এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • লা-জওয়াব দিল্লি ঃ এক্সট্রা কোচ ১

    শমীক মুখোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ | ৭২৮ বার পঠিত

  • ইশকুল-টিশকুলের হাল হকিকৎ কেমন? আঁখো-দেখি-হাল নিয়ে লিখলেন শমীক মুখোপাধ্যায়।
    এ বিষয়ে আমরা আরও লেখা প্রকাশ করতে চাই। আপনি নিজেও লিখে ফেলুন না, আপনার অভিজ্ঞতা?

    ----------------------------------------------------------------

    মন দিয়ে ল্যাখাপড়া করে যেই জন ...

    দিল্লিতে, আর কিছু থাকুক বা না-থাকুক, দুটি জিনিসের এখানে চাষ হয়। এক, স্কুল, আর দুই, হাসপাতাল। অ্যাকেবারে রিসেশনপ্রুফ ইন্ডাস্ট্রি। বাজার যাক ভোগে, মাসমাইনে ভুগুক চর্মরোগে, কিন্তু বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাতেই হবে, আর রোগ ব্যাধি হলে হাসপাতালে যেতেই হবে।

    হাসপাতাল থাক, অসুস্থ লোকজনের যাঁরা সেবা করেন-টরেন, তাঁরা মাথায় থাকুন, আজ শোনাই দিল্লি আর এনসিআরের স্কুলের গপ্পো।

    স্কুলের নিয়মকানুনের ব্যাপারে দিল্লি আর এনসিআর কিন্তু আলাদা। আবার প্রতিটা এনসিআর সিটি অন্য এনসিআর সিটির থেকে আলাদা। এমনিতে দিল্লি আর তদ্‌সন্নিহিত এলাকা জুড়ে নামী এবং দামি স্কুলের অভাব নেই। সরকারি যে-সব স্কুল আমজনতার জন্যে, তাদের নাম সর্বোদয় বিদ্যালয়, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়, নামমাত্র ফিজ, ফলে সফেদ কলারওলা গ্যাঁড়ার গোত্রের লোকজন তাদের বাচ্চাদের এখানে পড়তে পাঠায় না। অবশ্য কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের সম্বন্ধে এ কথা ইউন্যানিমাসলি বলা যায় না। মধ্য ও দক্ষিণ দিল্লির কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়গুলো পঠনপাঠনের দিক থেকে বেশ উন্নত ও নামকরা। কেসচা, রাসচা, আর মিলিটারির লোকেদের ছেলেমেয়েদেরই এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হবার অগ্রাধিকার থাকে।

    তা, এদের বাদ দিলে দিল্লি-ভর্তি বাকি যে-সব স্কুল পড়ে থাকে, তারা সকলেই প্রাইভেট স্কুল, যাদের সচরাচর নাম হয় পাবলিক স্কুল।

    পাবলিক স্কুলের বাজারে সফলতম ব্যবসায়ী দিল্লি পাব্লিক স্কুল। দিল্লির চৌহদ্দি ছাড়িয়ে সারা ভারত তো বটেই, এখন সারা পৃথিবীতে মোট একশো তিরিশটি স্কুল চালায় এরা। নেপাল, বাংলাদেশ, ইউগান্ডা, সিঙ্গাপুর, জেড্ডা, কুয়েত, ... কোথায় নেই! ডিপিএস নামে এদের ডেকে শিহরিত হওয়া যায়।

    ডিপিএস ছাড়াও আরও অনেক স্কুলের চেইন আছে ভারত জুড়ে, যেমন রেয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ভারতীয় বিদ্যা ভবন, ইত্যাদি। এরা মুখ্যত সিবিএসই বা আইসিএসই বোর্ডের সাথে যুক্ত থাকে।

    তো, সে যাই থাক, ম্যাঙ্গো পাব্লিক, অর্থাৎ কিনা আমজনতা ল্যা-ল্যা করে দৌড়য় এইসব স্কুলগুলোর পেছনেই, তাদের ছানাপোনাদের ভর্তি করার জন্য, কারণ, একবার ঢুকিয়ে দিতে পারলেই ব্যাস, পরবর্তী চোদ্দ বছরের জন্য নিশ্চিন্ত। অর্থাৎ কিনা, ঢোকাতে হয় সেই নার্সারিতেই। পরের দিকে কোনও ক্লাসে ঢোকানোর কোনও প্রভিশন দিল্লির কোনও পাবলিক স্কুলে, প্রায় নেই বল্লেই চলে।

    নামভেদে ও স্থানভেদে স্কুলের ফিজও চড়ে বা নামে। বাকিটা বাচ্চার বাবা ময়ের ট্যাঁকের জোরের ওপর নির্ভর করে।

    বহুকাল পর্যন্ত স্কুলে ভর্তির কোনও নির্দিষ্ট নিয়মকানুন ছিল না। কেউ নার্সারিতে বাচ্চা নেয়, তো কেউ প্রি-নার্সারিতে। কারুর নার্সারির পরে কেবল প্রেপ, আর তার পরেই ক্লাস ওয়ান থাকে, তো কারুর নার্সারির পরে প্রেপ ওয়ান, তারপরে প্রেপ টু, তারপরে ক্লাস ওয়ান থাকে। মানে স্কুলভেদে আপনার বাচ্চা পাঁচ বছর বয়েসেও ওয়ানে উঠতে পারে, আবার ছ বছর বয়েসেও পারে। স্কুলে ভর্তির নির্দিষ্ট কোনও ডেট দিনক্ষণ থাকত না। অনেক সময়ে এমন হত, দুটি স্কুলে 'ইন্টার‌্যাকশন' একই দিনে পড়েছে, একই সময়ে, এবং দুটি স্কুল দিল্লির দুই দিকে, একটি খতম করে অন্যটিতে যাবার কোনও উপায়ই নেই। অথচ পয়সা দুটোতেই দিয়ে রাখা হয়েছে 'প্রসপেক্টাস' তোলার জন্য। যত ঘ্যামা স্কুল, তার প্রসপেক্টাসের তত দাম।

    এই এতসব অ্যাম্বিগুইটি থেকে দিল্লিবাসীকে মুক্তি দেবার জন্য হাইকোর্ট কিছু নিয়মনীতি তৈরি করলেন সিবিএসই-র চীফ মিস্টার গাঙ্গুলির সুপারিশমত। এই দু হাজার সাতের কথা। তাতে করে কিছুটা কাজ হল বটে, কিন্তু তা হল কেবলমাত্র দিল্লির চৌহদ্দির সীমানার মধ্যেই। সীমানার বাইরে এনসিআরের লাখ লাখ বাসিন্দা যারা, তারা রয়ে গেল যে তিমিরকার, সেই তিমিরেই।

    কী সেই নিয়মনীতি, যা দিল্লিকে আলাদা করে দিল? নিয়ম হল, ক্লাস ওয়ানের আগে দুটিমাত্র ক্লাস থাকবে, একটি নার্সারি, অন্যটি প্রেপ বা কেজি। নার্সারিতে ভর্তির জন্য সেই বছরের একত্রিশে মার্চে বাচ্চার বয়েস অবশ্যই ৩+ বছর হতে হবে, প্রেপের জন্য ৪+। অর্থা, ক্লাস ওয়ান পাঁচ বছর বয়েসে।

    অ্যাডমিশনের নোটিস বের করতেই হবে আগের বছর পয়লা ডিসেম্বরে, পনেরোই ডিসেম্বরের পরে আর ফর্ম দেওয়া চলবে না, পঁচিশ টাকার বেশি দাম নেওয়া যাবে না ফর্মের জন্য, সমস্ত স্কুলের জন্য একই ফর্মের ফর্ম্যাট থাকবে। বাচ্চার বাবা-মায়ের কোনও ইন্টারভিউ নয়, বাচ্চার কোনও ইন্টারভিউ নয়। গ্রেড সিস্টেমে বাচ্চার অ্যাডমিশন সিকিওর্ড করা হবে।

    সবাই ভাবল আহা, দিল্লিতে বুঝি সত্যিই রামরাজ্য নেমে এল। তড়িঘড়ি খোঁজখবর নিতে গিয়ে দেখা গেল নয়ডা গাজিয়াবাদ এ নিয়মের বাইরে, তাই সেখানে এখনও চার বছর বয়েসেই নার্সারীতে ভর্তি করানো চলছে, মানে ছ বছর বয়েসে সেখানকার বাচ্চা ক্লাস ওয়ানে উঠবে। আর নয়ডা গাজিয়াবাদে এই ফর্ম বিলি ইন্টারভিউ এ সমস্ত হয় সেপ্টেম্বর অক্টোবরে, যে সময় গ্যাঁড়াগেঁড়ির জন্য পেরিয়ে গিয়েছে। অতএব , বসে থাকা ডিসেম্বরে দিল্লির ওপেনিংয়ের জন্য।

    গ্যাঁড়ার মেয়ে ভূতোর তখন তিন পূর্ণ হব হব করছে, মার্চে তিন কমপ্লিট হবে। বয়েসের হিসেবে নয়ডা গাজিয়াবাদে তার প্লেস্কুলে খেলার কথা, দিল্লিতে তার নার্সারিতে ভর্তি হবার কথা। তাই সেপ্টেম্বর চলে গেছে বলে হা-হুতাশ করার কিছু ছিলও না তখন।

    ডিসেম্বর এল। ফর্ম তোলা শুরু হল। দেখা গেল, কোথায় নিয়ম, কীসের কী! হাইকোর্টের হুকুমের তোয়াক্কা না করেই যে যার মত ইন্টারভিউ নিয়ে যাচ্ছে বাচ্চার, বাচ্চার বাবার। সেই সময়ের কিছু এক্ষপিরিয়েন্স গ্যাঁড়ার জবানিতে শুনুন।

    গ্যাঁড়া তো এদিকে প্রান্তবাসী। দিল্লি বর্ডার থেকে এক কিলোমিটার মাত্র দূরে তার ঘর, কিন্তু তা হলেও সে গাজিয়াবাদ তো! উত্তর প্রদেশ। নিকটস্থ দিল্লির অনেক স্কুল আছে, যারা স্কুলবাস বর্ডার পার করিয়ে ইউপিতে ঢোকায় না। আবার অনেক স্কুল আছে, যারা ঢোকায়। গ্যাঁড়া দু রকম জায়গা থেকেই ফর্ম তুলল, এই আশায় যে, স্কুলবাস না হলেও অনেক প্রাইভেট ক্যাব চলে বাচ্চাদের স্কুলে আনা-নেওয়া করার জন্য, সেই রকম কিছু একটা ব্যবস্থা নিশ্চয়ই হয়ে যাবে, যদি ভূতো চান্স পায়।

    রেয়ান পাব্লিক স্কুল ময়ূর বিহার পঁচিশ টাকা নিয়ে ফর্ম দিল, ওদের ওখানে কোনও ইন্টার‌্যাকশন হবে না, ঐ পয়েন্ট কাউন্ট করে নির্বাচন হবে। তা সেখানে তো গ্যাঁড়াদের কোনও চান্সই নেই, প্রথম পয়েন্টেই কেটে যাবে, গ্যাঁড়া দিল্লিবাসী নয়।

    সালোয়ান পাব্লিক স্কুল ময়ূর বিহার, বেশ নামকরা। টের পাওয়া গেল যখন ফর্মের জন্য নিল তিনশো টাকা। নাকি সাড়ে তিনশো? মনে নেই। এদের বাস যাবে না গাজিয়াবাদ।

    ইন্দ্রপ্রস্থ এক্সটেনশন, শর্টে আইপি এক্সটেনশন, গাজিয়াবাদ ঘেঁষা দিল্লির অংশ। সেখানকার ন্যাশনাল ভিক্টর পাব্লিক স্কুল আর এভিবি পাব্লিক স্কুল, মানে আদর্শ বিদ্যাভবন পাব্লিক স্কুল পঁচিশ টাকা করেই ফর্ম দিল। এক শুভদিনে, জানুয়ারিতে দুই স্কুল থেকেই কল এল, 'ইন্টার‌্যাকশনের' জন্য। গ্যাঁড়া-গেঁড়ি ন্যাশনাল ভিক্টরকে বাদ দিয়ে গেল এভিবি-তে।

    প্রথমে ভূতোকে আলাদা করে নিয়ে যাওয়া হল একটা খেলনা টেলনা দিয়ে সাজানো ঘরে। ভূতো নঞ্চমাস বয়েস থেকে ক্রেশে থেকে অভ্যস্ত, ও সব পার্টিং পেন টেন তার হয় না, দিব্যি চলে গেল সেখানে। দুজন উগ্র লিপস্টিক পরা দিদিমণি কেঠো হেসে হেসে গ্যাঁড়া গেঁড়ির ইন্টারভিউ নিলেন। আপনারা দুজনেই ওয়র্কিং, কীভাবে বাচ্চার দেখাশোনা করেন, স্কুল থেকে ফিরে যাবার পরে তাকে কে দেখবে, আপনারা কতটা কোয়ালিটি টাইম দেন, বাচ্চাকে কম্পিউটারের সামনে বসান কিনা (ভূতোর তখনো তিন পূর্ণ হতে দেড় মাস বাকি), কীসে কাজ করেন, আপনারা স্কুলকে কী কী ভাবে সাহায্য করতে পারেন, ইত্যাদি প্রভৃতি।

    খানিক বাদে আরেকজন দিদিমণি এসে গ্যাঁড়াকে বললেন, আপনার মেয়েকে দেখে আসবেন চলুন। গ্যাঁড়াগেঁড়ি গিয়ে দেখে মেয়ে সেই খেলাঘরে জমিয়ে বসেছে, বাকি অনেক বাচ্চাই মা-কে ছেড়ে আসার জন্য কাঁদছে, ভূতো তাদের ভোলাচ্ছে, 'অচ্ছে বাচ্চে নহী রোতে', তাদের রাইম শোনাচ্ছে, আর একজন দিদিমনি কিছু বেসিক শেপ দিয়েছিল, ভূতো ঠিকঠাক ট্র্যাঙ্গল রেক্ট্যাঙ্গল সার্কল বলে দিয়েছে। ওর চান্স ঠেকায় কে?

    ঠিক তাই। দীর্ঘ আড়াই ঘন্টা রিসেপশনে বসে থাকার পরে গ্যাঁড়াদের ডাকা হল। কালকের মধ্যেই পঁচিশ হাজার টাকা দিয়ে আপনার বাচ্চার সীট সিকিওর্ড করুন।

    গ্যাঁড়া হতচকিত। এর আগে দু এক জায়গায় এই রকমের অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে গ্যাঁড়ার, তাই সহজে টোপ গিলল না, এখনও তো অনেক স্কুল বাকি আছে, দেখাই যাক না। এই স্কুলটা তেমন কিছু নামকরা নয়। বরং ঐ যে ময়ূর বিহার ফেজ ওয়ানের এএসএন জুনিয়র স্কুল, অ্যাহ্‌লকন পাব্লিক স্কুল, ফেজ থ্রিতে রেয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ঐসব জায়গায় চান্স পেলে দেখা যাবে। পরের সপ্তাহেই তো ওখানে যাবার আছে।

    হাতে পেয়েও, তাই, এভিবি ছেড়ে দিল গ্যাঁড়ারা।

    রেয়ান ময়ূর বিহারের নাম খুব শুনেছিল গ্যাঁড়া, নাকি খুব ভালো স্কুল, তো গ্যাঁড়া যখন ফর্ম নিতে পৌঁছেছিল তখন স্কুল ছুটির সময়। দুপুর দুটো মত বাজে। ঢোকার মুখে একটা চওড়া গেট আষ্টেপৃষ্ঠে বন্ধ করা, তার পাশেই একজন-গলবার-মত ফাঁকওলা একটা পাতলা গেট। প্রচুর ছেলেমেয়ের দল সেইখানে ভিড় করেছে বেরোবে বলে, চারপাশে সিকিওরিটি বা গেটম্যানের দেখাও নেই, কেবল একটা সিড়িঙ্গেমত লোক, দেখলেই বোঝা যায় এ আর যাই হোক সিকিওরিটি বা গেটম্যান নয়, জড়ানো গলায় চেঁচিয়ে যাচ্ছে, হোয়েন আই সে, ইউ উইল গো, নাউ ইউ প্লে, হোয়েন আই সে, ইউ উইল গো ... ইত্যাদি। দেখলেই বোঝা যাচ্ছিল দিনে-দুপুরে ব্যাটা গলা পর্যন্ত মদ খেয়ে আছে। বাচ্ছারা আর তা শুনবে কেন, দিনের মত ছুটি হয়েচে, তারা এখন বাড়ি যাবে, বাইরে সারিসারি বাস দাঁড়িয়ে আছে, ছেলেদের মধ্যে যারা একটু বড়, এই টেন ইলেভেনে পড়ে, তারা এইবার লোকটার পেছনে লাগতে শুরু করল। কী সব নাম ধরে ডাকা, মুরগী ইত্যাদির ডাক নকল করা, 'টাল্লু' ইত্যাদি কমেন্ট পাস করা, বেশ বোঝা গেল ছেলেমেয়েরা লোকটিকে মাতাল অবস্থায় রেগুলার দেখে অভ্যস্ত। কেউই ভয় পাচ্ছে না।

    অবশেষে মাতালের দয়া হল, মিনিট পাঁচেক পরে পকেট থেকে একটা বাঁশি বের করে ফুর্‌র্‌র্‌র্‌ করে বাজিয়ে গেট খুলে দিল। আরো পাঁচ মিনিটের মাথায় গেট ফর্সা হয়ে গেল।

    গ্যাঁড়া এমনিতেই মদ আর মাতাল ভয়ঙ্করভাবে এড়িয়ে চলে। দিনেদুপুরে স্কুলের চৌহদ্দির মধ্যে এমন মাতলামি দেখে গ্যাঁড়া বেশ অবদমিত হয়ে গেছিল। তবুও, লোকে বলেছে 'খুব ভালো স্কুল', তাই গিয়ে ফর্ম তুলে আনল। পঁচিশ টাকায়। এবং, এখানেও নো ইন্টার‌্যাকশন, ঐ পয়েন্ট বেস্‌ড সিলেক্‌শন। মানে, গ্যাঁড়ার চান্স নেই।

    রেয়ান ময়ূর বিহারে চান্স হল না, অ্যাহ্‌লকনেও হল না, কারণ সেখানে কোনও ইন্টার‌্যাকশন নেই, কেবল পয়েন্ট বেস্‌ড। আর পয়েন্ট বেস্‌ড হলেই দিল্লিতে গ্যাঁড়াদের কোনও চান্স নেই। পয়েন্টগুলো ঠিক করা হয় এইভাবে, স্কুল থেকে আপনার বাড়ি কতদূর, বাচ্চার কোনও যমজ এই স্কুলে পড়ে কিনা, গার্ল চাইল্ড না বয়, বাবা মা এই স্কুলের অ্যালামনাই কিনা, বাবা মায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা গ্র্যাজুয়েট না পো:গ্র্যা:, এইসব।

    পরের সপ্তাহে এএসএন স্কুল। বেশ নামকরা স্কুল পূর্ব দিল্লিতে, কিন্তু হাইকোর্টের নিয়মকে কলা দেখিয়ে এরাও বাচ্চা এবং বাবা মায়ের ফুল ইন্টারভিউ নিচ্ছে।

    সেই স্কুলে গিয়ে তো গ্যাঁড়া গেঁড়ির চক্ষু চড়কগাছ। ঢুকেই হলঘরের মাঝে বড় থাম, তাতে প্রকাণ্ড আকারে বাঁধানো রয়েছে হনুমান চালিশা! একদিকের দেওয়ালে একটা বড় অয়েল পেন্টিং, একটা বাচ্চা একটা সিংহের মুখে হাত ঢুকিয়ে বসে আছে, ছবির মধ্যেই এক কোণে শিশুর জবানি, আ সিংহ্‌, ম্যায় তেরা দাঁত গিনুঙ্গা। নিচে লেখা থেকে জানা গেল শিশুটা ভরত, সে নাকি ছোটোবেলা থেকেই এই রকমের দু:সাহসী ছিল। সমস্ত শিশুদেরই এই রকম সাহসী হওয়া উচিত, তবেই ভরতের নাম, ভারতের নাম সার্থক হবে। অন্যদিকে জানলা, সেখান দিয়ে দেখা যাছে আরেকটা বড় হল্‌ মতন, তাতে একটা ইয়াব্বড়ো নর্থ ইন্ডিয়ান সরস্বতী ঠাকুরের মূর্তি রাখা, সামনে সারি দিয়ে অনেকগুলো মেয়ে বাবু হয়ে চুপ করে বসে আছে। গেঁড়ি বুঝিয়ে দিল, ওরা ইয়োগা করছে সরস্বতীর সামনে।

    বাপ্‌ রে! এ কি স্কুল? নাকি বিশ্বহিন্দুপরিষদ? তবু, অ্যাডমিশন বড় বালাই, ভূতোকে আরেকজনের হাতে সঁপে দিয়ে গ্যাঁড়াগেঁড়ি আবার ঢুকল অন্যদিকে। সেখানে গিয়ে দেখা গেল হেডমিস্ট্রেস নামে এক মহিলা গ্যাঁড়াগেঁড়িকে এক নিশ্বাসে বলে যাচ্ছেন, কী জানেন তো, হাইকোর্টকে তো বাচ্চা হ্যান্ডল করতে হয় না, তাই ওরা বলে দিল তিন বছরে নার্সারিতে দেবার জন্য, কিন্তু আপনার বাচ্চা তো খুবই ছোটো, ওকে এই তিন বছরেই নার্সারিতে ভর্তি করলে হাইকোর্টের নিয়ম হয় তো মানা হবে, কিন্তু ওর ওপর চাপ পড়ে যাবে, ও সামলাতে পারবে না। তাচ্চেয়ে এক কাজ করুন, আমাদের ইস্কুলেই একটা প্রি-নার্সারি ক্লাস আছে, স্যাপলিংস নাম, ওকে সেইখানে ঢুকিয়ে দিন, তা হলেই পরের বছর ও আপনাআপনিই আমাদের নার্সারিতে চলে আসবে, আর ওকে অ্যাডমিশনে বসতে হবে না, এইখানটায় সই করে দিন।

    একেবারে কিচ্ছুটি ভাবার অবকাশ না দিয়েই হেডমিস্ট্রেস নামের সেই ভদ্রমহিলা একটা কাগজ বাড়িয়ে দিলেন গ্যাঁড়াগেঁড়ির দিকে, তাতে লেখা, আমি সজ্ঞানে এবং স্ব-ইচ্ছায় আমার ওয়ার্ডকে প্রি-নার্সারি স্যাপলিংস ক্লাসে ভর্তি করাচ্ছি। গ্যাঁড়াও ভ্যাবলার মত তাতে সই করে দিল। হেডমিস্ট্রেস, বিজনেস সাকসেসফুল দেখে তেরছা হেসে বললেন, কনগ্র্যাচুলেশন্‌স! এইবার আপনারা যেতে পারেন, ফাইনাল লিস্টে আপনার মেয়ের নাম বেরোলে আপনাকে ফোনে ইন্টিমেট করা হবে।

    বাড়ি আসার পথেই গ্যাঁড়া সিদ্ধান্ত নিল, যাই হোক, এই স্কুলে নয়। এ তো বাজে বিজনেস!

    এক সপ্তাহের মাথায় ফোনও এল, গ্যাঁড়া সবিনয়ে অফার প্রত্যাখ্যান করল।

    তা হলে কি ভূতোর তিন বছর বয়েসটা বৃথা যাবে? শেষমেশ ঠিক হল, গাজিয়াবাদেই একটা স্কুল, যাতে প্রি-নার্সারি আছে, প্রতিবেশি এক বাচ্চাও পড়ে এবং তাদের তরফে ফীডব্যাকও ভালো, সেইখানেই ভূতোকে ঢোকানো যাক। বছর তো বাঁচানো গেল না, স্কুলে যাবার অভ্যেসটাই না-হয় তৈরি হোক, যাতে করে পরের বারে সরাসরি স্কুল যাওয়া আসা শুরু করতে গেলে মেয়ের ওপর বিশেষ কোনও চাপ না পড়ে। দিল্লি না-হল তো না-ই হোক, নয়ডাতেও ভালো স্কুলের অভাব নেই, সেখানে তো ভূতো পরের বছরে এলিজিবল হবেই, তখন ট্রাই করা যাবে, নয় তো গাজিয়াবাদের এই স্কুলেই কন্টিনিউ করা যাবে।

    তো, গাজিয়াবাদের সেই স্কুলেও প্রি-নার্সারির জন্য বাচ্চাকে এবং বাচ্চার বাবা-মাকে রীতিমতো ইন্টারভিউ দিয়ে পাস করতে হল, তিরিশ হাজার টাকা দিয়ে অ্যাডমিশনও নিতে হল। ইন্টারভিউতে নিজের মোবাইল ফোন দেখিয়ে ইন্টারভিউয়ার ভূতোকে কোশ্চেন করেছিলেন, বেটা হোয়াট শেপ ইজ দিস? এখন লাকিলি ভূতো খেলনা ব্লকের মাধ্যমে কয়েকটা বেসিক শেপ শিখে ফেলেছিল তখনই, রেক্ট্যাঙ্গল তার মধ্যে একটা। সেটা যে এইভাবে সেদিন কাজে লেগে যাবে, গ্যাঁড়াগেঁড়ি ভাবে নি। ঐ এক রেক্ট্যাঙ্গলের ধাক্কাতেই ভূতোর চান্স হয়ে গেল সেই ইস্কুলে। অবশ্য অ্যাডমিশন ফি তাতে কমে নি।

    স্কুল ছিল মোটামুটি, ভালোয় মন্দয় মিশিয়ে, যেমন আর পাঁচটা ইস্কুল হয়ে থাকে আর কি। কিন্তু গ্যাঁড়াগেঁড়ির খুঁতখুঁতুনি আর যায় না। দিল্লির এত কাছে থেকে, এত ভালো ভালো স্কুলের জায়গায় থেকে, ভূতোর শেষে কিনা জায়গা হল ঐ দরবারিলাল ফাউন্ডেশন পাব্লিক স্কুলে? নট সো গুড একটা স্কুলে? গাজিয়াবাদে? ভূতো কি কোনওদিনই দিল্লির কোনও স্কুলে চান্স পাবে না? নার্সারিতে না-হলে তো পরের কোনও ক্লাসে হবার চান্স প্রায় জিরো।

    ভাবিতে ভাবিতে দিন গড়াইল, মাস গড়াইল। আবার সেপ্টেম্বর এল। গাজিয়াবাদ নয়ডাতে চার বছর হতে চলা বাচ্চাদের জন্য নার্সারিতে অ্যাডমিশনের দরজা খুলল। এইবার গাজিয়াবাদ নয়ডার সমস্তকটা ভালোভালো স্কুলের ফর্ম তুলল গ্যাঁড়ারা। এখানে কোনও পয়েন্ট বেস্‌ড সিলেক্‌শনের গল্প নেই, সব জায়গাতেই ইন্টার‌্যাকশন হয়, আর সেটুকুই গ্যাঁড়ার গেঁড়ির ভরসার জায়গা।

    নয়ডার বেশির ভাগ ভালো স্কুল, যেমন কেমব্রিজ স্কুল, বিশ্বভারতী স্কুল, সামারভিল স্কুল, টার্ন ডাউন করে দিল, ওরা গাজিয়াবাদে বাস চালায় না। তখন গেঁড়িই বুদ্ধি দিল, একবার নয়ডা ডিপিএসে চেষ্টা করে দেখা যাক না! ওদের বাস তো আসে!

    ডিপিএস, ইয়ানি কি দিল্লি পাব্লিক স্কুল। সত্যি বলতে কি, গ্যাঁড়া গেঁড়ি প্রথমে নয়ডা ডিপিএসকে হিসেবে রাখে নি, কারণ ওখানে প্রথম রাউন্ডটা উৎরনো নেক্সট টু ইমপসিবল। সেখানে ফর্মগুলো নিয়ে লটারি হয়। সেই লটারিতে যাদের শিকে ছেঁড়ে তাদেরই ইন্টারভিউতে ডাকা হয়। দুশোটা সীটের জন্য নাকি পাঁচ হাজার ফর্ম জমা পড়ে।

    সেই লটারিতে যখন ভূতোর নাম উঠল, তখনও থ্রি ইডিয়ট্‌স সিনেমাটা তৈরি হয় নি। :-)

    অত:পর, ইন্টারভিউ। বাচ্চার ইন্টারভিউতে আর বিশদে যাচ্ছি না, একটি হেলিকপ্টারের ছবি আর একগুচ্ছ হেলিকপ্টারের টুকরোটাকরা, ছবি দেখে টুকরো সাজিয়ে হেলিকপ্টার বানাতে হবে। সে হবার পরে, 'বেটা আপ রাইম্‌স জানতে হো?' ভূতো গড়গড় করে একটি ইংরেজি এবং একেবারে না-থেমে একটি হিন্দি রাইম বলে ফেলার পরে অভিভূত দিদিমণি দুটি টফি না-দিয়ে থাকতে পাল্লেন না।

    প্রসঙ্গত, পাশেই এক মহিলা এসেছিলেন তাঁর বাচ্চাকে নিয়ে, প্রোষিতভর্তৃকা, মহিলা নিজে বার্কের সায়েন্টিস্ট, মেয়েটি কোনও ক্রেশে থাকে নি, কাজের দিদির কোলেপিঠেই মানুষ, ফলে ততটা 'স্মার্ট' নয়। চারটি রিং সে ছোটো থেকে বড় করে সাজাতে পারল না বলে, তার চান্স হল না।

    এর পর বাবা-মা-র পরীক্ষা। একটি মাঝারি কনফারেন্স রুমে ঠেসে ঢোকানো হল চব্বিশজন করে বাবা-মাকে। একদা অন্য তেইশজনের সঙ্গে গ্যাঁড়াগেঁড়িরও চান্স মিলল। হেডমিস্ট্রেস ও আরো দুজন দিদিমণির সামনে নিজেদের ই®¾ট্রা দিতে হবে। তুমি কে, কোন্‌ হনু, কী করো, ডিপিএস কেন চাও।

    কনফারেন্স রুমের আবহাওয়া এমনিই ভারী থাকে, তার ওপরে অত ভিড়, সকলে ফটাফট ইংলিশে নিজের নিজের ই®¾ট্রা দিচ্ছে, মাঝে ফেঁসে গেলেন দুই গৃহবধূ। তাঁরা নিতান্তই গৃহবধূ, ইংরেজি কইতে পারেন না। আই অ্যাম শিল্পী, মাই ... মাই ...

    হেডমিস্ট্রেস অপলকে চেয়ে রইলেন শিল্পীর দিকে, একবার বললেনও না যে, কোই বাত নহী, আপনি হিন্দিতেই বলুন।

    শিল্পীর স্বামী, এখন ঠিক মনে পড়ছে না, বোধ হয় বিজনেস টিজনেস করেন। তিনি শেষে স্ত্রী-র হয়ে ই®¾ট্রা দিয়ে দিলেন, স্ত্রী-র মুখরক্ষা হল। গ্যাঁড়া জানে না, তাঁদের বাচ্চার চান্স হয়েছিল কিনা এই গুরুতর অপরাধের পরেও।

    গ্যাঁড়া শুধু জানে, নয়ডার একটি অত্যন্ত নামকরা ভালো অ্যাকাডেমিক রেকর্ডওলা স্কুলে ভূতোর চান্স হল। বাকি চোদ্দ বছর, খুব গুরুতর অঘটন কিছু না ঘটলে, এখানেই পড়বে ভূতো। গেঁড়ি সরকারি চাকুরে, পরবর্তীকালে সরোজিনী নগর বা আর কে পুরমে কোয়ার্টার পেয়ে গেলে টেলে সেখানকার ডিপিএসে ট্রান্সফারও করিয়ে নেওয়া যাবে।

    এর পর দেনা-পাওনার পালা। সে আর কী করবেন শুনে, ঐ আগের বারে যা দিতে হয়েছিল, ঐ অ্যামাউন্টই। তবে হ্যাঁ, পুরোপুরি রসিদ দিয়েছিল পেমেন্টের। এটা আগের কোনও স্কুল দেয় নি।

    ফ্যান্সি ড্রেস, মোটামুটি দামী মাসমাইনে, আর যখন তখন ছুটি ডিক্লেয়ার করার প্রবলেমগুলো বাদ দিলে ডিপিএস নয়ডা সত্যিই ভালো স্কুল। সুবিশাল স্কুল কম্পাউন্ড অসংখ্য সুদৃশ্য ফুল-পাতার গাছে সাজানো, সমস্ত স্কুল, বিশেষত নার্সারি উইং একেবারে ঝক্‌ঝক্‌ তক্‌তক্‌ করছে, কোথাও এতটুকু ধূলো পড়ে নি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন টয়লেট, সুন্দর মনোহর ক্লাসরুম, টিচারদের সুন্দর ব্যবহার সব মিলিয়ে একটা কর্পোরেট কর্পোরেট আবহাওয়া এনে দেয়। ক্লাস সিক্সের পর থেকে সিলেবাসের মধ্যেই একটি করে বিদেশী ভাষা শেখা মাস্ট, থার্ড ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে। ফ্রেঞ্চ, নয় তো জর্ম্মন, নয় তো ডাচ, নয় তো ... কে জানে আর কী কী শেখায়!

    ভালোয় মন্দয় মিশিয়ে চলছে স্কুল। ভূতো এখন শিখছে অনেক কিছু। সর্বোপরি, সে খুশি। নার্সারী শেষ হয়ে এল, এবার সে প্রেপে উঠবে।

    তো, এই হল রাষ্ট্রীয় রাজধানী ক্ষেত্রে স্কুল-হান্টিংয়ের কিস্‌সা। কী বুঝছেন? বলেছিলাম না, রিসেশন-প্রুফ ব্যবসা?

    ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১০
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ | ৭২৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন