এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • আমার অ্যামেরিকা আবিষ্কার ও অন্যান্য

    ন্যাড়া লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ১২ মার্চ ২০২০ | ২০৮৮ বার পঠিত
  • আমার প্রথম সাহেব-বন্ধু ছিল ড্যানি। আমি মাস্টার্স করতে এসেছি। যারা মাস্টার্স বা পিএইচডি করে, এখানে তাদের নাম গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট। মুড়ি-মিছরি এক দর। দেশে আমরা বলতাম 'দাদু'। তাচ্ছিল্যের ডাক। এখানে উল্টো। 'গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট' নামের মধ্যে হালকা একটা সম্ভ্রমের ভাব মেশানো আছে।

    গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্টদের খুব অল্পই এখানে নিজের পয়সায় পড়াশুনো করে। বিশেষতঃ প্রযুক্তিতে। ডিপার্টমেন্ট থেকে তাদের সহকারী শিক্ষক (টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট) বা সহকারী গবেষকের (রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্টের) কাজ জুটিয়ে দিয়ে পয়সাকড়ির বন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে টিউশন মকুব। সেই পয়সায় একার খাইখরচ দিব্যি চলে যায়। বিদেশীরা অনেকে তো সস্ত্রীক ওই পয়সায় চালিয়ে নেয়। এই কাজের সঙ্গে সঙ্গে ডিপার্টমেন্ট থেকে একটা অফিসের বন্দোবস্ত করে। অনেক সময়েই শেয়ারে।

    আমার ডিপার্টমেন্টে গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্টদের আলাদা অফিস ছিল না। একটা লম্বা ঘরে প্রত্যেকের আলাদা ডেস্ক-ক্যাবিনেট-মনিটর ইত্যাদির ব্যবস্থা করা ছিল। নাম ছিল গ্র্যাজুয়েট লাউঞ্জ। সেই ঘরেই ছিল ড্যানির ডেস্ক। আমার মতন গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট সে। আমি উত্তর কলকাতার ঘটি বাড়ির ছেলে। এক গেলাস জল গড়িয়ে খেতে হলে শংকরাকে ডাকতে হয়। বিদেশে এসে স্বাবলম্বী হবার চেষ্টায় চোখে সর্ষেফুল দেখছি। গ্র্যাজুয়েট লাউঞ্জের অধিকাংশ বাসিন্দাই বিদেশী। সবাইই নতুন মার্কিনি জীবনে ধাতস্ত হবার চেষ্টা করছে। আর অবাক চোখে অ্যামেরিকান গ্র্যাজুয়েট ছাত্রদের কার্যকলাপ দেখে স্বাবলম্বী হবার চেষ্টা করছে। আমার মতন ভারতীয়রা তো বটেই।

    ড্যানি সকালে গাড়ি চালিয়ে আসে। একটা লাল লঝঝড়ে শেভি। ক্লাস নেয়। তারপরে কোথায় যেন চলে যায়। পরে জেনেছিলাম ইউনিভার্সিটিরই কোন একটা অফিসে পার্ট-টাইম কাজ করে। ফিরে আসে দুপুরবেলা। হোমওয়ার্ক করে সন্ধ্যের মুখে ডাইনিং হলে খেয়ে ক্লাস করতে যায়। আমাদের গ্র্যাজুয়েট ক্লাস অধিকাংশই বসত সন্ধ্যেবেলা, যাতে চাকুরেরাও ক্লাসে আসতে পারে। ক্লাস শেষ হলে, ড্যানি রাত্তিরে কখনও ল্যাবে গিয়ে কাজ করত, কখনও বাড়ি ফিরে যেত। আশ্চর্য হয়ে যেতাম ড্যানির অধ্যবসায় দেখে। ব্লু-কলার পরিবারের ছেলে। বাবা কারখানায় কাজ করেন। ছেলের কলেজের পয়সা ছেলেকেই জুটিয়ে নিয়ে নিতে হয়েছিল। ধার করে, কাজ করে। ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি করার পরে উচ্চশিক্ষার শখে গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট হয়েছিল। উইকেন্ডে বাড়িতে বিয়ার ব্রু করা ছিল ড্যানিয়েলের শখ। আমাদের এনে খাওয়াত। কড়া ঘরে-তৈরি বিয়ার। পরিশ্রমী, অধ্যবসয়ী, বিনয়ী ড্যানিকে দিয়ে আমি অ্যামেরিকা বুঝতে চেষ্টা করি।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ন্যাড়া | ১২ মার্চ ২০২০ ১০:১৩729931
  • এর বেশ কিছু পরে, তিরিশ-বত্তিরিশ বছর বয়েসে আমার বাই চেপেছিল নাটক শেখার। বয়েসের লজ্জা কেটে গেছে, কারণ ততদিনে স্থানীয় কলেজে গান-বাজনা শেখার কিছু কোর্স করে ফেলেছি। দেখেছি হাইস্কুল-পাশ কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে আমাদের বয়েসী বেশ কিছু পুরুষ-মহিলা নির্দ্বিধায় ক্লাস করতে আসেন, হোমওয়ার্ক করেন, পরীক্ষা দেন। কখনও পাস, কখনও ফেল। তবে বসে-বসে পিয়ানো বা গিটার বাজানোর ক্লাস করা এক জিনিস আর লাফিয়ে-ঝাঁপিয়ে নাটকের অভিনয়ের ক্লাস করা আরেক জিনিস। তাও লজ্জার মাথা খেয়ে স্থানীয় কলেজে নাম লিখিয়ে ফেললাম। হপ্তায় একটা তিনঘন্টার ক্লাস, সেপ্টেম্বর থেকে।

    প্রথমদিন থেকেই ক্লাস হত পাঁচশো লোকের অডেটোরিয়ামে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে কুড়ি-পঁচিশজন ছাত্র-ছাত্রী। প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে, সিটের দূরত্ব পেরিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় হতেই দু-চার সপ্তাহ লেগে গেল। হপ্তা তিনেক পরে প্রথম পরীক্ষা ছিল মনোলগের। স্টেজে দাঁড়িয়ে মনোলগ অভিনয় করতে হবে। শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা দর্শক। পরীক্ষার দিন এল। সবাই অল্পবিস্তর নার্ভাস। অনেকে ভাল করল। বিশেষতঃ এক ভদ্রলোক বেশ ভাল করলেন। অ্যামেদেউস নাটকে সেলিয়ারির একটা অংশ। আমি করেছিলাম একটা ভারতীয় থিমের মনোলগ। পরীক্ষার শেষে সেই ভদ্রলোক, নাম ডেভ, এসে বললেন, "খুব ভাল হয়েছে।" আমিও তাকে অভিনন্দন জানালাম। ডেভের বয়েস হবে অন্ততঃ পঁয়তাল্লিশ থেকে পঞ্চাশের মধ্যে। চুলে সোনালি পাক। এ-কথা সে-কথায় জানলাম ডেভ পেশায় লেখক। ফ্রিল্যান্সার। আগে নাটক-টাটক করেছে। সেই সুবাদে অর্থের বিনিময়ে গেল দু'বছর হল স্থানীয় কাগজে নিয়মিত নাটকের সমালোচনা লিখছে।

    সমালোচনা লিখতে গিয়ে দেখছে যে নাটক মঞ্চস্থ করার তাত্বিক খুঁটিনাটি না জানা থাকায় সমালোচনার মান সে যেরকম চায়, সেরকম হচ্ছে না। তাই সে নাটকের ক্লাসে ভর্তি হয়েছে। আমি অবাক হয়ে দেখি। আমি যেখান থেকে এসেছি সেখানে শিল্প সমালোচনার মান সম্বন্ধে কী আর বলব, কিন্তু কজন সমালোচক নিজের সময় ও গ্যাঁটের কড়ি খরচা করে শিল্পনির্মানকে ভাল করে বোঝার চেষ্টা করেন, যাতে ভাল সমালোচক হতে পারেন সে কথা ভাবলে চিত্ত বিকল হয়ে পড়ে! আর চাইলেও বা শিখবেন কোথায়? সবেধন রবীন্দ্রভারতী? আমার মাথা নিচু হয়ে আসে। পঞ্চাশ বছরের ফ্রিল্যান্স রাইটার ডেভকে দিয়ে আমি অ্যামেরিকাকে বুঝতে চেষ্টা করি।
  • একলহমা | ১২ মার্চ ২০২০ ১০:২২729932
  • পড়ছি। চমৎকার লাগছে।
  • জয় | 162.158.34.105 | ১২ মার্চ ২০২০ ২২:৫৪729963
  • দারুন। চালিয়ে খেলুন, ন্যাড়াবাউ।
  • সুকি | 172.68.167.87 | ১৪ মার্চ ২০২০ ০৯:১০730000
  • ন্যাড়াদা,
    এই লেখাগুলো নিয়মিত আসে না কেন? এগুলো তো লিখে রাখা দরকার সামাজিক দায়িত্ব হিসাবেও। আজকাল গ্রাড স্টুডেন্ট লাইফ অনেক পালটে যাচ্ছে।
  • ন্যাড়া | ১৮ মার্চ ২০২০ ১২:০১730114
  • মাঝে মাঝেই অ্যামেরিকা তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে বন্দুকবাজীতে। গান ভায়োলেন্স। অপ্রস্তুত, অসহায় লোকেদের ওপর, শিশু-কিশোর ছাত্রছাত্রীদের ওপর ঢ্যার‍্যার‍্যার‍্যা করে গুলিবর্ষণ। স্কুলে ঢুকে। মিউজিক কন্সার্টে। এ দেশে বন্দুক পাওয়া যায় সহজে। তার ওপর সংবিধান সাধারণ মানুষকে বাকস্বাধীনতার সঙ্গে দিয়েছে বন্দুক রাখার মৌলিক অধিকার। বন্দুকবাজদের জাতীয় সংস্থা ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের (এন আর এ) অনেক পয়সা। আর তারা রাজনৈতিকভাবেও অসম্ভব শক্তিশালী। তাদের অঙ্গুলীহেলনে অনেক রাজনীতিকের ভবিষ্যত নির্ধারিত হয়ে যায়। বন্দুক সম্বন্ধীয় পলিসিই শুধু নয়, তাদের কব্জির জোরে গণ আলোচনার মোড়ও ঘুরিয়ে দিতে পারে। এ এক অসহায় অবস্থা।

    আমার সঙ্গে কাজ করে বিল। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। সাহেব মানুষ। খুব মিশুকে। অফিসে লোকেদের সঙ্গে মজা করায় ওস্তাদ। চমৎকার গিটারও বাজায়। অফিসে একটা গিটার রাখাই থাকে বিলের। মাঝে মাঝে কাজের পরে দু-তিনজন মিলে জ্যামিং করে। মানে যাকে বলে একেবারে মাইডিয়ার লোক। সাংসারিক লোক। দশ বছরের ছেলের গল্প করে। বাড়ির পেছনে বাবার আমলের উড ওয়ার্কশপে ছেলের জন্যে ডেস্ক বানিয়ে দিচ্ছে। সেটাই গেল কয়েক মাস ধরে ওর উইকেন্ড প্রজেক্ট। জিগেস করলাম, "সে কী হে! এত সময় লাগছে কেন?" ফোনে ছবি বের করে দেখাল। বলল, "এ যা জিনিস বানিয়ে দিচ্ছি দু তিন পুরুষ হেসে খেলে চলে যাবে। বাছাই করা কাঠ।" আমি একটু ব্যঙ্গ করেই বললাম, "একেবারে গাছ কেটে বাছাই করে লাগাচ্ছ নাকি?" কারণ জানি বিল নিজের হাতে গাছ কেটে শীতের কাঠের বন্দোবস্ত করে। হেসে বলল, "সব নয়। কিছু কাঠ কিনছিও।"

    এসবই আমার কাছে নতুন। এত বছর এদেশে থাকার পরেও। প্রথমতঃ তো আমার মতন ভারতীয়রা মেশে শুধু দেশোয়ালি ভাইদের সঙ্গে। সেইদিক থেকে আমরা সব রামসুক তেওয়ারি। যাও বা দু চারজন সাদা বা কালো সায়েব বন্ধু হয় - সেও প্রধানতঃ কাজের সূত্রে বা পড়শি হিসেবে। সুতরাং কাজে, চিন্তায়, ভাবনায়, চলনে, বলনে খুব একটা যে ভিন্ন একটা জীবনযাপন - তা নয়। বিল থাকে একটু দূরে। স্যান্টা ক্রুজ পাহাড়ে। পাহাড় বলতেই আমরা ভাবি হিমালয়। স্যান্টা ক্রুজ পাহাড় বরং অযোধ্যা পাহাড়ের সঙ্গে তুলনীয়। অ্যামেরিকার মতন রাস্তাবহুল দেশেও কিছু কিছু জায়গা দুর্গম। শীতকালে বরফ ও ধ্বস নিত্য না হলে নৈমিত্তিক। গেল বছর বিল বলল, বাড়ির সামনের রাস্তা জলস্রোতে এমন ধ্বসে গেছে সাতদিন তাদের পাড়ার সবাইকে পাড়াবন্দী থাকতে হয়। পাড়া বলতে পাহাড়ের ওপর বিরাট বিরাট জমি নিয়ে একেকটা বাড়ি। আর বিরাট জমি মানে সে কয়েক একর। তিন-চারের কমে কেউই কথা বলে না। সেই জমির অনেকটাই জঙ্গল। বিলের প্রতিবেশী নাকি ক্রিসমাস ট্রির চাষ করে। মানে বিশেষ ধরণের পাইন গাছের চাষ। ক্রিসমাসের আগে এসে লোকেরা কিনে নিয়ে যায়।

    বিলের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় হবার পরে আপিসে একদিন বিশ্রম্ভালাপে জানতে পারলাম বিল বন্দুকবাজ। তার বাড়িতে পোষা বন্দুক আছে। শুনে খুব অবাক হয়ে গেছিলাম। নিজের বাড়িতে বন্দুক রাখে এরকম আর কোন বন্ধু আমার নেই। তারা সব আমার মতন শহুরে লিবারাল লোক। কেউ কেউ দক্ষিণপন্থী কন্সার্ভেটিভও আছে যারা নীতিগতভাবে বন্দুক রাখা সমর্থন করলেও নিজেরা রাখে না।

    বিল বলল, "একটা গল্প শোন। আমি তখন স্কুলে পড়ি। ক্লাস ফোর বোধহয়। একদিন স্কুলে গেছি। এমন সময়ে হঠাৎ তুষারঝড় শুরু হয়ে গেল। একেবারে আচমকা। সেরকম ঝড় আমি কোনদিন দেখিনি। সোঁ সোঁ করে হাওয়া। গাছ পড়ে যাচ্ছে। আর বরফ পড়ছে ঝরঝর করে। স্কুল তো ছুটি হয়ে গেল। বাড়িতে বাড়িতে বাপ-মা-র কাছে ফোন চলে গেল যে এসে তোমাদের বাচ্চাদের নিয়ে যাও। এদিকে আমাদের পাড়ার দশ-বারোটা বাড়ির বাবা-মা-রা সব কাজে বেরিয়ে গেছে। খালি ভাগ্যক্রমে আমার মা বাড়িতে ছিল। তখন মা আমাদের বড় ব্যুইকটা নিয়ে দুবার-তিনবার শাটল মেরে পাড়ার সব বাচ্চাকে আমাদের বাড়িতে এনে তুলল। এদিকে ক্রমাগতঃ বরফ পড়ে যাচ্ছে। দেখতে দেখতে দু-আড়াই ফুট বরফ হয়ে গেল। বাবা কোন কারণে আগে বাড়ি চলে আসছিল। বাবাও বাড়ি পৌঁছল আর ধ্বসে রাস্তা-টাস্তা আটকে বাইরের জগতের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ গেল বিচ্ছিন্ন হয়ে। পাড়ায় ইলেক্ট্রিসিটি চলে গেছিল আগেই। বুঝতে পারছ ব্যাপারটা? সারা পাড়ায় আমাদের বাড়িতে মা আর বাবা আর জনা পনেরো বাচ্চা। এদিকে আমাদের তো পোয়াবারো। ইয়ার্ডে আমরা স্নোম্যান বানাচ্ছি, স্নো নিয়ে খেলছি, স্নোয়ের ঢ্যালা বানিয়ে যুদ্ধ করছি। বাড়িতে খাবার-দাবার সঞ্চিত ছিল। কাজেই দিন দুয়েকের জন্যে ভাবনা নেই। আর বাবা আগের উইকেন্ডেই যথেষ্ট কাঠ কেটে রেখেছিল। কাজেই ঠান্ডায় জমে যাবার সম্ভাবনাও নেই। কাজেই ফুর্তি-হি-ফুর্তি।"

    একটু পরে বরফ পড়া একটু কমল। আমরাও বাড়িতে ঢুকে এসেছি। তখনও রোদ আছে। মা হট চকোলেট করে দিয়েছে, সেই খাচ্ছি। হঠাৎ শুনি বাইরে একটা গোলমালের আওয়াজ। বেরিয়ে দেখি একদল লোক নীচের পাড়া থেকে এসে বাবার কেটে রাখা কাঠ সব হরির লুটের মতন নিয়ে নিচ্ছে। সেই দেখে বাবা বাধা দিয়েছে, আর তাই নিয়ে বচসা। জনা পনেরো লোক হবে। তাকিয়ে দেখিয়ে নীচ থেকে, ওপর থেকে আরও লোক আসছে কাঠের লোভে। জনা পঞ্চাশেক তো হবে। বাবার চিৎকার, প্রতিবাদ সব উপেক্ষা করে যত্ন করে সাজিয়ে রাখা কাঠের স্তুপ থেকে নিজেদের ইচ্ছেমতন কাঠ তুলে নিচ্ছে আর হাতে হাতে সেগুলো বয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে। অনেক যুক্তি-তর্ক-কাকুতি-মিনতিতে যখন কিছু হলনা, তখন বাবাকে প্রথম দেখলাম, বাড়ির ভেতর গিয়ে রাইফেল নিয়ে এসে বাইরে দাঁড়াল। রাইফেলটা তুলে শূণ্যে দুটো গুলি ছুঁড়ল। আর, ব্যাস, অমনি এলাকা ফাঁকা। স্রেফ দুটো গুলির আওয়াজ। লোক সব কাঠ-ঠাট ফেলে হাওয়া।"

    এখন বল, সেদিন যদি বাড়িতে বন্দুক না থাকত, পনেরোটা শিশু ঠান্ডায় জমে যেত কিনা!"

    জিগেস করলাম, "তোমার বউ কী বলে এই ব্যাপারে?"
    - বিয়ের প্রথম পাঁচ বছর বাড়িতে বন্দুক ছিলনা। বউ পছন্দ করত না। আমিও জোর করিনি।
    - তারপর?
    - তারপর পাড়ায় দুটো ঘটনা ঘটল। শেরিফের আসতে সময় লাগল পঁয়তাল্লিশ মিনিট।
    - নাইন-ওয়ান-ওয়ান কল করার পরে পঁয়তাল্লিশ মিনিট! বল কী?
    - তারাই বা কী করবে! দুজন মাত্র শেরিফের ডেপুটিকে বিরাট জায়গা কভার করতে হয়। আমরা মোটামুটি নিজেদের ভরসাতেই থাকি। ওই দুটো ঘটনা দেখার পরে বউই বলল, বন্দুক নিয়ে এসে বাড়িতে রাখ। কখন কী হয়ে যায়, বলা যায় না। আমি বাবার বন্দুক দুটো নিয়ে এলাম। তবে সবসময়ে তালাচাবি দিয়ে রাখি।
    - কী কী বন্দুক আছে?
    - একটা কোল্ট .৪৮ পিস্তল। একটা রাইফেল। একটা কার্ব। আর একটা এআর-১৫। কার্ব আর এআর-১৫ সেমি-অটোমেটিক। ও দুটো আমার কেনা।
    - ব্যবহার করো?
    - রেঞ্জে যাই মাঝে মাঝে। স্পোর্ট হিসেবে। এখন অ্যামেরিকায় কী হয়েছে জান? বন্দুকবাজীকে লোকে মাচোইজম করে ফেলেছে। সব ঝুটো। এইসব ডিবেট হবারই কথা নয়। বন্দুক কেনা এখন বিয়ার কেনার চেয়েও সোজা। কিন্তু হওয়া উচিত ড্রাইভার্স লাইসেন্স পাওয়ার থেকেও কঠিন। ট্রেনিং নাও। দেখাও তুমি বন্দুক ঠিকমতন রাখতে পার। মানসিক আধি-ব্যাধি নেই। তবেই বন্দুক পাবে। আসলে এসব আইন-টাইন অনেকই আছে। কিন্তু কে পালন করবে? আমার পরিবারের কেউ কখনও এনআরএ-র সদশ্য ছিলনা। ওদের খুবই অপছন্দ করি। ওদের জন্যেই আমাদের মতন লোকেদের দুর্নাম।

    বিলের মতন লোকেদের চোখে দুঃখের আভাস। ধ্বজাধারী বন্দুকবাজদের জন্যে তাদের মতন লোকেদের বন্দুক না হাতছাড়া হয়ে যায়! বিল বাড়ির দিকে হাঁটা দিল।
  • একলহমা | ১৮ মার্চ ২০২০ ১২:৪২730115
  • যথার্থ ছবি।
    দক্ষিণঘেঁষা মধ্যভাগে থাকি। মানুষজনের মূল্যবোধ দক্ষিণের। দল-রং নির্বিশেষে বেশীরভাগ লোক বন্দুক রাখায় বিশ্বাসী। আর তাদের সাথে কথা বললে আপনার দেওয়া ছবিটাই ফুটে ওঠে - এন আর এ-কে পছন্দ করা না করার অংশটা বাদে। ঐটা নানা কিছুর উপর নির্ভরশীল বলে মনে হোয়।
  • S | 108.162.246.244 | ১৮ মার্চ ২০২০ ১৩:৫৯730116
  • হ্যাঁ আমেরিকাতে অনেকেই শখে বন্দুক রাখে। কেউ কেউ স্পোর্টসের জন্যও রাখে। অনেকে আবার শিকার করতে যায়। আমাকে কয়েকজন বলেছে তাদের সঙ্গে শিকারে যেতে। আবার পরিবারসূত্রে অনেকে ইনহেরিট করে। তবে সম্প্রতি অটোমেটিক ওয়েপনের উপর ঝোঁকটা খুব বাড়ছে। এটার কারণ অনেকে নিজেদেরকে র‌্যাম্বো মনে করে। মিলিটারিতে জয়েন করলে অনেক ট্রেনিং, অনেক ঝামেলা, অনেক স্যাক্রিফাইস। সেসব করতে হল না, কিন্তু নিজেকে বেশ সোলজার সোলজার ভাবলো।
  • S | 108.162.246.244 | ১৮ মার্চ ২০২০ ১৪:০১730117
  • তবে বন্দুক রাখার জন্য এগুলো সব ছুতো। একজন বলেছিল যে তিনি অ্যাটলান্টায় থাকতে ল মোয়িঙ্গের সময়ও গান ক্যারি করতো।
  • বন্দুক | 108.162.221.105 | ১৯ মার্চ ২০২০ ০২:১৬730157
  • উত্তরে দক্ষিনে সাদায় কালোয় বন্দুক রাখার কারণ আস্তে আস্তে পাল্টে যায় বোধায়।
  • সম্বিৎ | ২৭ মার্চ ২০২০ ১২:৫৬730327
  • সবে অ্যামেরিকায় পদার্পণ করেছি। নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি এয়ারপোর্ট থেকে যাব কাকার বাড়ি নিউ জার্সির দক্ষিণে। কাকা-কাকিমা-খুড়তুতো-পিসতুতো বোন সবাই এসেছে। সে এক এলাহি কান্ড। তবে এ আর কী দেখছেন? আমাদের ছেলেবেলায় দেখেছি বিদেশে থেকে কাকা-পিসিরা এলে দমদম এয়ারপোর্টে তাদের আনতে গাড়ির কনভয় যেত। বিদেশ থেকে আসছে হয়ত চারজনের পরিবার, এয়ারপোর্টে আনতে যাচ্ছে ছটা গাড়িতে ষোলজন। এ হামেশাই হত। এয়ারপোর্ট যাওয়া তখন উৎসব-বিশেষ ছিল। প্রায় দুর্গোপুজোর মতন তার গুরুত্ব। সকাল থেকে সাজো-সাজো রব পড়ে যেত। আমরা শিশুরা সব ভাল জামা-জুতো পরে ্তৈরি হয়ে নিতাম। পুজোর সপ্তমী আর এয়ারপোর্ট যাত্রায় কোন তফাত ছিল না।

    কিন্তু জিনগত মিল থাকলেও আমার বৃহত্তর পরিবার অ্যামেরিকার বাঙালি হলে হবে কি, সায়েব তো। ওদের কাছে এসব জলভাত। তাও আমাকে নিতে গাড়ি ভর্তি করে সবাই পিকনিক-মুডে চলে এসেছে দেখে খুব খুশি হলাম। গাড়িতে উঠে ধাতস্থ হয়ে দেখি কী সুন্দর রাস্তা। কী চওড়া, পরিস্কার আর সাঁ সাঁ করে লেন ধরে গাড়ি চলছে। পরে জেনেছিলাম রাস্তার নাম নিউ জার্সি টার্নপাইক। কিন্তু গর্দিশ হল ধাতস্থ হবার পরেই কাকিয়া জিগেস করল সোডা খাবি? সেরেছে, দেশে তো লোকে শুনেছি মালের সঙ্গে সোডা খায়। এখানে কি এমনি এমনি? আমি একবার ক্লাব সোডা এমনি এমনি খেয়ে দেখেছি। টোটাল বিস্বাদ মাল। কাজে আমি দৃঢ়ভাবে আপত্তি করলাম। কোক-টোক হলে নাহয় ভেবে দেখা যেত। ভেবে দেখা যেত কেন, খেতামই। কিন্তু তা বলে সোডা! কিন্তু ও মা, আমি খাব না বললে কি হবে অন্যরা আমি খাব, আমি খাব বলে ব্যাগ থেকে কোকের ক্যান বের করে ফটাস করে খুলে খেতে আরম্ভ করল। জ্ঞান নাম্বার ওয়ান, ম্লেচ্ছ দেখে সফট ড্রিংককে (আমরা যাকে আদর করে কোল্ড ড্রিংক বলি) সোডা বলে।

    গাড়ি চালাতে চালাতে কাকা বলল গ্যাস নিতে হবে। গ্যাসের গল্পটা জানা ছিল। তাই খাবি খাইনি এই ভেবে যে তো চিরটাকাল তো গ্যাস ছেড়েই এলাম ইত্যাদি। আমাদের যা পেট্রল, ম্লেচ্ছদের তাহাই গ্যাস। অতএব করোলারি, আমাদের যা পেট্রল পাম্প (ব্যাঙ্গালোরে শুনেছি পেট্রল বাঙ্ক), ম্লেচ্ছদের তাহা গ্যাস স্টেশন। তো গেলাম সেই স্টেশনে। দাম দেখে চক্ষুস্থির। গ্যাসের দাম এক ডলার ন' সেন্ট। মানে টাকায় হিসেব করলেও বত্রিশ-তেত্রিশ টাকা। দেশে তখন পেট্রলের দাম পনেরো টাকা এক লিটার। কিন্তু এখানে হিসেব তো গ্যালনে। এক অ্যামেরিকান গ্যালন মানে সাড়ে তিন লিটারের কিছু বেশ। তাহলে টাকার হিসেবে অ্যামেরিকায় পেট্রলের দাম হচ্ছে সাড়ে আট টাকা মতন। জ্ঞান নাম্বার দুই, ম্লেচ্ছ দেশে পেট্রল খুব সস্তা।

    একসময়ে ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরিতে কাজ করতাম। আমার সুপারভাইজার এক মধ্যবয়েসী মহিলা। একদিন ডেস্কে বসে কাজ করছি, মহিলা জিগেস করলেন, "ক্যান ইউ পুট দিস বুক ইন দা শেলফ?" আমি বললাম, "হ্যাঁ, এ আর এমন কি আর শক্ত কাজ!' এই বলে আবার যা করছিলাম করতে লাগলাম। মহিলা আবার একই প্রশ্ন করলেন। আমি বললাম, "অফ কোর্স।" মনে মনে ভাবছি যে মহিলার মাথাটা কি অল্প ... মহিলা তখন বললেন, "ক্যান ইউ ডু ইট নাও?" এইবার আবার ভসভসে ঘিলুতে তুরপুন সেঁধোল। কেউ যদি "ক্যান ইউ ..." দিয়ে কিছু জিগেস করে তার মানে সেটা আদেশ, যা তখুনি করে না ফেললে চাকরি নট। আমার ভাগ্য ভাল যে মহিলা ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের বছর বছর হ্যান্ডেল করেন।

    খুব সহজ কিছু কাজকে দেখতাম সায়েবরা "অমুক ওয়ান-ও-ওয়ান" বলে উল্লেখ করত। ওয়ান-ও-ওয়ান তো বুঝলাম ১০১। যেমন - "গাড়ি ব্যাক করা তো ড্রাইভিং ১০১" কিম্বা "অমলেট বানানো কুকিং ১০১"। কী রে বাবা এই ১০১! কী যে যার তাৎপর্য, কিসুই বুঝিনা। শেষে লজ্জার মাথা খেয়ে একজনকে জিগেস করলাম। সে বুঝিয়ে দিল - এখানে ইউনিভার্সিটিতে সব কোর্সের একটা তিন সংখ্যা নম্বর থাকে - যেমন 'ইংলিশ লিটারেচার ২০৬' বা 'প্রব্যাবিলিটি ৪০২'। নম্বর থাকে ওই একই নামের অন্য কোর্সেওর সঙ্গে তফাৎ করার জন্যে। 'প্রব্যাবিলিটি ২০৩'-ও থাকতে পারে। এই তিন সংখ্যার নম্বরের প্রথম সংখ্যাটা বোঝায় কলেজের কোন ইয়ারে কোর্সটা নেওয়ার মতন জ্ঞানবুদ্ধি হবে আর শেষের দুটো ডিজিট বোঝায় কোর্সটা কিরকম বাঁশের।২০৩ মানে কলেজের সেকেন্ড ইয়ারে কোর্সটা নেওয়া ভাল, আর ০৩ মানে সেকেন্ড ইয়ারে নিলে কোর্সটা বেশ সোজা লাগবে। সে দিক দিয়ে ১০১ যে কোন সাবজেক্টের সবথেকে সোজা কোর্স ফার্স্ট ইয়ারে নেওয়া যায় আর এর থেকে সোজা কোর্স আর হয়না।

    এই হল অ্যামেরিকা ১০১।
  • সম্বিৎ | ২৯ মে ২০২০ ১১:০৩731749
  • উবার চালাচ্ছিল ক্যাট্রিনা নামের এক মেমসাহেব। ঘন্টাখানেকের রাইড। আমার যা অভ্যেস খেজুর করতে শুরু করলাম "কদ্দিন উবার চালাচ্ছ" - এই বলে। বলল, "মাস দুয়েক। আমি কিন্ডারগার্টেন থেকে ক্লাস টুয়েল্ভ অব্দি হাইস্কুলে অংক আর সায়েন্সে সাব করি। সামারে কাজ থাকে না, তাই উবার শুরু করেছি।" সাব মানে সাবস্টিটিউট। স্কুলে যখন কোনদিন টিচারের কমতি পড়ে, তখন এই সাবদের ডাক পড়ে। ফুরনের কাজ বলা যায়। কবে কাজ থাকবে, কবে থাকবে না - কেউ বলতে পারে না। ক্যাট্রিনা বলল যে আজকাল অনলাইন হয়ে গিয়ে খুব সুবিধে হয়েছে। "লগিন করে দেখে নিই কবে কোন স্কুলে সাব লাগবে। সেই দেখে পছন্দসই সাব খুঁজে নিই। সবদিন অবশ্য পাইনা। সেদিন সেদিন উবার চালাই।"

    কথা শুনে মনে হল, আমার ভাইঝির বয়েসী হবে। আমাদের পাশের শহর নেয়ার্কে বড় হয়েছে। বলল সাত বছরের এক মেয়ে আছে। ক্লাস টু-তে পড়ে। প্রাইভেট স্কুলে। জিগেস করলাম শিক্ষক হিসেবে এই প্রাইভেট স্কুল না পাবলিক স্কুল - কোনটা তোমার পছন্দের?

    - দেখ, প্রাইভেট স্কুলে ক্লাসগুলো ছোট। বাচ্চারা বেশি ব্যক্তিগত মনোযোগ পায় - সেটা আমার পছন্দের। কিন্তু পাবলিক স্কুলে এক্সট্রা কারিকুলার বেশি থাকে। আজকাল তো এক্সট্রা-কারিকুলারের যুগ। তার ওপর পাবলিক স্কুলে পড়লে টিউশনের যে টাকাটা বাঁচাব, সেটা দিয়ে আরও দুটো ক্লাস করাতে পারব।

    আমার প্রশ্ন আন্দাজ করেই যেন ক্যাট্রিনা বলল, "আসলে আমি আমার মেয়ের সৎ মা। ওর অন্য মা মেয়েকে প্রাইভেট স্কুলে পড়াতে চায়।"

    তারপরে কথা হল ভ্রমণ নিয়ে। ক্যাট্রিনা জাপান গেছিল পাঁচ বছর আগে। সেখানে মাউন্ট ফুজি সামিট করতে গিয়ে কীরকম অলটিচিউড সিকনেসে পড়েছিল, সে কথা বলল। আর বলল পুরো হাইকটা হয়েছিল রাতে। রাত নটায় রওনা দিয়েছিল। জুলাই মাসেও নাকি অসম্ভব ঠান্ডা।

    তারপরে বলল, দু বছর আগে অ্যালাস্কা গেছিল ক্রুজে। মানে জাহাজে চেপে। গ্লেসিয়ার কীরকম গলে যাচ্ছে গ্লোবাল ওয়ার্মিঙে, সে কথা বলল। আর কথাপ্রসঙ্গে বলল, "ওটা আমাদের হানিমুন ছিল। কিন্তু আমার মেয়েটা ছোট, তাই ওকেও সঙ্গে নিয়ে গেছিলাম।"

    আর সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে পড়ল আমার এতদিনকার লালিত মেমসাহেবের স্টিরিওটাইপ। আমি ক্যাট্রিনাকে দিয়ে অ্যামেরিকা বোঝার চেষ্টা করি।

  • শঙ্খ | 103.242.189.55 | ২৯ মে ২০২০ ১৬:৪০731755
  • ইরশাদ, ইরশাদ। দারুণ হচ্ছে, আমিও আমার প্রবাসী দিনগুলি রিলেট করতে পারছি। প্লাস জার্সিতে থাকতুম বলে আরো চেনা চেনা গন্ধ।
  • | ২৯ মে ২০২০ ১৭:৪৩731756
  • হ্যাঁ এটা দারুণস্য দারুণ হচ্ছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন