এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  সমোস্কিতি

  • চকচকে গান আর আমাদের ইদানীন্তন গান-শোনার সংস্কৃতি 

    শিমূল সেন লেখকের গ্রাহক হোন
    সমোস্কিতি | ০৭ মার্চ ২০২৩ | ৫৯৮ বার পঠিত
  • চকচকে গান, আর আমাদের ইদানীন্তন গান-শোনার সংস্কৃতি
    ...  ...  ... 



    আমাদের গান শোনার সংস্কৃতি কি হালফিলে ক্রমশই পর্যবসিত হচ্ছে অন্তঃসারশূন্য, প্লাস্টিকগন্ধী চর্চায়?

    ইদানীং প্রশ্নটা নানা কারণে ভাবায়। আর এক বার ভাবতে বাধ্য হলাম ফেসবুকে একটি পোস্ট পড়ে। লিখেছেন স্বাতী মৈত্র। গোটা লেখাটাই উদ্ধৃত করছি, কেন-না নইলে আলোচনার মুখরাটুকু অসম্পূর্ণ থেকে যায়। 

    “কোক স্টুডিও বাংলা বনবিবিকে নিয়ে গানটা শুনে খুব নিশ্চিন্ত হলাম। সামাজিক-রাজনৈতিক ঘেঁষা একটু সামান্য কিছু করতে গেলেও ওনাদের কালঘাম ছুটে যায়, এ ক্ষেত্রেও অন্যথা হতোনা। তার থেকে জেনেরিক ভ্যাকুয়াস আদিবাসী রমণী ফ্যান্টাসি ঢাকার বোহেমিয়ানরা লিখবেন, কলকাতার বোহেমিয়ানরা শুনবেন, এটাই বরং থাকলো। 

    শিল্পের ফর্ম খুব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। কোক স্টুডিও যেহেতু কোকাকোলার কালচারওয়াশিং আর্ম, তাই তাদের মূল উদ্দেশ্য এক প্রকারের পপ নান্দনিকতা, যেটা খুব সহজে প্যাকেজ করে দেওয়া যায়, শুনতে ভালো লাগে। আপনার ৪৫ মিনিটের কাওয়ালি শোনার ধৈর্য্য নেই তো কী হয়েছে, আপনাকে ৫ (+ ৫ ইন্সট্রুমেন্ট) মিনিটে কাওয়ালি শুনিয়ে দেবে কোক স্টুডিও পাকিস্তান। বালোচরা ডিসাপিয়ার্ড হতে হতে বালোচ ভাষায় গান শুনবেন। ফয়জের হাম দেখেঙ্গে থেকে চুপি চুপি সিংহাসন উল্টে যাওয়ার লাইন বাদ চলে যাবে, তবে অনেক শিল্পীর সমবেত কন্ঠে গানটা খুব নান্দনিক লাগবে। 

    কোক স্টুডিও বাংলা একটু রবীন্দ্রনাথ, একটু নজরুল, একটু চাকমা ভাষার জয় (ইউনিটি ইন ডাইভার্সিটি, বাংলাদেশ এডিশন) ইত্যাদি করে প্রথম বছরের শেষে হেই সামালো ধান হো আর ওরা আমার মুখের ভাষা কাইরা নিতে চায়-এর একটা ফিউশন করেছিল। তেভাগা আর মুক্তিযুদ্ধের ফিউশন করবার যোগসূত্রটা কী সেই প্রশ্ন ছেড়ে দিলেও, গানের ফর্মটাই সেই কোকাকোলার প্যাকেজে মোড়া। চকচকে। বিন্দুমাত্র রাজনৈতিক চেতনা বাদ দিয়ে শিল্পীদের কন্ঠে রক্তে-বোনা ধান, পিছনে সুন্দর যন্ত্রসঙ্গীত। যেখানে বাংলাদেশের সেরা সাহিত্য বার বার জেনোসাইড-মুক্তিযুদ্ধ-অপারেশন সার্চলাইট-বীরাঙ্গনা-রিফিউজি ক্যাম্পের বীভৎসতা ধরতে গিয়ে ফর্মকে ছাপিয়ে গিয়েছে বীভৎস রসের আধিক্যে, সেইখানে কোকাকোলার জাদুর কাঠিতে মুখের ভাষা কেড়ে নেওয়ার গান হয়ে দাঁড়ায় এক প্রকারের মন ভালো করা এসথেটিক। মুক্তিযুদ্ধই হয়ে দাঁড়ায় এক প্রকারের এসথেটিক। তেভাগা-মুক্তিযুদ্ধ-তেভাগার প্যাকেজে সময়-ইতিহাস-ভূগোল সব মিশে একটা খুব সুন্দর কিন্তু খুব ভ্যাকুয়াস, ফাঁপা একটা প্রডাক্ট বেরোয়। প্রচুর লাইক ও শেয়ার পায়। 

    এই গানটা - মানে বনবিবি - অন্তত সেদিক দিয়ে অনেস্ট। একটু গ্রাম বাংলা, একটু আদিবাসী কন্যা, একটু রাখাল বালক - এগুলোই প্রত্যাশিত। কোক স্টুডিওর বহু গান আমি বার বার শুনি, এটাও হয়তো শুনবো।”



    এ বার, আমার দুটো-একটা কথা। 

    ইউটিউবের কাছে আমি নাদান শ্রোতা হিসেবে নানা কারণেই কৃতজ্ঞ। একটা মস্ত কারণ, ইউটিউবের দৌলতে বহু অশ্রুত গান, লাইভ রেকর্ডিং, প্রি-ফাইনাল কাঁচা অডিও ইত্যাদি– সহজে যাকে বুটলেগ বলে, তা শোনার রাস্তা সুগম হয়েছে। সংগীতরুচির যে অভূতপূর্ব সম্প্রসারণ ইউটিউবের সুবাদে ঘটে গেছে, তাকে নিতান্ত গণ্ডমূর্খ-ব্যতীত কেউই অস্বীকার করবেন না। কে-ই বা সন্দেহ করবে, আলি আকবর খান যে ১৯৮৪-তে আমস্টারডামে বহুশ্রুত ভৈরবী বাজাতে-বাজাতে আস্ত বাখের পিস বাজিয়ে দিয়েছিলেন, এ হেন আশ্চর্য তথ্যটিকে কর্ণস্থ করার কোনও সুযোগই থাকত না, ইউটিউবের অস্তিত্ব না-থাকলে৷ 

    প্রশ্নটা অন্যত্র। ইউটিউব একা আসে না। তার পিছু-পিছু হানা দেয় অ্যালগোরিদমের নিহিত ছায়াটুকু। কালক্রমে ইউটিউবের গাঁট পেরিয়ে আমরা হাজির হয়েছি উত্তর-ইউটিউব, স্পটিফাই-শাসিত আমলে৷ ব্যক্তিগত ভাবে স্পটিফাই, সাভন বা অ্যাপল মিউজিক-গোছের পরিষেবায় নাম না-লেখালেও যেটুকু বুঝতে পারি: এ-কিসিমের ডিজিটাল গানমাধ্যমগুলির আকর্ষণ, তার অমেয় শ্রবণসুভগতায় লুকিয়ে! অর্থাৎ, প্রতিটি গান-ই যথাযথ ভাবে ডিজিটাইজড, এক বিন্দু রুক্ষতা নেই ধ্বনি-উৎপাদনে৷ কিন্তু, ফস্কা গেরো হল এ-ই যে, ইউটিউবের আপাত-অমসৃণতার ভেতরে যে গণতান্ত্রিক শর্তটি নিহিত– অর্থাৎ যে কেউ, যা কিছু, নিখরচায় আপলোড করে ফেলতে পারেন, এমন কী লুকিয়েচুরিয়ে করা কনসার্ট-রেকর্ডও (কেবল এই আর্কাইভাল গুরুত্বের কারণেই ইউটিউবকে গড় করা উচিত)– তা, সম্ভবত, এই গোছের সাম্প্রতিক গানমাধ্যমগুলিতে বিশেষ মিলবে না (একটি মাধ্যমে মিলত অবশ্য, সাউন্ডক্লাউড– কিন্তু তা গতাসু)। আমি ‘সম্ভবত’ বলছি, কারণ, কোনও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা নেই। ভুল বললে কেউ শুধরে দেবেন।



    তা, এ হেন মসৃণ, যথোপযুক্ত রকমের ঠাণ্ডা ধ্বনিপট, এক ধরনের অনৈতিহাসিক খোয়াব নির্মাণ করে। কেউ তাকে ফেটিশ বলতে পারেন– ফেটিশ মাত্রেই অনৈতিহাসিক– আর, স্বাতীদি চমৎকার বলেছে: ‘এসথেটিক’। গান-শোনা যেন ক্রমেই হয়ে উঠেছে চতুর্দিকের ব্যাপ্ত ও বর্ধমান বিচ্ছিন্নতার ভেতর এক টুকরো ডোপামাইন ক্ষরণের চটক ও আশ্বাস। তার প্রেক্ষাপটে থাকবে নয়নাভিরাম গোলাপগুচ্ছ, রেজলিউশন-টিকে যথাযথ বাড়িয়ে নেওয়া যাবে ১০২০ মাত্রায় (কিংবা, তেমন সুবিধে থাকলে এইচডি-তেও), আদ্যিকালের গান হলে অনুপুঙ্খ অ্যালবাম কভার-সহ বিষয়ভিত্তিক ট্র্যাকে সাজানো থাকবে সবটা, এবং এ হেন সুখ-উৎপাদনের ভেতরেই সম্পন্ন হবে আমজনতার গান-শোনা। 

    দিনকয়েক আগে বব ডিলানের একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে দেখলাম, তাঁকে জিগ্যেস করা হয়েছে, এই মুহূর্তে আপনি গান শোনেন কী ভাবে? ডিলানকে কেবলই যুগন্ধর সংরাইটার হিসেবে দেখা ভুল হবে– তিনি এক প্রবীণ, অভিজ্ঞ, রসিক শ্রোতাও বটেন– যে সাক্ষ্য ছড়িয়ে আছে তাঁর গানের অভিযাত্রায়। ডিলান বলেছেন, তিনি স্ট্রিম শোনেন, সিডি শোনেন, এবং শোনেন স্যাটেলাইট রেডিও। এর পরেই সামান্য সংশোধনী-সহ জানিয়েছেন, তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ পুরোনো ভিনাইল– বলেছেন একটি রেকর্ড প্লেয়ারের কথা, যা তিনি খরিদ করেছিলেন আজ থেকে প্রায় তিরিশ বছর আগে। তার ধ্বনিচরিত্র কেমন? ডিলান বলছেন: ‘পাওয়ারফুল’, ‘মিরাকিউলাস’, ‘হ্যাজ সো মাচ ডেপথ’– যা তাঁকে টেনে নিয়ে যায় বিগত দিনগুলিতে, যে-সময় অসম্ভাব্যতা আর অনির্দেশ্যতাই ছিল মানবজীবনের অভিমুখ– যখন বহিরঙ্গের নিয়ম কাজ করত না শ্রোতার অন্তর্জীবনে। 



    নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলি। কিছু কাল আগে, এক বন্ধুর সঙ্গে পুরোনো টেপ রেকর্ডার এবং ইউটিউবে একই রাগের একই পরিবেশন (আলি আকবর-রবিশঙ্করের মাঝ খামাজ) পিঠোপিঠি শুনতে গিয়ে টের পেয়েছিলাম সত্যিটা। অ্যানালগ সাউন্ডের যে অত্যুষ্ণ ধ্বনিপট, যে হাতেগরম, টাটকা মেজাজ– ডিজিটালে এসে তা যেন প্রাণবিচ্ছিন্ন, ম্যাদামারা, সর্বংসহ ও শীতল। অ্যানালগ আওয়াজে এক ধরনের চাপা টেনশন ও পরিব্যাপ্ত কী-হয়-কী-হয় ভাব– এক ধরনের সার্বক্ষণিক ঘটনাসম্ভাব্যতা– লাইভের প্রমাণ মেজাজ। ডিলান একেই বলবেন হয়তো বিগত যুগের আলোছায়া, যখন সংগীত ও জীবন উভয়েই ছিল অনিশ্চিত, বন্ধুর।

    এহ বাহ্য। 

    মনে হয়, অধুনার এই মসৃণ, ঝঞ্ঝাটবিহীন, সরল ও ঝুঁকিরহিত গান-শোনার সংস্কৃতি দিনে-দিনে আরও বাড়বে। বস্তুত, মাল্টিপ্লেক্সের বহু-কাঞ্চনমূল্যের গোল্ড সিট কিংবা উবার সংস্থার কুলীনতম অ্যাপ-পরিষেবাটির সঙ্গে এর কোনও মূলগত ফারাক রয়েছে কি– জানি না তা-ও। ঠিক যে ভাবে আমাজন এসে (অজস্র সুবিধার পাশাপাশি) গণমনে কায়েম হয়েছে ইতিহাসবোধ-বিচ্ছিন্ন, কেবলই ট্রান্সন্যাশনাল পুঁজির রেকমেন্ডেশন-ধর্মী একমেটে বই-পড়ার সংস্কৃতি– তেমনই, ডিজিটাল স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে চারিয়ে যাচ্ছে এক নতুন শ্রবণ-সংস্কৃতি। একই রকম গলা, একই রকম সুর, একই রকম গানের মত– একই রকম শ্রোতা। অ্যালগোরিদম-বাধ্য, নন্দন-মনোহারী, স্থানচ্যুত, নির্বিকার শ্রোতাসমষ্টি। বেস্টসেলার বই পড়ার মত, চকচকে গান শোনার সংস্কৃতি।

    এবং, রিস্ক-ফ্রি গান। যা অস্থানেকুস্থানে বেজে ওঠে না, পারম্পর্য যথাযথ রক্ষিত হয়, যার গোড়ায় ভেসে ওঠে না উটকো বিজ্ঞাপন।



    কেবল, এটুকু আক্ষেপ হয়, অতীতের শ্রোতারা কতখানি কাঠখড় পোড়াতেন। রেডিওয় তেমন-তেমন গান দিলে ক্যাসেট বা ওই গোছের স্মৃতিবাক্সে ভরে রাখতেন– নিদেন টুকে নিতেন সব’টা– যাতে ফস্কে না যায়। বিভ্রম হয়, কতখানি সহিষ্ণু ছিলেন তাঁরা, এবং কেবলই গানের জন্য কতখানি নিবেদিতপ্রাণ যে বহির্বিশ্বের চাঞ্চল্য তাঁদের ন্যূনতম বিক্ষিপ্ত করতে পারত না। হয়তো এই কল্পনায় কিঞ্চিৎ অতিরেক আছে– তবু, সংগীতের জন্য এটুকু সইয়ে-নেওয়ার মানসিকতাটুকু ছিল। 

    আজ, গানের শুরুতে ইউটিউবে চিৎকৃত বিজ্ঞাপন ভাসে, উৎকট ঝ্যাম্পোরপ্যাম্পোর-সহ। সেটুকুতেই ক্ষিপ্ত, শুশ্রূষাপ্রার্থী, আশ্রয়লভেচ্ছু শ্রোতা নির্দিষ্ট মাসিক মূল্যের বিনিময়ে ইউটিউবকে আপগ্রেড করিয়ে নেন। অর্থাৎ, ব্যবস্থার পয়দা-করা দূষণ এড়াতে শেষবেশ ব্যবস্থার কোটরেই আশ্রয়! মনে নেই, কিন্তু কোথাও পড়েছিলাম ব্রেশটের সুভাষিত: ‘সাধারণ মানুষকে দ্যাখো, তারা কতখানি কৌশল করে বাঁচে।’ আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশের নথি-পরিচয়হীন মানুষকে সে ভাবেই বাঁচতে হয়। প্রয়োজনে, শাসনতন্ত্রকে দু’-চার আনা ঘুষ দিয়ে, জাল সার্টিফিকেট বানিয়ে, বা আরও বিচিত্র ফিকিরের কৌশলগত প্রয়োগই তাঁদের রোজকার রাজনীতির বর্ম রচনা করে। এই দৈনন্দিন কৌশলযাপনের ভেতর এক ধরনের উদ্ভাবন আছে, রয়েছে এক রকম অপ্রতিহত, শিল্পিত সৃজনীশক্তি– যা কেবল ক্ষমতাহীনকেই মানায়। নৈকষ্যকুলীন হতে-চাওয়ার ক্রমিক তাড়নাদষ্ট আমাদের, এই সামান্যতম অবৈধতা ইস্তেমাল করার ধকটুকুও অবশিষ্ট নেই আর। ৯৯ বা ২৯৯ টাকায়, ইউটিউব প্রিমিয়ামে উন্নীত করে নিজেকে ক্ষমতাবান দেখতে চাওয়ার গড়-বাসনা (যার থেকে আমরা কেউই মুক্ত নই) আসলে ব্যবস্থারই চাপিয়ে-দেওয়া নিতান্ত কল্পনারহিত, প্রতিরোধহীন খুড়োর কল মাত্র– এমনটা আমরা বুঝব কবে?

    প্রশ্নটা হোলিয়ার দ্যান দাউ-এর নয়। যিনি এই শ্রবণ-সংস্কৃতির অংশ নন, তিনি যেন না ধরে নেন যে এই প্রবণতা থেকে তিনিও মুক্ত এবং নগর পুড়িলে দেবালয় এড়াবে এক দিন। অ্যালগোরিদমের শাসনে এই বিকল্পহীনতাই বাস্তবতা– ব্যক্তি-নির্বিশেষে আমাদের প্রত্যেকেরই সম্ভাব্য ডিসটোপিক বাস্তবতা। 



    এবং, এমনও নয় যে কোনও কিছুর ‘ভোগ’ করার বিরুদ্ধে আমি। ভোগ শব্দটির ক্যানভাস বিপুল। স্মর্তব্য, ‘রসিক’ কিংবা ‘রস’ কথাটির ভেতরেও আস্বাদনের দ্যোতনা আছে; ‘রুচি’র ভেতরেও। ‘ভোগ’-এও তাই। আবার, শিল্প-উচ্ছ্বসিত জনতা যখন সদ্য-আবির্ভূত শিল্পবস্তুটিকে সাবাশি জানিয়ে বলে ‘চমৎকার’, তার ভেতরে থেকে যায় ভাল খাবারদাবার খেয়ে টাকরায় জিভ দিয়ে চমৎ-চমৎ-স্বরে কুর্নিশ-উৎপাদনের রেশ। এ-ও এক রকমের ভোগ, বই কী।

    কনসাম্পশন এবং কনজিউমারিজম দুটি আদ্যন্ত বিপ্রতীপ ধারণা। আমাদের রস ও রুচি ইদানীন্তন পড়েছে দ্বিতীয়টির খপ্পরে। কোক স্টুডিও খোসপাঁচড়া মাত্র। সর্বাঙ্গে এসথেটিকের অকারণ প্রক্ষেপ আদতে ভেতরের গোপন ব্যাধির আবরণ!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • সমোস্কিতি | ০৭ মার্চ ২০২৩ | ৫৯৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dc | 2401:4900:2609:3885:f092:6343:13fb:3c94 | ০৭ মার্চ ২০২৩ ১৯:০১517094
  • আমার কোক স্টুডিও পাকিস্তানের অনেক গান শুনতে খুব ভালো লাগে। আখতার চানাল, রাহাত ফতেহ আলি খান, জেব বাঙ্গাস ইত্যাদিদের গান নিয়মিত শুনি।  
     
    " অ্যানালগ সাউন্ডের যে অত্যুষ্ণ ধ্বনিপট, যে হাতেগরম, টাটকা মেজাজ– ডিজিটালে এসে তা যেন প্রাণবিচ্ছিন্ন, ম্যাদামারা, সর্বংসহ ও শীতল"
     
    এখানে একমত। তবে আমার মনে হচ্ছে, লেখক বোধায় য়ুটুবের একটা ব্যপার খেয়াল করেন নি, তা হলো য়ুটুবে কিন্তু সমস্ত গানের জন্যই লসি কমপ্রেশান টেকনিক ব্যবহার করা হয়। যার জন্য য়ুটুবের গান শুনে আপনি কখনোই প্রকৃত গানের আওয়াজ পাবেন না। যদি সত্যিকারের ওরকম সাউন্ডস্টেজ চান তাহলে আপনাকে লসলেস এনকোডেড ফাইল থেকে গান শুনতে হবে আর অবশ্যই ভালো হোম থিয়েটারে শুনতে হবে। যেমন ধরুন ক্লিপশ মিডিয়া বা সোনোস বা ডেনন এর ভালো ৯।২।৪ সিস্টেম বা ওরকম কিছু।   
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত প্রতিক্রিয়া দিন