এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • আমি কি নিজেকে ভালো শিক্ষক (না কি বলব জ্ঞানার্জন সহায়ক) বলে মনে করি? পর্ব দুই -- ‘ম’ যা লিখেছেন এবং আমার প্রতিক্রিয়া

    Salil Biswas লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১১ জুন ২০১৫ | ১২০৭ বার পঠিত
  • প্রথমেই বলে নেবো, আমি এখানে ও অন্যত্র যা লিখছি তার সবই শ্রমজীবী বিদ্যালয় (আমার ব্লগ পড়লে এবিষয়ে প্রায় সব প্রাথমিক ঘটনাক্রম জানতে পারবেন), এবং অতীতে অন্য কিছু জায়গাতে একই ধরণের কর্ম-প্রয়োগে সঞ্চিত সদর্থক ও নঞর্থক অভিজ্ঞতা থেকে লেখা। সেই কারণে আমার সব বক্তব্যই শ্রমজীবী বিদ্যালয় সংক্রান্ত পরিস্থিতিকে জড়িয়েই বলা হচ্ছে।
    প্রধানত, দুটি বই থেকে আমাদের অভিজ্ঞতা আহরণ-প্রচেষ্টার সূত্রপাত। “আপনাকে বলছি স্যার ।। বারবিয়ানা স্কুল থেকে” আর পাউলো ফ্রেইরের লেখা “পেডাগজি অব দ্য অপ্রেসড”, “কালচারাল অ্যাকশন ফর ফ্রিডম” ইত্যাদি বই আর অন্য অনেক রচনা থেকে। পুরোনো কাজগুলির বিবরণ এখনো লেখা হয়নি।
    প্রথমে আমি “ম” কী কী জানতে চাইছেন তা বলে নিচ্ছি। বাকীদের প্রশ্ন নিয়ে আলাদা আলাদা করে আলোচনা করব।

    ১) “ম” জানতে চেয়েছেন -- মানসিক বিকাশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এমন কোনো সিলেবাস বানানো সম্ভব কিনা, যা একই সঙ্গে পিছিয়ে পড়া ছাত্র/ছাত্রীদের মনেও বিষয়্টা সম্পর্কে আগ্রহ জাগাবে।

    অবশ্যই সম্ভব। প্রথমেই মনে রাখতে হবে, আমরা প্রচলিত স্কুল ব্যবস্থা রাখতে চাইনি। আমাদের অনেকেই মনে করেন শিক্ষাক্ষেত্রে “স্কুল” বস্তুটি তার প্রাসঙ্গিকতা অনেক আগেই হারিয়েছে। সারা পৃথিবীতে অনেকেই তা মনে করেন। তাই, আমরা আরোপিত পাঠক্রম বাদ দিতে চেয়েছি। আমাদের স্কুলে ক্লাস এইট থেকে নাইন-এর মাঝামাঝি পর্যন্ত বিধিবদ্ধ পাঠক্রম ব্যবহার করিনি। নিজেদের মত করে সব বিষয়ে জ্ঞানার্জন প্রক্রিয়াকে মান্যতা দিতে চেয়েছি। সকলে একটা ছক কষে নিয়ে একটা ‘ক্রম’ মানার চেষ্টা করেছি। ক্লাসে শিক্ষকের বক্তৃতার বদলে চালু রেখেছি ছাত্র শিক্ষক কথপোকথন/বিনিময়। কেউ শেখাবে না, নিজে শিখবে প্রশ্ন/অনুসন্ধান/পরীক্ষা/ সংশয়/সংশয়-নিরসন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে। শিক্ষক/শিক্ষাব্রতী পাশে দাঁড়িয়ে প্রক্রিয়াটিতে সহায়তা করবেন। নাইনের মাঝামাঝি থেকে পাঠক্রম আর পাঠ্যপুস্তকের নাগপাশকে আমাদের মানতেই হচ্ছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা না পাশ করলে তো আবার চলবে না। তাই ইচ্ছে না থাকলেও আমাদের প্রথাগত শিক্ষার জেলখানাতে বন্দী থাকতেই হচ্ছে। ফলে বছর দেড়েক-এর পরিশ্রম কিছুটা বৃথা হয়ে যাচ্ছে। তৎসত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুসন্ধিৎসা, প্রশ্ন করার অধিকার, শ্রদ্ধাশীল থেকেও বড়দের সঙ্গে তর্ক করার ভরসা, নিজেদের ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়েও স্পষ্ট করে কথা বলার সাহস, শিক্ষকদের ভুল ধরিয়ে দেবার নৈতিক শক্তি, অন্যের জন্য চিন্তা করা কাজ করা অন্যের সেবা করা, এইসব তারা গত দেড় বছরে শিখেছে। আমরা প্রতিদিন ওদের সঙ্গে অনেকটা সময় ব্যয় করে আমরা বুঝেছি। শিক্ষকের হাতের লেখা খারাপ দেখলে তারা পরিষ্কার বলে দেয়। শব্দের মানে কেউ ভুল করলে নিজের মত প্রতিষ্টা করতে তারা পিছপা হয় না। অপেক্ষাকৃত বয়সে বড় কেউ খাবার নষ্ট করলে ওরা সোজা বলে। হাসপাতাল চৌহদ্দিতে আবর্জনা দেখলে ওরা সরব হয়।
    মনে হতে পারে স্কুলকে গৌরবান্বিত করতে আমি বাড়িয়ে বলছি, বা স্নেহের বশে ওদের দোষের দিকে নজর দিচ্ছি না। তা একেবারেই নয়। ওদের কোনো দোষ নেই, ওরা সব শিখে গেছে, কোনো অন্যায় করে না তা নয়। দুঃসহ “তের-চোদ্দ”র হরেক প্রবণতা ওদের মধ্যে দোলাচল সৃষ্টি করে না তা নয়। সে সব তো স্বাভাবিক। কিন্তু প্রথাগত শিক্ষার জেলখানা আর পাঠক্রমের সাঁড়াশি ওদের সারল্য আর কিশোর বয়সের উচ্ছলতাকে ম্লান করতে পারেনি।
    এও বলে রাখি, আমাদের স্কুলে যত শিক্ষক আছেন, তাঁরা সকলেই যে এই পদ্ধতি মেনে চলেন তা নয়। নীতি হিসেবে সব সময় মানতে পারেন না, পদ্ধতি যে সঠিক সেটা মেনে নিয়েও পারেন না। অনেকে নিজেদের উচ্চাসন থেকে নামাতে পারেন না। অনেকে একটা নীরব (কখনো আবার ততটা নীরবও নয়) বিরোধিতায় ব্যাপৃত আছেন। অবশ্য, দুই মতের বিরোধ স্বাভাবিক এবং কাম্য।

    ২) “ম” জানতে চেয়েছেন -- হাতে কলমে শিক্ষার উপর কতখানি জোর দেওয়া হবে?

    এবিষয়ে স্কুলে স্পষ্ট ভাবনা আছে। ছাত্ররা এমনিতেও যথেষ্ট কাজ করে হাসপাতালে। গাছপালা, বাগান, হাসপাতাল চত্বরে নানান কাজ করে ওরা, হাসপাতালের ভিতরেও কাজ করে ওরা। তবে হাতে কলমে উপার্জন-সক্ষম হয়ে ওঠার মত কাজ এখনো কিছু করানো হচ্ছে না। অবশ্য আমরা ইতিমধ্যে কয়েকজনকে চিহ্নিত করেছি যাদের বিভিন্ন পেশায় ও হাতের কাজে স্বাভাবিক উৎসাহ ও প্রবণতা দেখা গেছে। মাধ্যমিক হয়ে গেলে বৃত্তিমূলক কিছু পাঠক্রম তৈরি করা হবে, যেখানে ওই ছেলেমেয়েদের যুক্ত করা হবে। ‘শ্রমের মর্যাদা’ গোছের আপ্তবাক্য নয়, প্রকৃত উৎপাদন-মূলক কাজ ওদের করা দরকার।

    ৩) “ম” জানতে চেয়েছেন -- শিক্ষক এগিয়ে থাকা ছাত্র/ছাত্রীদের মধ্যে থেকে সহকারী হিসেবে কাউকে ক্লাশে সাহায্য করার জন্যে ডেকে নেবেন কিনা?

    এটা একেবারেই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার অনেকটা। তবে নীতিগত ভাবে এটা করা যেতেই পারে। আমি আমার ক্লাসে এটা করেই থাকি। আবার এটাও ঠিক যে সব ব্যাপারেরই আমরা ছাত্রদের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই জ্ঞানার্জনের প্রক্রিয়া চালু রাখি, ফলে সকলেই শিক্ষককে সর্বদাই সাহায্য করছে।

    ৪) “ম” জানতে চেয়েছেন -- শিক্ষকের মূল্যায়ন ছাত্র/ছাত্রীরা করতে পারবে কিনা।

    অবশ্যই পারবে। তারা তা করেই থাকে। সব সময় নিয়ম করে নয়, কিন্তু এই প্রক্রিয়াও সব সময় চালু আছে। উপরে দুটো উদাহরণ দেওয়াই হয়েছে। তাছাড়া, নিয়ম করে শিক্ষক-ছাত্র আলোচনা সভা হয়। সেখানে পারস্পরিক কথাবার্তায় অনেক সূত্র উঠে আসে, যেখান থেকে শিক্ষাব্রতীরা নিজেরাও শিক্ষা নিতে পারেন। মাসিক টিচার সভাতেও ছাত্ররা অনেক সময়েই যোগ দেয়।

    ৫) “ম” একটি কথা তুলেছেন -- শিক্ষক প্রত্যেকটি ছাত্র/ছাত্রীর দুর্বলতা এবং জোরের জায়গা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকবেন, দরকার হলে একটা নোটবুকে তিনি সেটা টুকে রাখবেন, এবং অভিভাবকের সঙ্গে অন্তত বছরে দুবার সেগুলো নিয়ে খোলামনে আলোচনা করবেন।

    এটাও করা হয়। একটা বড় খাতায় ছাত্রদের মূল্যায়ণ লিপিবদ্ধ করা হয়। তাছাড়া, প্রতিদিন না না ভাবে ওদের নিয়ে নানান ভাবে আলোচনা হয়। সেখানে একটা মাপকাঠি মাথায় রেখেই আলোচনা চলে। তবে, অভিভাবকদের খুব পাওয়া যায় না। এই ছেলেমেয়েরা সকলেই দূর দূর থেকে এসেছে। কেউই খুব সহজে এতদূরে নিয়মিত আসতে পারেন না। খরচ অত্যন্ত বেশি পড়ে যায়। কয়েকটি ক্ষেত্রে অবশ্য অভিভাবকদের পাওয়া গেছে। আর কেউ কেউ এসে পড়েছেন, যাঁদের সঙ্গে কথা বলা গেছে। আর একটি কথা হল, এদের অনেকেই পরিবারে প্রথম পড়াশুনায় এসেছে। খুব ব্যক্তিগত কিছু মন্তব্য ছাড়া কিছু প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় না তাঁদের কাছ থেকে।

    ৬) “ম” একটি কথা তুলেছেন -- ছাত্র,শিক্ষক এবং অভিভাবক একসঙ্গে একটা টিম হিসেবে কাজ করবেন।

    শ্রমজীবী বিদ্যালয়ে ‘টিম’ হিসেবেই কাজ হয়।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১১ জুন ২০১৫ | ১২০৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অবন্তিকা | 126.202.195.218 (*) | ১১ জুন ২০১৫ ০৯:১২67208
  • দ্বিতীয় পর্ব পড়ে ছবিটা অনেকটা স্পষ্ট লাগলো l নইলে কিরম প্রশ্নে প্রশ্নে জর্জরিত হয়ে গেছিলুম l তিনটে জিনিস জানতে চাই সলিলকাকু l
    এক- "ক্লাসে শিক্ষকের বক্তৃতার বদলে চালু রেখেছি ছাত্র শিক্ষক কথপোকথন/বিনিময়। কেউ শেখাবে না, নিজে শিখবে প্রশ্ন/অনুসন্ধান/পরীক্ষা/ সংশয়/সংশয়-নিরসন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে।" এক্ষেত্রে, সম্পূর্ণ অজানা একটা বিষয় নিয়ে পড়ুয়াদের যদি দুম করে প্রশ্ন-উত্তর করতে বলা হয়, ওরা কতটা স্বচ্ছন্দ হবে? প্রাথমিক পর্যায়ে একটা ধারণা তৈরী করার জন্য বা বিষয়টায় ইন্টারেস্ট আনার জন্য ছোটখাটো 'বক্তৃতা' কি জরুরি নয়? বরং ডেলিভার করার ধরণটা কিরকম হবে তাই নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট চলতে পারে l যেমন- গল্পে বলা, ভিজুয়াল ডেমনস্ট্রেশন ইত্যাদি l
    দুই- পরীক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে যদি একটু ধারণা দেন...l মানে বছরে কতবার, কী কী, পাশ ফেলের নিয়মকানুন l
    তিন- অ্যাডলেসেন্ট-দের সেক্স এডুকেশন নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো গাইডলাইন আছে কি?
  • কল্লোল | 111.63.205.169 (*) | ১২ জুন ২০১৫ ০২:৩৩67209
  • আমার মানে হয়, ক্লাশ বক্তৃতার জায়গায় কথোপকথন অনেক ব্শী কাজে দেয়। অনেকটা নির্ভর করে শিক্ষকের উৎকর্ষের উপর। শিক্ষকের একটা ভূমিকা থাকে বিষয়টাকে শুরু করিয়ে দেওয়া। আর মাঝে মধ্যে দরকারী ইনপুট দেওয়া।
    বিষয়টা এরকম নয় যে, হঠাৎ শিক্ষক বললেন যে আজ আমরা মহাবিশ্বের সম্প্রসরণতা নিয়ে কথা বলবো। নিশ্চই তার একটা পূর্বাপর থাকে, একটা প্রেক্ষিত থাকে। তবেই একটা আলোচনা হতে পারে।
    এরকম কি হতে পারে?
    একটা জায়গা ক্রমশঃ বাড়ছে, এটা কিভাবে বুঝবো? ধরা যায় একটা শহর বাড়ছে - কিভাবে বুঝবো?
    আমি নিশ্চই ছাত্রদের মতো করে ভাবতে পারবো না, তবু চেষ্টা করি।
    - শহরের সীমানা বাড়ছে।
    - এর মানে কি?
    - আগে শহর অমুক জায়গায় শেষ হয়ে যেতো। এখন সেটা ছাড়িয়ে গেছে।
    - আগে শহর ছাড়িয়ে যেতে একঘন্টা লাগতো এখন বেশী সময় লাগছে।
    - আমাদের জানলা দিয়ে আগে শহরের বাইরের জায়গাগুলো দেখা যেতো, এখন দেখা যাচ্ছে না।
    - তার মানে, আমার বাসা থেকে শহরের শেষপ্রান্ত আগে যেটা ছিলো এখন তার থেকে দূরে সরে গেছে।
    এরপর সেই বহুপ্রচলিত বেলুনে ফুটকি পরীক্ষাটি হাতেকলমে করা যেতে পারে। বেলুন যত ফুলছে ফুটকিদের পারষ্পারিক দূরত্ব তত বাড়ছে।
    কিন্তু তাতে কি করে বোঝা গেলো যে মহাবিশ্ব বাড়ছে?
    এবারে হাবলের গল্প আসতে পারে। তাতে হাবল কে কি কেন কবে কোথায় আসবে। গ্যালিলিও কোপার্নিকাস আসবে। টেলিস্কোপ আসবে। হাতেকলমে একটা টেলিস্কোপ তৈরী করা যেতে পারে।
    হাবলের পর্যবেক্ষণ নিয়ে বলা যেতে পারে, যে হাবল দেখছেন তারাদের রং ফিকে হচ্ছে।
    এখানে রং ও আলো নিয়ে কথা হতে পারে। কিভাবে আমরা রং দেখতে পাই।
    রাতে খেলার মাঠে একটা ছোট্ট টর্চের আলো ক্রমশ দূরে নিয়ে গেলে কেমনভাবে আলো ফিকে হয়ে যায় সেটা দেখানো যেতে পারে। ফলে আলো ফিকে হয়ে যাওয়ার সাথে দূরত্বের সম্পর্ক প্রমাণ করা যেতে পারে।
    এরকম আর কি।
    আমি পদার্থ বিদ্যার কেউ নই। ব্যাঙ্গালোর মিররের একটা পপুলার সায়েন্স কলাম থেকে নিয়েছি ধারনাটি। ভুল কিছু থাকলে সে দায় আমার।
  • cm | 127.247.99.180 (*) | ১২ জুন ২০১৫ ০২:৪৯67210
  • শ্রমজীবীর স্কুল সম্পর্কে ধারণা নেই। অন্তত পক্ষে ছাত্র শিক্ষক অনুপাতটুকু যদি কেউ জানান।

    পদার্থবিদ্যা যদি অমন সহজে শেখা যেত কি ভালই না হত! কেন যে ওর মধ্যে অঙ্ক ঢুকিয়েছে কে জানে।
  • cm | 127.247.99.180 (*) | ১২ জুন ২০১৫ ০৩:০২67211
  • "মানসিক বিকাশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এমন কোনো সিলেবাস বানানো সম্ভব কিনা, যা একই সঙ্গে পিছিয়ে পড়া ছাত্র/ছাত্রীদের মনেও বিষয়্টা সম্পর্কে আগ্রহ জাগাবে।" পয়সা দিলে সব কিছুর কাস্টমাইজেশন সম্ভব। বিনে পয়সায় দু এক জনের জন্য কেউ করে দেখাতে পারেন তবে বর্তমান ব্যবস্থায় বড় স্কেলে সম্ভব নয়। আমি স্বপ্নের ছবি নিয়ে কথা বলছিনা।
  • কল্লোল | 111.63.205.169 (*) | ১২ জুন ২০১৫ ০৩:১২67212
  • সিএম। আয় ভাই গলা জইরে কেন্দে নি।
    আমি না অঙ্কে কোনকালে সুবিধা কত্তে পল্লাম না। ক্লাশ ফাইবে অঙ্কে ৫ পেয়েছিলুম। ভয়ে আর বিজ্ঞান পড়া হলো না। এখন এখানে কিছু বন্ধুর কাছে পড়ি। মাইরী বলছি একফোঁটা অঙ্ক করায় না, খালি গল্প বলে। কি ভালো কি ভালো।
  • | 183.17.193.253 (*) | ১২ জুন ২০১৫ ০৩:৪৩67213
  • আপনাদের শিক্ষাদান পদ্ধতির উপর সম্পূর্ণ আস্থা ও শ্রদ্ধা রেখে কয়েকটা কথা মনে হলো

    আপনাদের স্কুলটি যেহেতু ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরী এবং সরকারী অনুদান প্রাপ্ত নয় তাই ধরে নিচ্ছি আপনাদের কারিকুলাম নিজেরাই তৈরী করেন,এবং সেখানে সরকারী রূপরেখা অনুসরণ করার কোনো দায় আপনাদের নেই।ক্লাশ নাইন থেকে যেহেতু সরকারি পাঠক্রম মেনে চলতে হয় তাই আপনারা কি শুরু থেকেই একটা সমান্তরাল পাঠক্রম তৈরী করেন নাকি আপনাদের পছন্দমত সিলেবাস তৈরীর স্বাধীনতা আছে? মানে আমি সিলেবাস সম্পর্কে জানতে আগ্রহী।

    ছাত্রছাত্রীরা কি যে কোনো বিষয়ে ভালোকরে শেখা এবং হাতেকলমে করে দেখার জন্যে আলাদা আলাদা সময় পায় নাকি একটা নির্দিষ্ট( ধরা যাক প্রজাপতির জীব্নচক্র পড়ার জন্যে ৪ টে ক্লাশ)সময়ের মধ্যে বিষয়টা শেষ করে দিতে হয়?

    আপনি লিখেছেন, শিক্ষকদের অনেকেই এই শিক্ষাপদ্ধতি মেনে চলেন না- সমস্ত শিক্ষকদের জন্যে নির্দিষ্ট সময় পরে কোনো বিশেষ শিক্ষণ পদ্ধতি বা কোনো আলোচনাচক্র অথবা বাইরে থেকে কাউকে এনে আলাপ-আলোচনা বা ট্রেনিংএর ব্যবস্থা আছে কি? মানে যিনি শিক্ষক তার মূল্যায়ন শুধু ছাত্রছাত্রীরা নয়, অন্য শিক্ষক বা তিনি নিজে কিভাবে করছেন মানে যদি আদৌও করেন সেই পদ্ধতিটি কী?

    আর প্রথম প্রজন্মের যারা লেখাপড়া করতে আসছে,তাদের বাড়ির লোকজনের ফিডব্যাক কেমন জানতে আগ্রহ হচ্ছে। সম্ভব হলে একটু লিখবেন।
  • q | 125.112.74.130 (*) | ১২ জুন ২০১৫ ০৪:৫৩67214
  • সিরিয়াস পদার্থবিদ্যা অঙ্ক না করে পড়া সম্ভব ? পপুলার সায়েন্স নয় physics
  • abantika | 122.79.36.171 (*) | ১২ জুন ২০১৫ ০৬:৪৬67215
  • অঙ্ক শুধুমাত্র অঙ্কের জন্য কষতে খুব বিরক্তিকর লাগত আমার. অথচ সেই অঙ্কই যখন ফিজিক্স এর প্রবলেম সলভ করতে কষেছি, দিব্যি মজা লেগেছে (যদিও আমার ফিজিক্স এর দৌড় এইচ এস অবধি). লজিকটা বোধ হয় এই ছিল যে কোনোদিকে কোনো সমস্যা নেই খামখা শুধুমুধু আঁক কষতে যাব কেন!!!
    ছোটদের ক্ষেত্রেও এটাই মনে হয়, যদি আগে পিছে একটা গল্প তৈরি করে দেওয়া যায়, বা তৈরি করে নিতে বলা হয় ক্ষেত্র বিশেষে, মেটিরিয়ালিসটিক আর এবস্ট্রাক্ট- দুরকম ভাবনার স্তরই উন্নততর হবে.
  • sswarnendu | 138.178.69.138 (*) | ১২ জুন ২০১৫ ০৮:০৯67216
  • সিরিয়াস পদার্থবিদ্যা অঙ্ক না করে করা সম্ভব নয় এটা যেমন ঠিকই... তেমনি অঙ্ক জিনিসটাও ইন্টারঅ্যাকটিভভাবে শেখান যায় না এইরকম কোন ধারণা থাকারও কোন কারণ নেই বোধহয়... বস্তুত, আমার মনে হয় সারা পৃথিবীতেই অঙ্ক পড়ানো, বিশেষত মাস্টার লেভেল অবধি, খুবই বাজে... খুব অথরিটারিয়ান....আদৌ ইন্টারঅ্যাকটিভ নয়... সেইটা পাল্টানো শুধু পদার্থবিদ্যা না, অঙ্কের জন্যই দরকার ...
  • cm | 116.208.150.140 (*) | ১২ জুন ২০১৫ ০৯:৩৯67217
  • তার কারণ যারা অঙ্ক পড়ান তাদের বেশির ভাগেরই বিষয়টির দার্শনিক ভিত্তি সম্পর্কে ধারণা নেই।
  • abantika | 122.79.36.171 (*) | ১২ জুন ২০১৫ ১১:০৯67218
  • শুধু অঙ্ক! ইতিহাসের কথাই ধরি না কেন! আমাদের কেলাসে বুলবুলদি ইতিহাস পড়াতেন. ও বিষয়টায় আমার এমনিতেই কোনদ্দিন রুচি নেই, তার ওপর বুলবুলদি ঘরে ঢুকে চেয়ারের পেছনে দাঁড়িয়ে গড়গড় করে রিডিং মেরে চলেছেন. কাহাতক ভাল্লাগে. একদিন গরমের ছুটির আগে আগে, উনিও ঝিমোচ্ছেন, আমরাও হাই তুলছি. হঠাত সেঁজুতিকে বল্লুম- নাচ মেরে বুলবুল বলে চেচাতে পারলে দুটাকার আলুকাবলি কিনে দেবো. ও ব্যাটা চিরকালই গুন্ডি টাইপ. ব্যাস, আর দ্যাখে কে. বেঞ্চের চারজনকেই ধর্মের ষাঁড় বলে বড়দির রুমে.
    তেইশ বছর বয়সে হিন্দু ইউনিভার্সিটিতে পরীক্ষা দিতে গিয়ে সারনাথ ঘুরেছিলাম. তখন প্রথম উপলব্ধি হয়েছিল, ইতিহাস ব্যাপারটা স্রেফ মুণ্ডুভাঙা কনিষ্ক অথবা দেড় ব্যাটারি রঞ্জিত সিং নয়.
    অন্তর্নিহিত দর্শন? ইশকুল কেন, কলেজেও যিনি ফোর্থ পেপারে ইড-ইগো-সুপারইগো পড়িয়েছিলেন তিনিও একটা ক্লাসে এমনভাবেই বুঝিয়েছিলেন যাতে দশ নম্বরের উত্তর লেখা যায়.
  • sswarnendu | 138.178.69.138 (*) | ১২ জুন ২০১৫ ১২:৩২67219
  • দার্শনিক ভিত্তি নয় শুধু, জার্নিটা বোঝা যায় না আসলে যেভাবে পড়ানো হয়... অঙ্কেরও যে একটা যাত্রা আছে... সেইটা বোঝা যায় না... মনে হয় যেন শুধু অ্যাবস্ট্রাক্ট কনসিডারেশন থেকে কিছু ডেফিনিশন দেওয়া হয়েছে আর সেগুলো থেকে কিছু থিওরেম ডীডিউস করা হয়েছে...
    আমরা নিজেদের মধ্যে বলতাম 'থিওরেম-লেমা-প্রুফ' ম্যাথেমেটিক্স ...
    ভীষণ ডাল এবং বোরিং...
  • pi | 192.66.11.202 (*) | ১৪ জুন ২০১৫ ০৩:২১67220
  • মনে পড়ে গেল, দীপাঞ্জন রায়চৌধুরী প্রথম দিনের মিটিং এ দেখিয়েছিলেন, প্রতিফলন প্রতিসরণ কীভাবে বোঝানো যাবে, খুব সাধারণ দু একটা জিনিস দিয়ে আর তাই দিয়ে বই ছাড়াই কীভাবে আলো র সম্বন্ধে বেসিক ধারণা করানো যায়। দীপাঞ্জনদা , শুভাশিসদা বিজ্ঞান পড়ানো নিয়ে ওঁদের মেথডগুলো নিয়ে কিছু উদাহরণসহ বিস্তারিত লিখলে খুব ভাল হয়, রাখিরা সোশ্যল সায়েন্স।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন