েরা উপস্থিত ছিল। তাদের মধ্যেও গন্ধ বিষয়ক বিচলন। চল্লিশোর্ধ্ব বউয়েরা জানায় তাদের স্বামীরা জানানোর আগেই তারা নিজেদের মধ্যে ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছে আর তারা ধারণা করছে এটা ঘটছে এই লম্পটদের মহল্লায় থাকার কারণে। তারা একটা প্রাচীন গল্প তখন বলতে শুরু করে যে একটা দেশে একটা অতিকায় লম্পট ছিল।

    কিন্তু অন্যরা তখন বুঝতে পারে না অতিকায় লম্পট বলতে আসলে কী বোঝানো হচ্ছে। তখন বিশোর্ধ্বরা একধরনের কল্পনা করে আর ত্রিশোর্ধ্বরা আরেকধরনের কল্পনা করে। পঞ্চাশোর্ধ্বরা অবশ্য কোনো কল্পনা করে না। হতে পারে তাদের কল্পনাশক্তি শুকিয়ে গিয়েছে।

    আর চল্লিশোর্ধ্বরা গল্প বলেই যায় যে ওইরাজ্যে ওই অতিকায় লম্পট তার বদনজর প্রথমে দেয় কলাগাছের ওপর। আর তাতে তিরিশদিনের মাথায় কলাগাছের নিচের কাণ্ডটা পচতে শুরু করে। এটা ওইরাজ্যের কেউ বুঝতে পারে না প্রথমে। কিন্তু হঠাৎ তারা খেয়াল করে রাজ্যের সব কলাগাছ ধীরে ধীরে গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। আর পচতে শুরু করেছে। আর মরে যেতে শুরু করেছে।

    এরপর ওই অতিকায় লম্পটটা একদিন নদীর মাছের দিকে নজর দেয়। আর একটা মাসের মধ্যে নদীর মাছগুলো পানির ওপরে ভেসে ভেসে ওঠে। প্রথমে তাদের লেজের দিকে পচন ধরে। তারপর সারা শরীর পচে যেতে থাকে। নদী হয়ে ওঠে পচা মাছের ভাগাড়। রাজ্যের সবাই তখন হায় হায় করে ওঠে। নদীর তাবৎ মাছ মরে যায় দেখে রাজ্য জুড়ে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। আর তখন ওই অতিকায় লম্পট নজর দেয় গাভীর ওলানের দিকে। আর মাসখানেকও সময় যায় না গাভীর ওলান থেকে দুধের বদলে পচাবাসি গন্ধ আসতে থাকে। আর কিছুদিনের মধ্যেই ওলানগুলো ফেটে যেতে থাকে। ফেটে ফেটে ওলানের ভেতর থেকে পচা মাংস বেরিয়ে আসতে থাকে। আর তখন গাভীগুলো চিৎকার করতে থাকে। হাম্বাহাম্বা করে বলতে থাকে ওলান ফেটে গেলে গাভীদের আর কী থাকে! আর চিৎকার করতে করতে গাভীগুলোও গন্ধভরা লাশ হয়ে যায়।

    বিশোর্ধ্ব ত্রিশোর্ধ্ব আর পঞ্চাশোর্ধ্ব বউয়েরা তখন আঁতকে ওঠে প্রায়। জিজ্ঞেস করে, এ থেকে রাজ্যটি প্রতিকার পেয়েছিল কিভাবে?

    চল্লিশোর্ধ্ব বউয়েরা তখন জানায় ওইরাজ্যের সবাই মিলে তখন ওই অতিকায় লম্পটটাকে আটকায়। তারপর সুঁই দিয়ে প্রথমে তার চোখ গেলে দেয়। লম্পটের চোখ ফেটে গেলে তখন তার শরীরের অন্যান্য প্রত্যঙ্গে সুঁই ফোটাতে থাকে, ফোটাতেই থাকে। সুঁইয়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে চালের রুটির মতো শরীর হয়ে গেলে তখন অতিকায় লম্পট লাশ হয়ে যায়। তারা সবাই মিলে তখন লাশটাকে নিয়ে কাক-শকুনের জন্য ভাগাড়ে ফেলে দেয়। আর তখন নাকি রাজ্য জুড়ে আবার সুগন্ধ ছড়াতে শুরু করে। কলাগাছ বেঁচে ওঠে, মাছেরা নদীতে লাফায়, আর গাভীর ওলান ফুলে ওঠে দুধে!

    বিশোর্ধ্বরা বলে, কিন্তু এইটা শুধুই রূপকথা! আর আমাদের সাথে তো এইগুলা সত্যি সত্যি ঘটছে। আমার বুকে নাক দিয়া দেখেন কেমন তেলাপোকার গুয়ের মতো গন্ধ, দেখেন!

    বিশোর্ধ্বরা নিজেদের বুকের গন্ধ শোঁকানোর জন্য তোলপাড় শুরু করে দেয়। ত্রিশোর্ধ্বরাও। চল্লিশোর্ধ্বরাও। পঞ্চাশোর্ধ্বরা চুপ থাকে অবশ্য। তবে কেউ কারো বুক শুঁকতে আর রাজি হয় না। তারা শুধু এই লাশের গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে চায়। কিন্তু তাদের করণীয় তারা কিছুই জানতে পারে না। তারা শুধু গন্ধগন্ধ করতে থাকে। আর এই গন্ধ যেন বাড়তেই থাকে, বাড়তেই থাকে।

    পরের তিনটা মাসে বউদের বুক থেকে এতটাই গন্ধ বের হতে থাকে যে মহল্লা পুরোটা যেন একটা লাশাগার হয়ে দাঁড়ায়। তখন সেখানে গাঁজা খেতে আর রিকশাওয়ালারা আসে না, এমনকি পাড়ার লাফাঙ্গারাও গলিতে ঢুকতে নাক কুঁচকায়। তাদের কাছে মনে হয় এই মহল্লাটা আগেই ভালো ছিল, বসার পরিবেশ ছিল, আড্ডা দেয়ার জায়গা ছিল, এখন আর সেরকম অবস্থা নাই। এখন এখানে বসলেই নাড়িওল্টানো গন্ধ আসে। পেট ঠেলে বমি চলে আসে গলায়। লাফাঙ্গারা তাই দূরে দূরে থাকতে শুরু করে। বড়জোর দূর থেকে এই মহল্লাটার ওপর নজর রাখে। এরমধ্যে ওই মহল্লায় যাতায়াত থাকে শুধু ময়লা নেয়ার ভ্যান আর তার চালকের। ওই মহল্লায় ঢুকলে, ফুড়ড়ড়ড় করে বাঁশিতে ফুঁ দিলে বিশোর্ধ্ব ত্রিশোর্ধ্ব চল্লিশোর্ধ্ব এমনকি পঞ্চাশোর্ধ্ব বউরা বেরিয়ে আসে। তাদের হাতে থাকে প্যাকেট প্যাকেট পচা থকথকে কিছু। সেগুলো দিয়ে পচারস চুইয়ে চুইয়ে পড়ে, আর সেসব থেকে এমন গন্ধ ভেসে আসে যে ময়লার ভ্যান ঠেলা চালকটারও পেট উল্টে আসতে চায়। সে বারবার জিজ্ঞেস করে, এগুলার ভিতরে কী আছে?

    বউরা বলে, বুকের ময়লা আছে। বুকে অনেক গন্ধ। বুকের মাংস পইচে গেছে!

    ময়লার ভ্যানচালকটা তখন একটু লোভীলোভী দৃষ্টিতে পলিথিনের দিকে তাকাতে চায়, কিন্তু পরক্ষণেই আবারও তার বমি আসে। সে তখন তাড়াতাড়ি বুকের গন্ধওয়ালা মৃতমাংস নিয়ে ভ্যান ঠেলে বেরিয়ে যায়। পরদিন আবার আসে। আবার স্তূপ স্তূপ বুকের মাংস জমা হতে থাকে। গন্ধে বাতাস ভারী হতে হতে নিশ্বাস ফেলার উপায় থাকে না।

    তখন এই গন্ধের উৎস খোঁজার জন্য একদিন পুলিশ আসে। পুলিশ জানায় সে লাশের গন্ধ আলাদা করতে পারে। এগুলো তার পচা লাশের গন্ধ বলেই মনে হয়। আর বউরাও বলে যে এগুলো পচা মাংসেরই গন্ধ, এমনকি লাশের গন্ধও ঠিক আছে। পুলিশ ঠিকই বলছে, তবে এগুলো তাদের বুকের পচা মাংসের গন্ধ। তাদের বুকে গন্ধ ধরে গেছে। তাদের বুক এক অদ্ভুত পচা রোগে সংক্রমিত হয়েছে। এই রোগনিরাময়ের জন্য তারা নানা চেষ্টা করে যাচ্ছে, কিন্তু কোনোভাবেই ভালো হয়ে উঠতে পারছে না।

    পুলিশ বউদের কথা বিশ্বাস করে না। সে স্বামীদের খোঁজ করে, কোথাও পায় না। বউয়েরা জানায় এই মহল্লার স্বামীরা সব চলে গেছে। বউদের বুকের এত তীব্র পচা গন্ধ তারা সহ্য করতে পারছে না। তারা সবাই মিলে এখন অন্যজায়গায় থাকে। পুলিশ জানায় এসব অবান্তর কথা সে কোনোমতেই মেনে নেবে না। বউদের সবাইকে তার সাথে থানায় যেতে হবে। কারণ সে তার বাপের জন্মেও এমন বুকের মাংসের লাশ হয়ে যাওয়ার গল্প শোনেনি।

    তখন চল্লিশোর্ধ্ব বউরা সেই প্রাচীন গল্পটা আবার শোনাতে থাকে পুলিশকে। জানায় অতিকায় লম্পটের কথা। কিন্তু পুলিশটা অবিশ্বাসী। সে কোনোমতেই বউদের কথা বিশ্বাস করে না। বউরা তখন নিজেদের বুক খুলে পুলিশকে দেখায়। পুলিশ দেখে কোথাও কোনো মাংস পচে নেই, কোথাও কোনো সংক্রামণ নেই। পুলিশ তখন হাতকড়া বের করে। আর অ্যারেস্ট করতে চায় সবগুলো বউকে। বউরা তখন পুলিশকে নিজেদের বুকের গন্ধ শুঁকতে বলে। জানায় এই গন্ধ থেকেই ওই মৃত পচা মাংস বেরিয়ে আসে। পুলিশ তখন গন্ধ শোঁকে। আর শুঁকতে শুঁকতে ভ্যাপসা একটা গন্ধ তার নাকের ভেতর অনুভূত হয়। গন্ধটা প্রথমে তার চামচিকার গন্ধের মতো লাগে, পরক্ষণেই মনে হয় এটা বোধহয় তেলাপোকার গুয়ের গন্ধ, কিন্তু একটু পরেই তার মনে হয় গন্ধটা আসলে পচা মাংসেরই।

    পুলিশটা তখন খুব দুঃখপ্রকাশ করে। এভাবে বুকের মাংস মরে পচে গেলে কিভাবে রাষ্ট্র বাঁচবে এ বলে বিকার করতে থাকে। রোগটা দ্রুত নিরাময় হওয়া দরকার এরকম ভাবতে ভাবতে পুলিশ এই মহল্লাকে সিলগালার আদলে গেটগালা করে দেয়। যেন মহল্লাটা বিশেষ কিছু। তখন মহল্লার গলির মুখে দুটো দেয়াল তুলে একটা উঁচু লোহার গেট বসিয়ে দেয়। আর গেটের মুখে বড় একটা তালা ঝুলিয়ে দেয়। নির্বিশেষ যাতায়াতের জন্য গেটের সাথে আরেকটা উপগেট থাকে। সেটা দিয়ে মানুষ যাতায়াত করতে শুরু করে। রিকশাকে দূরে নামিয়ে মানুষেরা খুব শান্তভাবে মহল্লার ভেতর ঢুকে একটা ছিমছাম পরিবেশের ভেতর দিয়ে নিজের নিজের ফ্ল্যাটে যাতায়াত শুরু করে। মহল্লাটা আবার যেন বদলে যেতে থাকে। আর একদিন সকালে অনেক রোদ উঠলে বিশোর্ধ্ব ত্রিশোর্ধ্ব চল্লিশোর্ধ্ব এমনকি পঞ্চাশোর্ধ্ব বউরা তাদের ব্রা নিয়ে ব্যালকনিতে আসে। ব্রাগুলো এতদিন বাথরুমে শুকিয়ে শুকিয়ে ভ্যাপসা আর চিমসা গন্ধের গুদাম হয়ে গেছে। বউরা রোদঝলমল ব্যালকনিতে ব্রাগুলো মেলে খুব আনন্দ পায়। তখন তাদের মনে হয় এমনও হতে পারে যে ব্রায়ের ওই চিমসাগন্ধটাই হয়ত তাদের বুকে প্রসারিত হয়েছিল। আর এটা ভেবে তারা ঠিক করে কয়েকদিন পর তারা আবারও নিজেদের বুক শুঁকে শুঁকে দেখবে।

    "নির্বাচিত গল্পপাঠ (প্রথম খণ্ড) " থেকে নেওয়া (https://www.guruchandali.com/book.php?&page=3 )
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৪ এপ্রিল ২০২০ | ২০৮৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ফেরদৌসী | 108.162.215.21 | ১৫ এপ্রিল ২০২০ ১০:১৭92341
  • বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি

  • একলহমা | ১৫ এপ্রিল ২০২০ ২২:৩৮92365
  • কুর্নিশ!

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন