এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিবিধ

  • শংকর ভাষ‍্যে - বশী বন্দনা

    সমরেশ মুখার্জী লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ৩৬২৬ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  •    শঙ্করীপ্রসাদ বসু ছিলেন পেশায় অধ‍্যাপক। নেশায় বিবেকানন্দ গবেষক। সাত খণ্ডে "বিবেকানন্দ ও সমকালীন ভারতবর্ষ" গ্ৰন্থ রচনার জন‍্য তিনি সাহিত্য আকাদেমী পুরস্কারে সম্মানিত হন। একদা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শঙ্করীপ্রসাদ দীর্ঘদিন ওখানে বাংলা বিভাগে অধ‍্যাপনা করে অবশেষে নয় বছর বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করে অবসর নেন। গোলপার্কের রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অফ কালচারে ১৯৯৫তে স্বামী বিবেকানন্দ সম্পর্কিত আর্কাইভের জন্মলগ্ন হতে আমৃত্যু সংযুক্ত ছিলেন। হয়েছিলেন সেই আর্কাইভের ডিরেক্টর। ডঃ নিমাইসাধন বসু‌ও একজন ঐতিহাসিক, শিক্ষাবিদ। মাধ‍্যমিকে ওনার ইতিহাস ‌ব‌ই পড়ে‌ছি। সাবলীল ভাষা, সুন্দর বিষয় বিন‍্যাস, আকর্ষণীয় উপস্থাপনা, ঝকঝকে ছাপার ব‌ই‌টি ছিল আমার খুব প্রিয়। ডঃ ভোলানাথ চক্রবর্তী ছিলেন এক প্রখ‍্যাত হোমিওপ্যাথ। রাষ্ট্রপতি, রাজ‍্যপালের চিকিৎসার জন‍্য‌ও ওনার ডাক পড়তো।
     

       উপরোক্ত তিন বিখ‍্যাত ব‍্যক্তিত্ব‌ই ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হা‌ওড়া বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউশন নামক স্বনামধন‍্য বিদ‍্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র। ১৯৫৬ সালে সেই  বিদ‍্যালয়ের উচ্চমাধ্যমিক শাখার ভবনটি‌র উদ্বোধন করেন আর এক মহান ব‍্যক্তিত্ব - তদানীন্তন রাজ‍্যপাল ডঃ হরেন্দ্রনাথ মুখার্জী।  মণিশংকর মুখোপাধ্যায় বা জনপ্রিয়, সাহিত‍্য আকাদেমী পুরস্কার‌প্রাপ্ত লেখক - শংকর‌ও ছিলেন বিবেকানন্দ ইন্সটিটিউশনের ছাত্র। বয়সে ৫ বছরের অগ্ৰজ বিবেকানন্দ স্কুলের শঙ্করীপ্রসাদ শংকরকে ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহভরে তুই তোকারি করতেন। লেখা‌র ব‍্যাপারে উৎসাহ, তথ‍্য, পরামর্শ, দিশা জুগিয়েছে‌ন। অবশ‍্য শংকর তাঁর স্বভাবজ বিনয়ে অনেক অগ্ৰজ লেখকের স্নেহ‌ভাজন ছিলেন - যেমন বিমল মিত্র। শংকরের প্রথম ব‌ই "কত অজানারে" ও দ্বিতীয় ব‌ই "চৌরঙ্গী" প্রকাশের পর শঙ্করীপ্রসাদ অনুজ শংকরকে পরামর্শ দিয়েছিলেন - হাইকোর্টের অভিজ্ঞতা, হোটেলের আখ‍্যান তো হোলো - এবার নতুন কোনো বিষয়ে লেখ্। দীর্ঘ এক বছরের প্রচেষ্টায় শংকর লিখলেন - "নিবেদিতা রিসার্চ ল‍্যাবরেটরি"। 
     

     ২০২২ এর সেপ্টেম্বরে - "শারদীয়া বর্তমান" ১৪২৮এ প্রকাশিত শংকরের একটি বিশেষ রচনা - "কেমনে তোমারে ভুলি?" পড়ে বেশ লাগলো। নানা অজানা বিষয় জানলাম। যেমন ঐ নিবন্ধের কেন্দ্রীয় বাস্তব চরিত্র - বশী সেনের আদলেই নির্মিত হয়েছিল নিবেদিতা রিসার্চ ল‍্যাবরেটরি উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র - বিজ্ঞানী জীমূতবাহন সেন।



    শংকরের এই বিশেষ রচনার চরিত্র - বিশ্ববিখ্যাত কৃষিবিজ্ঞানী বশীশ্বর সেন - আদিতে  বিষ্ণু‌পুর নিবাসী বশী সেন। হায়! এনার প্রেক্ষাপট, কর্মকাণ্ড তো দুরের কথা - ২০২২এ শংকরের লেখাটি পড়ার আগে অবধি আমি ওনার নাম পর্যন্ত শুনিনি‌। কী লজ্জা! শংকরের লেখা‌য় ওনার সম্পর্কে অনেক কথা জানলাম - যেমন কীভাবে লেওনার্ড এলমহার্স্ট বারংবার ওনাকে নানাভাবে আর্থিক সাহায্য করেছে‌ন। কেমব্রিজ ও কর্ণেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাপ্রাপ্ত এই বিশ্ববিখ্যাত ব্রিটিশ কৃষি‌বিজ্ঞানী‌র কথা অবশ‍্য কিছুটা জানা ছিল। জানতাম তিনি শান্তি‌নিকেতনে বেশ কিছুদিন থেকে রবীন্দ্রনাথের আশ্রমে কাজ করেছেন, সেখানে স্থাপনা করেছেন Institute of Rural Reconstruction. 
     

    শংকরের ঐ লেখায় মহান বিজ্ঞানী আচার্য্য জগদীশ চন্দ্রের কিছু চারিত্রিক ক্ষুদ্রতা জেনে দুঃখ পেলাম। বশী সেন তাঁর সাহায্য‌কারী হিসেবে বারো বছর কাজ করে একদিন‌ও ছুটি নেননি - কিন্তু ছোট ভাই সতীশ্বরের প্রবল অসুস্থতার জন‍্য একটি রবিবার না আসায়, আচার্য্য বিরক্তি প্রকাশ করলেন। বশী সেন তিন বছরের মেহনতে তৈরী করে তাঁর মৌলিক গবেষণার খসড়া দেখতে দিয়েছিলেন জগদীশ‌ চন্দ্রকে। মহান আচার্য্য বশী সেনের নামোল্লেখ অবধি না করে তা বিদেশে‌র জার্নালে নিজের নামে ছাপিয়ে দিলেন! 
     
     অন‍্য লেখা‌তে পড়েছি সমসাময়িক ঋষি‌প্রতি‌ম বিজ্ঞানী আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের প্রকাশিত গবেষণা‌পত্রে সেই গবেষণায় তাঁর সহকারী‌দের নাম‌ও থাকতো। জগদীশ‌ চন্দ্রর তেমন সৌজন্য‌বোধ, মানবিক উদারতা ছিল না। তাই জগদীশ চন্দ্রের র প্রকাশিত গবেষণা পত্রে তাঁর বিশেষ সহকারী‌দের নাম‌ও থাকতো না।

       একবার আমেরিকা‌ন গবেষক গ্ৰেন ওভারটন বশীকে এক বছরের জন‍্য সহকারী হিসেবে নিয়ে যেতে চাইলে‌ন। বশী আচার্য্য‌র কাছে এক বছরের ছুটি চাইলেন। বিরক্ত হয়ে আচার্য্য বসু বললেন -"যদি তোমার এখানে কাজ করতে ভালো না লাগে তাহলে যেখানে খুশী যেতে পারো"। একযুগ ধরে নিরলস কর্মসেবার যোগ‍্য পুরস্কার! 
     
      চলে গেলেন বশী আমেরিকা‌য়। তবু বশী যে দুজন মানুষের শতায়ু কামনা করতেন - তাঁদের একজন রবীন্দ্রনাথ। অন‍্যজন জগদীশ‌ চন্দ্র‌। এতেই 'সদানন্দ‌র কুত্তা' বশীশ্বর সেনের মহানুভবতা উপলব্ধি করা যায়।
     
     
      বিবেকানন্দ যখন স্বামী‌জী হয়ে বিশ্ববিখ্যাত হননি, সেই তখন যে মানুষটি নির্দ্বিধায় এক অচেনা রমতা যোগীর শিষ‍্যত্ব গ্ৰহণ করে হেলায় উত্তরপ্রদেশে হাতরাশ স্টেশনের রেল কর্মচারী‌র চাকরি ছেড়ে বিবেকানন্দ‌র সাথে অনির্দিষ্ট সন্ন‍্যাসযাত্রায় পথে নামেন - স্বামী‌জীর সেই  প্রথম শিষ‍্য‌ই সদানন্দ। পরে বশী সেন শিষ‍্যত্ব গ্ৰহণ করেন সদানন্দ‌র। বশীদের বিষ্ণুপুরের নিবাসে‌ স্বামী সদানন্দ এসেছেন, থেকেছে‌ন। বশী পেয়েছেন গুরুসেবার সুযোগ। মৃত্যুর আগে বশীশ্বর, ভাই মতীশ্বর ও বশীর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের সহপাঠী বিভূতি ঘোষকে সদানন্দ সস্নেহে বলেছিলেন - "যা শালারা ডালকুত্তা রেখে গেলাম - তোদের কিছু করতে পেরেছি কী পারিনি জানি না - তোদের কর্তার (স্বামীজীর) সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছি"। আজীবন বশী তাই তাঁর গুরু সদানন্দ‌র কুকুর হতে পেরে নিজেকে ধন‍্য মনে করেছেন। 

      আমেরিকা থেকে ফিরে বশী পুনরায় আচার্য্য জগদীশ চন্দ্রের কাছে বসু বিজ্ঞান মন্দিরে যোগ দিতে চাইলেন। ইচ্ছা প্রকাশ করলেন আচার্য্য একটি ঘর দিলে বশী নিজের মতো কিছু গবেষণা করতে পারেন। আচার্য্য বশী‌র ইচ্ছা‌য় সাড়া দিলেন না। 
     
       তখন বশী কলকাতা‌য় তাঁদের আট নম্বর বোসপাড়া লেনের ছোট্ট বাড়ির রান্না‌ঘরে স্থাপনা করলেন - "বিবেকানন্দ ল‍্যাবরেটরি"। ঐ বাড়িতে‌ই ১৯১১তে দেহাবসানের আগে অবধি বশী ও ভাই মতী দু বছর তাঁদের মৃত্যুপথযাত্রী গুরু সদানন্দ‌র সেবা করেছেন। মৃত্যুর পর দোতলায় সদানন্দ‌র স্মৃতি রক্ষিত। একতলায় একটিমাত্র কক্ষ। তাই রান্নাঘরে দুটি চাকা লাগানো বাক্সের ওপর শুরু হোলো ল‍্যাবরেটরি‌র কাজ। রাতে যন্ত্রপাতি সরিয়ে ওটাই শোয়ার জায়গা।
     

      আচার্য্য জগদীশ চন্দ্র পিছিয়ে গেলে‌ও এহেন অভিনব বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা‌য় এগিয়ে এলেন অন‍্য অনেকে। যেমন বিবেকানন্দের আমেরিকা‌ন বন্ধু (হ‍্যাঁ, তিনি নিজেকে স্বামীজীর শিষ‍্যার বদলে বন্ধু‌ই ভাবতেন) যোশেফিন ম‍্যাকলাউড। বিবেকানন্দে নিবেদিত‌প্রাণা এই মহিলা বহুভাবে অর্থসাহায্য করে গেছেন। বেলুড় মঠের স্থাপনা‌তে‌ও তাঁর আর্থিক সাহায্য ছিল। এগিয়ে এলেন শিল্পী নিকোলা বোয়েরিস, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয়। এবং আবার সেই লেওনার্ড এলমহার্স্ট! তিনি বিনামূল্যে কিছু যন্ত্রপাতি পাঠানো ছাড়াও নিয়মিত বশীকে ডলার পাঠাতেন। লন্ডনের রয়‍্যাল সোসাইটি পাঠাতো বছরে সত্তর পাউন্ড অনুদান।  
     

      পরে সেই ল‍্যাবরেটরি স্থানান্তরিত হয় আলমোড়ার কুন্দন হাউসে। ১৯৪৩এর দুর্ভিক্ষ দেখে বিচলিত বশী উচ্চফলনশীল বীজের গবেষণায় মনোনিবেশ করেন। আজ‌ও উইকিপিডিয়া খুললে দেখা যাবে লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর সময়ে পাঞ্জাবে যে সবুজ বিপ্লবের শুরুয়াৎ হয়েছিল - তার রূপকার ছিলেন কৃষি বিজ্ঞানী এম এস স্বামী‌নাথন - সেই এন্ট্রি‌তে বশী সেনের কোনো উল্লেখ অবধি নেই। কিন্তু স্বামী‌নাথন জানতেন বশী সেনের বৈজ্ঞানিক অবদান। মান‍্য করতেন তাঁকে। বশী সেন সম্পর্কে লিখিত গিরিশ মেহরার গ্ৰন্থের ভূমিকা‌য় স্বামী‌নথন কৃষি‌বিপ্লবে বশী‌ সেনের অবদান কৃতজ্ঞ‌চিত্তে স্মরণ করে লিখে‌ছেন - one of the greatest classics of our time.

    বশী সেনের সাথে নেহরুর সুসম্পর্ক ছিল। ১৯৫৭ সালে বশী পদ্মভূষণ উপাধি পান। ১৯৫৯ সালে উত্তরপ্রদেশ সরকার হাবালবাগে কৃষি গবেষণা‌র জন‍্য বিবেকানন্দ ল‍্যাবরেটরি‌কে ২১৫ একর জমি দান করে। বশীর মৃত্যুর পর ইন্দিরা গান্ধীর উদ‍্যোগে সেই ল‍্যাবরেটরি একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হিসেবে সংযুক্ত হয় ভারতীয় কৃষি গবেষণা কেন্দ্র - ICAR বা Indian Council of Agricultural Research এর সাথে। তখন ICAR এর ডিরেক্টর ছিলেন স্বামী‌নাথন। বশী‌র অনুরোধ ছিল ল‍্যাবরেটরি‌র জন্মলগ্ন থেকে জড়িত "বিবেকানন্দ" নামটি যেন বাদ না যায়। কথা রেখেছি‌লেন স্বামী‌নাথন। বশী সেন স্থাপিত সেই গবেষণা‌গারের নাম হয় - "বিবেকানন্দ পার্বত‍্য কৃষি অনুসন্ধান সংস্থা‌ন"। 

    শংকরের সেই লেখা‌তেই পড়েছিলাম এমন একটি বৈজ্ঞানিক তথ‍্য যা সেযাবৎ ছিল আমার অজানা। ইলেকট্রিসিটি, কম্প্রেসর ছাড়াই শূণ‍্য ডিগ্ৰি অবধি তাপমান নামিয়ে দিতে সক্ষম ১৯২০ দশকের এক  গুপীযন্ত্র - কেরোসিন রেফ্রিজারেটর! মৃত্যুর চার বছর আগে রবীন্দ্রনাথ বশী সেনের আমন্ত্রণে আলমোড়ায় এসে কিছু‌দিন ছিলেন। তাঁর জন‍্য ভাড়া নেওয়া হয়েছিল সেন্ট মার্কস ভবন। বিবেকানন্দের মতো রবীন্দ্রনাথ‌ও ছিলেন আইসক্রিমের ভক্ত। আলমোড়ায় কবি‌র সেই বাসভবন থেকে মাঝে মাঝে ডাণ্ডিতে করে নিয়ে আসা হোতো বশী সেনের গবেষণা‌গার কাম বাসস্থান কুন্দন হাউসে। কেরোসিন ফ্রী‌জে জমানো আইসক্রিম তৃপ্তি সহকারে খেতেন কবি।

    জানলাম বশী সেন ছিলেন এক বিশেষ ধরণের বডি ম‍্যাসাজে দক্ষ। বশী সেন দিল্লিতে গেলে নিদ্রা‌হীনতায় আক্রান্ত জহরলালের কপালে ম‍্যাসাজ করে দেওয়ার জন‍্য কখনো তিনমুর্তি ভবনে সাদর ডাক পড়তো বশীর। তাঁর আঙুলের জাদুচলনে অচিরেই ঘুমিয়ে পড়তেন নেহরু। 

    এমনই সব নানা বিষ্ময়কর, অজানা তথ‍্যের খাজানা শংকরের ঐ লেখাটি। এমন লেখা পড়ে সেই পাঠানন্দ নিজের মধ‍্যে রেখে দেওয়া মুশকিল। তাই তার কিছু নির্যাস এখানে শেয়ার করলাম।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ৩৬২৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • এলেবেলে | 202.142.71.17 | ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০০:১৭527998
  • টইটা আবার ভেসে ওঠায় জনৈক =)) | 103.76.82.165-র মন্তব্যটা চোখে পড়ল। আইপি অ্যাড্রেস মনে থাকে না, মনে রাখার চেষ্টাও করি না; তবে লিখনভঙ্গিটা বড় পরিচিত ঠেকল। আজ অনেক রাত হয়েছে। কাল বা পরশু 'নিজস্ব ইন্টারপ্রিটেশন' ও 'কোনো মনীষী বা আইকনকে মিথ্যাবাদী প্রমাণ করার আনন্দের আত্মপ্রসাদজনিত' সহ আমার সাধ্যমতো উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
  • ? | 42.110.169.57 | ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০২:১৫528001
  • আপমি লেখার স্ক্যানটা ড্রাইভে আপলোড করে এখানে লিংকটা দিয়ে দিন না, তাহলে তো সবাই পড়তে পারে। পার্সোনালি পাঠাচ্ছেন কেন?
     
     
  • এলেবেলে | ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:২৩528027
  • মাননীয় =)) | 103.76.82.165 -এর অভিযোগ এবং বক্তব্যগুলো সম্পর্কে একে একে আলোচনা করি।
     
    প্রথমত, উনি কেন রবীন্দ্রনাথকে লেখা জগদীশচন্দ্রের চিঠির হাফকোট বললেন, সেটা আমার কাছে পরিষ্কার নয়। এর মানে কি - ১. আমি চিঠিটির যেটুকু উদ্ধৃত করেছি, সেটুকুই আমার জানা? ২. এখানে কারও কোনও চিঠি কোট করলে সে চিঠিটির পুরোটাই দিতে হবে? যাই হোক, তাঁকে আশ্বস্ত করে জানাই, আমার কাছে পুরো চিঠিটাই আছে। চাইলে সেটা গোটাটাই তুলে দেওয়া যাবে।
     
    দ্বিতীয়ত, দুই গবেষক প্রবীর ও সুছন্দা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের গবেষণাপত্রে আদৌ পুরো চিঠিটি উদ্ধৃত করেননি, করেছেন আমি যতটুকু করেছি তার তুলনায় সামান্য বেশি অংশ। এবং তার ভিত্তিতেই তাঁরা আমার কথাটারই পুনরাবৃত্তি করেছেন অর্থাৎ তিনি পেটেন্ট নেওয়ার ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন ছিলেন না। মানে তাঁদের লেখা it becomes abundantly clear that Professor Bose was not at all against patenting his research products বাক্যাংশটির ইন্টারপ্রিটেশন যদি ঠিকঠাক করে থাকি আর কি।
     
    কিন্তু এই সিদ্ধান্তে তাঁরা পৌঁছেছেন A careful reading of this relevant portion of the letter together with the knowledge of Professor Bose’s circumstances and his current research activities as presented in the said lecture-এর ভিত্তিতে কিংবা তার পরে, কিন্তু গোটা গবেষণাপত্রটির কোথাও তাঁরা জগদীশচন্দ্রের রবীন্দ্রনাথকে পাঠানো Electrician-এ প্রকাশিত সংবাদ থেকে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন, তার কথা বলেননি। বরং স্পষ্টভাবে Illustrated Official Journal (patents)-এর উল্লেখ করেছেন। তাঁরা পেটেন্টের আবেদনের যে চারটি তারিখের উল্লেখ করেছেন, তার উল্লেখ আমি আগেই করেছি। এই গবেষণাপত্রটির ভিত্তিতেই সেটা করা হয়েছে।
     
    রইল বাকি Electrician-এর কথা যা জগদীশচন্দ্র নিয়মিত রবীন্দ্রনাথকে পাঠাতেন এবং যেখানে অধ্যাপক বসুর পেটেন্ট সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল এবং সম্ভবত রবীন্দ্রনাথ জানতেন, জীবনীকার প্যাট্রিক গেডিস জানতেন এবং এত জানাজানির পরেও ২০০৮ সালে অর্থাৎ জগদীশচন্দ্রের জন্মের সার্ধশতবর্ষে দুই বাঙালি গবেষক তাঁদের গবেষণার শিরোনাম করেন TWO RECENTLY DISCOVERED PATENTS OF PROFESSOR JAGADIS CHUNDER BOSE। অবশ্য আমার কমপ্রিহেনসিভ স্কিল খুবই জঘন্য। তাই রিসেন্টলি ডিসকভার্ড-এর যথাযথ অর্থ হয়তো আমি বুঝতে অক্ষম হয়েছি।
     
    তবে যা বুঝতে অক্ষম হয়নি তা হল এই --- 
    ১. ১৯০১ ও ১৯০২ সালে লিখিত প্রায় খান পনেরো চিঠির মধ্যে আর একটি চিঠিতেও জগদীশচন্দ্র রবীন্দ্রনাথকে ইলেকট্রিশিয়ান পত্রিকাটি সম্পর্কে কিংবা তাতে প্রকাশিত সংবাদ সম্পর্কে কোনও উচ্চবাচ্য করেননি।
    ২. ১৯০২ সালের ৩০ জুলাই ও ৭ অগস্ট তিনি দু-দুটি ব্রিটিশ পেটেন্ট লাভ করলেও ওই বছরে লিখিত মোট ৮টি চিঠির (২১.৩, ৮.৪, ১.৫, ৮.৫, ৩০.৫, ২৭.৬, ১৮.৭ ও ৫.৯) একটিতেও তাঁর পেটেন্ট লাভের কথাটি কবিকে জানাননি।
    এবং
    ৩. এই দুই বছরে এ বিষয়ে তিনি রবি ঠাকুরকে যা লিখেছেন তার কিয়দংশ এইরকম --- 
     
    ক) আমি আর একটি নূতন paper লিখিয়াছি, তাহাতে practical wireless telegraphyর অনেক প্রকার সুবিধা হইবে মনে হয়। Dr. Muirhead আমাকে নূতন আবিষ্কারগুলি গোপনে রাখিতে অনুরোধ করিতেছেন; কিন্তু আমার এখানে সময় অল্প, আমার আরও অনেক কাজ করিতে হইবে। একবার যদি অর্থকরী বিদ্যার দিকে আকৃষ্ট হই, তাহা হইলে আর কিছু করিতে পারিব না। তোমাকে আমি বুঝাইতে পারিব না, আমি কি এক নূতন রাজ্যে উপস্থিত হইয়াছি, কি আশ্চর্য্য নূতন তত্ত্ব একটু একটু করিয়া দেখিতে পাইতেছি। সে-সব আমি এখন ভাষায় প্রকাশ করিতে পারিতেছি না; সেগুলি দিন দিন পরিষ্কাররূপে দেখিতে পাইব, তাহার কোন সন্দেহ নাই; কিন্তু একভাবে দিনের পর দিন সেই সত্যলাভের জন্য ধ্যান করিতে হইবে। সেই একাগ্রতার ভাব যদি কোনরূপে disturbed হয়, তাহা হইলে আমার দৃষ্টিশক্তি একেবারে লুপ্ত হইয়া যায়
    ৩ জানুয়ারি, ১৯০১
     
    খ) বন্ধু, তুমি যদি এ দেশের টাকার উপর মায়া দেখিতে— টাকা— টাকা কি ভয়ানক সর্ব্বগ্রাসী লোভ! আমি যদি এই যাঁতাকলে একবার পড়ি, তাহা হইলে উদ্ধার নাই। দেখ আমি যে কাজ লইয়া আছি, তাহা বাণিজ্যের লাভালাভের উপরে মনে করি। আমার জীবনের দিন কমিয়া আসিতেছে, আমার যাহা বলিবার তাহারও সময় পাই না, আমি অসম্মত হইলাম
    ১৭ মে, ১৯০১
     
    গ) তোমার বই পুস্তকাকারে বাহির করিব মনে করিয়াছিলাম। কিন্তু এদেশের অনেক পাব্লিশার চোর। বাণিজ্য-বিষয়ে এদেশের তৎপরতা দেখিয়া চক্ষুস্থির হইয়াছে। সেদিন যে আমার জন্য patent লইবার জন্য একজন বন্ধু আসিয়াছেন, তিনি সেদিন রাগ করিয়া গিয়াছিলেন। “এত সময় নষ্ট করিয়া আপনাকে Serveকরিবার জন্য আসিয়াছিলাম, আপনি কিছু করিলেন না, “I do not want to have anything more to do with it.” লেক্‌চারের পর আবার লিখিয়াছেন, “I want to serve again.” বন্ধু, আমি যেন এই Commercial Spirit হইতে উদ্ধার পাইতে পারিএকবার ইহার মধ্যে পড়িলে আর উদ্ধার নাই
    ২২ মে, ১৯০১
     
    ঘ) তুমি শুনিয়া সুখী হইবে যে, এতদিনের বিরুদ্ধগতি অনুকূল হইয়াছে। সে-দিন Nature-এর leading articleএ লিখিত ছিল, The Eastern mind coming fresh and untrammelled to the work has taught us, etc. Royal Society এখন আমার দীর্ঘ প্রবন্ধ প্রকাশ করিয়াছেন। British Association হইতে সসম্মানে আহুত হইয়াছি। Botanical Section-এর President লিখিয়াছেন—
    “আমি Plant Physiology সম্বন্ধে যে-পুস্তক লিখিয়াছি, তাহা অপূর্ণতা দ্বিতীয় সংস্করণে আপনার আবিক্রিয়ার দীর্ঘ বিবরণ দিয়া পূরণ করিব।”
    ৫ সেপ্টেম্বর, ১৯০২
     
    লক্ষণীয়, এই চিঠিটি লেখার আগেই পেটেন্ট পাওয়া হয়ে গেছে। এখানে জগদীশচন্দ্র তাঁর সাফল্যের নানা খতিয়ান তাঁর সুহৃদকে জানাচ্ছেন কিন্তু পেটেন্টের ব্যাপারে রা কাড়ছেন না।
     
    এই রা না কাড়ার সম্ভাব্য কারণ হিসাবে গবেষকদ্বয় বলেছেন --- Upon examination of these two patents it is immediately obvious that in these two recently discovered British patents there is a confusion between the inventors and the Intellectual Property Rights (IPR) owners. While Professor Bose is simultaneously the inventor and one of the IPR owners, Mrs. Sara Chapman Bull, the American widow mentioned in both of these British patents, is definitely not an inventor and the patent descriptions did not make that clear. This problem of confusion between the inventor and the IPR owner with these two British patents must have taken place with Professor Bose’s knowledge and consent. But his helplessness as a subject of the British Empire may have, perhaps, prevented him from disclosing in India of their existence. This, in turn, had serious implications in India with respect to correct understanding of Professor Bose’s thoughts on technology commercialization and the correct promulgation of his achievements in the
    West.
     
    আমি ঠিক জানি না এই গোপন রাখার অভিযোগটি, গবেষকদ্বয়ের নিজেদের মানসিকতারই পরিচায়ক কি না।
     
  • 8=( | 50.7.93.28 | ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:২৮528028
  • শংকর তো দাগিয়ে দুখানা রেফারেন্স দিয়েছেন।
     
    ১) "Nearer Heaven Than Earth: The Life and Times of Boshi Sen and Gertrude Emerson Sen", by Girish N Mehra, ISBN 9788129110923 ৮১৫ পাতা, প্রকাশনী - রূপা অ্যান্দ কোং
    এবং
    ২) "বিবেকানন্দ প্রশিষ্য বিজ্ঞানী বশীশ্বর সেন: নিতাই নাগ" - আশাদীপ প্রকাশনী ১৮০ টাকা, বর্তমানে আউট অব প্রিন্ট, তবে বিভিন্ন লাইব্রেরিতে নিশ্চয় আছে।
     
    বারবারই "জীবনীকারদের" দেওয়া তথ্য বলে প্রসংগের অবতারণা করেছেন। তা, এই দুটো বই কি সম্পূর্ণ পড়ে দেখা হয়েছে যে বশীশ্বর সেনের তিন বছরের গবেষণা তাঁর নাম ছাড়াই বিদেশের জার্নালে প্রকাশের ঘটনা যথেষ্ট তথ্যসহ এগুলির কোনোটিতে রয়েছে কিনা? নইলে শংকরকে এ-নিয়ে অভিযুক্ত ও বিরক্ত করা যথেষ্ট অন্যায় হয়েছে।
     
    আরেকটা রেফারেন্স পাওয়া গেল তবে সেটা আবার সারদা মঠের প্রকাশনা বলে ...
    Prabuddhaprana, Pravrajika. 1990. Tantine, the Life of Josephine MacLeod: friend of Swami Vivekananda, Sri Sarada Math, Dakshineshwar, Calcutta
     
    কিংবা ধরুন সারা বুল ও জগদীশচন্দ্র প্রসঙ্গে এটা, যা কিনা Vivekananda International Foundation এর বলে ...
     
    এদুটো বাদেই তাই ...
  • Ranjan Roy | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ০৩:১৬528032
  • আমার মত সামান্য মানুষের মনে কৌতুহল রয়েই গেল।
    শংকরের লেখায়  যে দুটো তথ্যসূত্র দেওয়া রয়েছে, গিরীশ মেহেরা ও নিতাই নাগ, তাতে কি বশী সেনের রিসার্চ আচার্য নিজের নামে প্রকাশিত করিয়েছেন এমন অভিযোগ আছে?
    থাকলে তার ভিত্তি কী? বশী  সেনের কোন চিঠি?
     
    কেউ কি ওই বইদুটো পড়েছেন?
  • Arindam Basu | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ০৪:০৪528033
  • আমি বইদুটোর একটাও পড়িনি, কিন্তু যেহেতু শংকরের লেখা বাদ দিলে আর কোথাও জগদীশচন্দ্র বশী সেনের লেখা চুরি করেছেন এই অভিযোগ দেখিনি, মনে রাখতে হবে এখনকার দিনে উদ্ভিদ স্নায়ুবিদ্রাহ জগদীশচন্দ্র কে নতুন করে আবিষ্কার করছেন, এতবড় অভিযোগ চাপা থাকত না। এই অপকর্মটি খুব সম্ভবত নিতাই বাবুর। 
  • :|: | 174.251.160.150 | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৪528036
  • অরিন | 119.224.61.73 | ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০২:৫৪- মূল লেখাটি আপলোড করে দেবার জন্য ধন্যবাদ। সময় পেলে পরে কিছু বলবো। যদিও বুঝতে অসুবিধা হয়নি, নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বেদান্ত সোসাইটিকে (ওটাই অফিশিয়াল নাম) কেন যে সমানে নর্থ  লিখেছেন কে জানে। তাছাড়া রিসার্চারের নামটা লেখেননি। মেরী লুই (সম্ভবনা বেশী) নাকি প্রবুদ্ধপ্রাণা -- কার থেকে পাওয়া লিখলে ভালো হতো। 
    যাগ্গে। 
  • | 42.105.141.180 | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:০২528037
  • বইদুটোর একটাও না পড়ে "লেখা চুরি", "অভিযোগ", "অপকর্ম" এসব লেখা কি ঠিক হচ্ছে? তাহলে তো আবার "আর কোথাও" জিনিসটাকে, অর্থাৎ জগদীশ বিষয়ক (পক্ষে-বিপক্ষে) পড়াশুনোর রেঞ্জটাকে ডিফাইন করতে হয় [যেখানে একটু আগেই অবলা বসু গবেষক দময়ন্তী দাশগুপ্ত লিখে গেছেন, "জগদীশচন্দ্র যে সহকারিদের নাম লিখতেন না সেটাও সত্যি।" ]। দময়ন্তী দাশগুপ্তকে কনফ্রন্ট করতেও তো দেখলাম না। নির্মোহ ব য়ের আঘাত অরিন্দম বসুরই মনেই বেশি লেগেছে দেখা যাচ্ছে। angel
  • Arindam Basu | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:৪৪528039
  • দময়ন্তী কে অকারণে কনফ্রন্ট করতে যাব কেন, কি মুশকিল, জগদীশচন্দ্রের প্রায় সব পেপার আর বই একার নামে তো (প্রায় এই জন্য লিখলাম কারণ আমি এখনো গোটা লিস্ট দেখিনি)। এখন এগুলোর বহু কারণ আছে, তার সবচেয়ে বড় কারণ সেযুগে বহু বৈজ্ঞানিক নিজের একার নামে পেপার পাবলিশ করতেন, এখনকার মত টিম তৈরী করে সকলের নাম দেওয়ার চল কিন্তু ছিল না, ২০২৪ এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৮৯৬ কে মাপলে চলবে কেন?
    একটা সহজ প্রশ্ন করা হয়েছিল, যারা বলছেন জগদীশ বোস বশী সেনের তিন বছরের গবেষণা নিজের নামে ছাপিয়েছেন, এটাকে তো চুরিই বলা হয়। এতে আপনার আপত্তি থাকলে থাকবে। যখন জিজ্ঞাসা করা হল কোন‌ গবেষণা জগদীশ বোস চুরি করেছেন? আজ অবধি তাদের কারো কাছ থেকে সদুত্তর পাওয়া যায়নি। 
     
    আমি মেহরার বইটি পড়িনি এটা ঠিক, তার কারণ বইটা সহজলভ্য নয়। পেলে নিশ্চয়ই পড়ব। তবে সে বইটির দুটি রিভিউ পড়েছি, তার কোনটাতেই কেউ মেহরার নাম করে জগদীশচন্দ্রের নামে কুম্ভীলকবৃত্তির অপবাদ দেন নি। বশী সেন ১৯৭১ সালে গত হয়েছেন, বশী সেন যদি এই অভিযোগ কোথাও প্রমাণসহ করতেন, এতদিনে সেটি জানা যেত, কারণ জগদীশ বোসের একটি আন্তর্জাতিক পরিচিতি রয়েছে। সেটা যখন এতদিনে হয়নি, তখন অন্তত বশী সেন কোথাও লিখিতভাবে কোথাও কিছু লিখে রাখেননি। 
     
    নিতাই নাগের বইটিও আমি পড়িনি, এবং শংকর বাদে সে বইয়ের আর কেউ রিভিউ করেছেন বলেও আমার জানা নেই। এবং একমাত্র শংকর দাবী করেছেন জগদীশ বোস বশি সেনের পেপার চুরি করেছেন। তিনি জানলেন কি করে? তার কোন সদুত্তর নেই। মেহরার বইতে যদি না লেখা থাকে ("যদি"), তাহলে একমাত্র নিতাই নাগ মশাই হয়ত এই দাবী তুলতে পারেন। নিতাই নাগ জানলেন কা করে বা কোন পেপার/বই, তার কোন সদুত্তর নেই। 
     
    নানা সূত্র থেকে মনে হয় একমাত্র নিতাই নাগের লেখা বইটি পড়লে এ প্রশ্নের উত্তর মিলবে।
     
    আর যদি বলেন নির্মোডহ ব এর আঘাত আমার বেশী লেগেছে, হ্যাঁ, লেগেছে! 
    আমি এই থ্রেডে এর আগেও লিখেছি বশী সেনের গুণগান করার জন্য জগদীশ বোসকে ছোট করার কিছু নেই। আশিস নন্দী থেকে শুরু করে বহু লোকের লেখাতেই জগদীশচন্দ্রের চরিত্রের কিছু বিচিত্র দিক, তাঁর মেজাজ, ইত্যাদি প্রসঙ্গ এসেছে, কিন্তু তাতে মানুষটির মনীষার মূল্যায়ণ করতে আটকায় না। 
    মৃত্যুর প্রায় একশো বছরের কাছাকাছি হতে চলল, হঠাৎ জগদীশচন্দ্রের পুনরাবিষ্কার দেখতে গিয়ে এই কথাগুলো মনে হয়। 
     
    চুরির অপবাদ দিলে কি তিনি চুরি করেছেন সেটা জানতে চাওয়া অন্যায্য বলে কেন মনে হল লিখলে বাধিত হব। 
  • | 42.105.141.116 | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:৩৮528041
  • সদুত্তর পেতে গেলে বইগুলো পড়ে দেখতে হবে তো।  অপবাদটাই বা ঠিক কী, সেটা একশ / সোয়া-শ বছর আগের প্রেক্ষিতে আদৌ অপবাদ কিনা, জীবনীকাররা কীভাবে জেনেছেন তা তাঁরা জানিয়ে গেছেন কিনা -- সে উত্তর গুরুর থ্রেডে খুঁজলে কীকরে চলে? দেখাই তো যাচ্ছে এখানে কেউ সেসব বই পড়েনি।  কেউ সব পেপার নিজের নামে ছাপালে তো দেখাই যায় তিনি তাঁর অধীনস্থ সকলের কাজকে নিজের নামেই প্রতিষ্ঠা দিচ্ছেন। 
  • সমরেশ মুখার্জী | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:২২528042
  • Excerpt from - “Historicizing the crisis of scientific misconduct in Indian science”-
    Mahendra Shahare and Lissa L. Roberts


    “One can also turn to the career of Jagadish Chandra Bose, first known for his work that undergirded the development of radio communication, for two contrasting cases. The first stems from Bose’s move from the field of physics to plant physiology as part of his experimental project to demonstrate that the response of inorganic matter to electrical stimuli “foreshadows” that seen in plants and animals. In 1902 Bose sought to publish a well-received paper he had delivered at the Linnean Society, which quickly led to a mounting priority dispute with one of his British colleagues at the Royal Society, Augustus Waller, regarding the discovery of “vegetable electricity.” Both publicly and privately, each accused the other of plagiarism and gross misconduct.27

    “The second case involves Bose, not as (perceived) target, but as either guilty of prejudice and misconduct himself or of fostering misconduct in those who worked under him. As discussed by Ashis Nandy, East Bengali job applicants received preferential treatment from Bose at the research institute he established in Calcutta and named after himself in 1917. Apparently, he only trusted those who hailed from his own native region as sufficiently dedicated to his institute and its goals. So too are we told of Bose’s growing authoritarianism, which cowed underlings who engaged in research to support his views in the field of plant physiology. To quote Nandy, “he began to stretch his experimental results and force his associates to do the same,” to which “nobody publicly protested.”28 

    Given how controversial Bose’s plant physiology work became, based on his claim that his experiments demonstrated the continuity between inorganic matter, plant, and animal life, some contemporaries sought extra-scientific explanations for his continued power and influence, arguing that he maintained his position not by pursuing the truth but by courting the support of political benefactors.29

    Source Article:

    https://journals.sagepub.com/doi/10.1177/0073275320930908
     
  • অরিন | 119.224.61.73 | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:৩৯528043
  • "অপবাদটাই বা ঠিক কী, সেটা একশ / সোয়া-শ বছর আগের প্রেক্ষিতে আদৌ অপবাদ কিনা, জীবনীকাররা কীভাবে জেনেছেন তা তাঁরা জানিয়ে গেছেন কিনা -- সে উত্তর গুরুর থ্রেডে খুঁজলে কীকরে চলে?"
     
    গুরুর থ্রেডে কিন্তু কেউ উত্তর খোঁজেনি |
     
    যিনি জগদীশচন্দ্রের নামে চুরির অপবাদ লিখেছেন, শংকর, তাঁর কাছেই সরাসরি জানতে চাওয়া হয়েছে তিনি কিভাবে জেনেছেন বা কোন সূত্রে, ভদ্রলোক তার সদুত্তর দিতে পারেন নি, বাদবাকী যে দুটি বই নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, দুটি বই অনুমানের ভিত্তিতে। আমার মনে হয় আপনি থ্রেডটা আগাগোড়া পড়ে দেখলে হয়ত অপবাদটি ঠিক কি, কেন জগদীশচন্দ্রকে কুম্ভীলকবৃত্তিতে দায়ী করা হচ্ছে, আরেকটু বিশদে বুঝতে পারবেন ।  
     
    "কেউ সব পেপার নিজের নামে ছাপালে তো দেখাই যায় তিনি তাঁর অধীনস্থ সকলের কাজকে নিজের নামেই প্রতিষ্ঠা দিচ্ছেন"
     
    সেটা হয়ত কারো কারো ক্ষেত্রে তাই হবে, তবে জগদীশচন্দ্রের ক্ষেত্রে মনে হয় না, তাঁর কাজ তিনি মূলত একা একাই করতেন। বা অন্যেরা তাঁর সহযোগী হলেও কাজের চিন্তাভাবনার একটা বড় অবদান তাঁর একার ছিল। একটা ছোট উদাহরণ দিই, ১৯০৪ সালের সেমিকন্ডাকটরের পেটেন্ট প্রসঙ্গে লিখতে গিয়ে Remembering JC Bose বইতে MH Engineer লিখছেন,
    "What Bose did, he did alone, with little support, utmost perseverance and enormous skill. His was the solitary way, their’s* the collective. Both ways worked well, as they have often worked throughout the history of science."
    (MH Engineer: The millimeter wave researches of JC Bose, In: Remembering Sir JC Bose, 2009: World Scientific Publishing)
    their's* বলতে পরবর্তী সময়ে যারা সেমিকণ্ডাকটর নিয়ে কাজ করেছিলেন। 
     
    আরেকটা ব্যাপার খেয়াল করবেন, জগদীশচন্দ্র ১৯৩৭ সালে মারা যান। 
     
    জগদীশচন্দ্রের পর, বা অন্তত ১৯৩৭ সালের পর জগদীশচন্দ্র বসু যে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতেন, ঠিক সেই বিষয়ে কলকাতা থেকে  আর কত মৌলিক কাজ দেখা গেছে যাকে জগদীশচন্দ্রের "ছাপ" বলে বলা চলে? জগদীশচন্দ্র যদি আপনার ভাষায় "অধীনস্থ সকলের কাজকে নিজের নামেই প্রতিষ্ঠা" দিতেন, তাহলে অবশ্যই তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর "অধীনস্থ" এযাবৎ অবদমিত বৈজ্ঞানিকদের প্রতিভাবলে কলকাতা অন্তত plant neurobiology র ক্ষেত্রে জগৎ শ্রেষ্ঠ হতে পারত (যেমনটি জগদীশচন্দ্র তাঁর জীবনকালে পথিকৃৎ ছিলেন) । সেটা হয়েছে কি? 
     
  • কুম্ভীলকবৃত্তি | 173.62.207.237 | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:১৫528047
  •  
    সমরেশবাবু যে রেফারেন্সগুলি দিলেন - নির্মোহ ব বাবদ ভালই - কিন্তু শংকরের দাবী এর থেকে প্রতিষ্ঠা হয় না। ক্রমাগত মনে হচ্ছে শংকর এই বয়েসে বাজার গরম করতে চেয়েছেন।  
  • কুতূহল | 2607:b400:24:0:687e:91a6:dd60:47b4 | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৩৪528050
  • সমরেশবাবু কি "নির্মোহ ব" এর রেফারেন্স জানেন? 

    যাই হোক, এই ব্যাপার এখন সেটল করা খুব শক্ত - কারণ যাই রেফারেন্স খুঁজে বের করুন না কেন, সেগুলো "অবজেক্টিভ" হবে এমন আশা কম। তবে চেষ্টা করা হচ্ছে সেটা ভালো। 
  • | 42.105.141.15 | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৩৪528051
  • শংকরের বই লাখে লাখে বিকোয় বলেই কি তিনি সফট টার্গেট? নিতাই নাগ এখনও বেঁচে, বাঁকুড়ায় থাকেন, তাঁকে ধরছেন না কেন? অভিযোগটা নিতাই নাগের বইতে রয়েছে ছাপা হরফে আজ বোধয় দশ বছর হল।  সে বই এতদিন আপনারা পড়েননি তার দায় শংকরের? বলিহারি মাইরি। তারপরে বলবেন নিতাই নাগের রেফারেন্স দেওয়া লেখাপত্রও পড়েননি। বশী সেনের স্ত্রীর লেখাপত্রও পড়েননি। ইত্যাদি। আর উপায় কী? গুরুগরম করুন, আর হাতের কাছে যাকে পাবেন তাকে জবাবদিহি করতে থাকুন।
     
    আর জগদীশচন্দ্রের আবিষ্কার ইত্যাদিকে একটু যুগধর্ম মেনে ডিসকাউন্ট দেবেন কিন্তু। উনি নাকি জড় পদার্থেও উত্তেজনা আবিষ্কার করেছিলেন?
     
    বাই দ্য ওয়ে, বইমেলা যাতায়াত, বইয়ের দাম, স্ক্যানের খরচ আর সময়ের দাম কেউ স্পনসর করলে "প্রশিষ্য" বইটার ক্যামস্ক্যানার পিডিএফ আপলোড করা সম্ভব। 
  • সমরেশ মুখার্জী | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:৪০528054
  • @ কুতূহল 
     
    "নির্মোহ ব" এর রেফারেন্স জানা নেই।
  • সমরেশ মুখার্জী | ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ০০:৫৯528058
  • @ কুম্ভীলকবৃত্তি

    “ক্রমাগত মনে হচ্ছে শংকর এই বয়েসে বাজার গরম করতে চেয়েছেন।”  

    এলেবেল বলেছেন, শংকর শেষজীবনে “বিবেকানন্দ ভাঙিয়ে খেয়েছে‌ন।” তবে শংকরের প্রথমদিকের নাগরিক সমাজজীবন, মানবিক সম্পর্কে‌র ওপর সহজ, সরল, অহেতুক জটিলতা‌হীন কাহিনী পড়তে হয়তো বহু সাধারণ পাঠকের ভালো লেগেছে‌। তাই বিবেকানন্দ সম্পর্কিত ছাড়াও শংকরের বেশ কিছু ব‌ইয়ের বহুল সংস্করণ হয়েছে। 

    তবে এই ২৯ পাতার লেখাটি বর্তমান শারদীয় সংখ্যা‌য় বেরিয়ে‌ছিল যার পুনর্মুদ্রণ হয় না। সুতরাং বাজার গরম করতে বা অন‍্য কোনো ব‍্যক্তি‌গত আক্রোশে বশী সেনের ওপর একটি স্মৃতি‌চারণমূলক রচনা লিখতে গিয়ে  অহেতুক তিনি জগদীশ‌চন্দ্রকে ছোট করে দেখিয়েছেন - শংকরের এই মোডাস অপারেন্ডিটা ঠিক মানা যাচ্ছে না। 

    এই অভিযোগ অরিন্দম‌বাবু বারংবার করে চলেছেন যেহেতু উইকিপিডিয়া আর্টিকলের মতো রেফারেন্স  শংকর দেন নি। শারদীয় সংখ্যা‌য় নিবন্ধ বলেই হয়তো দেওয়া যায়নি। আমি‌ একবছর বাদে লেখাটি পড়ে ভালো লাগতে স্ক‍্যান করে রেখেছিলাম। সেটা পড়ে আমার মনে হয়নি বশী সেনকে মহান দেখাতে জগদীশ‌ চন্দ্র‌কে ছোট করে দেখানো‌ই ছিল শংকরের ঐ রচনার মূল উদ্দেশ্য। বরং বশী সেন সম্পর্কে‌ই বহু কথা এসেছে। 

    মানুষ হিসেবে জগদীশ চন্দ্রের আত্মকেন্দ্রিক‌তা, কিছু ক্ষেত্রে সংকীর্ণ‌তা (বশীকে কম মাইনে দেওয়া, বারো বছর একটা‌না কাজ করলেও বশী‌র ভাইয়ের অসুস্থ‌তায় একদিনের কামাইতে উষ্মা প্রকাশ, এক বছরের ছুটি না দেওয়া, আমেরিকা থেকে ফিরে এসে বসু বিজ্ঞান মন্দিরে বশীকে একটি ঘর না দেওয়া এবং বশী‌র গবেষণা নিজের নামে ছেপে দেওয়া - যেটা এখানে বিতর্কের মূল কারণ) পড়ে আমার খারাপ লেগেছে তবে তার জন‍্য জগদীশ চন্দ্রের বিজ্ঞানী হিসেবে প্রতিভা, অবদান কম হয়ে যায় না। তেমন চেষ্টা শংকর‌ও করেননি।

    শংকরের সেই লেখা‌র কিছু অংশ হুবহু উল্লেখ করছি - “বশী সেনের বিচিত্র জীবন কথায় আমরা দেখছি সদানন্দের কুকুর হয়ে গেলেন নিবেদিতার অনুরাগী। সেই অনুরাগ থেকে সেন্ট জেভিয়ার্সের বিএ ক্লাসের ছাত্রের পরিচয় হয় আর এক সেন্ট জেভিয়ার্স প্রাক্তন ছাত্রের সঙ্গে-তাঁর নাম জগদীশচন্দ্র বসু। শঙ্করীপ্রসাদ বসু এই বিষয়ে যেসব অনুসন্ধান হয়েছে তার সম্বন্ধে প্রবল উৎসাহী ছিলেন, অনুসন্ধানী নিতাই নাগকে যথাসম্ভব উৎসাহ দেবার জন্য আরও গভীরে যেতে উৎসাহ দিতেন।”

    “পরবর্তী সময়ে কিছু ছন্দপতন। বারো বছর বসুর কাজ করার সময় একটা রবিবার তিনি ছুটি নেননি। ভাই সতীশ্বরের প্রবল অসুখের সময় একদিন ল্যাবে যাওয়া সম্ভব হয়নি, কিন্তু আচার্য বসু এই একদিনের অনুপস্থিতে বেশ বিরক্ত হয়েছিলেন।

    আরও বর্ণনা আছে, বশীর নিজস্ব গবেষণার কিছু কাগজপত্র তিনি জগদীশকে দেখতে দেন, যা তৈরি করতে তিন বছর সময় লেগেছিল। কিছুদিন পরে বিদেশের জার্নালে যখন বিষয়টি প্রকাশিত হল, তখন দেখা গেল সেখানে বশীর নাম অনুপস্থিত।”

    “গিরিশ মেহেরার 'দ্য লাইফ অ্যান্ড টাইমস অফ বশী সেন'-এর প্রকাশ কাল ২০০৭ এবং শঙ্করীপ্রসাদের ভূমিকা সহ নিতাই নাগের 'প্রশিষ্য বশীশ্বর সেনে'র প্রকাশকাল সেপ্টেম্বর ২০০৯। বশী জগদীশের সম্পর্কের উপর নানা খবর রয়েছে যা নিবেদিতা রিসার্চ ল্যাবরেটরি লেখার সময় আমার আয়ত্তে ছিল না। গিরিশ মেহেরা বশী ও গার্টুড সেনের জীবনের গভীরে প্রবেশ করে আমাদের এমন সব খবর দিয়েছেন যা আজও অনেকের অজ্ঞাত।”

    তো শংকর যখন লিখেছেন - “আরও বর্ণনা আছে” - তার মানে, গিরিশ মেহরার বা নিতাই নাগের ব‌ইতে এসবের উল্লেখ থাকতে পারে। এখানে শংকরের উদ্দেশ্য‌মূলক‌ভাবে জগদীশ চন্দ্রের কুৎসা রটনা সম্পর্কে মূল অভিযোগ‌কারী অরিন্দম‌বাবু গিরিশ মেহরার (৮১৫ পাতার) ব‌ইটি পড়েন নি কিন্তু ঐ ব‌ইটি‌র ওপর দুটি রিভিউ পড়ে তথায় ঐ প্রসঙ্গে কোনো উল্লেখ না দেখে ধরে নিলেন তাহলে ঐ “অপবাদ” দেওয়া সম্ভবত নিতাই নাগের “অপকর্ম” - যদিও সেটাও তিনি পড়েন নি।

    শংকরের লেখাটির স্ক‍্যান কপি আমি অরিন্দম‌বাবুকে মেলে পাঠাতে তিনি সেটা এখানে পোষ্ট করেছেন। জানি না এখানে যারা আলোচনা করছেন তারা সেটা পড়েছে‌ন কিনা। তাতে নিঁখুত তথ‍্য না থাকলেও হয়তো বোঝা যাবে লেখাটির উদ্দেশ্য জগদীশ বিদ্বেষ প্রচার করে বাজার গরম করা নয়।
     
  • Arindam Basu | ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ০১:০১528059
  • সত্যি কথা, অন্তত এই দুটো বই না পড়ে এ বিষয়ে কমেন্ট করা সমীচিন‌ নয়। কিন্তু দুঃখের বিষয়, দুটো বইয়ের একটাও সহজলভ্য নয়। গিরিশ মেহরার বইটা আউট অফ প্রিণ্ট, তবে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরী থেকে আমি ইন্টারলোন করে আনিয়ে পড়বার উদ্যোগ নেব। নিতাই নাগের বইয়এরও কোন হদিশ নেই। 
     
    নিতাই নাগ ভদ্রলোক আর কি পাবলিশ করেছেন দেখতে পেলাম না। ইনি কোন ইউনিভার্সিটি বা রিসার্চ সেন্টারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট? এনার এই বইটাই বা কোথা থেকে সংগ্রহ করা যাবে? 
     
    কেউ জানেন?
  • Ranjan Roy | ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৩:৪৮528061
  • মূল প্রশ্ন দুটো যেখানে দাঁড়িয়ে:
     
    1 বেশী সেনের কোন পেপার  কোন জার্নালে জগদীশ চন্দ্র নিজের নামে ছাপিয়েছেন?
     
    2 গিরীশ মেহেরা বা নিতাই নাগ যদি এই অভিযোগ করে থাকেন তো তাঁদের তথ্যসূত্র কী? বশী সেন বা গার্ট্রুড সেনের কোন লেখা বা চিঠি? অন্য কারো?
     
     3  প্রথিতযশা লেখক শংকর  তাঁর নিজের হিসেবে নিশ্চয়ই কনভিনস্ড হয়ে এতবড় অভিযোগ করেছেন।  কিন্তু পাবলিক ফোরামে এতবড় অভিযোগ করলে প্রাইমারী তথ্যসূত্রটির উল্লেখ করা উচিত। উনি যা করেছেন তা হল সেকেন্ডারী সোর্সের উল্লেখ। 
    উনি নব্বই পেরিয়েছেন, ওনাকে এবার ছাড় দেওয়া হোক।
    4 গত রাতে 21.34 পোস্টে যিনি খরচ দেওয়ার কথা বলেছেন তাঁকে সবিনয়ে জানাই--- হ্যাঁ , আমি রাজি। 
      উনি যদি বইমেলা বা বইপাড়ায় গিয়ে গিরীশ মেহেরা বা নিতাই নাগের বইদুটো জোগাড় করতে পারেন, তবে বইয়ের দাম ও রাহাখরচ আমি দেব। paytm করে।
     
    5 সমরেশ মুখার্জি শংকরের লেখা পড়ে। বশী সেনের মত বিজ্ঞানসাধকের ব্যাপারে গুরুর পাতায় জানিয়ে আমার ধন্যবাদার্হ । কিছুই জানতাম না।
    শংকরের কলমে অমন অভিযোগ দেখে উনি  সত্যের খাতিরে শংকরের সঙ্গেও কথা বলেছেন। যথেষ্ট,  আর  কী করতে পারেন?
    এবার দরকার বইদুটো।
  • Ranjan Roy | ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৩:৪৯528062
  • * বশী সেন
  • Ranjan Roy | ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৪:৪২528064
  • একটি ব্যাপারে আমি সমরেশ ও জনৈক * এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি।
    1 আমাদের গিরীশ মেহরার ও নিতাই নাগের  বইদুটো না পড়ার দায়িত্ব নিশ্চয়ই শংকরের নয়। কিন্তু লেখক শংকরের দায়িত্ব জগদীশ চন্দ্র কোন পেপার কোন জার্নালে প্রকাশ করেছেন  তার উল্লেখ করা।
     আমি কারো সম্বন্ধে চুরির অভিযোগ করলাম অথচ কী চুরির হয়েছে, কোথায়  হয়েছে সেটাই বললাম না ?
    2  ব্জগদীশ চন্দ্রের ব্যক্তিত্বের অনেক বিসংগতি ও ত্রুটির কথা এবং বশী সেনের সঙ্গে দুর্ব্যবহার অনেক নজির সামনে এসেছে।
       কিন্তু তা থেকেই তাঁর কুম্ভীলকবৃত্তি নিয়ে নিঃসন্দেহ হওয়া যায় না। এখন অবধি ওটি একটি সম্ভাবনার পর্যায়ে।
     
    কেউ জুয়ো খেলে,  মদ খায় বলেই কি ধরে নেব  যে সে বেপাড়ায় যায়? যেতেই পারে, কিন্তুক গেছে কি?
    এ ব্যাপারে  গুরুচণ্ডালির  প্রোব্যাবিলিটি গুরু "যদুবাবুর টিউশনি" ( জ্যোতিষ্ক দাশগুপ্ত) পথ দেখাতে পারে।:)))
  • Arindam Basu | ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৫:০৮528066
  • > আর জগদীশচন্দ্রের আবিষ্কার ইত্যাদিকে একটু যুগধর্ম মেনে ডিসকাউন্ট দেবেন কিন্তু। উনি নাকি জড় পদার্থেও উত্তেজনা আবিষ্কার করেছিলেন?
     
    কতগুলো ব্যাপার একটু খেয়াল রাখবেন, জগদীশ বোস যেটুকু কাজ করেছিলেন, সবটাই ভেবেচিন্তে দীর্ঘ সময় একসপেরিমেণ্টের মধ্যে দিয়ে করেছিলেন, যা করেছিলেন লিখে রাখতেন, পাবলিক লেকচার দিতেন। এই যে "জগদীশচন্দ্রের আবিষ্কার ইত্যাদিকে একটু যুগধর্ম মেনে ডিসকাউন্ট দেবেন কিন্তু। উনি নাকি জড় পদার্থেও উত্তেজনা আবিষ্কার করেছিলেন?" বলছেন, তার যাবতীয় লেখালিখি খোলাখুলি নিজেই পড়ে দেখুন "Response in the living and non-livng" নামে বইটিতে, বইটা পাবলিক ডোমেইনে এখান থেকে নামিয়ে নিন (যদি চান):
     
    ১০ই মে, রয়্যাল ইনস্টিটিউশনে লেকচার দিতে গিয়ে বলেছিলেন,
     
    "I have shown you this evening an autographic record of the history of stress and strain in the living and the non-living. How similar are the writings? So similar indeed that you cannot tell one apart from the other. We have seen the responsive pulse wax and wane in the one as in the other. We have seen response sinking under fatigue, becoming exalted under stimulants and being killed by poison.
    Amongst such phenomenon, how can we draw a line of demarcation, and say here the physical ends, and there the physiological begins? Such absolute barriers do not exist.
    Do not these records tell us of some property of matter common and persistent? Do they not show us that the responsive processes, seen in life, have been fore-shadowed in non-life — that the physiological is related to the physico- chemical — that there is no abrupt break, but a uniform and continuous march of law?
    If it be so, we shall but turn with renewed courage to the investigations of mysteries, which have too long eluded us. For every step of science has been made by the inclusion of what seemed contradictory or capricious in a new and har- monious simplicity. Her advances have been always towards a clearer perception of underlining unity in apparent diversity.
    It was when I came upon the mute witness of these self-made records, and perceived in them one phase of a pervading unity that bears within it all things — the mote that quivers in ripples of light, the teeming life upon our earth, and the radiant Sun that shines above us — it was then that I under- stood for the first time a little of that message proclaimed by my ancestors on the banks of the Ganges thirty centuries ago — “They also see but one, in all the changing manifoldness of the universe, unto them belongs Eternal Truth — unto none else, unto none else!”
     
    এখন এ নিয়ে বিস্তর তর্ক হয়েছিল এক সময়ে। 
     
     
    জগদীশ বোসের সমস্যাটি ছিল একটি পরাধীন দেশে কাজ করা | তার ওপরে পশ্চিম দুনিয়ার প্রেজুডিসের একটা শিকার তো তিনি হয়েছিলেনই | অবশ্য নিজের দেশেও মৃত্যুর একশো বছর পরেও এনার প্রতি বিষোদ্গারের যে রকম সকম দেখা যাচ্ছে, তাতে কি বিদেশ কি এদেশ, কি সেযুগ, কি এযুগ। 
     
  • Ranjan Roy | ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩০528070
  • অরিনদা
      সব বুঝলাম।  কিন্তু জড়ের মধ্যে চৈতন্য দর্শন,  একে আপনি কী বলবেন?
      আপনি বিজ্ঞানী, তাই জিগাই।
  • অরিন | 119.224.61.73 | ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৪৪528071
  • রঞ্জনবাবু, (আমাকে আগে তো বেশ 'অরিন' বলতেন, হঠাৎ অরিনদা কেন যে বলেন, :-) , সে যাকগে), 
     
    এটা একটা "অ-সা-ধা-রণ" প্রশ্ন, যে জড়ের মধ্যে চৈতন্য দর্শণের ব্যাপারটা কি করে হল?
     
    এখন জগদীশচন্দ্রের বর্ণনা থেকে যেটা আমার কাছে স্পষ্ট নয়, তিনি জড়ের "মধ্যে" চৈতন্য দর্শণের কথা বলেছিলেন না, তথাকথিত জড এবং জীবিত, এরা যে একটা স্পেকট্রাম, বা ধরা যাক চেতন-অচেতনের মধ্যেকার যে "বাউণ্ডারী", সেই বিভাজনের কথা তুলছিলেন। আমার ধারণা দ্বিতীয়টা, এবং এইখানেই আজকের দিনে জগদীশচন্দ্রকে নতুন করে আবিষ্কার করার কথাটা উঠছে। 
     
    কেমন জানেন?
     
    কার্ল ফ্রিস্টন ভারি চমৎকার করে ব্যাপারটা বুঝিয়েছেন active inference free energy principle থিওরীর অবতারণা করে। কার্ল ফ্রিস্টনকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল চেতন আর অচেতন (জীবন/"অ" জীবন) আমরা চিনি কি করে? আগে ভিডিওটা দেখুন,
     
     
    (আমাকে এখন উঠতে হচ্ছে, ফিরে এসে এটা নিয়ে আরো বিশদে লিখব)
    তা এর সঙ্গে জগদীশচন্দ্রের ধারণার সম্পর্ক কোথায়? আসছি সে কথায়। 
  • Arindam Basu | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:৫৫528089
  • রঞ্জনবাবু, "সব বুঝলাম।  কিন্তু জড়ের মধ্যে চৈতন্য দর্শন,  একে আপনি কী বলবেন?"
     
    এই ধারণাটির মূলে যতদূর আমার মনে হয় জগদীশচন্দ্রের "response in the living and non-living" নামে বইটি | এখন সে বইটির কোথাও কিন্তু জগদীশচন্দ্র "জড়ের মধ্যে চৈতন্য দর্শণ" এর কথা লেখেননি, যেটা লিখেছিলেন সেটা পশুপাখী/মানুষ, গাছপালা, এবং জড় পদার্থের "stimulus-response" এর মধ্যে তিনি সাযুজ্য আবিষ্কার করেছিলেন, এবং সে সমস্ত একসপেরিমেন্ট এই বইটিতে বিস্তারিত ভাবে লিখে গেছেন, এবং বইটির শেষে (চ্যাপটার ২০) জগদীশচন্দ্র লিখেছিলেন, 
     
    "In the previous chapters I have shown that not the fact of response alone, but all those modifications in  response which occur under various conditions, take place in plants and metals just as in animal tissues. It may now be well to make a general survey of these phenomena, as exhibited in the three classes of substances.
    We have seen that the wave of molecular disturbance in a living animal tissue under stimulus is accompanied by a wave of electrical disturbance; that in certain types of tissue the stimulated is relatively positive to the less disturbed, while in others it is the reverse; that it is essential to the obtaining of electric response to have the contacts leading to the galvanometer unequally affected by excitation; and finally that this is accomplished either (1) by ‘injuring’ one contact, so that the excitation produced there would be relatively feeble, or (2) by introducing a perfect block between the two contacts, so that the excitation reaches one and not the other.
    Further, it has been shown that this characteristic of exhibiting electrical response under stimulus is not confined to animal, but extends also to vegetable tissues. In these the same electrical variations as in nerve and muscle were obtained, by using the method of injury, or that of the block.
    Passing to inorganic substances, and using similar experimental arrangements, we have found the same electrical responses evoked in metals under stimulus.", 
     
    লেখাটি শেষ করছেন এই বলে,
     
    "Thus living response in all its diverse manifestations is found to be only a repetition of responses seen in the inorganic. There is in it no element of mystery or caprice, such as we must admit to be applied in the  assumption of a hypermechanical vital force, acting in contradiction or defiance of those physical laws that govern the world of matter. Nowhere in the entire range of these response-phenomena—inclusive as that is of metals, plants, and animals—do we detect any breach of continuity. In the study of processes apparently so complex as those of irritability, we must, of course, expect to be confronted with many difficulties. But if these are to be overcome, they, like others, must be faced, and their investigation patiently pursued, without the postulation of special forces whose convenient property it is to meet all emergencies in virtue of their vagueness. If, at least, we are ever to understand the intricate mechanism of the animal machine, it will be granted that we must cease to evade the problems it presents by the use of mere phrases which really explain nothing.
    We have seen that amongst the phenomena of response, there is no necessity for the assumption of vital force. They are, on the contrary, physico-chemical phenomena, susceptible of a physical inquiry as definite as any other in inorganic regions.
    Physiologists have taught us to read in the response-curves a history of the influence of various external agencies and conditions on the phenomenon of life. By these means we are able to trace the gradual diminution of responsiveness by fatigue, by extremes of heat and cold, its exaltation by stimulants, the arrest of the life-process by poison.
    The investigations which have just been described  may possibly carry us one step further, proving to us that these things are determined, not by the play of an unknowable and arbitrary vital force, but by the working of laws that know no change, acting equally and uniformly throughout the organic and the inorganic worlds."
    (সম্পূর্ণ লেখাটি এইখানে পাবেন, https://www.gutenberg.org/files/18986/18986-h/18986-h.htm#CHAPTER_XX )
     
    কাজেই জগদীশচন্দ্র যে "জড়ের মধ্যে চৈতন্য" দেখেছিলেন, ব্যাপারটা ঠিক সেরকম নয়। তিনি এই একসপেরিমেন্টের ভিত্তিতে তাঁর ১৯০১ সালে রয্যাল সোসাইটির লেকচারে বলেছিলেন,
     
    "Do not these records tell us of some property of matter common and per- sistent? Do they not show us that the responsive processes, seen in life, have been fore-shadowed in non-life — that the physiological is related to the physico- chemical — that there is no abrupt break, but a uniform and continuous march of law? ... every step of science has been made by the inclusion of what seemed contradictory or capricious in a new and har- monious simplicity. Her advances have been always towards a clearer perception of underlining unity in apparent diversity. ... It was when I came upon the mute witness of these self-made records, and perceived in them one phase of a pervading unity that bears within it all things  ... it was then that I under- stood for the first time a little of that message proclaimed by my ancestors on the banks of the Ganges thirty centuries ago — “They also see but one, in all the changing manifoldness of the universe, unto them belongs Eternal Truth — unto none else, unto none else!”
     
    এখন আপনি বলতে পারেন জগদীশচন্দ্র এইখানে বাড়াবাড়ি করেছেন, কারণ তাঁর পরীক্ষা থেকে কখনোই এই সত্যে উপনীত হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু  মনে রাখতে হবে তখনকার দিনের নিরিখে ভেবে দেখলে এটুকু মস্ত ব্যাপার। আজকে কেন এই ব্যাপারগুলোকেই আমরা ফিরে দেখছি, বিচার করতে গিয়ে কার্ল ফ্রিস্টনের ফ্রি এনার্জি প্রিনসিপলের কথা লিখেছিলাম। তবে সে অন্য টই এর বিষয়। এখন থাক। 
     
  • | 42.110.168.141 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:২৫528091
  • এই  বাড়াবাড়ি ইত্যাদিকে তখনকার দিনের নিরিখে ভেবে দেখাই হল গিয়ে যাকে বলে যুগধর্ম মেনে ডিসকাউন্ট দেওয়া।
  • সমরেশ মুখার্জী | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:২৫528092
  • "কার্ল ফ্রিস্টনের ফ্রি এনার্জি প্রিনসিপলের কথা" - শুনতে গিয়ে (বোঝা তো দুরের কথা) আমার দশা হোলো নিম্নোক্ত গানে অমিতাভ ডিম থেকে বেরিয়ে - "ওয়েট ওয়েট" বলে যা বললেন তাই শুনে পার্টি‌রত জনতার যে দশা হয়েছিল। সাধে কী আর বলি - আমার নিম্নমেধা। sad
     
  • সমরেশ মুখার্জী | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৫৯528093
  • 42.105.141.15 | ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৩৪
    52805 - “উনি নাকি জড় পদার্থেও উত্তেজনা আবিষ্কার করেছিলেন?”


    উপরোক্ত মন্তব্য‌টি পড়ে ইস্তক মাথায় ঘুরছি‌ল, প্রাণীদেহ যে নানা রাসায়নিক উপাদানের সমাহার তা তো জানা গেছে। তবে যে কারণে একটি প্রায় জীবন্ত পুতুল আসল জীবন্ত মানুষের মতো আচরণ করে না - তার কারণ প্রাণ‍ - যেটার স্বরূপ এযাবৎ জানা না গেলেও মন্দিরের বিগ্ৰহে তা প্রতিষ্ঠা করে ভোটে জেতা যায়। অর্থাৎ স্বরূপ জানা না গেলেও সেটা‌র প্রতিষ্ঠার মাধ‍্যমে Tangible Transactional Gain হতেই পারে। 

    বস্তুর ক্ষুদ্রতম অংশ অণুর (উপযুক্ত জ্ঞানের অভাবে কোয়ার্ক অবধি যাচ্ছি না) মধ‍্যে‌ কেন্দ্রে নিউক্লিয়াস অংশটি মোটামুটি স্থিতপ্রজ্ঞ ঋষি‌র মতো অবিচল। “মোটামুটি” বললাম, কেননা কিছু অণুর নিউক্লিয়াস‌ও আনস্টেবল। তো স্টেবল অণুর নিউক্লিয়াসের চারপাশে‌ও তো আমাসদৃশ বাচাল হরিদাসের মতো ইলেকট্রনবাবু এক অণুপল‌ও স্থির না থেকে নাগাড়ে ভূতের নেত‍্য করে চলেন বলে শুনেছি। ভাবলাম দেখি তো, উন্মুক্ত জ্ঞানসাগরে ”Dance of Electrons” দিয়ে খোঁজ করলে কিছু পাওয়া যায় কিনা। পাওয়া গেল নিম্নোক্ত ভিডিও। এক্সরে ক্রিস্টালোগ্ৰাফির সাহায‍্যে তেনার নেত‍্য ধরা গেছে। তো ইলেকট্রনবাবুর নেত‍্যকে কী জগদীশ চন্দ্র প্রস্তাবিত “জড় পদার্থের উত্তেজনা” বলা যায়?

    যদি যায়, তাহলে রঞ্জনবাবু‌র ৩১.১/৮:৩০ এর যে জিজ্ঞাসা - “অরিনদা, সব বুঝলাম।  কিন্তু জড়ের মধ্যে চৈতন্য দর্শন, একে আপনি কী বলবেন? আপনি বিজ্ঞানী, তাই জিগাই।” - এর‌ জবাব, মনে হয় ভাববাদী দর্শনে‌ই খোঁজা উচিত। কারণ “উত্তেজনা প্রশমনের পরে‌ই তো হয় চৈতন্যর উদয়”। তাছাড়া সব জবাব দেওয়া‌র দায় তো আর বিজ্ঞানীর নয়। কিছু জবাব না হয় তাঁর প্রস্তাবিত “ফ্রী এনার্জি প্রিন্সিপল” দিয়ে দিলেন কার্ল  ফ্রিস্টন। কিছু থাকুক নানা মায়াবাদী আচার্য‌র ব‍্যাখ‍্যা‌য়। যার চর্চায় রঞ্জনবাবু‌র সবিশেষ উদ‍্যম দেখেছি। “চৈতন্য” ব‍্যাপার‌টি কি আদৌ বিজ্ঞানের আ‌ওতায় পড়ে? জানা নেই। 

    অবশ‍্য রঞ্জনবাবু‌র জিজ্ঞাসা‌র জবাবে অরিনবাবু‌ও তাই বলেছেন - “এই ধারণাটির মূলে যতদূর আমার মনে হয় জগদীশচন্দ্রের "response in the living and non-living" নামে বইটি। সেখানে কোথাও কিন্তু জগদীশচন্দ্র "জড়ের মধ্যে চৈতন্য দর্শন" এর কথা লেখেননি, যেটা লিখেছিলেন সেটা হচ্ছে, পশুপাখী/মানুষ, গাছপালা, এবং জড় পদার্থের "stimulus-response" এর মধ্যে তিনি সাযুজ্য আবিষ্কার করেছিলেন”।

    এই প্রসঙ্গে বহু আলোচনা হচ্ছে - খুব ভালো কথা - কিন্তু বিষয়টা‌ই এমন - মনে হয় শেষবেশ পাহাড় খুঁড়ে ইঁদুর‌ও বেরোবে না - ধুলো ওড়ানো‌ই সার হবে। 

    থাকলো ইলেকট্রনবাবুর উত্তেজিত নেত‍্যর ভিডিও।



     
  • মত  | 165.225.8.111 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:১৯528095
  • আলোচনা যেদিকে যাচ্ছে পুরো আলাদা টইয়ের দাবি রাখে (খোলাও ছিল মনে হয়)। 
    সমরেশবাবু যা ভিডিও দিয়েছেন সে প্রায় নিউটনের আমলের (রসিক মানুষ আপনি, বক্তব্যটা বুঝবেন নিশ্চয়)! 
    পার্টিকেল ফিজিক্স, কোয়ান্টাম মেকানিক্স - বহুদুর চলে গেছে। এবং নিউরোসায়েন্সও। 
     
    জগদীশচন্দ্র এই দুটোর একটা যোগসূত্র খুঁজতে চেয়েছিলেন। যে মানুষ প্রানের সংজ্ঞার লিমিট এক্সটেন্ড করে গাছ পর্যন্ত নিয়ে গেছেন - তাঁর কাছে এই অ্যাম্বিসান কি সত্যিই বাড়াবাড়ি? উনার অ্যাপ্রোচ তো বিজ্ঞানসম্মতই বলতে হবে। 
     
    ফান্ডামেন্টাল ফিজিক্সের  অনুপ্রেরণা ভারতীয় দর্শনে খোঁজার মত বৈজ্ঞানিক যে শুধু জগদীশচন্দ্র একা নন, তা তো বহুবিদিত।        
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে প্রতিক্রিয়া দিন