এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • চার ল্যাবারু খোঁজেন গোরু

    জয়ন্তী অধিকারী লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৩ এপ্রিল ২০১৭ | ২৯০০ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • কন্যে – এক

    চারজন মেয়ে, একজন ছেলে। গতকালের ইন্টারভিউতে একটি সরকারী প্রকল্পের গবেষক পদের জন্য প্রাথমিকভাবে এরা নির্বাচিত হয়েছে। আজ দ্বিতীয় দফা - গ্রুপ ডিসকাসন ইত্যদি।

    ছাতার চাগরির কারণে হিড়িম্বা ম্যাডামকে (অসাধারণ দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের কারণে প্রাপ্ত অফিসনাম) জীবনে অসংখ্যবার নিয়োগ কমিটিতে বসে প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নিতে হয়েছে। বড় বড় অধ্যাপকরা বা বিশেষজ্ঞরা সঙ্গে থেকেছেন এবং তাদের কথাবার্তা শুনে মাঝে মাঝেই তিনি লীলা মজুমদারীয় স্টাইলে হাতপা এলিয়ে মুচ্ছো গেছেন বা যাবার কথা ভেবেছেন। আজ প্রথমেই ম্যাডামের অভিজ্ঞ চোখে ধরা পড়ে প্রার্থীদের বিরস ও নিরুৎসাহ বদন, এবং নির্বাচকদের ততোধিক বিরস ব্যাংগনভর্ত্তা সদৃশ মুখচন্দ্রিমা। একজন বলেই ফেললেন, ঐ ছেলেটিকে কালই নিয়ে নিলে হাঙ্গামা চুকে যেত।

    হিড়িম্বা আশ্চর্য হয়ে ভুরু তুলে তাকালে তিনি বলেন

    - মেয়েগুলোর একটারও বিয়ে হয়নি।
    - তাতে কী?
    - এই ল্যাবেই কারো সঙ্গে প্রেম করবে, বিয়ে করবে।
    - করুক। আমাদের সমস্যা কোথায়?
    - সমস্যা শুরু হবে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বাচ্চা হবে, maternity leave চাইবে।
    - দিতে হলে সরকারী নিয়ম অনুযায়ী দেব।
    - বাচ্চা জন্মানোর পর টের পাবেন। আজ বাচ্চার সর্দিকাশি, কাল বাচ্চার ভ্যাক্সিনেসন, পরশু পেটখারাপ। মেয়েকে আর তার বরকে ডিপার্টমেন্টে পাবেনই না। দুইটি ম্যানপাওয়ার গন।

    বেগুনী কাঞ্জীভরম শাড়ির আঁচলে সুক্ষ্ম গোঁপপ্রান্ত মুছে নিয়ে মহোদয়া ফিসফিস করে পরামর্শ দেন; ‘‘মেয়েদের নেবেন না। একটা ছেলে রিসার্চারের অর্ধেক সার্ভিসও পাবেন না।’’(হিড়িম্বা পরিষ্কার শুনতে পান নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীর কন্ঠ “Let me tell you about my trouble with girls … three things happen when they are in the lab … You fall in love with them, they fall in love with you and when you criticise them, they cry.”)

    বহুদর্শী ও পোড় খাওয়া হিড়িম্বা অবশ্য অবিবাহিতা তরুণীর ভবিষ্যৎ শিশুর পেটখারাপের সমস্যায় কর্ণপাত না করে গ্রুপ ডিসকাশন শুরু করেন। যথারীতি আগের দিন প্রজেক্টের সারাংশ বলে দেয়া সত্ত্বেও এমএসসিতে ফার্স্ট ক্লাশ পাওয়া মহানরা কেউ কিছুই পড়েশুনে আসেননি। ওরই মধ্যে একটি মেয়ে (ধরা যাক, পূজা) দু একটি বাক্য উচ্চারণ করে সকলকে বাধিত করল। জানা গেল, এমএসসিতে এরই কাছাকাছি একটি বিষয়ে সে প্রোজেক্ট করেছিল, তবে এখন প্রায় কিছুই মনে নেই।

    পূজাকে ডেকে বলা হল, মা লক্ষ্মী, সিলেক্টেড হয়েচো। কাল কাগজপত্তর এইচ আর ডিপে জমা করো গো মা, আর একটু মন দিয়ে কাজ করো।

    বল্লে পেত্যয় যাবেন না, মুখে যেন আষাঢ়ের মেঘ ঘনিয়ে এলো, “আজ কী রাত শোচনে দিজিয়ে”।

    এত শোচার কিছু নাই, এখানে বোমাটোমা কিছুই বানানো হয় না, লোকজন নিরীহ ছাপোষা টাইপ – এইসব বোঝানো হল। নিমরাজি মুখে চিঠি হাতে বাইরে গেল, আর অন্যদের হাসির আওয়াজে করিডোর ফেটে পড়ল।

    “হো গয়া না সিলেকশন? অব ম্যাডাম কুরী বন, পুরা জিন্দগী বৈঠকে”। (ম্যাডাম কুরী ভিন্ন আর কোন মহিলা বিজ্ঞানীর নাম স্মরণে আসে না?)

    “তুমনে বহুত নলেজ দে দিয়া ইনলোঁগোকো, অব সামহালো।” (দুটি অর্ধস্ফূট বাক্যে ভারত/বিশ্ব বিখ্যাত এই বিশেষজ্ঞদের জ্ঞান দেওয়া? হিড়িম্বা অবাক হতেও ভুলে যান।)

    “রিসার্চ উসার্চ লেড়কীলোগোকে লিয়ে থোড়ী না হ্যায়” – সম্মিলিত কন্ঠ।

    কাঞ্জীভরম হিড়িম্বাকে একটি আগেই-বলেছিলাম-কিনা টাইপ হাসি দেন, আত্মবিশ্বাসে তাঁর গোঁফের রেখা জ্বলজ্বল করে ওঠে।

    ছিটকে বাইরে গিয়ে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা হয়, এত অপছন্দের কাজের জন্য প্রার্থী হয়ে এসেছিলে কেন? তক্ষুনি একটি তিতিবিরক্ত গলা শোনা যায়

    “কেয়া কিয়া যায়, পাপানে জবরদস্তি ভেজ দিয়া”।

    সকলেরি কি জবরদস্ত পাপা?

    কন্যে – দুই

    ধরে নিন এঁর নাম নেহা।

    (এনার কাহিনি বলার জন্য কিছু পোস্টের সাহায্য নিলাম, কেমন?)

    ইনিও আছেন এক প্রোজেক্টে। রিসার্চ বা বিজ্ঞানে বিন্দুমাত্র আগ্রহ নাই, প্রোজেক্ট পড়ে দেখতে বা লিট রিভিউ করতে চায় না, নিমতেতো মুখে মিটিংএ আসে। মোটিভেশনের কথা বলছেন? একটি ২২/২৩ বচুরেকে মোটিভেট করা অনেকটা তার নিজের মোটিভেটেড হওয়ার ইচ্ছার ওপরেও নির্ভর করে। টাইমপাস করতে এসেছে এমন মেয়েকে মোটিভেট করা সহজ নয়, সেই সময় ও চেষ্টা ব্যয় করাও অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব নয়।

    একে কেন? যারা অ্যাপ্লি করেছিল তাদের মধ্যে এই বেস্ট ছিল। চেষ্টা করেও এর থেকে বেটার পাওয়া যায় নি।

    সাতদিন ব্যাপী এক স্টাডি করতে হবে, রোজ ৮ ঘন্টা ধরে প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর স্যাম্পল নিতে হবে। বেশ কয়েকবার রিপীট করতে হবে – সেইসব হিসেব করে বেশ কিছু ভীষণ দামী কেমিক্যাল কেনা হয়েচে একদম টায় টায়, একবার ভিন্ন দুইবার কেনার পয়সা নাই। ম্যাডাম নেহার কোন হেলদোল নাই, নানা অজুহাতে কাটিয়ে যাচ্চেন দিনের পর দিন, মাসের পর মাস।

    হিড়িম্বা ম্যাডামের সুবিখ্যাত ধৈর্যও একদিন সমস্ত লকগেট ভেঙে ফেল্ল, নেহাসহ পুরো টিমকে ডেকে তিনি যথাসাধ্য ভুরু কুঁচকে, কান থেকে ধোঁয়া উড়িয়ে একটি ভয়ংকর কঠিন ভাষণ দিলেন, যার সারমর্ম হল, অবিলম্বে এক্ষপি শুরু না করলে তিনি সকলকে দরজা দেখিয়ে দেবেন।

    নেহাতই চক্ষুলজ্জা বশে নেহাম্যাডাম একটি প্ল্যান বানিয়ে আনলেন, যার মাথামুন্ডু, এবিসিডি, শুরু বা শেষ কিসুই নাই, যেটি অনায়াসে যেকোন সুস্থবুদ্ধি লোকের সেরিব্রাল অ্যাটাক ঘটানোর উপযুক্ত। হাতে সময় একেবারেই নাই, চাগরির দায় বড় বিষম, হিড়িম্বা রাত জেগে এক্ষপির প্ল্যান বানালেন, প্রত্যেকের দায়িত্ব আলাদা শীটে লিখে দিলেন। অন সেকেন্ড থট, যত সলিউশন বানাতে হবে, প্রতিটি তৈরি করার মেথডও লিখে হাতে হাতে ধরিয়ে দিলেন। (আগে একবার নেহা স্ট্যান্ডার্ড অ্যাসিড সল্যুশন বানানোর জন্য “একটু হেল্প” চেয়েছিল।)

    মায়েরা, বাবারা এইবারে কৃপা কর, নামিয়ে দাও কাজটি, মাত্রই সাতটা দিন।

    এক চমৎকার বুধবারের সকালে এক্ষপি শুরু হল। প্রথম দিনটি ভালয় ভালয় কেটেও গেল।

    দ্বিতীয় দিন, নেহাকে সাহায্য করে যে ল্যাব বয়টি, সে এসে দাঁড়াল, পেছনে টিমের অন্যরা।

    “নেহাম্যাম তো আয়ী নেহী।”

    মাথায় ভেঙে পড়া আকাশের টুকরোটাকরা ঝেড়ে ফেলে, অতিকষ্টে নিজেকে সামলে হিড়িম্বা নেহাকে ফোনে ধরার চেষ্টা করেন। আটবার নো রিপ্লাই, নবম বার নেহার শীতল কন্ঠ ভেসে আসে, “ম্যাম আই অ্যাম গোইং পার্লার ফর থ্রেডিং, ইট টেকস ৭-৮ আওয়ার্স।”

    থ্রেডিং? বিপদে পড়লে চিরকালই হিড়িম্বা ম্যাডামের মাথা বরোপশীতল হয়ে যায়। অবিলম্বে তিনি সাইটে যে পোস্ট করেন ও তার যে সব উত্তর আসে তা এইরকম -

    - চট করে কেউ একটা অতিতুচ্ছ ইনফো দেবে? বিউটি পার্লারে গিয়ে থ্রেডিং (জানিনা সেটা কেন করে) করতে কত সময় লাগে? আমার এক জুনিয়র এইমাত্র জানালো সে ঐ কারণে আপিসে আসবে না।

    - হিড়ুদিদি, থ্রেডিং করে ভ্রূ সরু করে। খুব বেশি হলে পনেরো মিনিট। আর মেয়েদের হাল্কা গোঁফের রেখা থাকলে তাও অনেক সময় থ্রেডিং করে উড়িয়ে দেয়। সেটা করতে পাঁচ মিনিটের বেশি লাগার কথা নয়।

    - থাংকু। এই সব মেয়েদের শায়েস্তা করতে এই বুড়ো বয়েসে কি আমাকে পার্লারে যেতে হবে? আজ এর মজা বের করছি।

    - কি জ্বালারে বাবা, থ্রেডিংয়ের আগে বাগানে বেড়াবে, গাছ থেকে ফুল তুলবে, থ্রেডিংয়ের পরে লাঞ্চ করবে, শেষে বিকেলে খানিক আইসক্রিম খে বাড়ি ফিরবে। এগুলো শূন্যস্থান পূরণ করার জন্য রেখেছে। (নুনের ছিটে দেয়ার সুযোগ কে ছাড়ে?)

    - এই সব অজুহাত শুনলে আমারও মাথায় রক্ত উঠে যায়। খুব নির্লজ্জ না হলে বসকে ফোন করে এরকম বাজে অজুহাত দেওয়ার সাহস হয় না। – নিজের কাজকে, নিজের টিমের লোকজনকে কতটা অশ্রদ্ধা করলে এরকম অজুহাত দেওয়ার মত বুকের পাটা হয়? সিনিয়র হিসেবে যাকে এই কথাটা শুনতে হয়, তার কেমন লাগে একবার ভেবে দেখো।

    - মেয়েটির কথায় এটাই মনে হল সে বোঝাতে চাইছে থ্রেডিং প্রায় সারাদিনের কাজ। বুড়ী পিআই (project investigator) অতশত জানবে না। আগেও একবার ল্যাবের একটা দুঘন্টার কাজ দুদিনের বলে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল।

    একটি টাইম সেনসিটিভ কাজ শুরু করে দিয়ে এইভাবে ডুব দেওয়া? এমন বিচিত্র অজুহাত ও পিআইকে সম্পূর্ণ নির্বোধ ভাবা? অন্যদের কাজ সম্বন্ধে বা লাখ টাকার কেমিক্যাল বিষয়ে চিন্তা নাই কোন? ছুটি নেয়াতে কোন সমস্যা নাই,আপত্তি এক্ষপি শুরু করে দিয়ে না আসায়, টিমের সকলকে চূড়ান্ত অসুবিধেয় ফেলা ও পিআইকে অবোধ ভাবায়।

    ল্যাবের বাকীরা সকলে ভীষণ ব্যস্ত, তাদের কাজ চলছে। চেইন সিস্টেম, নেহার টিমের অন্যরা কাজ করতে পারছে না, মাথা গরম করে লাভ নাই, হিড়িম্বা নিজেই বৃদ্ধ বয়েসে প্রমাণ সাইজের ল্যাব কোট চড়িয়ে নেহার জায়গায় লেগে পড়েন।

    বিকেল পাঁচটা নাগাদ নেহার ফোন – স্যালারি থেকে কিছু আগাম পাওয়া যায় কিনা জানতে। বলা হল, এসে নিয়ে যাও, থ্রেডিং কতক্ষণের ব্যাপার? ভদ্রলোকের এক উত্তর – ৭- ৮ ঘন্টা।

    সাইটবন্ধুদের উপদেশ মেনে জিগালাম, এক্ষপি রেজাল্ট দেখতে চাও না?

    উত্তর আপনি তো দেখছেনই (অনুবাদ – তুমি দেখছ আবার আমি দেখে কী করব? রিপোর্ট কে লিখবে? )

    সেই যে গেলেন, নেহাজী, ফিরলেন তিনমাস বাদে, সগর্বে সকলকে জানালেন তাঁর বিয়ে ঠিক এক এনারাইএর সঙ্গে, এবং পার্লার ম্যাডাম, টিনামৌসী ইত্যাদিরা বলেছেন অবিলম্বে এইসব ঘিসিপিটি কাজ ছেড়ে দিতে, ওতে চেহারা খারাপ হয়ে যায়।

    কন্যে – তিন

    “পাঁচফোড়নে আদার রস দিলে কী যে সুগন্ধ বেরোবে, সে আর কী বলব ভাই” – আহা, লীলাদি তুলনাহীনা। সাধে নীরেন্দ্রনাথ বলেছেন যে লীলাদির কথা ভাবলে মনটা আজও ভাল হয়ে যায়। অবসাদ থেকে বেরিয়ে আসার উপায় হল লীলাদিদির গল্প পড়া। অল্প অল্প শীত পড়ছে, সারাদিনের অসংখ্য বড়মেজোসেজোনফুলছোট কাজ সেরে হিড়িম্বা বাড়ি ফিরেছেন, আর ভীষণ অগোছালো ঘুচিমুচি হয়ে থাকা ঘরবাড়ির দিকে একবারটি আড়চোখে দেখে নিয়ে “রান্নার বই” নিয়ে কম্বলে পা ঢেকে শুয়ে পড়েছেন।

    হেনকালে অন্তরার ফোন, একটু দোনামনা করে হিড়ু ফোন তোলেন, আহা মেয়েটা বড্ড মন দিয়ে কাজ করে।

    - ম্যাম, আজকের রেজাল্ট খুব ভাল এসেছে, স্পাইকের রিকভারি খুব ভাল, ৯৯%এর উপর।

    - (উত্তেজিত হওন ও উঠিয়া বসন) তাই নাকি, বা বা। খুব ভাল খবর দিলি রে!

    - ইয়েস ম্যাম, আপনি যেমনটি বল্লেন, ফ্লো রেট কমিয়ে দিতেই একদম যেমনটি দরকার তাই পাওয়া গেল।

    - এক্সেলেন্ট, রেফ মেটেরিয়ালগুলোর আটটা করে স্ট্যান্ডার্ড সল্যুশন বানালি তো?

    অতঃপর ম্যাম ও তাঁর ছাত্রী এক দীর্ঘ আলোচনায় নিমগ্ন হয়ে পড়েন। স্থানকাল সম্বন্ধে যখন তাঁদের জ্ঞান ফেরে তখন রাত প্রায় রাত সাড়ে দশটা। হিড়িম্বা লজ্জিত হন, রোগা মেয়েটা পিজিতে থাকে, খাওয়াদাওয়া কী করে কে জানে, খিটকেল ল্যান্ডলেডি রাত সাড়ে দশটায় আলো নিভিয়ে দেন।

    - অন্তরা, এইবারে খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়। গুড নাইট, কেমন।

    - (সামান্য অপ্রতিভ স্বরে) না, গুড নাইট না ম্যাম। আমি না, একটু মানে একটু আটকে গেছি, ল্যাবে –

    - সে কী!!! একটু আটকে গেছিস মানে কী অন্তরা? হয় পুরোটাই আটকাবি নয় বেরিয়ে যাবি। গার্ড দেখল না তোকে? লক করে দিল? এতক্ষণে কিছু অঘটন ঘটে যেত যদি?

    - না ম্যাম, এই নতুন ইন্স্ট্রুমেন্ট রুম একটু ভেতর দিকে তো, আর রাতে আলো জ্বালাই থাকে। গার্ড ছেলেটা নতুন, ভীষণ জোরে জোরে “আজকাল তেরে মেরে চর্চে হ্যায় হর জুবান পর” গাইতে গাইতে অন্য সব আলো নিভিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল। স্ক্রীনের আড়ালে ছিলাম বলে ও দেখতে পায়নি আমায়। ও মনে হয় সদ্য সদ্য প্রেমে পড়েছে ম্যাম।

    - তা ওকে ডাকলি না কেন, ট্যালা মেয়ে?

    - মানে ক্যালিব্রেশন ডেটাগুলো দেখছিলাম তো, তদ তদ তদমতো হয়ে (তদ্গত – হিড়ুর কারেকশন), শুনছিলাম ও গাইছিল, ঝন ঝন করে দরজা বন্ধ করল, কিন্তু কেমন সাড়া দিতে পারলাম না। যখন বুঝলাম দরজা বন্ধ তখন ভাবলাম যাগ্গে, এখানেই কাটিয়ে দেই রাতটা।

    - চমৎকার, খাবি কী সারারাত? খাতার পাতা?

    - (তিনমিনিট পর লজ্জিত স্বর) আমার খিদে পায় নি ম্যাম। আপনি কেবল একবার পিজিম্যামকে ফোন করে –

    হিড়িম্বা ততক্ষণে ইতিকর্ত্তব্য নির্ধারণ করে ফেলেছেন, কালবিলম্ব না করে তিনি ল্যাবের সকল কাজের কাজী, মুশকিল আসান হীরালালকে ফোন করেন। হীরা পারে না এমন কাজ নেই, চেনে না এমন জায়গা নেই – তা সে সদরবাজারের অসম্ভব ঘুপচি জায়গা থেকে তেলবীজ জোগাড় করে আনা হোক, একজিবিশনে স্টল সাজানো হোক বা সরকারী ভবনের গুহা/শাখা গুহায় ঢুকে ফাইলের আপডেট আনা হোক। রাত এগারোটার সময় ল্যাবারু উদ্ধারের এই অদ্ভুত অ্যাসাইনমেন্ট পেয়ে হীরা এতটুকু বিচলিত হয় না, বরং ভারী খুশি হয়ে ওঠে।তড়বড় করে সে যা বলে তার মর্মার্থ হল, মেডামের চিন্তার কোন কারণ নাই, সে ছেলেকে নিয়ে যাচ্ছে, গার্ডের ভালমত খবর নিচ্ছে, সান্তরা মেডামকে (সর্বজনগ্রাহ্য অন্তরার নিজেকে নিজে দেওয়া ল্যাবনাম) কি অটোতে করে বাড়ি ছেড়ে আসবে?

    - ম্যাডাম সামান্য চিন্তা করেন – না, এত রাত্রে সেই সি আর পার্ক যাওয়ার চেয়ে ওকে তুমি আমার বাড়ি পৌঁছে দাও। (হিড়ুর বাড়ি খুব কাছেই)।

    আধঘন্টা পর আবার ভীতু ভীতু গলা পাওয়া যায়

    - ম্যাডাম, আপনার বাড়ি গেলে অসুবিধেয় ফেলব তো! স্যার রয়েছেন, ভাইরা আছে –

    - (ধৈর্য হারাইয়া) অত চিন্তা করতে হবে না তোমায়। তারা বাড়ি নেই কেউ। হ্যাঁরে, তুই আটকে যাওয়ার কথাটা প্রথমেই আমাকে বললি না কেন? একঘন্টা কথা বলার পর বললি কেন?

    - আসলে ম্যাম, কাজটা ঠিকমত নেমে যাওয়াতে এত আনন্দ হল যে ঐ আলোচনাটা ছেড়ে অন্য কথা বলতে ইচ্ছেই হচ্ছিল না।

    - আমার ফ্ল্যাট অব্দি হেঁটে উঠতে পারবি তো?

    - পারব বোধহয়, না পারলে হীরাচাচা চেয়ারে করে তুলে দেবে বলছে।

    অন্তরার ডান পায়ের অর্ধেকটা নেই, ডান হাতটাও কমজোর। এক মোটর দুর্ঘটনায় ওর মার মৃত্যু হয়, অন্তরা কোনরকমে বেঁচে ফেরে। বাবা রোগা, কালো, বিকলাঙ্গ মেয়ের খোঁজ রাখেন না। অন্তরার অভাবনীয় মানসিক শক্তি, এখানে গবেষণার কাজ শেষ করে বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

    হীরার হাতে ভর রেখে ঘরে ঢুকেই অন্তরা হইহই করে ওঠে, এতক্ষণ বন্দী থাকার দরুণ ক্ষুধাতৃষ্ণা কিছুই নাই।

    ম্যাম আপনি রান্না করেন নি তো (অনুবাদ – মাত্রই বারোটা, এখনই রান্না কিসের)। আমি এখন সেই যে মুসুর ডালের খিচুড়িটা আপনি আর আমি ভালবাসি সেইটে বানাব। আর লাঞ্চের জন্য মেথি চিকেন এনে ফ্রিজে রেখে ভুলে গেছিলাম, সেটাও এনেছি। চাচা, একটু খিচুড়ি খেয়ে যাও।

    কন্যে – চার

    ইনি কথা কম কাজ বেশী নীতিতে বিশ্বাস করেন। কাজ করেন জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, গ্রামীণ জীবনযাত্রা, প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ এইসব নিয়ে। সারা ভারতবর্ষ – অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যন্ড, উড়িষ্যা ঊত্তরখন্ড, রাজস্থান, কেরালা, দিল্লি সর্বত্র ঘুরে ঘুরে কাজ করেছেন অসংখ্য প্রজেক্টে। প্রত্যন্ত এলাকায় কাটিয়েছেন মাসের পর মাস, যেখানে পান্তা ভাত একমাত্র খাদ্য, পাকা টয়লেট শহুরে কল্পনামাত্র, তেষ্টা পেলে জল চেয়ে নিতে হয় কারো বাড়ি থেকে, (যদি থাকে আশেপাশে) ঘুম নিকটবর্ত্তী হট্টমন্দিরে।

    কখনও এনার ছবি দেখা যায় রূপায় (অরুণাচল প্রদেশ) স্তুপাকৃতি কমলালেবুর সংগে, কখনো ইনি ভারতীয় সৈন্যবাহিনির সঙ্গে অরুণাচল প্রদেশের প্রতন্ত্য গ্রাম উন্নয়নের কাজে ব্যস্ত, কখনো রডোডেনড্রন জুস প্রকল্প চালাচ্ছেন অনায়াস দক্ষতায়। এনাকে দেখা যায় কখনো কাম্বোডিয়ায়, কখনো থাইল্যান্ডে কখনো বাংলাদেশে, কখনও মালয়েশিয়ায়।

    সেমিনার বা মিটিং ব্যতীত কথাটথা বিশেষ বলেন না, হোয়াটস অ্যাপ, এসেমেস, বা নিতান্ত দরকারে হাতটাত নেড়ে কাজ চালান।

    মাছ খান না, বাংলাদেশে গিয়ে ১৫ কোর্সের ডিনার দেখে (১০ টি মাছের পদ সহ) কিংকর্ত্তব্যবিমুঢ় হয়ে পড়েন।

    এত কম কথা বলে এত কার্য হয়!

    হিড়িম্বা ম্যাডাম চিরকালই এই মেয়েকে দেখে দেখে বড়ো বিস্ময় মানেন।

    এই পর্যন্ত পড়ে পাঠিকা চশমাটি খুলে গুল্লি গুল্লি চোখে তাকালেন – এতটি আগডুম বাগডুম বকলে, কী বোঝা গেল?

    সমস্ত কে বুঝেছে কখন?

    জীবন থেকে নেয়া চারটি ছবি।

    তবে মেয়েদের লড়াই তো চিরকালই কঠিন, তাই বলতে ইচ্ছা হয়, অ মা লক্ষ্মীরা, অর্জিত বিদ্যার প্রয়োগ করুন, নিজের জায়গাটুকু নির্মাণ করে নিন, ধরে রাখুন সযত্নে।

    বাধা দুর্লঙ্ঘ্য হতে পারে, অলঙ্ঘ্য না ভাবাই ভাল।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৩ এপ্রিল ২০১৭ | ২৯০০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১৫82213
  • কুমুদি, তোমার অন্তরাকে চেয়ে রেখেছি। ঃ-)
  • সিংগল k | 57.15.13.26 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:১৯82214
  • আমি আজকে বুঝলাম যে আমি কিচ্ছু বুঝিনি....

    আমি আর কিচ্ছু বুঝতে চাই না...
  • শিবাংশু | 113.217.234.107 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৭ ০৭:৪৪82215
  • দুরন্ত, দুরন্ত, ননস্টপ....
  • লোপামুদ্রা | 57.11.14.122 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৩৬82216
  • দারুন
  • ki hobe jene | 22.208.161.99 (*) | ১৮ এপ্রিল ২০১৭ ০৬:২৬82217
  • খুব ভালো লেখা, নব্নীতা দেব্সেনের ঘরানার -
  • s | 77.59.60.122 (*) | ২০ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:৪৪82219
  • অসাধারণ লেখা। আনন্দবাজারের রবিবাসরীয়র ছোটগল্পের থেকে অনেক অনেক ভালো লেখা। বিশেষ করে লেখার হাত তো অতি চমৎকার। আমি সোসেনের লেখার খুব ভক্ত ছিলাম, এখন এগুলো পড়ে কুমুদির নতুন করে ভক্ত হয়ে গেলাম।
    কুমুদির একটা চটি ইমেডিয়েট ছাপা হোক।
    কুমুদির সংগে একঝলক দেখা হয়েছিলো, দিল্লির নিউ ফ্রেন্ডস কলোনিতে, কল্লোলদা যেবার এসেছিল। নয়দা দিল্লি তুমুল জ্যাম জট পেরিয়ে যে সকলের সাথে সেদিন দেখা হয়েছিল সেটাই আমার ভাগ্য ছিল সেদিন।
  • reek | 94.246.168.11 (*) | ২০ এপ্রিল ২০১৭ ০৯:৪৫82218
  • বাহ্ :)
  • Kaushik | 137.0.0.1 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০১:২৩82220
  • অত্যন্ত ভলো লাগলো কুমুদি। ল্যাবের আরো কিস্সা থাকলে শুনতে চাই।

    ভালো থাকবেন।
  • kumu | 137.0.0.1 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:০১82221
  • এজেড,চাওয়া আবার কী?অন্তরা তো সকলেরি।

    সিংগল কে,শিবাংশু,লোপামুদ্রা(আপনাকে কি চিনি?),কী হবে জেনে,ঋক,ছোট এস(আপনার নাম শুনলেই চিনতে পারব),কৌশিক-সকলকে অসংখ্য,আন্তরিক ধন্যবাদ।অশেষ শুভেচ্ছা।
  • Atoz | 137.0.0.1 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০৬:৩৭82222
  • কুমুদি, ঠিকই তো। অন্তরা হল সবার অন্তরের সম্পদ। ঃ-)
  • kumu | 37.56.191.182 (*) | ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:০৬82223
  • সামান্য সংযোজন

    এইমাত্র ফেবুতে দেখলাম আন্তর্জাতিক মহিলা দিবস উপলক্ষে একজন পদার্থবিদ্যার অধ্যাপিকার বক্তৃতার দুটি লাইন-মহিলা গবেষিকাদের সংখ্যা পুরুষদের তুলনায় উল্লেখযোগ্য ভাবে কম,এবং মহিলারা যে সব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন,সেগুলি অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।

    লাইক- ১১৮।

    কমেন্ট- আমার দেখা পর্যন্ত ১৬ টি।
    ১৫ টি কমেন্ট মহিলাদের ,নাম দেখে যা বুঝলাম।
    ১১ টি কমেন্ট -মিষ্টি, অসাধারণ,এলিগ্যান্ট,গর্জাস লাগছে,প্রাউড অফ য়্যু-ইত্যাদি।

    কিন্তু ৪ টি কমেন্টে বক্তৃতার বিষয় জানবার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে।দেখে আনন্দ হল।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে প্রতিক্রিয়া দিন