এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিবিধ

  • জনস্বাস্থ্যের দাবীতে জুনিয়র ডাক্তাররা যেদিন পথে নেমেছিল

    Punyabrata Goon লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০৬ অক্টোবর ২০১৩ | ১৩৭৭ বার পঠিত
  • ১৯৭৯-এর শেষার্ধে মেডিকাল কলেজ ছাত্র সংসদ ও সেই সময় ছাত্র সংসদে আসীন মেডিকাল কলেজ ডেমোক্রাটিক স্টুডেন্টস’ অ্যাসোশিয়েসন-এর উদ্যোগে হাসপাতালে এক অনুসন্ধান চালানো হয়। দেখা যায়-
    •হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে সিনিয়র অফিসার অন ডিউটি-র পদ সাতটা, তার মধ্যে তিনটে পদ খালি। হাউসস্টাফদের ওপর বিরাট কাজের চাপ থাকা সত্ত্বেও তাদের দিয়ে জোর করে জুনিয়র অফিসার অন ডিউটি-র কাজ করানো হয়।
    •গত এক মাস ধরে ইসিজি মেশিন খারাপ, হার্টের রোগীদের চিকিৎসা না করে পাঠাতে হয়েছে অন্য হাসপাতালে, রাস্তায় মারা গেছেন কিছুজন।
    •ইমার্জেন্সিতে রক্ত পাওয়া যায় না, চোরাকারবারীতে অবশ্য পাওয়া যায়। (যে সময়ের কথা সে সময়ে সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাংক কিন্তু ছিল মেডিকাল কলেজেই।) অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাব। বহু জরুরী ও জীবনদায়ী ওষুধ হাসপাতালে নেই, ফলে রোগীরা বিনা ওষুধে ধুঁকতে ধুঁকতে মারা যাচ্ছেন।
    •হাসপাতালের আউটডোর বা ইনডোরে পেনিসিলিন বা সালফা ড্রাগ ছাড়া অন্য অ্যান্টিবায়োটিক নেই। চর্মরোগের বিভাগে আবার পেনিসিলিনও মেলে না।
    •হাসপাতালে বার্ন ইউনিট নেই, পোড়া রোগীকে বারান্দায় রাখা হয়, ফলে ২০% পোড়া রোগীও জীবাণুসংক্রমণে মারা যান, যেখানে আধুনিক চিকিৎসায় নাকি ৮০% পোড়া রোগীকেও সারিয়ে তোলা সম্ভব।
    •আউটডোরে ৩ ঘন্টা অপেক্ষা করে রোগী ১ মিনিট ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান, (যারা সৌভাগ্যবান—বড়জোর ৩ থেকে ৪ মিনিট)। ওষুধের লাইনে আরও অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর প্রতিদিনের জন্য গড়ে ২৫ পয়সার ওষুধ পাওয়া যায়। অনেক রোগী ওষুধ না পেয়ে খালি হাতে ফেরত যান।
    •অপারেশন করতে হবে এমন রোগী আউটডোরে দেখানোর পর এক-দেড় বছর পর হাসপাতালে ভর্তির সুযোগ পান।
    •রোগীর খাবার দরকার দৈনিক কমকরে ৩০০০ ক্যালরি, দেওয়া হয় ১৫০০-১৭০০ ক্যালরি।
    •স্ত্রীরোগ ও ধাত্রীবিদ্যা বিভাগ ইডেন হাসপাতালে একটা বেডে তিনজন অবধি রোগিনীকে থাকতে হয়।
    •ইমার্জেন্সিতে যক্ষ্মারোগীকে রাখা হয় সবচেয়ে অন্ধকার স্যাঁতসেতে ঘরে।
    •১৫-২০ জন রোগীপিছু একজন নার্স, যেখানে থাকার কথা ৫ জনে একজন।
    •ওষুধকোম্পানীগুলোর কাছে মেডিকাল কলেজের ধার ৫৫ লাখ টাকা।

    হাসপাতাল মানে
    যখন শিশু ছিলাম, বড়দের মুখে শুনতাম, একবার হাসপাতালে
    গেলে কেউ আর বাড়ি ফেরে না।
    এ দেশ তখন ছিল ইংরেজদের রাজত্ব। গন্ডগোলটা কোথায় ছিল,
    বড় হয়ে কিছুটা বুঝতে পেরেছি। যখন দেশ স্বাধী হয়েছে।
    হাসপাতাল সবার জন্য নয়। যাঁরা এই দেশ শাসন করেন,
    হাসপাতাল তাঁদের। এখানে তাঁরা থাকেন রাজার মতো, সবাই
    বাড়ি ফেরেন বেশ গোলগাল হ’য়ে। যদিও তাঁরা এমনিতেই
    গোল, কেননা এই দেশটাই তো তাঁদের।
    বাকিরা কেউ বাড়ি, কেউ ফেরে না। সবটাই ভাগ্যির
    ব্যাপার। যাদের কিছু নেই, হাসপাতালের দরজা তাদের জন্য
    বন্ধ। সেখানে তারা ঢুকতেই পারে না। হাসপাতালের নোংরামী,
    ভেতরের এবং বাইরের, তাদের স্পর্শ করে না। ওষুধ এবং
    পথ্য নিয়ে এখানে কি চোরপুলিশ খেলা হয়, কানু-সিধুর
    ভাই-ভাতিজারা তা বিন্দু-বিসর্গও জানতে পারে না। যদিও
    তাঁদের নামে কলকাতায় রাস্তা হয়...,
    হাসপাতালে গেলে কেউ আর বাড়ি ফেরে না, কথাটা,
    এখন বুঝতে পারি, অর্ধসত্য। কেউ কেউ ফেরে। তারা সত্যিই
    ভাগ্যবান। হাসপাতালে ঢুকতে পেরেছে এবং সেখান
    থেকে বেরুতে পেরেছে। ইংরেজ আমল
    থেকেই এই ব্যবস্থাটা চলে আসছে। কোথাও কোনো
    পরিবর্তন হয়নি। তবে ওষুধ আর পথ্যের কারচুপিটা
    যখন আমরা পরাধীন ছিলাম, ঠিক এতটা ছিল না।
    ভিতরে এবং বাইরে এত ধূলো আর দুর্গন্ধ ছিল না।
    এখন হাসপাতাল মানেই নরক গুলজার।
    বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    ‘জুনিয়ার ডাক্তারদের সমর্থনে
    কবিকন্ঠ’ থেকে, ১৯৮৩

    অবস্থা পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষায় ছাত্রসংসদের নেতৃত্বে ১৯৭৯-তে মেডিকাল কলেজের ছাত্র ও জুনিয়র ডাক্তারদের এক আন্দোলন হয়, ‘Hospital Movement’ নামে তা পরিচিত। একই রকম আন্দোলনে নামেন আর জি কর মেডিকাল কলেজের ছাত্র ও জুনিয়র ডাক্তাররা। ১৯৭৯-এর এই আন্দোলন ছিল পরের দশকের এক বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি। মেডিকাল কলেজগুলোতে গড়ে ওঠে হাউসস্টাফ-ইন্টার্ন অ্যাসোসিয়েশন (HIA) বা জুনিয়র ডক্টরস’ অ্যাসোসিয়েশন (JDA)।
    মেডিকাল কলেজগুলোর HIA বা JDA একসাথে মিলে গঠিত হয় অল বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস’ ফেডারেশন (ABJDF)। আলাপ-আলোচনার মধ্যে দিয়ে দাবীপত্র গঠিত হয়, তার মধ্যে কতগুলো ছিল আশু দাবী, কতগুলো মূল দাবী।

    আশু দাবীঃ
    1.জীবনদায়ী ও অত্যাবশ্যক ওষুধ সরবরাহ নিয়মিত ও সুনিশ্চিত করতে হবে।
    2.২৪ ঘন্টার জন্য এক্স-রে, ইসিজি, রক্ত এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
    3.পাশ করা ও ইচ্ছুক সমস্ত জুনিয়র ডাক্তারকে সরকারী চাকরীতে নিয়োগ করতে হবে। ডাক্তাররা গ্রামে যায় না এই অপপ্রচার বন্ধ করতে হবে।
    4.জুনিয়র ডাক্তারদের ভাতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং সমস্ত পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ছাত্রদের ভাতা দিতে হবে।
    5.সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টা কাজের সময়সীমা নির্দিষ্ট করতে হবে।
    6.‘কালা হাসপাতাল বিল’ বাতিল করতে হবে।
    7.হাসপাতাল পরিচালন কমিটিতে সমস্ত স্তরের স্বাস্থ্যকর্মী-প্রতিনিধি নিতে হবে।
    8.অযৌক্তিক হাতুড়ে ডাক্তার তৈরীর DCMS কোর্স বাতিল করতে হবে।
    9.সমস্ত স্তরের স্বাস্থ্যকর্মীর প্রকৃত নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।

    মূল দাবীঃ
    1.জনমুখী বৈজ্ঞানিক জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করতে হবে, প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্য পাওয়ার অধিকারকে ‘মৌলিক অধিকার’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং একে কাজে প্রয়োগ করার জন্য (জাতীয় ও রাজ্য-স্তরে) প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রস্তুত করতে হবে।
    2.বৈজ্ঞানিক ওষুধনীতি প্রণয়ন করতে হবে, যাতে জীবনদায়ী ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ সুনিশ্চিত হয় তার জন্য রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে স্বল্পমূল্যে ওষুধ প্রস্তুত করতে হবে।
    3.সুসংহত মেডিকাল শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে হবে, মেডিকাল শিক্ষা স্বয়ংসম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় সংস্থা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হতে হবে এবং মেডিকাল শিক্ষার সাথে জড়িত সমস্ত স্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে উক্ত কেন্দ্রীয় সংস্থা গঠন করতে হবে।

    ১৯৮২ জানুয়ারীতে এবিজেডিএফ-এর প্রথম কনভেনশন। সরকারের কাছে দাবীপত্র পেশ করা হল। সরকার এবিজেডিএফ সংগঠনকেই মানতে অস্বীকার করল।
    কিছুদিন পর পাব্লিক সার্ভিস কমিশনের ‘রিগ্রেট লেটার’ (চাকরী দিতে অক্ষমতার জন্য) নিয়ে মিছিল করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা, স্মারকলিপি পেশ করলেন। সরকার দাবী মানতে নারাজ।
    লাগাতার ২৪ ঘন্টা, ছুটিবিহীন ডিউটির ফলে কর্মরত অবস্থায় প্রাণ হারালেন জুনিয়র ডাক্তার পরেশ চৌধুরী। দায়িত্ব নিতে ও ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করল সরকার।
    ১৯৮৩-র ২৩শে মার্চ এবিজেডিএফ-এর কনভেনশন। দাবীর সমর্থনে আউটডোরগুলোতে প্রচার, লিফলেটিং। ৬৭ টা পথসভা করা হয়। আবার দাবীপত্র পেশ করা হয় সরকারের কাছে, সরকার নির্বিকার। হাসপাতালগুলোর সুপার ও প্রিন্সিপালদের কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়, তাঁরা নির্বিকার থাকেন।
    ২২শেএপ্রিল স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। তিনি আশ্বাস দেন যে সাতদিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এই আশ্বাসনের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত আউটডোর বয়কট প্রত্যাহার করা হয়। সাতদিন পরেও সরকার নীরব থাকে।
    ৩রা মে সহস্রাধিক জুনিয়র ডাক্তার মিছিল করে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ডেপুটেশন দিতে যান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী পঞ্চায়েতের ব্যাপারে ব্যস্ত, তাই আলোচনার সময়ই পাননি।
    ৯ই থেকে ১৪ই মে বিভিন্ন হাসপাতালে পর্যায়ক্রমে আউটডোর বয়কট করা হয়, ব্যাজ পরে দাবী দিবস উদযাপন করা হয়।
    ৬ই জুন বর্ধমান মেডিকাল কলেজের দুজন হাউসস্টাফকে মিথ্যা অভিযোগে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করা হয়।
    ১৩ই জুন থেকে আউটডোর, ইনডোর বয়কট, দুদিন-ব্যাপী অনশন। সরকার নীরব। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে হাসপাতালের গেটে-গেটে প্রচারে নামানো হয় সিপিআইএম-এর গণসংগঠনগুলোকে।
    ১৫ই জুন আউটডোর, ইনডোর, ইমার্জেন্সি বয়কট করে হাসপাতালগুলোকে অচল করে দেন জুনিয়র ডাক্তাররা। রোগীদের স্বার্থে হাসপাতালগুলোতে ইমার্জেন্সি স্কোয়াড চালু করা হল। পিজি হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা করার সময় আন্দোলন-বিরোধীদের হাতে আক্রান্ত হলেন অর্থোপেডিক্সের ভিজিটিং প্রফেসর, সরকারী ডাক্তারদের সংগঠন হেলথ সার্ভিস আসোশিয়েসনের রাজ্য সম্পাদক ডা অরুণ ব্যানার্জী, তাঁর দোষ তাঁর সংগঠন জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন করছিল। পুলিশের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের ওপর আক্রমণ নামাল ডিওয়াইএফ ও কোঅর্ডিনেশন কমিটি।
    ১৭ই জুন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হল দাবীদাওয়া নিয়ে।
    ৭ই জুলাই সরকার জুনিয়র ডাক্তারদের ভাতাবৃদ্ধির ঘোষণা করল। জনস্বাস্থ্য-সম্পর্কিত দাবীগুলো সম্পর্কে সরকার নীরব থাকল।
    ৮ই জুলাই সরকারী ‘ঘুষ’-এর প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল—মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হল।
    ৯ই থেকে ১৩ই জুলাই আউটডোর বয়কট করে জুনিয়র ডাক্তাররা প্যারালেল আউটডোর চালালেন। প্রস্তাব এল বাড়তি ভাতা রোগীদের স্বার্থে ব্যবহার করা হবে। হাসপাতালগুলোতে পালটা আঊটডোর চালানো কার্যত বিদ্রোহের ডাক দেওয়া- সাংবাদিকদের বললেন রাজ্যের ভূমি সদব্যবহার মন্ত্রী বিনয় চৌধুরী।
    ৪ঠা আগস্ট স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা, দাবী মানতে নারাজ সরকার।
    ৫ই থেকে ১২ই আগস্ট আবার কর্মবিরিতির পথে গেলেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
    ২৭শে আগস্ট হেলথ সার্ভিস আসোশিয়েসন, ইন্ডিয়ান মেডিকাল অ্যাসোসিয়েশন ও এবিজেডিএফ-এর যৌথ উদ্যোগে দাবীগুলোর সমর্থনে চিকিৎসকদের সম্মেলন। সরকার তবু নীরব।
    ১৫ই থেকে ১৭ই সেপ্টেম্বর জনস্বার্থ-সম্পর্কিত দাবীগুলো নিয়ে পালাক্রমে আউটডোর বয়কট করা হল।

    মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ওরা আবার প্রত্যেকের চাকরির দাবী করছে। আমরা আগেই বলে দিয়েছি সবার চাকরির ব্যবস্থা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।– গণশক্তি, ২০।৯। ১৯৮৩

    রোগীর ওষুধের জন্য চাই সমাজতন্ত্র
    চাকরীর জন্য সাম্যবাদ!

    কথাটা খারাপ বলেন নি
    যুক্তি আছে—
    ফর্সা আকাশের মত যুক্তি!

    আমিও আপনাদের হয়ে
    লক আউট জুট মিলের মজুরদের বলে দেব—
    ‘বাবুয়া, সমাজবাদ নাহি আনেসে মেশিনকা চাক্কা
    নাহি ঘুমেগা’।
    বাঁকুড়ার কিষাণকে বলে দেব—
    ‘সমাজতন্ত্র আসেক নাই
    ত ই-মাটিতে কূপ খনন হবেক নাই’।

    নদীকে বলে দেব
    কানে কানে
    (ও বড় মুখরা)
    সমাজতন্ত্র আসেনি—
    সাগরে যাস না!
    সমীর রায়
    ‘জুনিয়ার ডাক্তারদের সমর্থনে
    কবিকন্ঠ’ থেকে, ১৯৮৩

    ২১শে থেকে ২৭শে সেপ্টেম্বর চরমপত্র দিয়ে পূর্ণ-কর্মবিরতির পথে গেলেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
    ১লা অক্টোবর সরকার ঘোষণা করল- ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী জুনিয়র ডাক্তারদের কমপ্লিশন সার্টিফিকেট দেওয়া হবে না, ভাতা আটকে দেওয়া হবে। ঘোষণার প্রতিবাদ করলেন এইচএসএ ও আইএমএ।
    ৪ঠা অক্টোবর এস এস কে এম ও নীলরতন সরকার মেডিকাল কলেজ হাসপাতালে সুপারিন্টেডেন্টের ঘরে অবস্থানরত জুনিয়র ডাক্তারদের ওপর নির্মম লাঠিচার্জ পুলিশের। ন্যাশানাল মেডিকাল কলেজে হামলা চালায় কোঅর্ডিনেশন কমিটি। প্রতিবাদে ডাক্তারদের দৃপ্ত মিছিল মাঝরাতে কলকাতার রাজপথে।
    ৫ই অক্টোবর লাঠিচার্জের সমর্থনে সাফাই দিলেন মন্ত্রী। বিনয় চৌধুরী বললেন পুলিশ আত্মরক্ষার্থে লাঠি চালিয়েছে। ন্যাশানাল মেডিকাল কলেজে পুলিশ লাঠি চালিয়ে আহত করল ২৮ জনকে, গ্রেপ্তার হলেন ১৪ জন। সহস্রাধিক জুনিয়র ডাক্তার-ছাত্র-নার্স-কর্মচারী বিক্ষোভে উত্তাল। রাত্রের সমস্ত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে রাজভবনের সামনে অবস্থান।
    ৬ই অক্টোবর এইচএসএ এবং আইএমএ-র কর্মবিরতি—১৮টা সরকারী হাসপাতালে ইনডোর বাদে সর্বাত্মক কর্মবিরতি।
    ৮ই অক্টোবর সরকার মিথ্যা প্রচার শুরু করল জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতিতে বি সি রায় শিশু হাসপাতালে শিশুরা মারা যাচ্ছে। হাসপাতালের সুপার জানালেন তাঁর হাসপাতালে ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে কোনো শিশুর মৃত্যু হয় নি। বাঙ্গুর হাসপাতালে সিপিআইএম-নেতৃত্বাধীন নাগরিক কমিটির হামলা।
    আইএমএ-র আহ্বানে হাজার হাজার মানুষ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের বিশাল মিছিল ও স্মারকলিপি পেশ।
    ৯ই অক্টোবর বিসি রায় শিশু হাসপাতাল ও বাঙ্গুরে সিপিআইএম ঠ্যাঙ্গাড়ে বাহিনীর আক্রমণ।
    ১০ই অক্টোবর এবিজেডিএফ-এর সভাপতির বাড়ি সিপিআইএম-এর নেতৃত্বে ঘেরাও।
    ১১ই অক্টোবর আলোচনায় ডেকে এনে ডাক্তারদের প্রতি দুর্ব্যবহার করলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিবাদে দুই জুনিয়র ডাক্তার প্রতিনিধির কক্ষত্যাগ । অন্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী অনড়।
    ১৩ই অক্টোবর পিছু হটল সরকার। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রত্যাহার করা হল। আরো কয়েকটা দাবী মেনে নিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহারের জন্য আবেদন জানাল সরকার।
    ১৪ই অক্টোবর সন্ধ্যায় আইএমএ ও এইচএসএ আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিল। রাতে এবিজেডিএফ কাজে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল, সেই সঙ্গে দাবী আদায়ের সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার নেওয়া হল।

    আমি মেডিকাল ছাত্র থেকে জুনিয়র ডাক্তার হয়েছিলাম এই আন্দোলন চলাকালীন ১৯৮৩-র আগস্ট মাসে। আন্দোলনের ফল আমি দেখেছি কাজ করার সময়। সে সময়ে বেশীর ভাগ বেড ছিল ফ্রি বেড। ফ্রি বেডের রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কেনাতে হত বলে মনে পড়ে না—তা দামী অ্যান্টিবায়োটিক বা ক্যান্সারের ওষুধ যাই হোক না কেন। হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো প্রয়োজন মত করানো সম্ভব হতে লাগলো। তবে এই অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি, বছর তিনেক পর আবার আন্দোলনের পথ নিতে হয় জুনিয়র ডাক্তারদের…।
    আন্দোলন থেকে শিক্ষা নেয় সরকারও। সরকারী ডাক্তারদের সংগঠন এইচএসএ এবিজেডিএফ-এর আন্দোলনকে সমর্থন করেছিল, তাই সরকারী ডাক্তারদের শাসক দলপন্থী অংশকে নিয়ে অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস তৈরী করা হয়। ট্রান্সফার-প্রমোশনের গাজর-লাঠি দেখিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ ডাক্তারদের এ সংগঠনের সদস্য হতে বাধ্য করা হতে থাকে।
    আন্দোলন চলাকালীন সরকারী ডাক্তাররা যখন ‘স্ট্রাইক ব্রেকার্স’ হিসেবে কাজ করতে রাজী হননি, তখন বহু উচ্চশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ চাকরীপ্রার্থী ডাক্তারকে উপেক্ষা করে এবং ‘প্রথম পোস্টিং গ্রামে’ এই প্রচলিত নিয়ম ভেঙ্গে কলকাতার কলেজ হাসপাতালগুলোতে অ্যাড হক নিয়োগ করা হল ৮৭ জনকে, যাদের একমাত্র যোগ্যতা তারা এস এফ আই করত। পরে এদের স্থায়ী করা হয়, এদের কেউ কেউ প্রায় ৩০ বছর ধরে মেডিকাল কলেজগুলোতেই রয়ে গেছে উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই প্রশাসনের ‘চোখ-কান’ হয়ে।
    শাসকদলের তাঁবেদার জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন হিসেবে জন্ম নেয় জুনিয়র ডক্টরস’ কাউন্সিল (JDC)।

    এবিজেডিএফ আন্দোলনের পর প্রায় ৩০ বছর কাটতে চলল। জনস্বাস্থ্যের অবস্থা দিনের পর দিন আরো খারাপ হয়েছে। ১৯৯১-এর নয়া অর্থনীতি,উদারনীতি, কাঠামোগত পুনর্নির্মাণের সাথে সাথে সরকার স্বাস্থ্য-শিক্ষার মত পরিষেবা ক্ষেত্রগুলো থেকে সরে চলেছে দিন প্রতি দিন। নানা ভাবে স্বাস্থ্যব্যবসায় ডালপালা ছড়াচ্ছে বেসরকারী পুঁজি। ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট শাসনের পর পরিবর্তনের সরকারের প্রায় এক বছর হতে চলল, মূল অভিমুখে কোন পরিবর্তন এখনও দেখা যাচ্ছে না। অথচ এবিজেডিএফ-এর এক নেতা এখন সাংসদ, কেউ বা বিধায়ক…

    আজও আশা আবারো জেগে উঠবেন বাংলার জুনিয়র ডাক্তাররা, আবারো পথে নামবেন জনস্বাস্থ্যের দাবী নিয়ে, শ্লোগান তুলবেন—‘স্বাস্থ্য কোনও ভিক্ষা নয়, স্বাস্থ্য আমার অধিকার’। আবারো ব্যাপক জন-সমর্থন পাবে সে আন্দোলন, রূপ নেবে গণ-আন্দোলনের।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০৬ অক্টোবর ২০১৩ | ১৩৭৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • π | 79.204.169.146 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:২৯46844
  • 'আজও আশা আবারো জেগে উঠবেন বাংলার জুনিয়র ডাক্তাররা, আবারো পথে নামবেন জনস্বাস্থ্যের দাবী নিয়ে, শ্লোগান তুলবেন—‘স্বাস্থ্য কোনও ভিক্ষা নয়, স্বাস্থ্য আমার অধিকার’। আবারো ব্যাপক জন-সমর্থন পাবে সে আন্দোলন, রূপ নেবে গণ-আন্দোলনের।'

    আশা রইলো।
  • sm | 122.79.37.22 (*) | ০৬ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৩৪46845
  • PG ,আপনার লেখা তা পড়লাম। আপনি জুনিয়র ডাক্তার দের আন্দোলন এর কথা লিখেছেন, সেগুলো তে কি কাজ হয়েছে তা বিতর্কের বিষয়। আমার মনে হয় কিছু কিছু জায়গায় নজর দিলে কাজ হতে পারে।
    মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গুলি তে ২৪ ঘন্টা xray , ECG র পাশাপাশি ABG এনালাইসিস,২-৩ ঘন্টার মধ্যে ব্লাড টেস্ট result পাওয়া আবশ্যক। মেডিকেল কলেজ এ biochemistry ,প্যাথলজি ইত্যাদি nonclinical সাবজেক্ট গুলির প্রচুর স্টাফ থাকেন, কিন্তু তারা clinician দের মত কোনো আউট অফ অফিসিয়াল আওয়ার্স ডিউটি দেন না, সুতরাং ২৪ আওয়ার্স ব্লাড টেস্ট result ইত্যাদি অধরা থেকে যায়। কোনো জুনিয়র ডক্টরস ই জটিল কেস এ এন্টিবায়োটিক ট্রিটমেন্ট এর পূর্বে, microbiologist এর পরামর্শ নেন না। হাসপাতাল এর কোনো নিজস্ব এন্টিবায়োটিক পলিসি নেই বা অডিট ও হয়না। ওষুধ এর প্রেসক্রিপশন এর দেখভাল এর দায়িত্যে pharmacology ডিপার্টমেন্ট র থাকা উচিত। তাতে খরচ বাঁচে, ভুলভ্রান্তি কম হয়, কিন্তু ক্লিনিকাল ডিপার্টমেন্ট এ নন ক্লিনিকাল লোকজন দের দেখায় যায় না। অতচ খেয়াল করে দেখুন এগুলো ইমপ্লেমেন্ট করতে এক্ষ্ত্র খরচ বিশেষ কিছু লাগবে না।
    অভিজ্ঞ নার্স দের দিয়ে, হার্ট failure , রেনাল failure sroke , rheumatology ,breast ক্যান্সার, প্রস্টেট ক্যান্সার, ইন্কন্তিনেন্স,ডিয়াবেতিস , টিবি,
    হাইপারটেনশন ক্লিনিক চালানো উচিত, সিনিয়র ডাক্তার দের অধীনে, নিজ নিজ অভিজ্ঞতা, ট্রেনিং ও এক্সপেরিয়েন্স অনুযায়ী তারা পেশেন্ট দের দেখতে পারেন। এতে সিনিয়র ডক্টরস দের ক্লিনিক এ ভিড় কম হয়।নার্স দের কনফিডেন্স বাড়ে এবং রোগী বেটার পরিষেবা পায়। দরকার পড়লে কমিউনিটি তে ও পরিষেবা দেওয়া যায়।
    জুনিয়র ডাক্তার দের, পাস করার পর তিন বছর training দেওয়া উচিত। প্রথম বছর ইন্টার্নশীপ, পরের্দুবছর মেডিসিন, সার্জারি, gynae ও অন্যান্য ক্লিনিকাল সাবজেক্ট এ ৪ মাস করে ট্রেনিং দিলে ভালো হয়।
    রোগী দের খাবার দাবার ব্যাপার তা NGO দের হাতে ছেড়ে দিলেই ভালো হয়।

    আমাদের দেশে প্রাইমারি হেলথ কেয়ার একটি ব্যর্থ প্রজেক্ট। PHC চালানো র দায়িত্যে থাকা উচিত অভিজ্ঞ নার্স ও ফার্মাতিস্ট দের। যাদের অধিকাংশ স্থানীয় হওয়া বাঞ্চনীয়। এখানে পাস করা ডাক্তার এর দরকার নেই। ইটা সময় ও পাবলিক মনে র অপচয়।
    ব্লক ফক গুলো তে অন্তত ৭-৮ জন ডাক্তার থাকা উচিত। যাদের মধ্যে একজন জ্ঞনে ও একজন
    অনেস্থেতিস্ট মান্দাতরী।
    এচারা স্তেরিলিটি মেইনটেইন করা, অপ্রয়োজনীয় অষুধ কম লেখা সাস্থ্য সচেতনতার প্রচার বাড়ানো , এগুলো করলেই আউটপুট অনেক গুন বেড়ে যাবে।আমার মনে হয় উপরের কোনো কিছুতেই খরচ বিশেষ বাড়বেনা। অন্যান্য মেডিকেল/নন মেডিকেল profession এর লোকজনদের পরামর্শ ও idea পেলে ভালো লাগবে।
  • Punyabrata Goon | 151.0.8.158 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:৪৭46846
  • প্রিয় sm,
    আপনি কোন পেশার কোন সময়কালের মানুষ জানি না।
    যে আন্দোলনের কথা বলেছি তাতে আমি অংশগ্রহণ করেছি, একজন জুনিয়ার ডাক্তার হিসেবে ৩০ বছর আগে। abjdf আন্দোলনের পর তিন বছর আমি কাজ করেছি মেডিকাল কলেজে। কাজ যে হয়েছিল তা নিজের প্রত্যক্ষ করা, যেসব কথা বলেছি।
    আপনি অনেকগুলো সুপরামর্শ দিয়েছেন, কিন্তু সেগুলো কার্যকর করার পূর্বশর্ত হল--সরকার স্বাস্থ্যপরিষেবা থেকে হাত গুটিয়ে নেবে না বিশ্ব ব্যাংক-আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডারের শর্ত মেনে। স্বাস্থ্য পরিষেবা বেসরকা্রী পুঁজির হাতে চলে যাওয়া যদি রোখা না যায় তাহলে কিছুতেই কিছু হবে না।
  • sm | 122.79.36.13 (*) | ০৭ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:১৭46847
  • @PG , আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর হলো,স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, সরকারী নিয়ন্ত্রণে ই থাকা উচিত। আমার বিশ্বাস উপরিউক্ত পরামর্শ গুলি কাজে লাগাতে পারলে, আউটপুট বেসরকারী হস্পিটাল্স এর চেয়ে বেশি কার্যকরী হবে। বেসারকারি স্বাস্থ্য পরিসেবা কখনই নিম্নবর্গের মানুষ দের চাহিদা পূরণ করবে না।কারণ মুনাফা লুটাই , তাদের একমাত্র লক্ষ্য।কিন্তু সেন্টার অফ excelence হিসেবে তাদের ভূমিকা থাকতে পারে।
    একমাত্র সরকারী পরিষেবাই গরিব মানুষ মাথা উঁচু করে গ্রহণ করতে পারে।
    আমি,এ ব্যাপারে অন্যান্য মেডিকেল/নন মেডিকেল প্রফেস্সিওন এর লোকজন দের বক্ত্যব্য শুনতে আগ্রহী।
    আমার আর একটি প্রশ্ন, বিশ্ব ব্যাঙ্ক, বা আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার এর শর্তাবলী কি, ভালো পরিষেবার অন্তরায় ?
    ABJDF , এর আন্দোলন, নির্সন্দেহে প্রসংশার যোগ্য, কিন্তু, বৃহত লালবাড়ি কে নাড়া দেবার পক্ষ্যে যথেষ্ট ছিলনা।
  • Punyabrata Goon | 151.0.8.139 (*) | ০৯ অক্টোবর ২০১৩ ১১:৫৩46848
  • লাল বাড়িতে অবশ্যই নাড়া পড়েছিল, তার প্রমাণ সরকারী ডাক্তারদের সংগঠন HSA ভেঙ্গে AHSD তৈরী করা, ABJDF ভেঙ্গে JDC তৈরী করা, হাসপাতালে হাসপাতালে নজরদারির জন্য পেটোয়া ডাক্তারদের বসিয়ে দেওয়া।
    অবশ্যই পরিবর্তনগুলো দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ব্যাপক জনসাধারণের অংশগ্রহণ ছাড়া তা সম্ভব নয় বলেই আমার মত।
  • Punyabrata Goon | 151.0.8.139 (*) | ০৯ অক্টোবর ২০১৩ ১২:০৩46849
  • ছোটখাট পলেস্তারা নয়,আসলে সমস্যাগুলো মিটতে পারে সর্বজনীন স্বাস্থ্যের অধিকার হলে।
    জানি সমাজ না বদলালে সর্বজনীন স্বাস্থ্য মরীচিকাই থেকে যাবে। তা বলে কি মানুষ অন্যায় অবিচার মুখ বুঁজে সয়ে যাবেন?
    না। মাঝে মাঝেই তাঁরা ফেটে পড়বেন বিক্ষোভে। ABJDF আন্দোলনের মতো।
  • π | 118.12.173.94 (*) | ০৯ অক্টোবর ২০১৩ ১২:০৮46850
  • এখনকার জুনিয়র ডাক্তাররা এনিয়ে কী বলেন ? আন্দোলনের কোন আশা আছে ?
  • dr. kamalendu chakrabarti | 24.96.99.100 (*) | ১০ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:০৬46851
  • জুনিওর ডাক্তারদের এই আন্দলনের কথা আমার খুব মনে আছে। কারণ এই আন্দলের জের আমাকে সমস্ত চাকরি জিবনে ভগ করে যেতে হয়েছ। ৮ই অক্তবর আমাকে অধস দ্র। দেয় আমাকে দেডেকে নিয়ে গিয়ে লোভ দেকান যে আমি কয়েকদিন ব।ক। রয় হাশপাটালে ডেপূটাটীওণ কাজ কোড়ী টোবে আমার শোব ধরেনের শূবীঢা হবে। বাড়ির কাছে মেডিকেল কোলেগে পোস্টিং হবে। বোলতে গেলে একেবারে ঢোড়ে আমাকে বিসি রায় হাস্পাতালে পাথান হয়। আমি নিয়ম মাফিক জয়েনও করি। এবং তারপর অন্যদের মত স্ত্রাইকে যোগ দি। এর ফলে আমার এক্তার পর একটা শাস্তি হতে থাকে। আমি কোনও বপোস্ট পাই না। এবং টিচার হয়া কনদিন হয় না। এ কতলহন কাগজে বেড়িয়েছিল।

    আন্দলেনের এত বিস্তারিত বিবরনের জন্য অসঙ্খ ধন্নবাদ।
  • dr. kamalendu chakrabarti | 24.96.99.100 (*) | ১০ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:১০46852
  • উপরের লেখাটা mismatch ফন্টের জন্য পরা যাচ্ছে না।
  • π | 118.12.173.94 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:৫৩46853
  • বোঝা যাচ্ছে মোটামুটি। আপনি কোন লে আইউটে লিখেছ্নে ?
  • dr. kamalendu chakrabarti | 24.99.130.96 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ১১:০৯46854
  • এই ঘটনা আমার চ্ক্রিজীবন শেষ করে দিয়েছে। আমি সরকারের দালালি করিনি বলে। আমি অনেকদিন ধরে ওই সময়কার ডিটেল তা জানতে চাইছিলাম, উপরের লেখাটার বিস্তারিত বিবরণ আমার খুব কাজে লাগবে। suswasthyo পত্রিকায় আমার ডাক্তারি জীবন নিয়ে নিয়মিত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিক বেরোচ্ছে। আমি এই লেখ্টার ঘটনাগুলো আমার মত করে ব্যবহারের জন্য অনুমতি চাইছি।
  • pi | 785612.51.1267.150 (*) | ১৬ জুন ২০১৯ ০৮:৫৩46855
  • এই দাবিগুলো নিয়ে আবার সোচ্চার হওয়া যায়না?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন