এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বাকিসব  মোচ্ছব

  • আহিরণ নদীঃ ত্রয়োদশ পর্ব

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    বাকিসব | মোচ্ছব | ২৪ নভেম্বর ২০২০ | ১৯০৬ বার পঠিত
  • | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯
    আমি কলাকার, বেইমান নই।

    সেদিন কোন স্থানীয় পরব ছিল। ব্যাংকে লোকজন নেই বললেই চলে। চা খেয়ে, মাছি তাড়িয়ে সময় কাটছে না। ভাতঘুম চোখের পাতায় জেঁকে বসছে। এমন সময় ক্যাশিয়ার গজেন্দ্র মাঠের দিক দিয়ে হেঁটে যাওয়া কাউকে দেখিযে প্রায় ‘অমানুষ’ সিনেমার উৎপল দত্তের কায়দায় বলল–– ও যা রহে হ্যায় সরকার, আপকা কাম কা আদমী!
    ওর তর্জনী অনুসরণ করে রূপেশ দেখল একজন বছর তিরিশের লোক ঝুঁকে ঝুঁকে হাঁটছে, কিন্তু পা পড়ছে ঢিমে তেতালায়। ঠিকমত সমে আসছে না। লোকটাকে চিনতে পারল। মাত্র গত সপ্তাহে শাকসব্জি বিক্রির ব্যবসা করতে ‘আই আর ডি পি’ সরকারি প্রজেক্টে পাঁচহাজার টাকা লোন নিয়েছে।
    গলা চড়ল– এ, এ সোহন! ইধর আ! ইধর আ নিপোড়!( এদিকে আয়! আয় বলছি, ক্যালানে কোথাকার!)যা বুধরাম, পকড়কে লে আ উস্ বেওকুফ কো।

    খানিক পরে বুধরামের সঙ্গে ঢুকল এক মূর্তি; পরণে চেককাটা লুঙি ও সস্তা সিল্কের পাঞ্জাবি, গলায় লাল রুমাল, মুখের কষ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানের পিক।কামরার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে মহুয়ার তীব্র গন্ধ।
    –নমস্তে সরকার! মাফি দেও মালিক, বুরা না মানো!
    –কি রে হতভাগা! ব্যাংকলোনের পুরো পয়সাটা দারুভাট্টিতে দিয়ে এলি?
    –নহী সরকার! ইয়ে গলত বাত হ্যায়। লোনকা এক ভী পৈসা দারু মেঁ নহী গয়া। মদ তো আমি নিজের পয়সায় খাই।
    –ইয়ার্কি মারার আর জায়গা পাস নি? ব্যাংকের পয়সায় কেনা শাকসব্জি কোথায়?
    – সচ্ বোলতা হুঁ হুজুর। মেরে উস্তাদ কী কসম! সব্জি কেনাবেচার ধান্ধা? ও তো আমার বাঈ করে। আজকেও দুই ঝুড়ি শাকপাতা নিয়ে কাঠঘোরার হাটে গেছে, রাত্তিরে ফিরবে। কাল সকাল সাতটায় যদি এই গরীবের ঘরে পায়ের ধুলো দেন তখন সব হিসেবনিকেশ কিলিয়ার করে দেব। আমি কলাকার, বেইমান নই।

    হ্যাঁ হুজুর, আমি কলাকার, মানে আপনাদের আর্টিস্ট। বাড়ি থেকে পালিয়ে সেই কলকাতায় গিয়ে মেটিয়াবুরুজের উস্তাদ হাফিজ নগীনার কাছে পাঁচবছর সাগরেদি করে গজল–কাওয়ালি শিখেছি। এ’বছর গণেশপূজোয় এই গাঁয়েই আমার প্রোগ্রাম হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু শেষ সময়ে সরপঞ্চ ধোঁকা দিল।

    রূপেশ হতভম্ব। এর বৌ শাকসব্জি বেচে, তো এ কী করে?
    –খুলে বলি সরকার। মেটিয়াবুরুজ থেকে ফিরে গাঁয়ে গাঁয়ে গান গেয়ে বেড়া্ই, কিছু দক্ষিণা পাই, দিন চলে যায়। এমনসময় ‘নজর লড় গয়ি হ্যায়, তো মনমেঁ খটকওয়া হইবে করি!’
    যে নারীর সঙ্গে দো–আঁখে–চার হল সে জাতে চামার। বাড়ি থেকে বের করে দিল, সমাজে একঘরে হলাম। তাতে কি? ভিনগাঁয়ে ঘর বাঁধলাম, ছেলেপুলে হল। এখন বৌ রোজগার করে, আমি ঘর সামলাই, রান্নাবান্না করি আর বাচ্চা সামলাই।আর কখনও সখনও গানের প্রোগ্রাম পেলে শ’দুই কামিয়ে নিই।

    ইতিমধ্যে ক্লার্ক বলার চেষ্টা করল– ব্যাটা পাঁড় মাতাল, ওর সব কথা বিশ্বাস করবেন না।
    ধমকে উঠল সোহনলাল– তুম চুপ রহো জী! হম দেবতা সে, হমারে মালিক সে বাত কর রহেঁ হ্যাঁয়, নৌকর সে নহীঁ। আপনি চিন্তা করবেন না সরকার। লোনের কিস্তি ঠিক সময়ে জমা হয়ে যাবে। আমার বাঈ করবে। কখনো কখনো আমিও আসব, আপ দেবতাকে দর্শন কে লিয়ে।

    এবার সোহন সামনে হাত মেলে দিয়ে গেয়ে উঠল– দরশন দো ঘনশ্যাম নাথ মোরি, আঁখিয়া পিয়াসী রে!
    তারপর হাত নেড়ে নেড়ে অদূশ্য ব্যাঞ্জো বাজাতে লাগল– টিংরিং– – রিংরিংরিংরিং–রিং, টিংরিং– – রিংরিংরিংরিং–রিং।

    সোহনলালের গান শোনা গেল একমাস পরে, হোলির দিনে।

    বিশাল মিছিল, প্রায় জনা চল্লিশ লোক। নাচতে গাইতে আসছে রাজবাড়ির অর্থাৎ, দাদুসায়েবের কোঠির দিকে। মাদল বাজছে, সঙ্গে করতাল– এরা বলে মঞ্জিরা। লিড করছে সোহনলাল, বাকিরা দোহার। অনেকেই ভাঙ খেয়েছে। কেউ কেউ আলু কেটে তাতে ব্লেড দিয়ে যৌনক্রিয়ার সবচেয়ে পরিচিত হিন্দি শব্দটি খুদে সঙ্গে নিয়ে ঘুরছে।আর রঙ লাগিয়ে সবার বুকে ছাপ লাগাচ্ছে।
    রূপেশকে দেখামাত্র ভীড় চেঁচিয়ে উঠল– লাগা, লাগা! ব্যাংকওয়ালে সাহাবকো লাগা।
    আর মুহুর্তের মধ্যে রূপেশের জামায় মুদ্রিত হল গালিটি। ওর ভ্যাবাগঙ্গারাম চেহারা দেখে আরও একপ্রস্থ হাসির হররা ছুটল। খানিকক্ষণ পরে ব্যাংকসাহাবও সবার সঙ্গে মিলে সোহনলালের গানের সাথে নাচতে লাগল।
    ‘হোলি খেলত নন্দলাল বিরজ মেঁ’।

    দুপুরে পুকুরে চান করার সময় ঘাটে বসে গায়ে সাবান মাখতে মাখতে রূপেশ দেখল এপারে ওপারে অশ্লীল গালাগালির কম্পিটিশন চলছে। ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা হাসিমুখে অনায়াসে এ ওর বৌ ও বোনের সাথে সম্পর্ক জুড়ছে। যাহোক করে চান শেষ করে দুটো ভাতডাল খেয়ে বিছানায় ডাইভ মারার আগে বুধরামকে বলা হল হোলির মিষ্টির থালিতে নমকিন, গুজিয়া এসব সাজিয়ে দাদুসাহেবের বাড়িতে পৌঁছে দিতে।

    দুধকলা দিয়ে ঘরে নাগ পুষেছি
    সপ্তাহ দুই কেটে গেল। বাতাস গরম হচ্ছে। হঠাৎ হঠাৎ ধুলোর ঘূর্ণি ওড়ে। ঝেঁটিয়ে দেয় যত ঝরাপাতা। বাতাসে ম’ ম’ করে মহুয়া ফুলের গন্ধ।

    রূপেশ বেলা একটা নাগাদ মোটরসাইকেলে করে একটা রিকভারি ট্যুর থেকে ফিরছিল, ব্যাংকের কাছে পৌঁছতেই দেখতে পেল বিরাট ভিড়। ওকে নামতে দেখেই ভিড় থেকে আওয়াজ উঠলো– আ গয়ে, আ গয়ে!
    আর ও মোটরবাইক থেকে নামা মাত্র একজন আধবয়সী মহিলা দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরল ওর হাঁটু।
    –হুজুর! আমার ছেলেকে বাঁচান!
    বারান্দার থামের গায়ে পিছমোড়া করে বাঁধা রয়েছে বুধরাম। কষের পাশ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। পরনে একটা হাফপ্যান্ট, গায়ে জামা নেই। ফলে গায়ে দাগড়া দাগড়া কালসিটে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। একটা মোষবাঁধার মোটা দড়ি পাকিয়ে ওকে চাবকেছেন দাদুসায়েব। অনেকক্ষণ ধরে চলায় হাঁফিয়ে পড়েছেন। এখন শুধু গালাগাল আর চিৎকার।
    বুধরাম নেতিয়ে পড়েছে, কোন প্রতিবাদ নেই।

    রূপেশ প্রথমেই দাদুসায়েবের হাত থেকে মোটা দড়িটা ছিনিয়ে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিল।
    – কী করছেন কি? ছেলেটা মরে যাবে যে!
    – মরে যাওয়াই ভাল ছিল ওর। দুধকলা দিয়ে ঘরে নাগ পুষেছি। আমাকে না বলে ওকেই জিজ্ঞেস করুন,– জানেন কী করেছে ও? চুরি করেছে।
    – চুরি? বুধরাম চুরি করেছে? বিশ্বাস হয় না।
    – আমি কি মিথ্যে কথা বলছি? চারদিন আগে ধানবেচার চারশ’ টাকা টেবিলের নীচের ড্রয়ারে রেখেছিলাম, হ্যাঁ, ওর সামনেই। বিশ্বাস করতাম যে! কাল থেকে পাচ্ছি না। আজ ওর টিনের তোরঙ্গ থেকে বেরিয়েছে। পানদোকান থেকে বিড়ি না কিনে সিগ্রেট কিনেছে, তখনই সবার সন্দেহ হয়েছিল। সবাই জানে আপনি ব্যাংকে সিগ্রেট খান না, তবে?

    রূপেশ চুপচাপ ওর বাঁধন খুলে দেয়। বুধরামের মা আর ক’জন ওদের সমাজের লোক এসে ওকে নিয়ে যায়। রূপেশ বললে– আগে মিশ্র ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাও। আমার নাম করলে পয়সা লাগবে না।
    এবার মুখ খুললেন দাদুসায়েব– ম্যানেজারবাবু, আপনাকে অন্য লোক দেখতে হবে। চোরকে তো আর ব্যাংকে রাখা যায় না! ছোটবেলা থেকে দেখছি,পুলিশে দেব না।কিন্তু কাল সকালে ওকে এই গ্রাম থেকে চলে যেতে হবে।

    রূপেশ আস্তে আস্তে মাথা নাড়ে।

    ভোরবেলা। বিজলী চলে গেছে। মশারির ভেতরে গুমোট, রূপেশের ঘুম ভেঙে গেল।
    একটা মোমবাতি কে যেন টেবিলের ওপর রেখে গেছে। আস্তে আস্তে একটি ছায়ামূর্তি বারান্দা থেকে ঘরে ঢুকছে। বুধরাম–হাতে চায়ের কাপ। এত ভোরে?
    – চা খেয়ে নিন। আমি এখন যাব, জামাকাপড় গুছিয়ে নিয়েছি।
    – কোথায় যাবি?
    – দিদির গাঁয়ে, অমরতাল।

    রূপেশ কিছু ভাবে। তারপর বালিশের তলা হাতড়ে একটা পঞ্চাশটাকার নোট বের করে ওর দিকে এগিয়ে দেয়।
    বুধরাম যেন ভূত দেখেছে, মাথা নাড়ে, পিছিয়ে যায়।
    রূপেশ বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ে, এগিয়ে যায়।
    – কি হল? ধর, আমি দিচ্ছি।
    বুধরামের হাত থেকে চায়ের পেয়ালা পিরিচ মাটিতে পড়ে খানখান হয়ে যায়। অস্ফুট স্বরে বলেঃ
    – রুপিয়া তো ওহু দিহিস্।
    – কৌন দিহিস্?
    – বড়ে মালিক, দাদুসাব!

    এক আজব গল্প
    ফোঁপানি ও ঢোঁকগেলার মাঝে একটু একটু করে বুধরাম শোনায় এক আজব গল্প।
    সেই হোলির দিন দুপুরে বুধরাম ব্যাংকের কোয়ার্টার থেকে হোলির প্রসাদ নিয়ে দাদুসাহেবের কোঠিতে থালা পৌঁছাতে যাচ্ছিল। শুনশান চারদিক। ঠাকুর–চাকর সিদ্ধির নেশায় ঢুলছে। বুধরাম পেরিয়ে যায় বারান্দা, করিডর, খালি ঘরগুলো–– একের পর এক।
    বৈঠকখানার দরজাটা ভেজানো; ও ভাবে টেবিলে ঢাকা–থালা রেখে চলে আসবে।দরজা একটু ঠেলে ভেতরে যেতে গিয়ে ও পাথর হয়ে যায়। তক্তপোষে শায়িত দুই পরিচিত মানবশরীর। খেলায় মেতেছে।

    দেয়ালের দিকে পাশ ফেরা বয়স্ক পুরুষ তো ঠাকুরসায়েবের মত, কিন্তু ওদিকের নারীশরীরটি?
    ওপাশ থেকে গড়িয়ে আসার সময় নারীমূর্তিটি দেখতে পায় বুধরামকে, চমকে উঠে গায়ে কাপড় টানে।
    বুধরামের যেন অঙ্গদের পা’, মাটিতে সেঁটে গিয়েছে। হঠাৎপেছন ফিরে প্রাণপনে দৌড় লাগায়। ক’দিন আর ও’মুখো হয় না, ব্যাংকেই এঁটুলির মত সেঁটে থাকে।
    গতকাল দাদুসায়েব ওকে ধরে ফেলেন। ভয়ে সিঁটিয়ে যাওয়া বুধরামকে চারটে বড় পাত্তি দিয়ে বলেন––হোলির বকশিস, কাউকে বলার দরকার নেই; ম্যানেজার সায়েবকেও না।

    খানিকক্ষণ পরে রূপেশ বলে– তোকে কোথাও যেতে হবে না, এখানেই থাকবি। আমি দাদুসায়েবের সঙ্গে কথা বলব।
    –থাক না সায়েব, কোন লাভ নেই। খামোকা আপনার সঙ্গে অশান্তি হবে। বড়ে মালিকের সম্বন্ধে আমার মুখের কথা কে বিশ্বাস করবে? আর আমি যে কাল পানঠেলা থেকে সিগারেট কিনেছি– সেটা তো সত্যি! তার চেয়ে এই ভাল।



    রূপেশের ওই চিঠিটা! যেন অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষায় থেকে মনোযোগ হারিয়ে ফেলা স্লিপ ফিল্ডারদের সামনে স্নিক থেকে ছিটকে আসা ক্যাচ! ফার্স্ট স্লিপের হাত ফসকে পড়ে যাওয়ার মুহুর্তে ডাইভ মেরে বলটা মাটি থেকে তুলে নিয়েছে সেকন্ড স্লিপ। উইকেট কিপার থেকে শুরু করে সব ফিল্ডারদের আনন্দ দেখে কে !

    বড়বৌদির বাপের বাড়ির ওই তুতো বোনটি যেন ওরই অপেক্ষায় ছিল । হবু শাশুড়ি রূপেশের চিবুকে হাত দিয়ে চুমু খেয়ে বললেন – কিছু ভেব না বাবা। আমার মেয়ে খুব গুণী; ইংলিশ মিডিয়ামে পড়লে কি হবে, গাঁয়ে গিয়েও মানিয়ে নিতে পারবে।ওকে আমরা সেভাবেই বড় করেছি। অনেকদিন তো হাত পুড়িয়ে খেয়েছ, এবার তোমার কষ্টের দিন শেষ।

    এই যে ম্যানেজার!

    রূপেশ চমকে উঠেছে। বাড়ির ছাদে গিয়ে চিলেকোঠার পাশে দুটো ইঁটের উপর বসে একটা সিগ্রেট ধরিয়েছিল, আচমকা অপরিচিত মেয়েলি গলার সম্বোধনে ওর হাত থেকে সিগ্রেট পড়ে যায় ।

    এই অভ্যেসটা ওর ছুরিতে থাকার সময়ই বেড়ে যায় , প্রথমদিকে রামনিবাস সঙ্গী হত , পরের দিকে রাজন। বাড়িতে বড়বৌদি জানেন, উনিই বলেছিলেন যব খুব ধুঁয়া পীনে কী তিয়াস হোগী তব ছাত পর চল দেনা দেবরজী। উহাঁ কপড়া সুখানে কে লিয়ে লছমনিয়া ইয়া হম জাতে; অউর কোই নহীঁ।

    আজকে দু’পক্ষের কথাবার্তা হবার পর ভেবেছিল ল্যাঠা চুকে গেছে। আসলে ও তো মেয়েদেখার পক্ষপাতী ছিল না । বড়ীভাবীকে বলেছিল—এটা একটা লটারি, আমি টিটি সিরিজ কি এবি সিরিজ দেখে কি বুঝব? আপনার পছন্দ মানে সব ঠিকই আছে।

    কিন্তু ভাবী বলেছিলেন—তুমি না দেখ তো চোখ বুজে থেক ; মেয়ে বলেছে ও ছেলে দেখবে। আজকালকার মেয়ে , তায় ইংলিশ মিডিয়াম; বুঝতেই পারছ।

    এখন সেই মেয়েটা ছাদে উঠে এসে ওকে এভাবে ডাকছে!

    --শোন, অমন হাঁ করে থেকো না । চটপট কাজের কথায় আসি। মেরী জীজী, মতলব তোমার বড়ীভাবী, বলেছেন—দশ মিনিট, তার বেশি নয় । তোমাকে আমার বেশ পছন্দ হয়েছে। কিন্তু আমার কয়েকটি শর্ত আছে । এক, আমি তোমাকে ‘এ জী, ও জী’ করতে পারব না । ডাকব ম্যানেজার বলে, তুমি রাজি?

    বেশ; টাকাপয়সা গয়নাগাঁটি নিয়ে আমার খুব একটা মাথাব্যথা নেই । বছরে দু’বার গয়না গড়িয়ে দাও—এসব বায়নাক্কা করব না । কিন্তু একবার কোথাও বেড়াতে নিয়ে যাবে, নইলে ঝগড়া করব। আমার জিভে খুব ধার, পাড়ায় কেউ লাগতে আসেনা।

    তিন নম্বর, খাওয়া দাওয়া নিয়ে খুব ঝামেলা হবে না । রাত্তিরে রুটি খাই, ও আমি বানিয়ে নেব। দিনের মধ্যে যতবার চা-কফি বলবে আমি বানিয়ে দেব। কিন্তু বেড-টি তুমি বানাবে। আমার অনেকদিনের ইচ্ছে হাজব্যান্ড সক্কালে চা-বিস্কুট ট্রেতে করে নিয়ে এসে “জাগো, মোহন প্যারে জাগো’ গেয়ে আমার ঘুম ভাঙাবে—অন্ততঃ একটা বছর, ব্যস।

    চার, আমি তোমাকে ‘আপ-আপ” করতে পারব না; বড়দের সামনেও না । দুজনেই দুজনকে ‘তুম” বলব , আমরা ভাল বন্ধু হব। বড়রা এ’নিয়ে আপত্তি করলে তুমি আমাকে ডিফেন্ড করবে; করবে তো? ব্যস, হাত মিলাও।

    রূপেশ একটা ঘোরের মধ্যে ছিল। মেয়েটার বাড়ানো হাত ও অগ্রাহ্য করতে পারে না । কিন্তু নারীশরীরের অপরিচিত গন্ধে ও অবাক হয় , হাত ছাড়তে ভুলে যায় ।

    মেয়েটা খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে।

    এমনসময় নীচের থেকে বড়ী ভাবীর আওয়াজ শোনা যায় – এ নিমকি! নিমকি রে !

    মেয়েটা তড়িঘড়ি হাত ছাড়িয়ে নিয়ে সিঁড়ির দিকে ছুট লাগায়—টা-টা।

    আরে, মেয়েটির ডাকনাম তাহলে নিমকি! কি গেঁয়ো নাম। বিয়ের পর রূপেশ এসব বদলে দেবে। মানে নিজে ওর একটা প্রাইভেট নাম দেবে, যা আর কেউ জানবে না ।

    ও সবাইকে বলেছে আজ একটু তাড়াতাড়ি আসতে।

    কাল থেকে ও ছুটিতে যাচ্ছ-- দু’সপ্তাহের জন্যে। রিলিভার সি প্রসন্নাকে ভাল করে চার্জ বুঝিয়ে দেবে। চেয়েছিল তিনসপ্তাহ, কিন্তু এখন পিক সীজন, বছরের টার্গেট পুরো করতে মাত্র দ’'মাস বাকি আর তারপরেই অ্যানুয়াল ক্লোজিং বা বার্ষিক লেখাবন্দী। এ’সময় কাউকেই ছুটি দেওয়া হয় না, মেডিক্যাল গ্রাউন্ড ছাড়া। হেড অফিসে পার্সোন্যাল ম্যানেজার সুরভি সাক্সেনা হেসেই খুন।

    --রূপেশ স্যার, হানিমুন তিনমাসের জন্যে পেন্ডিং থাক, নতুন বছরের গোড়ায় বসন্তকালে যাবেন’খন।

    প্রসন্না চার্জ বুঝে নিতে ঠিক এগারটায় হাজির। রূপেশ নিজের স্যুটকেস গুছিয়ে কেবিনের একপাশে রেখে দিয়েছে । লাঞ্চের পর এখান থেকেই আলি আহমদ সার্ভিসের বাসে চড়ে চার ঘন্টায় বিলাসপুর। আশি কিলোমিটার পথ, চারঘন্টা একটু বেশি। কিন্তু রাস্তা খারাপ। এমনিতেই গাঁয়ের মধ্যে দিয়ে এঁকেবেঁকে যাওয়া মোরাম ঢালা ফেয়ারওয়েদার রোড, পাকা পিচঢালা হতে আরও দু’বছর। তারপর গোদের উপর বিষফোঁড়ার মত দৈত্যাকার বিশাল বিশাল ডোজার সমানে গর্জন করে ছুটে চলেছে। প্রায়ই রাস্তা ভেঙে গর্ত তৈরি হয় , বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই ।

    খোঁড়া হচ্ছে মাটি—বড় একটা লেকের মত এলাকা জুড়ে, তার মধ্যে তৈরি স্লোপ বেয়ে ট্রাক নেমে যাচ্ছে প্রায় ৬০ ফুট নিচে, কয়লা ভরে উঠে আসছে উপরে। এর নাম নাকি ওপেনকাস্ট মাইনিং। এতদিন সবাই জানত মাটির তলায় লুকিয়ে থাকা এই কালো হীরে তুলে আনতে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে লিফট বেয়ে নিচে নামতে হয়। এমনটা রূপেশ ‘কালা পাত্থর’ সিনেমায় দেখেছে। এখানে যে নতুন টেকনিক, মাটির উপরেই বিরাট কর্মযজ্ঞ। তাই সারাক্ষণ হাওয়ায় একটা ধূলোর আস্তরণ ও কয়লার গুঁড়ো, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

    এর মধ্যে নিমকি মানে সরলাকে এনে কোথায় তুলবে? হ্যাঁ, ওর হবু বৌয়ের নাম সরলা শ্রীবাস্তব। কার্ড ছাপা হয়ে বিলি হয়ে গেছে। তবে ওর ক্লার্ক নরেশ আর ফিল্ড অফিসার খান্ডে ভাল পরামর্শ দিয়েছে।

    রেললাইনের ওপারে গড়ে উঠেছে লেবার কলোনি, ঘোরাপাট গাঁয়ে। সেখানে জমি হারিয়ে মজদুর বনে যাওয়া অনেক চাষি কোয়ার্টার পেয়েছে। কিন্তু বেশ কিছু নতুন মজুরের দল গাঁয়ের মোহ ছাড়তে পারেনি । ওরা কোয়ার্টারের দরজায় তালা ঝুলিয়ে থাকে গাঁয়ের বাড়িতে—যতদিন না ক্রমশঃ হাঁ করে এগিয়ে আসা কয়লা খাদান ওদের পাড়া অব্দি পৌঁছে গিয়ে বাপ-ঠাকুর্দার সময়ের বাস্তুভিটেটি গিলে নিচ্ছে।অনেকে দল বেঁধে খাদান এরিয়ার বাইরে ভাটা বা পড়তি ঊষর জমিতে মাটির দেয়াল আর খাপরার চাল তুলে নতুন ঘর বানিয়ে নিচ্ছে। এভাবে গড়ে উঠেছে বেদখল কলোনি যাতে নিজেদের ফেলে আসা গাঁয়ের স্মৃতিতে ওরা দুটো খুঁটির গায়ে টিনের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে বড় বড় আঁকাবাঁকা অক্ষরে লিখে দিচ্ছে জনপদের নাম—“নয়া বরপালী” বা “নয়া চারপারা”। সকাল সন্ধ্যে ওদের ঘরের সামনে লোহার পাতে তৈরি কয়লার উনুনে আঁচ পড়ে আর নীলচে ধোঁয়ার কুন্ডলি পাকিয়ে পাকিয়ে আকাশে উঠতে থাকে। এখানে কয়লা ফ্রি—তাই জঙ্গলের চুরি করে কেটে আনা কাঠে উনুন ধরানোর দিন শেষ ।

    সুন্দর করে গোবর লেপে নিকানো ঘরের মেঝে আর বাইরের দেয়ালে বড় বড় করে স্থানীয় শিল্পীর আঁকা ছবি। নীলকন্ঠ শিবের গোটা শরীর নীল,গলায় জড়ানো ফণাতোলা সাপ, মাটিতে পোঁতা ত্রিশুলের গায়ে বাঁধা ডমরু আর শিঙ্গা, পাশে সাদা রঙের নন্দীষাঁড় শুয়ে শুয়ে অলস চোখে জাবর কাটছে। কোথাও রামসীতা কেবট বা কৈবর্তের নৌকো চড়ে গোদাবরী নদী পার হচ্ছেন। আবার কোথাও একটি লতানো গাছে একটি চারপাপড়ির ফুল, তাকে ঠোকরাচ্ছে একটা বড়সড় টিয়েপাখি।

    এখানে বিজলি ফ্রি, তাই যেখানে যেখানে বাঁশের ডগায় করে লাইনটানা সম্ভব হয়েছে সে পাড়ায় অনেকের ঘরে হলদে ষাট পাওয়ারের বাল্ব। বাকি ঘরে এখনও হ্যারিকেন, হ্যাজাকবাতি বা টেমি জ্বলে।

    কিন্তু একটা ঘরেও পায়খানা বা সেপ্টিক ল্যাট্রিন নেই। সবাই যায় লোটা হাতে জল নিয়ে মাঠে ঘাটে, সকাল-সন্ধ্যে। হেসে বলে বাড়ির মধ্যে দুর্গন্ধযুক্ত পায়খানা থাকবে –এ কেমন কথা! এসব শহুরে ব্যামো! আর স্নান করে সবাই পুকুরে বা কুয়োর পাড়ে বালতি দিয়ে জল তুলে।

    কিন্তু সরলা যে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া মেয়ে, আবার ডিস্ট্রিক্ট টাউনে বড় হয়েছে।

    খান্ডে আর নরেশ জানায় ওই ঘোরাপাট কলোনির লেবার কোয়ার্টার যারা তালা মেরে রেখেছে তাদের মধ্যে কেউ কেউ মাসে একশ’ টাকা নিয়ে ভাড়া খাটাচ্ছে। অনেক স্কুল টিচার বিশেষ করে মহিলারা ওভাবেই আছেন। চারপাড়া গাঁয়ের ডোজার ড্রাইভার চামারসায় থাকে নিউ চারপাড়ায়, আমাদের ডিপোজিটার। জমির ক্ষতিপূরণের টাকা বাঁচিয়ে এক লাখ টাকা এই ব্র্যাঞ্চে ফিক্সড ডিপোজিট করেছে। ও ম্যানেজার সাহাবের ফ্যামিলির জন্যে বিনে পয়সায় দিতে রাজি। কিন্তু আমরা বলেছি আমাদের স্যার ফোকটে নেবেন না। সবার মত মাসে একশ’ টাকা করে দেবেন। দুটো পাকা ঘর, ছোট রান্নাঘর পেছনের পাকা আঙিনা উঁচু বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে ঘেরা। পাকা বাথরুমের ছাদ নেই, তাতে কি, কাপড় টাঙানোর গজাল পোঁতা আছে। আলাদা সেপ্ট্রিক ল্যাট্রিন। উঁচুতে একটা ঘুলঘুলি। কলের জল চব্বিশঘন্টা ফ্রি, কয়লা ও বিজলি ফ্রি। আর কি চাই?

    রূপেশের কিন্তু কিন্তু ভাব দেখে নরেশ বলে ওঠে—এত ভাববেন না স্যার। ওখানে কয়লাখনির হাসপাতাল আছে, তাতে একজন এমডি আর একজন এমবিবিএস ডাক্তার। এছাড়া নার্স, ড্রেসার, ফার্মাসিস্ট। ডক্টর তিওয়ারি আমাকে বলেছেন – ব্যাঙ্কের স্টাফের জন্যে পয়সা লাগবে না। এছাড়া মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি হয়েছে। তাতে চাল-ডাল-ডেইলি নীডস এর দুটো দোকান, একটা মিষ্টির, একটা ওষূধের, একটা গম পেষার কল, একটা দোসা-ইডলি-কফিওলা আন্না রেস্টুরেন্ট –সব খুলে গেছে। আর কলিয়ারির তরফ থেকে ওখানের মাঠে স্ক্রিন টাঙিয়ে মাসে দুটো করে সোমবার সিনেমা দেখায়। ঘর থেকে ফোল্ডিং চেয়ার নিয়ে যেতে হয়। ভাবীজির দিল বহলানে কা কাম হো জায়েগা। নইলে রোববারে ওনাকে নিয়ে যাবেন কোরবা। শপিং করিয়ে আনবেন। আর দুটো পিকনিক স্পট।

    সে যাকগে, বিয়ের পর ভাবীজিকে এখানে নিয়ে আসার আগে আপনি নিজে ঘরটা দেখে নেবেন। কোন অসুবিধে হলে আমরা আছি।
    | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অরিন | ২৫ নভেম্বর ২০২০ ০৩:১৮733256
  • "ভয়ে সিঁটিয়ে যাওয়া বুধরামকে চারটে বড় পাত্তি দিয়ে বলেন––হোলির বকশিসকাউকে বলার দরকার নেইম্যানেজার সায়েবকেও না।"


    মন খারাপ করা গল্প | 


    "মানুষ বড়ো কাঁদছে, তুমি মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও


    মানুষই ফাঁদ পাতছে, তুমি পাখির মতো পাশে দাঁড়াও
    মানুষ বড়ো একলা, তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও।"

    (শক্তি চট্টোপাধ্যায়)
     
    রুপেশ কি কখনো বুধরামের, বুধরামদের পাশে দাঁড়াবে না?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে প্রতিক্রিয়া দিন