এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • নেতাজী ফিরেছিলেন...

    Rajat Das লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৩ জানুয়ারি ২০২১ | ৫৯০ বার পঠিত
  • মি. ক্লিমেন্ট অ্যাটলি
    ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী
    ১০, ডাউনিং স্ট্রিট, লন্ডন

    প্রিয় মি. অ্যাটলি,
    অত্যন্ত বিশ্বস্তসূত্রে আমি জানতে পেরেছি যে আপনাদের যুদ্ধাপরাধী সুভাষচন্দ্র বসুকে স্তালিন রাশিয়াতে ঢুকতে দিয়েছেন। এটি রাশিয়ানদের পক্ষে পরিষ্কার বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। যেহেতু রাশিয়া, বৃটিশ ও আমেরিকার সাথে মিত্রপক্ষেই ছিল সেহেতু তাদের এটা করা উচিত হয়নি।
    অনুগ্রহ করে এই ব্যাপারটি মনে রাখবেন এবং এই ব্যাপারে যা প্রয়োজনীয় ও সঠিক বলে মনে করবেন তাই করবেন।
    --আপনার অনুগত
    জওহরলাল নেহেরু।

    উপরিউক্ত চিঠিটি (মূল ইংরেজি চিঠির বঙ্গানুবাদ) ১৯৪৫ সালের ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট অ্যাটলি কে নেহেরু লিখেছিলেন। নেহেরু মুখে বলে দিয়েছিলেন আর তার স্টেনোগ্রাফার শ্যামলাল জৈন চার কপি টাইপ করেছিলেন। নেতাজী তদন্তে যুক্ত খোসলা কমিশনের সামনে শ্যামলাল জৈন, এই চিঠির সত্যতা সাক্ষ্যে স্বীকার করেছিলেন। তাইহোকুতে নেতাজীর বিমান দুর্ঘটনার ঘোষিত তারিখ হল ১৮ আগস্ট ১৯৪৫। অপরাধ তত্ত্বে বলা হয়ে থাকে অপরাধী নিজের কৃতকর্মের নাকি প্রমাণ রেখে যায়। শত চেষ্টাতেও সেই প্রমাণ চিহ্ন একেবারে মুছে ফেলা অসম্ভব। আক্ষরিক অর্থেই বৃটিশের অনুগত নেহেরুর এই বিস্ফোরক চিঠির হদিশ জাতীয় মহাফেজ খানায় সম্প্রতি পাওয়া গেছে। বিগত সত্তর বছরে নেতাজী সংক্রান্ত নানান গুরুত্বপূর্ণ নথি হারিয়ে দেওয়া, নষ্ট করে দেওয়া, এমনকি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল পুড়িয়ে পর্যন্ত্য দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার নথিপত্র দলিল দস্তাবেজ ধ্বংস করে দেওয়ার পরেও ভবিষ্যতের জন্য এখনও পরে রয়েছে এমন কিছু নথিসূত্র যেগুলো একসূত্রে গাঁথা হলে এটাই প্রমাণ হয় যে সুভাষ বোস বিমান দুর্ঘটনায় গত হন নি। তিনি বেঁচে ছিলেন। শাহানওয়াজ কমিশনের অন্যতম সদস্য সুভাষচন্দ্র বসুর সেজদাদা সুরেশচন্দ্র বসু নেতাজীর বিমান দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু ও চিতাভস্ম তত্ব নস্যাত করে দিয়েছিলেন। উল্টে তিনি সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, সুভাষ যুদ্ধাপরাধী কিনা? সে প্রশ্নের জবাব তখন সরকার সযত্নে এড়িয়ে গিয়ে কোন সদুত্তর দেয় নি। ঘুরিয়ে বলেছিল যে, সরকারের কাছে বোসের মৃত্যুর ব্যাপারে কোনো প্রামাণ্য তথ্য সরকারের কাছে নেই। কমিশনে ব্রাত্য সুরেশ বসু পরে নিজের মতের সপক্ষে একটি বই লিখে নিজ খরচেই ছাপিয়ে বের করেছিলেন।

    প্রধানমন্ত্রীর গদি প্রার্থী ক্ষমতালিপ্সু জওহরলাল নেহেরু, নেতাজীর বৈপ্লবিক নিখাদ দেশপ্রেম ও তাঁর ঋজু ব্যক্তিত্বকে কোনমতেই সহ্য করতে পারেন নি। ১৯৪৬-১৯৪৮ সাল পর্যন্ত্য চলা রাষ্ট্রসংঘের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়ায়ে নিযুক্ত বিচারক ডঃ রাধাবিনোদ পাল, যিনি আজাদ হিন্দের ও নেতাজীর পক্ষে খোদ টোকিওতে বসেই সওয়াল করেছিলেন। তাঁর যুক্তিকে তদ্কালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মান্যতা দেয় নি। নানানভাবে নেতাজীকে বিশ্বযুদ্ধোত্তর যুদ্ধাপরাধী সাজানোর ঘৃণ্য চক্রান্ত চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ভারতীয় জনগণের মন থেকে যাতে নেতাজী সম্পর্কে ভাবাবেগ কালযাপনের সাথে সাথে মুছে যায় তারজন্যও অবিরত চেষ্টা চালিয়ে গেছে। নেহেরু নিজে মহিলা সম্পর্কীয় বিষয়ে চারিত্রিক গঠনের কথা খুব ভাল করে অবহিত ছিলেন। লেডি মাউন্টব্যাটেন সমেত একাধিক নারীসঙ্গে লিপ্ত ছিলেন। তাই পরবর্তীকালে তার সেসব ইতিহাস জনসমক্ষে এলে, নেতাজীর চরিত্র একেবারে নিষ্কলুষ ছিলনা সেই প্রমাণ রাখার জন্য এমিলি শেন্কলের সঙ্গে বিয়ের গল্প বাজারে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। এহেন জনৈক এমিলি ও অ্যানিটাকে নেহেরুই আমদানি করেছিলেন, তার সপক্ষে প্রমাণও মিলেছে। বিমান দুর্ঘটনার চার বছর পর নেতাজীর বিয়ের ও পুত্রসন্তানের খবর ছড়ানো হয়েছিল। তারও দুবছর পর পুত্রের পরিবর্তে কন্যা সন্তান থাকার খবর মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছিল। নেহেরুই উক্ত মহিলাদ্বয়কে মাসোহারার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। এমিলি শেন্কেল ও অ্যানিটা ব্রিজিট কে কি করে আইনীভাবে 'বসু' পদবীতে রূপান্তরিত করা যায় সে নিয়ে বাংলার তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধান রায়ের সাথে নেহেরুর চিঠিতে আলোচনা হওয়ার প্রমাণও মোদী সরকারের প্রকাশিত ৩০৩ টি ফাইলে মিলেছে। অ্যানিটা ব্রিজিটের জন্ম সংশাপত্র জোগাড় করতে বসু পরিবারের এক সদস্য হন্যে হয়ে তল্লাশি চালিয়ে ছিলেন। পাওয়া গিয়েছিল তার জন্মের সংশাপত্র, তাতে জনৈক ক্যারোলিনা শেণ্কেল নামে মায়ের খোঁজ রয়েছে, পিতার কোনো নাম ছিল না।

    এরসাথে জাপান থেকে নেতাজীর চিতাভস্ম ভারতে নিয়ে এসে নেতাজীর মৃত্যুকে কিভাবে পার্মানেন্ট সীলমোহর দেওয়া যায় তার জল্পনার সূত্রও ওই ফাইলে মজুদ। নেতাজীর বিবাহ পর্বকে নেহেরু আরো একটি কারণের জন্য সামনে এনেছিলেন। যদি নেতাজী কোনোদিন ফিরে আসেনও তখন সেই আসল নেতাজীকে নকল প্রমাণ করার জন্য তাঁর সবচেয়ে নিকটজন অর্থাৎ স্ত্রী কন্যার মান্যতাই আদালত সর্বাগ্রে স্বীকৃতি দেবে। সুতরাং আসল নেতাজী সশরীরে ফিরে এসেও দেশবাসীর কাছে স্বীকৃত হবে না উল্টে বিচার ব্যবস্থার রায়ে আসল নেতাজীর স্থান হবে কারাগারের অন্ধ কুঠুরি।

    আর দুটি অকাট্য যুক্তি ও প্রমাণ দিলে বোধ করি আরো সহজবোধ্য হবে যে নেহেরু আর তার পরিবার জানতেন যে নেতাজী জীবিত। প্রথম, জাপানের রেনকোজী মন্দিরে রাখা নেতাজীর চিতাভস্ম, সরকারিভাবে দেখতে গিয়ে ১৯৫৭ সালে প্রধানমন্ত্রী নেহেরু হঠাৎ ক্ষণিকের জন্য গৌতম বুদ্ধের প্রবল ভক্ত হয়ে পড়েন। যারফলে যে উদ্দেশ্যে সেই মন্দিরে তার পদার্পণ ঘটেছিল সেটাই ভুলে গিয়ে, ভিজিটর খাতায় বুদ্ধের শান্তির বাণী নিয়ে দু চার কথা লিখে নিচে নিজের সাক্ষর করে দেন। একটি শব্দও নেতাজীর আত্মার শান্তি কামনায় ভুলেও খরচ করেননি। তার উত্তরসূরি কন্যা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরাও একইভাবে বুদ্ধের শান্তির বাণীর কথাই লিখে এসেছিলেন। আসলে ওদের হাত কেঁপে গিয়েছিল জীবিত ব্যক্তির আত্মার শান্তি কামনায়... সেই রেনকোজী মন্দির ১৯৮৯ সালে আগুন লেগে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল। পুনরায় সেখানে কাঠ নির্মিত ভস্মাধার স্থাপন করে রাখা আছে, যাতে কিছু হাড়গোড় সমন্বিত ছাইভস্ম বর্তমান। যেগুলো আদৌ মানুষের কিনা সেটাই সন্দেহ ! সেই জাপানি মন্দিরেও এই সেদিন পর্যন্ত্য ভারত থেকে টাকা যেত। দ্বিতীয়, রাষ্ট্রসংঘের তরফে ১৯৭১ সালের ১২ এপ্রিল একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। যেটি হল সারাবিশ্বের যুদ্ধাপরাধীরা ২৫ কিংবা ৩০ বছর বাদেও ধরা পড়লে তাঁদের আন্তর্জাতিক বিধি অনুযায়ী বিচার হবে। এটি ওই বছরে ১০ সেপ্টেম্বর গনমাধ্যম সামনে আনে আর চৌদ্দটি দেশ উক্ত বিধির আওতাভুক্ত ঘোষিত হয়। বুলগেরিয়া, গিনি, পোল্যান্ড, আলবেনিয়া, বেলারুশের মত আন্তর্জাতিক যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোর সাথে ভারতের নামটি তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী যুক্ত করে দিয়েছিলেন। প্রশ্ন সেখানেই। তিনি কিসের জন্য ভারতের নাম ওই তালিকায় যুক্ত করে দিয়েছিলেন। কাকে আটকাতে ? ভারত তো কোনওদিনই আন্তর্জাতিক যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের তালিকায় পড়ে না। ১৯৭১ সালেও নেহেরু কন্যা কার ভয়ে ভারতবর্ষকে উক্ত তালিকাভুক্ত করে দিয়েছিলেন ? যুদ্ধাপরাধীর তকমা সেঁটে একমাত্র নেতাজীকেই প্রকাশ্যে আসার সবরকম পথ বন্ধ করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলেন। বৃটেনে 'বোস পেপারস' নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আইএনএর সিংহভাগ ফাইল নষ্ট করে দেয়া হয়েছে অথবা অন্ধকার কুঠুরিতে বন্দী। নেতাজীকে মৃত প্রমাণ করতে নেহেরু সরকারিভাবে একশো শতাংশ সফলই বলা যায়। নেতাজীকে দেশবাসীর মন থেকে ভুলিয়ে দিতে নেহেরু নানান দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। যার অন্তর্জাল বিশ্বব্যপী ছড়িয়ে গেছে। নেতাজী তাই আজ আর মানুষের মনে তেমনভাবে স্পর্শকাতর বিষয় নয়। নতুন প্রজন্মের কাছে নেতাজী বড় কোন মনীষী নয়, কারণ তাদের পাঠ্যপুস্তকে বিকৃত ইতিহাসে নেতাজীর অবদান তত বৃহৎ নয়। অন্য আর পাঁচটি বিপ্লবীর মতই তিনি একজন দেশভক্ত বিপ্লবী ছাড়া আর বিশেষ কেউ নন। তাই তাঁর জন্মদিনে কোনো কেন্দ্রীয় সরকারই জাতীয় ছুটি ঘোষণা করবে না। কারণ কংগ্রেস তো সঙ্গত কারণেই সেই ছুটি হতে দেবে না। আর ভারতের অন্য বড় ছোট দলগুলোর কাছেও নেতাজী আজকে বিশেষকোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব নেই।

    ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকার সম্পাদক মি. কামা মালিকের পাশাপাশি রামমূর্তি, আইয়ার.. এরা সব আজাদ হিন্দের কোটি কোটি টাকার সোনাদানা আর নগদ অর্থ লুটে রাতারাতি ধনীতে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। নেতাজীর সঞ্চিত ধনরাশি যখন জাপানে লুট হচ্ছে তখন বারংবার নেহেরু সরকারকে জানান দেয়া সত্বেও কোনরূপ ব্যবস্থা সরকার গ্রহণ করেনি। নেহেরু এন্ড কোম্পানীর এহেন কুকীর্তির কথা জেনে ভারতবাসী হিসেবে আমাদের লজ্জায় মাথা হেঁট করা ছাড়া আর কিই বা করার আছে ! নেতাজীকে গায়েব করতে নেহেরু দোসর হিসেবে বল্লবভাই প্যাটেলকে পাশে পেয়ে ছিলেন। যদিও নেতাজীর ধনসম্পদ লুটে প্যাটেলের যোগসূত্রের প্রমাণ মেলেনি। যেনতেন প্রকারেন নেতাজীর জীবিত থাকার প্রমাণ লোপাট আর তাঁকে মৃত হিসেবেই বিশ্ববাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য করা নেহেরুর জীবনের যেন একমাত্র লক্ষ্য ছিল। এমনকি ইন্টারনেট, উইকিপিডিয়ার মত আধুনিক সোশাল মাধ্যমগুলোতেও নেতাজীর মৃত্যুকে প্রতিষ্ঠা করার জঘন্য চক্রান্ত ছড়িয়ে দেওয়া আছে। আর এই ষড়যন্ত্রে নেহেরু, বসু পরিবারেরই একাংশকে আর কিছু সংবাদমাধ্যমের তাবড় সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের কে পোষ মানিয়ে নিয়েছিলেন। তাসত্বেও তখনকার বরুণ সেনগুপ্ত এখনকার অনুজ ধর এর মত সাংবাদিক, আর নারায়ণ সান্যালের মত লেখককে কেনা যায়নি। তারজন্য তাঁদের মাশুলও কম গুনতে হয়নি। এদেশে আসলে লেনিন, মার্কস, গান্ধী কিংবা শ্যামাপ্রসাদ কারোর দলেরই সদিচ্ছা কোনওদিনই নেতাজী রহস্য নিয়ে ছিল না। যারফলে আমাদের মত নেতাজীভক্তদের সারাজীবন কেঁদে বুক ভাসালেও অফিসিয়ালি সরকারিভাবে নেতাজী রহস্য বিশ্বের দরবারে কোনোদিন ফাঁস হবে না। ২০০৫ সালে প্রাক্তন বিচারপতি মনোজ মুখার্জি গঠিত কমিশনের নেতাজীর বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুতত্ব খারিজ সেকারণেই সরকারের কাছে মান্যতা পায়নি। শত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে তিনি কমিশনের রিপোর্টে লিখেছিলেন বয়েসজনিত কারণেই নেতাজীর বেঁচে থাকার আর কোন সম্ভবনা নেই । সেই মুখার্জীবাবুই সশরীরে অন ক্যামেরা গুমনামীবাবা ওরফে ভগবানজীকে নেতাজী রূপে ১০০ শতাংশ স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। সেই ভগবানজী বা গুমনামী বাবা একদা অতি নিকট পার্ষদদের কাছে কথা প্রসঙ্গে বলে ফেলেছিলেন, "আই অ্যাম আ সন্ন্যাসী ফোর্সড বাই ল" অর্থাৎ আইন আমাকে এমন সন্ন্যাসী হতে বাধ্য করেছে।

    গুমনামী বাবাকে ১৯৮৫ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর থেকে আর খুঁজে পাওয়া যায় নি। উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে রামধাম নামে যে বাড়িটিতে তিনি থাকতেন, সেখানে বাড়ির সামনে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত সমাধিস্থলটি ২৩শে জানুয়ারি ফুলমালায় সুসজ্জিত করে জন্মদিন পালন করা হয়। সমাধিস্থলটির ওপরে সেই মহান পুরুষের জন্মদিন সেই ২৩শে জানুয়ারি ১৮৯৭ উল্লিখিত রয়েছে, মৃত্যুদিন - ??? নেই । সেই ভগবানজীর ফেলে যাওয়া প্রভূত সম্পত্তির মধ্যে পাওয়া গেছে, যুদ্ধে ব্যবহার করার বিদেশী দূরবীন সহ বিদেশী হাতঘড়ি, গোলাকৃতি চশমা, ধূমপান করার পাইপ, একাধিক বইপত্র, নেতাজীর ব্যবহৃত বহু বস্তুর সাথে তাঁর হাতের লেখা পত্রাবলী আর নেতাজীর পারিবারিক কিছু ছবি যা একান্তই নেতাজীর নিজস্ব হওয়াই বাঞ্ছনীয়। সবচেয়ে বড় যেটি প্রমাণ তাহল, ভগবানজীর হাতের লেখার সাথে নেতাজীর হাতের লেখা হুবহু মিল। ভগবানজী সেই মিল বুঝতে পেরে যাওয়ার পরের দিকে তিনি সর্বত্র বড় হরফে লেখা শুরু করে দিয়েছিলেন। সেইসব জিনিসপত্র আদালতের তত্বাবধানে রামকথা সংগ্রহালয়ে সযত্নে রাখা রয়েছে। বিষ্ণু সহায় এই নিয়ে একটি কমিশনও গঠন করেছেন।

    স্বাধীন ভারত যাঁর দেশ নয়... ভাবুন যাঁর দেশ থাকতে দেশ নেই, আত্মীয় পরিজন থাকতেও নেই , নাগরিকত্ব নেই, পরিচয় নেই... তিনি নিজেকে জীবিত ভূত রূপেই আখ্যা দিয়েছিলেন। তিনি সন্ন্যাসী ছাড়া আর কিভাবেই বা বেঁচে থাকতেন ? ছদ্মবেশে দিনের পর দিন নিজের প্রকৃত পরিচয় লুকিয়ে, নিজের অস্তিত্ব লুকিয়ে এক মহামানবের শেষ পরিণতি কি কষ্টের !! কি দুঃসহ আর অসহায় জীবনযাপন তা সহজেই অনুমেয়। আজকের রাজনৈতিক নেতারা বা বুদ্ধিজীবীরা সেই মনীষীর কথা ততটুকুই উচ্চারণ করেন যতটুকুতে লক্ষণরেখা টানা আছে। পরিশেষে এইটুকুই সেই মহাপ্রাণের উদ্দেশ্যে বলা যায়, দুঃখের দুঃসহ ভার বইতে পারো বলেই ঈশ্বর এত বোঝা তোমার কাঁধেই সঁপে ছিলেন।

    "হে চির বীর, হে মুক্তি পথের অগ্রদূত। পরাধীন ভারতের রাজদ্রোহী।

    তোমায় শতকোটি প্রণাম...॥"
    ________________________
    *তথ্যসূত্র - নারায়ণ সান্যাল, অনুজ ধর, তানভী ধূলিয়া, সব্যসাচী দাশগুপ্ত, ডঃ জয়ন্ত চৌধুরী প্রমুখ নেতাজী গবেষকদের লেখা ও নেতাজী রহস্য বিষয়ক একাধিক পত্রপত্রিকা ॥
    _______________________
    All copyrights reserved © Rajat Das II 23.01.21
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন