এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  বাকিসব  মোচ্ছব

  • দেবী পক্ষ 

    Anuradha Kunda লেখকের গ্রাহক হোন
    বাকিসব | মোচ্ছব | ০৮ মার্চ ২০২৩ | ৮৪৯ বার পঠিত
  • | | | |
    সবার আগে ঐ 'আমি নারী, আমি সব পারি' শ্লোগানটি বাদ দিন। আমি মানুষ। তাই অনেক কিছুই পারি। আবার কিছুই পারি না। এটাই স্বাভাবিক। সবকিছু পারতে হবে এমন মাথার দিব্যি কে দিয়েছে? পারতে হলে মেয়ে এবং ছেলে, উভয় সন্তানকেই আতুপুতু না করে শক্তপোক্ত করে গড়ে তুলুন। যেন নিজের জন্য ভাজা মাছটি নিজেরাই উল্টে খেতে পারে। মেরুদন্ডটি সোজা রেখে চলতে পারে। এর কথা তার কাছে, তার কথা ওর কাছে পুরুষ মানুষরাও কিছু কম বলে না। কাজেই মেয়েলি আর পুরুষালি বলে মানুষকে সংজ্ঞায়িত করবেন না।

    মানুষ অংকের ফর্মূলা নয়। মেয়ে হলেই এমন হতে হবে, বউ হলেই তেমন হতে হবে আর সবচেয়ে বড় সর্বনাশ যে মা হলেই তে...মন হতে হবে, এইসব ধারণা বিসর্জন না দিলে কিছুই লাভ নেই।

    হাসলে যদি দাঁতের মাড়ি দেখা যায় তবে হাসি ঠিকঠাক নয়, এই ফর্মূলাকে তোপ দেগে উড়িয়ে দিয়েছেন মাধুরী দীক্ষিত।

    সাফ্রাগেটরা আন্দোলনে নেমেছিলেন লাল লিপস্টিক পরে। ঐ লাল ছিল বিদ্রোহের প্রতীক। তারপর বহুজায়গায় বহুকালে লিপস্টিপরা মেয়েরা নিন্দিত হয়েছেন। পুরুষ দেখে দিয়েছে, লিপস্টিক পরা মেয়ে ঘরোয়া হয় না। ভাল বউ হয় না।

    বস্তুত পিতৃতান্ত্রিক নির্ঘোষ দ্বারাই মেয়েরা চালিত হচ্ছে এখনও। সব পারতে গিয়ে নিউরোটিক পেশেন্ট হচ্ছে শেষে। নিজের সত্ত্বাকে বিলীন করে দেওয়া প্রেমকে মহিমান্বিত করতে করতে আটই মার্চ একটা পণ্যদিবস না হয়ে যায়। সাবধানে থাকুন। ইন্টিগ্রিটি বড় দরকারী জিনিস। ওটি আয়ত্ত্ব করতে না পারলে ডিগ্রি দিয়ে কিছুই হয় না। এক অধ্যাপিকা বরের হাতে মার খেয়ে খেয়ে শেষপর্যন্ত আত্মহত্যা করলেন। এও তো দেখেছি। আইআইটি পাশ মেয়ে পণের জন্য গলায় দড়ি দিয়েছে। আর ভাল বউ আর পজেসিভ মা তৈরির ভার্চুয়াল কারখানা, মানে টিভি সিরিয়াল পলিগ্যামি প্রোমোট করছে! হাসবো না কাঁদবো বুঝে পাইনা। ঠাকুমাদের মুখে শোনা যেত, মেয়েমানুষ যতই পড়াশোনা করুক, ভাতের হাঁড়ি ধরতেই হবে। আর এখন নারীবাদ ইত্যাদি পড়ে/ করেও মেয়েরা আদতে ঐ মাল্টিটাস্কার হতেই চাইছে। নিজেকে প্রতিপন্ন করার দায়িত্ব কে চাপালো কাঁধে?

    যদি খেতে পারো তবে রান্নাও করতে পারো। যদি পোশাক পরতে পারো তবে তা কাচতেও পারো। নারী পুরুষ নির্বিশেষে মূলধারার শিক্ষাসিলেবাসে এইসব কথা কবে ঢুকবে?

    গোড়ার গলদগুলো শুধরে নিন আগেই।

    দুটো তিনটে হাড় পিত্তি জ্বালানো বিজ্ঞাপনের ছবি থাকলো। সিরিয়াল যদি দেখতে পারেন, এদুটোও দেখুন। কত ন্যাক্কারজনকভাবে ব্যবহৃত হয় মুখ ও শরীর। একরাশ ছিঃ।

    মেয়েরা তো মেয়েছেলে। রাস্তায় পড়ে থাকুক আর অফিসে চাকরি করুক। মেয়েরাই সিডিউস করে। জ্যোতি সিং করেছিল। সত্তর বছরের সন্ন্যাসিনী করেছিলেন। আট বছরের আসিফা। নয় বছরের খুকি। সালোয়ার কুর্তা, শাড়ি, জিনস। সবাই সিডিউস করে। তিনমাস। তিনবছর।

    তারপর ধর্ষক বিকৃতমস্তিষ্ক বলে পার পেয়ে যায়। চাকরি চাইতে যাওয়া মেয়ে থেকে শুরু করে রিটায়ারমেন্ট হয়ে যাওয়া মেয়ে, সব্বাই আসলে মেয়েছেলে। মেনস্ট্রুয়েশন ঘৃণার অধ্যায়।মেনোপজ ঘৃণার অধ্যায়। প্রেগনেন্সি রহস্য। ঘুম, নাওয়া, খাওয়ার মতো রেপ খুব নর্মাল ব্যাপার তো! তারপর মাথা কেটে নাও। অ্যাসিড দিয়ে পোড়াও। ভারি সহজ। তিনবছর। কিন্তু মেয়ে তো। নিশ্চয়ই সিডিউস করেছিল দেখো গে।

    ছাত্রদের জিজ্ঞেস করি, কতজন রান্নাঘরে যাস মাকে সাহায্য করতে?

    একেকজন যায়। কিন্ত তাদের মায়েরাই রাগ করেন ছেলে রান্নাঘরে ঢুকলে। এইখানেই গলদ। গোড়ায় গলদ।

    নারী দিবস আসলে যতটা নারীদের, তারচেয়ে ঢের বেশি পুরুষের। পুরুষ দিবস বেশি করে পালিত হওয়া দরকার। পুংশিশুরা একটু সহজভাবে লালিত হলেই নারীর সমস্যা কম হয়।

    মেল ইগো। বড় মারাত্মক জিনিস। ঐ "সোনার আংটি বাঁকা হলেও চলে" শুনে শুনে বড় হলে মেল ইগো তো ফুলবেই। শিকড়ে গেলে দেখা যাবে যে অর্থনীতির রশি যার হাতে সেই শাসক। অর্থনীতি সমাজনীতিকেও চালনা করে। আর ক্ষমতাবান কবেই বা ক্ষমতা ছাড়তে চেয়েছে আর ছাড়বেই বা কেন?

    ক্ষমতাবানের পক্ষছায়ায় জীবনধারনের সুযোগ পেয়ে পরজীবী হতে অভ্যস্ত নারী যুগযুগান্তের মেল ডমিনেশনকে প্রেম ভেবেছে, ভাবছে, মেল ভায়োলেন্সকে ভয় পেয়েছে, পুরুষের ইগোর বেলুনকে যত্ন করে ফুলিয়েছে, পুরুষের শাসনকে নিজের নিরাপত্তা ভেবেছে, পুরুষের যৌনতাকে আদর্শ মেনেছে, পুরুষের তুষ্টিকে আত্মতুষ্টি মনে করেছে। এই বিশাল সুবিধাবাদী পৃথিবীতে ভাত কাপড় চেয়ে মেয়েরা নিজেদের কম-মানুষ মনে করেছে। আবার রোজগেরে হয়েও নিজের অর্থের সম্পূর্ণ মালিকানা না পাওয়া মেয়েরা পুরুষতন্ত্রের কাছে নিজের মাথা বাঁধা দিয়েই "সংসার" বাঁচিয়েছেন। পিতৃতান্ত্রিক সমাজ মেয়েদের "লক্ষ্মীমন্ত" বলেছে। বাহবা দিয়েছে।

    রবীন্দ্রনাথ যখন বলেন যে মেয়েদের হাতে ক্ষমতা গেলে তা হবে ভয়ঙ্কর কারণ দুর্বলের হাতে ক্ষমতা আফিমের মতো কাজ করবে,আমি হতবাক হই না। হোক না অমিতর কথা, এ জিনিষ বকলমে পুরুষতন্ত্রের মন্ত্র। বিস্মিত হই এই ভেবে যে এই মানুষটি ই "স্ত্রীর পত্র" লিখেছিলেন। "অপরিচিতা" বা "হৈমন্তী" লিখে বাঙালি মেয়ের আত্মসম্মান বোধ জাগ্রত করেছিলেন। প্রকান্ড মানুষের প্রকান্ড স্ববিরোধ। এতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। রুশো তো বুক ফুলিয়ে বলেছেন, আদর্শ মেয়ের কাজ হল পুরুষের চিত্ত বিনোদন। অন্তত কুড়ি বছর বয়স পর্যন্ত। তারপর সে বুড়ি। কাজেই সেজে গুজে ছলনা করে পুরুষের মন ভুলিয়ে বর জোগাড় করাই তার মোক্ষ। এতেও চমকপ্রদ কিছু নেই। রুশো তাঁর অবৈধ সন্তানদের রাস্তায় ছেড়ে দিয়েছিলেন। তিনি যে একথা বলবেন তাতে আর আশ্চর্য কি। এমনকি আমাদের তাবড় তাবড় বুদ্ধিজীবীরা হরেদরে একটাই কথা বলেছেন, মেয়ে রা অধীনে থাকতে ভালবাসে, উদার পুরুষ তাকে মাথায় করে রাখে, অবাধ্য হলে শাস্তি তো দিতেই হয়। মেয়েমানুষের গুমোর ভাল কথা নয়। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় তো লিখলেন, মেয়েরা একজন প্রভু চায়। অথবা মেয়েরা ধর্ষিত হতে ভালবাসে। তাই জন্য কি আমরা "মানবজমিন"বা "দূরবীণ" কম ভালবাসলাম? পারে, পারে। মেয়েরাই পারে সব অন্যায় কথা হজম করে ভালবাসতে, অন্যায় কাজ ভুলে যেতে।

    এসব কথা আমাদের হতবাক করে না। লীলা মজুমদার বলেছেন পুরুষদের কথা মন দিয়ে শুনে, কাজটা নিজের মতে, নিজের মতো করে যেতে।

    তবে যে সিমোন দ্য বোভায়া পড়ে বোধ জাগ্রত হল, যখন জানলাম সাঁর্ত্রকে খুশি রাখার জন্য, তাঁর মেধাকে পুষ্ট রাখার জন্য অল্পবয়সী মেয়েদের জোগান দিতেন সিমোন, কেমন বোকা হয়ে গেছিলাম। নিত্য নতুন নারী সঙ্গ ছাড়া দীপ্ত হতেন না সাঁর্ত্র। আর সিমোনকে হতে হত সাপ্লায়ার। এই বোমারু সত্যসমূহ অনেকবার স্তব্ধ করেছে। তখন বুঝেছি থিওরি আর জীবন আলাদা। সিমোন বা জারমেইন, এঁরা ও তো পুরুষতন্ত্রের প্রদেশে বসবাস করেছেন। থিওরি কে জীবনে ব্যবহার করতে যাওয়ার দুঃসাহস হয়তো করে উঠতে পারেননি সর্বদা। সাঁর্ত্রই না বলেছেন, "The obscenity of the female sexton is that of everything that gapes open" (Being and Nothingness)

    শেষমেষ ধর্ষণ নিয়ে বোমা ফেললেন গ্রীয়র। ধর্ষণ নাকি তেমন গুরুতর অপরাধ নয়। এতে নাকি মেয়েদের তেমন কোনো ক্ষতি হয় না। নৃশংস অপরাধ নয় ধর্ষণ। ধর্ষক কে কিছুদিনের সশ্রম শাস্তি দিলেই যথেষ্ট। কেমন গা গোলাচ্ছে? কোন পৃথিবীতে থাকেন এখন আমাদের প্রিয় গ্রীয়র, যিনি বলেছিলেন "on every side speechless women endure endless hardship, grief and pain...It's time to get angry again" (The Whole Woman)

    নারীবাদ যখন বলল, ধর্ষনকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত না, প্রথম চমক। তারপর নিজেকে বোঝানো। একটি ছেলের ওপর অত্যাচার, যৌনাঙ্গে অত্যাচার এবং তদ্রূপ একটি মেয়ের সঙ্গে, ধর্ষণকে তাহলে এইভাবে দেখা উচিত? কিন্তু আমরাই না দেহ মনকে এক সূত্রে বাঁধি? healthy mind in healthy body? আপনার বাড়িতে আপনার বিনা অনুমতিতে তালা ভেঙে, আপনার শয়ন কক্ষে প্রবেশ করতে পারে কেউ? শাস্তি হবে না? আর আপনার দেহ? সেখানে অনধিকার প্রবেশ কোনো ব্যাপার নয়? no injury done? দেহের সঙ্গে মন তছনছ হবে না তবে? নির্ভয়া বা আসিফাদের মত হাজার হাজার মেয়েদের আর্তনাদ কানে পৌঁছায় না,এমন উচ্চতায় পৌঁছে গেলেন নাকি গ্রীয়র?

    কিংবা হয়তো তিনি এমন সংস্কৃতির ধারক যেখানে দেহ নিয়ে নিরীক্ষা জলভাত। যেখানে তিনি অনায়াসে বলতে পারেন, "If you think you are emancipated,you must consider the idea of tasting your menstrual blood - if it makes you sick, you've got a long way to go baby" (The Female Eunuch)। মিলবে না। যে সংস্কৃতিতে দেহ নিয়ে নানা নিরীক্ষা করাই মুক্তির উপায়, সেখানে ধর্ষনের সংজ্ঞা অন্য। এ দেহ মনের সুদূর পারের কথা নয়। এ দেহ এবং মন নিংড়ে ক্রমাগত সমীক্ষা, যেখানে ধর্ষন জীবনের পথে এক অভিজ্ঞতা মাত্র।

    মিলবে না। মিলবে না।

    চন্দ্রা তালপাড়ে মোহান্তি বা শোওয়াল্টার এইজন্যই বহুমাত্রিক নারীবাদের কথা বলেছেন। দেশ কাল, সংস্কৃতি নির্বিশেষে নারীবাদ নয়। অনেক অনেক ভাগ। বিবিধ মানস। বিবিধ মনন। তাকে মর্যাদা দিতেই হবে।

    গ্রীয়র যেখানেই থাকুন না কেন, যত যুক্তি থাক তাঁর কথাতে, একধাক্কাতে নারীর অবস্থান বেশ আন্দোলিত হল। কারণ তিনি গ্রীয়র। কিন্তু তিনি দি আল্টিমেট নন। আরো কথা থাকবে। তিনি বহুমাত্রিক হতে পারেননি। হয়তো সে সময়টা অন্য ছিল। আজ ইউরোপ শেষ কথা বলে না।

    আমাদের নাটকের অন্যতম বিষয় ছিল মেয়ে পাচার ও ধর্ষণের শিকার মেয়েদের সমাজে অ্যাক্সেপটেন্স। বন্ধুরা এসেছিলেন। প্রচুর আড্ডা, গান হয়েছে। ফেরার পথে ট্রেনে ফেবু স্ক্রোল করতে গিয়ে প্রিয়াঙ্কা সাহনির হাসিমুখ চোখে পড়ল। সে নিখোঁজ হবার পর থানা ডায়রি নেয়নি। বাড়ির লোক ফিরে গেছে। গণধর্ষণের পর পুড়িয়ে মারা হয়েছে তাকে। সকল দেশের সেরা আমাদের দেশে মেয়েদের স্কুটি পাংচার করে বিপাকে ফেলাকে শিভালরি বলা হয়। ধর্ষকদের ছবি দেখলাম। দুজন প্রায় কিশোর। এদের আবার "আহা ছেলে মানুষ, একটা অন্যায় করে ফেলেছে" বলে আহাউহু করার লোকের ও অভাব হবে না।

    কাঁড়ি কাঁড়ি মানুষের দেশে অশিক্ষা আর কুশিক্ষাকে বাহন করে যে অসুরকুল লালিত হচ্ছে তার কোনো প্রতিষেধক নেই। নিষ্ফল প্রতিবাদ আছে। বক্তব্য রাখা আছে। যে সমাজে একটা নির্ভয়া কেস হয়, সে সমাজে কোনো উৎসব মানায় না। আগেও বলেছিলাম। আসিফা ও আরো অগুনতি কেসের মতো প্রিয়াঙ্কা ও একটি কেস হয়ে যাবে অচিরে। এই কেসের পাস্ট থাকবে। ফিউচার থাকবে না। ঠিক যেমন হল মণীষা উকিলের কেস। এবং আরো আরো অগুন্তি। অজানা। 

    আসুন। উৎসব করি।

    দোষীদের শাস্তি?

    আহা! ওরা একে পুরুষমানুষ। তার ওপর ছেলেমানুষ। একটু  ধর্ষণ করেছে। তারপর পুড়িয়ে মেরেছে। এটুকু অধিকার তো ওদের থাকবেই।

    যশোধরা রায়চৌধুরির কবিতাটি মনে পড়ছে।

    ধর্ষক ভারতবাসী আমার ভাই।

    "লক্ষ্মীমন্ত নয়" মেয়েদের পাশে পিতৃতান্ত্রিক সিস্টেমের সুবিধাভোগী মেয়েরা যেদিন সগৌরবে দাঁড়াতে পারবে, পুত্রসন্তানের জন্ম আশায় বারবার গর্ভধারণ করার চক্রব্যূহ থেকে মেয়েরা যেদিন সদর্পে বেরিয়ে আসতে পারবে, "ওটা পুরুষের কাজ, আমার নয়?" বলা বন্ধ করে মেয়েরা যখন সব কাজে অগ্রসর হবেন, নিজেদের ফিনান্স থেকে শুরু করে ফিগার নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হবেন বডি শেমিংকে কাঁচকলা দেখিয়ে, তখন, কোনও একদিন এই সব আন্দোলন জয়যুক্ত হবে।

    আর হ্যাঁ। মেয়েদের দশভুজা ভাবতে আমার একটুও ভালো লাগে না। কারন বাস্তবে হাত দুখানা। হ্যাঁ। শখের রান্না ভালোই লাগে মাঝেসাঝে কিন্ত বাড়ি ফিরে যে ধপাস করে বসে চা, জল, খাবার চাইতে পারি, তার জন্য জীবনের কাছে কৃতজ্ঞ। আর সত্যি, পড়ানো হোক, লেখা হোক, বা ছবি তৈরি, নাটক তৈরি ... সবকিছুই ভীষণ মনোযোগ দাবী করে। রান্নাঘর সামলে কাপড় কেচে সৃজনশীল কাজ করা অতিমানবিক। সেইজন্য লজ্জিত নই। এটাও সত্যি। না। কোনোদিন দশভুজা হতে চাই নি। দুটো হাত দিয়ে ভালোবাসার জিনিসগুলো, প্রাণীগুলো, মানুষগুলো কিছুটা আগলে রাখতে পারি। সবটা আগলাতে নেই। পজেসিভনেস ভালো না। নো দশভুজা কনসেপ্ট ফর মি। ওতে নার্ভে চাপ পড়ে। গাল দিলে দাও।

    সত্যি যদি কোনও শিশু দশ কেন, চার হাত নিয়েও জন্মায়, তার কী দশা হবে ভাবি। "দেবশিশু" ছবিটা মনে পড়ে।

    যত নিয়মকানুন, আপনার জন্য।

    ব্রতকথা, আপনার জন্য।

    যত শৃঙ্খল আপনার জন্য। যাকে আপনি অলঙ্কার ভাবেন।

    বিবাহ চিহ্ন, আপনার জন্য।

    সতীত্ব, কুমারীত্ব, আপনার জন্য। তারপরেও আপনি আবার দশভুজা!

    বাদ দিন। মানুষ থাকুন। দেবীত্ব টেবিত্ব বড় ঝামেলার। কম মানুষ থেকে মানুষ হওয়ার চেষ্টাটাই হয়ে যাক।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | | | |
  • বাকিসব | ০৮ মার্চ ২০২৩ | ৮৪৯ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    রসকষ - Suvasri Roy
    আরও পড়ুন
    উংলি - Malay Roychoudhury
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • tutul shree | ০৮ মার্চ ২০২৩ ১৭:৫৯517132
  • Darun
  • অনিন্দিতা | 103.212.144.45 | ১০ মার্চ ২০২৩ ১৫:৪৩517219
  • নতুন কিছু বলো রে ভাই (বোন) নতুন কিছু বল...
  • Anuradha Kunda | ১২ মার্চ ২০২৩ ১৪:৪০517312
  • ঐ দশভুজা কনসেপ্টটা উঠে গেলেই নতুন কিছু লিখবো অনিন্দিতা। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ প্রতিক্রিয়া দিন