ছেলেমেয়েরা কঠিন পরীক্ষা দিচ্ছে। ক্যাম্পাসের পূর্ব কোণে অন্ধকারের রাজার সরকারি আবাসন ঘেরা দুর্গের মত করে। বিশাল উঁচু গেট আর বেড়া, সিকিউরিটি গার্ড সিসি টিভি ইত্যাদি। স্বাভাবিক ভাবেই পোস্টার ফেস্টুন পড়ছে, গৃহযুদ্ধের ভাষায়, 'নো পাসারান'।
সমস্যাটা কি, ছেলেমেয়েরা রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে অকারণে কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতা প্রদর্শনে আপত্তি করেছে, সরকারি হিন্দুত্ব রাজনীতির সক্রিয় চর্চায় আপত্তি করেছে। পেশার জীবনের দোরগোড়ায় দাঁড়ানো ছেলেমেয়েদের জীবনের ক্ষতি করার চেষ্টা চলছে সে অপরাধে। কারণ তারাই ক্যাম্পাসের ক্ষমতার বিন্যাসে সামাজিক অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বলতম। চাপ এবং অনৈক্য সৃষ্টির প্রচেষ্টায় বিভিন্ন গতানুগতিক প্রক্রিয়া বন্ধ করা হয়েছে আন্দোলনের অজুহাতে। ক্যাম্পাসের পূর্বতম কোণে উচ্চতম প্রশাসক যদি আটকেও থাকেন, বাকি পরিচালনা ব্যবস্থা, বিশেষত বিভাগীয় কাজ কর্ম কিছু চালাতে কোনো অসুবিধা হবার কথা না। উপাচার্য হাতে করে ক্লেরিকাল কাজ করে উল্টে দিচ্ছেন এরকম খবর নেই। এসকালেশন চাওয়া হচ্ছে, এবং সেটা কর্তৃপক্ষের দিক থেকে। কাজ চালাতে অসুবিধা হবার কোনো ভৌগোলিক যুক্তি অন্তত নাই। ধাষ্টামোর সীমাহীন চর্চা ছাড়া কিছুই না।
অধ্যাপক, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ছাত্রদের আশাকরি এটুকু ধারণা পরিষ্কার থাকবে যে এটা চালিয়াতি হচ্ছে এবং আর কিছুই হচ্ছে না। তিনজন ছেলেমেয়েদের আর তাদের বন্ধুদের সাহসকে সেলাম। সৃজন, ঐশী, বাদশাদের ধন্যবাদ, সোমনাথ, রূপা, ফাল্গুনীর পাশে থাকার জন্য, বোলপুর শান্তিনিকেতনের দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মীদের ধন্যবাদ। তাঁদের এমনকি স্থানীয় মিডিয়াও স্বীকৃতি দিতে শেখে নি, তাঁরা অবিশ্যি বিব্রত নন, ছেলেমেয়েদের সমস্যার সমাধান ছাড়া আর কোনো বিষয়ে মন দেবার সময় নেই তাঁদের।
সমস্ত ছাত্র, বুদ্ধিজীবীদের অধ্যাপকদের সংগঠন, রাজনৈতিক দল যাঁরা ছাত্রদের, মাষ্টারমশাইদের সমর্থনে বিবৃতি দিয়েছেন, এগিয়ে এসে আমাদের ছেলেমেয়েদের পাশে থেকেছেন তাঁদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।