এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  প্রবন্ধ

  • টাইটানিক - ডুবেছিল কেন? 

    সুকান্ত ঘোষ লেখকের গ্রাহক হোন
    প্রবন্ধ | ১২ মে ২০২৪ | ৫৩৫ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৪ জন)
  •  
    সে প্রায় ১১২ বছর হতে চলল, ১৯১২ সালের ১২ এপ্রিল ইংল্যান্ডের সাউথহ্যাম্পটন থেকে আমেরিকার নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছিল ‘রয়েল মেল শিপ (আর এম এস) টাইটানিক’।  সেই সময়ের সবচেয়ে জমকালো জাহাজের যাতার স্থায়ী হয়েছিল মাত্র দুই দিনের মত।  ১৪ই এপ্রিল রাত ১১.৪০ নাগাদ টাইটানিক প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার/ঘন্টা গতিবেগে গিয়ে ধাক্কা দিল এক বিরাট হিমশৈল-তে যার ওজন ছিল দেড় লক্ষ থেকে তিন লক্ষ টনের মত।  তারপর মাত্র দুই ঘন্টা চল্লিশ মিনিট – তার মধ্যেই উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে গেল সেই সময়ের বিষ্ময়ের প্রতীক টাইটানিক।  জলের তাপমাত্রা তখন খুবই কম, চার ডিগ্রীর মত।  বিজ্ঞান বলে এই তাপমাত্রায় মানুষের ২০ থেকে ৩০ মিনিটের বেশী বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।  টাইটানিকে যাত্রী ছিল ২০০০ এর কাছাকাছি, এর মধ্যে সেই দিন মারা গিয়েছিল প্রায় ১৫০০ এর মত – এবং বেশীর ভাগই প্রবল ঠান্ডা জলে থাকার ফলে।  মানে মৃত্যু সেই অর্থে জলে ডুবে ঠিক নয়।

    তবে এ আর নতুন কথা কি! টাইটানিক নিয়ে এত লেখা লিখি হয়েছে যে বলার নয় – বই, প্রবন্ধ থেকে শুরু করে আজকের দিনের ইউ-টিউবের ভিডিও সব ভর্তি।  আর সেই সব কেউ না পড়লেও ১৯৯৭ সালের ‘টাইটানিক’ সিনেমাটি দেখেনি এমন কেউ নেট সার্ফ করছে ভাবাই অসম্ভব আজকের দিনে! মানে এটা বলতে চাইছি টাইটানিক নিয়ে পড়াশুনা করতে চাইলে তথ্যের অভাব নেই।  তবে সব লেখাই কি ঠিক? আর সবার ইন্টারেষ্টও যে টাইটানিকের সব বিষয় নিয়ে থাকবে এমন কোন কথা নেই! এই যেমন আমার উৎসাহ টাইটানিক যে স্টিল বানানো হয়েছিল আর টাইটানিকের ডুবে যাওয়া থেকে আমরা কি কি শিখেছিলাম সেই নিয়ে মূলত। 

    আচ্ছা, টাইটানিকের ডুবে যাওয়া থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছিলাম – এর মধ্যে একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ছিল অমন বিরাট জাহাজের ডিজাইন।  তার পর ছিল, লাইফ বোট কেমন ভাবে রাখতে হবে, কি সংখ্যায় – এমারজেন্সী ইভাক্যুয়েশন কেমন ভাবে হওয়া উচিত, নেভিগেশন সিষ্টেমের উন্নতি – আরো অনেক অনেক কিছু। সেই সব নিয়ে লেখাই যায় – হয়ত পরের পর্বে লিখব।  আজকে লেখা যাক, আমরা যারা ধাতুবিদ, তারা ঠিক কি শিখেছিলাম এই টাইটানিক ডুবে যাওয়া থেকে।   

    যেটা হয় কিছু ভেঙেচুরে গেলে – প্রথমেই মনে আসে, জিনিসটা ঠিক ঠাক মেটিরিয়াল দিয়ে বানানো হয়েছিল তো? টাইটানিক দূর্ঘটনার পর স্বভাবিক ভাবেই পাবলিকের মনে এসেছিল যে নির্ঘাত আয়ারল্যান্ডের জাহাজ বানানোর কোম্পানী ‘হারল্যান্ড অ্যান্ড উলফ’ টাকা পয়সা বাঁচাতে ফালতু স্টিল দিয়ে টাইটানিক বানিয়েছিল।  টাইটানিক আদপে ছিল ‘হোয়াইট স্টার লাইন’ কোম্পানীর – এবং শুধু টাইটানিক নয়, একই সময়ে এরা ‘হারল্যান্ড অ্যান্ড উলফ’ কোম্পানীকে বরাত দিয়েছিল আরো দুটো একই সাইজের জাহাজ বানাবার।  টাইটানিক খুব বেশী জমকালো ইন্টিরিয়ার ডিজাইন ইত্যাদিতে ভরা হলেও সাইজের দিক থেকে এই তিনটি জাহাজ ছিল একই রকম – তাই এদের বলা হত থ্রী সিসস্টার্স।  আর এম এস টাইটানিক, আর এম এস অলেম্পিক এবং আর এম এস জাইগ্যান্টিক।  যত দিনে জাইগ্যান্টিক বানানো শুরু হয়, তত দিনে টাইটানিকের দূর্ঘটনা ঘটে গ্যাছে – শুধু জাইগ্যান্টিকের ডিজাইনের কিছু অদল বদল করা হল তাই নয়, নামও পালটে রাখা হল আর এম এস ব্রিটানিক।

    আগেই বলেছি আমার নিজের ইন্টারেষ্ট ছিল এই টাইটানিক বানানোর স্টিল নিয়ে।  আর আগের আর একটা প্রশ্নের জবার আগে থেকেই লিখে রাখি – টাইটানিক ডুবে যাবার পর গবেষণা করে দেখা গ্যাছে ‘হারল্যান্ড অ্যান্ড উলফ’ কোম্পানী বাজারের খারাপ স্টিল দিয়ে সেই জাহাজ বানায় নি, মানে কোন শর্ট-কার্ট নেয় নি।  সেই সময়ে যে স্টিল দিয়ে জাহাজ বানানো হত – সেই স্টেট অব দ্যা আর্ট স্টিল দিয়েই বানানো হয়েছিল টাইটানিক।  টাইটানিকের জলে ভাসার স্থায়িত্ব সপ্তাহ খানেক (বেলফাষ্টের কারখান থেকে ইংল্যান্ডে আসা এবং তারপর আমেরিকা যাবার সময় মিলিয়ে) হলেও তার সহোদরা জাহাজ অলেম্পিক ইংল্যান্ডের সাউথহ্যাম্পটন থেকে আমেরিকার নিউ ইয়র্কের মধ্যে ৫০০ বার রাউন্ড ট্রিপ মেরেছিল ১৯৩৫ সালে অবসর নেবার আগে।  অন্য বোন ব্রিটানিক অবশ্য খারাপ ভাগ্যের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল – ব্রিটানিক বাজারে আসার কিছুদিন পরেই প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ লেগে যায়।  ব্রিটানিক-কে যাত্রীবাহী জাহাজ থেকে পরিণত করা হল এক জাহাজ হাসপাতালে। বেশ চলছিল, কিন্তু ১৯১৬ সালে গ্রীসের কাছ দিয়ে যাবার সময় একটা মাইনের বিস্ফোরণ আঘাত করে জাহাজকে।  ৫০ মিনিটের মধ্যে ডুবে যায় জাহাজটি – তবে খুব কম মানুষই মারা গিয়েছিল।

    তাহলে কি দেখা গেল? টাইটানিকের খারাপ ভাগ্য বলতে ওই একটাই – ভেসে আসা হিমশৈল! তার সাথে ধাক্কা না খেলে টাইটানিক ওর বোন অলেম্পিক এবং আরো অনেক জাহাজের মতই বার্ধক্যে প্রবেশ করেই অবসর নিত।  ভুল সময়ে ভুল জায়গায় থাকাই টাইটানিকের কাল হয়েছিল!

    তাহলে ধাতুবিদরা কি শিখেছিল এই টাইটানিক ডুবে যাওয়া থেকে? ধাতুবিদরা একটা বিষয় নিয়ে আগে নাড়াচাড়া করলেও, তেমন ভাবে ডিজাইনে এর মর্ম বুঝে উঠতে পারে নি – সেটা হল, তাপমাত্রা কমে যাবার সাথে সাথে ধাতুর ব্যবহারের পরিবর্তন – মূলত তার মেকানিক্যাল ধর্মসমূহ।  বেশীর ভাগ ধাতুই, বিশেষ করে ইস্পাতের তাপমাত্রা যদি আপনি ক্রমশ কমিয়ে আনতে থাকেন, তাহলে দেখবেন একটা তাপমাত্রার পর খুব দ্রুত ভাবে ইস্পাতের যে নমনীয়তা তা কমে গিয়ে ইস্পাত ভঙ্গুর হয়ে যাবে।  ইস্পাতের এই ধর্ম-কে বলে ‘নমনীয়-ভঙ্গুর পরিবর্তন’।  এবার বুঝতেই পারছেন, আমরা চাইব এই পরিবর্তনের তাপমাত্রা যতটা কম হয় ততটা।  মানে ধরুণ যদি কোন ভাবে এই ট্রানজিশন তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রীর মতন হয়, তাহলে কলকাতার শীতকালে হাওড়া ব্রীজের অবস্থা টালমাটাল – টাইটানিক মত কেস হতেও দেরী হবে না যদি কেউ একটা ধাক্কা দেয়!  বিশেষ পদ্ধতিতে স্টিল বানিয়ে, বিশেষ কিছু পদার্থ স্টীলে যোগ করে এই  ট্রানজিশন  তাপমাত্রা করানো হয়।  আমাদের সৌভাগ্য যে এই সব তত্ত্ব না জানার আগেও, একদম ফালতু পদ্ধতিতে বানানো ইস্পাতেরও ট্রানজিশন তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রীর কম হয়।  কিন্তু কত কম?  

    টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ থেকে কিছু টুকরো টাকরা উদ্ধার করে অ্যানালিলিস করা হয়েছে। এবং সেই টাইটানিক বানানোর ইস্পাতের সাথে আজকের দিনে যে ইস্পাত দিয়ে জাহাজ বানানো হয় তার তুলনা করা হয়েছে।  দেখা গ্যাছে যে কিছু জিনিস টাইটানিকের স্টীলে অনেক বেশী ছিল আধুনিক স্টিলের তুলনায় – কার্বন, অক্সিজেন, সালফার এবং ফসফরাস।  আর এই জিনিস গুলি ইস্পাতের ‘লো-টেম্পেরেচার প্রপার্টি’ খারাপ করে দেয়। 

    আজকের দিনের স্টিল কতটা ভালো? ‘লো-টেম্পেরেচার প্রপার্টি’ কেমন করে মাপা হয় দেখা যাক – আমরা করি কি, যে ইস্পাতকে মাপতে চাই, তার থেকে স্যাম্পেল বানিয়ে খুব ঠান্ডা করি, মানে যে তাপমাত্রায় আপনি মাপতে চান আর কি। তার পর সেই স্যাম্পেলটিকে একটা হাতুড়ি দিয়ে দুম করে ঘা দেওয়া হয়।  স্যাম্পেলটি পট করে ভেঙে যাবার আগে কিছু এনার্জি শুষে নেয়। মানে বিনা ফাইট দিয়ে কেউ তো আর বডি ফেলবে না! সেই শুষে নেওয়া শক্তি আমরা নোট করে নিই – গালভরা নাম আছে একটা, ‘জুল’।  যে যত বেশী ‘জুল’ শুষে নিতে পারবে, তার ‘লো-টেম্পেরেচার প্রপার্টি’। এবার ভাবছেন, ভাই এই তোমাদের ধাতুবিদ্যা? হাতুড়ি দিয়ে ঘা মেরে ইস্পাতের বিচার করছ? এর মধ্যে সফিষ্টিকেশন কোথায়? কি আর উত্তর দিই – হাসি মুখে বলতে হয় যে, ধাতুবিদ্য জিনিসটাই এমন! তাই করে কম্মে খাচ্ছি এই বিষয়ে – সফিষ্টিকেশন থাকলে কি আর পারতাম!

    টাইটানিকের স্টিলকে পরীক্ষা করা হয়েছিল -২ ডিগ্রী সেন্টিগ্রাড তাপমাত্রায় – কারণ ১৯১২ সালের উত্তর আটল্যান্টিকে যেখানে টাইটানিক ডুবে গিয়েছিল সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল নাকি ওটাই।  তাই টাইটানিকের স্টিল কত ‘জুল’ দেখিয়েছিল হাতুড়ি মার্কা টেষ্টে? মাত্র চার জুল! হ্যাঁ, মাত্র চার জুল – মানে টাইটানিকের স্টীল লিকুইড নাইট্রোজেনে ডোবানো কলার মতই ভাঙ্গুর হয়ে ছিল – ছিল শুধু আপনার মটকানোর অপেক্ষায়, যেটা করে দিয়েছিল সেই হিম শৈলের আঘাত।  চার জুলের তুলনায় আজকের স্টিল -২ ডিগ্রী সেন্টিগ্রাড তাপমাত্রায় কত ভ্যালু দেয়? ৩২০ থেকে ৩২৫ জুলের মত! বুঝতে পারছেন পার্থক্যটা? আধুনিক যুগের ইস্পাতের ওই ‘নমনীয়-ভঙ্গুর পরিবর্তন’ তাপমাত্রা প্রায় -৪২ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডের মতন। 
     

    তাহলে কি এটা বলা যাবে যে টাইটানিক যদি আজকের দিনের ইস্পাত দিয়ে বানানো হত, তাহলে ১৯১২ সালের ১৪ই এপ্রিল রাতে সে ডুবতো না? এটা বলা খুব মুশকিল – কারণ ইস্পাতই যে একমাত্র ডোবার কারণ এমনটাও নয়।  আর আগে তো বলেইছি যে সেই একই সময়, একই শিপ ইয়ার্ড থেকে একই স্টিল দিয়ে বানানো জাহাজ অলেম্পিক ২০ বছর ধরে ইংল্যান্ড-নিউ ইয়র্ক যাত্রা চালিয়ে গ্যাছে দেদার!

    তাহলে পার্থক্য কি? ওই যে দেড়-তিন লক্ষ টনের হিমশৈল।

    আর কিছু? পরের পর্বে সেই নিয়ে নাড়াচড়া করা হবে।             

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • প্রবন্ধ | ১২ মে ২০২৪ | ৫৩৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:ac49:27d0:c795:86bf | ১২ মে ২০২৪ ২০:২১531644
  • এটা পড়তে বেশ ভালো লাগলো। প্রপার্টি অফ মেটিরিয়ালস এ পড়েছিলাম, লো টেম্পারেচারে একটা মেটিরিয়াল কতোটা ব্রিটল হবে, সেই ব্যপারটা খুব গুরুত্ত্বপূর্ণ। স্ট্রেন রেট আর কিসব ব্যাপার ছিলো, এখন আর মনে নেই। তবে কিনা, ব্রিটল ফ্র‌্যাকচার ব্যাপারটা শুধু যে টাইটানিক এর ইঞ্জিনিয়াররাই বোঝেনি তা নয়, টার্মিনেটরও বোঝেনি। এই দেখুন :-)
     
  • Amit | 163.116.203.119 | ১৩ মে ২০২৪ ০৩:০৮531652
  • ইন্টারেষ্টিং শুরু হয়েছে লেখাটা। যদিও লো টেম্প ব্রিটল ফেইলিউর টা হয়তো এখানে গভর্নিং কেস নয় যেটা তূমি নিজেই লিখলে অন্য জাহাজ অলেম্পিক সেই একই মেটেরিয়ালস দিয়ে বানানো হলেও অনেক বছর সার্ভিস দিয়েছে। সিউরলি অত ​​​​​​​বছরে ​​​​​​​সেটা ​​​​​​​ওই রকম ওয়েদার ​​​​​​​বা ​​​​​​​আরো ​​​​​​​কম ​​​​​​​টেম্প ​​​​​​​এক্সপোজার পেয়েছে। তবে ​​​​​​​হয়তো ​​​​​​​ওটার ​​​​​​​কারণে ​​​​​​​টাইটানিক এর ফ্লোটেশন ​​​​​​​ট্যাঙ্ক ​​​​​​​গুলো ​​​​​​​র ড্যামেজ ​​​​​​​বেশি ​​​​​​​হয়ে থাকতে ​​​​​​​পারে যেটা তাড়াতাড়ি ডোবার কারণ। তবে ​​​​​​​এক্ষেত্রে ​​​​​​​ডোবার ​​​​​​​থেকেও ​​​​​​​ঐভাবে ​​​​​​​কয়েক ​​​​​​​টুকরো ​​​​​​​হয়ে ​​​​​​​ভাঙ্গাটা ​​​​​​​বেশি ​​​​​​​রেলেভ্যান্ট। ​​​​​​​
     
    আজকাল জেনারেল শিপ ​​​​​​​বিল্ডিং ​​​​​​​কোডে ​​​​​​​মিনিমাম ​​​​​​​ইমপ্যাক্ট টেস্ট নর্মস ​​​​​​​কি ​​​​​​​রকম ? জেনারেল ​​​​​​​কার্গো ​​​​​​​শিপ এর জিগাচ্ছি। ​​​​​​​অয়েল ​​​​​​​ট্যাঙ্কার গুলো ​​​​​​​তো ​​​​​​​আজকাল ​​​​​​​ডাবল ​​​​​​​শেল ​​​​​​​প্রায় ​​​​​​​সব। 
     
    চলুক এই ​​​​​​​লেখাটা। বেশ কিছু কোশ্নো আসবে। ​​​​​​​
     
    সেই অ্যালুমিনিয়াম ​​​​​​​নিয়ে ​​​​​​​লেখাটা ​​​​​​​তো ​​​​​​​আর ​​​​​​​এগোলো ​​​​​​​না হে। 
     
     
     
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:a65c:5e9c:e5e7:24bf | ১৩ মে ২০২৪ ০৫:৩০531654
  • কোথাও একটা পড়েছিলাম রাশিয়ার শীতে নেপোলিয়নের সৈন্যদের কোটের টিনের বোতামগুলো ভঙ্গুর হয়ে ভেঙে যায়। তাই বুক খোলা কোট নিয়ে তারা শীত প্রতিরোধ করে লড়াই করতে পারেনি।
     
    ঠান্ডায় ভঙ্গুর তাহলে শুধু টিনই হয়না।
  • সুকি | 49.206.132.88 | ১৩ মে ২০২৪ ০৬:৫৫531655
  • সবাইকে ধন্যবাদ।
     
    ডিসি, সিনেমাটা মনে পড়ে গেল আবার
  • সুকি | 2401:4900:65af:1b5a:94b6:550e:babd:e5c6 | ১৩ মে ২০২৪ ০৭:৩৭531656
  • আরে এতটা লিখলাম, সব উড়ে গেল তো! 
     
    ডিসিকে বলছিলাম - স্ট্রেন ইত্যাদি বেশ জটিল আমাদের কাছে। স্ট্রাকচারাল ডিজাইন সাধারণত দুই ধরণের হয়। স্ট্রেস বেসড আর স্ট্রেন বেসড। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে স্ট্রেস বেসড ডিজাইন দিয়েই কাজ চালানো হয়। 
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:9463:c38a:ef:f202 | ১৩ মে ২০২৪ ০৭:৫৩531657
  • হ্যাঁ, ব্যাপারগুলো আবছা মনে আছে। কলেজে স্ট্রেংথ অফ মেটিরিয়ালস এ স্ট্রেস ডায়াগ্রাম, স্ট্রেন ডায়াগ্রাম ইত্যাদি পড়েছিলাম। আর রিয়েল লাইফে ডিজাইন করার জন্য তো অনেকরকম কনস্ট্যান্ট ব্যবহার করা হয়। প্রেশার ভেসেল ডিজাইন ব্যাপারটা খুব ইন্টারেস্টিং :-)
  • যদুবাবু | ১৩ মে ২০২৪ ০৮:২১531659
  • ভালো লাগছে। সিরিজ়-টা চলুক। সঙ্গে আছি। মতামত দেবো। 
     
    আচ্ছা এই যে ধরুন হাতুড়ি দিয়ে ঘা মারার টেস্ট - সাধারণ মানুষ যে পেরেক ঠোকে হাতুড়ি দিয়ে সেটা কত জুল উৎপাদন করে? সেসব কি জানা যায়? এমনি একটা আন্দাজ চাইছি বলে জিজ্ঞেস করছি। 

    (দেখে মনে পড়লো, এই কয়েকদিন আগেই ক্লাসে টাইটানিক-এর কোন ক্লাসের যাত্রীর সার্ভাইভ্যালের কত প্রোবাবিলিটি সেসব দেখাচ্ছিলাম। সেটা অবশ্য অন্য ব্যাপার - এটার সাথে সম্পর্ক নেই।) 
  • সুকি | 136.226.253.80 | ১৩ মে ২০২৪ ১১:২৮531662
  • অমিতাভ-দাকে একটা বড় করে রিপ্লাই লিখলাম, পুরোটা উড়ে গেল! যাই হোক যেটা বলছিলাম, অ্যালুমিনিয়াম নিয়ে লেখাটার কথা মনেই ছিল না। ওটাও লিখতে হবে। দেখি কবে হয়। হ্যাঁ, লো-টেম্পারেচার ব্রিটিল ফেলিওর এখানে মূল কারণ নয় (হয়ত), কিন্তু টাইটানিক ফেলিওর না হলে ইপ্সাতের এই দিকটা নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু হতে হয়ত আরো অনেক বেশী দিন লেগে যেত। বাকি আরো অনেক ফেলিওর এর মত টাইটানিক ফেলিওর আমাদের এই দিকটা শিখিয়েছে। 
     
    আজকাল শিপ বিল্ডীং এ মনে হয় ASTM A36 গ্রেড এত্র স্টীল বা ইক্যুইভালেন্ট স্টিল বযভার কার হয় মনে হয়। সাধারণত লো টেম্পেরেচার প্রপার্টি চাওয়া হয় -৪৬ ডিগ্রীতে টেষ্ট করে ওই ২৭-৩৪ জুল মত ইম্প্যাক্ট ইনার্জি। বেস মেটাল এই ক্রাইটেরিয়া মিট করে যায় বেশীর ভাগ সময়েই খুব খারাপ স্টিল না হলে - কিন্তু সমস্যা হয় ওয়েল্ডিং করতে গেলে। ওয়েল্ড মেটাল আর হিট অ্যাফেক্টেড জোন এর ইম্প্যাক্ট প্রপার্টি ভালো হয় না অনেক সময় ঠিক ঠাক অয়েল্ড না করলে। 
  • সুকি | 136.226.253.80 | ১৩ মে ২০২৪ ১১:৪৩531664
  • ডিসি - হ্যাঁ, যে কোন ডিজাইনেই অনেক ফ্যাক্টর থাকে, সেফটি ফ্যাক্টার যার মধ্যে অন্যতম। আর এদিকে মেটিরিয়াল ম্যাক্সিমাম হয়ত ডিজাইন করা হয় তার যা ইল্ড-স্ট্রেন্থ, তার ৬০% এর মত। ফলে মার্জিন থাকে অনেকটাই।
     
    যদুবাবু - মেটালার্জি এর পাবলিক দের এত জটিল প্রশ্ন করতে নেই! কথায় বলে ধাতুবিদ-এর কাছে ক্যালকুলেটর আর হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের স্টেথোস্কোপ একই কাজের। তবে এই প্রশ্নের উত্তর মনে হয় দেওয়া যায় - ওই 'হাফ এম ভি স্কোয়ার' কাইনেটিক এনার্জির ফর্মুলা কাজে লাগিয়ে। যদি ধরেন ১ কেজির হাতুড়ি হয় আর আপনি ৫ মিটার/সেকেন্ডে ঘা মারেন, তাহলে এনার্জি হল গিয়ে ১২.৫ জুলের মত। তবে এই প্রশ্নে একটা ইন্টারেষ্টিং জিনিস মনে পড়ে গেল। আমাদের বিজনেসে সমুদ্রের মাঝে অনেক সময় (ডাঙায় হলেও একই ব্যাপার অবশ্য) অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার করা হয় যারা নাকি আবার ঘষাঘষি খেলে স্পার্কের সৃষ্টি করে। এবার চারিদিকে দাহ্য পাদার্থের মধ্যে থেকে এই স্পার্ক কোন কাজের কথা নয়। তাই আমাদের মাঝে মধ্যে এই 'ড্রপড অবজেক্ট' অ্যানালিসিস করতে হয়। মানে ধরুণ উপর তলা থেকে কেউ কাজ করতে গিয়ে হাত থেকে হাতুড়ি বা অন্য কোন টুল ফেলে দিল, আর সেটা পড়ে নীচের কোন অ্যালুমিনিয়ামের জিনিসকে আঘাত করল। তাহলে এবার কি এমন এনার্জি থাকবে সেই আঘাতে যাতে করে সেই কাইনেটিক এনার্জি স্পার্কের সৃষ্টি করে! বেশ ইন্টারেষ্টিং ব্যাপার।
     
    পলিটিশিয়ান-দা - খুব ভালো প্রশ্ন। আসলে এই 'ডাক্টাইল - ব্রিটিল' ট্রানজিশন নির্ভর করে ধাতুর কৃষ্টাল স্ট্রাকচারের এর উপর। মূলত তিন ধরণের কৃষ্টাল স্ট্রাকচারের ধাতু আমরা বযবহার করি - বডি সেন্টারড কিউবিক (বি সি সি), ফেস সেন্টারড কিউবিক (এফ সি সি), হেক্সাগোনাল ক্লোজ প্যাকড (এইচ সি পি)। তা এর মধ্যে বি সি সি স্ট্রাকচারের ধাতুরা 'ডাক্টাইল - ব্রিটিল' ট্রানজিশন দেয় - মানে তাপমাত্রা কম হলে প্রবলেম। লোহা/ইস্পাত এই গোত্রীয়। অন্যদিকে এফ সি সি বা এইচ সি পি ধাতুরা এমন অনুভব করে না, মানে এরা শীতে কাতর হয় না - যেমন স্টেনলেশ স্টিল বা টাইটেনিয়াম। 
  • Ranjan Roy | ১৪ মে ২০২৪ ১০:৩৮531718
  • খুব আগ্রহের সঙ্গে পড়ছি,প্রশ্নোত্তরীগুলোও।
     আমি গোদা আর্টসের ছেলে। গ্যালিলিও , কোপার্নিকাস ,প্যাস্কাল নিউটন ল্যাভোসিয়েরের পর কিছুই জানিনা।
    তবু  ভাল লাগছে সম্ভবতঃ সুকি'র লেখার গুণে। যেন সমস্যাটা ছবি হয়ে ধরা দিচ্ছে!
  • Rouhin Banerjee | ১৪ মে ২০২৪ ১৭:১১531730
  • পরের পর্বের অপেক্ষায়
  • Nahid Hasan | ১৫ মে ২০২৪ ০৯:৩০531749
  • পড়ে খুব ভালো লাগলো। অনেক কিছু জানতে পেলাম। পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি।
  • Kishore Ghosal | ১৫ মে ২০২৪ ১৬:৪১531757
  • কর্মজীবনে কিছু ক্রায়োজেনিক ট্যাংক বানিয়েছিলাম, সে সময় জেনেছিলাম - মাইনাসের নীচে তাপমাত্রা কমতে থাকলে স্টিলের গুণাগুণ ভয়ংকরভাবে কমে যায় - টাইটানিকের ক্ষেত্রেও এমনটা হয়ে থাকতে পারে ... খুব ইন্টারেস্টিং বিষয় - আরও কিছু জানার অপেক্ষায়।  
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b102:14fa:6147:f7e7:4e64:7efe | ১৬ মে ২০২৪ ০০:১৫531771
  • উত্তরের জন্য ধন্যবাদ সুকিবাবু। পরের পর্বের অপেক্ষায়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন