সন্ধে ছটা বাজে । শ্যামবাজারের কফি হাউসে তিনজন বহুক্ষণ ধরে বসে বসে ছক কষায় ব্যস্ত । স্নেহাংশু মিত্র, অমিতাভ সেন আর সুনির্মল বরাট । লিটল ম্যাগাজিনের ছক । শুধুই কবিতা পত্রিকা । একটা নাম আপাতত আলোচনার মধ্যে আছে ---- সংসপ্তক। নামটা স্নেহাংশুর পেশ করা । তবে নামটা এক কথায় খারিজ করে দিল অমিতাভ । বলল, ' দূ..র এসব চলবে না । বেশ মারকাটারি কিছু একটা চাই । ধর বুলেট বা গাঁইতি বা অন্ডকোষ বা কাতুকুতু বা গুঁতোগুঁতি এই ধরণের কিছু । সুনির্মলের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে সে অমিতাভর পাশেই আছে । একটা সিগারেট ধরিয়ে টেবিলে দুটো কনুই রেখে একটা ... ...
স্কটিশ চার্চ কলেজের অ্যানুয়াল ফাংশান হবে মহাজাতি সদনে। ওরা নাকি হেমন্তকে নিয়ে আসছে এবার। বিভূতিবাবু কথাটা শুনে একেবারে উড়িয়ে দিলেন। ---- ' ওসব বাজে কথা। ডাহা মিথ্যে কথা। হেমন্ত মুখার্জি এখন বম্বেতে। সময়ই দিতে পারবে না .... তাছাড়া টাকার ব্যাপার তো আছেই .... ' নিতাইবাবু কথাটা সমর্থন করলেন। ----- ' সে তো বটেই। তার চেয়ে বরং ধনঞ্জয় বা সতীনাথকে ট্রাই ... ...
হেদুয়ায় পুকুরের পশ্চিমদিকে একফালি জমি আছে রাস্তার দিকে। সেখানে একদিন এক বেঁটেখাটো মোটাসোটা ভদ্রলোক এলেন। গেরুয়া রঙের পাঞ্জাবী এবং ধুতি পরা। ওখানে একজন বলল, ' ইনি হলেন অখিল নিয়োগী মানে, স্বপনবুড়ো। সবপেয়েছির আসর চালান সারা বাংলায়। এখানেও একটা করবেন বলে এসেছেন। ইনি নাকি বইও লেখেন। একটা বই সিনেমাও হয়েছে ---- বাবুই ... ...
বীরেনবাবু নিতাইবাবুর অফিসের সহকর্মী। নিতাইবাবুর বাসায় প্রায়ই আসেন। নিতাইবাবুর ছেলে মেয়ে তখন ছোট ছিল। বীরেনবাবু বাসায় এলেই তাদের মন আনন্দে নেচে ওঠে। তাদের সন্ধেবেলার লেখাপড়া মুলতুবী হয়ে যায়। বাবা মা কিছু বলে না। না না, বীরেন সান্যাল কোন খাবার দাবার আনেন না। কিন্তু অনেক গল্প নিয়ে আসেন। নানা রোমহর্ষক অ্যাডভেঞ্চারের গল্প। বেশির ভাগই সমুদ্রের তলায় জলজন্তুদের মোকাবিলা করা ... ...
হেদুয়া পার্কের একপাশে রামদুলাল সরকার স্ট্রীট। কর্ণওয়ালিস স্ট্রিটের বুকের ওপর দিয়ে আড়াআড়ি বেরিয়ে গেছে ওদিকে দর্জিপাড়ার দিকে। ওই রাস্তাতেই মোড়ের মাথায় বইয়ের দোকান বৈকুন্ঠ বুক হাউস। খানকয়েক বাড়ির পরে নিতাইবাবুর মানে, নিতাইচন্দ্র ভট্টাচার্যের বাড়ি। ভাড়াবাড়ি আর কি। নিতাইবাবু পরিবার নিয়ে একতলায় থাকেন। রেল অফিসে চাকরি করেন। দোতলাতেও আর এক ঘর ভাড়াটে আছে। অনিল ঘোষ সেখানে তার পরিবার নিয়ে থাকেন। বাড়িওয়ালা বিভূতিবাবু, বিভূতিভূষণ দত্ত সপরিবারে তিনতলায় থাকেন। তার বয়স প্রায় ষাট বছর। বায়োস্কোপ দেখার খুব শখ। একা একাই দেখেন। তার স্ত্রী যান তার ... ...
(শেষ পর্ব) কলতান হেসে হরিপ্রসাদকে বলল, ' আসুন আপনারা .... আমরা পেছনের ঘরে বসে একটু কথাবার্তা বলি .... 'আগরওয়ালজি একগাল হেসে বললেন, ' হ্যাঁ চলুন স্যার ... 'স্বামী স্ত্রী দুজনে কলতানের পিছন পিছন একটা ঘরে গিয়ে ঢুকল। অনেক পুরণো বাড়ি, ছোট বড় মিলিয়ে অনেকগুলো ঘর ।----- ' বসুন বসুন হরিজি। বসুন ম্যাডাম ... আপনাদের মতো ওয়েল ম্যাচড পেয়ার আমি বেশি দেখিনি। খুব ভাল লাগে আপনাদের ... ...
কুলচাকে নিয়ে কলতান বাড়ি ফিরল রাত দশটা নাগাদ । থানা থেকে বেরোবার সময় গৌতমবাবুকে জিজ্ঞেস করল , ' নিউআলিপুর থানার এনকাউন্টারে কোন ইনজিওরি হয়েছে কিনা জানেন কি ? '----- ' না না ... কোন ইনজিওরি নেই। আমি রিপোর্ট নিয়েছি .... ওটা হলে তো আবার হসপিটালের চক্কর আছে ... ওঃ... '----- ' ঠিক আছে , আমি বেরোচ্ছি । আমার ডিউটিশেষ। এবার আপনারা প্রসিড করুন .... '----- ' কি যে বলেন ... আপনার ডিউটি কখনও শেষ হয় ? যাক কোর্ট কেসটা তো চালু হোক ... '----- ' সেটাই তো বলছি .... বেল আটকানোর জন্য যা করতে হয় করবেন ... অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার স্যারের ... ...
কলতান বলল, ' এনাফ ইজ এনাফ ... মিস্টার রক্ষিত... এবার ওর কাছ থেকে মোবাইলটা নিয়ে নিন ... আশা করি আমাদের কাজ হয়ে গেছে । ওটা সাইবার সেলে পাঠানোর দরকার । আমার ধারণা ওতে এদের কিংপিনের ট্রেস পাবেন .... ' গৌতমবাবু তার পিস্তল লোড করতে করতে বললেন , ' সুনীতা, অপর্ণা ... ওর মোবাইল সিজ কর এক্ষুণি । আর...বডি ফ্রিস্ক করে দেখ কিছু পাও কিনা । কাউন্টার চার্জ করলে কাস্টডি হাজতে লক করে দাও .... হারি আপ .... আমি বাইরে যাচ্ছি ... 'সুনীতা আর অপর্ণা ছুটে গেল জ্যাকলিনের দিকে ।জ্যাকলিন কোন বাধা দিলেন না । মোবাইলটা দিয়ে দিল ওদের । সুনীতা ... ...
কলতান বলল, ' আসুন আসুন ... আমি আপনাদের জন্যই ওয়েট করছি ... 'গৌতম রক্ষিত অবাক হয়ে এর ওর মুখের দিকে তাকাতে লাগলেন । কুলচারও একই অবস্থা ।----- ' আপনি জানতেন আমরা আসব ? ' সুগত সেন বললেন ।----- ' হ্যাঁ .... সেটা তো না জানার কিছু নেই। আমি আপনাদের কোড ল্যাঙ্গুয়েজ না বুঝতে পারি কিন্তু মনের ভাষা তো কিছুটা পড়তে পারি । স্বীকার করতে দ্বিধা নেই আপনাদের মতো ইন্টারেস্টিং লোকেদের ফোনের কথাবার্তা আড়ি পেতে শোনার আমার খুব শখ । সব কথা যে ঠিক ঠিক ধরতে পারি তা নয় , তবে ধরার চেষ্টা করি । সুগতবাবু কিছু মনে করবেন না ... ... ...
কলতান আর সিদ্ধার্থ সিনহাকে ঘরে ঢুকতে দেখেমিসেস সিনহা মোবাইল থেকে মুখ তুলে ওদের দিকে তাকালেন । মিষ্টি সংবেদনশীল হাসি হেসেসিদ্ধার্থবাবুর দিকে এগিয়ে এলেন ।----- ' ইশশ্ ... দুদিনেই কি চেহারা হয়েছে ... মাগো ... ' দুচোখে বিষণ্ণ ছায়া নেমে এল জ্যাকলিনের । কুলচা সব কিছু ভুলে গিয়ে ওনার অভিনয় দক্ষতা দেখে মুগ্ধ হতে লাগল ।জ্যাকলিন একটা কমলা চিউয়িং গাম মুখে দিল । তারপর একটু সরে গিয়ে দাঁড়াল। কলতান গৌতমবাবুকে বলল , ' আমরা কি পাশের ঘরে বসব ? '----- ' হ্যাঁ , সেটাই বেটার হবে । ওখানেই ... 'কলতানকে একপাশে ডেকে নিয়ে গিয়ে উনি নীচুগলায় বললেন , ' অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার স্যারকে ... ...