এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • কানা কাফের

    aftab hossain লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৪ জানুয়ারি ২০২১ | ৬৭৬ বার পঠিত | রেটিং ১ (১ জন)
  • তখন মনে হয় সাত কি আট।
    লাভ জিহাদকে ঘোল খাওয়ানো চাচা বলল তুই সালা কাফের।
    তখন থেকেই বড্ড কাফের ভক্ত আমি।

    নীল সাদা প্রিয় ছিল তখন।
    পলিগ্যামীদের রঙ নয়।
    ভালবাসার রঙ,
    যে রঙে কোন পেনাল্টি নেই। হাতে লাগলেও।
    সেই রঙেই জেদেই আব্বা কিনলো ইডিয়ট বক্স।
    মাতব্বর চাচা নাখুস। চাচার খুব জ্ঞান ধর্মে। রোজ টনসিল ফুলিয়ে ছাদের ওপরে উঠে উপরবালাকে ডাকে।
    ছাদে উঠলে জান্নাতের কাছে যান নাকি পাড়ার ওপরে বুঝিনি।
    শুনতাম তারস্বরের কীর্তনের মুসলমান ভার্সন।
    কোন সুরায় তখনও নাকি সলমন খান এর কথা নেই।
    তাই কাফের হতেই হল।
    ইডিয়ট বক্স এর আরবি নাম কাফের বক্স কিনা কে জানে।
    চাচা বলতো বোসেদের ঘরের লোক বাঙাল, মানে জন্তু। ওদের কথা শোনা মানে ইবলিসের সাচ্চা বাচ্চা। ধর্মে মানা।
    আমি আবার ভীতু। তাই শুনতাম তাই বুঝতাম। ইবলিশের বাচ্চা মার্ক্স লোকটার দালাল বোসেরা। শুয়োর খায়।
    চাচা আমার বড় ধর্ম। উনি কি আর ভুল বলবেন। শালা বোস টাই কাফের।
    তখন থেকেই বড্ড কাফের ভক্ত আমি।

    যেদিন চাচার আবার চাচাত ভাইয়ের ছেলে বামদিকের হল। তখন শুনলাম ধর্মে নাকি বাম নতুন ঢুকেছে।
    এমেন্টমেন্ট।
    পশ্চিম দিকের মত নাকি বাম দিকেও পবিত্র।
    বোস দের ঘরের জ্যোতি বেড়েছে।
    চাচার ভাই তাই বলে।
    খুদা কসম আমি ভীতু। তাই বুঝলাম।
    হয়ত তাই, না হলে চাচার ঘরে কি করে কাফের দের বক্স ঢুকে। কি করেই বা মাগরিবের নামাজের পর সনু নিগম বাজে। কি করে চাচার চাচার চাচার সব ভাই দাদা বউ গুলো কাজ কম্ম পায় পঞ্চায়েত অফিসে।
    আমি আবার বেকার। বললাম চাচা ভাইরে বলো কাম কাজ দিক।
    বললো বোকা তুই না কাফের।
    কাফের এর বাম দিকে মানা। ধর্মে লেখা।
    চাচার মাথায় ফেজ টুপি। পি এফের টাকার সুদে বিলেত ফেরত ধর্মের ডিগ্রি। সব্বাই মানলো কাফেরদের কাজ কামে মানা। বোসেদের কাফের রাও মানলো।
    চাচা ঠিকই বলে।
    তখন ও বড্ড কাফের ভক্ত আমি।

    বোসেদের লোকের বদলে ভট্টাচার্জি এল।
    চাচাদের তখন বিহারী খিস্তির ব্যবসা সঙ্গে ধর্মের।
    মুসলমান দের মসিহা তখন। বলে ভারত মাতা বলা হারাম। শুনলাম। দাপট ছিল। দাপটে তখন
    বৃহস্পতিবার ও জুম্মাবার।
    পঁচা চামড়ায় গন্ধ মাখিয়ে পুরোনো লাশের নতুন করে পোস্টমর্টেম।
    ঘরের বউ মেয়েরা কলেজে যায় বোরখা পরে। মোবাইলে ওরনি চুনরিয়া রিংটোন।
    বোরখার নিচে জিন্স।
    চাচা আবার নিচু জাতের সার্টিফিকেটের স্ট্যাম মারার সাইন দেয়। সাইন প্রতি দুশো।
    বললো নেকীর কাজ। সাহায্য করি।
    জন্নত টার্গেট।
    বললাম পেট খালি। কাম এর কিছুর জন্য নিচু জাত ও হতে রাজি।
    শুনলাম চাচার চাচার ভাইয়ের কাছে। ভট্টাচার্জি লোকটা পাজি। মুসলমানদের চাকর বানাচ্ছে। শালা বামুনের পৈতে র প্যাঁচ খুব। টাইট দিব ই দিব। বললাম ঘর গুষ্টি যে তোমাদের স্যালারি একাউন্ট। বললো বললাম না শালা তুই কাফের।
    তাই কানা। তোর হিদু বন্ধুগুলো তো গুছালো। তুই?
    তোর নিজের ওপর মমতা নাই।
    মমতা আমার?
    ভেবে দেখিনি। জন্নত এর নিচে তখন মহা বিশৃঙ্খলায় পরলাম।
    চাচা বললো আমি সেক্রেটারি হব ই হব।
    কাজ হবে। তোর জাত টাও ছোট হবে এক মন্ত্রে।
    বললাম থাক। আমি ভীতু।
    দাঁত খিঁচিয়ে বললো বললাম না তুই ইবলিশের বাচ্চা শালা কাফের।
    ভট্টাচার্জি এরও মমতা হল বোধহয়।
    তখনো আমি কাফের।

    চাচার চাচাতো ভাইরা শখ করে দাড়ি বাড়িয়ে গোঁফ কমালো। পুরা উত্তর প্রদেশ স্টাইল। সঙ্গে বললো শালা যোগী।
    চাচাদের ঘরের সবাই ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যাল এখন।
    এবাংলায় বসে বাংলাদেশের ওয়াজ শোনে রোজ।
    তসলিমাকে চুতমারানী মাগী বলে। মিয়া খলিফা আবার মুসলমান। দোষ কম।
    উত্তর প্রদেশ এর লোক ডেকে এনে শীতের রাত বিরেতে জ্ঞান এর কথা শোনায় সব্বাইকে। হিন্দিতে।
    বলে বাংলাকে ইউ পি হতে দেব না না।
    মিটিংএ ফিরিস্তি দেয় পুরা বাংলায় কত হাজার কবর দিয়েছে।
    কত কত রাজমিস্ত্রী কে ঈমান শিখিয়েছে দাড়ি বাড়ানোর ভাতার ফরমে।
    কাফের আমি। হিন্দি বুঝি না।
    বললাম আবার চাচা কাম কাজ এবার দাও।
    ৫২ কিলো মোটে। কপালে বিদ্যা। পেট খালি। ভিক্ষা হারাম।
    বললো শালা ইবলিশ স্কুলে স্বরস্বতী র বীজ না খেলে এখন ফল পেতিস।
    এত কিছু হচ্ছে দুয়ারে দুয়ারে।
    তুই সালা কানা কাফের।
    ভাগ ভটচাজ কে বলগে যা।

    এখনো আমি কাফের।
    আল্লাহ জানেন।

    আজ রাতে চাচাকে দেখলাম।
    দাঁড়িতে হাত বুলিয়ে চিন্তায়।
    কি জানি কিসের।
    দেখতে পেয়ে বললো শোন দেশ আমার মা
    "ভারত মাতা কি জয়" .
    এবার তো নিজের টা বুঝবি নাকি?

    বললাম চাচা আমি ভীতু। জন গন মন জানি।

    বললো "সালা কাফের"
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন