সদিচ্ছা ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন প্রতিটি মানুষ আজ পরিষ্কার স্ট্যান্ড নেবেন, যে দল যে-কেন্দ্রে বিজেপির বিরুদ্ধে শক্তিশালী তাকেই ভোট দেওয়া হবে। যদি তৃণমূল হয় তৃণমূল, যদি সিপিএম হয় সিপিএম, কংগ্রেস হলে কংগ্রেস। সিধা হিসাব। বিরোধী দল রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণে জোট করতে না-পারলে, মানুষই করবে মহাজোট। কিন্তু এই পরিষ্কার স্ট্যান্ড সিপিএমের না-পসন্দ। কেন? ... ...
শুধু বলি, স্পষ্টভাবে বলুন - যা বলতে চাইছেন, দায়িত্ব নিন। উত্তরটি গ্রহণযোগ্য না-ই হতে পারে - সর্বজনগ্রাহ্য তো কখনোই হবে না - তবুও, স্পষ্ট অবস্থান ও উচ্চারণ জরুরি। শুধুই নেতি নেতি করে আধ্যাত্মিক সত্যে পৌঁছানোর সম্ভাবনা থাকলেও, রাজনৈতিক লক্ষ অর্জন মুশকিল। বিরোধিতা করার মুহূর্তে বিরুদ্ধ কোনো একটি দলের পক্ষে বোতাম টেপা জরুরি। আমার পক্ষে সেই বোতাম বামেদের - আপনি সিদ্ধান্ত নিন, সেই বোতাম কাদের। ... ...
চে-র টাট্টু খোদাই একজন অসৎ মানুষ বিজেপিতে গেছে বলে এতো এতো খিল্লি! তার মতোই আর কয়েকজনও বিজেপিতে গেছে। কিন্তু লেসার ইভিলে যে পাল্লা অনেক ভারি! পয়সা ছড়িয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে কিনে নিলে, ট্রেন্ড দেখে যার সম্ভাবনা খুবই বেশি বলে সবাই বলছে, তখন কী হবে? ... ...
আমাদের এই ভাঙা-চোরা, কালি-ঝুলি মাখা অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা যে গণতন্ত্র আছে সেটাকে রক্ষা করাই আমাদের এখন প্রধান কাজ। ভবিষ্যৎ প্রমাণ করবে, কিন্তু এই মুহূর্তে বলা যায়, সেই কাজে বাঙালি একটা বড় ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করল, এবারের ভোটে বিজেপিকে রুখে দিয়ে। বাঙালি বজেপির বিরুদ্ধে একটা শক্তিকে চেয়েছিল। বিজেপিও তার বহুমাত্রিক, সর্বগ্রাসী আক্রমণ দিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছিল কে তার প্রধান শত্রু। সিপিএমের ‘বিজেমূল’ প্রচারে মানুষ একেবারেই কান দেয়নি। বাঙালির কাছে এই মুহূর্তের বাস্তবতা এটাই যে, তৃণমূল নেত্রী মমতা ছাড়া তাদের কাছে নির্ভরযোগ্য কোনও শক্তি ছিল না। যারা তাঁকে ভোট দিলেন, তাঁদের অনেকেই তৃণমূল নেত্রী অতীতে কী কী বলেছেন, কী কী করেছেন এই সব অসংখ্য প্রশ্ন এবং তর্ক সরিয়ে রাখলেন। বিজেপির পরাজয় তারই পরিণতি। ... ...
বিমানবাবুরা জামায়েত উলেমায়ে হিন্দের পদাধিকারী বলে সিদ্দিকুল্লাকে সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি মনে করেন। পড়াশোনা করার জন্য বিখ্যাত কমরেডরা ‘জামায়েত উলেমায়ে হিন্দ’ শব্দবন্ধের মানে জানে না, সংস্থাটির ইতিহাস জানে না। চাড্ডিমান্য সংজ্ঞা অনুযায়ী দাড়ি আর টুপি ছাড়া সিদ্দিকুল্লার কোন নেড়েগুণ নাই। অধুনা রাজনৈতিকোচিত হার্মাদপনা, বাটপাড়ি অবশ্যই আছে। তবু, বিমানদা যখন বলেছেন, তখন সিদ্দিকুল্লা জামাতে উলেমায়ে হিন্দের পদাধিকার বলেই সাম্প্রদায়িক। তাই বিমানদার এককাঠি সরেস, নিরেট, একেবারে একটা আস্ত জ্যান্ত পীরজাদা চাই! উলেমায়ে হিন্দ বনাম স্বয়ং শ্রীমান পীরজাদা! ইহা ধ্রুপদী প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িক রাজনীতি। ... ...
একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৪ বছরের প্রতিবন্ধী কিশোর শ্রীমান মৃণাল হক বলেছে যে, স্থানীয় বাজারের মধ্যে তাকে টুঁটি চেপে ধরে সিআইএসএফ কর্মীরা লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করে। মারের চোটে সে মাটিতে পড়ে গেলে কিছু গ্রামবাসী প্রতিবাদ করায় সে সিআইএসএফ কর্মীদের হাত থেকে ছাড়া পায়। আমাদের জেলা মানবাধিকার আধিকারিক নিহতদের পরিবারের সাথে কথা বলেছেন। জানা গেছে, শ্রী নূর ইসলাম তাঁর ৫ সদস্যের পরিবারের এমকমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন প্রবাসী শ্রমিক। ৮ এপ্রিল ২০২১ তিনি দেশে ফেরেন ভোট দেওয়ার জন্য। বুকে গুলি লাগা অবস্থায় মাথাভাঙ্গা সাবডিভিশনাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর, তাঁকে মৃত বলে ঘোষনা করা হয়। শ্রী মণিরুল জামাল তাঁর ৭ সদস্যের পরিবারের মুখ্য রোজগেরে ছিলেন। তিনিও একজন প্রবাসী শ্রমিক ছিলেন। ৯ এপ্রিল ২০২১ গ্যাংটক থেকে নিজের গ্রামে ফেরেন ভোট দেবার জন্য। শ্রী চাইমূলও তাঁর ৫ সদস্যের পরিবারের প্রধান রোজগেরে ছিলেন। শ্রী হামিদুল মিয়াঁ তারঁ ৪ সদস্যের পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন। তাঁ স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। ... ...
কমিউনিস্ট বলতে জনমানসে এক বিচিত্র স্টিরিওটাইপ রয়েছে। তারা দুর্নীতিমুক্ত সৎ হবে, তারা বহুজনহিতায় জীবন উৎসর্গ করবে, তারা সর্ববিষয়ে আদর্শ হবে, তারা প্রতিস্রোত হবে, নীরব সেবাব্রতী হবে ইত্যাদি প্রভৃতি। সমস্যা হল সর্বগুণে গুণান্বিত সিপিএমের এই নব্যপ্রজন্ম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে উঠে আসে নি। ফলে এই বিচিত্র স্টিরিওটাইপ তাদের অধিগতও নয়, আকাঙ্ক্ষিতও নয়। তারা অনেক বেশি বাস্তববাদী। ... ...
২০১৯-এর নির্বাচনে ওই রকম জাতীয়তাবাদী প্রচারে বাংলা থেকে ১৮টা আসন বিজেপির পায়। শুধুমাত্র বামের ভোট রামে গেছে বললেই কিন্তু এই সমস্যা থেকে মুক্তি নেই। নিজেদের দলেরও সমালোচনা তৃণমূলকে করতে হবে। কেন নীচের তলায় এতো ক্ষোভ তৈরি হল তা পর্যালোচনা করতে হবে। শুধুমাত্র অঞ্চল স্তরের নেতাদের দুর্নীতির কারণে ক্ষোভ বেড়েছে তা কিন্তু নয়। নীচের তলার নেতাদের দাদাগিরিও ও ঔদ্ধত্যও আছে। যে রোগে ৩৪ বছরের বাম শাসনের পতন হয়েছিল, সেই একই রোগে কিন্তু তৃণমূলও আক্রান্ত। বিরোধীশূন্য রাজনীতি আসলে দক্ষিণপন্থী উত্থানের সিঁড়ি সেটা আরো একবার আজ বাংলার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন। ... ...
প্রভাবশালী মুসলমান রাজনৈতিক নেতা এ বাংলা কম দেখেনি। শেরে বাঙ্গাল ফজলুল হক, সুরাওয়র্দী, ঢাকার নবাব খ্বাজা সলিমুল্লা বাহাদুর, আবদুল গনি খান থেকে আজকের সিদীকুল্লা চৌধুরী, অনেকে এসেছেন। কিন্তু এই প্রথম একজন ধর্মগুরু সরাসরি রাজনীতিতে এলেন, তাও ফুরুফুরা শরীফের মতো সারা উপমহাদেশের কাছে মান্যতাপ্রাপ্ত এক মাজারের পীরজাদা। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা তার রাজনৈতিক দিশা। না, তিনি শুধু মুসলমানেদের হয়ে কথা বলছেন না। তার দাবী অনুযায়ী তিনি নিম্নবর্ণের হিন্দু, আদিবাসী এমনকি অন্য সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়েরও প্রতিনিধি। এখানেই হিসাব পাল্টালেন পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি। ... ...
জরুরি অবস্থা চলাকালীন ১৯৭৫ সালের অগাস্ট মাসে পদত্যাগ করেন সিপিআই(এম)-এর প্রথম সাধারণ সম্পাদক পি সুন্দরাইয়া। দলের পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের কাছে লেখা ঐ মাসের ২২ তারিখের চিঠিতে তাঁর পদত্যাগের যে দশটি কারণ উল্লেখ করেছিলেন তার প্রথমটিই ছিল জনসংঘ ও আরএসএস নিয়ে পার্টির অবস্থান। তিনি এই দুই শক্তিকে সাথে নিয়ে জরুরি অবস্থার বিরোধিতা করার যে পার্টি লাইন তার বিরোধী ছিলেন। এমনকি তিনি আরএসএস কে ‘আধা সামরিক ফ্যাসিস্ট’ বলেও অভিহিত করেন। যদিও এর শিকড় আরো গভীরে, অবিভক্ত কমুনিস্ট পার্টির প্রথম সম্পাদক পিসি যোশিও স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই এই মৌলবাদীদের নিয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় পার্টির মধ্যেই তীব্রভাবে সমালোচিত হন। এই দোদুল্যমানতা থেকেই কিছুকাল পূর্বেও জাতীয় স্তরে কংগ্রেস ও বিজেপির সঙ্গে সমদূরত্ব বজায় রাখায় অটল ছিল সিপিআই(এম)। সুতরাং ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গে আব্বাসকে সাথী করে তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটে থাবা বাড়ানোর বাসনা কোনো ভাবেই বিস্ময়জনক তো নয়ই বরং তাদের ঐতিহাসিক ভূমিকার সঙ্গে যথেষ্ট সংগতিপূর্ণ। ... ...
ভোটের মুখে গুরুর গুঁতোয় রামের খোঁজে বেরিয়েছি। ঝোলায়, থুড়ি মাথায়, রয়েছে রামের স্টিরিওটাইপ। মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত, আমার দৌড় রামরাজাতলা পর্যন্ত। যে যত কম জানে, তার দুনিয়া তত ছোট, আর সে ভাবে সে তত বেশি জানে। হুগলী জেলার ছেলে, হাওড়া জেলার রামরাজাতলা চিনব না তা-ও কি হয়? পকেটে হাত ঢুকিয়ে শিস দিতে দিতে দিব্যি পৌঁছে গেলাম। ... ...
বিজেপি কোনও রাজ্যে নির্বাচনে যদি হেরেও যা্য়, তবু বিজেপি সেখানে সরকার গড়তে পারে। বিজেপি সম্পর্কে এখন বলা হয়, জিতলে আমরা সরকার গড়ব, আর হারলে, তোমরা বিরোধী আসনে বসবে। মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, গোয়া সহ বেশ কিছু রাজ্যে হেরে গিয়েও সরকার গড়ে বিজেপি প্রমাণ করে দিয়েছে, ভোট বা নির্বাচন একটা ধাপ মাত্র, সরকার গড়ার জন্য ভোটে জিততেই হবে, তার কোনও মানে নেই। ... ...
শীতলকুচির ঘটনা খুব পীড়াদায়ক। তার পাশাপাশি এটাও কম পীড়াদায়ক নয় যে আমাদের সহনাগরিকদের একাংশ এই ঘটনায় দৃশ্যতঃ দুঃখিত নন। রাজ্যের শাসনক্ষমতায় বিজেপি এসে গেল বলে হিড়িক উঠেছে, সেই দলের পক্ষ থেকে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী ব্যতীত কেউ এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন নি বরং তাদের রাজ্য সভাপতি বিবৃতি দিয়েছেন দরকারে জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে। এ আমাদের স্তম্ভিত করে দেয়। এই রাজ্যের সাম্প্রতিক ইতিহাসে নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলিতে হত্যার কথা আমরা মনে করতে পারি। দোষারোপের পালা ভিন্ন হলেও, শাসক বিরোধী নির্বিশেষে সমস্ত প্রথমসারির রাজনৈতিক নেতা পুলিশের গুলিতে মানুষের মৃত্যুতে দুঃখ জানিয়েছিলেন। সম্প্রতি মইদুল মিদ্যার মৃত্যুতেও দেখলাম শাসনক্ষমতায় থাকা মানুষ দুঃখ প্রকাশ করলেন। আর বড়ো কথা, সামাজিক পরিমণ্ডলে এ ওর দিকে দোষ ছুঁড়ে দেয়, কিন্তু পুলিশি নির্যাতনের নিন্দা প্রায় সকলেই করে থাকেন, ভুল হল- করে থাকতেন। ... ...
গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনে কেজরিওয়ালকে হারানো সম্ভব হয়নি। তাই তাঁকে গদি থেকে নামানোর জন্য অন্য উপায় অবলম্বন করতে হয়েছে - ঘোষণা হয়ে গেলো যে বিজেপি-নিযুক্ত লেফটেন্যান্ট-গভর্নর এখন একাই দিল্লির 'সরকার', জনগণের ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসা আম আদমি পার্টিকে কাজ করতে হবে তাঁর হুকুম মাফিক। আর তাছাড়া যে সমস্ত রাজ্যে বিজেপি সরকার নেই, সেই প্রত্যেকটি রাজ্যের রাজ্যপাল আর তাঁদের ওপরে থাকা দেশের রাষ্ট্রপতির ধমনীতেও তো বয়ে চলেছে গোলওয়ালকারেরই রক্ত। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একএকজন আরএসএস প্রাক্তন। তাই কানহাইয়া বা উমার খালিদের মতন অপ্রিয় প্রশ্ন করা ছাত্র-ছাত্রী আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে দেখা যাবে না আজ থেকে দশ বছর পর। ... ...
২০১৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সংসদে প্রথম ইলেক্টোরাল বন্ড বাজারে আনার কথা বলেন। অবশ্য এর জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সম্মতির দরকার ছিল। জানুয়ারির ২৮ তারিখই অর্থমন্ত্রক থেকে ই- মেইল যায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তদানীন্তন ডেপুটি গভর্নর রামা সুব্রমনিয়ম এবং সেকেন্ড ইন কম্যান্ড উরজিৎ প্যাটেলের কাছে। আরবিআই-এর তরফে দুদিনের মধ্যে জানানো হয়, এই ইলেক্টরাল বন্ড অনেকটা বেয়ারার বন্ডের মতো, যেখানে মালিক হবেন বেনামী, শেষমেশ রাজনৈতিক দলের হাতে কে বা কারা টাকা তুলে দিল তা জানার উপায় থাকছে না। ... ...
জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ভারতে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের লক্ষ্যে, সেই ১৯১৯ সালে। জাতীয়তাবাদী এবং বরাবর দেশভাগের বিরুদ্ধে থাকা এই গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের কথা দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাঙালির ইতিহাসে উল্লেখিত না হওয়ায় বেশিরভাগ বাঙালি তাঁদের অবদানের কথা জানেন না। যদিও পশ্চিমবঙ্গে জমিয়তের লক্ষাধিক সদস্য এবং কয়েকশ মাদ্রাসা আছে। বহু হিন্দু বাঙালি জমিয়াতের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামিকে গুলিয়ে ফেলেন। ধরে নেন এটি বাংলাদেশে অবস্থিত কোনো সংগঠনের শাখা। বিড়ম্বনার কথা এই যে, বাঙালি মধ্যবিত্ত সমাজে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসাবে রামকৃষ্ণ মিশন সেক্যুলার বুদ্ধিজীবীদের কাছে সমাজ সংস্কারক ও শিক্ষা প্রসারের মর্যাদা পেয়ে থাকেন, কিন্তু, সেই সমাজে একই রকম কাজে যুক্ত থাকা জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ সাম্প্রদায়িক হিসাবে চিহ্নিত হয়ে যায়। আমাদের দুর্ভাগ্য ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে জমিয়তের ভূমিকা নিয়ে পাঠ্যপুস্তকে একটি লাইনও খরচ করা হয়নি। ... ...
এক একটা কাউন্টিং টেবিলে কতজন কাউন্টিং এজেন্ট থাকবেন তা নির্ভর করবে সেই নির্বাচনী ক্ষেত্রে কতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনটি মুখ্য দল নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে কথাবার্তা হচ্ছে বলে সর্বত্র কেবল তিনজনই থাকবে এমন নয়। তিন, তের সতেরো, যে কোনো সংখ্যাই হতে পারে। এবং চুপটি করে চেয়ারে বসে ইভিএমের ওপর নজর রাখা সম্ভব হয় না। সামনের সারিতে আসার জন্য ঈষৎ ফ্রেণ্ডলি বা কখনো আনফ্রেণ্ডলি গুঁতোগুঁতি চলতেই থাকে। এখানে সামাজিক দূরত্ব অসম্ভব, তাই কি করে স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিক সার্টিফিকেট দেবেন যে কোভিড বিধি মেনে ব্যবস্থা হয়েছে সেটাও ভাবার বিষয়। ... ...
আসামে এমন কোনও রাজনৈতিক দল নেই যারা এনআরসি বিরোধী। এবং বিজেপি বাদে বাকি সবাই সিএএ বিরোধী। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার (বিজেপির সহযোগী বা প্রতিযোগী) সব রাজনৈতিক দলই সিএএ বিরোধী, কারণ সিএএ এনআরসি-র মূল অবস্থানটিকেই চ্যালেঞ্জ করে। বাঙালি হিন্দুরা সিএএ-র পক্ষে, কিন্তু বাঙালি মুসলিমরা বিপক্ষে। বরাক উপত্যকার প্রায় সব রাজনৈতিক দল সিএএ-র পক্ষে কিন্তু এনআরসির বিরুদ্ধে। ... ...
বেড়াবেড়ি অঞ্চল থেকে এসেছিলেন পঞ্চাশোর্ধ্ব নূর বক্স মণ্ডল। আবার দিঘরা থেকে বছর বিশের আমিনুল মোল্লা। এই জমায়েতের উদ্দেশ্য তাঁদের কাছে স্পষ্ট। তাঁরা মনে করেন ভাইজান বঙ্গ রাজনীতিতে নিয়ামক শক্তি হয়ে উঠবে। অশোকনগর বিধানসভায় জয়ের ব্যাপারে তাঁদের মুখের কথায়, শরীরের ভাষায় আত্মবিশ্বাস স্পষ্ট। কিন্তু ভোটের গতিতত্ত্বের কোন নিয়মে এমন ঘটবে, তা তাঁরা জানেন না। ... ...
আমরা আজকের রাজনৈতিক পরিস্থিতির নিরিখে তৃণমূল কংগ্রেসকে বিজেপি বিরোধী এক শক্তি হিসেবে দেখি। সিপিএম যেভাবে তৃণমূল ও বিজেপিকে একাকার করে বিজেমূল নামে একটি কাল্পনিক দল তৈরি করে ফেলেছে বা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে আগে তৃণমূলকে হারাতে হবে এমন এক অদ্ভুত রাজনৈতিক উপসংহার টেনেছে আমরা তাকে ভ্রান্ত মনে করি। ... ...