গেরামের স্কুল, রুম গুলোয় একটা কি দুটো করে ফ্যান । তার আবার একটা ঝুলে মাস্টার দিদিমণির মাথার ওপরে। ওনাদের মাথার দাম বেশি বলে। বাকি একটা ফ্যানেই জনা চল্লিশ গাদাগাদি। মাঝ দুপুরে কালো কালো মুখগুলো তাপে ফ্যাকাশে হয় আরো। ক্ষিদেতেও। গরম ভাত তিনটে দানা পেটে পড়তেই বাইরের ছেচল্লিশ আর গরম ভাতের আশি ডিগ্রি মিলে হর হর করে বমি করে কালো পেটগুলো। স্যার দিদিমণির তিনটে গাড়ি। সবগুলোই এয়ার কন্ডিশন ... ...
শুরুটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে দিয়েই করি। উনি একদা মন্তব্য করেছিলেন - " বাঙলা দেশে জন্মিয়াছে বলিয়াই যে সে বাঙালি তা নয়, বরং সে বাঙলা ভাষা ও সংস্কৃতির মধ্য দিয়া চিত্তলোকে যাতায়াত করিতেছে বলিয়াই, তাহারা বাঙালী " ... বলার উদ্দেশ্য এই যে বাংলা ভাষা বাঙালি অনেকদিন আগেই উচ্ছন্নে পাঠিয়েছে এটা প্রমাণিত, বাকি যেটা রইলো তা হল বাঙালি সংস্কৃতি। এই বাঙালি সংস্কৃতি যা নিয়ে কিনা বাঙালি গর্ব করতো, যা নিয়ে বিদেশ থেকে স্বয়ং অস্কার দেবতা ... ...
বসন্ত ২ : আজ বাজারে ভীড় খুব। বাজারের সরস্বতী প্যান্ডেল এখনো জ্যান্ত, এখনো ভাসায়নি ঠাকুর পরীক্ষা বলে। চারিদিকে কিচিরমিচির আর সাথে লাউডস্পিকারে গান এ আর রহমানের - চল ছেইয়া ছেইয়া ... আমি ভীতু মানুষ। বাজারহাট বুঝি কম। সকাল বেলায় বাজারটা ঢুকলেই সামনে ফ্রেশ মাল সব। চাষীরা বেশি লাভের আশায় সারাদিন চাষী আর সকালে সবজি দোকানী। সেই বাজারের সোজা গিয়ে সব ফ্রেশ আর গলার জোর দেওয়া লোকগুলোর থেকে ... ...
বসন্ত ১ : হীরা মান্ডির ঘর গিয়েছিলাম জঙ্গল পেরিয়ে। এই সিজিনে জঙ্গলে আগুন লাগে। থরে থরে সাজানো গাছগুলো সবুজ থেকে আগুন রঙের হতে গিয়ে লজ্জায় নিজেই পুড়ে যায় খানিক। গাছ চিরে যে সরু একফালি রাস্তাটা হারিয়ে যায়, কেউ তার যত্ন না নিলেও কিকরে যে নিজেই জঙ্গলের সিঁথি হয়ে নিজেকে সাজিয়ে রাখে তার খোঁজ পাওয়া দুষ্কর। জঙ্গল বাবুরা ইদানিং মাঝ জঙ্গলে পুকুর কেটেছে কয়েকটা। বনের পশুরা জল খাবে বলে। তার পাড় ধরে সাত আটশো মিটার গেলেই হীরা মান্ডির ঘর ... ...
আজ বাজারে ভীড় খুব। বাজারের সরস্বতী প্যান্ডেল এখনো জ্যান্ত, এখনো ভাসায়নি ঠাকুর পরীক্ষা বলে। চারিদিকে কিচিরমিচির আর সাথে লাউডস্পিকারে গান এ আর রহমানের - চল ছেইয়া ছেইয়া ... আমি ভীতু মানুষ। বাজারহাট বুঝি কম। সকাল বেলায় বাজারটা ... ...
ফেক জগতে থেকে থেকে চোখ বিষিয়ে গেছে পুরো। অন্য স্কুলে ডিউটি। গেরামের স্কুল। মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান পরীক্ষা। রুম নম্বর পনেরো। তিরিশ টা বাচ্চা। তেল চিটচিটে চুল। বিশ্ব বাংলার লোগো লাগানো ঢল ঢলে জামার ভিতরে আরো একটা জামা ঠান্ডা ঢাকতে আর গোড়ালির ওপর তোলা ছোট সাপ্লাই প্যান্ট। কলারে চিটচিটে কালো ময়লা। রুমে ঢুকেই সহকর্মী হাঁক পাড়লেন - ' যতগুলা পারু চুপচাপ লিখবি, কারু দিকে তাকালেই খাতা লিয়ে ... ...
প্রথম ঘটনাটি কয়েক বছর আগের। বিশ্ব কেঁপে উঠেছিল আপাতনিরীহ এক অখ্যাত শিরোনামে। শিরোনাম টি ছিল - 'পৃথিবীর নিঃসঙ্গতম মানুষটি মারা গেছেন'। খবরের ভেতরে ঢুকলে দেখা যায়, উনি ছিলেন ব্রাজিলের তিমারু নামক আদিবাসীদের অঞ্চলের অতি প্রাচীন এক বিচ্ছিন্ন জন গোষ্ঠীর সদস্য। মূল ভূখন্ডের তথাকথিত 'সভ্য' মানুষজন নিজেদের সভ্যতার সম্প্রসারনের জন্য নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে হত্যাযজ্ঞ ... ...
ধান জমি নাই শালকুর বাপের। মুখ ঢাকা রোগটার সময় থেকেই, যেবার শালকুর বউটার কাশি ধরলো, সেদিন থেকেই শালকু বুড়া বাপ মা কে আলাদা করলো হাঁড়ি সমেত। বাঁচাতে নাকি মারতে কে জানে। বুড়ো বুড়ির নতুন হানিমুন তখন থেকেই। শুনলাম সামন্ত দের লোকটা তখন থেকেই নাকি রেশন ফাঁকি দেয় এবাজারেও। তাও ক্ষুদ চাল আর সকালে মাহাতদের জমির লাল শাক। তাতেই বুড়া বুড়ির চেহারা ঠিক ... ...
শালকু হেমব্রম বাঁশ ডালটা অনেকক্ষণ ধরে নাড়াচাড়া করেও যখন বাগাতে পারলো না, তখন প্রায় কাঁদোকাঁদো মুখে ব্যুধা মাহাত কে চোখের ইশারায় কাজটা বাগিয়ে দিলে হাঁফ ছাড়লো মনে হয়। ব্যুধা মাহাত এ দিক দিয়ে তাগড়াই বড়। বিড়ি ধরিয়েই এক নিমেষে বাঁশ খান এক্কেবারে ওকে করে খিস্তি মারলো খানিক, - 'শালো শালকুর বাচ্চা, পার্বিনি বাঁশ কাটতে, উঠে যাবি রাত ... ...
এমন হয় না, গ্রামের নাম অচিনপুর .. শাল পিয়ালের জঙ্গল ঢাকা । কালো মেয়েগুলো চকচকে শরীর নিয়ে জংলী ফুল কুড়িয়েছে পাতা সমেত । ভোট বাবুকে দিবে বলে ভোট পরবে...কিম্বাহতে পারতো,একদল সৌম্যকান্তি যুবক ,একহাজার আঁকিবুকি আঁকা জীর্ণ অতীতের হাতে হাত রেখে নজরুল নামে শপথ নিত ,স্লোগানের আওয়াজে নয় , রবি মাধুর্যে গনতন্ত্র নামতো কোন এক ধূসর বিকেলে...একদল ক্ষেপাটে বাউল , লালন আওড়াত , আরধর্ম দোকানিদের দোকান থেকে একগোছা জুঁইফুল নিত রজনীগন্ধার বদলে । খোঁপায় গুঁজে...যদি আসরের আজানে শান্তি নামতো আরো দু রাকাতে, পরব শেষের ...বদলে মৃত্যু, কান্না , ভয় আর ভেকদের দোয়ামন্ত্র খালি ,#রক্ত পরব শেষ হোক এবার , ... ...