এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা  রাজনীতি

  • সাভারকর চর্চা, সবে মিলেঃ ৫.২ (শেষ মাফিনামা, মুক্তি পাওয়া)

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ২৬ অক্টোবর ২০২২ | ৬০৮ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • সাভারকর চর্চা, সবে মিলেঃ ৫.২ (শেষ মাফিনামা, মুক্তি পাওয়া)

    গান্ধীজির কথায় সাভারকরের মাফিনামা লেখার ইতিবৃত্তঃ

    সেলুলার জেলে বিনায়ক তাঁর ছোটভাই নারায়ণ রাও সাভারকরকে আবার বললেন দেশে ফিরে দাদাদের মুক্তির জন্যে জনমত তৈরির প্রয়াস করতে। নারায়ণ ১৮ জানুয়ারি ১৯২০ তারিখে চিঠি লিখে বললেনঃ

    ভারত সরকার তাঁকে টেলিগ্রাম পাঠিয়ে জানিয়েছেন যে সম্রাটের ‘ক্লেমেন্সি’ ঘোষণা অনুযায়ী যাদের মুক্তি দেওয়া হবে সেই লিস্টিতে সাভারকরদের নাম নেই। বলুন তাহলে কী করা যায়? দশবছরের বেশি সময় বন্দী রয়েছেন, স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ছে, ওজন ১৮ পাউন্ড কমে গেছে। এখন ওনাকে হাসপাতালে রেখে ভাল খাবার দিচ্ছে বটে, কিন্তু সেরে যাবার সম্ভাবনা খুব কম। উনি আমাকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন যে অন্ততঃ দেশের কোন জেলে যদি স্থানান্তরিত করা যায়। আপনি কি এ’ব্যাপারে কিছু করতে পারবেন? [1]

    গান্ধীজি সাতদিন পরে ২৫ জানুয়ারি নাগাদ জবাবে লিখলেনঃ

    “কী যে পরামর্শ দিই? এক কাজ করুন। সমস্ত তথ্য সামনে রেখে একটি সংক্ষিপ্ত পিটিশন তৈরি করুন। তাতে স্পষ্ট করে এটা তুলে ধরা হোক যে আপনার দাদার অপরাধ বিশুদ্ধ রাজনৈতিক, অন্য কিছু নয়। এই পরামর্শ দিচ্ছি যাতে দেশের জনতার মনযোগ এদিকে আকর্ষিত করতে পারি। আগেও একটি চিঠিতে এটা বলেছিলাম যে আমি আমার নিজস্ব পদ্ধতিতে বিষয়টি এগিয়ে নেবার চেষ্টা করছি।’’ [2]

    এরপর বিনায়ক ২০ মার্চ, ১৯২০ তারিখে সাতনম্বর পিটিশন পাঠালেন। কিন্তু ওটা আদৌ সংক্ষিপ্ত ছিল না। এতে সাভারকর যেন কিঞ্চিৎ হতাশ। ডিসেম্বর ১৯১৯শে রাজকীয় মাফিনামা ঘোষণার কিছুদিন পর বারীন্দ্র, হেমচন্দ্র, উপেন্দ্র, শচীন্দ্ররা ছাড়া পেলেন। জনা বিশেক শিখ রাজবন্দীও মুক্তি পেলেন। কিন্তু এতগুলো পিটিশন লেখার পরও সাভারকর ভাইদের নাম বাদ পড়ছে।

    আগের পিটিশনগুলোতে যে রাজনৈতিক যুক্তি এবং সমস্ত রাজবন্দীদের মুক্তির কথা ছিল সেসব এতে অনুপস্থিত।

    ওতে সাভারকরের বক্তব্যের সংক্ষিপ্তসার হলঃ
    • রাজকীয় মাফিনামায় বলা হয়েছে এটি রাজনৈতিক বন্দীদের জন্যে। তাহলে আমাদের দু’ভাইয়ের নাম কেন বাদ পড়ল? আমাদের পরিবারের কারও সরকারে প্রতি কোন ব্যক্তিগত বিদ্বেষ তো নেই। হোম ডিপার্টমেন্টের মাননীয় সদস্যরা ১৯১২তেই আমাকে বলেছিলেন যে আমি যেরকম উচ্চশিক্ষা পেয়েছি তাতে ভারত সরকারের উচ্চপদে চাকরি করতে পারতাম।
    • আমাদের পরিবারের কারও বিরুদ্ধে ১৯০৯ সালের আগে কোন অভিযোগ নেই। আমার বিরুদ্ধে যা কিছু অভিযোগ সব ১৯০৯ সালের আগের কাজকর্ম নিয়ে। এমনকি পিস্তল-টিস্তলও আমার ভাইদের গ্রেফতার করার আগে পাঠানো হয়েছিল।
    • রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে যে ৫০০০ নাগরিকের দস্তখত রয়েছে, তাতে আমার নামও বিশেষ করে উল্লেখ করা হয়েছে এবং জনতা মনে করছে আমি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই আইন ভাঙার আফশোসজনক কাজ করেছিলাম। ক্রিমিনাল জুরিস্প্রুডেন্সও জোর দেয় অপরাধের উদ্দেশ্যের প্রতি।
    • বারীন, হেমদের ছেড়ে দেওয়া হল। ওরা তো স্বীকার করেছিল যে ওদের ষড়যন্ত্রের অন্যতম উদ্দেশ্য প্রতিষ্ঠিত সরকারি রাজপুরুষদের হত্যা করা। ওরা তো জজদের মারতে ছেলেদের পাঠিয়েছিল। হেম যে বোমা বানিয়েছিল তাতে মিঃ কেনেডি মারা গেছলেন এবং সেটা হেমের জ্ঞাতসারেই হয়েছিল। এরপরও ওদের যদি অরাজনৈতিক খুনী না ভেবে রাজনৈতিক অপরাধী ধরে নিয়ে মাফ করা হয় তো আমাদের দুইভাইকে কেন মাফ করা হবে না?
    • আমাদের ১০-১১ বছর ধরে জেলে রাখা হয়েছে। অথচ শ্রীসান্যাল, যাঁর যাবজ্জীবন শাস্তি হয়েছিল, তাঁকে চার বছর পেরোতেই ছেড়ে দেওয়া হল? অনেক দাংগা বাজকেও একবছর পরে ছেড়ে দেওয়া হল। আমাদের দু’জনকে ওদের মত মুক্তি দিলে যদি সার্বজনিক অশান্তির আশংকা থাকে তাহলে আমি স্পষ্ট করে ঘোষণা করছি যে —
      • আমরা anarchist virus নই, এমনকি ক্রপ্টকিন বা তলস্তয়ের মত ‘অহিংস দার্শনিক নৈরাজ্যবাদী’ও নই।
    • আমি আগের পিটিশনগুলোতে সংবিধানের প্রতি আস্থা এবং বিপ্লবের পথ ছেড়ে দেওয়ার যে কথা বলেছিলাম, আজও তাতে কায়েম রয়েছি।
    • আজ আমাদের দেশের বিপদ আসছে উত্তরের কট্টরবাদী গোষ্ঠীগুলোর (আফগান বিদ্রোহী) থেকে। ওরা আগেও আমাদের বিপদ ছিল, ভবিষ্যতেও তাই থাকবে। আমার মতে প্রত্যেক বুদ্ধিমান দেশপ্রেমিকের উচিত ব্রিটিশের সঙ্গে সদিচ্ছা এবং নিষ্ঠাপূর্বক সহযোগিতা করা। তাই ১৯১৪ সালে যুদ্ধ শুরু হলে যখন ভারতের উপর জর্মন-তুর্ক-আফগান হামলার বিপদ বেড়ে গেল তখন আমি ভলান্টিয়ার হতে চেয়েছিলাম।
    • আপনি বিশ্বাস করুন, বা নাই করুন, আমি সাংবিধানিক পথে চলার ইচ্ছে পূর্ণ সততার সঙ্গে ব্যক্ত করছি। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রতি ভালবাসা এবং পারস্পরিক সহযোগিতার হাত বাড়াচ্ছি। সম্রাটের মাফিনামার ঘোষণায় যেমন বলা হয়েছে, সাম্রাজ্যের প্রতি আমার নিষ্ঠা তদনুরূপ।
    • কিন্তু সরকার যদি আমাদের থেকে আরও গ্যারান্টি চান তাহলে আমি এবং আমার বড়দা সরকারের কথামত একটি নিশ্চিত সময়ের জন্যে রাজনীতি থেকে দূরে থাকার কথা দিতে পারি। আমার স্বাস্থ্য ভেঙে গেছে। এখন পরিবারের সংগে শান্ত নিষ্ক্রিয় জীবনযাপন করতে চাই। কোন কিছুই আমাকে আর রাজনীতিতে টেনে নামাতে পারবে না।
    • এছাড়াও সরকার যদি চান, তো একটি নির্ধারিত এলাকায় আমরা রাষ্ট্রের সুরক্ষার নিমিত্ত থানায় এত্তেলা দেবার শর্তও আমি এবং দাদা সহর্ষে মেনে নেব।


    এরপর গান্ধীজি ২৬ মে, ১৯২০ তারিখে ইয়ং ইণ্ডিয়া পত্রিকায় ‘সাভারকর ব্রাদার্স’ নামে একটি প্রবন্ধ লিখলেন। তাতে উনি রাজকীয় মাফিনামা পলিসির (রয়্যাল অ্যামনেস্টি) উল্লেখ করে বললেন —

    “এই দুই ভাই তো স্পষ্ট করে বলছেন যে ওঁরা ব্রিটিশ ডোমিনিয়ন থেকে আলাদা হতে চান না। বরং ওদের মনে হচ্ছে ইংরেজের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমেই ভারতের ভাগ্য নির্ধারণ সম্ভব। তাঁদের সততা এবং মর্যাদাবোধ প্রশ্নাতীত। আমার মনে হয় এঁদের প্রকাশিত রাজনৈতিক চিন্তাকে বিশ্বাস করে এঁদের ছেড়ে দেওয়া উচিত। আমার মনে হয়, বর্তমান ভারতে, সহিংস পথের কোন অনুগামী নেই বললেই চলে।
    এঁরা দীর্ঘদিন ধরে জেলে রয়েছেন, শারীরিক ওজন অনেক কমে গেছে, আর এমন কোন প্রমাণ নেই যে ওঁরা রাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক। অতএব ভাইসরয় এঁদের ছেড়ে দিতে বাধ্য’’। [3]

    তবে গান্ধীজির বিরুদ্ধে সাভারকরের মুক্তির জন্যে কিছু না করার অভিযোগ বারবার এসেছে। সাভারকরের সমর্থক তাতিয়াসাহেব কেলকরও যখন সামুহিক আবেদন পত্রে গান্ধীজির দস্তখত না করার বিষয়ে এই অভিযোগ করলেন তখন গান্ধীজি শংকর রাও দেবকে চিঠি লিখে বললেন —
    ‘হয়ত ডাক্তার সাভারকর (ছোটভাই নারায়ণ রাও) আমার এই কথাটা মেনে নেবেন যে ওঁর মুক্তির জন্যে সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। আর ব্যারিস্টার সাভারকরের (বিনায়ক) হয়ত আমাদের সেই আনন্দদায়ক দিনগুলোর কথা মনে পড়বে, যখন আমাদের প্রথমবার লণ্ডনে পরিচয় হয়েছিল। যখন কেউ রাজি হচ্ছিল না তখন আমি সেখানে ওঁর সম্মানে আয়োজিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছিলাম’। [4]

    এই সময় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিও সেলুলার জেলে বন্দী দুইভাই সাভারকর এবং পাঞ্জাবের আরও দুই বন্দীর (পণ্ডিত পরমানন্দ এবং ছতর সিং?) নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করে প্রস্তাব পাশ করল।

    মারাঠি ইতিহাসবেত্তা এবং সাভারকরের সমালোচক ওয়াই ডি ফাড়কে ইঙ্গিত করেছেন যে এটা ছোটভাই ডাক্তার নারায়ণ রাওয়ের কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে নৈকট্য এবং গান্ধীবাদীদের সঙ্গে মিলেমিশে সাংগঠনিক কাজ করার ফল। [5]

    বাস্তবে ছোটভাই সাভারকর তখন ‘গান্ধীবাদী অসহযোগ’ ব্যাপারটা কি – সেটা মুম্বাইয়ের বিভিন্ন জনসভায় সুন্দর ব্যাখ্যা করে সবাইকে গান্ধীজিকে অনুসরণ করতে উদ্বুদ্ধ করছেন। একদিন উনি মুম্বাইয়ের গিরগাঁওয়ে শান্তারাম চালে একটি জনসভায় বক্তব্য রাখলেন। সেই সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন মিঃ এম এ জিন্নাহ্‌ , বার -অ্যাট-ল’।[6]

    সাভারকরের জানুয়ারি ১৯২০ এর ভাইসরয়কে লেখা চিঠিটির জবাব এল না। নারায়ণ রাও জানিয়েছেন যে রয়াল ক্লেমেন্সি ঘোষণার পর থেকে এক বছরের মধ্যে সমস্ত রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে অন্ততঃ তিরিশটি রাজনৈতিক সংগঠন সোচ্চার হয়েছিল। বোম্বে ক্রনিকলের সম্পাদক মিঃ বি জি হর্নিম্যান, একজন আইরিশ, লাগাতার সম্পাদকীয় লিখে সাভারকর ভাইদের মুক্তির জন্য প্রচার চালাতে লাগলেন।

    এই সময় সাভারকর লিখলেন তাঁর সাত নম্বর ক্লেমেন্সি পিটিশন, তারিখ ৩০ মার্চ ১৯২০। [7]

    এই পত্রটিতে সাভারকর তাঁর আগের চিঠিগুলোতে দেওয়া সব যুক্তির সঙ্গে জুড়ে দিলেন আরেকটি শর্তঃ

    দু’ভাই কথা দিচ্ছেন যে ছাড়া পেলে তাঁরা -- গভর্নমেন্ট যতদিন বলবে ততদিন কোন রাজনৈতিক কাজকর্মে অংশ নেবেন না, এবং সরকার যে রাজ্যে থাকতে বলবে সেখানে থাকবেন, আর যতদিন থানায় হাজিরা দেবেন।

    তিনি নিজের নিষ্ঠার কথা ঘোষণা করে লিখলেন যেঃ
    • আমাদের আন্তরিক ইচ্ছে যে সংবিধানসম্মত আইনি পথে চলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সঙ্গে এক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্মানজনক এবং পারস্পরিক সহায়তার সম্পর্ক গড়ে তোলার বণ্ডে সই করি।
    • আমাদের আন্তরিক ইচ্ছে যে সংবিধানসম্মত আইনি পথে চলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সঙ্গে এক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্মানজনক এবং পারস্পরিক সহায়তার সম্পর্ক গড়ে তোলার বণ্ডে সই করি।
    • যদি বারীন, হেম ইত্যাদিকে ছেড়ে দেওয়া হয়ে থাকে তাহলে আমরা কী দোষ করলাম? ওরা তো কবুল করেছে যে ওরা বোম বানিয়েছিল এবং ইংরেজ রাজপুরুষদের হত্যা করার চক্রান্তে সংলিপ্ত ছিল।
    • শচীন সান্যালকে, যাবজ্জীবন কারাবাসের শাস্তি পাওয়া, চার বছর পুরো হতেই ছেড়ে দেওয়া হল। আমাদের তো প্রায় ১০/১১ বছর হতে চলল।
    • বিশেষ করে আপনাকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে মহারাষ্ট্র কোন রকম উপদ্রব এবং বিশৃংখলা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত রয়েছে।
    • আমার জীবন শুরু হয়েছিল ভালভাবে, উজ্বল ভবিষ্যতের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু আবেগে ভেসে গিয়ে সব নষ্ট করেছি। এবার ছাড়া পেলে আমার নবজীবন প্রাপ্তি হবে। মুক্তি দিলে সরকারের দয়া, সংবেদনশীল মনোভাব আমার মানসে গভীর প্রভাব ফেলবে।
    • আমি ব্যক্তিগত রূপে বরাবরের মত একান্ত আপনার হয়ে যাব এবং ভবিষ্যতে আপনাদের জন্যে রাজনৈতিক স্তরে কাজে আসব।


    সাভারকরের প্রশংসক ইতিহাসবিদ ডঃ রমেশ চন্দ্র মজুমদারের মতেঃ

    নিঃসন্দেহে এটা বলা যায় যে আন্দামানের বন্দীজীবন মহান বিপ্লবী নেতাদের ব্রিটিশ শাসকের প্রতি তাঁদের দৃষ্টিকোণ বদলে গেছল। আর গুপ্ত ষড়যন্ত্র বা বিপ্লবের মাধ্যমে শাসকদের নির্মূল করার ভাবনায় মৌলিক পরিবর্তন এসেছিল। [8]

    সাভারকর ছাড়া পেলেন নরা। তবে ১৯২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে সেলুলার জেলের তেলঘানির ফোরম্যান নিযুক্ত হলেন, মাসিক একটাকা মাইনে। [9]

    সাভারকরের জীবনীলেখক পুরন্দরে প্রশ্ন তুলেছেন – সাভারকর কেন নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে রাজনৈতিক কাজ থেকে দূরে থাকার বন্ড সই করার কথা বললেন?

    পুরন্দরের মতে — এর কারণ, আগে বারীন ঘোষ এবং অন্যদেরও ছাড়া পাওয়ার সময় ওই বন্ড সাইন করতে বলা হয়েছিল। এবং বন্ডের শর্ত ভাঙলে ফের আন্দামানে ফেরত পাঠানোর হুমকি দেওয়া হত।

    তাই তিনি জেলের বন্দীদের মধ্যে বণ্ড সাইন করে বেরিয়ে যাবার পক্ষে প্রচার করতে লাগলেন। সাভারকর তাঁর আন্দামানের স্মৃতিকথায়[10] লিখেছেন যে অনেক রাজবন্দী বড্ড গোঁড়া। তারা বিরোধিতা করতে লাগল, কিছুতেই মুচলেকার বণ্ডে সই করবে না।

    সাভারকর লিখছেন যে তর্ক বেঁধে গেল, সবাইকে কেন সাইন করতে হবে? উনি বোঝালেন যে এতে কোন অন্যায় নেই। এটা রাষ্ট্রীয় স্বার্থে করা উচিত। উদাহরণ দিলেন – শিবাজী কেমন করে জয় সিংহ এবং আফজল খাঁকে বোকা বানিয়ে ছিলেন। গুরুগোবিন্দ সিংহের গল্প বললেন। শেষে শ্রীকৃষ্ণের উদাহরণ দিলেন। কিন্ত ওদের মধ্যে যারা বড্ড ঢ্যাঁটা, তারা এতসব অতীতের উদাহরণেও গলল না। তবে শেষমেশ সবাই ওঁর কথায় বণ্ডে সাইন করল এবং সাভারকরের ভাষায় ‘তখন আন্দামান জেলের তালা খুলিয়া গেল’।[11] (বাংলা ভাষান্তর আমার)।

    কিন্তু এইখানে পুরন্দরের টাইম ফ্রেম এবং কন্টেক্সট ঘেঁটে দিয়েছেন। এটা স্পষ্টতঃ সমস্ত রাজবন্দীদের ক্লেমেন্সি আদেশ জেলে পৌছনোর পর বেরোনোর আগের ফরমালিটি। আগে দেখা যাক, সাভারকরের মুক্তির আদেশ কখন এল, কীভাবে এল।

    সেলুলার জেল তুলে দেবার দাবি

    ঘটনা হল ১৯১৯ সালে রয়াল ক্লেমেন্সি ঘোষণার পর সাভারকরের মাফিনামা নিয়ে যতবার ভাইসরয়ের অফিস থেকে বোম্বাইয়ের গভর্নরের কাছে কমেন্টস চেয়ে পাঠানো হয়েছে ততবারই বোম্বের গভর্নর জর্জ লয়েড সেটা পত্রপাঠ খারিজ করে বলেছেন — সাভারকর ভাইদের ছেড়ে দেওয়া ঠিক হবে না।

    কিন্তু শেষের বার, বম্বে ক্রনিকলের সম্পাদক হর্নিম্যানের প্রশ্নের উত্তরে উনি বলেছিলেন — বারীন ঘোষের কেসের সঙ্গে তুলনা করা ভুল। তবে সরকারকে জানিয়েছি যে একবছর পরে সাভারকরের কেস আবার রিভিউ করব।[12]

    বিভিন্ন সংগঠন এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মুখর হল। দ্য ন্যাশনাল ইউনিয়ন বলে বোম্বাইয়ের একটি সংগঠন ৫০০০ লোকের হস্তাক্ষর যুক্ত আবেদন ভারত সরকারের সেক্রেটারি অফ স্টেটের কাছে পাঠাল। ইম্পিরিয়াল লেজিস্লেটিভ কাউন্সিলে রঙ্গস্বামী আয়েঙ্গার ও খাপর্দে এ নিয়ে প্রশ্ন করলেন। [13]

    কথা হল, অসুস্থ সাভারকর ভাইদের না ছেড়ে দিলে ‘কন্সটিটুশনাল রিফর্ম’ অন্তর্গত রাজকীয় ক্ষমাদান কথাটার কোন অর্থ হয় কি?

    এই সময়ের আরেকটি ঘটনা হল উদারনৈতিক ব্রিটিশ রাজনেতা জোসিয়া ওয়েজউডের ভূমিকা। সেলুলার জেলের ভেতরের নরকের সঙ্গে ভারতের মূল ভূখণ্ডের মানুষের সঠিক পরিচয় ছিল না। ওয়েজউড সেই ১৯১১ সালেই ফ্রান্সের বন্দরে সাভারকরের বন্দী হওয়া নিয়ে দি হেগ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের প্রহসনের কড়া নিন্দে করেছিলেন।

    ১৯২১ সালে ভারত ভ্রমণে এসে লাহোরের ট্রেনে তাঁর আলাপ হয় জনৈক অধ্যাপকের সঙ্গে যিনি ঠিক একমাস আগে ‘রাজকীয় ক্ষমাদান’ প্রোগ্রামে সেলুলার জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তাঁর সঙ্গে কথাবার্তার পর ওয়েজউড ইংল্যান্ডের ডেইলি হেরাল্ড পত্রিকায় আন্দামানের দৈনন্দিন জীবন নিয়ে ‘হেল অন আর্থ’ শিরোনামে একটি তেতো প্রবন্ধ লিখলেন। দেখালেন ওখানে ঘৃণ্য অপরাধে দণ্ডিত অপরাধীরাই রাজা এবং রাজবন্দীরা তাদের সহজ শিকার। ষণ্ডাগণ্ডাদের হাতে অত্যাচারিত হয় নরম সরম বার্মিজ ও মাদ্রাসীরা। ওই দ্বীপে নারীর অভাবে বার্মিজদের বেশ্যার ভূমিকায় বাধ্য করা হয়। [14]

    ওই লেখা পড়ে দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ শান্তিনিকেতন থেকে বোম্বে ক্রনিকলকে চিঠি লিখে বললেন — কর্নেল ওয়েজউডের ওই লেখায় আন্দামানের যে ভয়াবহ চিত্রটি ফুটে উঠেছে তারপর আশা করি গভর্নর জর্জ লয়েড আর সাভারকর ভাইদের আন্দামানে রাখতে চাইবেন না। আর ওই ‘পেনাল সেটলমেন্ট’ ধারণাটিই আজ বদলে যাওয়া সময়ে অচল, এটাকে এক্ষুণি তুলে দেওয়া উচিৎ। [15]

    লাগাতার প্রতিবাদ এবং প্রচারের ফল ফলল। ব্রিটিশ রাজ এপ্রিল ১৯২১ তারিখে বোম্বাইয়ের গভর্নরকে লিখে জানতে চাইলেন — মে ১৯২০ এর পর একবছর তো হয়েছে। সাভারকরের কেস নিয়ে রিভিউ কতদূর?

    জর্জ লয়েড তখনও অনড়। কিন্তু চারদিকে এত সমালোচনা যে শেষে মে ১৯২১ নাগাদ সাভারকর ভাইদের কালাপানি থেকে ভারতের মূল ভুখণ্ডের বোম্বাই রাজ্যের জেলে ফিরিয়ে আনতে রাজি হলেন। বড়ভাই বাবারাও প্রথমে বীজাপুর জেলে, তারপর সাবরমতী জেলে। শেষে সেপ্টেম্বর ১৯২২শে নিঃশর্ত মুক্তি পেলেন।

    বিনায়ক সাভারকর ২ মে, ১৯২১ তারিখে দাদা গণেশের সঙ্গে ভারতগামী জাহাজে চড়লেন। এইভাবে বিনায়ক সাভারকরের ব্রিটিশ সরকারের ৫০ বছরের দ্বীপান্তরের শাস্তি ১০ বছরে শেষ হল।

    ভারত সরকার আন্দামানে কোন রাজবন্দীদের না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল। ফলশ্রুতিতে ত্রৈলোক্য চক্রবর্তী, পণ্ডিত পরমানন্দ এবং বাকি শিখ রাজবন্দীরা সবাই ১৯২১ সালের শেষের দিকে ভারতে ফিরে এলেন। এর ব্যতিক্রম ঘটল ফের ১৯৩২ সালে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের পর।

    ভারতের মাটিতে পা রেখে সাভারকরের তখন যে অনুভূতি হয়েছিল তার সামান্যকণাও অনুভব করা আমাদের সাধ্যের বাইরে।

    কিন্তু ব্রিটিশের কারাগার থেকে মুক্তি তখনও অধরা।

    তাঁকে প্রথমে রত্নাগিরি জেলে রাখা হল। তারপর ১৯২৩ সালে পুণের যারবেদা জেলে পাঠানো হল।

    সেখানে তাঁর সঙ্গে আলাদা করে দেখা করলেন প্রথমজন মেজর মারে, যিনি আন্দামানে জেল সুপারিন্টেন্ডেন্ট ছিলেন এবং সাভারকরের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল। সাভারকর নিজে ১৯১৫ সালে ছোটভাইকে লেখা চিঠিতে মারে’র নিষ্ঠা ও ন্যায়পরায়ণতার প্রশংসা করেছেন।[16]

    ওই সাক্ষাতের পর মারে বিনায়কের সশর্ত মুক্তির অনুশংসা করলেন। বললেন বারো বছর জেলে কাটানোর পর মনে হয় না উনি খামোকা কোন ঝামেলা পাকাবেন। তবে মারে বললেন যে আগামী পাঁচ বছর কোন সক্রিয় রাজনীতি না করার শর্ত রাখা হোক, শর্ত ভাঙলে ফের কালাপানি। [17]

    এরপরে সরেজমিনে দেখতে এলেন বোম্বে গভর্নর জর্জ লয়েড এবং হোম মেম্বার মরিস হেওয়ার্ড।

    লয়েডের মত সশর্ত ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে। কিন্তু হেওয়ার্ডের ভয় গান্ধীর চৌরিচৌরা কাণ্ডের পর মাঝপথে অসহযোগ আন্দোলন তুলে নেওয়ায় বিরক্ত যুব সমাজ যদি সাভারকরের থেকে প্রেরণা পায়!

    গান্ধীজি সাভারকর কালাপানি থেকে ফিরে আসার আগেই দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনকে লিখেছিলেনঃ

    সাভারকর ভাইদের প্রতিভাকে জনকল্যাণমূলক কাজে ভালভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আমি বিনায়ককে আগে থেকেই চিনি। সাহসী এবং খাঁটি দেশপ্রেমিক। আমাদের অনেক আগে উনি ভারত সরকারের বীভৎস চেহারাটা চিনেছিলেন। দেশকে অনেক বেশি ভালবেসেছিলেন বলেই ওনাকে আন্দামানে যেতে হয়েছে। কোন ন্যায়পরায়ণ সরকারের রাজত্বে উনি অনেক উচ্চপদে আসীন হতেন। [18]

    ১৯২৩ সাল জুড়ে নাসিক, পুণে এবং বিভিন্ন জায়গায় বিনায়কের মুক্তির দাবিতে ঘনঘন প্রচার এবং জনসভা হচ্ছিল। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসও তাদের ডিসেম্বর ১৯২৩ এর কাকিনাড়া সম্মেলনে সাভারকরের তৎকাল নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে কড়া প্রস্তাব পাশ করল।

    ব্রিটিশ রাজ অবশেষে ঐক্যমতে পৌঁছল যে সাভারকরকে দুটো কড়া শর্তাধীন মুক্তি দেওয়া হোক।

    এক, পাঁচ বছর কোন রাজনৈতিক কাজে অংশগ্রহণ করা চলবে না।
    দুই, পাঁচ বছর রত্নাগিরি জেলার বাইরে পা রাখা যাবে না।
    এবং পাঁচবছর পর ওনার চালচলন নিয়ে সমীক্ষা করা হবে। দরকার হলে এই প্রোবেশন পিরিয়ড বাড়ানো যেতে পারে।

    কিন্তু শেষসময়ে আরও দুটো অপমানজনক শর্ত জুড়ে দেওয়া হল।

    সাভারকরকে লিখে দিতে হবে যেঃ
    এক, উনি ন্যায়বিচার পেয়েছেন এবং তাঁর উচিত শাস্তি হয়েছিল।
    দুই, হিংসার পথকে নিন্দা করে বিবৃতি দিতে হবে।

    সাভারকর দুটো শর্তই মেনে নিলেন।

    অবশেষে সাভারকর ৬ জানুয়ারি ১৯২৪ তারিখে ব্রিটিশ জেলের বাইরে পা রাখলেন। ছোটভাই নারায়ণ নিতে এসেছিলেন। দুইভাই মুম্বাইয়ের গিরগাঁওয়ে নারায়ণের নতুন বাড়িতে একদিন রইলেন। পরেরদিন থেকে বিনায়ক রত্নাগিরিতে স্ত্রী যমুনার সঙ্গে একটি বাড়িতে থাকতে শুরু করলেন।

    বৈভব পুরন্দরে জানাচ্ছেন যে এরপর স্থানীয় জনমানসে দুটো প্রতিক্রিয়া হল। কিছু পত্রিকা ক্রাউড ফান্ডিং এর মাধ্যমে সাভারকরের জন্যে কিছু টাকা তোলার আবেদন জানাল। কারণ, ওঁর স্বাস্থ্য ভেঙে গেছে। জনসাহায্য না পেলে জীবনযাপনের জন্যে বোম্বের ডাক্তার ছোটভাইয়ের উপর নির্ভর করতে হবে।

    আবার ইন্দুপ্রকাশ, কেশরী এবং অন্যান্য মারাঠি দৈনিকে প্রকাশিত হল সাভারকরের শেষ মুহুর্তে মেনে নেওয়া অপমানজনক শর্তগুলি, যার মাধ্যমে ব্রিটিশ রাজ চেয়েছিল যুব সম্প্রদায়ের চোখে বিনায়ক সাভারকরের ভাবমূর্তিকে খাটো করতে, যাতে উনি প্রেরণাস্রোত না হতে পারেন। ওদের চাল সফল হল।

    অনেক হোম-রুল সমর্থক বিস্মিত — এটা কী হল! অন্যেরা দুঃখ পেল - একজন বিখ্যাত দেশপ্রেমিক চাপে পড়ে এমন সব শর্ত মেনে নিলেন।

    বোম্বাই প্রদেশের হোম সেক্রেটারি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে লিখলেন—“some of the Extremist-minded publications had been completely taken aback by Savarkar’s statement”. [19]

    আপাততঃ আমরা সাভারকরের ব্রিটিশ জেলে থাকার হিসেবটা দেখি, কারণ এ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে নানান কথা প্রচলিত।

    প্রথম গ্রেফতার, লণ্ডন, ১৩ মার্চ, ১৯১০।

    ভারতে মোকদ্দমা চালানোর উদ্দেশ্যে ১ জুলাই ১৯১০ বোম্বাই রওনা। বোম্বাইয়ের দুটি স্বতন্ত্র আদালত দ্বারা, ক্রমশঃ, ২৩ ডিসেম্বর ১৯১০ এবং ৩০ জানুয়ারি, ১৯১১ তারিখে, দুটি আলাদা মামলায় যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরের (কালাপানির) শাস্তি ঘোষণা। দুটো শাস্তিই একের পর এক ক্রিয়াশীল (consecutively) হবে, একসঙ্গে (simultaneously) নয় । তখনকার হিসেবে এর নীট ফল ৫০ বছর কালাপানি। আন্দামানে গেলেন ৪ জুলাই, ১৯১১। আন্দামান থেকে ছাড়া পেলেন ২ মে, ১৯২১। অর্থাৎ নয় বছর দশ মাস পরে। যারবেদা জেল থেকে ছাড়া পেলেন ৬ জানুয়ারি, ১৯২৪। অর্থাৎ, ব্রিটিশ জেলে রইলেন মোট ১৩ বছর ১০ মাস মতন।

    কিন্তু রত্নগিরি জেলার বাইরে পা না রাখা এবং রাজনৈতিক কাজে অংশগ্রহণ না করার শর্ত জারি রইল ১০ মে, ১৯৩৭ পর্য্যন্ত, আরও ‘তেরো বছর চার মাস ধরে।

    কিন্তু এইসময় সাভারকর সময় পেলেন তাঁর হিন্দুত্ব’ নামক বিশিষ্ট ইতিহাস-পুরাণ-দর্শন ভিত্তিক ধারণাটিকে লিপিবদ্ধ করতে, যা তাঁকে ভারত ইতিহাসে এক স্থায়ী কিন্তু বিতর্কিত নায়কের স্থান দেবে।

    এ নিয়ে পরবর্তী অধ্যায়ে কথা বলা যাবে।

    (চলবে)

    [1] কলেক্টেড ওয়ার্কস্‌ অফ মহাত্মা গান্ধী, ভারত সরকার, দিল্লি ১৯৯৯। খণ্ড ১৯, পৃঃ ৩৪৮
    [2] ঐ
    [3] ঐ
    [4] কলেক্টেড ওয়ার্কস্‌ অফ মহাত্মা গান্ধী, খণ্ড ৭২, পৃঃ ৫০; ভারত সরকার, ১৯৯৯
    [5] ফাড়কে, “শোধ সাভারকরঞ্চা”, পৃঃ ৬৪-৬৫
    [6] বোম্বে ক্রনিকল, ২৩ জানুয়ারি, ১৯২০
    [7] বৈভব পুরন্দরে, “সাভারকর”, পৃঃ ১৫৯
    [8] মজুমদার, ‘পেনাল সেটলমেন্টস অফ আন্দামান এন্ড নিকোবর’, পৃঃ ১৯৮
    [9] ঐ এবং ধনঞ্জয় কীর, ‘ স্বাতন্ত্রবীর সাভারকর’, পৃঃ ১৫৫
    [10] সাভারকর, ‘মাই ট্রাসপোর্টেশন ফর লাইফ’, পৃঃ ৩১৮
    [11] পুরন্দরে, “সাভারকর”, পৃঃ ১৬০
    [12] Source Material for a History of the Freedom Movement in India, Vol. 2, p. 477
    [13] বম্বে ক্রনিকল, ফেব্রুয়ারি, ১৯২০
    [14] ঐ, ৩১ জানুয়ারি, ১৯২১
    [15] ঐ, ৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯২১
    [16] সাভারকর, ‘অ্যান ইকো ফ্রম আন্দামান’, পৃঃ ৩৮
    [17] ফাড়কে, “শোধ সাভারকরঞ্চা’, পৃঃ ৬৭-৬৮
    [18] গান্ধী, কলেক্টেড ওয়ার্কস্‌, ভল্যুম ২০, পৃঃ ১০৪-০৫
    [19] ফাড়কে , শোধ সাভারকরাঞ্চা, পৃঃ ৭৫

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন