শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের ভোটে জয়ী গত বারের শাসক দল। তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটে নয়, জিতেছে সাধারণ মানুষের ভোটে দলটি। একটা দল আজ বাংলা থেকে লুপ্তপ্রায় হয়ে গেছে। তাঁরা বাংলায় শিল্প গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের আমরা জমির দালাল হিসেবে বিতাড়িত করেছি।

তবে দশ বছরে চাকরির বাজার সংকটে। বাঙালি প্রবাসী হয়ছে। আর ভাবে বহিরাগতদের জন্য তাঁরা কাজ হারিয়েছে। আমার মত প্রচুর বামমনস্ক মানুষসহ, তারা রাজনীতিতে তেমন আগ্রহী নন, এমন মানুষরাও এক ফ‍্যাসিস্ট শক্তিকে পরাভূত করতে, আজ ঘাসফুলে ভোট দিয়েছে। 

পক্ষে বিপক্ষে আমার আপনার মতামত থাকতেই পারে। সংকট কিন্তু সবার কাছেই এক। তবুও কিছুদিন ধরে দেখছি সমগ্র টাইমলাইন জুড়ে চাকরি নিয়ে চূড়ান্ত খিল্লি চলছে! চাকরির কথা বললে ট্রোল তো হতেই হবে এটা ভাবতেই অবাক লাগছে।

দুদিন আগে যখন ছাত্রসমাজ নবান্ন অভিযান করল, তখন দেখি হঠাৎ করে সাবাই চেঁচিয়ে বলে উঠলো "চাকরি চাই!", আবার ব্রিগেডের সভা হলো যখন তখন দেখি দুম করে সবাই "লাল" হয়ে গেল! টুম্পাসোনাও ব্রিগেড গেলো, ভোট দেবে বলল লালকে। কিন্তু হঠাৎ করে শিরদাঁড়া ভেঙে দিল কারা?  সবাই সবুজ হয়ে গেল। 

মানুষের রায় সর্বোপরি , সেই ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু নিজের আদর্শটা এক জায়গায় তো ঠিক রাখাটা কি খুবই কঠিন। সোস্যাল মিডিয়ার পাড়ায় শুধুমাত্র কয়েকটি হাহা বা লাভ react পাওয়ার লোভে, ট্রেন্ডে "cool" হওয়ার লোভে কাল যা শেয়ার করলেন আজ প্রয়োজনে তার বিপরীত শেয়ার করবেন কি?

কোন রাজনৈতিক দল কি কথা বলছে সেটাই কি বড়ো কথা? চাকরির দাবি তে আসলে অপ্রাসঙ্গিক কি?

যে ২০১৩ সালে বিএড করে বসে আছে, তাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করে দেখবেন ঘরে বসে টিভি দেখার অলসতা! ট্রোল করা তো সোজা ব্যাপার, করাই যায়! আমার এই পোস্টে হয়তো হাজার খিল্লিময় কমেন্ট আসবে আমি জানি। কিন্তু একটা কথাই বলবো হকের চাকরি চাওয়ায় কোনো অন্যায় নেই, সে তুমি যে দলেরই হও। ভালোটা সবার হবে। অনেকের অভিমত রাজ্যের চাকরিই কেন করতে হবে! সেন্ট্রাল-এর চাকরি করো, দম নেই? রাজ্যের চাকরি করতে দম লাগেনা বুঝি? আর আমি নিজের রাজ্যে থাকে নিজের রাজ্যের মানুষের তরে কাজ করতে চাইলে, গ্রামের স্কুলে পড়াতে চাইলে সেটা কি চূড়ান্ত অন্যায় আবদার?

ব্যক্তিগত ভাবে আমি যদি আমার কথা বলি, সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত ছিলাম। ছোট্ট ছোট্ট ছিট ফান্ডের টাকাতে তখন চলতো মিডিয়া হাউজগুলো। মানুষের টাকা লুট হয়েছে বলে বন্ধ হলো ২০০বেশি ব্যবসায়ী সংগঠন। আচ্ছা লুটের টাকা গুলো কি ফিরে পেয়েছেন সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন কাজে যুক্ত থাকা মানুষগুলো শুধুমাত্র কাজ হারালো।

ব্যাপারটা হার-জিতের না। tmc জিতলো না cpm জিতলো না bjp জিতলো তাতে কিছু এসে যাবে না। কেউ কিছুই পাইয়ে দেবে না। শুধু এটুকুই আর্জি, এট লিস্ট হকের জিনিসটা তো পাওয়া উচিত! 

লড়াইটা দলের জন্য না করে হকের জন্য করুন। যে লড়াইয়ে জিতলেও আপনিই জিতবেন। হারলেও কিন্তু আপনিই হারবেন।

বলা এইটুকুই, হকের দাবিটা জাতি-বর্ণ-ধর্ম-দল নির্বিশেষে হওয়া উচিৎ। তবে আমরা এখন ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা, লাফালাফি করতেই শুধু ভালোবাসি বেশি।