এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  অন্যান্য  শোনা কথা

  • লিপির বিবর্তন 

    Lipikaa Ghosh লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | শোনা কথা | ৩১ মার্চ ২০২৩ | ৫৩৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • লিপির বিবর্তন -

    ‘লিপি’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হল লেখা। সাহিত্যিকের ভাষায় লিপি হয়ে ওঠে চিঠি। আবার লিপি বলতে আমরা বর্ণমালাকেও (Alphabet) বুঝি, যেমন – ব্রাহ্মী লিপি, ক্ষরোষ্ঠী লিপি। এই লিপি বা বর্ণমালা আসলে অঙ্কিত চিত্র বা ছবি। তবে এই ছবি মানুষ একদিনে আঁকা শেখে নি। ছবি কবে থেকে আঁকা শুরু হল আর কেনই বা শুরু হল তার ধারনা পেতে বিজ্ঞানীরা নিরন্তর গবেষণা করে চলেছেন। আদিম যুগে মানুষ তার জীবন যাপনের প্রয়োজনে বা শুধুই মনের খেয়ালে ছবি আঁকা শুরু করে। কখনও পরিকল্পিতভাবে কখনও অপরিকল্পিতভাবেই তারা বিভিন্ন ছবি বা চিহ্ন এঁকেছে মনের ভাব প্রকাশ করতে। মনের ভাব মুখের ভাষা দিয়ে প্রকাশ করা হত ঠিকই কিন্তু নির্দিষ্ট দুরত্বের বাইরে মুখের ভাষাকে পৌঁছে দিতে এবং পরবর্তী সময়ের জন্য সেই ভাবনাকে রেখে দিতে মুখের ভাষা যথেষ্ট সুবিধাজনক ছিল না। সেই কারণে কোনো শক্ত জিনিসের ওপর এঁকে বোঝানোর প্রবণতা আসে যাতে সহজে নষ্ট না হয়ে যায়। এই অংকিত ছবি বা চিহ্নগুলি সে সময় বিশেষ অর্থ বহন করত যা সেই যুগের মানুষ বুঝে নিতে পারত। প্রস্তর যুগে যখন মানুষ গুহার মধ্যে বাস করত তখন তারা গুহার দেওয়ালে পশু, পাখি বা পশু শিকারের ছবি এঁকে রাখত। কখনো নানা রঙের নুড়ি পাথরে ছবি এঁকে রাখত, কখনো গাছের ছাল বা পশুর হাড়ে খোদাই করে এঁকে রাখত জীবনের নানা ঘটনার ছবি। এই অঙ্কিত ছবি বা চিহ্নগুলি প্রাচীন কাল থেকে বিভিন্ন স্তরের মধ্যে দিয়ে বিবর্তিত হতে হতে আজকের লিপির রূপ ধারণ করেছে। 

    লিপি বিশারদ ডেভিড ডিরিঞ্জারের মতে লিপি হল ভাষার এমন একটা দৃশ্য ও স্থায়ী উপস্থাপণা যা স্থানান্তরযোগ্য ও কালান্তরযোগ্য বা সংরক্ষণযোগ্য। অর্থাৎ মনের ভাবকে লিপিপদ্ধতির দ্বারা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়, আবার এক যুগের মানুষ পরবর্তী যুগের জন্য সংরক্ষণ করতে সক্ষম হল। এই লিপি মানব সভ্যতার একটি অনন্য আবিষ্কার বলে স্বীকার করেছেন সকল বিজ্ঞানী। মানুষ এই লিপিপদ্ধতি (writing system) আবিষ্কার করে কাল ও স্থানের সীমাকে জয় করেছে।

    এই লিপির বিকাশ মুলত চারটি স্তরের মধ্য দিয়ে এসেছে। এই চারটি স্তর হল - ১) চিত্রলিপি (Pictogram), ২) ভাবলিপি (Ideogram), ৩) চিত্রপ্রতীকলিপি (Hieroglyph), ৪) ধ্বনিলিপি (Phonogram) 

    চিত্রলিপি -

    চিত্রলিপি সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে আদিমযুগের আঁকা গুহাচিত্রের প্রসঙ্গ এসে যায়। সে যুগে মানুষ বিভিন্ন প্রাণী, বস্তু ও পশু শিকারের ছবি এঁকে রাখত গুহার দেয়ালে। এই ধরনের ছবি আঁকা বেশ কিছু প্রাচীন গুহাচিত্রের সন্ধান পাওয়া যায়- যেমন আলতামিয়ার গুহাচিত্র, স্পেনের কুইভা দেল মা দঁ গুহাচিত্র, ভারতের মধ্য প্রদেশের ভিমবোটকা গুহাচিত্র। এদের মধ্যে আলতামিয়ার গুহা চিত্রটি ৩০,০০০ বছরের পুরানো। এই সময় মানুষ তার বীরত্বের কাহিনি, পশু শিকারের কাহিনির ছবি গুহার দেয়ালে এঁকে রাখত। আলতামিয়ার গুহায় যে ছবি আছে তাতে দেখা যায় চারজন পুরুষ একটি শিংওয়ালা পশুকে (মহিষ বা ষাঁড়) তীরবিদ্ধ করছে চারদিক থেকে ঘিরে। আবার স্পেনের কুইভাদেল ম দঁ গুহায় যে ছবি আছে তাতে একটি পুরুষ ও দুটি হরিণের ছবি আছে। পুরুষটি হরিণ শিকার করতে হাতে  অস্ত্র নিয়ে ছুটছে, দুটির মধ্যে একটি হরিণ তীরবিদ্ধ হয়েছে। এই ছবিগুলি থেকে একটি বিষয় অনুমান করা যায় যে সে যুগে শুধু পুরুষরাই পশুশিকারে যেত। গুহাচিত্রে নারীর পশু শিকারের ছবি খুব একটা পাওয়া যায় না।

    এর পর আজ থেকে প্রায় ২০০০০ থেকে ১০০০০ খ্রিঃ পূঃ এর মধ্যবর্তী সময়ে মানুষ পাথরের গায়ে, জীব জন্তুর হাড়ের গায়ে, গাছের গুঁড়িতে খোদাই করে ছবি এঁকে রাখত। এই সময় থেকেই চিত্রলিপির শুরু বা ভ্রূণলিপির (embryo writing) আবির্ভাব হয়। মনের ভাব প্রকাশ করার জন্যই কোন বস্তু বা প্রাণীর ছবি খোদাই করে এঁকে রাখা হত। তবে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এই শিল্পচর্চা হত বলেই অনুমান করা হয়। কোনো ঘটনার সম্পূর্ণ ছবি না এঁকে শুধু প্রাণী বা বস্তুর ছবি আঁকা শুরু হয় এই সময় থেকেই। অর্থাৎ ছবিগুলো ভাঙ্গা শুরু হয়। তার কারণ এটাও হতে পারে যে সবাই ভালো ছবি আঁকতে পারতনা অথচ মনের ভাব প্রকাশের জন্য আঁকা আবশ্যিক ছিল।

    মধ্য প্রস্তর যুগের দক্ষিণ ফ্রান্সের আলজালিয়ান সংস্কৃতির কিছু রঙ্গ বেরঙের নুড়ি আবিষ্কৃত হয়েছে, এই নুড়ির ওপর পারক্সাইড আথবা লোহা দিয়ে  আঁকা বা খোদাই করা আছে জ্যামিতিক চিহ্ন। নুড়িগুলি বিভিন্ন  রঙের এবং বিভিন্ন চিহ্নের, এরা আলাদা অর্থ বহন করত বলে লিপি বিশারদদের ধারনা। এদের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার আধুনিক ‘চুরিঙ্গাস’ পাথরের মিল পাওয়া যায়।
    তবে এই চিত্রলিপি ছাড়াও এই সময়ের আরও কিছু নিদর্শন পাওয়া যায় যা দিয়ে তখন মনের ভাব প্রকাশ করা হত যেমন, দড়িতে গিঁট বেঁধে রেখে, লাঠির গায়ে দাগ কেটে, গাছের ডালে কাপড় বেঁধে, পুতি দিয়ে কোমড়বন্ধ তৈরি করে, হাতের পাঞ্জার ছাপ দিয়ে।  বিশেষ কোনো ঘটনার বিবরণ দেওয়ার জন্য, রাজার আদেশ বোঝানোর জন্য, নিত্যদিনের কাজকর্ম সামলানোর জন্য কোনো কোনো দেশে গিঁটলিপি (Quipu) বা গ্রন্থিলিপির প্রচলন ছিল, এই পদ্ধতিকে কিউপিন বা কিউপু (Quipu)বলা হয়।  পেরু, পলিনেশিয়া, চিন, টঙ্গানাইকা প্রভৃতি দেশে এই গ্রন্থিলিপির প্রচলন ছিল বলে জানা যায়। গিঁট বাঁধার বিভিন্ন ধরন বিভিন্ন অর্থ বহন করত। উত্তর আমেরিকার ইরকোয়ার আদিবাসিদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুতি গেথে কোমড়ে বেঁধে মনের ভাব প্রকাশ করত। এক্ষেত্রে পুতির রঙ ও দুরত্ব বিশেষ অর্থ বহন করত। একে ‘ওয়াম্পুম’ পদ্ধতি বলা হয়। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল একে সহজে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়। ব্যবসা বানিজ্যের কাজে এই পদ্ধতি খুব সুবিধাজনক ছিল। গাছের ডালে ন্যাকড়া বাঁধা বা হাতের পাঞ্জার ছাপ দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করার রীতি ভারতের সাঁওতাল পরগনা ও আসামের আদিবাসীদের মধ্যে প্রচলিত।

    ভাবলিপি -

    তবে এই সংকেত সকলের পক্ষে বোঝা সম্ভব ছিল না। সভ্যতা বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে লিপি পদ্ধিতির ও পরিবর্তন হতে লাগল আজ থেকে ১০০০০-৭০০০ বছর আগে। এই সময় সংকেত নয়, গোটা ঘটনার এঁকে দেখানোর বদলে তার বিবরণ দেওয়ার জন্য আঁকা হল ছবির আদল, একে ভাবলিপি বলা হয়। চিত্রলিপির পরবর্তী রূপ এই ভাবলিপি। লিপিপদ্ধতি কিছুটা হলেও বিবর্তিত হয়ে ভাবলিপিতে পরিণত হয়। গোরু বোঝাতে গোরু না এঁকে গোরুর শিং আঁকা হল, পাতা আঁকা হল গাছ বোঝাতে আর বাটি আঁকা হল খাবার বোঝাতে। চিত্রলিপির যুগে ছোট গোলাকৃ্তি ছবিকে সূর্য বোঝানো হত, ভাব লিপির যুগে তা উত্তাপ ও আলোর  উৎস বোঝান হত। চিত্রলিপি ও ভাবলিপির পর মানুষ আরো বেশি করে প্রতীকী হয়ে উঠতে লাগল। আস্ট্রেলিয়া, ল্যাটিন আমেরিকার মায়া, ক্যালিফর্নিয়া, চিন, হিত্রি, ক্রিট, মেসপটেমিয়া, মিশর এদের মধ্যে ভাবলিপির প্রচলন ছিল বলে জানা যায়।

    চিত্রপ্রতীকলিপি -

    এই ভাবলিপির পরবর্তী পর্যায়ে যে লিখন পদ্ধতি পাওয়া যায় তা ৭০০০ থেকে ৫০০০ বছর আগে শুরু হয়।

    চিত্রলিপিতে কোনো বস্তু বা প্রাণীর ছবি আঁকা হত, ছবিটি ঔ বস্তু বা প্রাণীটির প্রতীক ছিল। ভাবলিপিতে  অঙ্কিত ছবিটি ভাবের প্রতীক ছিল। কিন্তু চিত্রপ্রতীক লিপিতে অঙ্কিত ছবি বা চিহ্নগুলি কোনো বস্তু, প্রাণী বা ভাবের নামবাচক শব্দ বা ধ্বনিসমষ্টির প্রতীক হয়ে ওঠে। সুমেরীয় লিপিতে চিত্রলিপির যুগে মাছ বোঝাতে মাছের ছবি আঁকা হত, পরে সেই মাছ বোঝাতে এমন একটি চিহ্ন ব্যবহার করা হত যার সঙ্গে মাছের ছবির কোনো মিল নেই। তার আর একটি কারণ হল সেই চিহ্ন দিয়ে শুধু মাছ নয়, মাছ সংক্রান্ত অন্য অর্থ বহণ করত। আরো বিশদ ভাবে বলা যায়, একটি মাথার ছবি আকা হলে তখন তা ছিল ‘tp’ ধ্বনির প্রতীক এবং তা মাথাকেই বোঝাতো। পরবর্তীতে ছবি বা চিহ্নগুলি এমন ধ্বনি সমস্টিকে বোঝাতে লাগল যা বস্তু বা প্রাণীর নাম নয়, অন্য কিছু বোঝাতে লাগল। একটি বাজপাখির ছবি ‘nsw’ ধ্বনির প্রতীক, তবে এই ‘nsw’ বাজপাখিকে বোঝায় না রাজাকে বোঝায়। এই চিহ্নগুলি যখন ধ্বনির প্রতীক হয়ে উঠল তখন তা শব্দলিপিতে পরিণত হল। লিপিপদ্ধতির এই স্তরের নাম logogram বা শব্দলিপি। চিত্রপ্রতীক লিপি স্তরের শেষের দিকে এবং ধ্বনিলিপি স্তরের শুরুতে এই স্তরটি দেখা যায়। এই শব্দলিপির স্তরের লিপির নিদর্শন মিশরে পাওয়া যায়। এই চিত্রপ্রতীকলিপিকে সন্ধিক্ষনের লিপি বা Transitional Script বলা হয়।

    ধ্বনিলিপি -

    এর পরের স্তর ধ্বনিলিপি। এই স্তরে শব্দলিপিগুলি আরো সহজ ও সরল হয়ে আসে। চিহ্নগুলি একটি সম্পুর্ণ শব্দের প্রতীক না হয়ে শব্দের আদি অক্ষর বা দলকে বোঝাতে লাগল। একে অক্ষরলিপি বা দললিপি বলা হয়। এই দল বা অক্ষর হল নিশ্বাসের এক ধাক্কায় বাগযন্ত্রের স্বল্পতম চেষ্টায় শব্দের যতটুকু অংশ উচ্চারিত হয় সেই ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছ। অক্ষরলিপিতে এক একটি রেখাচিত্র এক একটি অক্ষরের প্রতীক হয়ে ওঠে। পরে এই চিহ্নগুলি আরো বিশিষ্ট হয়ে যায়। চিহ্নগুলি দল বা অক্ষরের প্রতীক না হয়ে একটি ধ্বনির প্রতীক হয়ে উঠল। হয়ে উঠল একক ধ্বনির লিখিত রূপ। এই লিপিকে বর্ণলিপি বলা হয়। যেমন রোমান লিপি - a, b, c, d। বাংলা  বর্ণমালাতে ধ্বনিলিপি ও দললিপির উদাহরণ পাওয়া যায়। দললিপি হল ’ক ’( ক্+অ )  প্রভৃতি আর বর্ণলিপি হল অ, আ ইত্যাদি। তবে এই দললিপি ও বর্ণলিপি ধ্বনিলিপির অন্তর্গত। এভাবেই বিভিন্ন স্তর পেরিয়ে বর্তমান বর্ণমালার রূপ নিয়েছে।

    যে কোনও ভাষার ধ্বনির লিখিত রূপ বর্ণের সমষ্টিকে বর্ণমালা বলে।

    আজ থেকে প্রায় পাঁচ থেকে সাত হাজার বছর আগে প্রথম প্রকৃ্ত লিপির ব্যবহার শুরু হয়। পৃ্থিবীর মোট সাতটি অঞ্চলে মূলত প্রথম লিপির ব্যবহারের নিদর্শন পাওয়া যায়। এই অঞ্চলগুলি হল - মিশর ও সুমেরু অঞ্চলে আজ থেকে প্রায় ছয় হাজার বছর আগে লিপির ব্যবহার শুরু হয়। সিন্ধুদেশ ও এলমে পাঁচ হাজার বছর আগে শুরু হয়। হিট্রি আর ক্রিট সভ্যতায় (এযিয়ানা দ্বীপপুঞ্জে) আজ থেকে চার হাজার বছর আগে শুরু হয়। মায়া সভ্যতায় তিন হাজার বছর আগে লিপির ব্যবহার শুরু হয়।

    ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপিত হলে তাদের মধ্যে ভাব বিনিময়ের কারণে লিপির ব্যবহারের ওপর প্রভাব পড়ে। ফিনিশিয়ার উত্তর সেমেটিক বর্ণমালা তেমন একটি বর্ণমালা। কিউনিফর্ম ও হিওরিগ্লিফিক লিপি থেকে বাইশটি ব্যঞ্জন বর্ণ দিয়ে তৈরি হয়েছিল উত্তর সেমেটিক বর্ণমালা। স্বর বর্ণ ও যতিচিহ্নবর্জিত ছিল এই বর্ণমালা।

    এই বর্ণমালার সঙ্গে  পাঁচটি স্বর বর্ণ যোগ করে গ্রিকরা। পরে উত্তর সেমেটিক বর্ণমালাকে ভেঙ্গে আরো অনেক বর্ণমালার জন্ম হল।

    মধ্যপ্রাচ্যে কয়েকটি বর্ণমালা তৈরি হয়েছিল বেশ কয়েক হাজার বছর আগে। অনেকে বলেন সিনাই, ক্রিট, সিরিয়া, প্যালেস্টাইন সহ মধ্যপ্রাচ্য ছিল এর জন্মভূমি।

    উত্তর সেমেটিক থেকে আরামিক, ক্যানানাইট ও গ্রিক বর্ণমালা যেমন এসেছে তেমন দক্ষিণ সেমেটিক বর্ণমালা থেকে সাবীয়, সাফাহিটীয়, থামুডেণীয় বর্ণমালা এসেছে। বর্তমানে বিশ্বের যে কোনো বর্ণমালা, সেমেটিক বর্ণমালা থেকে এসেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

    দক্ষিণ সেমেটিক বর্ণমালার সাবীয় বর্ণমালা থেকে ব্রাহ্মী বা অন্যান্য ভারতীয় লিপির জন্ম বলে ধরা হয়। যদিও এ নিয়ে ভিন্ন মত আছে। Downson, Cunningham, Thomas মনে করেন প্রাচীন সিন্ধু লিপি থেকে ব্রাহ্মী লিপি এসেছে। কিন্তু Jones, kopler মনে করেন সেমেটিক থেকে ব্রাহ্মী লিপির জন্ম। এদিকে Cast বলেন প্রায় তিন হাজার বছর আগে ভারতীয়রা স্বাধীন ভাবে ব্রাহ্মী লিপি তৈরি করেন।

    তথ্যসূত্র -

    1) ড. সুবীর দাস, বাংলা লিপির উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ।
    2) পরেশ চন্দ্র মজুমদার,  বাঙলা ভাষা পরিক্রমা।
    3) পরেশ চন্দ্র মজুমদার,  সংস্কৃত ও প্রাকৃত ভাষার ক্রম বিকাশ।
    4) ভ. রামেশ্বর শ, সাধারণ ভাষা বিজ্ঞান ও বাংলা ভাষা।
    5) ডেভিড ডিরিঞ্জার,  দি এলফাবেট, এ কি টু দ্য হিসটোরি অফ ম্যানকাইন্ড।
    6) পবিত্র সরকার, বাংলা ব্যাকরণ প্রসঙ্গ।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • অন্যান্য | ৩১ মার্চ ২০২৩ | ৫৩৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন