এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  খবর  খবর্নয়

  • খবর্নয় ( এপ্রিল ২০)

    দিবাকর সরকার লেখকের গ্রাহক হোন
    খবর | খবর্নয় | ২০ এপ্রিল ২০০৮ | ৬১০ বার পঠিত
  • চাকুরীজীবি ভেড়া
    ----------------

    ভেড়াদের চাকরী দেবার জন্য জব-পোর্টাল এখনও তৈরী হয় নি বটে, তবে কিছু ভেড়া যে নিয়মিত চাকরী করছে, সম্প্রতি সে খবর পাওয়া গেল। ইটালীর তুরিন শহরের বিভিন্ন অংশে ও পার্কে ঘাস ছাঁটার জন্য দুই পাল ভেড়া নিয়োগ করা হয়েছে। লন-মোয়ার চালিয়ে ঘাস ছঁটতে যা খরচ হয়, দেখা গেছে ভেড়ারা খেয়ে সাফ করলে তার চেয়ে অনেকটা কম খরচে ঘাসের রক্ষণাবেক্ষণ ও ল্যান্ডস্কেপিঙের কাজ করা যাবে। ANSA জানিয়েছে প্রথম নিযুক্ত ভেড়ার পালটি এপ্রিলের ৩ তারিখ থেকেই Melsino Park এ ঘাস খেতে শুরু করে দিয়েছে। পরবর্তী দলটিও ৭ তারিখ থেকে কাজে লেগে গেছে।

    শহরের কর্তারা জানিয়েছেন গত বছরও তাঁরা এই পদ্ধতিতেই ঘাস ছাঁটিয়েছিলেন। তাঁরা আশা করছেন এই বছর এইভাবে ৫০,০০০ ডলার লন-মোয়িং ফী বাঁচিয়ে সাশ্রয় করবেন। মেষপালক Frederico Tombolato জানিয়েছেন তিনি গতবছরও এখানে এসেছিলেন তাঁর ভেড়ার পাল নিয়ে ঘাস সাফ করতে। এতে তাঁরও লাভ, কারণ তাঁকেও ভেড়াদের খাওয়াবার জন্য তৃণক্ষেত্র ভাড়া নিতে হয় না। শহর কর্তৃপক্ষ আরো জানিয়েছেন গতবছর তাঁরা ভেড়ার সাথে একটি পার্কে গবাদি পশুদেরও লাগিয়েছিলেন। কিন্তু গোরুমোষগুলি যত না ঘাস খেয়ে সাফ করেছে তার চেয়েও বেশী বর্জ্যসারে পার্ক ভরিয়ে দিয়েছিল। তাঁদের আবার সেগুলো সাফ করাতে হয়। তাই তাঁরা এবার থেকে শুধু ভেড়ার মত সভ্য প্রাণীকেই এই চাকরীটি দেবেন বলে স্থির করেছেন।

    শহর কর্তৃপক্ষ এবং মেষপালক উভয়েই এই পদ্ধতিতে পয়সা বাঁচিয়ে লাভ করছেন । বেচারা ভেড়াগুলো পেটভাতায় চাকরী করছে বছরে দুই মাস। আশা করা যায় সুদূর ভবিষ্যতেও ভেড়াদের কোন ইউনিয়ন তৈরী হবে না এবং ন্যুনতম মজুরীর দাবী জানাবে না।

    কেক খেয়ো না, মোটকা হবে
    --------------------------

    এরকমই ভাবনা থেকে নিউজিল্যান্ডের উত্তর অকল্যান্ডের Oteha Valley প্রাইমারী স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের জন্মদিনে কেক আনতে বারণ করে নির্দেশ জারী করেছেন। তাঁদের কড়া নির্দেশ হল, ছাত্ররা নেচেগেয়ে জন্মদিন পালন করতে পারে কিন্তু স্কুলে কেক আনা চলবে না। সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের শিক্ষামন্ত্রক ওবেসিটির বিরুদ্ধে এব স্বাস্থ্যকর খাবারের স্বপক্ষে তেড়েফুঁড়ে যুদ্ধে নেমেছেন। তাতেই এই স্কুল কর্তৃপক্ষ লক্ষ্য করে দেখেন যে তাঁদের এক বিরাট সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর জন্ম সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে। ফলে এই দুই মাসে কোনো কোনো সপ্তাহে এক এক ক্লাসে ৪ দিনও কেক কাটা হয়। তাতেই সন্ত্রস্ত হয়ে ছাত্রছাত্রীদের মেদবৃদ্ধি রোধে তাঁরা এই নির্দেশিকা জারী করেন। নিউজিল্যান্ডের শিক্ষামন্ত্রকের মুখপাত্র অবশ্য জানিয়েছেন যে তাঁরা স্কুলে বিক্রী হওয়া খাবারদাবারের ওপরেই নিষেধাজ্ঞা জারী করেছেন। এই মুখপাত্র বলেন অভিভাবকরা কি টিফিন দেবেন, সে সম্পর্কে তাঁদের কোন বক্তব্য নেই এবং স্কুলেরও থাকা উচিৎ নয়।

    খিস্তিবাজ ম্যাকাও
    ----------------

    ভাবুন দেখি, কোন ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারিতে বেড়াতে গিয়ে দেখলেন "লাল বোম্বেটের গুপ্তধন' এর সেই পাখীরা, যারা ক্যাপ্টেন হ্যাডকের ভাষায় গালিগালাজ করছিল, সেইরকম পাখীরা আপনার চারধারে উড়ে উড়ে অশ্রাব্য গালি দিচ্ছে, কেমন লাগবে তখন? ইংল্যান্ডের ওয়ারউইকশায়ার সংরক্ষিত অরণ্যে কিন্তু এরকমটাই হচ্ছে। এই সংরক্ষিত অরণ্যের মালিক জিওফ গ্র্যুকক জানতেন যে ৭ বছর বয়স্ক ম্যকাও বার্নি অনেকরকম গালিগালাজ জানে। সে সম্ভবত: তার আগের কোন মালিকের কাছ থেকে বিভিন্ন অভিশাপ ও গালিগালাজ শিখে এসেছে। গ্র্যুকক এবং তাঁর কর্মচারীরা বহু চেষ্টা করেছেন বার্নির মুখের ভাষা বদলাতে, তাকে ভদ্রভাষায় কথাবলা শেখাতে। কিন্তু কোন চেষ্টাই ফলদায়ক হয় নি। বার্নি মহানন্দে যখনতখন যথেচ্ছ খিস্তি করে। কিন্তু সম্প্রতি তাঁরা সভয়ে আবিষ্কার করেছেন আরো দুটি ম্যাকাওগোত্রের পাখীকে বার্নি রীতিমত গালিগালাজের ট্রেনিং দিচ্ছে। যথারীতি অন্য দুটি পাখীও মহানন্দে শিখে ও প্রয়োগ করে চলেছে, ওঁদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে। গ্র্যুকক আরও জানিয়েছেন, স্যানি নামের একটি আফ্রিকান গ্রে, ম্যাকাওগুলি গালিগালাজ শুরু করলেই "চোপরাও' বলে চেঁচায়। তবে বার্নি ও তার ছাত্ররা স্যানির কথায় কোনরকম পাত্তা দেয় না।

    গ্র্যুকক জানিয়েছেন এই গোত্রের পাখীগুলি মোটামুটি ৭০ বছর বাঁচে। কাজেই আরো অন্তত:পক্ষে ৬০ বছর এই খিস্তিবাজ পাখীগুলিকে সহ্য করে যেতে হবে। আশঙ্কার কথা হল এরা যদি আরো বহুসংখ্যক কথাবলা পাখীকে গালিগুলি শিখিয়ে দেয়, তাহলে কী হবে! হয়ত কথাবলা পাখীরাও এরপর জন্মেই খিস্তি দিতে শিখে যাবে এবং মানুষের ওপর ওদের রাগের প্রকাশ ঘটাবে মানুষেরই সৃষ্ট গালি দিয়ে।

    বিবাহিতা মহিলাদের জন্য অতিরিক্ত খাটুনী
    -------------------------------------

    স্বামীরা যে নিতান্তই অকম্মার ঢেঁকি এবং বাড়ীর কোন কাজেই তেমন সাহায্য করেন না, একথা অধিকাংশ বিবাহিতা মহিলাই বলে থাকেন। সম্প্রতি তার সমর্থন পাওয়া গেল একটি সমীক্ষায়। মিশিগান ইউনিভার্সিটির একটি নতুন সমীক্ষা জানাচ্ছে, স্বামী থাকলেই সাপ্তাহিক ৭ ঘন্টা অতিরিক্ত গেরস্তির কাজ বেড়ে যায়। উপরন্তু একজন স্ত্রী প্রতি সপ্তাহে তাঁর স্বামীর ঘরোয়া কাজের এক ঘন্টা বাঁচান।

    বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর সোশ্যাল রিসার্চ (আইএসআর) -এ সমীক্ষার প্রধান ফ্র্যাংক স্ট্যাফোর্ড জানিয়েছেন, "এটা একটা চিরপরিচিত ব্যপার। বিয়ে হলেই দেখা যায়, কাজের গতিপ্রকৃতি পরিস্কার দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে।পুরুষরা বাড়ীর বাইরের কাজেই বেশী ব্যস্ত, আর মেয়েরা ঘরেই সদাব্যস্ত। ' তিনি আরও জানান " --- সমস্যা জটিল হয়ে পড়ে যখন এইসব মহিলার সন্তান আসে।'

    আই এস আর-এ ১৯৬৮ থেকে আয়-গতিবিজ্ঞান (ইনকাম ডাইনামিক্স) এর ওপর যে ২০০৫ টাইম ডাইরি ডেটা তৈরী হয় তাকে ভিত্তি করেই স্ট্যাফোর্ড অনুসন্ধান করেন। গবেষকরা ডাইরী পড়ে নির্ধারণ করেছেন লোকে মোট কতটা সময় বিভিন্ন কাজে প্রতিদিন ব্যয় করেন। এরপর পুরুষ ও নারীদের জিজ্ঞাসা করে জানতে পারেন, রান্নাবান্না ও ঘরদোর পরিস্কার করতে ও টুকটাক সাধারণ কাজ করতে তাঁরা কত সময় ব্যয় করেন।

    সমীক্ষায় জানা গেল, অবিবাহিত মেয়েরা বাড়ীর কাজ সবথেকে কম করেন। প্রতি সপ্তাহের হিসাবে আনুমানিক ১২ ঘন্টা। অন্যদিকে বিবাহিত মহিলারা ৬০-৭০ বছর বয়সেও, ওঁদের থেকে প্রায় দ্বিগুণ বেশী কাজ করেন। তিনটির বেশী সন্তান আছে এমন মহিলারা সাপ্তাহিক ২৮ ঘন্টাই ব্যয় করেন ঘরদোর সাফসুতরো রাখা, রান্নাবান্না এবং কাপড়কাচার পিছনে।

    তবে ব্যপারটা যতটা খারাপ ভাবা হচ্ছে ততটা খারাপ নয়। ১৯৭৬ সালে সপ্তাহপিছু মহিলারা ২৬ ঘন্টা ঘরগেরস্তির কাজে মগ্ন থাকতেন, এবং সমীক্ষা অনুযায়ী পুরুষরা মাত্র ৬ ঘন্টা কাজ করেই নিশ্চিন্ত থাকতেন, সেখান থেকে তা ক্রমশ: কমে ২০০৫ এ ১৭ ঘন্টায় দাঁড়িয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ঘরগেরস্তি সামলানোর ব্যপারে পুরুষদের খাটাখাটনির পরিমাণ ১৯৭৬ সালে যেখানে ছিল ৬ ঘন্টা, ২০০৫ এ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ ঘন্টায়।

    এপ্রিল ২০, ২০০৮
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • খবর | ২০ এপ্রিল ২০০৮ | ৬১০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন