- হ্যাপি বার্থডে বাবা!
- থাক, প্রণাম করতে হবে না। আমাদের কালে জন্মদিনের ঘটা ছিল না। তোমার জন্মদিন তো শুনি খুব ধুমধাম করে হত।
- আগে সেরকম কিছু নয়, কিন্তু শেষের ক'বছর এত লোক আসত, কাজকর্ম কিছু করা যেত না। আমি আর বিজয়া গ্র্যান্ড হোটেলে চলে যেতাম।
- আমি বিলেতে থাকার সময়ে রবিবাবুর জন্মদিনের আয়োজন করেছিলাম। উনিও বিশেষ আড়ম্বর পছন্দ করতেন না। কিন্তু আমাদের যাদের পছন্দ করতেন তাদের সঙ্গে সময় কাটাতে আপত্তি ছিলনা, বিশেষতঃ বিলেতে। এখন তো ওনার জন্মদিন উৎসব হয়ে গেছে।
- সেইখানেই তুমি 'স্পিরিট অফ ... ...
আমাদের ভোঁদাদার সব ভাল, খালি পয়সা খরচ করতে হলে নাভিশ্বাস ওঠে। একেবারে ওয়ান-পাইস-ফাদার-মাদার। নিজে নাহক ভাল কাজ করে। শুধু পয়সাই নয়, অঢেল সময়ও হাতে। বাড়িতে শুধু আপনি আর কপনি - ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন, বেয়াই-বোনাই, জগাই-মাধাই কেউ নাই। কাজেই ভোঁদাদা বই পড়ে। বাছবিচার নেই, বই পেলেই হল। আর এই বই পড়ে পড়ে বিচিত্র সব বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেছে। ভাসা-ভাসা নয়, একেবারে গভীর সুচিন্তিত জ্ঞান। ভোঁদ্দা আজ এর সঙ্গে ভ্যালু ইনভেস্টিং নিয়ে আলোচনা করল, তো ওর সঙ্গে প্রাচীন মোঘলাই রন্ধনপ্রণালী নিয়ে; কার সঙ্গে দেখলাম গভীর তর্কা ... ...
স্টার্ট-আপ সম্বন্ধে দুচার কথা যা আমি জানি। আমি স্টার্ট-আপ কোম্পানিতে কাজ করছি ১৯৯৮ সাল থেকে। সিলিকন ভ্যালিতে। সময়ের একটা আন্দাজ দিতে বলি - গুগুল তখনও শুধু সিলিকন ভ্যালির আনাচে-কানাচে, ফেসবুকের নামগন্ধ নেই, ইয়াহুর বয়েস বছর চারেক, অ্যামাজনেরও বেশি দিন হয়নি। অতএব স্টার্ট-আপ সম্বন্ধে গভীর বাণী দেবার সবরকমের হক ও জ্ঞানভান্ডার আমার আছে।
প্রথম যে স্টার্ট-আপে ঢুকেছিলাম সে একেবারে ওয়ান-পাইস ফাদার-মাদার। একতলার করিডোরের দুপাশে তিনটে মাঝারি সাইজের ঘরে গাদাগাদি করে জনা-পঁচিশ লোক। তারপরে লোক বাড়লে আরেকটা ... ...
এ লেখায় খট্টাঙ্গ নেই। স্রেফ নামে টেনিদাকে স্মরণ করে অলংকার হিসেবে আছে। আছে পলান্ন অর্থাৎ পোলাও। পোলাও বলতেই মনে পড়ে ছেলেবেলায় ভিয়েন বসান বিয়েবাড়ির খাওয়া। লম্বা নড়বড়ে ডেকরেটরের টেবিলে হলদেটে সাদা নিউজপ্রিন্ট ধরণের কাগজ পাতা। তার ওপর কলাপাতা। সেখানে লুচি বা রাধাবল্লভী, ছোলার ডাল, বেগুন ভাজা, ছ্যাঁচড়া, মাছ-টাছের পরে মাংসর বালতি আসার আগে আসত পোলাওয়ের বালতি। সে পোলাও হত নিরামিষ। কিসমিস, কায়জুবাদাম দেওয়া হলদে তেলাল মিষ্টি-মিষ্টি ভাত। ডাকনাম ছিল উড়ে বামুনের পোলাও। অনেকে ঘি-ভাত বলেও ডাকতেন। গরগরে মাংসর ... ...
তোষক আশগুপ্ত নাম দিয়ে গুরুতেই বছর দশেক আগে একটা ব্যঙ্গাত্মক লেখা লিখেছিলাম। এটা তার দোষস্খালন বলে ধরা যেতে পারে, কিন্তু দোষ কিছু করিনি ধর্মাবতার।
ব্যাপারটা এই ২০১৭ সালে বসে বোঝা খুব শক্ত, কিন্ত ১৯৯২ সালে সুমন এসে বাঙলা গানের যে ওলটপালট করেছিলেন, ঠিক সেইরকম বাংলা ক্রীড়াসাংবাদিকতার জগতে অশোক দাসগুপ্ত করেছিলেন সত্তরের শেষাশেষি। মুকুল, অজয় বসুদের গতানুগতিকতার খপ্পর থেকে বের করে মাটির ওপর শক্ত জমিতে বসিয়ে দিলেন বাংলার স্পোর্টস জার্নালিজমকে। ক্রীড়াসাংবাদিকতা বলতে অবশ্য শুধুই ফুটবল। আর কিছু ক্ ... ...
ক্রিকেট মানেই যুদ্ধু। আর যুদ্ধু বলতে মনে পড়ে ষাটের দশক। এদিকে চীন, ওদিকে পাকিস্তান। কিন্তু মন পড়ে ক্রিকেট মাঠে। ১৯৬৬ সাল হবে। পাকিস্তানের গোটা দুয়েক ব্যাটেলিয়ন একা কচুকাটা করে একই সঙ্গে দুটো পরমবীর চক্র পেয়ে কলকাতায় ফিরেছি। সে চক্রদুটো অবশ্য আর নেই। পাড়ার "জগন্নাথঅ ফ্র্যায়েড স্ন্যাক্স" নামক তেলেভাজার দোকানে বাঁধা দিয়ে পাক্কা দুটি বছর মুড়ি-তেলেভাজা পেঁদিয়েছি। সে যাক, সেবার তোদের মনসুর পতৌদি এল সকালবেলা। সবে এজমালি বাথ্রুম ফাঁকা পেয়ে একটা বিড়ি নিয়ে ঢুকেছি অমনি দরজায় দুম-দুম। পতৌদি এসেছে। ... ...
ঘরে ঢুকে দেখি নীচু হয়ে পায়ের পাতায় কী একটা লাগাচ্ছেন। সামনে হোমিওপ্যাথির বাক্স খোলা। জিগেস কল্লাম, "পায়ে কী হল?"
- আর বোলোনা। কাল জন্মদিন ছিল। এত লোক এসে প্রণাম করেছে যে পায়ের পাতা ছড়ে গেছে। ওষুধ লাগাচ্ছি।
- কেক খেলেন জন্মদিনে?
- কেক? না না। কেক-টেক নয়। বউমা পায়েস করেছিল, তাই একটু খেয়েছি।
- আর কে এল?
- কে এলনা সেটা জিগেস কর।
আমি ইতস্ততঃ করছিলাম। একশ সাতান্ন বছর তো পূর্ণ করলেন, বয়েসে অনেকটাই বড়। কী বলে ডাকব? দাদু? কীরকম যেন চ্যাংড়া চ্যাংড়া শোনায়। গুরুদেব? বললেই ... ...
হাটে-বাটে, মাঠে-ঘাটে, রণে-বনে, জলে-জঙ্গলে লোকে আমায় জিগেস করে, "ন্যাড়াবাবু, আপনার এই অতুলনীয় গেম-রিডিং আপনি কোথা থেকে শিখলেন?" আমি মৌরি হেসে পাশ কাটিয়ে যাই। উত্তর দিইনা।
আজ বিবেক বলল, "এ কি সঙ্গে নিয়ে যাবি? বিলিয়ে দে, বিলিয়ে দে।" তাই আমার গোপন কথা আজ ফাঁস করেই দিই।
দেখুন বালকবৃন্দ ও স্নেহের হিজিবিজবিজ, আমরা যখন খেলার অ্যানালিসিস শিখছি তখন না ছিল কালার টেলিভিশন, না ছিল টাক-মাথায়-ঢেউ-খেলান-চুল নিয়ে হর্ষ ভোগলের দল। গাভাসকার-গাঙ্গুলির দল তখন ব্যাট নাবিয়েই কমেন্ট্রিবক্সে ছুটত না। আম ... ...
ইতিহাসে যদি প্রশ্ন আসত, "অ্যামেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধে ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের প্রভাব আলোচনা করো" আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফেল করতাম। কিন্তু এখন এলে এই লিখব -
১৭৫৭ সালে যুদ্ধ নামক প্রহসনে বাংলা চলে গেলে লর্ড ক্লাইভের হাতে। শাসনের থেকেও বড় কথা যথেচ্ছ শোষণের ভার ক্লাইভ-সাহেব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। তখনকার হিসেবে শোনা যায় কুড়ি লাখ ডলারের তুল্য উপহার হাতবদল হয়েছিল। আজকের হিসেবে সে অংক না ভাবাই ভাল। বলা হয়, ক্লাইভ-সাহেব রাতারাতি বিশ্বের ধনীতম হয়ে পড়েছিলেন। সাহেবের খাঁই ্তাতে কিছুমাত্র কমেনি।
ছেলেবেলার কোন ইচ্ছে বড়বেলায় পূর্ণ হলে অনেক সময়েই তার স্বাদ খুব মুখরোচক হয়না। ছেলেবেলা থেকে ক্যাভিয়ারের নাম শুনে বড়বেলায় বেড়ালের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ে যখন খেতে পেলাম, তখন মনে হল, "এ বাবা, এই ক্যাভিয়ার!" সবারই বোধহয় এরকম কোন-না-কোন অভিজ্ঞতা আছে। আকাঙ্খা আর পরিপূর্ণতার তফাত যোজনখানেক। এর উল্টো অভিজ্ঞতা বরং কম হয়। মানে যেখানে অভিজ্ঞতা আকাঙ্খাকে শুধু মিটিয়েছে তাইই নয়, তার ওপরে কিছু ফাউও দিয়েছে। এরকম একটা উল্টো অভিজ্ঞতা আমার জিম করবেট পড়া।
ছেলেবেলায় বাড়িতে সত্যজিতের বহু-আলোচিত প্রচ্ছদওলা 'কু ... ...