এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  স্মৃতিচারণ  নস্টালজিয়া

  • ছত্তিশগড়ের হোলিঃ আদিবাসী গাঁয়ে

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    স্মৃতিচারণ | নস্টালজিয়া | ২২ মার্চ ২০২৪ | ২৪৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • ‘রঙ পিচকারি, সন্মুখ মারি,
    ভিগি আঙিয়া, অউর ভিগি শাড়ি’

    ভেবেছিল হোলিতে এবার দিন দুইয়ের ছুটি নিয়ে ভিলাইয়ে বাড়ি যাবে।  কিন্তু ভেতর থেকে কোন উৎসাহ পাচ্ছে না রূপেশ।  আসলে ওর চাকরি পাকা হয়ে যাওয়ায় বাড়িতে একটা বিয়ে বিয়ে হাওয়া উঠেছে।  মায়ের চিঠিতে ইঙ্গিত স্পষ্ট, বড়ী ভাবীর কোন মাসতুতো বোন নাকি খুব গুণের মেয়ে, রূপে অপ্সরী ও গুণে বিদ্যাধরী। বিলাসপুরের সিরিয়ান ক্রিশ্চানদের ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল হোলি ক্রস থেকে পাশ করে গার্লস ডিগ্রি কলেজ থেকে মাইক্রো-বায়োলজি নিয়ে মাস্টার্স করেছে। আবার ভাতখন্ডে সংগীত মহাবিদ্যালয় থেকে তিনবছর গান শিখেছে।

    তা বেশ, কিন্তু অমন গুণবতী কন্যে এই অজ আদিবাসী বহুল পাড়াগাঁয়ে কেন আসবে রূপেশ ভেবে পায় না।

    তবে মাতারাম জানিয়েছেন যে ওই পরিবারের মেয়ে সব জায়গায় মানিয়ে নিতে পারবে।  অমনই ট্রেনিং পেয়ে বড় হয়েছে, তাছাড়া আজ নয় কাল ছেলের প্রমোশন হবে , তখন নিশ্চয় কোন শহর বা মহকুমা সদরে ওর ট্রান্সফার হবে, গ্রামীণ ব্যাংক বলে কি সারাজীবন বনবাসে কাটাতে হবে? তাই হোলিতে দু’দিন ছুটি নিয়ে ঘরে আসলে দু’পক্ষেই ভাল রকম দেখাশোনা হতে পারে।

    আর এই সম্ভাবনাকেই ভয়। মেয়েটিকে ঠকানো ! কী করে একটি অচেনা মেয়েকে প্রথম দেখাতেই বলবে যে ও যেখানে চাকরি করে সেখানে ব্যাংকের কোয়ার্টারে কোন সেপটিক ট্যাংক নেই, আধুনিক কিচেন নেই, রান্না হয় কেরোসিনের জনতা স্টোভে? সামনের রাস্তাটিতে নুড়ি পাথর বিছানো, স্নান করতে হবে দোতলার পেছনের বারান্দায় পর্দা টাঙিয়ে, রাস্তায় বেরোলে দশজোড়া চোখ এমন হাঁ করে তাকিয়ে থাকবে যেন কোন মাদারির ভালুক অথবা বহুরূপীর সঙ দেখছে। পেছন থেকে মহিলাদের ছুঁড়ে দেওয়া কমেন্ট ভেসে আসবে, ‘কেইসন বেশরম অউরত! মুড় নাহি ঢাকে ও?’
    কেমন মেয়েছেলে গো, লাজ-লজ্জার বালাই নেই ? মাথায় ঘোমটা নেই গো!

    মেয়েটির জন্যে কোন সিনেমা হল নেই, ইংরেজি পত্রিকা নেই, সারাদিন ওপর তলায় বন্দী হয়ে থাকতে হবে? আলাপ করার মত কাউকে পাওয়া যাবে না।  একটা ট্রানজিস্টর রেডিও আছে গান ও খবর শোনার জন্যে, আর বিয়ের কথা শুরু হতেই রূপেশ টি ই বিলের পয়সা জমিয়ে একটা প্যানাসোনিক টেপ রেকর্ডার কিনেছে; কেন? তা নিজেই জানে না।

    রোজ রোজ বাজার হাট হবে না।  তবে উইক এন্ডে বাসে বা মোটর বাইকে স্বামীর পেছনে বসে কোরবায় মালগুদামের মত সিনেমাহলে ভ্যাপসা গন্ধওলা সীটে বসে সিনেমা দেখে কোন রেস্তোরাঁয় রাতের খাবার খেয়ে গাঁয়ে ফেরা যেতে পারে ।

    রূপেশের রকম সকম দেখে নতুন জয়েন করা ফিল্ড অফিসার ভগতরাম ধৃতলহরে জিজ্ঞেস করেই ফেলল — স্যার, হোলিতে বাড়ি যাবেন না?
    -- ভাবছি; কিছু কাজ পেন্ডিং আছে।
    -- আরে কাজ তো সারাজীবনই থাকবে; একটা শেষ হলে আরেকটা। ওর কি শেষ আছে? কিন্তু আগের দিন সন্ধ্যেয় হোলিকা দহন করে সকাল বেলায় বন্ধুদের সঙ্গে এ’পাড়া ও’পাড়া বে’পাড়া সে’পাড়া করা, হাসিমুখে গাল পাড়া ও গাল শোনা – এর মজাই আলাদা!

    রূপেশ হেসে ফেলে।  ভিলাইয়ের সেক্টর টেন, সিভিক সেন্টার, ক্যাম্প – এ’সব জায়গায় রঙ মেখে সাইকেলে চেপে দল বেঁধে হো-হো করে ঘুরে  বেড়ানো, হুডকো এরিয়ায় শ্রীবাস্তবের বাড়িতে ভাঙের পকোড়া এবং হুইস্কির অবাধ আচমন; আর একটা টুলের ওপর অ্যামপ্লিফায়ারের বাক্স বসিয়ে বাজারচলতি হিন্দি গানের সঙ্গে ধিড়িং ধিড়িং নাচা, এসব দশ বছর আগে অনেক করেছে।
    কোন পঁহুচা হুয়া বন্ধু হয়ত ধরতাই দেবে — ‘লালাজি কা লাল গাঁড় পিত্তল কা পৌয়া’,
    এরা সঙ্গে সঙ্গে কোরাসে চেঁচিয়ে উঠবে— ‘লালা জহাঁ গাঁড় মারাবে তহাঁ নাচে কৌয়া।’   

    এবার জুটেছে নতুন ফ্যাকড়া। বৌদির ভগিনীটি ও তাহার মাতা ঠাকুরাণীর একান্ত ইচ্ছা প্রস্তাব অধিক অগ্রসর হইবার পূর্বে পাত্র-পাত্রীর চারিচক্ষের মিলন, আলাপচারিতা ইত্যাদি হঊক। 

    আজকাল কী পড়িলিখি লড়কী।  খুদ নাপতোল কে দেখনা চাহতী হ্যাঁয় — ছেলেটা ঠিক কতটা গেঁয়ো, আর ছেলের মুখ থেকে শুনে বুঝে নিতে চায় ছুরিকলাঁ গ্রাম ঠিক কত অজ পাড়া গাঁ!রূপেশের পিত্তি চলে যায়।  ঠিক করে ফেলে হোলির সময় এখানেই থাকবে। মেয়েপক্ষ জোরাজুরি করলে পরে কোন উইক এন্ডে, সে দেখা যাবে’খন।
     
    হোলিকা দহন অথবা একদিন আগে ‘হোলিকা’ রাক্ষসীকে পুড়িয়ে মারার অনুষ্ঠানের দিন ও সবাইকে তিন ঘন্টা আগে ছেড়ে দিল।  সূর্য ডুবলেই বাসের সংখ্যা কমে যায়, কারণ বিভিন্ন মোড়ে নির্জন পথের বাঁকে খালের ধারে বাসরাস্তায় কে বা কাহারা বোল্ডার দিয়ে ব্যারিকেড করে বাসের রাস্তা আটকে দেয় ।  ড্রাইভার কন্ডাকটর খালাসী ও যাত্রীরা মিলে ‘দম লগা কে হেঁইসা’ করে পাথর সরায়। কোথা থেকে ছুটে আসে ঢিল।

    এই খেলাটা বহু দশক ধরে পরম্পরা অথবা রীতি-রেওয়াজের নামে সবার গা সওয়া হয়ে গেছে।  তাই ঘরে ফেরা সরকারি কর্মচারির দল সন্ধ্যের আগেই ঘরে ফিরতে চায়।

    তবে ছুরি গাঁয়ের সরকারি চাকরিজীবিদের আরও একটা তাড়া আছে। প্রতি বছর এই রাতে কয়েকজন সরকারি কর্মচারিদের বন্ধ দরজার সামনে ‘মটকি ফোঁড়’ খেলা হয়।  অর্থাৎ একটা মাটির হাঁড়ি ওদের বারান্দায় আছড়ে ফেলে ক’জন দুদ্দাড় করে ছুটে পালায়।  আর ভাঙা হাঁড়ি থেকে গড়িয়ে পরে থকথকে হলদে পূতিগন্ধময় আবর্জনা, যা কয়েকদিন ধরে এই উপলক্ষে জমিয়ে রাখা ছিল।  এ নিয়ে নালিশ করে লাভ নেই ।  সবাই বলবে — ‘বুরা না মানো, হোলি হ্যাঁয়’। 

    গত দুই বছরে রূপেশ ছাড় পেয়েছে, কারণ ও ব্যাচেলর! কিন্তু ঠুল্লু এসে বিকেলের চা দেবার সময় জানিয়ে গেল, কানাঘুষোয় শুনছে  এবার ছাড়া নাও পেতে পারে।
    -- সাহাব, আজ রাত বারো বাজে তক জাগতে রহনা, অউ বারান্দা কী বাত্তি রাতভর জ্বলনে দীজিয়ে।

    সকালে ঠুল্লুর দরজা খটখটানোয় ঘুম ভাঙে। ও কলিং বেল বাজায় না । রূপেশেরই বারণ; এর আওয়াজটা বিচ্ছিরি, ঠাস ঠাস! বুকে এসে লাগে।
    নাঃ, রাতটা ভালোয় ভালোয় উতরেছে; এবারেও ছাড়।  কিন্তু সকাল ন’টা দশটা নাগাদ রঙ খেলার দল বেরিয়ে পড়বে, মিছিল করে নাচতে গাইতে। ঠুল্লু চা-জলখাবার দিয়ে একঘন্টার মধ্যে ভাতে-ভাত, ডাল, আলুসেদ্ধ ও ডিমের ঝোল রেঁধে ফেলে। যাবার আগে বলে যতই দরজা বন্ধ করে রাখুন, ইয়ার-দোস্ত এলে খুলতেই হয়। ধরুন, যদি রামখিলাওন, গিরীশ, সদনলাল, কুমারসাহেব এরা এসে ডাকতে থাকেন?

    তাই একটা পুরনো কুর্তা  আর পাজামা পরে রেডি হয়ে থাকুন। আজ সবার সঙ্গে মিলিয়ে মিছিলে হাঁটুন, রঙ মাখান, রঙ লাগান। তারপর সবাই মিলে বড়া তালাওয়ে বেলা একটা নাগাদ ডুবকি লাগিয়ে সাফ সুতরো হয়ে নেবেন।  যদি ভাঙ খাবার ইচ্ছে থাকে তো আমাকে বলবেন, সদনলালের ঘরে ভাঙের শরবত , ভাঙের পকৌড়া –সব বন্দোবস্ত হয়েছে।  আর পকেটে রাখুন লাল গুলালের এই ছোট্ট প্যাকেটটি—জোশী মহারাজ মন্ত্র পড়ে শোধন করে দিয়েছেন, আপনার এলার্জি হবে না।

    ঘন্টাদুই পরে গাঁয়ের সদর রাস্তা দিয়ে হোলির মিছিলের চলা শুরু হল। কে নেই তাতে? সদনলাল, রামখিলাওন, দুই বিদুষক ঠিবু ও রসেলু, পান ঠেলার ইতোয়ারু, আয়ুর্বেদিক ডাক্তার জৈন, স্কুলের দুই গুরুজি ধীরহে স্যার ও মিশ্রজি- সবাই চলেছে নাচতে গাইতে। 

    মাঝে মাঝে হররা উঠছে, হোলি হ্যাঁয়, হোলি হ্যাঁয়।

    হ্যাঁ রে বাবা! সবাই জানে আজ হোলি, এত বলার কী আছে? রূপেশ কী একটু বিরক্ত হচ্ছে! ও কি ইদানীং একটু বুড়োটে হয়ে পড়েছে? সদনলাল ইতিমধ্যেই বেশ ক’পাত্তর চড়িয়েছে। ও এক ডিগ্রি গলা চড়িয়ে শূন্যে ঘুষি ছুঁড়ে বলছে – মা কসম, আজ হোলি হ্যাঁয়।

    সেই শুনে হেসে গড়িয়ে পড়ছে মিছিলের ছেলে বুড়ো। ভিড়ের থেকে এগিয়ে এসেছে একটি ছেলে।  তার হাতে একটি আধখানা আলুর টুকরো। সে এসে রূপেশের বুকে স্ট্যাম্প মারার মত করে টুকরোটা চেপে দেয়। তাতে কিছু লেখা, রূপেশ পড়ার চেষ্টা করে। ভিড়ের মধ্যে গর্জন উঠে — চোদা লে!

    রূপেশ চমকে ওঠে, হাসির হররার মধ্যে ডাক্তার জৈন বলেন — এ হে হে! একদম গ্রামীণ ব্যাংক কা স্ট্যাম্প লগ গয়া।  কিউঁ ম্যানেজার সাহাব।

    অপ্রস্তুত রূপেশ বুঝতে পারে যে ওই প্রাকৃত শব্দযুগ্ম ওর জামার বুকে লেগে আছে। ছেলেটিকে চিনতে পারে -- ডাক্তার জৈনের ছেলে, বিলাসপুরের কলেজে পড়ে। গতমাসে ‘শিক্ষিত বেরোজগার’ স্কিমের নাম করে পঞ্চাশ হাজার লোন চাইতে এসেছিল; খালি হাতে ফিরে গেছে।

    মিছিল এগিয়ে চলে, এবার সহিস মহল্লা হয়ে বাজারের দিকে। রাস্তার দুদিকের বারান্দায় মেয়েরা এসে ভিড় করে হাসিমুখে মিছিল দেখছে। তবে এই গাঁয়ে নারীপুরুষের প্রকাশ্যে রঙ খেলার চলন নেই।

    একটা হট্টগোল। সহিস মহল্লার পাশে একটা এক কামরার টালির ঘর থেকে ঘাসীরাম আগরওয়াল ও ঠিবু টেনে বের করছে এক পাকাচুল ষাটের ঘর ছোঁয়া বুড়োকে। সাদা খাদির কুর্তা ও একই কাপড়ের পাজামা পরা মানুষটি লজ্জা ও সংকোচে নুয়ে পড়েছেন। 

    একটু তোতলা এই ভদ্রলোক স্থানীয় মানুষ ন’ন। দু’বছর হল এখানে একটি হাতকর্ঘা সঙ্ঘের ছোট্ট বিপণি খুলেছে, উনি তার প্রতিনিধি এবং একমেবাদ্বিতীয়ম সেলসম্যান। ব্যাংকে জমাখাতা খোলার সুবাদে রূপেশ জানতে পেরেছে উনি গোয়ালিয়রের অধিবাসী। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোন ঝামেলা হওয়ায় চাকরিটা যেতে বসেছিল। শেষে কিছু পলিটিক্যাল মুরুব্বি ধরায় চাকরি যায় নি, তবে ঝাঁসি থেকে একহাজার কিলোমিটার দূরে এই আদিবাসী এলাকায় আসতে হয়েছে।

    রূপেশ টের পেয়েছে যে ওঁর বিক্রিবাটার হিসাব-কিতাব পাকা ও সাফ সুতরা নয়। কিন্তু রূপেশ কী করতে পারে, গোটা দুনিয়ার ভালোমন্দের বোঝা কি ওর কাঁধেই ভগবান চাপিয়েছেন? না; এত অহংকার ভাল নয়।

    আর উনি একটু লক্ষ্মীট্যারা। এই নিয়ে গাঁয়ের স্কুলে দু’পাতা পড়া ছেলে ছোকরার দল ওঁর নাম দিয়েছে ‘লুকিং লণ্ডন, টকিং টোকিও’।

    কিন্তু ঘাসীরাম সদনলাল এদের উৎসাহের পেছনে অন্য কারণ। সামান্য আয়ের এই মানুষটি দেশের বাড়িতে যান বছরে একবার, দীপাবলীর সময়। এখানে গাঁয়ের সমাজ ওকে আপন করে নেয় নি; পরদেশি ছাপ লাগিয়েই ছেড়েছে। এই বয়েসে হাত পুড়িয়ে খেতে ইচ্ছে করে না। তাই এখানকার নীরস জীবনে একটু খানি মাধুর্যের ছোঁয়া পেতে উনি চুড়ি পরিয়ে ঘরে তুলেছেন একটি জোয়ান মেয়েছেলেকে; সহিস মহল্লার। একে এখানে বলা হয় ‘চুড়িহাই পত্নী’। তবে এর জন্যে সমাজের বৈঠক ডেকে মেয়ের বাপ-মাকে মোটা টাকা ফি দিতে হয়েছে। তবে মেয়েটির বয়েস তিরিশেরও কম। সবাই হাসে; বলে – বুড়ো দাদু নাতনিকে বে করেছে।

    কিন্তু সেদিন মেয়েটি আবদার ধরল যে ওকে একটা ট্রাঞ্জিস্টার কিনে দিতে হবে, নইলে ও ফিরে যাবে। ভদ্রলোক, অর্থাৎ পেন্ডারকরজি মেয়ের বাপ-মার সঙ্গে কথা কাটাকাটি করে শেষে মাসিক কিস্তিতে একটা এনে দিলেন। সেটাই কাল হল। রেডিও পেয়ে ওর ফুর্তি গড়ের মাঠ। সন্ধ্যেবেলা হস্তকর্ঘা শিল্পের, মানে হ্যান্ডলুমে তৈরি জামাকাপড়ের দোকান বন্ধ করে উনি ঘরে ফিরে দেখলেন যে ওনার দু’বোতল মহুয়া ফাগনী বাঈ একাই মেরে দিয়ে টুন হয়ে আছে। ভাতের হাঁড়ি বাড়ন্ত, উনুনে জল ঢালা।  রাগের চোটে মুখ দিয়ে কথা বেরোল না । তোতলাতে তোতলাতে এসবের মানে কি জিজ্ঞেস করায় ফাগনী বাঈ ওঁর থুতনি নেড়ে গেয়ে উঠল — ‘লারে লাপ্পা, লারে লাপ্পা, লাই রাখদা”!

    পেন্ডারকর বুড়ো হলে কী হবে, পুরুষ বটেন! তাই নেভা উনুনের চ্যালাকাঠ তুলে মেয়েটাকে বেধড়ক পেটালেন।  ফল ভাল হল না।  হাজার হোক, উনি পরদেশি আর ফাগনী বাঈ ছোটজাত হলেও এই গাঁয়েরই মেয়ে। ও রেডিও কাঁধে ঝুলিয়ে বাপের বাড়ি গিয়ে চেঁচিয়ে পাড়া মাথায় করল।

    সে রাতেই জাতি পঞ্চায়েতের বৈঠক বসল। আর পেন্ডারকরকে ৫০০ টাকা জরিমানা করল। উনি ব্রাহ্মণ, নইলে নিঘঘাৎ মার খেতেন।

    পুরো ব্যাপারটা গাঁয়ে জানাজানি হয়ে গেলে যত আমোদগেঁড়ে তামাশবীন ওঁকে  কাকের পালে ফেঁসে যাওয়া শালিকছানার মত সময়ে অসময়ে ঠোকরাতে লাগল।
     
    তবে রূপেশ ওঁর অন্য একটি পরিচয় ও জানে। ভদ্রলোক  সুরে গান গাইতে জানেন। তখন একেবারে তোতলাতে হয় না। হোলির একপক্ষ আগে থেকে যখন ছেলে ছোকরার দল সকাল বিকেল নাগাড়া বাজিয়ে বেসুরো গলায় চিৎকার করে ‘ফাগ’ (হোলি বিষয়ক লোকসংগীত) গাইতে থাকে, তখন উনি এক সন্ধ্যায় ইমন ও ছায়ানটে উত্তর ভারতের লোকসংগীত এবং বিহারের চৈত্রমাসের গান ‘চৈতা’ এবং ‘চৈতি’ গেয়ে রূপেশের মনমেজাজ একদম ‘গার্ডেন-গার্ডেন’ করে দিয়েছিলেন।

    ওঁর হেনস্থা সহ্য করতে না পেরে রূপেশ বলে – আরে আপনি চলুন আমাদের সঙ্গে, কোন সংকোচ করবেন না। আমাদের হোলির গান শুনিয়ে মাহোল উমদা করে দেবেন।

    সবাই অবাক। এই ঘাটের মড়া বুড়ো হাবড়া গান গাইতেও জানে? খালি মেয়েবাজি নয়? ঠিক আছে, ম্যানেজার সাহাব যখন নিজে বলছেন।

    উনি রূপেশের দিকে কৃতজ্ঞতার চোখে তাকিয়ে হেসে তুতলে তুতলে বললেন — তাহলে একটু পেট্রল ভরে নিই?

    হাসির হররার মাঝে মিছিল দাঁড়িয়ে পড়ে।  উনি মাথা নীচু করে একটি ঝোপড়ার মধ্যে ঢুকে যান ও মিনিট পাঁচেকের মধ্যে বেরিয়ে আসেন। হাতের উলটো পিঠ দিয়ে ভিজে গোঁফ মুছে সবার দিকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে চোখ মেলে তাকান।

    আর স্পষ্ট উচ্চারণে বলেন — একটি শর্ত আছে, আমি এক লাইন গাইব, তারপর সবাইকে সেটা রিপিট করতে হবে।

    হুঁ হুঁ করে সুর ভেজে শুরু করেন — রাধা গয়ে হ্যাঁয় মেলে, শ্যাম অকেলে।
    মিছিল সরু মোটা আওয়াজে গলা মেলায়।
    মিছিল এগিয়ে চলে — এবার রহসবেড়া হয়ে গাঁয়ের শেষপ্রান্তে রাজবাড়ির দিকে।
    মিছিল মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শোনে এক জলদ গম্ভীর কন্ঠস্বরে শ্যাম নামের নটখট রাখাল যুবকের প্রণয়লীলা, ছলাকলা, রাধার অবর্তমানে অন্য গোপিনীদের সঙ্গে রাসলীলা ।
    ‘রাধা মেলায় যান, একলা ঘরে শ্যাম’!

    ক্রমশঃ ছুরিকলাঁ গাঁয়ের অধিবাসীদের মানসে ধরা পরে তাদের বহুপরিচিত এক চালচিত্র। এই লীলা, এই কিশোরীকে বাঁশির ডাকে ভোলানো, তারপর একদিন অন্য কারও দিকে ঢলে পরা — এ তো বহুবার ঘটেছে। কারও কারও নিজেদের জীবনে, কারও চেনা পরিবারের মধ্যে।
    এইভাবে মিছিল পৌঁছে যায় রাজপরিবারের সিংহদরজার সামনে। জোরে জোরে বাজতে থাকে মাদল, বাজে ঝাঁঝ।
    ‘রঙ পিচকারি, সন্মুখ মারি,
    ভিগি আঙিয়া, অউর ভিগি শাড়ি’

    খবর পেয়ে ভেতর থেকে বেরিয়ে আসেন যুবরাজ সাহাব। চন্দ্রচুড় অনঙ্গপাল সিং। মুখে বসন্তের দাগ, পরিষ্কার করে কামানো গাল, আজ পরনে সিল্কের ধুতি ও কুর্তা। 
    সামনে পেতলের বিশাল থালায় ফাগ ও পেঁড়া নিয়ে দু’জন নৌকর।
    সবাই ওঁর পায়ে আবির দেয়, উনি মাথায় হাত রাখেন ও নৌকর সবার হাতে একটি করে পেঁড়া তুলে দেয়। শেষের দিকে পেঁড়া ভেঙে আধখানা করা হয়। মিছিলে লোক যে অনেক!

    রূপেশ চুপচাপ দাঁড়িয়ে সিংহ দরজার মাথায় খোদাই করা ওঁদের কোট অফ আর্মস দেখছিল।  সাল লেখা ১৯০৩।

    উনি খেয়াল করে হাত তুলে ডেকে নিজহাতে গুলাল লাগিয়ে কোলাকুলি করলেন আর ওঁর ইশারায় নৌকর ওকে দিল এক গেলাস ঠান্ডাই মেশানো শরবত। ভ্যাবাচাকা রূপেশ চোঁ চোঁ করে গেলাস খালি করে ফেরৎ দিল। ওর একটু লজ্জা করছিল, দু’মাস আগে যুবরাজ সাহেবের দশ হাজার টাকার লোনের আবেদন ও খারিজ করে দিয়েছে যে! জানে, ওই পয়সা ফেরৎ পাওয়া মুশকিল। কারণ, এঁর রাজওয়াড়ার ভেতরে হাঁড়ির হাল।

    এবার ফেরার পালা। সবাই গাইছে — “হোলি মেঁ ঝুম গয়ে শ্যাম, আরে হোলি মেঁ!”

    ফেরার পথে সবাই জোরাজুরি করলে রূপেশ একটু নেচে দিল। হো-হো ও হাততালি!

    ও বুঝতে পারল যে শরবতে সিদ্ধি মেশানো ছিল।

    অনেকদিন পরে আবার পুকুরে স্নান। এই গাঁয়ে সাতটা পুকুর।  তার মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড়, মাঝখানে প্রায় দু’বাঁশ গভীর। গ্রীষ্মকালেও এর জল শুকোয় না। সবাই বলে পুকুর পাড়ে বটগাছের তলায় যে বাড়রাণীর মন্দির, তার মহিমায় এই জল অতল অথৈ ।

    জামাকাপড় পারে রেখে ডোরাকাটা আন্ডারওয়ার পরে জলে নামার সময় ওর হাত টেনে ধরে ডাক্তার কাশ্যপের ‘ভুরা’ কম্পাউন্ডার।  বলে সাঁতার না জেনে বেশি এগোনো ঠিক নয়। বুক জলে নেমে সাবান মেখে ডুব দিলেই হবে। গরুমোষ ধোয়ানো? হ্যাঁ, তা হয় বইকি। তবে এ পাশে নয়, ঠিক উলটো পাড়ে। ভাঙাঘাটের দিকে। এদিকে নব্বই ডিগ্রি কোণ করে দুটো ঘাট বাঁধিয়ে দেওয়া হয়েছে শুধু স্নান করার জন্যে, ছেলেদের ও মেয়েদের। ডুব দিয়ে উঠে গা মুছতে শুরু করেছে কি কানে এল অশ্রাব্য গালাগাল। গরু ধোয়ানোর ঘাট থেকে ঘাসীরাম চেঁচাচ্ছে ভুরা কম্পাউন্ডারের উদ্দেশে। সম্পর্ক জুড়ছে এর বোন ও বৌয়ের সঙ্গে। রূপেশ ভয় পায়, এবার কি একটা হাতাহাতি শুরু হবে? এ ভাবেই একটা সুন্দর দিন নষ্ট হবে?

    কিন্তু ভুরা যে হেসেই খুন। তারপর ও কিছু পালটা দিল, তবে ঘাসীর সঙ্গে খিস্তি করায় পেরে ওঠা দুষ্কর।

    রূপেশের বিব্রত ভাব দেখে ভুরা আশ্বস্ত করে।
    ঘাবড়াবেন না, ও আমার বন্ধু।
    বন্ধু? তা বলে ওইসব সম্বোধন? ওই ইতর ভাষা?
    আরে এটা হোলি যে! আজ সাতখুন মাপ। হোলির দিন এই দিয়েই শেষ হয়। আপনি ওই দোঁহাটি শোনেন নি?
    “হোলি মেঁ হম ঝুম গয়ে সব, মুঁহ মেঁ ভাঙ কী গোলি হ্যাঁয়।
    অগর কিসীকা পোল খোলে তো  বুরা না মানো হোলি হ্যাঁয়।”
    “হোলিতে সব নেশায় মাতাল, মুখে ভাঙের গুলি,
    ফাটলে হাঁড়ি রাগ কোর না, আজ আমাদের হোলি”।

    ভিজে পোষাকে ঘরে ফেরে রূপেশ। মাথাটা ভার ভার, সিদ্ধির প্রভাব টের পাচ্ছে। তালা খুলে ঘরে ঢুকে কাপড় মেলে খাবারের ঢাকনা খুলে গোগ্রাসে খেতে থাকে।  ঠুল্লু একটা বাটিতে করে খানিকটা ক্ষীর (পায়েস) দিয়ে গেছে।

    এবার ঘুমনোর পালা। ঘুম, ঘুম।  শ্রান্ত শরীরের ক্লান্তিহরা ঘুম।  আজ রূপেশ কোন স্বপ্ন দেখে না। কতক্ষণ কেটেছে জানে না। কলিংবেল বাজাচ্ছে কেউ। অনেকক্ষণ ধরে। ভারি চোখের পাতা এঁটে বসেছে। এই অসময়ে কে এল? বিছানায় উঠে একটু বসে নেয়, তারপর দরজা খোলে। খুলে পাথর হয়ে যায়।

    কারুকাজ করা রুমালে ঢাকা একটা থালা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল দ্রুপতী বাঈ; এবার ওর অবস্থা দেখে প্রায় ঠেলা মেরে ভেতরে ঢুকে দরজা ভেজিয়ে দিল। টেবিলের উপর থালা নামিয়ে বলে ঢাকনা খুলে দেখায় — এক বাটি মাংস আর পায়েস, ওরা বলে ‘ক্ষীর’।
    চোখে ঝিলিক দিয়ে বলে – আমি নিজে রেঁধেছি, আপনার খারাপ লাগবে না।
    তারপর আঁচলের খুঁট থেকে একটু আবির নিয়ে নীচু হয়ে রূপেশের পায়ে দিতে গেলে ও বাধা দেয়। কিন্তু ও দ্রুত হাতে পায়ে হাত দিয়ে মাথা তোলার সময় রূপেশের থুতনিতে টক্কর লাগে।  অপ্রস্তুত দ্রুপতী থুতনিতে হাত বুলিয়ে শুধোয় — সাহেবের লেগেছে কি না?
    তারপর হাসিমুখে রূপেশের দিকে নিজের আঁচলের ফাগ এক চিমটি দিয়ে অপেক্ষা করে আশীর্বাদী রঙ লাগানোর। 

    রূপেশ কেঁপে ওঠে, সারা শরীরের তার ঝন ঝন করে। এমন অনুভূতির সঙ্গে ওর পরিচয় ছিল না।  দু’আঙুলে রঙ নিয়ে কোথায় লাগাবে ভেবে পায় না। চোখে পড়ে মেয়েটির এগিয়ে আসা মুখ, কপালে কাটা দাগ। কোনরকমে তড়িঘড়ি করে সেই কাটা দাগের উপর লেপে দেয় লাল আবির। চমকে উঠে পিছিয়ে যেতে গিয়ে দ্রুপতীর পা হড়কায়; আর কিছু না ভেবেই রূপেশের ক্রিকেট খেলা হাত ওকে স্লিপ ফিল্ডারের মত ধরে সামলে নেয়। কিন্তু রূপেশ যে ওকে ছেড়ে দিতে পারছে না, ধরেই আছে।  ওর মাথায় ছবি আসে, বিহারী টকিজে দেখা রাজ কাপুরের ‘আর কে ফিল্মস’ এর লোগো।

    হাত ছাড়িয়ে মুক্ত হয় দ্রুপতী। ওর চোখে বিস্ময়।

    তারপর শাড়ি ঠিক করতে করতে অন্য দিকে তাকিয়ে বলে – এ গাঁয়ে আপনাকে সবাই দেবতা বলে, আমিও। আপনি চাইলে না করতে পারব না। আপ বহুত বড়ে হ্যাঁয়, সেই পিকনিকের সময় দেখে নিয়েছি। অব আপ যো কহতে হ্যাঁয় —

    রূপেশের শরীর ঝিমঝিম করে।

    অবশ শরীরে ও মাথা নেড়ে পাশের চেয়ারে বসে পড়ে।  দ্রুপতী চলে যাওয়ার সময় দরজাটা ভেজিয়ে দিয়ে যায়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:e18b:b692:2c38:74e1 | ২৩ মার্চ ২০২৪ ০৭:০০742585
  • গল্পের শেষটা কি সত্যি হয়েছিল নাকি?
  • Ranjan Roy | ২৪ মার্চ ২০২৪ ১১:০৪742594
  • ৫০% হয়েছিল।
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:210e:3ba1:63f3:c1a | ২৫ মার্চ ২০২৪ ০৫:৩৭742605
  • 50% মানে রূপেশের দিক থেকে হয়েছিল? angel
  • Ranjan Roy | ২৭ মার্চ ২০২৪ ১৯:৪৭742656
  • হুঁ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন