এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিবিধ

  • শংকর ভাষ‍্যে - বশী বন্দনা

    সমরেশ মুখার্জী লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ৩৬২৯ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  •    শঙ্করীপ্রসাদ বসু ছিলেন পেশায় অধ‍্যাপক। নেশায় বিবেকানন্দ গবেষক। সাত খণ্ডে "বিবেকানন্দ ও সমকালীন ভারতবর্ষ" গ্ৰন্থ রচনার জন‍্য তিনি সাহিত্য আকাদেমী পুরস্কারে সম্মানিত হন। একদা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শঙ্করীপ্রসাদ দীর্ঘদিন ওখানে বাংলা বিভাগে অধ‍্যাপনা করে অবশেষে নয় বছর বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করে অবসর নেন। গোলপার্কের রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অফ কালচারে ১৯৯৫তে স্বামী বিবেকানন্দ সম্পর্কিত আর্কাইভের জন্মলগ্ন হতে আমৃত্যু সংযুক্ত ছিলেন। হয়েছিলেন সেই আর্কাইভের ডিরেক্টর। ডঃ নিমাইসাধন বসু‌ও একজন ঐতিহাসিক, শিক্ষাবিদ। মাধ‍্যমিকে ওনার ইতিহাস ‌ব‌ই পড়ে‌ছি। সাবলীল ভাষা, সুন্দর বিষয় বিন‍্যাস, আকর্ষণীয় উপস্থাপনা, ঝকঝকে ছাপার ব‌ই‌টি ছিল আমার খুব প্রিয়। ডঃ ভোলানাথ চক্রবর্তী ছিলেন এক প্রখ‍্যাত হোমিওপ্যাথ। রাষ্ট্রপতি, রাজ‍্যপালের চিকিৎসার জন‍্য‌ও ওনার ডাক পড়তো।
     

       উপরোক্ত তিন বিখ‍্যাত ব‍্যক্তিত্ব‌ই ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হা‌ওড়া বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউশন নামক স্বনামধন‍্য বিদ‍্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র। ১৯৫৬ সালে সেই  বিদ‍্যালয়ের উচ্চমাধ্যমিক শাখার ভবনটি‌র উদ্বোধন করেন আর এক মহান ব‍্যক্তিত্ব - তদানীন্তন রাজ‍্যপাল ডঃ হরেন্দ্রনাথ মুখার্জী।  মণিশংকর মুখোপাধ্যায় বা জনপ্রিয়, সাহিত‍্য আকাদেমী পুরস্কার‌প্রাপ্ত লেখক - শংকর‌ও ছিলেন বিবেকানন্দ ইন্সটিটিউশনের ছাত্র। বয়সে ৫ বছরের অগ্ৰজ বিবেকানন্দ স্কুলের শঙ্করীপ্রসাদ শংকরকে ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহভরে তুই তোকারি করতেন। লেখা‌র ব‍্যাপারে উৎসাহ, তথ‍্য, পরামর্শ, দিশা জুগিয়েছে‌ন। অবশ‍্য শংকর তাঁর স্বভাবজ বিনয়ে অনেক অগ্ৰজ লেখকের স্নেহ‌ভাজন ছিলেন - যেমন বিমল মিত্র। শংকরের প্রথম ব‌ই "কত অজানারে" ও দ্বিতীয় ব‌ই "চৌরঙ্গী" প্রকাশের পর শঙ্করীপ্রসাদ অনুজ শংকরকে পরামর্শ দিয়েছিলেন - হাইকোর্টের অভিজ্ঞতা, হোটেলের আখ‍্যান তো হোলো - এবার নতুন কোনো বিষয়ে লেখ্। দীর্ঘ এক বছরের প্রচেষ্টায় শংকর লিখলেন - "নিবেদিতা রিসার্চ ল‍্যাবরেটরি"। 
     

     ২০২২ এর সেপ্টেম্বরে - "শারদীয়া বর্তমান" ১৪২৮এ প্রকাশিত শংকরের একটি বিশেষ রচনা - "কেমনে তোমারে ভুলি?" পড়ে বেশ লাগলো। নানা অজানা বিষয় জানলাম। যেমন ঐ নিবন্ধের কেন্দ্রীয় বাস্তব চরিত্র - বশী সেনের আদলেই নির্মিত হয়েছিল নিবেদিতা রিসার্চ ল‍্যাবরেটরি উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র - বিজ্ঞানী জীমূতবাহন সেন।



    শংকরের এই বিশেষ রচনার চরিত্র - বিশ্ববিখ্যাত কৃষিবিজ্ঞানী বশীশ্বর সেন - আদিতে  বিষ্ণু‌পুর নিবাসী বশী সেন। হায়! এনার প্রেক্ষাপট, কর্মকাণ্ড তো দুরের কথা - ২০২২এ শংকরের লেখাটি পড়ার আগে অবধি আমি ওনার নাম পর্যন্ত শুনিনি‌। কী লজ্জা! শংকরের লেখা‌য় ওনার সম্পর্কে অনেক কথা জানলাম - যেমন কীভাবে লেওনার্ড এলমহার্স্ট বারংবার ওনাকে নানাভাবে আর্থিক সাহায্য করেছে‌ন। কেমব্রিজ ও কর্ণেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাপ্রাপ্ত এই বিশ্ববিখ্যাত ব্রিটিশ কৃষি‌বিজ্ঞানী‌র কথা অবশ‍্য কিছুটা জানা ছিল। জানতাম তিনি শান্তি‌নিকেতনে বেশ কিছুদিন থেকে রবীন্দ্রনাথের আশ্রমে কাজ করেছেন, সেখানে স্থাপনা করেছেন Institute of Rural Reconstruction. 
     

    শংকরের ঐ লেখায় মহান বিজ্ঞানী আচার্য্য জগদীশ চন্দ্রের কিছু চারিত্রিক ক্ষুদ্রতা জেনে দুঃখ পেলাম। বশী সেন তাঁর সাহায্য‌কারী হিসেবে বারো বছর কাজ করে একদিন‌ও ছুটি নেননি - কিন্তু ছোট ভাই সতীশ্বরের প্রবল অসুস্থতার জন‍্য একটি রবিবার না আসায়, আচার্য্য বিরক্তি প্রকাশ করলেন। বশী সেন তিন বছরের মেহনতে তৈরী করে তাঁর মৌলিক গবেষণার খসড়া দেখতে দিয়েছিলেন জগদীশ‌ চন্দ্রকে। মহান আচার্য্য বশী সেনের নামোল্লেখ অবধি না করে তা বিদেশে‌র জার্নালে নিজের নামে ছাপিয়ে দিলেন! 
     
     অন‍্য লেখা‌তে পড়েছি সমসাময়িক ঋষি‌প্রতি‌ম বিজ্ঞানী আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের প্রকাশিত গবেষণা‌পত্রে সেই গবেষণায় তাঁর সহকারী‌দের নাম‌ও থাকতো। জগদীশ‌ চন্দ্রর তেমন সৌজন্য‌বোধ, মানবিক উদারতা ছিল না। তাই জগদীশ চন্দ্রের র প্রকাশিত গবেষণা পত্রে তাঁর বিশেষ সহকারী‌দের নাম‌ও থাকতো না।

       একবার আমেরিকা‌ন গবেষক গ্ৰেন ওভারটন বশীকে এক বছরের জন‍্য সহকারী হিসেবে নিয়ে যেতে চাইলে‌ন। বশী আচার্য্য‌র কাছে এক বছরের ছুটি চাইলেন। বিরক্ত হয়ে আচার্য্য বসু বললেন -"যদি তোমার এখানে কাজ করতে ভালো না লাগে তাহলে যেখানে খুশী যেতে পারো"। একযুগ ধরে নিরলস কর্মসেবার যোগ‍্য পুরস্কার! 
     
      চলে গেলেন বশী আমেরিকা‌য়। তবু বশী যে দুজন মানুষের শতায়ু কামনা করতেন - তাঁদের একজন রবীন্দ্রনাথ। অন‍্যজন জগদীশ‌ চন্দ্র‌। এতেই 'সদানন্দ‌র কুত্তা' বশীশ্বর সেনের মহানুভবতা উপলব্ধি করা যায়।
     
     
      বিবেকানন্দ যখন স্বামী‌জী হয়ে বিশ্ববিখ্যাত হননি, সেই তখন যে মানুষটি নির্দ্বিধায় এক অচেনা রমতা যোগীর শিষ‍্যত্ব গ্ৰহণ করে হেলায় উত্তরপ্রদেশে হাতরাশ স্টেশনের রেল কর্মচারী‌র চাকরি ছেড়ে বিবেকানন্দ‌র সাথে অনির্দিষ্ট সন্ন‍্যাসযাত্রায় পথে নামেন - স্বামী‌জীর সেই  প্রথম শিষ‍্য‌ই সদানন্দ। পরে বশী সেন শিষ‍্যত্ব গ্ৰহণ করেন সদানন্দ‌র। বশীদের বিষ্ণুপুরের নিবাসে‌ স্বামী সদানন্দ এসেছেন, থেকেছে‌ন। বশী পেয়েছেন গুরুসেবার সুযোগ। মৃত্যুর আগে বশীশ্বর, ভাই মতীশ্বর ও বশীর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের সহপাঠী বিভূতি ঘোষকে সদানন্দ সস্নেহে বলেছিলেন - "যা শালারা ডালকুত্তা রেখে গেলাম - তোদের কিছু করতে পেরেছি কী পারিনি জানি না - তোদের কর্তার (স্বামীজীর) সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছি"। আজীবন বশী তাই তাঁর গুরু সদানন্দ‌র কুকুর হতে পেরে নিজেকে ধন‍্য মনে করেছেন। 

      আমেরিকা থেকে ফিরে বশী পুনরায় আচার্য্য জগদীশ চন্দ্রের কাছে বসু বিজ্ঞান মন্দিরে যোগ দিতে চাইলেন। ইচ্ছা প্রকাশ করলেন আচার্য্য একটি ঘর দিলে বশী নিজের মতো কিছু গবেষণা করতে পারেন। আচার্য্য বশী‌র ইচ্ছা‌য় সাড়া দিলেন না। 
     
       তখন বশী কলকাতা‌য় তাঁদের আট নম্বর বোসপাড়া লেনের ছোট্ট বাড়ির রান্না‌ঘরে স্থাপনা করলেন - "বিবেকানন্দ ল‍্যাবরেটরি"। ঐ বাড়িতে‌ই ১৯১১তে দেহাবসানের আগে অবধি বশী ও ভাই মতী দু বছর তাঁদের মৃত্যুপথযাত্রী গুরু সদানন্দ‌র সেবা করেছেন। মৃত্যুর পর দোতলায় সদানন্দ‌র স্মৃতি রক্ষিত। একতলায় একটিমাত্র কক্ষ। তাই রান্নাঘরে দুটি চাকা লাগানো বাক্সের ওপর শুরু হোলো ল‍্যাবরেটরি‌র কাজ। রাতে যন্ত্রপাতি সরিয়ে ওটাই শোয়ার জায়গা।
     

      আচার্য্য জগদীশ চন্দ্র পিছিয়ে গেলে‌ও এহেন অভিনব বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা‌য় এগিয়ে এলেন অন‍্য অনেকে। যেমন বিবেকানন্দের আমেরিকা‌ন বন্ধু (হ‍্যাঁ, তিনি নিজেকে স্বামীজীর শিষ‍্যার বদলে বন্ধু‌ই ভাবতেন) যোশেফিন ম‍্যাকলাউড। বিবেকানন্দে নিবেদিত‌প্রাণা এই মহিলা বহুভাবে অর্থসাহায্য করে গেছেন। বেলুড় মঠের স্থাপনা‌তে‌ও তাঁর আর্থিক সাহায্য ছিল। এগিয়ে এলেন শিল্পী নিকোলা বোয়েরিস, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয়। এবং আবার সেই লেওনার্ড এলমহার্স্ট! তিনি বিনামূল্যে কিছু যন্ত্রপাতি পাঠানো ছাড়াও নিয়মিত বশীকে ডলার পাঠাতেন। লন্ডনের রয়‍্যাল সোসাইটি পাঠাতো বছরে সত্তর পাউন্ড অনুদান।  
     

      পরে সেই ল‍্যাবরেটরি স্থানান্তরিত হয় আলমোড়ার কুন্দন হাউসে। ১৯৪৩এর দুর্ভিক্ষ দেখে বিচলিত বশী উচ্চফলনশীল বীজের গবেষণায় মনোনিবেশ করেন। আজ‌ও উইকিপিডিয়া খুললে দেখা যাবে লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর সময়ে পাঞ্জাবে যে সবুজ বিপ্লবের শুরুয়াৎ হয়েছিল - তার রূপকার ছিলেন কৃষি বিজ্ঞানী এম এস স্বামী‌নাথন - সেই এন্ট্রি‌তে বশী সেনের কোনো উল্লেখ অবধি নেই। কিন্তু স্বামী‌নাথন জানতেন বশী সেনের বৈজ্ঞানিক অবদান। মান‍্য করতেন তাঁকে। বশী সেন সম্পর্কে লিখিত গিরিশ মেহরার গ্ৰন্থের ভূমিকা‌য় স্বামী‌নথন কৃষি‌বিপ্লবে বশী‌ সেনের অবদান কৃতজ্ঞ‌চিত্তে স্মরণ করে লিখে‌ছেন - one of the greatest classics of our time.

    বশী সেনের সাথে নেহরুর সুসম্পর্ক ছিল। ১৯৫৭ সালে বশী পদ্মভূষণ উপাধি পান। ১৯৫৯ সালে উত্তরপ্রদেশ সরকার হাবালবাগে কৃষি গবেষণা‌র জন‍্য বিবেকানন্দ ল‍্যাবরেটরি‌কে ২১৫ একর জমি দান করে। বশীর মৃত্যুর পর ইন্দিরা গান্ধীর উদ‍্যোগে সেই ল‍্যাবরেটরি একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হিসেবে সংযুক্ত হয় ভারতীয় কৃষি গবেষণা কেন্দ্র - ICAR বা Indian Council of Agricultural Research এর সাথে। তখন ICAR এর ডিরেক্টর ছিলেন স্বামী‌নাথন। বশী‌র অনুরোধ ছিল ল‍্যাবরেটরি‌র জন্মলগ্ন থেকে জড়িত "বিবেকানন্দ" নামটি যেন বাদ না যায়। কথা রেখেছি‌লেন স্বামী‌নাথন। বশী সেন স্থাপিত সেই গবেষণা‌গারের নাম হয় - "বিবেকানন্দ পার্বত‍্য কৃষি অনুসন্ধান সংস্থা‌ন"। 

    শংকরের সেই লেখা‌তেই পড়েছিলাম এমন একটি বৈজ্ঞানিক তথ‍্য যা সেযাবৎ ছিল আমার অজানা। ইলেকট্রিসিটি, কম্প্রেসর ছাড়াই শূণ‍্য ডিগ্ৰি অবধি তাপমান নামিয়ে দিতে সক্ষম ১৯২০ দশকের এক  গুপীযন্ত্র - কেরোসিন রেফ্রিজারেটর! মৃত্যুর চার বছর আগে রবীন্দ্রনাথ বশী সেনের আমন্ত্রণে আলমোড়ায় এসে কিছু‌দিন ছিলেন। তাঁর জন‍্য ভাড়া নেওয়া হয়েছিল সেন্ট মার্কস ভবন। বিবেকানন্দের মতো রবীন্দ্রনাথ‌ও ছিলেন আইসক্রিমের ভক্ত। আলমোড়ায় কবি‌র সেই বাসভবন থেকে মাঝে মাঝে ডাণ্ডিতে করে নিয়ে আসা হোতো বশী সেনের গবেষণা‌গার কাম বাসস্থান কুন্দন হাউসে। কেরোসিন ফ্রী‌জে জমানো আইসক্রিম তৃপ্তি সহকারে খেতেন কবি।

    জানলাম বশী সেন ছিলেন এক বিশেষ ধরণের বডি ম‍্যাসাজে দক্ষ। বশী সেন দিল্লিতে গেলে নিদ্রা‌হীনতায় আক্রান্ত জহরলালের কপালে ম‍্যাসাজ করে দেওয়ার জন‍্য কখনো তিনমুর্তি ভবনে সাদর ডাক পড়তো বশীর। তাঁর আঙুলের জাদুচলনে অচিরেই ঘুমিয়ে পড়তেন নেহরু। 

    এমনই সব নানা বিষ্ময়কর, অজানা তথ‍্যের খাজানা শংকরের ঐ লেখাটি। এমন লেখা পড়ে সেই পাঠানন্দ নিজের মধ‍্যে রেখে দেওয়া মুশকিল। তাই তার কিছু নির্যাস এখানে শেয়ার করলাম।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ৩৬২৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dc | 2401:4900:7b7c:5d09:4496:b6d4:ae51:e1a7 | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:৫৮527861
  • "তবে, শতাব্দীকাল পরে ব্যক্তিমানুষের দুর্বলতা ও অপরিপূর্ণতার চর্চা করার বদলে তাঁদের অনুসরণযোগ্য গুণাবলী ও কার্যকলাপের দিকে মনোযোগ দেওয়াই সদর্থক ও ফলপ্রসূ বলে মনে হয়।
    আগ্রহজনক বিষয়ের চর্চামাত্রই পজিটিভ আউটকাম দেয় না তো। মূলত এই কারণেই হয়ত গতজীবন মানুষদের মূলত আদর্শযোগ্য গুণাবলী ও কাজের নজিরগুলো নিয়ে চর্চার অভ্যাস সামাজিকভাবে রয়ে গেছে। বাকিটুকু নিয়ে চর্চার অভ্যাস ড্রেইন ইন্সপেক্টারের কাজের মতোই স্ট্যাটাস পেয়ে থাকে।"
     
    পুরোপুরি একমত হতে পারলাম না। কাউকে শুধুমাত্র নিন্দে করা বা হেয় করার জন্য কিছু লেখা হলে সেটা অবশ্যই বর্জন করা উচিত। কিন্তু অন্যদিকে, যদি অবজিক্টিভলি বা নিউট্রালি কাউকে মূল্যায়ন করা যায়, তাঁর সব দোষ গুন সহ, তাহলে সেটা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য, আর সেরকম কাজ অবশ্যই হওয়া উচিত। বহু বিখ্যাত মানুষদের নিয়েই সেরকম চর্চা হয়েছে বা হচ্ছে, যেখানে তাঁদের দোষ, গুন সব কিছুরই মূল্যায়ন হচ্ছে। নিউটন, আইনস্টাইন, ফাইনম্যান, ভন নয়ম্যান ইত্যাদি বহু বিজানীরই দোষ, গুন সব কিছু নিয়েই চর্চা হয়। আমার মতে, সব কিছু নিয়েই আলোচনা হওয়া উচিত, শুধু জাজমেন্টাল না হলেই হলো।  
  • dc | 2401:4900:7b7c:5d09:4496:b6d4:ae51:e1a7 | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:১২527863
  • বিটিডাব্লু, মনে করা হয় যে স্বয়ং আইনস্টাইন তাঁর স্ত্রীর অবদান স্বীকার করেন নি আর ওনাদের দুজনের চিঠিপত্র নিয়ে বহু গবেষণা হয়েছে, এখনও হচ্ছে। তো এটা যদি সত্যি হয়, তাহলে মেনে নিতে কোনই অসুবিধে নেই যে আইনস্টাইন ক্ষুদ্র মনের পরিচয় দিয়েছিলেন। অন্য যেকোন মানুষের মতোই আইনস্টাইনেরও কিছু দোষ ছিল, কিছু গুন ছিল, ওনাকে অ্যাজ এ পার্সন ইভ্যালুয়েট করতে হলে দুটো দিকই আলোচনায় আসতে হবে। কিন্তু তার জন্য ফটোইলেকট্রিক এফেক্ট বা জিআর বা এপিআর ব্রিজ, কোনকিছুই মিথ্যে হয়ে যাবে না। 
  • সমরেশ মুখার্জী | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:১৮527864
  • @ এলেবেলে

    ১. আপনাকে ১৯.১/১৭:১৪ লিখেছিলাম - “আপনার অভিমত সঞ্জীব চট্টো ও শঙ্কর বিবেকানন্দ ভাঙিয়ে খাচ্ছেন। আশা করি আপনার গবেষণা‌ধর্মী পুস্তক পড়ে কেউ বলবে না - আপনি‌ও রামমোহন, বিদ‍্যাসাগর ভাঙিয়ে খাচ্ছেন। ওগুলো‌ও পাবলিক ভালো খায়।”

    জবাবে আপনি ১৯.১/২১:৫০ লিখলেন -  “সমরেশবাবু, আপনাকে প্রথমেই অতি বিনীতভাবে জানাই আমি বিশুদ্ধ এলেবেলে। আক্ষরিক ও আলঙ্কারিক - উভয় অর্থেই। দ্বিতীয় কথা এই, এখনও পর্যন্ত এলেবেলে নামে বিদ্যাসাগর, রামমোহন বা সেই সময়কাল নিয়ে বাংলা ভাষায় কেউ বইপত্তর লিখেছেন বলে আমার জানা নেই। যেমন জানা নেই, এখানে মন্তব্য করলে অহেতুক সেই ব্যাগেজ কেন আমার পিঠে চাপানো হবে। এখানে অনামা নিকের আড়ালে খোঁচা খেতে অভ্যস্ত, কিন্তু একে আপনি আমার বয়োজ্যেষ্ঠ তায় সুলেখক - কাজেই অকারণ খোঁচার (সে যত সূক্ষ্মভাবেই প্রয়োগ করা হোক না কেন) কার্যকারণ ঠিক বোধগম্য হল না।”

    সেই কার্যকারণ বোঝাতে ২০.১/০০:১৫ লিখলাম ২৬.১২.২৩/১০:৫০ ভাটে জনৈক দেবোত্তম চক্রবর্তী লিখিত বিদ‍্যাসাগরের ওপর একটি  ব‌ইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণের ছবি পোষ্ট করে এলেবেলে উত্তমপুরুষে লিখলেন - “রঞ্জনবাবু, অবশেষে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারলাম বলে ভালো লাগছে।”

    আমার অনুসিদ্ধান্তটি ভুল না ঠিক তা আপনি বললেন না। যেমন কেন্দ্রীয় সরকার  Pegasus spyware কিনেছে না কেনেনি তার কোনো পরিস্কার জবাব আদালতে দেয়নি। যদি আপনার ক্ষেত্রে আমার পর্যবেক্ষণ সঠিক হয় তাহলে আপনার “অতি বিনীতভাবে” সজ্ঞানে অজ্ঞান‌তা প্রকাশের কার্যকারণ আমার‌ও বোধগম্য হোলো না।

    “গবেষণাধর্মী” বলেছি কেন? ঐ ব‌ইটি কি আমি পড়েছি? না পড়িনি। তবে পুস্তকে‌র শিরোনামে‌র  তলায় তার জাত-গোত্র নির্দেশক পরিচিতি - “নির্মাণ - বিনির্মাণ - পুনর্নির্মাণের আখ‍্যান” - দেখে মনে হয়েছে ওটি একটি “গবেষণা‌ধর্মী” লেখা। যদি তা না হয় - সেটা আপনি‌ই বলতে পারবেন। অস্বীকার করেননি বলে ধরে নিয়েছি এলেবেলে = দেবোত্তম চক্রবর্তী। অস্বীকার করলে ধরে নেবো আপনি বাস্তবিকই এলেবেলে।

    ২. “পিরিয়ড” প্রসঙ্গে - আমার বাক‍্যটি খেয়াল করুন - “জগদীশ‌চন্দ্র সম্পর্কে আপনার ধারণা নির্ভূল, শংকর ভাষ‍্য পড়ে আমার যা মনে হয়েছে তা সর্বৈব ভুল। পিরিয়ড।”- এক্ষেত্রে পিরিয়ড লিখে আমি এই প্রসঙ্গে আলোচনা‌র এ্যাভেনু্‌উ বন্ধ করে দিয়নি। পিরিয়ড শব্দ দিয়ে এই বিষয়ে আমার তুলনায় আপনার ধারণা‌র উৎকৃষ্ট‌তার প্রতি স্বীকৃতি‌র সীলমোহর লাগিয়েছি। 

    আলোচনা চলতেই পারে। চলছেও। খুব ভালো লাগছে। এসবই গুরুচণ্ডা৯’র মতো বহু যোগ‍্য মানুষে সমৃদ্ধ পাবলিক ফোরামে লেখা‌র প্রাপ্তি। তাই দেখলাম দময়ন্তী দাশগুপ্ত আমার দুটি ভিত্তি‌হীন ধারণা‌য় একটু ঠেকনো দিয়েছেন:

    ১. “জগদীশচন্দ্র যে সহকারিদের নাম লিখতেন না সেটাও সত্যি।”

    ২. “মিসেস ওলে বুল বা সারা বুল এর ঘটনাটি ব্যতিক্রম। হয়তো কৃতজ্ঞতা আর্থিক সাহায্যের জন্য।”

    ব‍্যক্তি আক্রমণ বা অবদমিত আক্রোশ পরিহার করে মার্জিত ভাষায়, তথ‍্য ও বিশ্লেষণ সহকারে আলোচনা বজায় থাকুক - এটাই কাম‍্য। তবে আমার মতো অর্বাচীনের জন‍্য তথ‍্যসূত্র ব‍্যতীত অভিমত ব‍্যক্ত করার গলিটা‌ও খোলা থাকুক। কারণ দেখা যাচ্ছে আমায় খন্ডন বা তাচ্ছিল‍্য ক‍রতে গিয়ে‌ও অনেকে এখানে নানা মণিমাণিক‍্য ছড়াচ্ছে‌ন। সেটাও আমার প্রাপ্তি।

    অনেকদিন আগে আমার এক শুভাকাঙ্ক্ষী পত্রিকা সম্পাদক বলেছিলেন - যদি কঠোর সমালোচনা সহ‍্য করতে সংবেদনশীল‌তার চামড়া মোটা ক‍রতে চান তো গুরুচণ্ডালিতে লিখুন। তাঁর প্রফেসি‌কে প্রণাম। সামান্য পড়াশোনা এবং বাংলায় দুর্বল শিক্ষাগত যোগ্যতা মানে ৪২% এর প্রেক্ষাপট নিয়ে আমি সেই চেষ্টা‌য় রত।
  • dc | 2a02:26f7:d6c0:680d:0:f862:365c:38c8 | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:২৭527865
  • *ইপিআর ব্রিজ 
  • =)) | 117.214.34.6 | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৩০527866
  •  
    এখানে বর্ণিত "ইলেকট্রিশিয়ান"টা পাওয়া গেছে? প্র্যাকটিকাল বুদ্ধির প্রমাণস্বরূপ পেটেন্ট অ্যাপ্লাই করার খবরটা কি সেখানে ছিল?
  • dc | 2a02:26f7:d6c0:680d:0:5e43:8880:378f | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৩৭527867
  • মেরেছে। এবার কি হাজার ছবি কপিপেস্ট করা শুরু হবে? 
  • এলেবেলে | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৪৫527868
  • সমরেশবাবু, আপনি পিরিয়ড বলে আলোচনার রাস্তা বন্ধ করে দেননি বলায় আরও দু-একটা কথা। এই মায়াপাতায় লগিন করে বা না করে এলেবেলে নিকে একমাত্র আমিই লিখে থাকি। আমার আসল নাম-ধাম গুরুর অনেক ইউজারই জানেন। এবং প্রথমে বিদ্যাসাগর ও পরবর্তীকালে রামমোহন ও তাঁর সময়কাল নিয়ে দুটি বই আমারই লেখা। আশা করি, আপনার উত্তর আপনি পেলেন।
     
    কিন্তু আমার আপত্তির জায়গাটি হল এই - মামুলি মন্তব্যকারী হিসাবে এখানে বা অন্য সুতোয় কোনও মন্তব্য করলে অকারণে আমার লেখক সত্তার ল্যাজটি আমার সঙ্গে জুড়ে যাওয়ার কী প্রাসঙ্গিকতা? আমি তো মনে করি, এখানে কে লিখছেন-এর চেয়ে অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক তিনি কী লিখছেন। দু-চারটি বিরল ক্ষেত্র ছাড়া আমি এখানে নিজের নিকেই লিখি। বই প্রকাশিত হওয়ার আগে থেকেই লিখি। আরও অনেকেই লেখেন এবং তাঁদের একাধিক উচ্চ মানের বই প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু মন্তব্য করার সময় সে ব্যাগেজ তাঁরা বহন করেন বলে মনে হয়নি। আপনি সেটাকে যে কেন মান্য করলেন, তা বুঝতে অক্ষম হয়েছি। এইটুকুই।
     
    আপনার যে আমার দু-একটি অতি মামুলি মন্তব্য আপনার ভালো লেগেছে, এই কারণে আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাই। ব্যোদলেয়র ক্লেদজ কুসুম লিখে ফেলার পর থেকে কিংবা হয়তো তারও অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন 'মহামানব' (আপনার কথাটিই ভার্বাটিম ব্যবহার করলাম) ও তাঁদের সময়কাল নিয়ে নানা কাটাছেঁড়া নিত্যনতুন হচ্ছে। সেখানে তাঁদের সদর্থক দিকটি আলোচনার যোগ্য ও নেতিবাচক দিকটি আড়াল করাই ভালো জাতীয় আপ্তবাক্য অন্তত আমার কাছে হাস্যকর লাগে। হয়তো আরও অনেকের কাছেই লাগে। ডিসিজনাবও একটু আগে তাই বলেছেন।
     
    @দময়ন্তী দাশগুপ্ত, বরুণদা মানে কি অবলাবান্ধবের বরুণ চট্টোপাধ্যায়? যদি তাই হয়, তাহলে আপনার চাওয়া রেফারেন্সটি আমি তাঁর কাছে ইনবক্সে পাঠিয়ে দেব। তিনি আমার বন্ধুবৃত্তে নেই ঠিকই, কিন্তু একটি অনলাইন আলোচনার সূত্রে আমরা একে অন্যের কাছে পরিচিত। ফলে অসুবিধা নেই।
  • দময়ন্তী দাশগুপ্ত | 2405:201:8014:c08f:d595:6aa:e82d:9182 | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:১১527869
  • @এলেবেলে, হ্যাঁ, অবলাবান্ধবের বরুণ চট্টোপাধ্যায়। মেসেঞ্জারে পাঠালে আমাকেও সরাসরি পাঠাতে পারেন ফেসবুকে। আমার নামেই আমার প্রোফাইল আছে।
  • এলেবেলে | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:১৫527870
  • বেশ, বইমেলার পর্বটা চুকে গেলেই পাঠিয়ে দেব। 
     
    ইতিমধ্যে একটি নতুন বইয়ের খবর পেলাম। আমার কাজে তো লাগবেই, হয়তো অন্যদেরও কাজে লাগতে পারে ভেবে তার ডিটেলটা দিলাম।
     
  • দীমু | 182.69.177.150 | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:৫১527872
  • কিন্তু আমার আপত্তির জায়গাটি হল এই - মামুলি মন্তব্যকারী হিসাবে এখানে বা অন্য সুতোয় কোনও মন্তব্য করলে অকারণে আমার লেখক সত্তার ল্যাজটি আমার সঙ্গে জুড়ে যাওয়ার কী প্রাসঙ্গিকতা? - ঠিক কথা 
     
    কেউ ফিকশন লিখতে লিখতে হঠাৎ নামকরা লোকেদের নিয়ে ফিচার , মোটা মোটা বই লিখতে শুরু করলে সেটাকে ভাঙিয়ে খাওয়াই বলে। সমরেশবাবুকে বলার , শংকর, সঞ্জীবরা আগে যা গল্প , উপন্যাস লিখেছেন তার সঙ্গে তাদের নিজেদেরই এই জাতীয় বইগুলোকে তুলনা করলে ভুল হবে। এগুলোর সঙ্গে বড়জোর রঞ্জন বন্দ্যো লিখিত কেচ্ছাগুলোর তুলনা করা যায়। 
  • সমরেশ মুখার্জী | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:৫৯527873
  • @ এলেবেলে,

    অতীতে কিছু প্রজাবৎসল রাজা আমজনতা‌র ছদ্মবেশে বাজারে ঘুরে নাগরিকদের দুঃখ, কষ্ট, ক্ষোভের কারণ বোঝার চেষ্টা করতেন। পরে সিংহাসনে বসে শাসক হিসেবে তার প্রতিকার করতেন। অর্থাৎ ছদ্মবেশ আসল নয় - তা ধারণ করলেও তাদের আসল শাসক সত্তা বিলুপ্ত হয়ে যায় না। তেমনি নিকের আড়াল থেকে লিখলে‌ও - জানা থাকলে - পাঠকের কাছে নিকের লেখকসত্তা মুছে যায় না। কে বলছেন সেটা‌ও বিচার্য বিষয় বৈকি। তাই নোবেল পুরস্কারে ভূষিত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ এবং হালে আকাদেমী পুরস্কারে ভূষিতা এক অগ্নিকন‍্যা কাব‍্যপ্রতিভাকে কী একাসনে রাখা যায় না উচিত? আপনি‌ই বলুন।

    তবে এক্ষেত্রে আমি যদি না‌ও জানতাম এলেবেলে ছদ্মনামের আড়ালে আসল ব‍্যক্তি‌টি কে এবং তাঁর ক‍্যালিবার কী তাহলে‌ও এই সুতোয় আপনার বিশদে তথ‍্যসূত্র দিয়ে করা মন্তব্যের গুণবত্তা থেকে আপনাকে “আক্ষরিক অর্থে” এলেবেলে ভাবার কোনো সুযোগ আপনি রাখেননি। গুরুতে হেহে, হিহি ইত্যাদি কিছু নিকের অখাদ‍্য ভাষায়, কদর্য আঙ্গিকে, বিকৃত রুচির মন্তব্য থেকে তাদের ঘেয়ো সারমেয় গোত্রের বংশপরিচয় পরিস্ফুট হয়। তাই তাদের মন্তব্য আমি “হাগজ” সদৃশ উপেক্ষা করি। (বলাই বাহুল‍্য used toilet paper এর এই অনবদ‍্য বিশেষণটি আমার মগজপ্রসূত নয়। কোথায় পড়েছি মনে নেই)।

    তারপর যখন মনে পড়লো এই এলেবেলে নিকটি আসলে কিছু মহামানব‌, বিস্তৃত সময়কাল নিয়ে গবেষণা‌ধর্মী পুস্তক প্রণেতা দেবোত্তম চক্রবর্তী তখন আপনার মন্তব্যের ভাষা, আঙ্গিক, কনটেন্ট নিয়ে প্রত‍্যাশা ও দৃষ্টিভঙ্গি যথাক্রমে বেড়ে এবং বদলে গেল। ফলে এলেবেলে নিক নিয়ে লিখলেও তাতে - ভাঙিয়ে খাচ্ছেন, পোবোন্ধো, বত্তোমান, চুক্কি, চিপকে জাতীয় লঘু শব্দের ব‍্যবহার দৃষ্টি‌কটু লাগলো। আমার মন্তব‍্যে আপনি সুক্ষ্ম খোঁচা উপলব্ধি করেছেন। খেয়াল করে দেখবেন, আপনার মন্তব‍্যে কিছু জায়গায় আপনার খোঁচা কিন্তু বেশ প্রকট। খোঁচা আপনার পছন্দ নয় ব‍্যক্ত করে সেটার প্রয়োগ  কতটা যুক্তি‌সংগত - ভেবে দেখতে অনুরোধ করি।

    তবে আপনি‌ও জেকিল/হাইডের মতো দ্বৈতসত্তা বজায় রাখতে‌ই পারেন যাতে লেখক দেবোত্তম চক্রবর্তী  নামে তাত্ত্বিক প্রবন্ধ লিখতে পারেন এবং এলেবেলে নিকে গুরুতে লঘুচালে লিখতে/মন্তব্য করতে পারেন। তবে নিক হতে নির্গত মন্তব্যে যখন প্রভূত জ্ঞানগর্ভ সারবস্তুর সাথে কিছু লঘু শব্দ, বাক‍্যের সমাবেশ দেখা যায় তখন সেটা হাঁসজারু, বকচ্ছপ গোছের হয়ে দাঁড়ায়। এটাও একটু ভেবে দেখবেন।
     
  • সমরেশ মুখার্জী | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:২৮527874
  • @দীমু,

    #”কেউ ফিকশন লিখতে লিখতে হঠাৎ নামকরা লোকেদের নিয়ে ফিচার , মোটা মোটা বই লিখতে শুরু করলে সেটাকে ভাঙিয়ে খাওয়াই বলে। সমরেশবাবুকে বলার, শংকর, সঞ্জীবরা আগে যা গল্প, উপন্যাস লিখেছেন তার সঙ্গে তাদের নিজেদেরই এই জাতীয় বইগুলোকে তুলনা করলে ভুল হবে। এগুলোর সঙ্গে বড়জোর রঞ্জন বন্দ্যো লিখিত কেচ্ছাগুলোর তুলনা করা যায়।”#

    ২+২=৪ জাতীয় কিছু ক্ষেত্র ছাড়া - মতামত জাতীয় মন্তব্যের ক্ষেত্রে সচরাচর আমি - হয়তো, মনে হয়, সম্ভবত - জাতীয় কিছু শব্দ ব‍্যবহার করি। এগুলো আপনার এবং অন‍্যের কাছে আমার পড়াশোনা‌র স্বল্পতা, বোঝার প্রতিবন্ধকতা (impaired understanding) এবং আত্মবিশ্বাসের অভাবসূচক মনে হলে কিছু মনে করার নেই। ভাটে সম্প্রতি আমার ৩৩ বছরের বিবাহিত জীবন প্রসঙ্গে অমিতাভ চক্রবর্তীর সাথে আলোচনা‌র সুতোয় আপনি বলেছিলেন - আপনার বয়স‌ই এখনও ৩৩ পেরো‌য় নি। তবে তাতে কিছু এসে যায় না। কারণ “হয়তো” এই বয়সেই আপনার জ্ঞান ও পড়াশোনা‌র ব‍্যপ্তি এতোটাই সমৃদ্ধ যে আপনি এই বিষয়ে উপরোক্ত “আপনার ব‍্যক্তি‌গত অভিমত” (Perception based Opinion) নয় একটি স্বতঃসিদ্ধ UNIVERSAL STATEMENT দিতে সক্ষম।

    তবে সবিনয় জানাই, আমি আপনার মতো রঞ্জন বন্দোপাধ্যায়ের সাথে সঞ্জীব ও শংকরকে ইকুয়েট করতে পারলাম না। Let us gracefully agree to disagree on this.

    ধন্যবাদ।
  • দীমু | 182.69.177.150 | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:৫৯527875
  • রঞ্জন বন্দোপাধ্যায়ের সাথে সঞ্জীব ও শংকরকে ইকুয়েট করা হয়নি। যিনি কত অজানারে বা নিবেদিতা রিসার্চ ল্যাবরেটরী লিখেছেন তিনিই যদি বিখ্যাত কারুর জীবনী নিয়ে মোটা বই লেখেন তাহলে পাঠক হিসেবে সেই বইকে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করে বার বার নিবেদিতা রিসার্চ ল্যাবরেটরী পড়ার অধিকার আমার আছে , ওপরের মন্তব্যে সেটাই বলা হয়েছে।
  • এলেবেলে | 202.142.71.17 | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:১৮527876
  •  এ বাবা, এখানে তো সেমিনারে আলোচনা-টনা হচ্ছে না, নিছকই মত বিনিময় হচ্ছে মাত্র। তো এখানেও কি কোট-প্যান্টালুন পরে ভারিক্কি চালে কথা কইতে হবে নাকি? মন্তব্যের ভাষার আবার লঘু-গুরু কী জিনিস? তা ছাড়া ভাষার এই আড়ষ্টতা আমরা জীবনানন্দের দৌলতে কাটিয়ে উঠেছি বলেই মনে করি। 'পোবোন্দো' শব্দটা খ ওরফে বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্তের অবদান। তো সেটা ব্যবহার করেছি। বাকি শব্দগুলো অন্তত 'অপশব্দ'-এর সীমানা টপকায়নি বলেই আমার ধারণা। অত নিক্তি মেপে কথা বলা যায় নাকি?
     
    আচ্ছা, নিবেদিতা রিসার্চ ল্যাবরেটরির মোট বিক্কিরি কত? কত অজানারে-র? সম্প্রতি শংকরের বিবেকানন্দ বিষয়ক বইপত্তরের বিক্কিরির হিসাব নজরে পড়ল। এই সুযোগে সেটা রেখে যাই।
     
    ২০২৪ বইমেলার আগে পর্যন্ত 
    অচেনা অজানা বিবেকানন্দ - ২ লাখ ৩০ হাজার কপি
    আমি বিবেকানন্দ বলছি - ১ লাখ ৫ হাজার কপি
    অবিশ্বাস্য বিবেকানন্দ - ৮০ হাজার কপি
  • সমরেশ মুখার্জী | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:২১527877
  • @ দীমু 
     
    আমি‌ও শংকর ও সঞ্জীবের সাম্প্রতিক বিখ্যাত ব‍্যক্তি‌র ওপর রচনার সাথে রঞ্জন বন্দোপাধ্যায়ের কাদম্বরী দেবী‌র সুইসাইড নোট, রবি ও রাণুর আদরের দাগ জাতীয় সেনসেশন‍্যাল লেখা‌র তুলনা করেছি। তিনটি ব‍্যক্তি চরিত্রে‌র তুলনা করিনি যেহেতু আমি তাদের ব‍্যক্তি‌গতভাবে চিনিনা। ব‍্যক্তি হিসেবে তাদের বৈশিষ্ট্য যতটা আমার চোখে ধরা পড়ছে তা তাঁদের লেখা পড়ে, কিছু সাক্ষাৎ‌কার দেখে। তবে সুচিত্রা সেনের ওপর রঞ্জনবাবুর লেখাটি (সুচিত্রা সেন - উত্তরণ ও অন্তরাল) খারাপ লাগেনি।
  • সমরেশ মুখার্জী | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:৪৬527878
  • @ এলেবেলে,

    ঘাট হয়েছে। মাফি চাইছি।

    না, এখানে আপনাকে কোট প‍্যান্টালুন পরে পড়তে বা লিখতে হবে একথা বলতে চাইনি। আপনি যাতে স্বচ্ছন্দ - বারমুডা, ল‍্যাঙট বা লুঙ্গি  - তা‌ই পরে‌ই লিখতে পারে‌ন। আমার মতো স্বনামে, স্ববদনের DP সহ‌ও আপনি লেখেন না। আপনি লেখেন নিকে। ফলে কিছু না পরেও লিখতে পারেন কারণ এখানে লেখার সাথে পরার কোনো সম্পর্ক নেই। কেবল বলতে চেয়েছি, আপনার মন্তব্যে শাণিত যুক্তি, বিরল তথ‍্য, ক্ষুরধার বুদ্ধি, নিঁখুত বিশ্লেষণের সাথে লঘু চালের তাচ্ছিল‍্য‌‌সূচক কিছু শব্দ সমাহার আমার চোখে দৃষ্টি‌কটু লেগেছে। (যা দময়ন্তী দাশগুপ্ত বা অরিন্দম বসুর মন্তব্যে মনে হয়নি)। সেটা আমার দৃষ্টি‌র সীমাবদ্ধ‌তা হিসেবে উপেক্ষা করতে অনুরোধ করছি। 

    তাছাড়া সিরিয়াস, শ্রমসাধ্য, গবেষণা‌ধর্মী লেখা‌র ফাঁকে কখনো এই ফোরামে আমার মতো অর্বাচীনের ভিত্তি‌হীন লেখার ওপর মন্তব্য করা যদি আপনার কাছে সিনেমায় কেষ্ট মুখার্জি বা জনি লিভারের কমিক রিলিফ অভিনয় দেখে হালকা হ‌ওয়ার মতো উপায় হয় - লিখুন আপনি আপনার মতো - যেমন মন চায়। তাতে আমি সমৃদ্ধ হবো - এটাই আমার লাভ।
     
  • সমরেশ মুখার্জী | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:১৪527880
  • নেটে একটা আর্টিকল দেখলাম। লেখক IIT খড়্গপুর ও IIM কলকাতা‌র ডিগ্ৰি‌ধারী কিন্তু কর্পোরেট চাকরি না করে parivar.org চ‍্যারিটেবল সংস্থা‌র প্রতিষ্ঠাতা এক Social Entrepreneur বিনায়ক লোহানী। নিবন্ধ‌টি প্রকাশ করেছে The Wire, জানি না সেটাও “বত্তোমান” পত্রিকার মতো অনির্ভরযোগ‍্য কিনা। তবে দীমু, এলেবেলের দৃষ্টিতে রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ‌র ধ্বজাধারী শংকর, সঞ্জীবের লেখা মোটেও গ্ৰ‍্যাহ‍্য নয়। বিনায়ক‌ও রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ‌র মনবতাবাদী ভাবধারায় অনুপ্রাণিত। ফলে তার মতামত‌ও এনাদের বর্জনীয় মনে হতে পারে। তবু রাখলাম কারণ বিনায়কের নিবন্ধে আমার ভিত্তিহীন অভিমতের স্বপক্ষে কয়েকটি কথা দেখলাম। যেমন:

    ১. জগদীশের গবেষণা‌পত্র, ব‌ই প্রকাশের ক্ষেত্রে নিবেদিতা‌র ভূমিকা।

    ২. এই লেখার ওপর অরিনবাবু‌র মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আমি ১৯.১/১১:২০/পয়েন্ট ৪ এ লিখেছি‌লাম - “এটা হয়তো অনেকেই জানেন যে পরাধীন ভারতের প্রতিভাবান বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্রের কাজকে তখন ব্রিটেনের বিজ্ঞানসমাজ যথাযোগ্য স্বীকৃতি দেন নি। তাই জগদীশ ভেঙে পড়েছি‌লেন।”

    জবাবে এলেবেলে ১৯.১/১২:৪৮ মন্তব্য করলেন- "খুবই ছেঁদো অভিযোগ। আগেই আমরা দেখেছি, ১৯০২ সালের মধ্যেই জগদীশচন্দ্র দু-দুটি ব্রিটিশ পেটেন্ট পান। এবং তারও অনেক আগে ১৮৯৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর, বিশেষ আমন্ত্রিত বক্তা হিসাবে জগদীশচন্দ্র লিভারপুলে ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশনের বিজ্ঞানী সম্মেলনে, ১৮৯৭-এর ২৯ জানুয়ারি রয়্যাল ইন্সটিটিউশনের ‘ফ্রাইডে ইভনিং ডিসকোর্স’-এ এবং ওই বছরেরই ১৮ ফেব্রুয়ারি ইম্পিরিয়াল ইনস্টিটিউটে নিজের সাম্প্রতিক গবেষণার বিষয়ে বক্তৃতা করেছিলেন। ‘রয়্যাল সোসাইটি জার্নাল’-এর মতো পত্রিকায় তাঁর গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। এসব যদি স্বীকৃতি না দেওয়া হয়, তবে কোন কম্মে সেটা বোঝা সম্ভব, তার মাপকাঠি জানা নেই।”

    অর্থাৎ রয়‍্যাল সোসাইটি‌র জার্ণালে জগদীশের নিবন্ধ প্রকাশ, ইম্পিরিয়াল ইনস্টিটিউটে বক্তৃতা প্রদাণ ইত্যাদি এলেবেলে‌র মতে পরাধীন ভারতের এক বৈজ্ঞানিক‌কে তৎকালীন সাম্রাজ্য‌বাদী ব্রিটেনের উদার, মহানুভব বিজ্ঞানী সমাজের অকুণ্ঠ স্বীকৃতি প্রদানের প্রমাণ। ভালো কথা। কিন্তু বিনায়ক লোহানী‌র এই নিবন্ধে দেখছি তিনি সেই ১৯০২ সালেই জগদীশের রবীন্দ্রনাথ‌কে লেখা একটি চিঠির উল্লেখ করছেন যা এলেবেলে‌র দাবি‌র সাথে মেলেনা বরং আমার অভিমতের সাথে যায়। 

    “You will not know what difficulties I have to face. You cannot imagine. The publication of my article on ‘Plant Response’, which I wrote last May in the Royal Society, was stopped by the conspiracy of Waller and Sanderson. But my discoveries have been published by Waller in his own name in a journal last November. All these days I did not know about it.…..I am depressed. I wish to return now and regain the spirit of life by touching the dust of Bharata.”

    https://www.google.com/url?sa=t&source=web&rct=j&opi=89978449&url=https://m.thewire.in/article/gender/scientist-nun-sister-nivedita-made-sure-j-c-bose-never-gave/amp&ved=2ahUKEwjC7u_W5-2DAxVvUGcHHeqeDQ4QFnoECB4QAQ&usg=AOvVaw0qoDTOTBFRLiExoejJ83A5

    থাকলো বিনায়ক লোহানী‌র প্রেক্ষাপট

    https://en.m.wikipedia.org/wiki/Vinayak_Lohani

     
  • এলেবেলে | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৪৪527890
  • মানতেই হবে সমরেশবাবু নিঃসন্দেহে বড় আমুদে মানুষ। উনি শব্দ নিয়ে খেলাতেও (লেখার সঙ্গে পরার সম্পর্ক নেই) যথেষ্ট পারদর্শী। এই একবার বলেন যে আমার মন্তব্যে উনি খুঁজে পান 'শাণিত যুক্তি, বিরল তথ‍্য, ক্ষুরধার বুদ্ধি ও নিঁখুত বিশ্লেষণ', কিংবা সরাসরি 'আমার তুলনায় আপনার ধারণা‌র উৎকৃষ্ট‌তার প্রতি স্বীকৃতি‌র সীলমোহর' লাগিয়ে দেন; আবার তিনিই দময়ন্তীর একটি 'হয়তো' দেখতে পেয়ে বেশ ভরসা পান। এমনকি নেট ঘেঁটে জনৈক বিনায়ক লোহানীর নিবন্ধের লিঙ্ক সেঁটে জগদীশচন্দ্রের অস্বীকৃতির প্রমাণ হাজির করেন।
     
    আমি লোহানীর নিবন্ধটি পড়লাম। সেখানে আমার বলা কথার সঙ্গে যা যা মিল পাওয়া গেল, তা হল --- বসু বিজ্ঞান মন্দিরের বজ্র লোগো, নিবেদিতার চিতাভস্ম, নন্দলালের ডিজাইন এবং নিবেদিতা সম্পর্কে জগদীশচন্দ্রের সকৃতজ্ঞ উদ্ধৃতি।
     
    হ্যাঁ, এই কথাগুলো আমারই লেখা ---  "খুবই ছেঁদো অভিযোগ। আগেই আমরা দেখেছি, ১৯০২ সালের মধ্যেই জগদীশচন্দ্র দু-দুটি ব্রিটিশ পেটেন্ট পান। এবং তারও অনেক আগে ১৮৯৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর, বিশেষ আমন্ত্রিত বক্তা হিসাবে জগদীশচন্দ্র লিভারপুলে ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশনের বিজ্ঞানী সম্মেলনে, ১৮৯৭-এর ২৯ জানুয়ারি রয়্যাল ইন্সটিটিউশনের ‘ফ্রাইডে ইভনিং ডিসকোর্স’-এ এবং ওই বছরেরই ১৮ ফেব্রুয়ারি ইম্পিরিয়াল ইনস্টিটিউটে নিজের সাম্প্রতিক গবেষণার বিষয়ে বক্তৃতা করেছিলেন। ‘রয়্যাল সোসাইটি জার্নাল’-এর মতো পত্রিকায় তাঁর গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। এসব যদি স্বীকৃতি না দেওয়া হয়, তবে কোন কম্মে সেটা বোঝা সম্ভব, তার মাপকাঠি জানা নেই।"
     
    কিন্তু এই লেখার প্রেক্ষিত (বা ছেঁদো অভিযোগ) ছিল ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:২০ করা সমরেশবাবুর এই উক্তি --- "এটা হয়তো অনেকেই জানেন যে পরাধীন ভারতের প্রতিভাবান বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্রের কাজকে তখন ব্রিটেনের বিজ্ঞানসমাজ যথাযোগ্য স্বীকৃতি দেন নি। তাই জগদীশ ভেঙে পড়েছি‌লেন। তখন সিস্টার নিবেদিতা জগদীশের জীবনে মোটিভেটর হিসেবে আবিভূর্তা হন। তাঁর বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ‌গুলি নিবেদিতা এডিট করে বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশ করতে দীর্ঘদিন ধরে উদ‍্যোগ নিয়েছে‌ন। জগদীশের গবেষণার জন‍্য অর্থ যোগাড় করেছেন। এতদসত্ত্বেও জগদীশ চন্দ্র কিন্তু প্রকাশ‍্যে নিবেদিতার এইসব উপকার স্বীকার করেননি।"
     
    মার্গারেট নোবল কলকাতা পৌঁছন ১৮৯৮-এর ২৮ জানুয়ারি। ওই বছরের ২৫ মার্চ বিবেকানন্দের কাছে দীক্ষাগ্রহণের পর তিনি নিবেদিতা নামে পরিচিত হন। অথচ আমি উল্লেখ করেছি ১৮৯৬-৯৭ সালের কথা মানে যে সময় নিবেদিতা ভারতবর্ষেই আসেননি এবং জগদীশচন্দ্র নিজের কাজকর্মের দৌলতেই ইংল্যান্ডে বিশেষ আমন্ত্রিত বক্তা হিসাবে বিভিন্ন বিজ্ঞানসভায় বক্তৃতা করছেন।
     
    এর অর্থ কিন্তু এমনটা মোটেও নয় যে এসব ঘটনা "পরাধীন ভারতের এক বৈজ্ঞানিক‌কে তৎকালীন সাম্রাজ্য‌বাদী ব্রিটেনের উদার, মহানুভব বিজ্ঞানী সমাজের অকুণ্ঠ স্বীকৃতি প্রদানের" আবশ্যিক অঙ্গ। ইন ফ্যাক্ট, ঔপনিবেশিক শক্তি আমাদের কী চোখে দেখত এবং কেমন আচরণ করত, সেই নিয়ে গুরুতেই আমার কিছু লেখাপত্তর আছে। তা ছাড়া, আমরা এটুকু অন্তত জানি যে জগদীশচন্দ্র ১৯০২ সালে দুটি ব্রিটিশ পেটেন্ট পেলেও ১৯০১ সালের ১০ মে রয়্যাল ইনস্টিটিউশনে তিনি যে গবেষণাপত্রটি পেশ করেন (যে সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ লেখেন ‘আচার্য জগদীশের জয়বার্তা’ শীর্ষক প্রবন্ধটি), সেটি সহ তাঁর আরও ৫টি গবেষণাপত্র রয়্যাল সোসাইটির জার্নালে প্রকাশের জন্য অমনোনীত হয়। অর্থাৎ কি না, এই জার্নালে যেমন তাঁর প্রবন্ধ বা গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে, তেমনই তা অমনোনীতও হয়েছে। কিন্তু এখানে নিবেদিতাকে টেনে আনা অবান্তর।
     
    একের পর এক গবেষণাপত্র অমনোনীত হওয়ার পরে জগদীশচন্দ্র যখন বিদেশি জার্নালের মুখাপেক্ষী না থেকে নিজস্ব গ্রন্থ প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেন, সেক্ষেত্রে নিবেদিতার ঠিক কতটুকু ভূমিকা ছিল তা লিজেল রেমঁকে উদ্ধৃত করে আমি আগেই জানিয়েছি। এবং লোহানী এ প্রসঙ্গে "She edited the books – indeed the language eminently bears Nivedita’s mark, while not taking any credit for her efforts." লিখলেও আমি অন্তত রেমঁর মন্তব্যকেই বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে করছি।
     
     
  • দময়ন্তী দাশগুপ্ত | 2405:201:8014:c08f:d595:6aa:e82d:9182 | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:০৩527893
  • নিবেদিতার সঙ্গে বসে জগদীশচন্দ্র বৈজ্ঞানিক লেখালেখি করতেন। আমার মনে হয়েছে বিজ্ঞানের লেখা এডিট করার ক্ষমতা নিবেদিতার ছিল না। তিনি ইংরেজি ভাষা কিছু সংশোধন করে দিতেন হয়তো। সেটা সম্ভব। মূলত:গবেষণার কাগজপত্র গুছিয়ে রাখা, শিডিউল ঠিক করা, অর্থের যোগাড়ের চেষ্টা করা এসব করতেন। যদিও তিনি নিজেও নানা কাজে ব্যস্ত থাকতেন স্বল্প পরিসর জীবনে। এই কাজগুলো নিবেদিতার আগে পরে অবলাও করেছেন যেটা কেউই গুরুত্বের মধ্যে আনেননি। এমন কী জগদীশচন্দ্র নিজেও। নিবেদিতার মৃত্যুর পর তাঁর মনে হয়েছে সব আলো যেন নিভে গেছে এবং তাঁর বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করার মতো আর কেউই রইল না। গবেষণার কথা যেভাবে নিবেদিতার সঙ্গে শেয়ার করেছেন অবলার সঙ্গে কখনও তা করেননি। নিবেদিতা জগদীশচন্দ্রকে উদবুদ্ধ করতেন তাঁর কাজে সেটা খুব সত্যি।
  • সমরেশ মুখার্জী | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৪৫527895
  • আলোচনা‌য় অংশগ্রহণ‌কারী সবাই‌কে ধন‍্যবাদ
     
    ১৯.০৯.২২ একটা নিবন্ধ (শংকরের) পাঠের প্রতিক্রিয়া মুষ্টিমেয় কজন বন্ধুর সাথে শেয়ার করেছি‌লাম। গুরুতে ১৮.০১.২৪ সহস্রলোচন শর্মা‌র - “এক কাল্পনিক পুস্তক বিক্রেতা‌র গল্প” - লেখায় জাক ফঁসের প্রসঙ্গ পড়ে সেই পাঠ প্রতিক্রিয়া‌ সংক্ষিপ্ত আকারে গুরুতে রেখেছি‌লাম। তার ওপর যে এতো মন্তব্য আসবে, যার বেশ কিছু অত‍্যন্ত সুচিন্তিত - ভাবিনি। বেশ লাগলো। 

    বাঙালি স্বভাব রসিক। তাই কিছু মন্তব্যে একটু তির্যক বা বক্র প্রকাশ‌ভঙ্গির ঝলক দেখা গেছে। তবে সেসব শালীনতার গণ্ডির মধ‍্যে‌ ছিল। তাই আমার খারাপ লাগেনি। সীমিত (linguistic) ক্ষমতায় শব্দ নিয়ে খেলতে আমার‌ও ভালো লাগে। এলেবেলে ঠিক বুঝেছে‌ন - আমি বাস্তবিক‌ই আমুদে মানুষ। এ জীবনে আর রাশভারী হ‌ওয়া গেলনা। আমার জবাবে‌ যদি কারুর খারাপ লেগে থাকে - আমি মার্জনা‌ চাইছি। মুক্ত মঞ্চে কোনো বিতর্কিত বিষয়ে‌‌ও (যেখানে নানা ধরণের ভিন্ন মত সম্ভব) এমন  মার্জিত, আত্মনিয়ন্ত্রিত, বুদ্ধি‌দীপ্ত আলোচনা‌ই বাঞ্ছনীয়। 

     
  • Arindam Basu | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:২২527899
  • নিবেদিতা জগদীশচন্দ্রের ইংরেজি এডিট করতেন জাতীয় মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মনে রাখা যেতে পারে, জগদীশ বোস সে আমলের MA (Cantab), কেমব্রিজের এম এ, তার ওপর লর্ড Raleigh'র ছাত্র। 
     
    নিবেদিতার জগদীশচন্দ্রের সঙ্গে পরিচিতির আগে থেকেই জগদীশচন্দ্র আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক মহলে সুপরিচিত ছিলেন, এবং তাঁর ইংরেজীতে লেখালিখির বক্তৃতার সুবাদেই পরিচিত ছিলেন। এবং শুধু জগদীশচন্দ্র বলে নয়, কলোনির অন্যান্য দেশের বৈজ্ঞানিকদের সঙ্গেও ইংরেজরা খুব সদাচরণ করত না।  জগদীশচন্দ্রের কাজ সেই আমলে (এমনকি আজকের যুগের পরিপ্রেক্ষিতেও) যথেষ্ট সফিস্টিকেটেড ছিল। 
  • দময়ন্তী দাশগুপ্ত | 2405:201:8014:c08f:d595:6aa:e82d:9182 | ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:৪৭527902
  • নিবেদিতা জগদীশচন্দ্রের লেখালেখিতে সাহায্য করতেন, পদার্থবিজ্ঞান বা উদ্ভিদবিদ্যায় তো সম্ভবই নয়, কারণ সেভাবে বিজ্ঞানের শিক্ষা তো তাঁর ছিল না। সেই প্রসঙ্গেই ইংরেজির কথা মনে হয়েছে। নইলে কীভাবে? যেমন অবলা প্রচুর লেখাপড়া নিজে নিজেই করার পরও বলা হয় অবলা বসুর ভ্রমণের লেখা জগদীশচন্দ্র এডিট করতেন। ব্যাপারটা আমার খুব আশ্চর্য লেগেছিল। তাই উল্লেখ করিনি।
  • Arindam Basu | ২২ জানুয়ারি ২০২৪ ০০:৫০527904
  • =)), "আগ্রহজনক বিষয়ের চর্চামাত্রই পজিটিভ আউটকাম দেয় না তো। মূলত এই কারণেই হয়ত গতজীবন মানুষদের মূলত আদর্শযোগ্য গুণাবলী ও কাজের নজিরগুলো নিয়ে চর্চার অভ্যাস সামাজিকভাবে রয়ে গেছে। বাকিটুকু নিয়ে চর্চার অভ্যাস ড্রেইন ইন্সপেক্টারের কাজের মতোই স্ট্যাটাস পেয়ে থাকে। অরিনবাবুর আপত্তির জায়গাটা সম্ভবত এখানেই"
     
    একেবারেই ঐ। 
    এই জায়গাটাতে আমার জগদীশ বোস বা বশী সেনের বা যে কারুর ব্যক্তিজীবন নিয়ে, কাটাছেঁড়া করাটায় আপত্তি। সে আর কি করা যাবে? যাদের আরকইভাল রিসার্চে আগ্রহ, তাঁরা করবেন। তবে তাতেও যে ব্যক্তিমানুষের সবটা বোঝা যায়, আমার মনে হয় না। 
     
  • Ranjan Roy | ২২ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:১৬527905
  • ওপারের সবগুলো মন্তব্য পড়ে আমার একান্ত ব্যক্তিগত মত:
    1 জগদীশ চন্দ্র বসু বেশী সেনের গবেষণাপত্র নিজের নামে প্রকাশ করেছিলেন--- এটা অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ। 
      -- এই ধরণের ঘটনা আকাদেমিক দুনিয়ায় বিরল নয়। কিন্তু পাবলিক ফোরামে এমন অভিযোগ করলে তথ্যসূত্র দিতেই হবে, নইলে তা কুৎসা করা হবে। 
      এটা শংকরের মত সাহিত্যিক করলেও একই কথা।।
    2
      সংস্কৃত ব্যাকরণ মানলে অবশ্যই শঙ্কর+  ষ্ঞ প্রত্যয় = শাংকর।
    কিন্তু বাংলায় কিছু প্রয়োগ,  কিছু ব্যবহারসিদ্ধ ব্যাপার আছে তো।
    ধরুন রবীন্দ্র রচনাবলী। ষ্ঞিক প্রত্যয় যোগে রাবীন্দ্রিক রচনাবলী হওয়া উচিত, অথবা ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাসে রবীন্দ্রের  রচনাবলী= রবীন্দ্ররচনাবলী।
    কিন্তু আমরা লিখি  রবীন্দ্র রচনাবলী, এবং সেটা স্বীকৃত। 
    সেভাবেই শাংকরভাষ্য ও শংকর ভাষ্য দুটোই ঠিক নয় কি?
  • =)) | 103.76.82.92 | ২২ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:২৮527907
  • পেটেন্টের ব্যপারটা ইন্টারেস্টিং। জগদীশ বোসের আগে কোন কোন ভারতীয়ের ব্রিটিশ বা আমেরিকান পেটেন্ট ছিল, কোনো পশ্চিমি অংশসত্ত্বভোগী ছাড়া, জানার উপায় আছে?
  • =)) | 103.76.82.165 | ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:৩০527935
  • দুটি কথা বলার ছিল, (ক) ইন্টারপ্রিটেশন ও (খ) দুষ্প্রাপ্যরিসোর্সস্বল্পতাহেতু, যা পাওয়া গেছে সেটুকুকেই সবটুকু ধরে নিয়ে সিদ্ধান্ত ডকুমেন্টেশন ও তাতে নির্ভরশীল প্রচার সম্পর্কিত।
     
    বিষয়:
    // পেটেন্ট নেওয়ার ব্যাপারে জগদীশচন্দ্র যে তাঁর অন্যতম সুহৃদ রবীন্দ্রনাথকে লিখিত আকারে মিথ্যা কথা লিখেছিলেন, সেই রেফারেন্স আমার কাছে মজুত আছে। //
    // অস্যার্থ, জগদীশচন্দ্র তাঁর আবিষ্কারের পেটেন্ট নিয়ে একেবারেই ভাবিত নন। //
    // বন্ধু রবীন্দ্রনাথের কাছে জগদীশচন্দ্র তাঁর 'উদাসীন' ভাবমূর্তি বজায় রাখার জন্য ১৯০১ সালের ১৭ মে লন্ডন থেকে কবিকে লেখেন ... ... যিনি পেটেন্টের জন্য এক বছরে চারবার আবেদন করেন, তাঁকে আর যাই হোক এই বিষয়ে উদাসীন বলা চলে না। তিনি যে গোটা বিষয়টা রবীন্দ্রনাথের কাছে গোপন রেখেছিলেন (বা মিথ্যা কথা লিখেছিলেন) তা কবিকে লেখা চিঠিটির তারিখ দেখলেই মালুম হবে। //
     
    প্রথমত রবীন্দ্রনাথকে লেখা জগদীশচন্দ্রের চিঠির হাফকোট ও সেটা পড়ে নিজস্ব ইন্টারপ্রিটেশন খাড়া করে ইনি যে "অস্যার্থ" বের করেন, তা নেহাতই এনার নিজের ধারণাপ্রণোদিত বা বলা ভালো কোনো মনীষী বা আইকনকে মিথ্যাবাদী প্রমাণ করার আনন্দের আত্মপ্রসাদজনিত। ওই একই চিঠি পড়ে গবেষক PROBIR K. BONDYOPADHYAY এবং SUCHANDA BANERJEE-এর মত --
    "A careful reading of this relevant portion of the letter together with the knowledge of Professor Bose’s circumstances and his current research activities as presented in the said lecture, it becomes abundantly clear that Professor Bose was not at all against patenting his research products."
    চিঠির বয়ান অনুযায়ী জগদীশচন্দ্র স্পষ্টতই আমেরিকানদের অর্থগৃধ্নু জীবনযাত্রা ও দৃষ্টিভঙ্গি বিষয়ে হতাশ ও শঙ্কিত ছিলেন, যে কারণে তিনি বলছেন: এমনকি একজন কোটিপতি আরও কিছু বাড়তি লাভ করার আশায় তাঁর কাছে ভিখারির মতো ছুটে এসেছে তাঁর পেটেন্ট করিয়ে দিয়ে ৫০% কমিশন হিসেবে পাওয়ার লোভে।
    চিঠিটা পুরোটা পড়লে এনার উদ্ধৃত অংশের আগেই দেখা যায় (যে "হাজার ছবি কপিপেস্ট"এর একটি ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৩০ দেওয়া হয়েছে) জগদীশচন্দ্র নিয়মিত "The Electrician" পত্রিকাটি রবীন্দ্রনাথকে পাঠাতেন, এবং মন্তব্য করেছেন হিন্দুর Practical বুদ্ধি নাই -- এর উত্তরও সেখানেই পাওয়া যাবে, যা দৃশ্যত পেটেন্ট অ্যাপ্লিকেশন সংক্রান্ত ইশারা। নিচে "হাজার ছবি কপিপেস্ট" এর দ্বিতীয় ছবিটি দেখলে বোঝা যাবে, জগদীশচন্দ্র যে ১৯০১ সালের ৯ মে পেটেন্টের জন্য সারা বুলের সাথে জয়েন্টলি আবেদন করেন (পেটেন্ট নং ৯৬৯৭), সে খবর ইলেকট্রিশিয়ান-এ  প্রকাশিত হয়েছিল "PATENT RECORD" অংশে, যা ওই পত্রিকার একটি নিয়মিত বিভাগ। স্বভাবতই ঠিক কত তারিখে তা প্রকাশিত হবে তা তিনি নিশ্চিত জানতেন না, কিন্তু ৯ তারিখ অ্যাপ্লাই করে তিনি ১৭ তারিখ কবি কে জানিয়েছেন যে এই "Practical বুদ্ধি"-র খবর ইলেকট্রিশিয়ানেই কবি পাবেন। এখানে গোপন রাখা বা মিথ্যা কথা লেখার অভিযোগটি, অভিযোগকারীর নিজের মানসিকতারই পরিচায়ক।
     
     
     
     
    জগদীশচন্দ্র শুধু যে বেশ কয়েকবার পেটেন্টের অ্যাপ্লিকেশন করেন তাইই নয়, আমেরিকান পেটেন্টটি ছাড়া তাঁর আরও দুটি ব্রিটিশ পেটেন্টও হস্তগত হয়। ডিটেলস এরকম:
     
    The historical records of the British Patent Office indicate that Professor Bose and Mrs. Bull jointly applied for patents on five separate occasions. Excerpts from the weekly British publication : Illustrated Official Journal (patents) are shown in Fig. 8. The first provisional application for patents (No. 9697) was made on 9th May 1901 and appeared in the May 15, 1901 publication. ...
    The second provisional application No. 15,467 was made on July 30th, 1901 and appeared in the August 8th, 1901 publication. This became the first British patent. ... Although details of the first application has not yet been recovered (if at all it survived !), the title of the second application strongly suggests that it is a fresh resubmission of the first application. 
    The third and fourth provisional application Nos. 18,267 and 18,268 were made on 12th September 1901 and appeared in the September 18, 1901 publication. This fourth application (No. 18,268) whose content is not yet known, did not result in a separate patent. 
    The fifth provisional application No. 18,430 was made on September 14th, 1901. This application became the second British patent. ... Again, although details of the third application has not yet been recovered (if at all it survived !), the title of the fifth application suggests that it is closely related to the third application.
     
     
    বিবেকানন্দ ২৩ অক্টোবর ১৯০০ তে প্যারিসে ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স কংগ্রেসে সারা বুলের সঙ্গে জগদীশচন্দ্রের বক্তৃতা শোনেন, সারা বুল ১৮৯৮ থেকে জগদীশ বোসের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন ইত্যাদি এই পেপারেই আছে। She supported Jagadish Chandra Bose in his scientific research, and when he was sick in London in 1900, she paid for his treatment. Jagadish Chandra Bose and his wife Lady Abala had a very close relationship with her throughout her life.[12] She gave financial assistance of US$4,000 to Bose to set up his own botanical research laboratory.[13] ইত্যাদি আছে সারা বুলের উইকি পাতায়। নিবেদিতা ও সারা বুল জগদীশচন্দ্রকে পেটেন্ট অ্যাপ্লিকেশনের জন্য কনভিন্স করেন বা অ্যাপ্লিকেশনে সহায়তা করেন এসবও রয়েছে নানান লিংকে। গবেষণায় নিমগ্ন জগদীশের বদলে পেটেন্ট অফিসের সঙ্গে ফর্মাল কমিউনিকেশন, ফলোয়াপ, প্রয়োজনীয় ফিনান্সিং-- ইত্যাদির দায় সারা বুলই নিয়েছিলেন অনুমান করা যায় (যা-ই হোক এ বিষয়ে আপাতত আর মৌচাকে ঢিল ছোড়ার ইচ্ছে নেই)।
     
    "হিন্দুর practical বুদ্ধি" ছাড়াও যে সূক্ষ্মবুদ্ধির উল্লেখ জগদীশচন্দ্র চিঠিতে করেছেন, তা রয়েছে দ্য ইলেকট্রিশিয়ানের ১৭মে ১৯০১ সংখ্যার ১৪০ পাতা থেকে শুরু করে প্রায় দেড় পাতা জোড়া রিপোর্টে। শিরোনাম "DR. BOSE'S THEORY OF RESPONSE IN LIVING AND
    NON-LIVING MATTER."
     
    সেপ্টেম্বর ২০, ১৯০১ এ (৮৩০ পাতা) এবং সেপ্টেম্বর ২৭, ২০০২ এ (৮৭৭ পাতা)  দুভাগে ছাপা একটি বড় প্রবন্ধও রয়েছে তাঁর। শিরোনাম "ON THE CHANGE OF CONDUCTIVITY OF METALLIC PARTICLES UNDER CYCLIC ELECTROMOTIVE VARIATION."
     
    এই সেই ইলেকট্রিশিয়ান (ডিজিটাইজড, ডাউনলোডেবল) VOLUME XLVII (Second Series) FROM APRIL 26, 1901 тo OCTOBER 18, 1901
     
     
    জগদীশচন্দ্র প্রথম আমেরিকান পেন্টেন্টধারী এশিয়ান। তাঁর আগে আর কোনো ভারতীয়ের কোনো পশ্চিমি অংশসত্ত্বভোগী ছাড়া ব্রিটিশ পেটেন্ট ছিল কিনা জানা গেলে আরেকটু ক্লিয়ার হবে কিছু বিষয়।
  • @ =)) | 2001:67c:6ec:203:192:42:116:203 | ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:২২527936
  • যার বক্তব্যের কোন ক্রেডিবিলিটি নাই, তার বক্তব্য খণ্ডনে এত না খাটলেও চলত।
  • সমরেশ মুখার্জী | ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:১৫527995
  • তিন বছরের পরিশ্রমে বশী সেনের নিজস্ব গবেষণা জগদীশের নামে বিদেশে‌র জার্ণালে প্রকাশিত হ‌ওয়া প্রসঙ্গে

    এই বিষয়ে মূলতঃ অরিন্দম বসু এবং এলেবেলে ও রঞ্জন রায় আপত্তি জানি‌য়েছেন। 
     
    লেখা‌টা আমার নয়। আমি শংকরের লে‌খার ওপরে‌ই আমার পাঠ প্রতিক্রিয়া লিখেছি‌লাম। তবু মনে হোলো, একবার চেষ্টা করে দেখি এই প্রসঙ্গে কোনো সূত্র পাওয়া যায় কিনা। তাই আমি লেখককে‌ই জিজ্ঞাসা করবো ঠিক।করলাম। তাই বর্তমান পত্রিকার দপ্তরে ২০.১ একটা মেল করলাম। 

     
    বর্তমান দপ্তর কোনো উত্তর দিলো না। আর একটা সূত্রে চেষ্টা করলাম। ফলে TOI এর এক সাংবাদিক মারফৎ ২৬.১/১৪:৪৭ শংকরের ব‍্যক্তি‌গত মোবাইল নম্বর পেলাম। বর্ষীয়ান মানুষ, হঠাৎ ফোন করা ঠিক নয়, তাই তখনই ২৬.১/১৫:০০ একটা SMS করলাম।


     
    তারপর থেকে আট বারের চেষ্টায় - আজ ২৮.১/১৮:০০ ওনার সাথে সাড়ে তিন মিনিট কথা হোলো। মনে হয় ঘরে আরো কয়েকজন ছিলেন। আমি দ্রুত, সংক্ষেপে, পরিস্কার‌ভাবে বললাম, আপনার ঐ লেখা‌টি ভালো লাগতে আমি একটা বড় গ্ৰুপে শেয়ার করেছি। সেখানে কয়েকজন বলেছেন কোনো তথ‍্যসূত্র উল্লেখ না করে শংকর জগদীশ চন্দ্র বসুর মতো বিজ্ঞানী‌র সম্পর্কে এমন কথা লিখলে‌ন কী করে?  শংকর নীরবে আমার সব কথা শুনে বললেন -  আমি এখনও লেখালিখি নিয়ে থাকি, তার জন‍্য পড়াশোনা করতে হয়। সেই নিয়ে ব‍্যস্ত থাকি। নব্বই বছর বয়স হয়ছে, তাই আড়াই বছর আগে ঐ লেখা‌র সময় কোথা থেকে তথ‍্যসূত্র পেয়েছি তা এখন হাজির‌জবাব মনে নেই। শুধু এটুকু বলছি, আমি‌ও জানি কার সম্পর্কে কী লিখেছি। এবং ভালো‌ভাবে জানি তা আমার মনগড়া কল্পনা নয়। জানি‌না আপনি কোথায় কী লিখেছেন, তার পাঠ‌কসংখ‍্যা শারদীয়া বর্তমানের থেকে বেশী কিনা তা‌ও জানি না। আমি কিন্তু ঐ লেখা‌র জন‍্য পত্রিকা অফিস থেকে কারুর প্রতিবাদ‌পত্র পা‌ই নি। তাই আপনাদের গ্ৰুপে কে কী বলেছেন তাতে আমার কিছু যায় আসে না।

    মনে হয় এরপর আমার আর কিছু করার নেই।
     
  • বেশ | 173.62.207.237 | ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:২৬527996
  • সমরেশবাবুর উদ্যম নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। 
     
    মনে হচ্ছে আনন্দবাজার এই সময় ধরণের কাগজে (ধরেই নেওয়া যায় বর্তমান এটা আর ঘাঁটাচ্ছে না) নাম করে লেখা না বেরোলে শংকরের থেকে আর কিছু বের করা মুশকিল।  বাকি রইল বশী সেনের যোগ। উত্সাহীদের জন্যে। 
  • Arindam Basu | ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:৪১527997
  • এতটা খাটলেন সমরেশবাবু, প্রশংসা করতে হয়। তবে শংকরের জানার কথা নয়, তিনি যা পড়েছেন তাই যাচাই না করে লিখেছেন। বরং নিতাই নাগের বইটা একবার পড়ে দেখা যেতে পারে যে জগদীশচন্দ্রের নামে কুম্ভীলকবৃত্তির যে অভিযোগ, তার ভিত্তিটি কোন গবেষণাকে কেন্দ্র করে। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন