বর্তমান সময়ের অতি আলোচিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করার আগে আমাদের উচিত কাজ হবে ভারতবর্ষের শ্রম আইন নিয়ে একটু জেনে নেওয়া। কারণ রাজ্য সরকারী কর্মচারীরা যেমন একদিকে ডিয়ারনেস এল্যাউন্সকে তাদের ন্যায্য দাবী বা অধিকার বলে প্রচার করছে তেমনি রাজ্য সরকার ডিয়ারনেস এল্যাউন্সকে সরকারের অনুদান বলে প্রচার করছে। অর্থাৎ সরকারের এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই যে তার কর্মচারীদের নিয়মিতভাবে ডিয়ারনেস এল্যাউন্স দিতে হবে। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন মুখপাত্ররা মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের দুটি রায়কে তাদের যুক্তির স্বপক্ষে ঢাল করছে। সরকারী দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে যদি ভাবনা শুরু করা যায় তাহলে বলতে হয়, সরকারী কর্মচারীরা যেমন সরকারের অধীনে কর্মরত এবং তাদের বেতন, ভাতা ইত্যাদি প্রদান করা সরকারের দ্বায়িত্বের ... ...
ছোটবেলা থেকেই আমাদের মনে স্বর্গ - নরক, পাপ - পূণ্য ইত্যাদির সম্পর্কে ধারণা তৈরী করে দেওয়া হয়। বাড়ীই হোক বা সমাজ কিংবা স্কুল, সর্বত্রই সরাসরি অথবা ঘুরপথে শিশুমনে গেঁথে দেওয়া হয় এই ধারণাগুলো। শিক্ষিত - অশিক্ষিত, ধনী - দরিদ্র সকলের মনেই ছোটবেলা থেকে এই অলৌকিক এবং বিমূর্ত ধারণাগুলো তৈরী হয়ে যায় সমাজের কারণেই। পরবর্তীতে খুব কম মানুষ এই ধারণাগুলো থেকে বেড়িয়ে আসতে পারে। কিন্তু যে অসংখ্য মানুষ লৌকিক জগতে ফিরতে পারে না বা বিচরণ করতে পারে না, রক্তের তেজ কমতে শুরু করলে এই বিমূর্ত ধারণাগুলো আরও শাখা প্রশাখা বিস্তার করতে শুরু করে তাদের মানসিক স্তরে। শিশুমনে যে বীজ পুঁতে দেওয়া ... ...
বিগত বেশকিছু বছর ধরে উন্নত প্রযুক্তিতে সেজে উঠছে ডাক বিভাগ। এই শতকের প্রথম দিক থেকে ডাক বিভাগে কম্পিউটার প্রবেশ করলেও বিভাগের সমস্ত ধরনের কাজকে যান্ত্রিক কাজে রূপান্তরিত করা ছিল ডাক বিভাগের কাছে এক প্রাচীরপ্রমাণ বাধা। বিভাগে উপলব্ধ মানব সম্পদ, কাজের ধরন এই অন্তরায়ের মূল কারণ। ভারতবর্ষের মধ্যে ডাক বিভাগই হলো একমাত্র বিভাগ যেখানে একদিকে রেজিস্ট্রি, পার্সেল, স্পিড পোস্ট, মনি অর্ডার ইত্যাদি বুক হয় এবং বিলি হয়, পাশাপাশি ব্যাঙ্কিং পরিষেবা ও বীমা পরিষেবার কাজ হয়। চিঠিপত্রের বুক হওয়া থেকে বিলি অব্দি প্রতিটি স্তরে হিসেব রাখা আবার টাকা জমা নেওয়া, গ্রাহকের একাউন্ট থেকে টাকা তোলা, নতুন কোনো ফিক্সড ডিপোজিট চালু করা থেকে ... ...
আজকের দিনে মুহূর্তের মধ্যে বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে বার্তা পৌঁছে যায় অতি সহজেই। অতি উন্নত প্রেরণ ব্যবস্থার কারণে কোনো খবর থেকে যে কোনো ছবি বা ডকুমেন্ট যাইহোক না কেনো মুহূর্তের মধ্যে যে কোনো দূরত্বে পাঠানো আজ আমাদের কাছে শুধুমাত্র একটা ক্লিক বা মোবাইল ফোনে একটা আলতো টোকা। এখন আমরা বার্তা বলতে অনেককিছু বুঝলেও শুরুর সময়ে বার্তা বলতে চিঠি বা খবর বোঝাত। কিন্তু এই বিবর্তন তো একদিনে আসেনি। আমাদের মাথায় বার্তা প্রেরণের প্রয়োজনীয়তার কথা প্রথম আসে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের আমলে, ৩২১ থেকে ২৯৭ খ্রীষ্ট পূর্ব্বাদে। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য তাঁর বিরাট সাম্রাজ্যকে শাসন ব্যবস্থার সুবিধার জন্য কয়েকটি প্রদেশে বিভক্ত করেছিলেন। তিনিই প্রথম ... ...
বর্তমানে রাজ্যের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো দুটি, প্রথমটি চাকুরী সংক্রান্ত দুর্নীতি আর দ্বিতীয়টি চাকুরী সংক্রান্ত মাগ্গীভাতা। টিভির যে কোনো চ্যানেল খুললেই এই দুই বিষয়ে আলোচনা ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছেনা বেশ কয়েকমাস ধরে। অর্থাৎ যারা চাকুরী পায়নি আর যারা চাকুরী করছে এই দুদলই এইমুহুর্তে আলোচনার শিরোনামে। প্রত্যেকেই যতরকমভাবে রাজ্য সরকারের ওপরে চাপ সৃষ্টি করা যায় করছে। তাদের বক্তব্য ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার কাজটা বিভিন্ন মিডিয়াগুলো খুব ভালোভাবেই করে চলেছে এখনও অব্দি। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও সরকারের বিরুদ্ধে জনমানসে হিন্দোল তোলার কোনো চেষ্টাই বাকী রাখছে না। বিভিন্ন রকমের মিম, ট্রোল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে শত শত। কেউ মেয়ের জন্য শিক্ষক পাত্র দেখতে গিয়ে ... ...
বর্তমানের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার কলকাতা ঘেঁষা একটি জায়গা হরিনাভি। সড়কপথে আসতে গেলে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু রোড ধরে গড়িয়া থেকে সোজা নরেন্দ্রপুর, রাজপুর হয়ে হরিনাভি যাওয়া যায় আর রেলপথে আসতে গেলে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় নিকটবর্তী সুভাসগ্রাম স্টেশনে নেমে যাওয়া যায়। বর্তমানে জায়গাটির খুব এমন যে পরিচিতি আছে তা বলা যায় না। কিন্তু এককালে হরিনাভি বাংলার সাংস্কৃতিক জগতের একটি সমৃদ্ধ জায়গা বলে পরিচিত ছিল। ১৮৬৭ সালে হরিনাভির দক্ষিণপ্রান্তে কেদারনাথ দে-র উদ্যোগে তাঁর জমিতেই তৈরি হয়েছিল হরিনাভি ব্রাহ্ম সমাজ। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরও এই মন্দিরের জন্য টাকা দিয়েছিলেন। হরিনাভি ব্রাহ্ম সমাজ পরিচালিত স্কুলটি এখনও জনপ্রিয় এবং অনেকেরই ছাত্রজীবন শুরু হয় এই স্কুলটিতে। হরিনাভি ... ...
গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র সম্বলিত মহাবিশ্বের রূপরেখা আবিষ্কৃত হাওয়ার পর থেকেই মানুষের মনে প্রথম কৌতূহল তৈরী হয় যে, এই মহাবিশ্বের অন্য কোথাও কি প্রাণের অস্তিত্ব আছে? মহাবিশ্বের কোথাও কি আমাদের মত বা আমাদের চেয়ে আরও উন্নত জীবের অস্তিত্ব আছে? কৌতূহল হলেই তো তা একদিনে নিরসন করা যায় না, বিশেষ করে সেটা যখন মহাবিশ্বের ব্যাপার। কত কোটি আলোকবর্ষ জুড়ে যে এই মহাবিশ্ব তার হদিশই আমরা এখনও পাইনি। প্রাণ থাকতে গেলে বা প্রাণের বিস্তার ঘটতে গেলে যা যা প্রাথমিক শর্তাবলীর প্রয়োজন সেইসব শর্ত পূরণের হদিশ বিজ্ঞানীরা অনেক গ্রহে পেয়েছেন আজ অব্দি, কিন্তু সেইসব গ্রহে প্রাণ আছে কিনা তার প্রমাণ এখনও মেলেনি। যদিও এই ... ...
স্নেহের, অনুশাসনের, ভালোবাসার, প্রিয়জনদের জগৎটা ছোট হতে হতে প্রায় শূন্য হয়ে আসছে। সুজলাং, সুফলাং এই ধরিত্রীতে জন্ম নেওয়ার পর প্রিয়জনদের এক বিশাল জগৎ পরমানন্দ মাধবের কৃপায় স্নেহের, অনুশাসনের, ভালোবাসার, আশ্রয় - প্রশ্রয়ের বন্ধনে বেঁধেছিলো। মায়া - মমতায় আবদ্ধ হতে হতে মোহময় হয়ে উঠেছিল জগৎটা। স্কুল, কলেজের জীবনে সেই জগৎটা আরও ব্যাপ্ত হয়েছিল। শিশুকালের বা যৌবনের শিশুসুলভ মনটা তখনও পঙ্কিলতার গন্ধ পায়নি, ফলে জগৎটা পারিজাতময় ছিল একটা বিশাল সময় জুড়ে। কলেজ শিক্ষার শেষে চাকুরী জীবনে প্রবেশের পরে সেই পারিজাতের সুগন্ধ ক্রমে উবে যেতে থাকে, পৃথিবী ক্রমেই গদ্যময় হতে থাকে। শিশুমন পঙ্কিলতার গহ্বরে হাঁফিয়ে উঠতে থাকে। আবার বিবাহের পরে সংসারের পাকেচক্রে জীবনের ... ...
একজন শিল্পী, অর্থাৎ সংস্কৃতি জগতের মানুষ, তা তিনি কবি হতে পারেন, লেখক হতে পারেন, সংস্কৃতি জগতের যে কোনো শাখার প্রতিনিধি হতে পারেন, তিনি তাঁর শিল্পের মাধ্যমে সমাজের সামনে সবসময় তাত্বিক দিক থেকে সঠিক বিষয়টিই তুলে ধরবেন। পাশাপাশি তিনি তাঁর শিল্পের বিষয়বস্তু নির্ধারণ করবেন সমকালীন সমাজে ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা বা দুর্ঘটনা থেকে। আবার ঘটনাক্রম বা দুর্ঘটনাক্রমকে সমাজের কাছে তুলে ধরেই তিনি ক্ষান্ত হবেন না, যদি তাঁর শিল্পের মাধ্যমে সম্ভব হয় তিনি সেই ঘটনা বা দুর্ঘটনাকে তাঁর নিজস্ব ধারা বা ঘরানা অনুযায়ী প্রতিবাদও করবেন। এটাই শিল্পকলা বা সংস্কৃতির মূলমন্ত্র বা গোড়ার কথা। একজন চিত্রশিল্পীর বা ভাস্করের হয়তো এই স্বাধীনতার পরিধিটা বেশী ... ...
আমাদের পৃথিবী নামক গ্রহটি সূর্য নামক যে নক্ষত্রটির চারিপাশে ঘুরে চলেছে নিত্য, সেই ঘুরে চলার একটি বৃত্ত (উপবৃত্ত বলা ভালো) সম্পূর্ণ হতে যে সময় লাগে, তাকেই আমরা এক বছর বলে ধরে থাকি। ঘূর্ণনের সেই সময়টাকেই আমরা নিজেদের সুবিধার জন্য মাস, দিন, ঘন্টা, মিনিট, সেকেন্ডে ভাগ করে নিয়েছি নিজেদের মতো করে (এই ভাগটা অন্য ভাবেও হতে পারতো) এবং সেই হিসেবমতো বিশ্বের বিভিন্ন অংশে বিভিন্নভাবে আমরা ক্যালেন্ডারের প্রচলন করেছি। আবার দিন বলতে পৃথিবীর নিজের অক্ষ বরাবর একবার ঘূর্ণনের সময়টাকে ধরা হয়। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, পৃথিবী যেমন নক্ষত্রের চারিদিকে ঘুরছে, তেমনি নক্ষত্রও নিজের অক্ষ বরাবর ঘুরছে এবং ছায়াপথের কেন্দ্রের চতুর্দিকে উপবৃত্তাকারে ঘুরছে। আবার ... ...