যাপন ২
আজ অরিজিতের বাড়ীতে প্রথমবার ছবি তুলতে এল সৌরদীপ।বাড়িতে ঢুকেই চারপাশে চোখ বুলিয়েই জিতের রুচির প্রশংসা না করে পারল না সে। এত যথাযথ অন্দরসজ্জা অনেকদিন বোধহয় চোখে পড়েনি। যদিও সে জানে তার বন্ধুদের সকলেই বেশ রুচিসম্পন্ন। তবুও রোজকার জীবনে এমন পরিশীলিত রুচি সম্পন্ন মানুষকেই তো চেয়ে এসেছে এতদিন।মনে মনে একটু হলেও ভাল লাগতে শুরু হয় সৌরর।কথায় কথায় সেটা প্রকাশ করতেও ভোলেনা। জিত এর আগে শুনেছে সৌর।কফি পেলে আর কিছু চায় না। কাজের ফাঁকে ফাঁকে কফির কাপ বেশ কয়েকবার পেয়ে বেশ খুশি হয় সৌর ।মুখে যদিও বলে, অভ্যেস খারাপ করে দিও না, এরপর সবসময় তোমায় না পেলে...
কথা শেষ হওয়ার আগেই জিত বলে ওঠে,- একদিনে অভ্যেস খারাপ হয়না। সৌরর সপ্রতিভ উত্তর - যার হয় তার একদিনেই হয়।
যাপণ ৩
সেদিন সৌরদীপের বাসায় গিয়ে অবাক হয়ে গেছিল অরিজিত। সৌরর আন্তরিক অভ্যর্থনায় খুশিতে মনটা ভরে গেছিল ওর। অবাক হওয়ার পালা আরো বাকি ছিল, যখন বাটিতে নিজের হাতে বানানো চিকেন নুডলসটা এনে সৌর ওকে বলল,' কাল রাতে বানিয়েছিলাম, জানতাম আজ তুমি আসবে, তাই এটুকু তোমার জন্য রেখে দিয়েছিলাম। '
আপ্লুত গদগদ হয়ে রাতে বাড়ি ফিরে যখন ফোন করে তখন জিত বলেই ফেলে " এত ভাল রান্নায় আবার সে নতুন করে সৌরর প্রেমে পড়তেই পারে।" বিনয়ে গলে গিয়ে সৌর বলে," ও তেমন কিছু না, জোড়াতাপ্পি দেওয়া চটজলদি রান্না "।
এর পরের কথোপকথন টা অনেকটা এরকম...
অ - যাইহোক বেশ ভাল
সৌ- এরপরের সপ্তাহে কফিতে নুন দেব বুঝবে সেদিন।
অ- এবাবা! এতো পুরোনো বাংলা সিনেমার স্ক্রিপ্ট! এসব এখন আর চলে না।
সৌ- তাহলে না হয় তরকারিতে বেশি করে লঙ্কাগুঁড়ো
অ- আমি কি এতই খারাপ!
সৌ- ভাল বলেই তো
অ- আমি জয়দীপ দার কাছেই চলে যাব।
সৌ- যাও না
অ- হুমম্! ঘাড় থেকে নামাতে চাইছ!
সৌ- ঘাড়ে আর চাপলে কবে, তুমিতো ঘাড়ে চাপলেই না, যে ঘাড় থেকে নামাব!
অ- যে ভাবে নুন লঙ্কা ছেটাচ্ছ!
সৌ- হা হা হা
অ- ভয় নেই আমিন কখনও ঘাড়ে চাপবই না, আর চাপলেও দেখবে দমবন্ধ লাগবে না
সৌ- ( মনে মনে, সে আমি জানি) হা হা হা, এখন রাখি যাও ঘুমু করো।