(১)"একটা কাঁধ দেবে সাঁই…একটু কাঁদবো…সব্বাই সব দেয় গো…অনেক অনেক দেয় । শুধু ,কেউই কাঁদতে দেয় না ।" কিচ্ছু গোছাতে পারি নি। সে স্কুলের বাক্স হোক আর জীবনের হিসেব । সব এলোমেলো হয়ে যাওয়াটাই মনে হয় স্বাভাবিক আমার কাছে । বউ বলে তোমার গ্রহে দোষ আছে , হতে পারে । ভূগোলে আমি বরাবরই দুর্বল, গ্রহ নক্ষত্র বরাবর আমার দুর্বোধ্য । তবে একটা জিনিস খেয়াল করেছি যাই হোক না কেন আমি উল্টো জিনিসকে বেশি ভালোবাসি । আমার ... ...
পুরোনো কিছু ছাড়তে বড্ড মায়া হয় আমার ,পুরোনো জামা , সাইকেল , ব্যাগ ,পেন , ক্যালেন্ডার , এমনকি পুরানো পাড়ার গাবলু গাবলু নেড়ি কুকুরটাও যখন হাড়গিলে পুরানো হয়ে সবার বিরক্তির হয় ,তখনও পুরানো ছাড়তে কষ্ট হয় আমার …নতুনেসকালের ধোঁয়ায় , অমলের চায়ের দোকানে , নতুন কেনা সাদা কাঠির জ্বলন্ত নিকোটিনের সুবাসে , এমনকি একান্ত গোপন বাথরুমেও নিরাভরণ শরীরের গন্ধ নিয়ে বুঝতে চাই ' নতুন ' কিছু এলো কিনা নতুনে…ভাগ্যিস আসেনা….নতুনেঘরময় ফর্সা পর্দা দেয় সঙ্গিনী , উজ্জ্বল হয় আরো সংসার , চোখ বুজে থাকি , আলোয় বড্ড একলা লাগে নিজের , আলো আশা আনে অনেক নতুন , ঘরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ... ...
আমাদের বড়দিন ছিল ...ভূগোলে, সান্তা ইতিহাসে তারপর গাঁয়ের শেষে নদীর পাড় ছিল , বালির ..পয়সা ছিল , পকেট কানা ।মা দিদিমারা হেঁসেল ভরতো কারো ঘরের চাল,কারো ডাল তো কারো সবজি ।নেতা ছিল ,দল না ।নিয়ম করে মশলা বাজার ছিল ।হিসেব কে কত ভালো জানে তার পরীক্ষা ছিল , ওজন বুঝে ব্যাগ বওয়া ছিল ,সাথে লাল হৃদয় -' দুজনের চাঁদা ছাড় '...চাঁদা ছাড়ের লজ্জা ছিল নাকি মনখারাপ বুঝিনি , বুঝেছিলাম চাঁদা ছাড়লে সব করতে হয় , আলুর খোসা ছাড়ানো, নদী থেকে জল আনা , শেষে খাওয়া .. সওওব । চোদ্দ জনের টিমে আটটা গ্রুপ ছিল ...কুছ কুছ হোতা হে থেকে অরলি চুনারিয়াও রবিঠাকুর আর রবিশঙ্কর ও ছিলবেসুরো ... ...
(১) পথে পথে চলতে চলতে হঠাৎ একদিন ….. রাস্তাটা শেষ হচ্ছেই না। সেই যে শুরু করেছিলাম এখনো একই ভাবে চলছে। কখনো তেঁতুলতলার পাশে মাঠের মধ্যে দিয়ে নদীর ধারে, কখনো বা গ্রামের মধ্যে, ক্ষেতের ধার বরাবর, আম জাম বাগানের পাশ দিয়ে কোন্ গাঁয়ে গিয়ে কখন যে কোথায় পৌঁছেছি নিজেই জানি না। কখনো কেউবা সঙ্গ দিয়েছে কখনো আবার পুরো একা। কত মুখ কত মুখোশ। কত রঙ, কত রূপ, কত রস। কোন একদিন এই পথকে মনে হয়েছিল একান্ত আমারই পথ, একান্তই আমার; আষ্টেপৃষ্টে বাঁধার পর বুঝেছি এ পথ শুধু চলার পথ, ফেরার পথ নয়। তাও মাঝে ... ...
(১)ঘোষেদের ছোট ছেলেই প্রথম দেখেছিল । মূর্তিটা জলে ফেলার পর ওজন এর ভারে ডুবে যাবার ঠিক আগে যখন কয়েকবার খাবি খেল জলের মধ্যে , যখন প্রায় আশি হাজারের মা দুর্গার ঘরসমেত খাবি খেতে খেতে জলসমাধি হবার অন্তিম মুহূর্ত , যখন হিন্দিগানের লাউড স্পিকারের বিষ তরঙ্গে ক্লান্ত ভাসান যাত্রীরা ভারাক্রান্ত হৃদয়ে ঘরমুখো , ঠিক তখনই ঘোষবাড়ির ছোট ছেলের চোখে পড়লো মা এর মুখ টা ভাঙ্গা । চোখ পুরোটা ফোকাস করে দেখলো ভাঙা না, মায়ের মুখটাই নেই । ... ...
মেন রাস্তাটা থেকে সরু সাপের মত লাল মাটির যে মেঠো রাস্তাটা গ্রামের ভেতর ঢুকেছে ওখানেই শেষ বাড়িটা রতন ঢাকির। গতবার যেবার ইয়া বড় ঠাকুর হয়েছিল শহরে, সেবার রতন ঢাকি কথা দিয়েছিল ছেলে বুধন কে, পরের বার ঠিক সাথে করে নিয়ে যাবে। ঘন্টা বাজাতে। ওই দূরে। কলকাতা শহরে। বুধন তখন সরকারি খিচুড়ি ইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণী। বুধন জানে শহরে স্বপ্ন ওড়ে, মেয়েরা নাকি ছেলেদের প্যান্ট পরে ... ...
উত্তমকুমারের সুপার ফ্লপের কোন গল্প শুনেছেন? শুনেছেন কখনো ওনার বাড়িতে পাথর হামলা হয়েছে? না.. না.. কাশ্মীরে না। খোদ কলকাতার। শুনুন ... কলকাতার রামধন মিত্র স্ট্রিটের গলিতে যদি কখনো যান দেখবেন সামনেই চুনখসা হলুদ রঙের একটা বিশাল পুরোনো বাড়ি দাঁড়িয়ে। সামনের ফলকটায় ওনার নাম, জন্ম আর মৃত্যুর দিন লেখা। সাথে কয়েকটা লাইন - "এই বাড়িতে আমৃত্যু বাস করেছেন বেতার মহিষাসুরমর্দিনীর সর্বকালজয়ী এই সুসন্তান"... ব্যাস এইটুকুই। ... ...
লোকগুলো হারিয়েই গেল প্রায়। সেই সাদা ধুতি পাঞ্জাবি, একরাশ গম্ভীর কিন্তু নরম মনের মানুষগুলো যারা ডাক দিয়েছিলেন প্রথম -'দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান', তারা আজ আর নেই। সারা দিনের বকবকানির ধকল সামলে ঘোষেদের ছেলেটা আজ এলোনা কেন, কিংবা ঈদের পরের দিনও হোসেন কেন নতুন ড্রেস পরে আসেনি, সে কথা ভাবার লোকগুলো আজ লুপ্তপ্রায়। কয়েকজন আছেন। টিমটিম করে মিসিং লিংক হয়ে। মনে আছে কি ওনাদের? ... ...
- ‘ তরা কিসেও খুশি লয় , বল…'ন্যাশনাল হাইওয়ে ছেড়ে আরাবারীর জঙ্গলের মাঝে বন চিরে সোজা কিলোমিটার পঁচিশ , তারপরেই নতুন ভাতঘর । ডেলি প্যাসেঞ্জার প্রায় দিন দশেক ধরে । কালো পাহাড়ের কোলের কালো মাটি ছেড়ে নিজের রক্তের লালমাটি মাখি রোজ এখন । মাখতে মাখতে ভেবেই যাই এই বোধহয় ভরবে সব । হয় না । ভেতরে এত খালি ছিল বুঝিনি । থাক সে সব । জঙ্গল মাঝে রোজ খানিক ধোঁয়া বিরতিতে সঙ্গী জুটিয়েছি একখান । নাম থাক । বছর সত্তরের যুবক আদিবাসী বুড়ো । সাত খানা ছাগল আর তিনটা রোগা গরুর ভাগ রাখাল । সাদা বিড়ির খুব শখ । নিজেই ... ...
সাংবাদিকতা কিংবা সাংবাদ কি বা কাকে বলে এ নিয়ে কোন সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা বা অনুচ্ছেদ এক কথায় প্রকাশ করা মনে হয় সম্ভব না । অল্প কথায় বলতে গেলে দার্শনিক বিল কোভাচ ও টম রোসেন্টিয়েলর 'দ্য এলিমেন্টস অব জার্নালিজম ' গ্রন্থে প্রকাশিত শব্দগুচ্ছ অনুযায়ী - ‘আ প্র্যাকটিক্যাল অ্যান্ড ফাংশনাল ফর্ম অব ট্রুথ’ অর্থাৎ বাস্তব এবং কার্যকর সত্য প্রকাশ কেই সংবাদ আর প্রকাশকারীকেই সাংবাদিক বলা যেতে পারে । ইদানিং সোশ্যাল মিডিয়ার সংবাদ যুগে অনেকে আবার সহজ রূপে সংবাদ পরিবেশনের একটা ফর্মুলা বের করেছেন । ফর্মুলাটা হল ( 5W + 1H ) । যার পূর্ণরূপ 5W মানে- What , Where , Who , Whom, ... ...