এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ইস্পেশাল  উৎসব ২০১৩

  • বিয়ে করা যায় না জেনো সহজে

    জয়ন্তী অধিকারী লেখকের গ্রাহক হোন
    ইস্পেশাল | উৎসব ২০১৩ | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ | ৪৭৯১ বার পঠিত | রেটিং ৪ (২ জন)
  • বিয়ে করা মানে যে এমন তিড়িতঙ্ক লাগানো বিভীষিকা, তা জানলে কেবলী কক্ষণো এ রাস্তায় পা দিত না।

    কেবলী ও গোবুকে কি মনে রেখেছেন কেউ? সেই যে হবু ডাক্তার গোবুর স্টেথো ট্রামের ভীড়ে "কোনভাবে" কলেজছাত্রী কেবলীর ঝোলা ব্যাগে চলে গেছিল, গোবু সুযোগ পেলেই কেবলীর কলেজে ঘুরঘুর করত, "কী হইতে কী হইয়া গেল" স্টাইলে গোবু নিজে গোবরে পড়ে গিয়ে দোষ চাপাল কেবলীর ঘাড়ে, কিন্তু শেষ অবধি ক্লিপ রুমাল এইসব কুড়িয়ে এনে এনে ঠিক কেবলীর হৃদয়পুরে ঢুকে গুছিয়ে বাবু হয়ে বসল।

    সংক্ষিপ্ত পূর্বরাগ পর্ব ও দুই বাড়ির অভিভাবকদের মধ্যে ততোধিক সংক্ষিপ্ত আলাপ আলোচনার পর বিয়ে স্থির হল। কেবলী ও গোবুর বাড়ি যথাক্রমে ১০০% বিশুদ্ধ বাঙাল ও ঘটি। গোবুর বাবা শিবাংশুবাবু (আর্মিতে ডাক্তার ছিলেন, অত্যন্ত রসিক মানুষ) প্রবল উৎসাহে বেয়াই বেয়ানদের সঙ্গে বাঙাল ভাষায় কথাবার্ত্তা বলা শুরু করে দিলেন, বৌভাতের আগেই তিনি বেয়াইবাড়িকে তুশ্চু করে দেবেন। তবে তাঁর পক্ষের মহিলা বাহিনী বড়ই সংক্ষিপ্ত - গোবুর মা ও তাঁর এক দূরসম্পর্কিত বোন, ব্যস। বলতে নেই, এই ইস্যুতে কেবলীরা খুবই শক্তিশালী, দুই মাসী, জেঠিমা, কাকীমা, মা, পিসতুতো দিদি পটল (শরণ্যা) ইত্যাদি। এনারা সকলেই প্রবল প্রতাপান্বিত, প্রখর ব্যক্তিত্বময়ী, সর্বকর্মপটিয়সী, দুনিয়ার যেকোন বাঘ বা গরু  এদের দূর থেকে দেখলে রোগা হয়ে গিয়ে "থাক, পরে জল খাব" বলে পালিয়ে বাঁচবে। অতি ভ্যাবলা ও ভুলোমনা কেবলীকে এই পরিবারের কলঙ্ক বলা চলে।

    দুই পরিবারের লোকজনই অতিশয় হুজুগে, হুল্লোড়ে ও ছিটিয়াল। এসব দেখেশুনে গোবু বলেছিল বটে - "আমরা বরং নিরীহ ভাবে রেজিস্ট্রী করে নিই"। সেই শুনে দুবাড়িতে গগনভেদী হাহাকার উঠল। শিবাংশুবাবু কেবলীকে ফোন করে বললেন, "মামণি, এই বলে দিলুম - গোবুর, আমার বা ওর মার কোন সৃষ্টিছাড়া আইডিয়াকে ভুলেও কখনো পাত্তা দেবে না।"

    আর এদিকে 

    - "তোর কাকীমা থাকলে কি এমন কথা মনে বা মুখে আনতে পারতিস, বুঁচী!" (কেবলীর ছোটকাকা, তাঁর সামান্য শম্ভু মিত্রীয় গলা খাদে নামিয়ে, মাপমত করুণরস  মিশিয়ে। কাকু আসলে বিয়েই করেন নি, কিন্তু প্রায়ই কাকীমার নাম করে সকলের সেন্টিমেন্টে খোঁচা দেবার চেষ্টা করেন।)
    - "তোর ঠাকুমা তোর বিয়ের নাম করে যে গয়নাগুলো রেখে গেছেন, সেগুলো তবে পরবি না? (চোখের জল মুছে কেবলীর মা, ঠাকুমা যদিও কেবলীর জন্মের বহু আগেই ধরাধাম ত্যাগ করেছেন)
    - “আমাদের বাড়িতে তোমার বিয়ে হল এই জেনারেশনে প্রথম ও শেষ মেয়ের বিয়ে। বহুদিন থেকে স্থির করা আছে এই বিয়েতে আমরা তিন জা - আমি, তোমার মা ও কাকীমা একরকম লালপাড় সিল্কের গরদ, পাটিহার, বাউটি ইত্যাদি পরে জামাই বরণ করব। শুনে রাখো, আমি বেঁচে থাকতে কখনই এর অন্যথা হবে না।" (গম্ভীর জ্যেঠিমা)

    এইরকমের সব ভয়ংকর যুক্তিজালে আচ্ছন্ন হয়ে কেবলী বলতে বাধ্য হল - “করো যা তোমাদের খুশী”। বিয়ের দিন ঠিক হল, কার্ড ছেপে এলো আর জানা গেল বৌভাতের তিনদিনের মাথায় কেবলীর পিএইচডি-র ভাইভা !!!

    তা, যে পিএইচডি করে সে কি আর বিয়ে করে না? বেজে ওঠে কাড়া নাকাড়া, তুমুল উদ্যমে শুরু হয় ঘরের একমাত্র মেয়ের বিয়ের উদ্যোগ।

    চলুন, আপনাদেরো দেখাই সেই সেলফোন নেটবিহীন যুগের বিয়ের কিছু দৃশ্য।

    শাড়িবিলাস

    শাড়ি, শাড়ি, শাড়ি - নমস্কারীর, গায়ে হলুদের, তত্ত্বের, বিয়ের, আরো কত কিছুর। একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটির পাঁচ ছটি মিটিং-এর পর মোটামুটি ২ কিমি মত লম্বা একটি ফর্দ  প্রস্তুত হল, আর এক সকালে তিন গাড়ি ভর্ত্তি এক বিরাট মহিলা বাহিনী শাড়ি অভিযানে বেরোল, একটি গাড়ির ড্রাইভার কামাই করেছে, বড়মেসোকে চানঘর থেকে টেনে আনা হল, "শুদ্ধু গাড়ি চালাইবা, কথা কওনের প্রয়োজন নাই।"

    প্রথমে বেনারসী-বিখ্যাত দোকানে ঢুকে দোকানের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত পর্যন্ত সকলে লাইন করে প্রথমে দাঁড়ানো ও পরে বসা হল। পটলদি বসার জায়গা পান নি, দোকানের গার্ডের দিকে হিমশীতল দৃষ্টিতে দু সেকেন্ড তাকাতেই সে ল্যাগব্যাগ করে তার টুলটি রেখে গেল। অধিনায়িকার গাম্ভীর্যে জেঠিমা আদেশ দিলেন - “বিয়ের বেনারসী-লাল।”
    "বেনারসী না" কেবলীর কুঁইকুঁই, আজকাল কেউ বেনারসী পরে না, অন্য কত শাড়ি আছে - "
    "বাড়ির সক্কলের এই দোকানের লাল বেনারসী পরে বিয়ে হয়ে আসছে, বুঝেছ! আপনারা দাঁড়িয়ে আছেন কেন?"

    অতএব ভয়ংকর জরিটরি দেয়া বিকটদর্শন সব লাল বেনারসী ধুপধাপ পড়তে লাগল আর তালপাতার সেপাই সেলসম্যানটি নানা ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে সেগুলো গায়ে ফেলে দেখাতে লাগল জেঠিমার সবগুলোই পছন্দ, কেবলীর কোনটাই না, বাকীদের মধ্যেও মতের  মিল নেই। প্রায় হাতাহাতি হতে যাচ্ছে এমন অবস্থায় বুদ্ধিমতী পটলদি হাল ধরেন - "লাল নয়, কাছাকাছি কিছু দেখান"। তেমন-লাল-নয় অর্থাৎ ম্যাজেন্টা, মেরুন, গাঢ় গোলাপী ইত্যাদি বেনারসীর একটি পাহাড় জমা হল, এবার পটলদি নিজের গায়ে  ফেলে ফেলে দেখাতে লাগলেন, সকলেরই মোটামুটি পছন্দ এমন কয়েকটি কেনাও হয়ে গেল, ফাঁকতালে পটলদিরও হয়ে গেল একটা।

    এবার অন্য দোকান, সেখানে পৃথিবীর সমস্ত শাড়ি এক ছাদের তলায় পাওয়া যায়। কেবলী অবাক হয়ে দেখতে লাগল, লীলা মজুমদারের লেখায় যেমনটি ছিল, মা কাকীমারা একনিশ্বাসে রাশি রাশি সিল্ক, ইক্কত, কাঞ্জীভরম, পাটোলা, বমকাই, সম্বলপুরী, তসর বালুচরী, জামদানী ইত্যাদি কিনে ফেলছেন ও কিনেই চলেছেন। সারা কলেজ ও রিসার্চ জীবন কেবলী বাইরে তিনটি সালোয়ার কামিজ ও বাড়িতে একটি রংচটা, সুতো ওঠা একদা চিকনের কাজ করা লংস্কার্ট পরে কাটিয়েছে (সক্কলের বিশ্বাস কেবলী চিবিয়ে চিবিয়ে চিকনের সুতোগুলো খেয়ে ফেলেছে, একদা কেবলীর মা স্কার্টটি পাড়ার বগীপাগলীকে দিয়ে দেবার চেষ্টা করে বিফল হন, গভীর অভিমানে সে প্রত্যাখ্যান করে, "পেস্টিজ সকলেরি আচে গো, ই ন্যাতা বগীকে দিচ্চ কী বলে?")। একসঙ্গে এত শাড়ি দেখে তার কেমন দমবন্ধ মত লাগছিল। হেনকালে পিসীর হাহাকার শোনা গেল - "হ্যাঁরে, গোবুদের বাড়িতে কেবল একটিই নমস্কারী যাবে? “হ্যাঁ, ওরা বলে দিয়েছে, কেবল মাসীমা মানে গোবুর মাকে দিলেই হবে"। "সে আবার ক্যামোন কথা!" পিসী খুঁতখুঁত করেন আর তখনই ভীষণ রেগে রেগে দোকানে ঢুকে আসেন তিনঘন্টা ধরে গাড়িতে অপেক্ষা করা, ক্ষুধার্ত্ত, ধৈর্যের বাঁধভাঙা বড়মেসো -
    "ওনার লগেই তবে তিনখান শাড়ি ন্যান, একখান পরনের, একখান কান্ধে ঝুলাইয়া রাখনের আর অবশিষ্টখান কোমরে বান্ধনের!"

    হঃ, গল্পের সেই বুড়ী য্যামন কুমীরের প্যাটের মধ্যেও লাউ বেচতে আছিল, আপনাগো হইসে সেই দশা, দশদিন বাদে আইলেও দ্যাখা যাইব আপ্নেরা শাড়ি কিনতাসেন, ঐদিকে বিয়ার লগ্ন পার!"

    অব্যূঢ়ান্ন

    ভাইভার পড়া করার সময় তো দেয় না কেউ (অ্যাদ্দিন তবে কী করলি), কানের ফুটো দুল না পরে বুজিয়ে ফেলেছে এই ট্যালা মেয়ে, অতএব কাকীমা কেবলীকে নিয়ে গিয়ে কানে ফুটো করিয়ে আনেন, কিন্তু সেই ফুটো আর সারে না, রস গড়ায়। কানে নিমকাঠি, কপালে চন্দনের টিপ, হালকা  গয়না, এতখানি ফুলে থাকা খড়মড়ে তাঁতের শাড়ি পরে কেবলী ভব্যসভ্য হয়ে আত্মীয়স্বজন, পাড়াপ্রতিবেশী, বন্ধুদের বাড়ি আইবুড়োভাত খেয়ে বেড়ায়। এতদিন যেসব বাড়ি গিয়ে শুয়ে শুয়ে কান চুলকোতে চুলকোতে বই টেনে টেনে পড়ত, কুকুর নিয়ে আদিখ্যেতা করত বা ছাদে গিয়ে ব্যাডমিন্টন খেলত, আজ সেসব বাড়িতে মন-কেমনিয়া আদর, চূড়ো করা ভাত, ওপরের সোনালী ঘি, থালা ঘিরে অসংখ্য বাটি, ইলিশ-চিংড়ি-মাংস সব বাড়িতেই কমন, আর বিদায়কালে অবধারিত একটি তাঁতের শাড়ি। এমনি করেই জমে ওঠে বিয়েবাড়ি, এসে পড়ে বিয়ের দিন আর সকাল থেকেই নামে অঝোর বৃষ্টি।

    বিয়েবাড়ি 

    তিনতলা বিয়েবাড়ি একেবারে সরগরম –
    সারাদিন ছাতা নিয়ে বা না নিয়ে সবাই ঢুকচে, বেরোচ্চে, ভিজচে, আছাড় খাচ্চে, বাচ্চাগুলোর বেজায় মজা, নান্দীমুখ শেষ হতেই বেলা আড়াইটে হয়ে গেল, আর পাড়ার একটি মেয়ে এসে খবর দিয়ে গেল  কনে সাজানোর কথা ছিল সতীবৌদির, তিনি বেড়াল তাড়াতে গিয়ে পড়ে হাত ভেঙেছেন, অতএব অন্য ব্যবস্থা দেখতে হবে। অন্য ব্যবস্থা আর কী, "ওরে পটলিকে ধর, জজগিন্নী য্যানো বাড়ি না পালায়!"

    সত্যিই পটলদি বাড়ি গিয়ে সেজেগুজে আসবেন বলে গুটি গুটি ড্রাইভারকে খুঁজতে যাচ্ছিলেন, তাঁকে ধরে আনা হয়। পটলদির ডিউটি ছিল বিয়ে ও বাসরঘরে কনের পাশে পাশে থাকা, হঠাৎ এই নতুন ও বিটকেল অ্যাসাইনমেন্ট পেয়ে তিনি ভয়ানক ব্যাজার মুখে দুমদুম পা ফেলে দোতলায় কেবলীর ঘরে ঢুকে নির্বিকার মুখে বিছানায় গড়াতে থাকা কনেকে নির্মমভাবে নড়া ধরে টেনে তুলে চেয়ারে বসিয়ে একটানে তার মেঘের মত চুল খুলে দেন, আর দিয়েই ভীষণ চেঁচিয়ে ওঠেন, "ও মামীমা, কাকীমা, শীগগিরই এসো"।

    আসলে কেবলীর চুলে অবিশ্বাস্য জট পড়ে যায়, সে জটিলতা না দেখলে বোঝা অসম্ভব। গত সাতআটদিন আইবুড়ো ভাতের অত্যাচারে চুল আঁচড়ানোর সময় পায় নি, ফলে চুল এখন চারপাঁচটি কঠিন জটায় বিভক্ত হয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। পটলদির চিৎকারে ততক্ষণে মা, কাকীমা, পিসীমা এমনকি কাজের মাসী পর্যন্ত ছুটে এসেছেন।

    - "দিদি, তুমি সিওর যে এই মেয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে শ্বশুর বাড়ি যাচ্চে?"
    - "বিয়ের কনে চুলটাও আঁচড়ায় না এমন তো দেখি নাই!"
    - "সকলের আহ্লাদে ঐরকম অলবড্ডে হয়েচে", ইত্যাদি মন্তব্যের ঝড় একটু শান্ত করার জন্য কেবলী বলল, "দিদিয়া, তুমি কোনমতে সামনেটা আঁচড়ে একটা খোঁপা করে দাও, আমি নাহয় কাল ভাল করে তেল দিয়ে --- "

    শান্ত হওয়া দূরে থাক, পটলদি আরো চ্যাঁচাতে লাগলেন, "হ্যাঁরে, তুই কি আমাদের নাম ডুবিয়েই ছাড়বি? নতুন বৌ শ্বশুরবাড়ি যাবি মাথায় বিশাল  জটা নিয়ে, আবার গিয়েই তেল দিয়ে ঘ্যাঁসঘ্যাঁস করে জট ছাড়াতে বসবি?"

    তাও তো বটে, রাত পোহালেই যে অন্য বাড়িতে যেতে হবে, সেটা কেবলীর  মোটেই খেয়ালই থাকছে না। বোনের মলিন মুখ দেখে দিদির বোধহয় এবার দয়া হয়, ”দাঁড়া,আমার ব্যাগ থেকে চিরুনি নিয়ে আসি, তুই বরং তোর সেই পুরোনো স্কার্টটা পর, শাড়িটা তেলে নষ্ট হয়ে যাবে।" পটলী-কেবলী মামাতো পিসতুতো বোন-চেহারা, চুল সব অনেকটাই একরকম। নিজের চুল ছাড়ানোর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পটলদি বেশ তাড়াতাড়িই জট ছাড়িয়ে সুন্দর খোঁপা বেঁধে ফেলে, রূপোর কাঁটা গুঁজে, ফুলের মালাটি লাগাচ্ছেন, হেনকালে সিঁড়ি দিয়ে কেবলীর ভাইরা (হবু ইঞ্জিনীয়র থেকে ক্লাস ফাইভ পর্য্ন্ত সে দলে আছে) ভয়ানক গোলমাল করতে করতে উঠে আসে, আর পটলদি হুড়্মুড় করে দৌড়োন ঘরের দরজার দিকে, বোঝা যায় দরজার ওদিকে জামাইবাবু।

    অল্পবয়সে হাইকোর্টের বিচারক পটলজামাইবাবু অতিশয় পন্ডিত, গম্ভীর ও স্বল্প্ভাষী, হাতটাত নেড়েই ভাব বিনিময় করেন, নেহাৎ ঠেকায় পড়লে "ভাল আছি, আর দেবেন না, আচ্ছা, হ্যাঁ, না" এই কটি বাক্যাংশ দিয়ে কাজ চালান, আর পটলদি বা শরণ্যার শরণ নিতে হলে বাতাসের স্বরে "শানু" বলে ডাকেন। আজ তাঁর ও ছোটমেসোর দায়িত্ব হল  বরানুগমনের ব্যবস্থা করা।নিজের নতুন গাড়িটি তিনি ছয় ইঞ্চি অন্তর গোলাপফুল খচিত এক অসাধারণ ডিজাইনে সাজাতে পাঠিয়েছেন।

    আপাতত দরজা খুলে যে দৃশ্য দেখা গেল তা অবশ্য একেবারেই অভাবনীয়। কেবলীর ভাইরা তারস্বরে "এসে গেছে-এ-এ" বলে চ্যাঁচাচ্ছে, যে যেখানে ছিল ছুটে এসেছে, ঘটনা বুঝতে চেয়ে এবং না পেরে সবাই সবাইকে বকছে। এইসবের মধ্যেই ভীষণ উত্তেজিত জামাইবাবু পটলদির হাত চেপে ধরে হাঁপাতে হাঁপাতে  জানান, "বর এসে গেছে।" আর গমগমে গলায় হাসতে হাসতে সিঁড়ি দিয়ে উঠে আসেন বরকর্ত্তা স্বয়ং। 

    "বেজায় বৃষ্টি নেমেছে তো সকাল থেকে তাই আমি আর গোবু চলে এলুম, আপনাদের ঝামেলা কমিয়ে দিলুম কেমন, এই বৃষ্টিতে এই পাকপাড়া থেকে সেই নিউ আলিপুর যাওয়া কী মুখের কথা!" বিজয়্গর্বে শিবাংশু হাসেন।

    "কোন আক্কেলে আপনে নিজেই বর লইয়্যা চইল্যা আইলেন?" আজকের দিনে বরকর্ত্তার প্রাপ্য সম্মানের কথা আর মাসীর মনে থাকে না। শিবাংশু অবশ্য এসবের পরোয়া করেন না, বেয়ানকে দেখেই তাঁর মুখে অসাধারণ মিচকে হাসি ফুটে ওঠে - "ক্যান, আপনেগো চুল বাঁধা, পাউডার পমেটম মাখা হয় নাই অহনো? দরকার নাই, আমি তো এমনিতেই আপনাগো অপূর্ব সুন্দরী দেখতাসি"। সকলের চোরা কটমট চাহনি আর জামাইবাবুর নিভে যাওয়া মুখের চেহারা দেখে এবার ছোটমেসো মুড়ির বাটি হাতে এগিয়ে আসেন (যেখানে যে অবস্থায় থাকুন না কেন, বিয়ে পৈতে গৃহপ্রবেশ যে উৎসবেই যান, বিকেলে এককাঁসি তেলমাখা মুড়ি না হলে মেসোর চলে না) "আসলে আপনাগো আনার ডিউটি তো আসিল আমার আর এই শুভাশীষের। অর গাড়ি অহনই আইয়া পড়ব সাইজ্যা গুইজ্যা। আপনেরা আগেই আইয়া পড়লেন বইল্যা বাড়িশুদ্ধ লোক তো এরপর আমাগো ভুষ্টিনাশ কইরা থুইব।" 

    "ও এই কথা? একমুঠো মুড়ি তুলে নেন বরকর্ত্তা "দেখুন আমি আর গোবু তো প্লেন ড্রেসে এসেচি, সাজগোজ সব গাড়িতে আচে। একটু পরে গোবু ধুতি পাঞ্জাবী টোপর ফোপর পরে নেবে।ওকে নিয়ে আমি আর আপনারা, মানে যাদের যাদের ডিউটি পড়েচে, সবাই মিলে আপনাদের সাজানো গাড়িতে চড়ে পাঁচমাতার মোড় অব্দি গিয়ে আপনাদের এখানে ফিরে আসব। বরণ টরণ সবই তখন হতে পারবে, অ্যাঁ?” জনতার বিস্মিত দৃষ্টির সামনে সমস্যার সমাধান করে দিয়ে হা হা করে হাসতে হাসতে নেমে যান বরকর্ত্তা, মুড়ি নামিয়ে রেখে মেসো হতবুদ্ধি জামাইবাবুকে প্রায় কোলে তুলে নিয়ে বরানুগমনের গাড়ি আনতে দৌড়োন, আর পটলদি ছোটেন কনের ঘরে, সেখানে বধূসজ্জা অনেক বাকী যে।

    দরজা বন্ধ করে পটলদি ও মেজকাকীমা কেবলীকে যথাক্রমে চন্দন ও গয়না পরাচ্ছেন। কানের নিমকাঠি খোলা দূরে থাক, হাত দিলেই কেবলী লাফিয়ে উঠছে এদিকে বিয়েবাড়ির মহিলাদের রাশি রাশি গয়না ঘেঁটেও একটি টেপা দুল পাওয়া গেল না। মুশকিল আসান করতে অতএব রান্নামাসী দৌড়ে পাড়ার দোকান থেকে সাড়ে দশ টাকা দিয়ে কিনে আনে বাহারী টেপা দুল আর দাম দিতে গেলে লজ্জায় জিভ কাটে "গরীব মাসী তোমারে এইটুকু দিল গো।" কনে ও মাসীর লাজুক হাসিতে ঝিকিয়ে ওঠে কর্ণাভরণ।

    মেকাপ শেষ করে  চন্দনের কারুকার্য আঁকা হচ্ছে। কাকীমা আছেন গয়নার চার্জে, লিস্ট ধরে ধরে তিনি গয়না পরাচ্ছেন - "এই দ্যাখ এই হীরের সেট তোর মা গড়িয়েছে, কৃষ্ণচূড়া, সীতাহার এগুলো তোর ঠাকুমার গয়না, আমি দিয়েছি এই বাউটি জোড়া, সোদপুরের পিসী দুল, চুড়ির সেট জেঠিমা --- সর্বদা লিস্ট দেখে পরবি আবার মিলিয়ে মিলিয়ে লকারে রেখে আসবি, বুঝলি কিছু? "
    "ন্না,বুঝিনি" এতক্ষণে কেবলী চটে ওঠে, "দেখ দিদিয়া,বাটখারার মত ভারী ভারী  গয়না সব, এতেই আমি নড়তে পাচ্ছি না, এখনো নাকি অর্ধেক বাকী। এর পর আছে সেই চটের বস্তা বেনারসী। হেঁটে নীচে যাওয়াই মুষ্কিল এত ওজন নিয়ে, বিয়ে করা দূরস্থান। ক্রেনে চড়ে সাতপাক ঘুরব নাকি?"
    "তা বটে", বিভিন্ন কোণ থেকে বোনকে দেখে দিদি রায় দেন, "এই থাক।"
    "সব গয়না পরাতে বলেছিল বড়দি, যাক, বাকীগুলো তুলে রেখে আসি তবে" - দৃশ্যত নিরাশ কাকীমা দরজা খোলেন আর বাক্সশুদ্ধু তাঁকে প্রায় ঠেলে ফেলে দিয়ে ঢুকে আসে আজকের নায়্ক পরমকল্যাণবর গোবুচন্দ্র। রূপোফুলে, জরিতে, ফুলমালায় দিয়ে সাজানো বিশাল খোঁপা, সারা অঙ্গে ঝলমল গয়না, আর পরনে শতাব্দীজীর্ণ  স্কার্ট - এই সাজে কেবলীর সাথে শুভদৃষ্টি হয়ে যায়  জ্যালজেলে টী শার্ট পরিহিত গোবুচন্দ্রের আর হাঁ হাঁ করে তেড়ে আসেন পটলদি, "একি তুমি এখানে কেন? একী অলক্ষুণে সব ব্যাপারস্যাপার!"
    "আরে, আস্তে চ্যাঁচান" গোবু লাফিয়ে দিদির মুখ চেপে ধরে কানে কানে বলে "খিদেয় পেট জ্বলে গেল তো, খাবার দাবার আছে কিছু?"
    "বিয়ের দিনে উপোস থাকতে হয়, সকালে মাছভাজা ভাত খাও নি?"
    "সে তো বারো ঘন্টা আগে" - বলতে বলতেই গোবুর নজরে পড়ে মেসোর আধখাওয়া মুড়ির বাটি। সেটি হস্তগত করতেই দিদি আবার চ্যাঁচান - "ও যে এঁটো মুড়ি"।
    "মুড়ি এঁটো হয় না তো" একগাল হেসে জানিয়ে দিয়ে গোবু সিঁড়ির দিকে এগোয়। বাধা দেন পটলদি "বললে না বোনকে কেমন দেখাচ্ছে? এত কষ্ট করে সাজালাম!"। অতিশয় বিচ্ছু হেসে গোবু মত দেয় "দিব্যি গুটগুটে দেখাচ্চে, এই জামাটা পরেই বিয়ে হবে? সকালে তত্ত্বে যে এত ভাল ভাল শাড়ি পাঠানো হল, সেগুলো কি আপনি তাক বুঝে সরিয়ে ফেলেচেন?"

    জজগিন্নীকে হতচকিত করে রেখে গোবু তিন লাফে নেমে যায়।

    বিয়ের সময় গোবুর বন্ধুদের ফিচেল টিকাটিপ্পনী, মালাবদলের সময় ছফুট গোবুর কোমর ধরে আরেকটু উঁচু করে দেয়া, বিয়ের সময় গোবু পা দিয়ে খালি খালি কেবলীকে সুড়সুড়ি দেয় দেখে  পটলদির ধমক "এই বোন, সরে আয় ওর কাছ থেকে" আর কন্যাবিদায়ের সময় মেয়ের বাড়ির সকলের কান্না দেখে শিবাংশুর ফুঁপিয়ে কান্না (সব বুড়োর অ্যাকটিং-মাসী উবাচ) - এইসব পার হয়ে এসে গেল ফুলশয্যার দিন।

    ফুলশয্যা

    মধুরাত বলে কথা, খাটে ফুলের মশারি, সারা ঘরে ফুল, জানলার গ্রীলে পর্যন্ত। অতিথিরা চলে গেছেন, বাড়ি ফাঁকা। শাশুড়ী পরম স্নেহে কেবলীকে খাটে বসিয়ে দিয়ে গেলেন। তবে কপাল তো কেবলীর সঙ্গেই রয়েছে - এত ফুলের গন্ধে তার প্রবল হাঁচি  শুরু হল। মা, মাসী, কাকীমা সকলে পই পই করে বলে দিয়েছেন, হ্যাঁচ্চো-ও করে বিকট আওয়াজে খবর্দার হাঁচি দিবি না, সুতরাং যথাসম্ভব আস্তে আস্তে ফিচ্চি ফিচ্চি করে কেবলী হাঁচতে লাগল আর পকেটে হীরের আংটি নিয়ে ঘরে এল নীল সিল্কের পাঞ্জাবী শোভিত গোবুরাজ।

    ঘরে ঢুকে প্রথমটা ইঁদুরের মত ফিচ্চি  ফিচ্চি আওয়াজ আওয়াজে একটু অবাক হলেও তিনসেকেন্ডেরো কম সময়ে গোবু ঘটনা বুঝে যায় ও নবদম্পতির মধ্যে এমত  বাক্যালাপ হয় -
    - উদোর মত খাটে বসে আছ কেন, সোফায় এসে বোসো। তরশুদিন তো ভাইভা,পড়াশোনা হল?
    - না (গোবুর  ঝুঁটি ধরে নেড়ে দেবার প্রবল ইচ্ছা চেপে রেখে), - অ, বইপত্র এনেচ?
    - সবুজ ঢাকনার স্যুটকেসে।

    হামাগুড়ি দিয়ে গোবু স্যুটকেস টানে, মাদুর বিছিয়ে দেয়।

    - এইসব ধরাচুড়ো ছেড়ে একটু পড়াশোনা করে নাও। সেই স্কার্ট এনেচ?
    আনে নি মানে? সেটি কেবলী সকলের আপত্তি অগ্রাহ্য করে সর্বাগ্রে স্যুটকেসে ঢুকিয়েছে। প্রায় সব গয়না, বেনারসীর বস্তা, মাথার খোঁপা সব খুলে টুলে সে ভারী খুশি হয়।

    গলায় একটি সরু হার ঝিকমিক, কানে রান্নামাসীর দেয়া দুল (কান শুকোয় নি এখনো), চুলে মুড়োখোঁপা - নুপূর পরা পা  ছড়িয়ে গোবুনী খাতাপত্র নিয়ে বসে।

    গোবু চেয়ে চেয়ে দেখে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ইস্পেশাল | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ | ৪৭৯১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kumu | 132.161.202.112 (*) | ২৬ জুলাই ২০১৭ ০৮:২২77910
  • পুরনো লেখাগুলো উঠে আসচে কিভাবে?ফেবুতে মানসী কে লিং দিলুম,উঠে এলো এইখেনে!!
  • কুমু | 127812.50.344512.245 (*) | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:২৮77912
  • ধন‍্যবাদ।
  • গবু | 2345.110.674512.198 (*) | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:০১77913
  • দুর্দান্ত! এটা কি করে আগে পড়িনি কে জানে! এ তো দেখছি 2013র জিনিস... এই যুদ্ধের দামামার মাঝে বড় আনন্দ হলো! মানুষ বেঁচে আছে তাহলে!!
  • দেবাশীষ ব্যানার্জী | 342323.225.7845.64 (*) | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১২:২০77911
  • খুব খুব খুব ভাল লাগল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু প্রতিক্রিয়া দিন