ভালবেসে ভালবাসার প্রতিদিনের রোজনামচায় থাকাটা সমাজের নির্মাণ। নাকি সেটা আসলে আত্মপ্রেম প্রতিদিনের আত্মপ্রত্যয়। নিজেকে খুঁজে পাওয়া..
প্রতিদিনের থোড় বড়ি খাড়া প্রেম কিংবা রাঁধার পর খাওয়া নয়তো খাওয়ার পর রাঁধা সম্পর্কের অভ্যাসটা আপাতদৃষ্টিতে সুখের সংজ্ঞা হলেও সে সুখ বোধ হয় কেউ কেউ চায়না তাই তো "সুখে থাকতে ভুতে কিলোয়"। এলোমেলো ভাবনার ভুত । স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় অনুভুতি গুলোর চাওয়া পাওয়ার সাথে সাথে আমার মধ্যেও অন্য একটা আমি আছে। ভালবাসাটাও নিজের কাছে নিজের অ্যাসাইনমেন্ট। "মধুর তোমার শেষ যে না পাই... "
আবার একটা নতুন অ্যাসাইনমেন্ট, নতুন কাজ নিয়ে নতুন ভাবনার ট্রেলর দেখলে বুঝতে পারি মুখে যাই বলিনা কেন এটাই আমার সংসার। প্রতিদিনের শোয়াবসার বাইরে ভালবাসার ভালবাসায় জড়িয়ে থাকার আনন্দ অনেক বেশি। আজ আর নিজের সঙ্গে নিজে প্রতারণা করব না। অস্বীকার করবনা ভালবাসায় ছুঁতে চাওয়ার ইচ্ছে , শরীরের আশ্লেষে পিষে যাওয়ার ইচ্ছেগুলো মাঝে মাঝে উঁকি দিলেও সেগুলোই সব না। কারও কাছে কোনও কিছু প্রমানের দায় নেই। নিজের সবটুকু ছাপিয়ে গিয়ে ভালবাসাটুকু ভাল রাখাই ভালবাসা। আর সবটুকুর মধ্যে নিজেকে ভালবাসা,নিজেকে ভালরাখাটাও বড্ড জরুরি । নিজেকে ভাল না বাসলে ভালবাসা থাকবে কি করে।
আমরা আঁতলামি করে বলি প্রেমটা আসলে কোমরের নীচে না, প্রেম টা আসলে মাথায়। আবার কেউ কেউ বলি আমার যৌনাঙ্গ আমাকে ডিফাইন করেনা নয়তো আমার যৌনতা আমার পরিচয় না। আসলে সব কেমন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় যখন কামনার তুরীয়তাটাও মস্তিষ্কই শুধু জানান দেয়। কেউকেউ যৌনতাকে জিভের স্বাদদিয়ে বোঝার কথা বলি। স্বাভাবিকভাবেই তাই আমিশাষী আর নিরামিষাশীর তুলনা টানি হেটারো নর্ম্যটিভিটির সাথে সমকামীতার তুলনায়। আজকাল একগামী বহুগামিতা র তর্কে যাইনা কেননা আমি ঠিক কোন্ গ্যমাস সেটা তো নিজেও বুঝিনা। খালি এটা বুঝি শরীরে শরীরের ছোঁয়া পেতে চায়। কেউ কেউ একটা নির্দিষ্ট শরীরে যেমন তৃপ্তি পাননা আমি তেমন অন্য শরীরেও শুধুই ভালবাসাটুকু খুঁজে বেড়াই। আর "শরীরের প্রেমটাও প্রেম" যার গাল ভরা নাম আমার কাছে টাচথেরাপি।
"কৃষ্ণ" কাল্পনিক নাকি সত্য না কি আসলে জীবাত্মার সাথে পরমাত্মার মিলনের পথমাত্র। রাধা নাকি কৃষ্ণের হ্লাদিনী শক্তি । রাধা কি আদৌ কোনও সত্য নাকি যা আমার মনের গভীর গোপন তাকেই রাধা বলে চালানো। তাই রাধার প্রেমে পরকীয়ার মুখোশ আমরাই পরাই। পরকীয়ার আড়ালে সত্যটাকে গোপন করতে চাই নিজের কাছে।মাঝে মাঝে মনে হয় রাধা আসলে একটা না পাওয়ার রূপক নয়তো । নিজের সাথে নিজের প্রতারণার হাতিয়ার হিসাবে পরকীয়া শব্দটা আমরা ব্যবহার করি কিনা কে জানে। আর রবিঠাকুরকেও তাই চারুলতা আর ভূপতির মাঝে অমলকে আনতে হয়, চারুর মনের খবর স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও রাখেন নি। আর তাই আজও এত বছর পর শ্রীমতী 'হে-র নিকষিত প্রেম আমরা কলুষিত করতে বিভিন্ন ভাবে কাঁটা ছেড়া করার সুযোগ পেলে ছাড়িনা। নিজের অ-সুখ অন্যের সুখ বা "নিজের অ-প্রেম" অন্যের প্রেমকে অসুয়াসূচক মুখরোচক আলোচনার বিষয় করে তোলে।
কোনও কোনও দর্শন মতে যদিও একমাত্র জীবাত্মার
পরমাত্মার সাথে মিলনের ইপ্সাই স্বকীয়া বাকি সটুকুই পরকীয়া। আত্ম প্রেমের নয়তো আত্মরতির সাথে সাথে "আপনাকে এই জানা আমার ফুরাবেনা"। নিজেকে সত্যিই কি আমরা জানতে চাই। নিজেকে স্বীকার করতে পারাটাও যে ভালবাসা আর তাই মীরাবাই হয়তো ঐতিহাসিক প্রমাণ হিসাবে আজও সবসময় সামনে চলে আসে । কিন্তু মীরার প্রেমের মিথ দিয়ে কি বোঝাতে চাই, কোন অনুভুতিকে আঁকড়ে ধরতে চাই আমরা তা যদি বুঝতাম তাহলে তো অন্য কিছু হত। প্রতিদিনের রোজনামচায় ঈশ্বর প্রেমই হয়তো একটা ভাবনার দ্যোতক। মীরা আসলে আমাদের সেই ভাবনার উদাহরণ নাতো।নইলে প্রেমের জন্য মীরাকেই এতবছর আমরা উদাহরণ করে রাখিকেন? কেন আমরা সুদামাকে মনে রাখতে চাই। কেনই বা সখা হিসাবে কৃষ্ণকেই অর্জুনের সারথি হতে হয়। আসলে সারথি তো পথ দেখায়। মনের ঘোড়ারলাগাম তাই তার হাতে তুলে দিয়ে নিশ্চিন্ত হতে চাই আমরা। কিন্ত সেও কি অন্তরাত্মার সাথে জীবাত্মায় মিশে যেতে চাওয়া না। সবটাই তো আসলে স্বার্থপরতা কেননা,
"আমার সুরগুলি পায় চরণ আমি পাইনে তোমারে... "