এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • আমাদের ব্যবসার গল্প

    Muradul islam লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ | ১৫৯৬ বার পঠিত
  • দেশের যা অবস্থা, ইয়াং জেনারেশনের সংখ্যা বাড়তেছে, চাকরি নাই, বাকরি নাই ইত্যাদি ভাবতে ভাবতে আমরা প্রায়ই হতাশ হওয়ার কাছাকাছি পৌছে যেতাম। আমাদের কথাবার্তায় আগে যেখানে নানা ধরনের হাস্যরসাত্মক ফালতু বিষয়বস্তু এসে ভীড় করত তখন সেই জায়গায় এর পরিবর্তে আসতে লাগল জীবন ভাবনা, এই জীবন লইয়া আমরা কী করিব সিসিফাস?

    আমরা মনাফ হাজীর চায়ের দোকানে বসে ভাবতাম আসলে কী করা যায়। আমরা কি চাকরি করব? প্রাইভেট চাকরি যেগুলা আছে তা খুব ভালো না এমন মত দিল হাসনাত। তার হিসাবে প্রাইভেট ব্যাংক ট্যাংকের চাকরির বেইল নাই। চাকরি করতে হলে করতে হবে সরকারী চাকরি। এর জন্য বিসিএস দিতে হবে। বিসিএসে প্রথমে প্রিলিতে টিকবেন আপনি। তারপরে রিটেন। তারপরে ভাইবা। তারপরে কাড়ি কাড়ি টাকা।

    কিন্তু হাসনাতের কথায় আমাদের মন ভরে না। হাসনাতের নিজের মনও ভরে না। কারণ আমরা জানি সরকারী চাকরি পাওয়া আমাদের পক্ষে দুঃসাধ্য বা অসাধ্য। সবার পক্ষেই এরকম। কিন্তু কেউ কেউ পায়। তাদের দেখতে আমাদের ভালো লাগে। কিন্তু আমাদের শেষপর্যন্ত চাকরি করতে আর ইচ্ছা করে না।

    তাই আমরা ভাবতে থাকি কী ব্যবসা করা যায়। রফিকুজ্জামান আমাদের বলে, ব্যবসার মধ্যেই আছে প্রকৃত টাকা। সে তার এক দুঃসম্পর্কের খালাত ভাইয়ের উদাহরণ দেয়। যিনি সামান্য অবস্থা থেকে ব্যবসা করে আর আজ কোটি কোটি টাকার মালিক। তার কত টাকা আছে এর সঠিক হিশাব তিনি নিজেও জানেন না। রফিকুজ্জামানের কথায় আমাদের আগ্রহ হয়। আমরা জানতে চাই, কী এমন ব্যবসা তিনি করে থাকেন? রফিকুজ্জামান এর স্পষ্ট কোন উত্তর দিতে পারে না। সে বিভিন্ন রকম কথা বলে। যেহেতু রফিকুজ্জামান আমাদের বন্ধু এবং তার কথাবার্তার ধরনের সাথে আমরা দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত আছি তাই আমরা বুঝতে পারি আসলে রফিকুজ্জামান নিজেই জানেনা তার দুঃসম্পর্কের খালাত ভাই কী ব্যবসা করেন। কিন্তু এটা বুঝার পরও রফিকুজ্জামানের গল্পে আমাদের অবিশ্বাস জন্মে না। আমরা বুঝতে পারি যে ব্যবসার ধরনই এই। ব্যবসা তার অন্তরে রহস্য ধারন করে থাকে। এই রহস্যের জন্যই ব্যবসা আমাদের ভালো লাগে। যারা বড় বড় ব্যবসায়ী আছেন, যেমন রফিকুজ্জামানের ঐ দুঃসম্পর্কের খালাত ভাই, যাকে আমরা কখনো দেখিনি; এমন সফল ব্যবসায়ী যারা আছেন, তাদের সবাইকে আমাদের মনে হয় এক একজন রহস্যময় ম্যাজিশিয়ান। মাঝে মাঝে আমরা তাদের ব্যাপারে সত্যি সত্যি ভাবার চেষ্টা করি এবং অধিকাংশ সময় তাদের নিয়ে আলাপ করি। আমরা এমনভাবে আলাপ করি যেন আমরা বুঝতে চাই, কেমন করে এবং কীভাবে তারা এত সফল হলেন, কীভাবে তারা এত কাড়ি কাড়ি টাকা বানালেন।

    দেশীয় ব্যবসায়ীদের বিষয়ে আলোচনা করতে করতে আমরা বিদেশী ব্যবসায়ীদের দিকে চলে যাই। আমাদের মধ্যে মিনহাজ দুয়েকটা ইংরাজি বই ইত্যাদি পড়তে পারত, আমাদের তাকে জ্ঞানী মনে হত কখনো কখনো। সে যেদিন আমাদের চার্লি মাঙ্গার এবং ওয়ারেন বাফেটের কথা বলল, তখন তার চোখদুটি জ্বলজ্বল করছিল এবং আমার মনে হয়েছিল সে নিশ্চয়ই গত রাতে চার্লি মাঙ্গারকে স্বপ্নে দেখেছে। মাঙ্গার গম্ভীর কন্ঠে তাকে বলেছেন, বিগ মানি ইজ ইন ওয়েটিং।

    মিনহাজের কথা শুনতে শুনতে আমাদের ইনভেস্টর হবার ইচ্ছা জাগল। আমাদের মনে হলো পৃথিবীর সব টাকা আসলে আছে ইনভেস্টিং এ। যদিও কয়বছর আগে আমাদের আত্মীয় এবং পরিচিতদের অনেকেই শেয়ার বাজারে ইনভেস্ট করে প্রায় সর্বশান্ত হয়েছেন। আমাদের মনে হলো, তারা শেয়ার বাজার এবং ইনভেস্টিং ঠিকমত বুঝতে পারেন নি। তারা একে জুয়ার মত কিছু একটা ধরে নিয়েছিলেন। মাঙ্গার সম্পর্কে জানতে জানতে আমাদের মনে এই ধারণা বদ্ধমূল হলো যে ইনভেস্টিং একটা আর্ট। পৃথিবীর শ্রেষ্ট শিল্প। এই শিল্পে দক্ষ হতে হলে প্রচুর পরিশ্রম ও পড়ালেখার দরকার। আমাদের মধ্যে সাদেকুর রহমানের আগ্রহ ছিল দর্শনবিদ্যায়। সে নানাবিদ ফিলোসফার, সক্রেটিস, প্লেটো, জিজেক ইত্যাদি নিয়ে নিত্য জানার চেষ্টা করত; সে মাঙ্গারের সাথে পরিচিত হয়ে ভাবল যে তার পূর্বত্বন দার্শনিক গুরুদের বেইল নাই। এখন তারে বাস্তববিদ্যায় সফল হতে হলে ইনভেস্টিং এর পাঠ নিতে হবে এবং এজন্য মাঙ্গারের বিকল্প নাই। হাসনাত, সাদেকুর রহমান, আমি, মিনহাজ, রফিকুজ্জামান এবং বদিউজ্জামান বদি, আমরা এই ছয় বন্ধু মিলে ঠিক করলাম আমরা ব্যবসা করব। ব্যবসা করে আমরা অনেক টাকা বানাব। তারপর সেই টাকা দিয়ে ওয়াল স্ট্রিটে ইনভেস্ট করব। এবং তারপর আমরা আস্তে আস্তে বাফেট কিংবা মাঙ্গারের মত হয়ে যাবো। প্রথমে বদিউজ্জামান আমাদের বাঁধা দিয়েছিল অবশ্য, কারণ সে একজন মার্কসবাদী। সে আমাদের প্রায়ই বলত সমাজের শোষনের কথা, বঞ্চনার কথা, বলশেভিক বিপ্লব, কংগোতে কলোনিয়াল আগ্রাসনের গল্প, হাইতিতে দাস বিদ্রোহের কাহিনী, মার্ক্সের উদ্ধৃত মূল্য তত্ত্ব, চা শ্রমিকের রক্ত ও ঘামের ইতিহাস ইত্যাদি নানাবিদ বিষয় নিয়ে। তার অধিকাংশ বিষয়ের সাথেই আমরা একমত হতাম এবং আমাদের মনে হত আমাদের ভেতরে এক একজন চে গেভারা বসবাস করেন আসলে। অল্প সময় আমাদের কিউবার বিপ্লবের কথা মনে হত, এরপর আমাদের মনে হত চে গেভারা’র ছবিওয়ালা টি শার্টের কথা। চে’র সাথে সাথে আমরা ভাবতাম ফিদেল ক্যাস্ত্রোর কথা, যিনি তখনো তার মুখভর্তি দাঁড়ি নিয়ে বেঁচে আছেন। ফিদেল কাস্ত্রোর দাঁড়ি আমাদের আমাদের নিয়ে যেত বব ডিলানের মটর সাইকো নাইটমেয়ারে। তারপর হঠাৎ করেই আমাদের মনে পড়ত লিয়াম নীসনের কথা, যাকে দেখতে ফিদেল ক্যাস্ত্রোর মত লাগে মাঝে মাঝে। আমাদের মনে হত ফিদেল ক্যাস্ত্রোর বায়োপিকে যদি তিনি অভিনয় করেন তাহলে ব্যাপারটা পারফেক্ট হবে।

    এইভাবে আমাদের চিন্তা ধীরে ধীরে ফিল্মের লাইনে চলে যেত। আমাদের মধ্যে বদি এই লাইনে তুখোড়। তার এইম ইন লাইফ একসময় ছিল ফিল্ম নির্মাতা হওয়া। সে আমাদের বলে, ফিল্ম বানিয়েও ভালো উপার্জন করা যেত।

    কিন্তু এতে আমরা উৎসাহ পাই না। কারণ আমরা জানি ফিল্ম বানাতে অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের হাতে টাকা নেই। আর আমরা যেইসব ফিল্ম বানাব তা কি চলবে এই দেশে? এই দেশে কি তারকোভস্কির স্টকার বা সোলারিস মাপের ফিল্ম কেউ দেখবে? দেশের দর্শকদের উপর আমাদের তীব্র ঘৃণা জাগ্রহ হয়। আমরা তখন আসমানের দিকে তাকাই এবং ভাবতে থাকি আমেরিকায় জন্ম নিলে আমরা বছর বছর খালি ফিল্ম বানাতাম। আমরা এক একজন মিখায়েল হানেকে, তারকোভস্কি বা রয় এন্ডারসন হয়ে বসে থাকতাম। কান ফান এইসব ফেস্টিভ্যালে গিয়া নায়িকাদের ট্যাং এবং আরো বিভিন্ন কিছু দেখতে দেখতে আমরা পুরস্কার নিতাম।

    কিন্তু যেহেতু আমাদের হাতে টাকা নাই এবং ফিল্ম বানানোর সুযোগ নাই, তাই আমরা বাস্তবতায় ফিরে আসি। আমাদের আরো তীব্রভাবে মনে হতে থাকে ব্যবসা করার চিন্তাটাই যুক্তিযুক্ত। ব্যবসা না করলে আমাদের কিছুই হবে। আমাদের মধ্যে রফিকুজ্জামানের সাহিত্য চর্চার অভ্যাস আছে। সে একটা মাস্টারপিস লেখবে এবং তার মাধ্যমে নোবেল পুরস্কার পাবে এইরকম কিছু একটা বিশ্বাস করে। প্রথম প্রথম আমরা এই নিয়ে হাসাহাসি করতে চেষ্টা করতাম। পরে যখন আমরা এক দুই পাতা জ্যাক লাকা পড়লাম, তখন আমাদের মনে হলো এই হাসাহাসি করা আমাদের ঠিক হচ্ছে না। মানুষের কোন কিছু পাওয়ার যে ফ্যান্টাসী তাই তাকে আনন্দ দেয়, ঐ জিনিস পাওয়াটা নয়। এইরকম ভাবে বুঝতে শিখে আমরা রফিকুজ্জামানকে উৎসাহও দিতাম। আমরা তারে বলতাম, তুই বেটা কমনওয়েলথ লিটারেচার পুরস্কার পাবি।

    রফিকুজ্জামান এতে ক্ষেপে গিয়ে বলত, কলোনিয়াল চুদির ভাইয়ের পুরস্কার আমি নেই না।

    আমাদের তখন হাসি পাইত। রফিকুজ্জামান পুরস্কার পাওয়ার আগে তা প্রত্যাখান করে যে নজির স্থাপন করেছিল তা আর কোন লেখক করতে পেরেছেন কী না বলতে পারি না।

    আমরা যখন ব্যবসা করার ব্যাপারে প্রায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে যাচ্ছিলাম তখন আমাদের ভয় হলো রফিকুজ্জামানকে নিয়ে। কারণ সে একজন বড় লেখক, আর্টিস্ট। তাকে দিয়ে কি ব্যবসা হবে? ব্যবসায় কি তার মন বসবে? ব্যবসা কি তার সাহিত্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না? এইসব ভাবনা আমাদের কিঞ্চিত ভাবিত করে তুলল। শেষপর্যন্ত আমরা রফিকুজ্জামানকে জিজ্ঞেসই করে বসলাম, দোস্ত ব্যবসায় কি তোর সাহিত্যের ক্ষতি হবে না? তুই বরং সাহিত্যই কর। আর আমাদের ব্যবসায় খালি পার্টনার থাকলি। তরে কোন কাজ করতে হবে না।

    রফিকুজ্জামান আমাদের কথাকে কোন পাত্তাই দিল না। প্রায় ফু দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে বলল, সাহিত্য চুদি না।

    রফিকুজ্জামান যেহেতু সাহিত্যিক মানুষ তাই তার এক প্রেমিক মন থাকা স্বাভাবিক। এই স্বাভাবিকতার কোন ব্যতয় ঘটেনি রফিকুজ্জামানের ক্ষেত্রে। এক মেয়ের সাথে তার গভীর প্রেম ছিল। মেয়েটা আমাদের পরিচিত, নাম আকাশী। আমরা যখন ইস্কুলে পড়তাম তখন সে আমাদের দুই বছরের জুনিয়র ছিল। একই শহরে আমরা সবাই থাকতাম বলে আকাশীর সাথেও আমাদের কখনো কখনো দেখা যেত। দেখা হলে সে হাসিমুখে জিজ্ঞেস করত, ভাইয়া কেমন আছেন?

    সেই সময়ে অর্থাৎ আমরা যখন ব্যবসা শুরু করার ব্যাপারে সিরিয়াস তখন আকাশীর অন্যত্র বিয়ে দেবার চেষ্টা করছিলেন তার বাবা। ফলে রফিকুজ্জামান অনেক চাপে ছিল। আমরা রফিকুজ্জামানকে বললাম, ব্যবসার প্রেসার প্রেমের জন্য ক্ষতিকর। তুই এদিকটাও ভেবে দেখ। তাছাড়া এখন তো তোদের সম্পর্কও খারাপ সময় পার করছে।

    রফিকুজ্জামান তাচ্ছিল্যের সুরে বলল, প্রেম ট্রেমের বেইল নাই। ব্যবসাই আসল প্রেম।

    আমাদের তখন আর কোন চিন্তা রইল না। আমরা তখন ভাবতে বসলাম আমরা কী ব্যবসা করব। আমাদের মধ্যে মিনহাজ কারিৎকর্মা। সে বলল, তার এক চাচা মুদি দোকানদার। তিনি ঈদের কয়েকমাস আগে রসুন কিনে রাখেন। সেই রসুনের দাম বেড়ে যায় ঈদের আগে আগে। বেশীদামে তিনি তখন এগুলো বিক্রি করেন। অল্প কষ্টে বেশী লাভ। রিস্ক নাই বললেই চলে। কারণ রসুন এমন আল্লার মাল, যে অনেকদিন ভালো থাকে।

    রসুন আসলে কতদিন ভালো থাকে এ ব্যাপারে আমাদের ধারণা ছিল না। কিন্তু যেহেতু মিনহাজের চাচা এই ব্যবসা করে আসছেন তাহলে নিশ্চয়ই রসুন অনেকদিন ভালো থাকে, পচে না। মিনহাজ আমাদের বলল, সব শহরের মুদি দোকানদাররাই এইরকম করে থাকে।

    প্রথমে আমাদের খারাপ লাগে আমরা এতদিন ধরে মুদি দোকানদারদের কাছ থেকে ঠকে আসছি এটা ভেবে। এই ব্যবসায় আমাদের মন ধরে না। কারণ প্রথম ব্যবসা হিসেবে আমরা অসৎ ব্যবসা শুরু করতে আগ্রহী ছিলাম না। আমাদের মধ্যে তখন নৈতিকতার প্রভাব বেশ ছিল, আমাদের মনে হতে লাগল মজুতদারী অশিক্ষিত মূর্খ লোকের কাজ। এইটা ব্যবসা হতে পারে না। আমরা মাঙ্গার হইতে চাই, মিনহাজের মজুতদার চাচা নয়। ফলে আমরা এই ধরনের ফালতু চিন্তা বাদ দিলাম।

    তখন আমাদের বদিউজ্জামান ফেইসবুকে দেশীয় এক বুদ্ধিজীবির ট্যাটাসে লাইক দিতে দিতে বলল, আমরা আপাতত ফেইসবুক ভিত্তিক ব্যবসা করতে পারি। যেমন ফেইসবুক পেইজ খুলে জিনিস বিক্রি।
    বদিউজ্জামানের আইডিয়া আমাদের ভালো লাগল। এই বদিউজ্জামান আমাদের ট্যালেন্ট, টেক বিষয়াদি নিয়েও তার আগ্রহ। সে আমাদের বলল, পিটার থিয়েলের কথা। ইলন মাস্কের কথা। পল গ্রাহামের কথা। শুনতে শুনতে আমাদের মনে হলো আসলে ফিউচারের বিজনেস ক্ষেত্র হচ্ছে ইন্টারনেট। আমাদের টেক এন্টারপ্রেনার হতে হবে। আমি যখন এন্টারপ্রেনার শব্দটি উচ্চারন করেছিলাম তখন বদিউজ্জামান সংশোধন করে দিল, উচ্চারন হবে অন্ট্রিপ্রেনিউর।

    ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, সীড ফান্ডিং, এঞ্জেল ইনভেস্টর ইত্যাদি নানাবিদ জিনিসের সাথে পরিচিত হতে হতে আমাদের মনে হলো আমরা দূর্ভাগ্যবান। কারণ আমরা এমন এক দেশে জন্ম নিয়েছি যেখানে ইন্টারনেট স্পিড কম, উদ্যোক্তা বান্ধব পরিবেশ নেই, ফান্ডিং নেই, দক্ষ মানুষ নেই। ফলে আমাদের ওই লাইনে যাওয়া সহজ কিছু না।

    অনেক ভেবেচিন্তে আমরা ঠিক করলাম আমরা শুরু করব ফেইসবুক পেইজের মাধ্যমে। পেইজ থেকে এন্ড্রয়েড আইফোন এপে যাবো, ওয়েবসাইটে যাবো। এরপর আমরা ভেঞ্চারে ফান্ডের জন্য আবেদন করব। এরপর ফান্ড পেয়ে ব্যবসা বড় করব। এরপর সারাদেশ জুড়ে ব্যবসা চলবে। এরপর সারা বিশ্ব জুড়ে। তারপর আমরা আমাদের ব্যবসার নানা শাখা বিস্তার করব। পিটার থিয়েল যেমন বলেছেন, একটা আনট্যাপড ফিল্ড বের করতে হবে। তারপর সেইখানে করতে হবে মনোপলি বিজনেস। আমরা এইভাবে করে যাবো। এবং করে যাবো। আমরা বড়, বৃহৎ এবং জায়ান্টে পরিণত হব।

    তখন আমাদের মধ্যে কোন্দল তৈরী হতে পারে এমন আশংকা হলো আমাদের। আমাদের মনে হলো টাকার ভাগাভাগি নিয়ে আমাদের সমস্যা হতে পারে। আমাদের মনে এই ক্ষীন একটি বিশ্বাস ছিল যে, টাকা হলে মানুষ বদলে যায়। তখন সে নানাবিদ কাজ করে যা টাকা না থাকার কালে সে করত না। আমাদের মনে হল এমন কিছু আমাদের মধ্যে হতে পারে।

    রফিকুজ্জামান আমাদের বলল ন্যাশ ইকুইলিব্রিয়ামের কথা। সে আমাদের বলল গ্রুপে কাজ করার কালে ইন্ডিভিজুয়াল স্বার্থ গ্রুপের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়। সে আমাদের বলল, প্রিজনার ডিলেমার কথা।

    একটা মার্ডার কেসে দুইজন লোক আলাদা সেলে বন্দী হয়ে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমান করা যাচ্ছে না। তখন বিচারক তাদের বললেন, তারা যদি স্বীকার করে তারা মার্ডারে জড়িত তাহলে যে স্বীকার করবে সে ছাড়া পাবে। আর অন্যজনের হবে যাবজ্জীবন।

    তখন প্রথম বন্দী ভাববে দ্বিতীয়জন হয়ত স্বীকার করে ফেলবে, তাই সে স্বীকার করে ছাড়া পেতে চাইবে।

    দ্বিতীয় বন্দী ভাববে প্রথমজন স্বীকার করে ফেলবে, তাই সে স্বীকার করে নিবে।

    ফলে তাদের দুইজনেরই হবে যাবজ্জীবন। তারা দুইজন না স্বীকার করলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা যেত না। কিন্তু তারা এই সহযোগীতায় না গিয়ে নিজের স্বার্থ দেখতে যাবে। ইন্ডিভিজুয়াল স্বার্থ এইভাবে কাজ করে।

    রফিকুজ্জামান আমাদের বলল, গ্রুপে কাজ করতে হলে এটা মাথায় রেখে সব সময় গ্রুপের স্বার্থকে আগে প্রাধান্য দিতে হবে। গ্রুপ সাকসেসফুল হলে ইন্ডিভিজুয়ালি তুমিও সাকসেসফুল হবে।

    সে আমাদের বলল বড় বড় কোম্পানির প্রতিযোগীতাতেও কীভাবে এই ন্যাশ ইকুইলিব্রিয়াম কাজ করে, কীভাবে এটা ব্যবহার করে নিলাম ডিজাইন করা হয়। সে আমাদের জিজ্ঞেস করল, আমরা এ বিউটিফুল মাইন্ড দেখেছি কি না? ঐ ফিল্মের রাসেল ক্রোই বিজ্ঞানী জন ন্যাশ, যার নামে এই ইকুইলিব্রিয়ামের নাম।

    সিজোফ্রেনিক এই বিজ্ঞানীর জীবনের উপর ভিত্তি করে নির্মিত এই ফিল্ম আমাদের দেখা ছিল। আমরা তার কাহিনী মনে করতে চেষ্টা করলাম।

    আমরা এরকম অনেক ভাবলাম। আমাদের ভাবনায় বাঁধা পড়ল যখন আমরা এই প্রশ্নে এসে উপনীত হলাম যে, আমরা কীসের ব্যবসা করব?

    এটা একটা গুরুত্বপূর্ন বিষয়। ব্যবসার বিষয় ভেবেচিন্তে নির্বাচন করতে হয়। এমন জিনিসের ব্যবসা করা যাবে না যার কোন চাহিদা নেই। ব্যবসা করতে হবে চাহিদা আছে এমন জিনিসের। বড় বড় কোম্পানিগুলা টিভিতে, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে তাদের পন্যের চাহিদা তৈরী করে লোকের মনে। আমাদের বিজ্ঞাপন দেবার টাকা নেই। টাকা থাকলে আমরা ভালো ভালো সুন্দরী মডেলদের দিয়ে বিজ্ঞাপন করাতে পারতাম এবং তখন আমরা কোন ফালতু প্রোডাক্ট আনলেও চলত হয়ত। কিন্তু যখন বিজ্ঞাপন দেয়া যাবে না তখন চাহিদা আছে এমন জিনিস আনতে হবে মার্কেটে।

    মিনহাজ আমাদের বলল, মিষ্টির কথা। গোপালবাড়ির মিষ্টি তার প্রিয়। আমাদেরও প্রিয়। সে বলল, সে ওইরকম মিষ্টি বানাতে পারে। আমরা একটি ফেইসবুক পেইজ বানিয়ে মিষ্টি বিক্রি করতে পারি।

    বদিউজ্জামান বলল, আমরা পেইজের নাম দিতে পারি সকাল-সন্ধ্যা মিষ্টান্ন ভান্ডার।

    নাম আমাদের পছন্দ হলেও আমরা ভাবলাম মিষ্টির দোকানের নামে ভান্ডার লাগানো থাকে কেন? তখন আমাদের মনে হলো একটি গয়নার দোকানের নাম কমলা ভান্ডার।

    বিভিন্ন ধরনের মিষ্টির নাম, তাদের গঠন প্রকৃতি ইত্যাদির কথা ভাবতে ভাবতে আমাদের একসময় মনে হলো মিষ্টির ব্যবসা করে তেমন লাভ নেই। আমরা খুব বেশী টাকা এতে করতে পারব না। তাছাড়া মিষ্টি বানানো, তারপর এগুলো বেঁচা এসব দারুণ হ্যাপা। এর চাইতে মিষ্টি খাওয়া সহজ।
    আমাদের তখন মনে হলো অন্যধরনের ব্যবসা করতে হবে। যা ইউনিক এবং যাতে লাভ অনেক। তাহলে আমরা খুব দ্রুত অনেক টাকার মালিক হতে পারব এবং বিয়া করে বাচ্চার ড্যাডি হতে পারব। যদি ধীর গতিতে আমরা টাকার মালিক হতে থাকি তাহলে আমাদের অনেক দেরী হয়ে যাবে। আমাদের মধ্যে মিনহাজ জ্ঞানী জ্ঞানী মুখে বলল, মানুষের লাইফ হচ্ছে রিপ্রডাকশন। পুনরোৎপাদন। পুনরোৎপাদনের মাধ্যমে টিকে থাকা। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে, আমাদের বেশী টাকা না হলে আমাদের টিকে থাকার সম্ভাবনা অল্প। সুন্দর মাইয়া বিয়া করা এবং সন্তানের নিরাপত্তা বিধান করাও সম্ভব না অল্প টাকায়। ফলে সারভাইভালের তাড়নাই আমাদের বেশী টাকার দিকে আকৃষ্ট করে। এই যে লোভ, এটারে আমাদের আদী পুর্বপুরুষ হতে আগত বেঁচে থাকার, টিকে থাকার তীব্র ইচ্ছার প্রতিফলন বলা যায়।

    মিনহাজের কথা আমাদের পছন্দ হয়। আমরা মনাফ হাজীরে আরেক দফা চা দিতে বলি এবং এই সময় হাসনাত একটি সিরিয়াল রেপিস্ট লম্বা গলার মোরগের দিকে দেখতে দেখতে বলে, উটপাখির ব্যবসা করলে কেমন হয়?

    আমরা চমকে উঠি এবং আমাদের ভালো লাগে। একটা ইরানী ফিল্মে আমরা দেখেছিলাম এক লোক উটপাখির খামার করে এবং তার উটপাখিগুলা মাঝে মাঝে ঘোড়ার মত দৌড়ে বের হয়ে যায়। আব্বাস কিয়ারোস্তামির ফিল্ম হবে হয়ত। আরেকটা ফিল্মেও আমরা উটপাখির খামার দেখেছিলাম, আমাদের মনে পড়ে। নিউজিল্যান্ডের ফিল্ম ইন মাই ফাদার’জ ডেন। এইসব বিদেশী ফিল্মে আমরা উটপাখির খামার দেখেছি, দেশী ফিল্মে দেখি নাই। তাই আমাদের মনে সংশয় হয় এই দেশে উটপাখি পালন করা যাবে কি না?

    সাদেকুর রহমান বলে, অবশ্যই যাবে। আমাদের দেশের জল হাওয়া উটপাখির খামার করার জন্য অতীব ভালো।

    আমরা তখন জিজ্ঞেস করি, উটপাখির মাংস কী খাওয়া যায়? খাইতে কেমন?

    সাদেকুর রহমান কিছুটা বিভ্রান্ত মুখে জবাব দেয়, খাওয়া যাবে না কেন? খাইতে এই ধর, গরুর মাংসের মত।

    সাদেকুর রহমানের কথা থেকে আমরা বুঝতে পারি সে কোনদিন উটপাখির মাংস খায় নি।

    আমাদের সংশয় বাড়ে। সাদেকুর রহমান আমাদের আশ্বস্ত করে, উটপাখি পালা ইজি। তার অপর মাংস বেশী। কী সাইজ একেকটার। আর নতুন জিনিস আনলে মানুষ ঝাঁপাইয়া পড়বে। তাছাড়া আমরা উটপাখির ডিমও বিক্রি করতে পারব। একেকটা ডিম বিশাল।

    সাদেকুর রহমানের প্রস্তাব আমাদের ভালো লাগল। আমরা ঠিক করলাম উটপাখি পালন করব। উটপাখির ডিম ও মাংস আমরা বিক্রি করব। প্রথমে নেটে সার্চ দিয়া আমরা জানব উটপাখি পালনের নিয়ম কানুন। অতঃপর আমরা দুইটা উটপাখি কিনব। সেইগুলা পরীক্ষামূলকভাবে পালন করে দেখব এই দেশের আলো হাওয়ায় তারা টিকে থাকতে পারে কি না। এরপর আমরা আরো আরো উটপাখি আনব। আরো আনব। উঠপাখি এনে এনে আমরা দেশ ভরে দেব। শুনেছি উটপাখি মরুভূমিতে ভালো থাকে। ইন্ডিয়া যদি রিভার ইন্টার-লিংকিং প্রজেক্ট ঠিকঠাক ভাবে করতে পারে তখন আমাদের দেশ এমনিতেই মরুভূমি হয়ে যাবে আশা করা যায়। ফলে উঠপাখি ব্যবসার চিন্তা সুদূরপ্রসারী ভাবনা। নিজেদের বড় ভিশনারী মনে হলো আমাদের, যেন আমরা ফিউচার দেখতে পাই। হাওয়ার্ড হিউজের মত।

    কয়দিন আমরা উটপাখি এবং তাদের পালন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানলাম। যেমন, উটপাখির ডিম পাখিকূলের মধ্যে সর্ববৃহৎ, স্ত্রী উটপাখি পুরুষ উটপাখির ছয়মাস পূর্বেই প্রজনন ক্ষমতা অর্জন করে, ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত বাচ্চাদের ঘরের মধ্যে প্রতিপালন করা প্রয়োজন ইত্যাদি হাবিজাবি অনেক কিছু।
    উটপাখি সম্পর্কে জানার পর আমরা উটপাখি সংগ্রহের চেষ্টা শুরু করলাম। উটপাখি কোথায় পাওয়া যায় তা আমরা জানতাম না। কিন্তু যেহেতু পৃথিবীর প্রায় সব জিনিসের দালাল পাওয়া যায় তাই উটপাখির দালালও আমরা পেয়ে গেলাম। দালাল আমাদের বলল, সে উঠপাখি এনে দিবে দুইটা। কিন্তু কোথা থেকে এনে দিবে তা বলবে না। বিজনেস সিক্রেট।

    আমরা বললাম, ঠিক আছে।

    বদিউজ্জামান বলল, স্ত্রী উটপাখির চাইতে পুরুষ পাখি যেন ছয়মাস বড় হয় বয়সে।

    দালাল বলল, অবশ্যই। আমি বার্থ সার্টিফিকেট সহ দেব আপনাদের।

    উটপাখিরও বার্থ সার্টিফিকেট থাকে আমাদের জানা ছিল না। আমরা অবাক হলাম। একটা ব্যবসা শুরু করলে অনেক নতুন জিনিস জানা যায়।

    এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের উটপাখি চলে এল। বার্থ সার্টিফিকেটও আমরা দেখলাম। উটপাখি দুইটার জন্য শক্ত বাঁশের বেড়া দিয়ে একটা ঘের বানিয়েছিলাম আমরা। তাতে পর্যাপ্ত খাবার দিয়ে তাদের রাখা হল।

    আমরা দেখলাম আমাদের উঠপাখিগুলো শান্ত শিষ্ট। বেশী নড়ে চড়ে না। তারা স্থির হয়ে বসে থাকে বেশীরভাগ সময়।

    এইসময় আমাদের মধ্যে ছোট এক ঝামেলা হয়ে গেল উটপাখির নাম রাখা নিয়ে। সাহিত্যিক রফিকুজ্জামান বলল, একটার নাম রাখা যাক তলস্তয়, আরেকটার নাম জে কে রাউলিং।

    সাদেকুর রহমান বলল, এইটা কোন কথা হইল? কোথায় তলস্তয় আর কই রাউলিং! ফালতু নাম না রাইখা একটার নাম রাখ সাত্রে আরেকটার নাম সিমোন দ্য বোভেয়া। ফলে তাদের যখন ব্রেক আপ হইব তখন স্ত্রী উটপাখি পুরুষটারে বলবে, ইউ আর এন এস জেপি।

    এইভাবে নাম রাখা নিয়া ঝামেলার শুরু। কীর্কেগার্ড, রেজিনা; হেমিংওয়ে, হাইপেশিয়া; আল পাচিনো,মনিকা বেল্লুচি ইত্যাদি নানাবিদ নাম প্রস্তাব উঠল, কিন্তু কোন নামই গৃহীত হলো না। ফলে উটপাখিদ্বয় নামহীন রয়ে গেল।

    উটপাখিদের আনার উত্তেজনা এবং এর পরে তর্ক বিতর্কের ক্লান্তিতে সেদিন রাতে আমাদের ভালো ঘুম হয়।

    পরদিন সকালে উঠে আমরা আমাদের ঘেরে উটপাখিদের দেখতে পেলাম না।

    আমরা চারিদকে খুজলাম। কিন্তু উটপাখিরা কোথাও নেই। বালিতে শুধু তাদের পায়ের দাগ।

    আমাদের ঘের ছিল শহরের একটু বাইরের দিকে। মূল শহর থেকে বিশ মিনিটের পথ। আমরা উটপাখি খুজতে খুজতে শহরে গিয়ে উপস্থিত হলাম। আমরা লোকদের জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা কি দুইটা উটপাখিকে যেতে দেখেছেন?

    লোকেরা বলল, হ্যা। দুইটা পাখি, এদের উপরে দু’জন মানুষ ছিল।

    আমরা অবাক হই। দুই জন মানুষ?

    লোকেরা বলে, হ্যা। একটা ছেলে, একটা মেয়ে। আপনাদের মতই বয়স। মেয়েটা বোধহয় ছেলেটা হতে ছয়মাসের ছোট। তারা হাত ধরাধরি করে উঠপাখির পিঠে চড়ে চলে গেল দেখলাম।

    আমরা তখন একে অন্যের দিকে তাকালাম। তখন আমরা বুঝতে পারলাম আমাদের সাথে রফিকুজ্জামান নেই।

    আমরা লোকদের জিজ্ঞেস করলাম, ওরা কোনদিকে গেছে বলতে পারবেন?

    লোকেরা বলল, তা তো বলতে পারব না।

    আমরা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম। কিন্তু আরো অবাক হওয়া বাকী ছিল আমাদের। উটপাখিদ্বয় হারিয়ে বিপর্জস্ত মনে আমরা যখন ফিরছিলাম তখন আমাদের সাথে দেখা হলো আকাশীর। সে বোধহয় ভার্সিটিতে যাচ্ছিল। আমাদের দেখতে পেয়ে এগিয়ে এসে বলল, ভাইয়া, কেমন আছেন?

    রফিকুজ্জামানের সাথে কি আপনাদের দেখা হয়? আমি দুইদিন ধরে তারে ফোনে পাচ্ছি না।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ | ১৫৯৬ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    হেলেন - Muradul islam
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • গোলগোবিন্দ | 213.110.242.5 (*) | ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:১০61239
  • ভালো লাগলো ।
  • Blank | 213.132.214.85 (*) | ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:১৬61240
  • ব্যাপারট বেশ সিনেমার মতন হয়েছে।
  • অনামী | 170.62.7.250 (*) | ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ ১০:৫৪61238
  • যাহ! দিব্যি চলছিল তরতরিয়ে, হঠাৎ কেমন শেষ হয়ে গেলো!
  • প্রশ্ন | 116.51.131.185 (*) | ৩১ জানুয়ারি ২০১৭ ০৭:৪৭61241
  • খুবই ভাল লাগল। কিন্তু "বেইল নাই" কথাটার মানে কি?
  • Muradul islam | 37.147.226.85 (*) | ৩১ জানুয়ারি ২০১৭ ০৯:৫৪61242
  • @প্রশ্ন >

    বেইল নাই অর্থ টাইম নেই। অর্থহীন। বেইল শব্দটি 'বেলা' শব্দের সিলেটি রূপ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে প্রতিক্রিয়া দিন