এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  বইপত্তর

  • মাই ইয়ার্স ইন অ্যান ইন্ডিয়ান প্রিজনঃ মেরি টাইলার। অনুবাদ

    বর্গীয় জ লেখকের গ্রাহক হোন
    বইপত্তর | ৩০ জুলাই ২০২৩ | ৪৭৮ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • গুলি! 
    ~~~~


    রবিবার, ২৫শে এপ্রিল, ১৯৭১। মুলাকাতির দিন, আর উপোসেরও দিন। ততদিনে আমি আর কল্পনা এদিককার গ্রামের রান্নাবান্না শিখে গেছি। আমি সকাল থেকে কম্বল ভাঁজ করে উনুনের সামনে বসে পরোটা ভাজছি - মেয়েরা সব মুলাকাতিতে নিয়ে যাবে! চারদিকে জল, ছাই মিশে কাদা, আমার হাতে শুকনো ছোলার ছাতু মাখা, শাড়িতে তেল আর গুড়ের ছোপ। হঠাৎ মেটিন দৌড়ে এসে বললো - "দিদি, অফিসে যাও, তোমার মুলাকাতি এসেছে"। আমি বিশ্বাস করলাম না - মেটিনের সঙ্গে আমাদের এইসব নিয়ে হাসি ঠাট্টা আগেও হয়েছে। চিফ হেড ওয়ার্ডার এসে বলায় বুঝলাম এই প্রথম, এই এগারো মাসে, দূতাবাসের অফিসার ছাড়া বাইরের কারো সঙ্গে আমার দেখা হতে চলেছে। আমি কোনরকমে আমার এলোমেলো চুলে চিরুনি চালানোর চেষ্টা করলাম একটু। এই গুড় তেল মাখা শাড়ি ছাড়া আর কোন পরিস্কার শাড়িও আমার ছিল না। এটা কল্পনার মা-র দেওয়া। আমার টিশার্ট আর স্ল্যাক্স বহুদিন আগে পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেছে, এখন আমি শাড়িই পরি।

    জেলখানার অসংখ্য পুরনো ধূসর ফাইল পত্রের পাহাড়ের মাঝখানে শান্তভাবে বসে অমলেন্দুর মা বাবা। যেন এক মহা বিশৃঙ্খলার মহাসাগরে মধ্যে একটি শান্ত শ্যামল দ্বীপ। ওরা আমাকে বসতে বললো। আদর্শ পুত্রবধূর মত আমি ওঁদের পা ছুঁয়ে প্রণাম করলাম না দেখে আশেপাশের লোকজন নিশ্চয় খুবই হতবাক হল। অমলেন্দু আর ওর ভাইয়ের সঙ্গে ওঁদের আগে দেখা হয়েছে, কিন্তু আমাদের সবার একসঙ্গে দেখা করার অনুমতি পাওয়া যায়নি। পাঁচশো মাইল দূর থেকে দেখা করতে আসার ওঁদের জন্য সহজ ছিল না, আমি মনে মনে আপ্লুত হয়ে গিয়েছিলাম। আমার জন্যে এনেছেন জামা কাপড়, নারকোলের মিষ্টি, ভালো সাবান, আর গরমকালে হাওয়া খাওয়ার জন্য তালপাতার পাখা। আমি বোঝানোর চেষ্টা করলাম, আমি ভালো আছি - ওঁরা যেন উদ্বেগ না করেন...
    দশ মিনিট কথা বলার অনুমতি পাওয়া গেল।

    সেলে ফেরার পর নিজের ওপর প্রচন্ড রাগ হচ্ছিল - ওঁদের সঙ্গে দেখা হলে কত কী বলবো বলে ভেবে রেখেছিলাম গত এগারো মাসে - কিছুই তো বলা হলো না। দেখা হয়ে খুব আনন্দ হচ্ছিল - কী ঝামেলায় ওঁদের ফেললাম এই ভেবে মরমে মরেও যাচ্ছিলাম। তার ওপর অমলেন্দুর সঙ্গে দেখা না হতে পাওয়ায় ভেতরে ভেতরে বিদ্ধস্ত।
    জেল জীবনে বাইরের মানুষের সঙ্গে দেখা হওয়া এক যন্ত্রনার অভিজ্ঞতা - বাইরে কেমন জীবন ছিল, কী করতাম, কী ভালোবাসতাম, স্বাধীনতা কেমন - সব মনে পড়ে যায় নতুন করে।
    দু'দিন লাগলো আমার একটু স্বাভাবিক হতে।

    নারকোলের মিষ্টি নিয়ে খুব সমস্যা - কল্পনা আর আমি চাইছিলাম সবাইকে দিই, কিন্তু আমাদের নিজেদের জন্যও যথেষ্ট থাকুক। অন্য মেয়েরা কিন্তু এমন না - কিছু পেলে ওরা সবার মধ্যে ভাগ করে নিত - যেন সৌভাগ্য, তা সে যত সামান্যই হোক, কারোর একার হতে পারে না। শেষে লোভ জয় করে বিলিয়েই দিলাম। এসব বিলি বন্দোবস্ততে খুব সাবধান থাকতে হয়। কঠিন বন্দী জীবনে যদি কেউ নিজেকে একটুও আলাদা ভাবে বঞ্চিত মনে করে তাহলে সেই ক্ষোভ সহজে যায় না - বহুদিন পর কোন ঝগড়া, অভিমান, অভিযোগের সময় জমে থাকা আবেগ বহুগুন হয়ে বিস্ফোরণের মত বেরিয়ে আসে।

    এইরকমই সামান্য ঈর্ষার ফলে আমাদের অপেক্ষাকৃত আনন্দের দিন হঠাত করে শেষ হয়ে গেল। রোহিনীকে লেখাপড়া শিখতে দেখে মেটিনের হিংসে তো হলোই- ওর মতে যেকোন নতুন ধরনের বা আলাদা জিনিসেই প্রথম অধিকার ওর; তার ওপর ও নিরাপত্তাহীনতাতেও ভুগতে শুরু করলো - রোহিনী লেখাপড়া শিখে যদি ওর কর্তৃত্ব না মানে? রাতে আমারা আলাদা আলাদা আটক থাকতাম - আর ও রোহিনীকে ক্রমাগত টিটকিরি দিত। একেকদিন অপমান সহ্য না করতে পেরে রোহিনী কাঁদতে কাঁদতে আসতো। অধৈর্য হয়ে গিয়ে নাগোকে বললাম রোহিনীকে বিরক্ত করা বন্ধ করতে।
    বিরাট বড় ভুল করেছিলাম। নাগো প্রতিশোধ নেওয়ার ফন্দী আঁটতে লাগলো।

    কিছুদিন পর নাগো চিফ হেড ওয়ার্ডারকে বললো ও নাকি কল্পনাকে পেছনের বাগানে কী একটা লুকোতে দেখেছে। ঐ সময়েই নিরাপত্তা নিয়ে কিছু বিশেষ কড়াকড়ি চলছিল - স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাছে খবর ছিল নক্শালরা জেল ভাঙার চেষ্টা করবে। এর ঠিক একদিন আগে হুকুম এল, আমাদের সেলে একজন না, তিনজন শোবে। এই পরিস্থিতিতে ওয়ার্ডার মেটিনের করা রিপোর্ট জেলারকে জানালো।
    সেই রাতে জেলার আমাদের কিছু জানায়নি - কিন্তু ওর মুখে দেখে আমরা বুঝলাম কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। এক বছর জেলে কাটিয়ে লোকজনের আচরনের সামান্য তারতম্যও আমরা ধরতে পারতাম। কোথাও কিছু একটা ঘনাচ্ছে বুঝতে পারছিলাম।

    চিফ হেড ওয়ার্ডার চলে যাওয়ার পর একজন ওয়ার্ড্রেস কাছে এসে ফিসফিস করে বললো যে সুপার আর হেড চিফ আসছে আমাদের তল্লাশি করতে। লুকনোর মত কিছু থাকলে আমরা ওকে দিয়ে দিতে পারি। আমার কাছে কয়েকটা চিঠি ছিল, আর উপোস টুপোস করে কিছু টাকা জমিয়েছিলাম - সেসব ওকে দিয়ে দিলাম। তারপর আমরা সবাই, যেন কিছুই হয়নি সেরকমভাবে শুতে চলে গেলাম। গ্রীষ্মের রাতে এই গরমে আমরা শুধু ভেতরের পোশাকেই শুতাম - শাড়ি ছেড়ে শুয়ে পড়লাম।

    রাত দশটায় শোনা গেল পুরুষকন্ঠের হাঁকডাক, পাথরের দেওয়াল ধরে টর্চলাইটের আলো। জেনানা ফাটকে আসতে গেলে যে ঘন্টি বাজাতে হয়, সেসব না বাজিয়ে, অতি সন্তর্পনে নিঃশব্দে সম্পূর্ন অতর্কিতে অফিসাররা সব ঢুকলো। সোজা আমাদের সেলে - শাড়ি পরে নেওয়ার কোন সুযোগ না দিয়ে সরাসরি জোরালো টর্চের আলো ফেলে বললো বেরিয়ে আসতে। পাশের খালি সেলে আমাদের বন্ধ রেখে জিনিস পত্র উল্টে পাল্টে লন্ডভন্ড করে তল্লাশি শুরু করলো। কুড়ি মিনিটের মধ্যে আমাদের সেল থেকে ওপর দিকে ওঠা সিঁড়ির তিন ধাপ চিঠি, খবরের কাগজ, তেলের শিশি, তুলো, বই, খবরের কাগজে ভরে গেল। আমরা ভয় কাটানোর জন্য তারস্বরে গান গাইতে শুরু করলাম, একটা অ্যালুমিনিয়ামের থালা বাজিয়ে!
    পরে একজন ওয়ার্ড্রেস বলেছিল আমাদের গান শুনে সুপার রীতিমত ঘাবড়ে গিয়েছিল!
    সেল তল্লাশি শেষ হলে শুরু হলও শরীর তল্লাশি - একজন ওয়ার্ড্রেস আমাদের তল্লাশি করে তেমন কিছু পেল না, শুধু কল্পনা ওর পেটিকোটের কোমরে একটা পেন্সিল লুকিয়ে রেখেছিল।
    অবশেষে আমাদের সারা সপ্তাহের কয়লার বস্তা মেঝেতে উল্টে ফেলে দিয়ে ওরা চলে গেল।
    বাকি রাতটা শান্ত হওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু এই কান্ডের পর, সহজ ছিল না।

    ঝামেলা শেষ হয়নি।
    সকালে আমাদের তালা খোলা হলো না। আমাদের খাঁচায় পুরে রেখে, অন্তত কুড়িজন কয়েদী, কয়েকজন ওয়ার্ডারের নেতৃত্বে পুরো বাগানের মাটি খুঁড়ে, আগাছা তুলে, গাছ কেটে, সব্জী উপড়ে তল্লাশি চালালো। এইসব শেষ হওয়ার পরে দেখা গেল আমাদের প্রিয় নিমগাছের শুধু বারো ফুট কান্ডটা একটা নিশানদিহি খাম্বার মত দাঁড়িয়ে, জুঁই ফুলের ঝাড় উবে গেছে, বোগানের কেয়ারি, আমের চারা, লেবু গাছ, কাঠচাঁপার গাছ - কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। দিনের শেষে এই ধ্বংসাবশেষের মাঝখান দিয়ে হেঁটে হেঁটে যাচ্ছিলাম। অপরিচিত পরিবেশে একসময় গাছপালাগুলোকেই শুধু নিজের, চেনা মনে হত, নির্জন দিনের সেই বন্ধুদের মৃতদেহ পড়েছিল চারদিকে।

    জেল রাতারাতি একটা দুর্ভেদ্য দুর্গে বদলে গেল। দিন গুলো অস্বস্তিকর থমথমে, অনির্দিষ্ট বিপদ যেন গুঁড়ি মেরে ঠিক পেছনেই। ওয়ার্ড্রেসরা এতদিন আমাদের কী পরিমান প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে ভেবে বাকী কয়েদীদের সাবধান করে দিল - আমাদের সঙ্গে কথা বলতে দেখলে বা জেলের ভেতর বাইরের কোন খবর দিলে কপালে শক্ত মার আছে। চারদিকে সবাই সন্দিগ্ধ -এতটাই যে একটু এদিক ওদিক হলে সেটা হিংস্রতায় পাল্টে যেতে পারে। রাগ, ক্ষোভ, হতাশা ঘিরে ধরেছিলো আমাদের। বাইরের কিছুই জানতে না পেরে, কোন কাজে মন দিতে না পেরে অস্থির নিরুপায় দিন কাটছিল। সব নকশাল বন্দীদেরই নাকি তল্লাশী হচ্ছিল, কানাঘুষো শুনছি। অমলেন্দুর কথা ভাবছিলাম - সলিটারিতে ও তো আরোই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আছে। জানতাম আমার জন্য ওর চিন্তা হচ্ছে। যদি কোনভাবে জানাতে পারতাম আমি ঠিক আছি... কিন্তু প্রচন্ড কড়াকড়ি, খবর পাঠানোর কোন উপায় নেই।

    আবার কল্পনা আর আমাকে আলাদা সেলে রাখলো ওরা। খবরের কাগজ, বই, চিঠি, খাবার সব ওয়ার্ড্রেসরা আর মেটিন বারবার তল্লাশি করতে লাগলো। আগের সহমর্মিতা, দরদের কোন চিহ্ন আর নেই। উজাড় হয়ে যাওয়া বাগনটার দিকে তাকিয়ে মনে হতো আমাদের নিজেদের মনের অবস্থাও এখন এইরকমই। হাসিঠাট্টা, খাবার বানানোর পরিকল্পনা নেই - সারাক্ষন উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা - এর পর কী?

    ওয়ার্ডারের তদারকিও আরো কঠিন হয়ে উঠলো। একদিন তো রান্নার সর্ষের আর কল্পনার চুলের নারকোল তেল বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে গেল। শত প্রতিবাদেও কাজ হল না - শিশি রাখার অনুমতি নেই - জেলারকে দেখাতে হবে। পুরো ব্যাপারটাই হাস্যকর - এই শিশিগুলো এইসবের অনেক আগে থেকেই আছে - কেউ লক্ষ্যই করেনি। তেলের শিশির জন্য শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ হল - যেন আমি আইন ভাঙার জন্যই এগুলো রেখেছি। অসম্ভব রাগ হলো, কিন্তু সে নিরুপায় রাগ।

    একজন ছিল যে আমাদের ভোলেনি - শুক্রি। শুক্রি হরিজন মেয়ে - হাজারিবাগের কাছে এক কারখানায় পায়খানা পরিস্কারের কাজ করতো। চোরাই তামার তার রাখার অপরাধে বর সহ আটক হয়েছে। সাধারনভাবে এমন কেসে জামিন পেতে অসুবিধে হওয়ার কথা না, কিন্তু দারিদ্র, লোভী উকিল - এইসবের চক্করে ঘটিবাটি বেচে সর্বস্বান্ত হয়ে জেলে পচছে। একদম শুরুর দিকেই বুঝছিলাম ওদের উকিল ওদের নিংড়ে নিচ্ছে - বলেছিলাম ওর বরকে বলতে উকিলকে আর টাকা না দিতে। কিন্তু জেলে বেশিদিন থাকতে হলে বাইরে চাকরি চলে যাবে - এই ভয়ে সর্বস্ব খরচ করে এখন এই।

    শুক্রি পরে আমাদের কথা বুঝেছিল। প্রতি পনেরোদিনে ওদের আদালতে দেখা হত। শুক্রির বর নক্শাল ওয়ার্ডের সাফাই করতো, কিন্তু নক্শালদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার অপরাধে এখন ডান্ডাবেড়িতে আটক। আদলত থেকে ফিরে সুযোগ পেলেই শুক্রি চুপিচুপি এসে আমাদের নকশাল ওয়ার্ডের খবর দিত। পুরুষ বন্দীদের তল্লাশি আমাদের থেকে অনেক বেশি কড়া, আর রাতের পর রাত চলেছে। এক দিকের দেওয়ালে নাকি ডাইনামাইট স্টিক পাওয়া গেছে। কোন চর নাকি এই খবর স্পেশাল ব্রাঞ্চকে জানিয়েছে, আর মাঝরাতে সুপারকে ক্লাব থেকে খবর দিয়ে এনে তল্লাশি চালানো হয়েছে। আমরা অন্যদেরও ব্যাপারটা জিজ্ঞেস করেছিলাম, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারেনি।

    একদিন শুক্রি কোর্ট থেকে আমাদের সহ-আসামীদের একজনের একটা চিঠি লুকিয়ে নিয়ে এল। লেখা ছিল আমরা যেন খুব সতর্ক থাকি, কোনরকম ফাঁদে পা না দিই। একজন সহৃদয় ওয়ার্ডার খবর দিয়েছিল পরের বারের মাসিক তল্লাশিতে নক্শাল ওয়ার্ডের ওপর যেকোন ছুতোয় হামলা হতে পারে - জেল অফিসের মিটিঙে নাকি কথা হচ্ছে। সন্ত্রস্ত হয়ে পড়লাম, কিন্তু কী করা যায় কিছুই তো জানি না।

    জেল কর্মচারীরাও কঠিন সুরক্ষার নিয়মে জেরবার। জেল থেকে প্রতিবার ঢোকা বেরোনোর সময় তল্লাশি - তাতে ওদের মজুতখানা থেকে বা কয়েদীদের থেকে আদায় করা রেশন পাচার বন্ধ। শুনলাম যারা একদম নিচুতলার কর্মী, খুব কম মাইনে, এইসব চোরাই জিনিসের ভরসায় তাদের সংসার চলে। এই কর্মীরা চুরির একটা খুব বিপজ্জনক রাস্তা বের করেছ। ওয়াচটাওয়ারের রক্ষীরা বালতি ঝুলিয়ে দেয় - কয়েদীরা তাতে রেশন বোঝাই করে। তারপর এই চাল ডাল তেল নুন আলু পেয়াঁজ ভরা বালতি টাওয়ারে ওঠে, কর্মীদের আত্মীয়রা দেওয়ালের ওপারে থাকে, তাদের কাছে আবার বালতি নামিয়ে দেওয়া হয়। পুরো ব্যাপারটাই বড় ঝুঁকি - ধরা পড়লে চাকরি তো অবশ্যই যাবে।

    জেলের সবাই উদ্বিগ্ন, শঙ্কিত, তিতিবিরক্ত - আর পুরো পরিস্থিতির জন্য সব রাগ গিয়ে পড়ছিল নক্শালদের ওপর - এই আপদগুলোর জন্যই যত ঝামেলা। আমাদের এদিকেও মেটিন আর কিছু ওয়ার্ড্রেস সারাক্ষন বিলাপ করতে লাগলো, জেল আগে কেমন বাড়ির মত ছিল - নক্শালরা এসে সব মাটি করেছে।

    মেয়েরা কেউ কিন্তু এই বাগান, ফলন্ত গাছ উপড়ে ফেলা মেনে নিতে পারলো না। ওরা কৃষিনির্ভর সমাজের মানুষ - একমুঠো শস্য, দুটো ফল ফলাতে কতখানি ঘাম ঝরাতে হয় সবাই খুব ভালো জানে। যেকোন খাবারের উৎস এমনভাবে নষ্ট করা ওদের কাছে পাপ - ওদের ভগবানের কাছে এমন পাপের ক্ষমা নেই।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • বইপত্তর | ৩০ জুলাই ২০২৩ | ৪৭৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Aranya | 2600:1001:b043:b31:24df:5efe:c554:b61 | ৩০ জুলাই ২০২৩ ০৮:২৯521900
  • অসাধারণ 
  • Aranya | 2600:1001:b043:b31:24df:5efe:c554:b61 | ৩০ জুলাই ২০২৩ ০৮:৪৪521902
  • এখনও আশায় আছি মেরী কে হয়ত কোন শারীরিক অত্যাচার এর সম্মুখীন হতে হয় নি । 
    নকশাল বন্দীদের ওপর  সরকারের বিশেষ প্রেমের প্রকাশ 
  • স্বা্তী রায় | 117.194.36.106 | ৩০ জুলাই ২০২৩ ১৬:০৪521918
  • এইরকম কোন বিদেশিনী নকশাল সন্দেহে বন্দী ছিলেন সে কথাই জানতাম না। তারপর পড়তেও ভীষণ ভাল লাগছে। আপনাকে শত শত ধন্যবাদ জানাই। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন