'জীবনপণ' সুপার স্পেশালিটি বেসরকারি হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট চেম্বারে মিটিং চলছে খুব গোপনে। সুপারের টেবিলের সামনে মোট তিনজন বসে। তিনজনেই সিনিয়র ডাক্তার। এই হাসপাতাল শুধু নয় তাঁরা প্রত্যেকেই শহরের আরো বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে যুক্ত।
"আজকের ভর্তি নিয়ে টোটাল ক'টা পেশেন্ট ?" খুব চাপাস্বরে সুপার জিজ্ঞেস করলেন।
"শুধু কি কভিড পেশেন্ট বলব ?" ডা: সুবীর সরকার বললেন।
"তা নয়ত কি, অন্য পেশেন্ট নিয়ে কথা বলতে বসেছি ?" সুপারের গলায় ঈষৎ ঝাঁজ।
"আজকের নিয়ে টোটাল ছত্রিশ।"
"ফিফটি আপ কজন ? আর কদিনের পুরনো ?"
"স্যার, প্রায় কুড়ি জন ফিফটি আপ। আঠাশ জন কো-মর্বিডিটি প্লাস। তারমধ্যে বাইশ জন পুরোনো। আইসিইউতে রয়েছে আঠেরো। তার মধ্যে চারজন বিলো ফর্টি।"
"ওই বাইশ জনের মধ্যে অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল আশির নিচে ক'জনের ?" এবার ডা: শ্যামানন্দ রাস্তোগীর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন।
"স্যার, সেটা একটু দেখে বলতে হবে ? তবে মোটামুটি চৌদ্দ পনেরো জনের মত, গতকাল দেখেছিলাম। দুজন বিলো ফর্টি আছেন।"
সুপার মনে মনে কি হিসেব কষলেন। তারপর কিছুক্ষণ চিন্তা করার পর নির্দেশ দেওয়ার ভঙ্গিমায় বললেন,
"ওল্ড পেশেন্টদের মধ্যে একটা বিলো ফর্টিকে নিয়ে টোটাল ছয়জনের বাড়ির লোককে বলে দিন। ওদের অবস্থা খারাপ। টোটাল ছ'টা বেড আজ খালি করবেন। কালকেরটা আবার কাল ভাবব।"
বলে তিনি চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়লেন। সকলের মুখ নিচু। অদৃশ্য দড়িতে হাত পা বাঁধা। কিচ্ছুটি করার নেই। নির্দেশ উপরতলার, তাই না মেনে উপায় নেই।
_________________©রজত দাস