এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • দিল্লী টু বেঙ্গালুরু

    সুচেতনা দত্ত লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১০ | ৬৪৮ বার পঠিত

  • ইশকুল-টিশকুলের হাল হকিকৎ কেমন? আগের সপ্তাহের পর আজ আঁখো-দেখি-হাল নিয়ে লিখলেন সুচেতনা দত্ত। এ বিষয়ে আমরা আরও লেখা প্রকাশ করতে চাই। আপনি নিজেও লিখে ফেলুন না, আপনার অভিজ্ঞতা?

    ----------------------------------------------------------------

    লুরুবাসীরা, আপনারা কেউ কি গত সোমবার বিকেলে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সব রাস্তার মোড়ে মোড়ে কিছু বিভিন্ন বয়সের, বিভিন্ন আকারের মহিলাকে ভিখারীদের থেকে খুচরো পয়সা চাইতে দেখেছেন? আমিও ছিলাম কিনা ঐ দলে। ঐ দলের সবার ছেলে ঘ্যামা লুরুর ঘ্যামা এক স্কুলে পড়ে, ক্লাস ওয়ানে। ছেলেদের ঐ দিন অঙ্কের হোমওয়ার্ক ছিলো ৫, ১০, ২০, ২৫, ৫০ পয়সার কয়েনের ছাপ তোলা পেন্সিল ঘষে। ওরা টাকা-পয়সার আঁক কষা শিখতে যাচ্ছে তো, তাই পয়সা চেনা দিয়ে শুরু করছে। ওরা মোটেই ১টাকা = ১০০পয়সা মুখস্থ করে শুরু করবে না ওদের বাপ-দাদার মতো। ওদের কাছে লেখাপড়া হবে জলবৎ তরলম, ছবি এঁকে, ছাপ তুলে, আঠা দিয়ে সেঁটে ওরা কনসেপ্ট আত্মস্থ করবে। ৫ পয়সা আর ২০ পয়সা কোথাও পেলাম না, এক চাওয়ালার থেকে ২৫পয়সা কিনতে হোলো ৫টাকা দিয়ে। আর এক ভিখারী তার সঞ্চয় ঘেঁটে ১০পয়সা দিলো আমাদের ছেলেদের কল্যানার্থে, তার বদলে কিছুই নিলো না। বাড়ি এসে, ৫ পয়সা আর ২০পয়সা যোগাড় না করতে পারার জন্য, টিচারের কাছে ক্ষমা চেয়ে একটা চিঠি লিখে ছেলের অঙ্ক খাতায় স্টেপল করে দিলাম। ক্ষমা না চেয়ে উপায় কি, শাস্তিগুলো যে বাপ-দাদাদের ছেলেবেলার মতই রয়ে গেছে, রোদ্দুরে দাঁড় করিয়ে রাখা, নিল ডাউন করিয়ে রাখা, বেতের ঘা ইত্যাদি!
    তবু কেন এই স্কুলেই পড়াতে হবে? উত্তর চাই? তাহলে একটু ফ্ল্যাশব্যাক হয়ে যাক!
    ২০০৪এর জুন মাসে ব্যাঙ্গালোর এলাম এক বছরের ছেলে নিয়ে। কোথা থেকে? দিল্লি থেকে। আসার এক সপ্তাহের মধ্যে একটা ফোন এলো ল্যাণ্ডলাইনে।

    ""ম্যাডাম, আপনি খুব ভাগ্যবতী, ক্যাঙ্গারু কিডসে মাত্র ১২টা সিট আছে টড্‌লার প্রোগ্র্যামের জন্য, আর এই টড্‌লার সিটগুলো ভর্তি করা হয় বাই ইনভিটেশন অনলি। আপনি সেই ১২জন ভাগ্যবতী মাদের একজন, এই সপ্তাহের মধ্যে এনরোল করলে ২০% ক্যাশ ব্যাক, অন দা স্পট।''
    ""কিন্তু আমার ছেলের তো সবে মোটে এক বছর, ও কি করে স্কুলে যাবে! আপনি ভুল করছেন না তো?''
    ""ম্যাডাম, আমাদের টড্‌লার প্রোগ্র্যাম শুধুমাত্র এক বছরের বাচ্চা থেকে দুইবছরের বাচ্চাদের নিয়ে।''
    ""আমাকে প্লিজ একটু আপনাদের টড্‌লার প্রোগ্র্যামের ডিটেলটা বলবেন? মানে, এত ছোটো বাচ্চা তো, ও কি করে নিজে নিজে স্কুলে যাবে?''
    ""ম্যাডাম, আমাদের টড্‌লার প্রোগ্র্যামে মাকে বাচ্চার সাথে থাকতে হবে, রাইম্‌স পড়ে শোনানো, ছবি চেনানো (পিক্‌চার আইডেন্টিফাই), বিভিন্ন মোটর স্কিল গড়ে তোলার জন্য পুঁতি কুড়ানো (পিকিং আপ দা বিড্‌স), ব্লক সাজানো, বালি নিয়ে খেলা, জল নিয়ে খেলা, ......, মারা যাতে নিজের সন্তানের সাথে সুন্দর, গঠনমূলক সময় কাটাতে পারেন, অবশ্যই আমাদের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষিকাদের নজরদারির সীমানার মধ্যে, তাই আমাদের এই প্রয়াস। আমাদের ইন্দিরানগর শাখায় এলে আরো বিশদে জানতে পারবেন।''
    ""আচ্ছা, আমার ফোন নম্বর, বাচ্চার বয়স এগুলো কোত্থেকে পেলেন?''
    ""আমাদের বিশস্ত কোনো ক্লায়েন্টের থেকে।''
    ""কোন ক্লায়েন্ট?''
    ""দু:খিত ম্যাডাম, এর থেকে বেশি জানানোর নিয়ম নেই। ম্যাডাম, আমাদের সেন্টারহেডের সাথে আপনার দেখা করার সময় কখন ফিক্স করবো?''

    ""কোনোদিনও করবেন না, আমি যাবো না, এক বছরের ছেলেকে স্কুলে পাঠাবো না। আর আমাকেই যদি থাকতে হবে, তবে তোদের কেন পয়সা দিতে যাবো রে!''

    "কিন্তু ম্যাডাম, .....''
    "দ্যুৎ তেরি, নিকুচি করেছে, নরকে যাও বাছা'' ঘটাং।
    পরবর্তী এক বছরে আরো কিছু এরকম ফোন আসে। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ফোনটা আসে এক প্রতিবেশিনীর থেকে।
    "" মঞ্জু বলছি সি থ্রী থেকে। তুমি নিশ্চয়ই জানো, চেন্নাইয়ের বিখ্যাত পিএসবিবি স্কুলের কথা!''
    ""হ্যাঁ হ্যাঁ জানি তো, ব্যাঙ্গালোরেও তো আছে, ঐ ব্রিগেড মিলেনিয়ামের সাথে পার্টনারশিপে ব্রিগেড-পিএসবিবি স্কুল, তাই না!''
    "হ্যাঁ, কিন্তু ব্রিগেড-পিএসবিবি স্কুলের প্রিন্সিপাল কিছু নিয়মকানুন ফলো করছেন না, তাই পেরেন্টসরা প্রতিবাদ করে চেন্নাই পিএসবিবি কর্তৃপক্ষকে সব জানিয়েছিলেন। পিএসবিবি কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্রিগেড স্কুল থেকে বেরিয়ে আসার, আর প্রতিবাদী পেরেন্টসরা ঠিক করেছেন নিজেরাই একটা পিএসবিবি স্কুল করবেন, পিএসবিবি কর্তৃপক্ষ সমস্ত খরচ এবং বাকি আবশ্যকীয় সহায়তা দেবে। আজকে বিকেলে আমাদের পাড়ার মাঠে একটা মিটিং হবে, নতুন স্কুলটা কিরকম কি হবে সেই নিয়ে একটা প্রেজেন্টেশন দেবে, তুমি প্লিজ এসো কিন্তু।''
    ""ইয়ে মঞ্জু, মানে বলছিলাম কি, আমার ছেলের না এখনো দুই বছর হয় নি। আমি গিয়ে কি করবো, ওকে তো আর নেবে না নতুন স্কুল!!''
    ""সেই জন্যই তো তোমাকে ফোন করলাম, নতুন স্কুল চালু হতে তো কম করেও এক বছরেরও বেশি লেগে যাবে, ততদিনে তোমার ছেলে তিন বছরের হয়ে যাবে। এরা সিট ব্লকিং নিয়ম চালু করেছেন, ফার্স্ট কাম, ফার্স্ট সার্ভ। তুমি ৫০০০টাকা দিয়ে সিট ব্লক করে রাখতে পারো, আগামী ডিসেম্বরে একটা ইন্টারভিউ হবে, পরের জুন থেকে ক্লাস শুরু। তোমার ছেলে তো ৩বছরে নার্সারি দিয়ে শুরু করবে। আর যারা সিট ব্লক করে রাখবে এখন থেকে টাকা দিয়ে, তাদের অ্যাডমিশন নিশ্চিত। তুমি বিকেলে মিটিংটায় এসো, তাহলেই সব বুঝতে পারবে।''
    বিকেলে মিটিংয়ে গেলাম, একটা ঝিনচ্যাক হবু স্কুলবাড়ির ছবি দেখালো, ক্লাস ওয়ান থেকেই প্রতিটা ডেস্কে একটা করে কম্পিউটার দেবে বললো, ছাত্র-ছাত্রীদের বই-খাতার থেকে অডিওভিশুয়াল শিক্ষার উপর জোর দেওয়া হবে বললো, আরো অনেক কিছু বললো, আর এই যে ৫০০০টাকা দিয়ে এখন সিট ব্লক করা যাবে, সেটার রশিদ দেবে বললো। মোট কথা, আমার আর একটুও সন্দেহ রইলো না, পরের শনিবার গিয়ে ৫০০০টাকা দিয়ে সিট ব্লক করে এলাম, রশিদও পেলাম। ওরা আমাকে ওদের ইয়াহুগ্রুপে অ্যাড করে নিল আর স্কুল তৈরির সব আপডেট দিতে থাকলো হপ্তায় হপ্তায়।
    এবার আমি নিশ্চিন্তি। কিন্তু কয়েকটা বেয়াড়া বন্ধু ভয় দেখাতে শুরু করলো - ""একবারে বড় স্কুলে পাঠানো অত সোজা না, তোর ছেলের স্কুল হ্যাবিট তৈরি না হলে, তোর ছেলেই কষ্ট পাবে, তোর আর কি! তোর ছেলে তো স্পষ্ট কথা বলতে পারে না, আধো আধো বলে, ওকে কিন্তু বড় স্কুলে গিয়ে মুশকিলে পড়তে হবে, ওর এক্সপোজার দরকার। তুই ওকে বড্ড আগলে রাখিস, ওকে একটু চেনা গন্ডির বাইরে পা রাখতে দে, ওর সেল্ফ-এস্টিম গড়ে উঠতে দে।'' আমি খুব, খুব ভয় পেলাম, আর কাছাকাছি সব প্লেস্কুলে গিয়ে খোঁজ নিতে শুরু করলাম। সবগুলো দেখে শুনে পছন্দ হল ইউরো কিড্‌স। বাড়ির থেকে ভ্যান এসে নিয়ে যাবে আর দিয়ে যাবে। প্রথম ৭দিন মা সাথে থাকবে যাতে বাচ্চার কষ্ট না হয়, মাকে হঠাৎ করে ছেড়ে আসতে। স্কুলটায় একটা বেশ বড় চোখ জুড়িয়ে দেওয়া সবুজ মাঠ ছিল, ছোট্টো একটা লিলিপুলও! খুব ভালো লাগলো আর তাই এক বছর দশ মাসের ছেলেকে ভর্তি করে দিলাম ২৪০০০টাকা দিয়ে। মিথ্যে বলবো না, রশিদ দিয়েছিলো পুরো ২৪০০০টাকার। তবে স্কুল ভ্যানের ফি আলাদা, ৮০০০টাকা (পুরো বছরের), তারও রশিদ পাওয়া যাবে। আর ক্লাস শুরু হবে পরের জুনে , মানে আমার ছেলে দুইবছর দেড় মাস থেকে স্কুলে যেতে আরম্ভ করবে।

    ব্যাস, ডবল সুরক্ষাকবচ চাপিয়ে নিয়েছি, এবার আমাকে পায় কে! জুন এলো, ছেলে প্লেস্কুলে পা রাখলো। আস্তে আস্তে ধাত:স্থও হয়ে গেলো। ওখানে ভুলেও কখনো ওদের এবিসিডি বলানোর চেষ্টা হয় নি, নাচ-গান, স্যান্ডপিটে হুটোপাটি, গ্রসারি স্টোরে নিয়ে গিয়ে শাকসব্জি চেনানো এইসবই করাতো দুই-আড়াই বছরের বাচ্চাদের নিয়ে। তবে মাদের জন্য মাঝে মাঝে বেশ চাপ হত। ধরুন, ওরা পোকা চিনবে। কিভাবে চিনবে? পোকা সেজে। ফ্যান্সি ড্রেস হবে, আর এক এক জন এক এক রকম পোকা সেজে আসবে। আবার কোনোদিন হয়তো স্কুল থেকে দুপুরবেলায় নোটিস এলো, কাল আমাদের পাখির ফ্যান্সি ড্রেস। আর আমরা চার-পাঁচজন মা দল বেঁধে চললাম জয়নগরের দোকান থেকে পাখির পোশাক ভাড়া করে আনতে, মাঝে মাঝে মনোমালিন্যও হত, ""তুই কেন আগেই তোর ছেলের জন্য ময়ূরের ড্রেসটা নিয়ে নিলি, আমার মেয়েকে এবার দাঁড়্‌কাক সাজতে হবে! এদের কাছে আর কোনো পাখির পোশাক নেই এই মুহুর্তে। ভাইয়া, প্লিজ চেক কিজিয়ে না, ঈগল কা ড্রেস নহি হোগা কেয়া?'' এসব নিয়েই কেটে গেলো ৬মাস।

    নতুন পিএসবিবি স্কুল থেকে চিঠি এলো ডিসেম্বরের অমুক তারিখে তোমার ছেলেকে নিয়ে ইন্টার অ্যাকশনের জন্য এসো। ছেলে তো এদিকে ক অক্ষর গোমাংস, আর আমরাও কখনো তাকে বাড়িতে কিছু লেখাপড়া শেখানোর চেষ্টা করি নি। ইন্টারভিউয়ে আমাদের বিশেষ কিছু প্রশ্ন করে নি। কিন্তু ছেলেকে আমাদের সামনেই একটা বই থেকে গরুর ছবি দেখিয়ে বললো, ""এটা কি?'' ছেলে চুপ। আবার বললো ""এটা কি বলো তো? এটা কি একটা ডাক?'', হতচ্ছাড়া ছেলে উত্তর দিলো ""ফায়েড চিকেন''। আমরা হতবাক। পরের প্রশ্ন এক গোছা বেগুনি রংএর খেলনা আঙ্গুরের থোকা দেখিয়ে ""তুমি কি এগুলো খেতে ভালোবাসো? এগুলো কি বলো তো?'' ছেলে ততক্ষনে মজা পেয়ে গেছে, বললো ""কাট্টাড অ্যাপল''। প্রশ্নক?Ñ£ হাল ছেড়ে দিয়ে বললেন, ""ইন্টেলিজেন্ট চাইল্ড, বাট নট সুটেবল ফর আওয়ার স্কুল।'' আমি মরীয়া হয়ে বললাম, ""আমি আগেই ৫০০০টাকা দিয়ে সিট ব্লক করে রেখেছি, এই দেখুন রশিদ''। উনি হেসে বললেন, ""ব্যাকুল হবেন না, হয়তো ইশ্বর আপনাদের ছেলের জন্য অন্য কিছু ভেবেছেন''। পরের সপ্তাহে গিয়ে টাকা ফেরত নিয়ে নিতে বললেন। বাড়ি এসে হতচ্ছাড়াকে দু ঘা দিতে ইচ্ছে করছিলো, কিন্তু নিজেই নিজেকে সান্ত্বনা দিলাম, ভারি তো একটা স্কুল, যত রাজ্যের গোঁড়ামি শেখায় ছেলেমেয়েদের, টিফিনে ডিমও নিয়ে যেতে দেয় না, পড়বে না আমার ছেলে ঐ স্কুলে।

    ছেলে প্লেস্কুলেই আনন্দে যেতে থাকলো, আর আমিও ভাবলাম, মোটে আড়াই বছর বয়স এখনি এত কিছু শিখে নিতে হবে কেন? ও এখানে যেমন মজায় আছে, থাক, কিন্ডারগার্টেনটা এই প্লেস্কুলেই শেষ করুক, তারপর কোলকাতায় নিয়ে গিয়ে ক্লাস ওয়ানে ভর্তি করে দেবো। আরো এক বছর আনন্দে কেটে গেলো, ছেলে এখন সাড়ে তিন, প্রিনার্সারি শেষ করে নার্সারিতে উঠেছে। পুজোয় কোলকাতা গেলাম, বিভিন্ন স্কুলগুলোয় খোঁজ্‌খবর নিলাম। অধিকাংশই জানালো তারা নার্সারিতেই অ্যাডমিশন পর্ব চুকিয়ে নেয়, ক্লাস ওয়ানে ঢুকতে হলে (তাও ভ্যাকান্সি থাকলে, তবেই) লেখা পরীক্ষা দিয়ে ঢুকতে হয়। আরেকটা ধাক্কা। ওর প্লেস্কুলে তো জানিয়েই দিয়েছিলো তারা আপার কেজির আগে লেখা শেখাবে না, আর আপার কেজিতেও এবিসিডি, ওয়ান টু টোয়েন্টির বেশি আর কিছু লেখা শেখাবে না। হায় হায়, এখন আমার কি হবে! শয়তানেরা বছর বছর যে ২৫হাজার টাকা করে নেয় আর লেখা শেখাবে না কেন? কোলকাতায় এদিকে দেখছি সব ছোটো ছোটো বিদ্যাসাগর, আইনস্টাইন ঘুরে বেড়াচ্ছে, তারা নার্সারিতেই দিস ইস আ চেয়ার, দ্যাট ইস আ টেবল লিখে ফেলছে, পাঁচ আর চার যোগ করে নয় বলে দিচ্ছে। এদের সাথে আমার গাধাটা পারবে কি করে!

    ফিরে এলাম ব্যাঙ্গালোরে। ঠিক করলাম এই প্লেস্কুল ছাড়িয়ে ওকে কোনো বড় স্কুলে দিতে হবে, যেখানে লিখতেপড়তে শেখাবে। শুরু হল ব্যাঙ্গালোর স্কুল অনুসন্ধান পর্ব। শহরের যেদিকে থাকি, সেই দক্ষিণে সবচেয়ে নামকরা দুটো স্কুল হল শ্রীকুমারনস আর ডিপিএস সাউথ। শ্রীকুমারনস থেকে প্রতি বছর ফাটাফাটি রেজাল্ট করে ছেলেমেয়েরা, শুনেছি নাকি আইআইটিও পায়! চলো, ফর্ম তোলা যাক। ফর্ম তুলতে গিয়ে জানলাম এদের দুটো বোর্ডই আছে, সিবিএসই আর আইসিএসই। কিন্তু এদের অ্যাডমিশনও নার্সারিতেই হয়ে যায়, পরের অ্যাডমিশন আবার হয় ওয়ানে ইন্টারভিউ আর পরীক্ষা দিয়ে। কিন্তু আমার তো আপাতত: লোয়ারকেজিতে অ্যাডমিশন চাই! চল তাহলে ডিপিএস সাউথ। এনারা জানালেন ফর্ম দেওয়া আগেই শেষ, আমরা দেরি করে ফেলেছি। তবে কোনো পরীক্ষা দিতে হয় না লোয়ারকেজিতে ঢুকতে, তবে বাবামা আর বাচ্চার একটা ইন্টার অ্যাক্‌শন হয়। আমরা ফোর্সড অ্যাপ্লিকেশন করে ইন্টারভিউএর জন্য আবেদন করতে পারি, মোটামুটি সবাই ইন্টারভিউএর জন্য ডাক পায়।

    ""হ্যালো মঞ্জরী, তোর ছেলেকে ডিপিএসে দিয়েছিস না গত বছরে, আমাকে একটু বলবি ওরা ইন্টারভিউয়ে কি প্রশ্ন করে?''
    ""আইয়ো, ইতনা গ্রিল কিয়া থা, ক্যা বোলু! ওখানে তোকে তোর সব সার্টিফিকেট নিয়ে যেতে হবে, তারপর ওরা তোকে তোর কোয়ালিফিকেশন নিয়ে প্রশ্ন করবে। আমাকে খুব ঝেড়েছিলো আমি কেন কম্পিউটার ইঞ্জিনীয়ারিং করেও বাড়িতে বসে আছি, তাহলে শিক্ষার কি দাম রইলো, আমার ছেলেও মাকে এইভাবে দেখতে দেখতে নিজের স্পাউসের থেকে একই স্যাক্রিফাইস আশা করবে। অল রাবিশ। ''
    ""মঞ্জরী আমার পার্ট টু মানে শেষ পরীক্ষায় মোটে ৪৮%, আমার ছেলেকে তো নেবেই না রে, আমার কি হবে?''
    ""টেনশন মত লে ইয়ার, স্যালারি স্লিপ দিখানে কা, হাজব্যান্ডকা কোয়ালিফিকেশন দিখানে কা, ও আদমি ফির কিস কাম কা!! অ্যাডমিশনকে টাইম ৬৫কে টু ৭০কে লেতা হ্যায় ইয়ে স্কুল, বাস ওহি কনফিডেন্স দেনে কা, কি তেরে পাস পয়সা হ্যায় অউর ঘর মে ইংলিশ বোলতে হ্যায়।''
    ধুর, অ্যাত্তো তেল এই স্কুলের! আর ফোর্সড অ্যাপ্লিকেশন যে কোনো সময়েই করা যায়, আগে অন্য স্কুলগুলো দেখে আসি চলো।

    পরের গন্তব্য এনপিএস কোরামঙ্গলা। আরেকটা ফাটাফাটি স্কুল। এনারাও ফর্ম দিলেন, আর জানালেন ওনাদের বিভিন্ন প্যারামিটার আছে, সেগুলো মিলে গেলে তবেই ইন্টারভিউএর জন্য ডাক পাওয়া যাবে। বলাই বাহুল্য, আমরা এখান থেকে ডাক পাই নি।

    নামজাদা স্কুলগুলোর মধ্যে বাকি রইলো বল্ডউইন, সেন্ট জোসেফ আর বিশপ কটন। কিন্তু তিনটেই বাড়ি থেকে অনেক দূর। কিন্তু আর তো কোনো অপ্‌শনও নেই আমাদের কাছে, চলো ফর্ম তো নিয়ে আসি, তারপর ভাববো বাকি সব কথা।

    জানো তো, আমার এক কলিগের ছেলে বল্ডউইনে ভর্তি হয়েছে, ওকে ৩০০০০টাকা দিতে হয়েছে স্কুলকে। অ্যাডমিশন ফির বাইরে আরো ৩০০০০টাকা।
    মোটে ৩০০০০! জানো বিশপ কটনে দেড় লাখ নেয়।
    আচ্ছা আমরা এরকম পাগলামি করছি কেন? নামিদামি স্কুলে না পড়লে কি হয়! তুমি তো বাংলা মিডিয়াম স্কুলে পড়েছো, কি ক্ষতি হয়েছে! সাধারণভাবে বড় হোক না!
    হুঁ:, নিজেকে ক্লাস সিক্স থেকে লার্নিং ইংলিশ পড়তে হয় নি কিনা, তাই ছেলের জীবন নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করার শখ! তুমি জানো, আমি আজও আমার টিমের জুনিয়র ছেলেমেয়েগুলোর সাথে ইংরিজিতে ফট্‌ফট করতে পারি না, হিন্দির মিশেল দিয়ে সামাল দি। এখনো আমার গলা শুকিয়ে যায় একটানা পাঁচ মিনিট ইংরাজিতে কথা বলতে হবে ভাবলেই। আমি কিছুতেই আমার ছেলের জীবন নিয়ে দর কষাকষি তে যাবো না। স্কুল যা টাকা চাইবে, দিয়ে দেবো।
    কিন্তু ছেলেটা ওর জীবন শুরু করবে টাকার বিনিময়ে সিট কিনে!
    তাই নাকি বিবেকচন্দ্র! তো তুমিই একটা স্কুল খোলো না কেন চাকরি ছেড়ে! যেখানে বিনাপয়সায় সিট পাওয়া যাবে। তাতেও কেউ আসবে না তোমার স্কুলে পড়তে। তুমি জানো কি রূপা এমাসে ১০০০০টাকা অ্যাডভান্স চেয়েছে? ওর ছেলের স্কুল চেঞ্জ করবে। নতুন স্কুলে ডোনেশন ৫০০০টাকা, আর বইখাতা-পোশাক, মাইনে নিয়ে বাকি ৫০০০টাকা। আমি ওকে বলেছিলাম ওর ছেলেকে আমি বাড়ির সামনে আরাধনা স্কুলে ভর্তি করে দেবো, কিন্তু ও বললো ইংলিশ মিডিয়াম ছাড়া পড়াবে না। বাড়ির কাজের মেয়ের ছেলেও ৫০০০টাকা ডোনেশন দিয়ে ইংরাজি শিখবে আর উনি বাবা হয়ে আমার ছেলের কপালে তেঁতুল গুলতে এসেছেন নীতিকথার ঝুলি নিয়ে!
    ঠিক আছে, ঠিক আছে, এখন নামো, সেন্ট জোসেফ এসে গেছে।

    সেন্ট জোসেফে ফর্ম দেওয়া শেষ, এমন কি নামের লিস্টও বেরিয়ে গেছে, টাকা জমা দিয়ে অ্যাডমিশন পর্বও প্রায় শেষ। এখন আর নেওয়া অসম্ভব, ফাদার শান্তভাবে বুঝিয়ে দিলেন। পরের বছর যদি একটাও সিট খালি হয়, উনি আমার কথা মনে রাখবেন বললেন। খুব মন খারাপ হয়ে গেলো, এত সুন্দর স্কুল, আমার ছেলেটা যদি এখানে পেয়ে যেতো!

    বিশপ কটনে এলাম। ওরে বাবা রে, এই অ্যাত্তো বড় স্কুল! ইশ্‌শ কত্ত বড় মাঠ! একটা নয়, আরো চারটে বড় বড় মাঠ! বাবা রে, ছেলেগুলোর পা ব্যথা হয়ে যায় না অ্যাত্তো বড় স্কুলে হাঁটাহাঁটি করতে গিয়ে! এক মাত্র বিশপ কটনেই এখনও ফর্ম দেওয়া হয় নি। ফর্ম দেওয়া হবে জানুয়ারির শেষে।
    ""ম্যাডাম, বাচ্চার কি পরীক্ষা নেওয়া হবে?''
    "না না, আমাদের স্কুলে এখন আর অ্যাডমিশন টেস্ট নেওয়া হয় না"
    ""তাহলে কি বাবা-মার ইন্টারভিউ নেবেন?''
    ""আপনি আগে তো ফর্ম তুলুন, তখন কি নিয়ম হয় দেখুন?''
    ""মানে আপনারা কি প্রতি বছর নিয়ম পাল্টান নাকি?''
    ""মাই গড! সো মেনি কোয়েশ্চেনস! আমাদের নতুন প্রিন্সিপাল এসে সিটসংখ্যা কমিয়ে দিয়েছেন, সেক্‌শনসংখ্যাও কমিয়ে দিয়েছেন এই বছর থেকে, এখন আপনাদের ভাগ্য, দেখুন ছেলে পায় কিনা!''

    জানুয়ারি মাসে ফর্ম তুলতে গেলাম। স্কুলটা দেখে, ছেলেরা চুটিয়ে খেলছে দেখে খুব ভালো লেগে গেলো। এখানে যেন পেয়ে যায়! এক পুরনো বন্ধু, যার ছেলে এই স্কুলেই উঁচু ক্লাসে পড়ে, সে বললো, সে দেড় লাখ টাকা মাইনাস রশিদ দিয়ে ভর্তি করেছিলো ছেলেকে, আগের প্রিন্সিপাল এবেনেজারের সময়ে। এক কেরানিবাবু ডীলটা করেন। ফর্ম জমা দিতে গেলাম। ফর্মে মা-বাবার প্রফেশন, মা-বাবার কোয়ালিফিকেশন, মা-বাবার মাইনে সবই লিখতে হয়েছে, কিন্তু কোনো প্রমাণপত্র দিতে হবে না সাথে, ছেলের বার্থ সার্টিফিকেট শুধু দিতে হবে। ফর্ম জমা নিচ্ছেন সেই কেরানিবাবু। আমার তো জ্যাক নিকলসনের মত ওসিডি আছে, তাই জমা দিয়ে অফিসের বাইরে এসেই মনে হলো ফর্মের সাথে বার্থ সার্টিফিকেটের কপিটা স্টেপল করে লাগিয়েছিলাম তো? ঝড়ের মত আবার কেরানিবাবুর ঘরে ঢুকে পড়লাম, তিনি তখন ফর্মগুলো সর্ট করছিলেন, ওনাকে বললাম প্লিজ একটু দেখুন না, আমি বার্থ সার্টিফিকেটের কপিটা দিয়েছি কিনা। ততক্ষনে আমার দেখা হয়ে গেছে, ফর্মগুলো সাজানো হচ্ছে চারটে আলাদা আলাদা ফোল্ডারে। প্রাইভেট/আই টি সেক্টর, সরকারি চাকুরে, খ্রীশ্চান এবং চার নম্বর হলো বাবা বা ভাই এই স্কুলেই পড়েছে কিনা। কেরানিবাবু আমাকে নিশ্চিন্ত করলেন আমি ঠিকঠাক ফর্ম জমা দিয়েছি জানিয়ে। কিন্তু আমি তখন মরীয়া হয়ে বলেই ফেললাম, ""আপনারা বাচ্চার পরীক্ষা নিচ্ছেন না, মাবাবার ইন্টারভিউ নিচ্ছেন না, তাহলে সিলেক্ট করবেন কিসের ভিত্তিতে?'' আসলে আমি মোটেই চাই না, বাচ্চার পরীক্ষা হোক। কবাবু বললেন, ""হোপ ফর দা বেস্ট, ম্যাডাম''। খুব স্মার্ট আমি বললাম, ""প্লিজ গিভ মি সাম হোপ। আমাকে দয়া করে জানান, আমি কি করে আমার ছেলের জন্য এই স্কুলে একটা সিট নিশ্চিত করতে পারি? আমি এই স্কুলে ভর্তি করার জন্য সব কিছু করতে প্রস্তুত। আমি শুনেছি এখানে ভর্তি করতে দেড় লাখ টাকা লাগে, টাকাটা আমি কিভাবে দিতে পারি?''
    কবাবু মুচকি হেসে বললেন, ""আপনি টাকা দিতে প্রস্তুত হলেও এবছরে টাকা নেওয়ার কেউ নেই, নতুন প্রিন্সিপাল এসে সমস্তকিছু বন্ধ করে দিয়েছেন। তাই আমি আপনাকে কোনোভাবেই কোনো আশা দিতে পারছি না। প্রিন্সিপাল নিজে সমস্ত ফর্ম খুঁটিয়ে পড়ছেন। তারপর শর্টলিস্ট করছেন।'' বিমর্ষ হয়ে বেরিয়ে এলাম।

    তারপর থেকে পাক্কা এক মাস ছেলে প্লেস্কুল থেকে ফিরলেই ছেলেকে নিয়ে টানতে টানতে বিশপ কটনে আসতাম কবাবুর থেকে একটু ভরসা পেতে যে আমার ছেলের ফর্মটা শর্টলিস্টেড হলো কিনা। আমি একাই না, আরো অনেক মা আসতেন আমার মত। কতিপয় বাবাও। অবশেষে একদিন লিস্ট বেরলো, আমার ছেলের নাম আছে তাতে। যেসব বাচ্চাদের নাম নেই, তাদের মাদের কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখে মনখারাপ নিয়ে বাড়ি ফিরলাম। তখনো ভাবছি এবার হয়তো টাকা চাইবে, কিন্তু না ব্রোশিওরে যে ৪২০০০টাকা লেখা ছিলো তার বেশি আর এক টাকাও দিতে হয় নি। বলতে ভুলে গেছি, নতুন প্রিন্সিপাল এক এক সেক্‌শনে ছাত্রসংখ্যা ৭৫ থেকে ৫০য়ে নামিয়ে এনেছেন। এখন রেশিও হলো ৫০ ছাত্র : ২ শিক্ষিকা। আর আমার ছেলে এই রক্ষোদেশে দ্বিতীয় ভাষা বাংলা নিয়েছে। দ্বিতীয় ভাষা হিন্দি, কন্নড়, তামিল, তেলেগু, মালয়ালম, বাংলা, ওড়িয়া নেওয়া যায়। ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ আর জার্মানও নেওয়া যায়, তবে তার জন্য ছাত্রকে বিদেশি পাসপোর্টধারী হতে হবে।

    আপাতত এটুকুই। স্কুলে ঢোকার পরে কী কী হল সেসব নাহয় পরে কখনো।

    ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১০ | ৬৪৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন