এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • যৌননির্যাতন সম্পর্কে কিছু কথা যা আমি বলতে চাই

    shamik ghosh লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৮ অক্টোবর ২০১৭ | ২৫৯২ বার পঠিত
  • মিডিয়া ট্রায়ালের পর শুরু হয়েছে এক নতুন ফেনোমেনন সোশ্যাল মিডিয়া ট্রায়াল। সবার কী সুন্দর বিচার, ফাঁসি, জেল, সব কিছুর নিদান দিয়ে দেন। নির্ভয়া কান্ডের পর গোটা ফেসবুক জুড়ে ফাঁসির জন্য কী প্রচণ্ড চিৎকার। শিক্ষিত হোক বা অশিক্ষিত, একটা গোটা জাত ফাঁসি চায়, মৃত্যুদণ্ড চায়। নির্ভয়া কাণ্ডের বিচার হয়ে গিয়েছে। একজন অভিযুক্ত জেলের মধ্যে আত্মহত্যা করেছেন। ঠিক যেমন ধনঞ্জয়ের ফাঁসি হয়েছিল। কিন্তু ধর্ষণ থেমেছে কী?
    ধর্ষণ এইভাবে থামে না। থামতে পারে না। এই সব আলোচনায় লোকে হোয়াটঅ্যাপের মিথ্যে উদ্ভট তথ্য দেয়। এক ভদ্রমহিলা গোটা রাত ধরে ফেসবুকে আমার সঙ্গে তর্ক করে গেলেন যে মৃত্যুদণ্ড আছে বলেই সিঙ্গাপুরে ধর্ষণ হয় না। অথচ পরে তথ্য ঘেঁটে জানতে পারলাম সিঙ্গাপুরে ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদণ্ড উঠে গিয়েছে। এবং সিঙ্গাপুরের ধর্ষণের হার যথেষ্ট বেশি। বরং ধর্ষণ কিংবা খুনের হার সেই সব দেশে কম যেখানে মৃত্যুদণ্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। এইসব কথা তাঁকে জানানোর পর তিনি বললেন আরে তাহলে যে আমাদের টুরিস্ট গাইড আমাদের এইকথা বলেছিল! বুঝুন কোন বোধ কোন তথ্য নিয়ে তর্ক করতে এসেছিলেন। কিন্তু কথা বলতে যান, ভ্রান্ত তথ্য তুলে ধরবেন লোকে, সেইগুলো তারা হোয়াটসঅ্যাপে পেয়েছেন।
    এই যে আরূষি তলোয়ারের ঘটনা, তাঁর বাবা মাকে মিডিয়া ট্রায়ালে তুলে ফেলল, সবাই জেনে গেলেন এটা একটা অনার কিলিং। আবার পালটা তথ্য উঠে এল। অভিরূক সেন একটা বই লিখলেন। বলিউড একটা সিনেমা করল। আবার হাইকোর্ট তাঁদের বেকসুর খালাস দিলেন। এই বিচার কী আগের বিচারের থেকে নির্ভুল? আদালতের রায়ের যে দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া থাকে তার মধ্যে অনেক কিছুই ঘটে। পুলিশ তথা ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সির রিপোর্ট, তার স্বাক্ষ্যপ্রমাণ পেশ করা না করা, ডিফেন্সের নিজস্ব যুক্তি পালটা স্বাক্ষ্যপ্রমাণ, কোর্টের আমলাতন্ত্রের দুর্নীতি এই সব মিলেই শেষ অবধি জজ সাহেব সিদ্ধান্ত নেন। কাল যদি আবার সুপ্রিমকোর্টে কেস ওঠে, কাল আবার তলোয়ার দম্পতির ক্ষেত্রে কোর্ট উল্টো সিদ্ধান্ত নেয় তখন আবার তারা দোষী হয়ে যাবেন।
    কিন্তু আপনি কখনও যুক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ করে সমাজের নিজস্ব সমস্যাগুলো তুলে ধরতে পারবেন না। যেন প্রতিটা ঘটনাই আসলে সমাজ বিরোহিত ঘটনা। কয়েকটা খারাপ লোকের ঘটানো ঘটনা। এই দুষ্টু লোক ভ্যানিশ হয়ে গেলেই সব ভ্যানিশ হয়ে যাবে।
    যে দেশের সিংহভাগ মানুষ নিরক্ষর, যে দেশে যৌনশিক্ষা আজও ট্যাবু (হ্যাঁ কিছু তথাকথিত বামপন্থীর কাছেও), যে দেশে মাসমিডিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে নারীর পণ্যায়ন করে, যে দেশে নারীর পোশাক দিয়ে তার চরিত্রের ফিরিস্তি করা হয়, যে দেশে ফেয়ার অ্যান্ড লাভলির বিক্রি বৈধ, যে দেশের পুলিশই যৌন অপরাধ করে, যে দেশে টাকা থাকলেই অনেককে কিনে ফেলা যায় সেই দেশে দু'হাজার বার ফাঁসি আর চার হাজারবার জেল হলে, যৌনাঙ্গ কর্তন হলেও ধর্ষণ থামবে না। যৌনহয়রানিও থামবে না।
    হ্যাঁ আমার এই স্ট্যাটাসে কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া নাট্য জগতের ঘটনাটাও আছে। ঘটনাটা যদি সত্যি হয় তাহলে ন্যাক্কারজনক। কিন্তু ঘটনাটি কয়েকজন বলেছেন বলেই সেটা সত্যি প্রমাণিত হয় না। মিডিয়া ট্রায়াল দিয়ে হয় না, সোশ্যাল মিডিয়া ট্রায়াল দিয়েও হয় না। ঘটনাটি প্রকৃত বিচারে, বিচারের অজস্র ত্রুটি থাকা সত্যেও, সত্য হলে হয়।
    তবে কী কেউ প্রতিবাদ করবেন না? কেউ টু শব্দটিও করবেন না? সবাই চুপ করে দেখবেন শেষে বিচারে কুড়ি বছর পর কী হল? না, তা কেন? বলবেন, প্রতিবাদ করবেন, সত্য না মিথ্যে জানতে চাইবেন, সরকারের ওপর প্রকৃত তদন্তের জন্য চাপ সৃষ্টি করবেন। কিন্তু ন্যাক্কারজনক অভিযোগ অতএব সত্য অতএব সে দোষী অতএব ওঁকে শালা লটকে দাও ওকে চাবকে ছাল ছাড়িয়ে নাও এই কথা বলবেন না।
    Metoo হ্যাশট্যাগটা যেমন। অসম্ভব ভালো একটা উদ্যোগ ছিল। গোটা সমাজের বিরাট একটা অংশই যে যৌনহয়রানির শিকার সেটা ক্রমশ বুঝে ফেলা যাচ্ছিল। কিন্তু তারমধ্যেও হঠাৎ কিছু সেলফ ইমপোজড অভিভাবক এসে উদয় হলেন। যৌনলাঞ্ছনাকারী তাহলে কারা? তাদের লটকানো যায় কী করে? তাদের লজ্জা করেনা কেন? এইসব অবান্তর প্রশ্ন তোলা হল। আরে লজ্জা করেনা বলেই ওরা যৌনহেনস্থা করেন। কখনও বিকৃতির জন্য করেন, কখনও পুরুষতন্ত্রের যা খুশি করতে পারার উদগ্র বাসনা থেকে করেন, আবার কখনও প্রকৃত সুস্থ যৌনতা পায়না বলে এক চাপা যৌনবোধ থেকে করে। প্রকৃত সুস্থ যৌনতা অবশ্য এইদেশে পাওয়া অনেকের পক্ষেই অসম্ভব। এইদেশে ভিক্টোরিয়ান মরালিটির ধারক ও বাহকরা সেক্ষেত্রেও ধরপাকড় চালান। সামান্য চুমু খেলেও চালান। কিন্তু সেই নিয়ে কেউ কথা বলবে না। কথা হবে রেটোরিকে, বিকৃত সামন্ততান্ত্রিক মানসিকতাকে নারীবাদ বলে চালানোর বিভৎস প্রচেষ্টা দিয়ে।
    এ এক আশ্চর্য শহর! এ এক আশ্চর্য জাতি! এ এক আশ্চর্য অশিক্ষা!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৮ অক্টোবর ২০১৭ | ২৫৯২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • pi | 57.29.211.184 (*) | ১৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:৫৪61777
  • হুম। অনেকাংশে একমত।
    তবে নাটকের কেসে দেখলাম, মিডিয়া ট্রায়ালের বাইরেও অনেক কিছু হচ্ছে। কাল সভা ছিল। গ্রেপ্তারের দাবি। তারমানে থানায় অভিযোগ হয়েছে কি?
  • aranya | 172.118.16.5 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৪৪61779
  • ভারতে যৌন নিগ্রহের ঘটনা গুলো খুবই আন্ডার রিপোর্টেড না?

    আরও বেশি রিপোর্টিং হলে হয়ত দেখা যাবে সুইডেনের ওপরে
  • pi | 24.139.221.129 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৩৫61780
  • ভারতে আণ্ডাররিপোর্র্টিং বলেই সুইডেনের থেকে কম।
  • sm | 52.110.193.255 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:১৩61781
  • এই আন্ডার রিপোর্টিং আর ওভার রিপোর্টিং ভারী গোলমেলে জিনিস।ভারত বা আফ্রিকা বা মধ্যপ্রাচ্যের দেশ হলে ধরেই নেওয়া হয় আন্ডার রিপোর্টিং!হলোইবা।
    কিন্তুক লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে এতো সচেতন দেশ সুইডেন তো অনেক ইউরোপ এর দেশের চাইতে ঢের খারাপ!
    দুই ১৮ বছরের নিচে বিবাহ নিয়েও প্রচুর শোরগোল চলছে।
    কিন্তু ইউরোপের অধিকাংশ দেশেই দেখলাম কোর্টের পারমিশন বা বাবা মায়ের পারমিশন থাকলে ১৬ বছরেই বিয়ে আইনত সিদ্ধ!
  • PM | 149.5.228.54 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:১১61782
  • যদি ধরেও নেন রেপ/যৌন নির্যাতন ভরতে আনডার রিপোর্টেড তাহলেও দুইখান কথা থেকে যায়---

    ১। প্রতি তিন জন মহিলার ১ জন যৌন নিগ্রহের স্বীকার হন ইউরোপে আর ৫% ধর্ষিতা হন--
    At the top end, 52 percent of women in Denmark were said to have suffered physical and/or sexual abuse, while the rate was 47 percent in Finland and 46 percent in Sweden.

    http://www.france24.com/en/20140305-one-third-women-eu-victims-sexual-violence-crime-rape/

    "উন্নত জাতি, উন্নত দেশ, উন্নত শহর " এর এহেন ভয়ন্কর পরিস্থিতি কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায়--ভারতের পরিস্থিতির সাথে তুলনা না করেও।

    ২। ভারতে যা স্টাডি হয়েছে তাতে দেখা গেছে যে ৫-৬ % রেপ রিপোর্টেড হয়।

    http://www.thehindu.com/news/national/marital-and-other-rapes-grossly-underreported/article6524794.ece

    http://rchiips.org/NFHS/NFHS-3%20Data/NFHS-3%20NKF/Report.pdf

    ২০১৫ সালে রিপোর্টেড রেপ ভারতে ৩৪৬০০ কেস রিপোর্টেড হয়েছে। তাহলে হিসেব মতো ৩৪৬০০ * ২০= সর্বোচ্চ ৬৯২০০০ মোট রেপ হয়েছে দেশে। দেশের জনসংখ্যা ১২০ কোটি ধরলে ভারতে প্রতি ১০০০০০ জনসংখ্যায় রেপ হয়েছে 57.66 টি রিপোর্টেড আন রিপোর্টেড মিলিয়ে। ( শুধু রিপোর্টেড রেপ ১০০০০০ জনে ২ টি, যা পৃথিবীতে অন্যতম কম)

    ওদিকে সুইডেনে প্রতি ১০০০০০ জনসংখ্যায় রিপোর্টেড রেপ হয় 53.2 টি

    এই হিসেবেও লিঙ্গসাম্যে দুনিয়ার ১ নং দেশ সুইডেনের সাথে "আমাদের অনুন্নত দেশ, অনুন্নত শহর, অনুন্নত জাতি"র পার্থক্য খুব বেশী নয়!!!

    https://www.wonderslist.com/top-10-countries-with-maximum-rape-crimes/

    ৩। ভারতে উত্তর পুর্বের রাজ্য গুলো তে সামজিক লিঙ্গসাম্য তুলনায় বেশী বলে ধারনা। অথচ ভারতে সবচেয়ে বেশী ধর্ষন হয় (রিপোর্টেড) মিজোরামে -- প্রতি ১০০০০০ জনসংখ্যায় তে ১০ জন--যেখানে জাতীয় গড় 2.1। গুজরাটে সবথেকে কম 0.8

    শুধু লিঙ্গ সাম্যের সাথে নারী যৌন নির্যাতন এর কোরিলেসন দাড়াচ্ছে না বলেই মনে হয় , করলে তা অতি সরলীকরন হবে। আরো অন্য ফ্যাকটর নিশ্চই আছে যা নির্নয় সাপেক্ষ।

    "---- আবার কখনও প্রকৃত সুস্থ যৌনতা পায়না বলে এক চাপা যৌনবোধ থেকে করে। প্রকৃত সুস্থ যৌনতা অবশ্য এইদেশে পাওয়া অনেকের পক্ষেই অসম্ভব। "

    "প্রকৃত সুস্থ যৌনতা"বলতে ঠিক কি বোঝাচ্ছেন এটাও ওপোরের তথ্যের প্রেক্ষিতে লেখক আর একটু খোলসা করলে বুঝতে সুবিধা হবে। মানে ঠিক কিরকম যৌনতা লেখক চাইছেন যা সুইডিশ, আমেরিকান, ফরাসী, জার্মানরাও পায় না , সেটাও বোঝা দরকার একটু ঃ) ।
  • PM | 149.5.228.54 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:২৫61783
  • বাই দা ওয়ে সুইডেনেও ১০০% কেস রিপোর্টেড হয় না।

    According to Brå in 2013, it is likely that as many as 80 per cent of all rapes are not reported, which was confirmed in a 2014 study of the extent of violence against women, funded by the Government of Sweden and the Crime Victim Compensation and Support Authority. This can be compared to a 2007 British Government report, estimating that between 75 and 95 percent of rapes are not reported in the United Kingdom.

    আগের পোস্ট এ যে তথ্য গত তুলনা করা হয়েছে তা সুইডেনের রিপোর্টেড রেপের সাথে ভারতের মোট রিপোর্টেড+ আনরিপোর্টেড রেপ এর সাথে। তাতেও পরিস্থিতি ভালো কিছু নয়।

    অথচ সুইডেনেও ৮০ % ঘটনা আনরিপোর্টেড আর ভারতে ৯৪% কেস আনরিপোর্টেড

    শুধু মাত্র "আনরিপোর্টেড" ক্রাইমের ভিত্তিতে সুইডেন আর ভারতের তুলনাটাও অতিসরলিকরন
  • Ekak | 53.224.129.56 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:২৮61784
  • লিঙ্গ সাম্য থাকলে যৌন নির্যাতনের ভিসিবিলিটি বাড়ে । কমতে যাবে কোন দুঃখে ? যেমন ধরুন মেয়েরা গায়েগতরে শক্তিশালী হলে কী নির্যাতন কমবে ? না , কমবে না । কিন্তু ওপেনলি ক্যালাকেলি করবে তাই ভিসিবিলিটি বাড়বে । তো , ফৌজদারীর অধীনে আনতে গেলে ভিসিবিলিটি একটা বিশাল ফ্যাক্টর , তাই গায়ের জোর বা লিঙ্গ সাম্য টাম্য যা বলেন আপনারা ওগুলো জরুরি । কিন্তু ওগুলো কখনোই নির্যাতন কমাবে না ।
  • PM | 127.194.0.55 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৭ ০৮:৪৪61778
  • লেখকের কনক্লুসান নিয়ে কিছু ব`ক্তব্য আছে-

    "প্রকৃত সুস্থ যৌনতা অবশ্য এইদেশে পাওয়া অনেকের পক্ষেই অসম্ভব। এইদেশে ভিক্টোরিয়ান মরালিটির ধারক ও বাহকরা সেক্ষেত্রেও ধরপাকড় চালান। সামান্য চুমু খেলেও চালান। কিন্তু সেই নিয়ে কেউ কথা বলবে না। কথা হবে রেটোরিকে, বিকৃত সামন্ততান্ত্রিক মানসিকতাকে নারীবাদ বলে চালানোর বিভৎস প্রচেষ্টা দিয়ে।
    এ এক আশ্চর্য শহর! এ এক আশ্চর্য জাতি! এ এক আশ্চর্য অশিক্ষা! "

    কিন্তু সমস্যা হচ্ছে "প্রকৃত সুস্থ যৌনতা " ঠিক কোথায় আছে লেখাকের মতে? আর সেটা হলেই কি মহিলাদের নিগ্রহ বন্ধ হয়ে যাবে?

    মহিলাদের হয়রানি ভারতের বা তৃতীয় বিশ্বের একচেটিয়া নয় সেটা মি টু ক্যাম্পেনে খুব ভালো ভাবে বোঝা যাচ্ছে। ভারত মহিলাদের প্রতি যৌন হেনস্থার র‌্যান্কিং এ ৪-৫ নম্বরে থাকে-

    ১ থেকে ৩ এ থাকে USA , সুইডেন, সাউথ আফ্রিকা। ফ্রান্স, ইউকে, জার্মানী , অস্ট্রেলিয়া সবাই ১ থেকে ১০ মধ্যে থাকে নানা সংস্থার র‌্যান্কিং এ।

    http://www.worldstopmost.com/2017-2018-2019-2020/news/countries-highest-rape-crime-world-top-10-popular-list/

    http://gazettereview.com/2017/03/top-10-countries-highest-rape-crime-rates/

    "উন্নত জাতি, উন্নত দেশ, উন্নত শহর "--কেউই তো দেখি কম যায় না মহিলা নিগ্রহে। ব্যপারটা বোধ হয় অতো সহজ সরল নয়। সমাধান ও অতো সহজে আসবে বলে মনে হয় না। তথাকথিত উন্নত দেশ গুলোকে রোল মডেল করলেও ঠিক কাজ হবে কি?

    সুইডেনের কেস টাই দেখুন, খুব ই অদ্ভুত। লিংগ সাম্যে সুইডেন পৃথিবীতে ১ নং
    "The Swedish government calls gender equality one of the "cornerstones" of the country's society. The concept is enshrined in Sweden's education system, where nearly two-thirds of all university degrees are awarded to women"

    কিন্তু আবার দেখুন ধর্ষনের সংখ্যাও সুইডেনেই সবথেকে বেশী। সংখ্যার বিচারে পৃথিবীতে ১ নং !!!!

    সেক্ষেত্রে লিঙ্গসাম্যের সাথে যৌন নিগ্রহের কো-রিলেসন কিছু দাড়াচ্ছে কি?

    তার মানে এই নয় লিঙগ সাম্য অপ্রয়োযোনীয় । ওটা মাস্ট--- কিন্তু মহিলাদের হেনস্থার সমাধানের শেষ মাইলস্টোন নয় মোটেই--- এটা নিয়ে একটু আলোচনা হোক
  • pi | 24.139.221.129 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫৬61785
  • লিঙ্গ সাম্যের সাথে গায়ের জোরের কী ?
  • | 59.36.1.78 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২৪61790
  • এদিকে ঈশানবাবু আবার ডাটা তুলে দেখিয়েছেন রিপোর্টেড রেপের ৪০% পাতি পালানোর কেস | মানে রিপোর্টেডের অনেকটাই গ্রস ওভাররিপোর্টিং |
  • sm | 52.110.195.73 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৩০61786
  • লিঙ্গ সাম্যের সঙ্গে সেক্স অফেন্স,ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স বা রেপ এর বিশেষ সম্পর্ক নাই।ভিসিবিলিটির স্বপক্ষেও কোনো তথ্য নাই। বিশ্বে জেন্ডার ইকুইটি পর্য্যায়ে রোয়ান্ডা ৫ নম্বরে। স্লোভেনিয়া ১০ এর মধ্যে।
    যেখানে ইউকে ২০ নম্বরে ও ইউ এস ৪০ এর পরে।
    ফিমেল ও মেল্ রেশিওতে বার্থের সময় ও ১৫ -২৫ গ্রূপের ক্ষেত্রেও এশিয়ার কিছু দরিদ্র দেশ ইউরোপ ও নর্থ আমেরিকার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে।
    আন্ডার রিপোর্টিং ও বেশ কিছু উন্নত দেশে চোখে পড়ার মতন বেশি।
  • sswarnendu | 41.164.232.149 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৫:২৯61791
  • ব, সেইটা ভুল নয় তো। দুটোই একসাথেই সত্যি এ অভাগা দেশে।
  • sswarnendu | 41.164.232.149 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৫:৩১61792
  • রিপোর্টেড-এর অনেকটাই 'ওভাররিপোর্টিং' শব্দটা হয়ত ঠিক শব্দচয়ন হল না, তবে রিপোর্টেড রেপ কেসের একটা সাইজেবল অংশ ফলস কেস।
  • sswarnendu | 41.164.232.149 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৮:২৭61787
  • রেপ সবজায়গাতেই আন্ডার রিপোর্টেড... সুইডেনেও আন্ডার রিপোর্টেড নয় এমন হয়ত নয়, তবে কাছাকাছি। আর হ্যাঁ, স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলোয় রেপ স্ট্যাটিস্টিক্স-এ রেপ কাউন্ট করে, ভিক্টিম দিয়ে নয় বলে পড়েছিলাম। এখুনি রেফারেন্স দিতে পারব না, খুঁজতে হবে। মানে একই ভিক্টিম দুবার রেপড হলে স্ট্যাট-এ দুটো রেপ। এইটা পৃথিবীর বেশিরভাগই দেশেই নয়। সেই হিসেবে চারজন একজনকে গ্যাংরেপ করলে চারটে রেপ-- এইভাবে কাউন্ট করলে ভারতের সংখ্যাটা মোটে ২০ দিয়ে গুণ করলে কিস্যু হবে না এইটা আন্দাজ করা শক্ত নয়।
  • sm | 52.110.205.121 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৮:৩৭61788
  • যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নেওয়া যায়,স্ক্যান্ডেনেভিয়ান কান্ট্রি গুলো তে এমন ভাবে কাউন্ট করা হয় -তাহলেও ইউরোপের অন্যান্য দেশ যেমন ইউকে ,ফ্রান্স ,জার্মানি এবং সাউথ আফ্রিকা ও ইউ এস এর পরিসংখ্যান তো ভয়াবহ!
    আর খালি রেপের কথা তো হচ্ছেনা ,পুরো সেক্সুয়াল অফেন্স ইভন ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স এর ক্ষেত্রেও পরিসংখ্যানের বিশেষ চেঞ্জ হচ্ছে না।
  • sswarnendu | 41.164.232.149 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৯:০১61789
  • না হচ্ছে নাই তো... পরিস্থিতি কোথাও-ই খুব ভাল নয় তো। তবে ভারতের চেয়ে খারাপ বলাটা শক্ত, ভারতে সত্যিই গ্রস আন্ডাররিপোর্টিং।
  • kaktarua | 183.33.197.134 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৯:০৫61793
  • জীবনের ২৫ বছর ভারতে কাটালাম আর ১০ বছর নর্থ আমেরিকায়। রেপের পরিসংখ্যান কি বলছে তাই নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই । দৈনন্দিন জীবনে ভারতের প্রতিটা মেট্রোপলিটন সিটি তে প্রায় প্রতিটা মেয়েকে যে যৌন হেনস্তা ফেস করতে হয় তার সাথে এই সমস্ত দেশের দৈনন্দিন জীবনের কোনো তুলনাই চলে না। এই ১০ বছরে অনেক ভিড় বাস সাবওয়ে তে ট্রাভেল করেছি। তার বেশ কিছু বেশ রাত করেও। কখনো খারাপ কিছু ঘটা তো দূরে থাকে, কখনো নিজেকে সেভাবে insecured -ও মনে হয়নি। যা খুশি জামা কাপড় পড়েছি, কেউ জুলজুল করে তাকিয়ে থাকেনি বা পেছন থেকে সিটি মারেনি।এই সমস্ত ঘটনা তো ইভেন রিপোর্টেড -ও হয় না আমাদের দেশে। এই জাতীয় অভব্যতা মনে হয় একান্ত ভাবেই ভারতীয়। কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়তো ঘটতে পারে অন্যান্য দেশে কিন্তু আমাদের দেশের মতো নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে প্রতিটা সিটি তে প্রতিটা মেয়েকে প্রতিদিন এইভাবে নিজেকে বোধয় গার্ড দিয়ে ঘুরে বেড়াতে হয় না। এটাকেই বোধয় লেখক সুস্থ যৌনতা বলেছেন। এই বিকৃতি কেন এই দেশে এতো প্রবল আর অন্যান্য দেশে কম সেটা পরিসংখ্যান না ঘেটে বোধয় ভেবে দেখা যেতে পারে।
  • sm | 52.110.207.253 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৩৮61794
  • এখানে কেউ তুলনা করেছে কি ;আমেরিকার চেয়ে ভারত ভালো!
    আগের দিন পি এম এর পোস্টে দুটো লিংক ছিল ;অন্তত প্রথম টা পড়ে নিন।
    ওদেশে ৬ জনের একজন মহিলা ও ৪ জনের একজন কলেজ ছাত্রী নিগ্রহের শিকার ।শকিং!
    অধিকাংশই আবার ঘরের ভেতর। সুতরাং বাইরে থেকে এক্সপেরিয়েন্স ভালো হতেই পারে।
    তুলনা কেউ করেনি।সার্টিফিকেট ও কেউ চাইছেন না বা দিচ্ছেনা।
    শুধু এই আন্ডার রিপোর্টিং এর সমস্যা কেন বিশ্বজনীন সেটা বোঝার চেষ্টা হচ্ছে মাত্র।
  • PM | 37.131.213.157 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:০০61795
  • অমর বক্তব্য টা অমি ঠিক বুঝিয়ে উঠতে পারি নি--- একবারের জন্য ও বলি নি ভারতের পরিস্থিতি ভালো না খারাপ অন্য দেশের থেকে--- বলতে চাইছিলম শুধুই শিক্ষা, , জেন্ডার ইকোয়ালিটি , "সুস্থ্য যৌনতা" দিয়ে বোধ হয় নারী নির্যাতনকে পুরোপুরি ব্যাখা করা যায় না (যা লেখকের কনক্লুসন) --- উদাহরন হিসেবে বলেছিলাম সুইডেনের কথা যে দেশ ঐ প্যারামিটার গুলোতে সর্বোচ্চ স্থানে কিন্তু ধর্ষনেও সর্বোচ্চ স্থানে।এই প্রসঙ্গে প্রথম বিশ্বের অন্যন্য দেশের কথাও এসেছিলো। অন্য প্যারামিটার্গুলো ঠিক কি কি , সেই সংক্রান্ত আলোচনার কথা হচ্ছিলো--

    দুদিন আগে প্রিয়ংকা চোপরা Harvey Weinstein সংক্রান্ত বিষয়ে বলতে গিয়ে বলেছেন-- She "It's not just about sexuality. It's not about sex. It's about power. It's an isolating feeling. The easiest thing to take away from a woman is her work."

    আমার মতে খুব ঠিক বলেছেন। হার্ভের পড়াশোনা ছিলো না এমন নয়--উচ্চ শিক্ষিত, তাঁর "শিকাররা"ও বেশিরভাগ শিক্ষিত/এম্পাওয়ার্ড/ স্বনির্ভর, "সুস্থ্য যৌনতা" তেও হার্ভির ট্রেনিং/ এক্সেস ছিলো না এমনটাও নয়-- তাহলে এই সিরিয়াল অফেন্স এর যৌক্তিকতা থাকে না প্রথাগত কারনে যা এই নিবন্ধের লেখক নারী নির্যাতনের কারন বলে চিন্হিত করেছেন।

    ভারতেও ৯৮% রিপোরটেড ধর্ষন হয় পরিচিত লোকের দ্বারা। আমার মতে সেক্সুয়াল নিড এর থেকেও পাওয়ার প্রোজেকসন ই বেশীরভাগ ঘটনার কেন্দ্রে আছে। আরো অন্য কারন-ও থাকতে পারে লেখক কথিত পপুলার কারনগুলোর বাইরে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন