এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা  রাজনীতি

  • সাভারকর চর্চাঃ  সবে মিলে – ৩ (আন্দামান পর্ব)

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ২২২০ বার পঠিত
  • সাভারকর চর্চাঃ সবে মিলে – ৩ (আন্দামান পর্ব)

    ভারতে ফেরা, সাভারকরের বিচার ও শাস্তি

    জাহাজ মোরিয়া তার ভারত অভিমুখী যাত্রা শুরু করল। এডেন বন্দরে আগের জাহাজ মোরিয়াকে বদলে এস এস সস্তি নামের জাহাজে সাভারকরকে তোলা হল। ২২ জুলাই, ১৯১০ নাগাদ এই জাহাজ মুম্বাই বন্দরে পৌঁছে গেল।

    ওদিকে সাভারকরের ফ্রান্সের জমিতে অন্যায় গ্রেফতারের বিরুদ্ধে দি হেগে আন্তর্জাতিক আদালতে শুনানি চলছে। এদিকে ওঁর বিচারের জন্য তড়িঘড়ি এক বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হল। ভগত সিং এর জন্যেও অমন স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল বিচার শুরু করেছিল। ভগত সিং ওই ট্রাইব্যুনালের বিচারকে প্রহসন আখ্যা দিয়েছিলেন। এবং সরকারি খরচে উকিল নিযুক্ত করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে নিজের কেস নিজেই লড়েছিলেন।

    সাভারকরের মামলায় ওঁর বিরুদ্ধে ছিল তিনটে অভিযোগ, যা আগের কিস্তিতে বলেছি। এ নিয়ে আটটি ধারায় কেস চলছিল।

    সাভারকরের মামলায় ডিফেন্সের বন্দোবস্ত করলেন ওঁর রাজনৈতিক বন্ধুরা — মাদাম কামা, বীরেন চট্টো, শ্যামজী কৃষ্ণবর্মারা। ওঁদের আশা ছিল ইন্টারন্যাশনাল কোর্টে হেরে গিয়ে ব্রিটেন সাভারকরকে ফ্রান্স সরকারের কাছে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হবে।

    তাই নামজাদা উকিলের এক দল দাঁড়ালেন সাভারকরের পক্ষে। যেমন, জোসেফ ব্যাপটিস্টা, চিত্রে, গোবিন্দরাও গ্যাডগিল এবং রঙ্গনেকর।

    ওঁরা বললেন কীভাবে মার্সাই বন্দর এলাকায় ব্রিটেনের পুলিশের সাভারকরকে বন্দী করার অর্থ ফ্রান্সের সার্বভৌমত্বের উল্লঙ্ঘন এবং এ নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা চলছে। সেই রায় না বেরনো পর্য্যন্ত এই মামলার শুনানি বন্ধ রাখা উচিত।

    উল্লেখনীয়, কার্ল মার্ক্সের নাতি জাঁ লঙ্গে এর জন্যে আন্তর্জাতিক আদালতে আরেকটি পিটিশন দিয়েছিলেন।[1]

    কিন্তু ভবি ভুলল না। কয়েক মাসের মধ্যে মামলা শেষ করে ট্রাইব্যুনাল ২৩ ডিসেম্বর, ১৯১০ তারিখে রায় দিল — সাভারকর দোষী, ওঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং ওঁকে আজীবন বন্দীদশা ভুগতে হবে। সহ-অভিযুক্ত একজনকে ১৫ বছর, তিনজনকে ১০ বছর এবং বাকিদের ছ’মাস থেকে চার বছর পর্য্যন্ত কারাবাস। ছোটভাই নারায়ণ রাওকে ছ’মাস।

    এগুলো অস্ত্র জোগাড়, সাপ্লাই এবং সিডিশনের অভিযোগের শাস্তি।

    আবার ৩০ জানুয়ারি, ১৯১১ তারিখে অন্য একটি আদালত নাসিকে জ্যাকসন হত্যা মামলায় কথিত মূল ষড়যন্ত্রী বিনায়ক সাভারকরকে আবার যাবজ্জীবন কারাবাসের শাস্তি ঘোষণা করল।

    দুটো শাস্তি একসঙ্গে (concurrently) নয়, একের পর এক (consecutively) চলবে।

    তখনও আন্তর্জাতিক আদালতের রায় বেরোয়নি। তবে একমাস পরে হেগ থেকে খারাপ খবর এল।

    ২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯১১ তারিখে সাভারকরের পক্ষের পিটিশন খারিজ হয়ে গেছে। আদালত ওই গ্রেফতারিটা আন্তর্জাতিক আইন বিরোধী মেনেও সাভারকরকে ফ্রান্সে ফিরিয়ে দেওয়া দরকারি মনে করল না।

    তাহলে কী দাঁড়াল?

    তখনকার সময়ে যাবজ্জীবন মানে ধরা হত ২৫ বছর। এখন এই দুটো পানিশমেন্টের ফলে সাভারকরকে জেলে থাকতে হবে (২৫+২৫=৫০) পঞ্চাশ বছর। তখন সাভারকরের বয়েস ছিল ২৮। তাঁর মানে উনি ছাড়া পেতেন ৭৮ বছর বয়সে। আবার সেই সময়ে ভারতে গড় আয়ু পঞ্চাশের বেশি ছিল না।

    সাভারকর আবেদন করলেন যে দুটো শাস্তি একের পর এক (consecutively) না করে একসঙ্গে (concurrently) করে দেওয়া হোক।

    আবেদন না-মঞ্জুর হল। অর্থাৎ ব্রিটিশ সরকার চাইছিল না যে সাভারকর বাকি জীবন ইংরেজ বিরোধী কোন সশস্ত্র সংগ্রাম গড়ে তুলুন।

    এত কথা বলার উদ্দেশ্য সাভারকরের পরবর্তী মার্সি পিটিশনের পেছনের মানসিক অবস্থাকে বোঝা, নইলে অবিচার হবে।

    যাহোক, সাভারকরকে মাদ্রাজ জেলে স্থানান্তরিত করা হল। ২৭শে জুন ১৯১১ তারিখে মহারাজা নামের জাহাজ সাভারকরকে নিয়ে ৪ জুলাই তারিখে পোর্ট ব্লেয়ার বন্দরে নোঙর করল। সেলুলার জেলে তাঁর অপেক্ষায় রয়েছেন কুখ্যাত জেলর ব্যারী, যাকে বারীন্দ্রনাথ তুলনা করেছেন রক্তখেকো বাঘের সঙ্গে।

    এদিকে তাঁর বড়দা গণেশ দামোদর সাভারকর (বাবারাও) কিন্তু দু’বছর আগে থেকেই (জুন, ১৯০৯) সেলুলার জেলে বন্দী রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল নাসিকে অভিনব ভারত বলে গুপ্ত বিপ্লবী সংগঠন পরিচালনা, বিদ্রোহী কবিতা লেখা এবং ঘরে একগাদা বোমা মজুত করা।

    সেলুলার জেলের পটভূমি

    “আজ আমি নিজে যখন ফাঁসির অপেক্ষায় জেলের সেলে বন্দী, তখন দায়িত্ব নিয়ে বলছি যে যাবজীবন কারাবাস - ফাঁসির চেয়ে অনেক বেশি কড়া শাস্তি”।
    আন্দামানের এক বন্দী লালা রামশরণ দাসের বই “ড্রীমল্যান্ড” পরে ভগত সিং এর টিপ্পনী। [2]

    রাজনৈতিক বন্দী বিশেষ করে বিদ্রোহীদের শাস্তি দেয়ার জন্য ব্রিটিশ সরকার সেই সিপাহী বিদ্রোহের সময় থেকেই আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের কথা ভেবেছিল। আর ছিল বর্মার মান্দালয় জেল, যেখানে তিলক, নেতাজি সুভাষ এবং ত্রৈলোক্য মহারাজেরা বিভিন্ন সময় বন্দীদশা কাটিয়েছেন।

    সিপাহী বিদ্রোহের পর প্রথম রাজবন্দীদের যখন এখানে আনা হল তখন সেলুলার জেল তৈরি হয়নি। ফলে খোলা জায়গায় রাখা বন্দীদের চোখে এ ছিল দস্তুরমত কালাপানি। রেকর্ড অনুযায়ী প্রায় ২৩৮ জন বন্দী এখান থেকে পালাতে চেষ্টা করে মার্চ ১৮৬৮ নাগাদ ধরা পড়ে এবং তাদের মধ্যে ৮৭ জনকে ফাঁসিকাঠে লটকে দেওয়া হয়।

    উনিশ শতকের শেষের দিকে ভারতে বিদ্রোহের গতি বেড়ে যায়, বাড়তে থাকে রাজবন্দীদের সংখ্যা। ফলে দশ বছর ধরে গড়ে তোলা হয় হাই সিকিউরিটি সম্পন্ন সেলুলার জেল, যা সম্পন্ন হয় ১৯০৬ সালে।

    সেলুলার জেলে প্রথমবার রাজবন্দীদের আনা হয় ১৯০৯ থেকে ১৯১৬ নাগাদ,যাঁরা মূলতঃ প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ জয়ের আনন্দে ইংলন্ড সম্রাটের দ্বারা রয়্যাল অ্যামনেস্টি বা ‘রাজকীয় ক্ষমা’ ঘোষণায় ১৯২০-২১ নাগাদ মুক্তি পেয়েছেন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন মানিকতলা বোমার মামলার বারীন্দ্র, উপেন্দ্র এঁরা( ১৯০৯-১৯২০, বারো বছর) এবং দিল্লি বোমকান্ডের শচীন্দ্র সান্যাল ও গদর পার্টির বিপ্লবীরা (১৯১৬-১৯২০, পাঁচ বছর), আর সাভারকরেরা দুই ভাই (১৯১১—২১, ১১ বছর)।

    দ্বিতীয়বার ১৯৩০-৩২ নাগাদ। এতে ছিলেন চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের সঙ্গে যুক্ত বিপ্লবীরা, যেমন গণেশ ঘোষ, অম্বিকা চক্রবর্তী, কল্পনা দত্ত, এবং আরও অনেকে। এঁরা বেশিরভাগই ১৯৩৮ নাগাদ মুক্তি পেয়ে যান।

    [ Annexure referred to in reply to Part (a) to (c) of Rajya Sabha Unstarred Question No. 1756 for 9.7. 2019]

    State-wise details of Freedom Fighters deported to Andaman Cellular Jail.

    ক্রমিক সংখ্যা রাজ্যের নাম বন্দীদের সংখ্যা
    ১ বঙ্গ ৩৯৮
    ২ পঞ্জাব ৯৫
    ৩ মহারাষ্ট্র ০৩
    ৪ বিহার ১৭
    ৫ উত্তর প্রদেশ ১৮
    ৬ কেরালা ১৪
    ৭ অন্ধ্র প্রদেশ ০৮
    ৮ উড়িষ্যা ০৫
    ৯ হিমাচল/সীমান্ত প্রদেশ / তামিল নাড়ু / অন্য ২৭
    মোট ৫৮৫

    (বাংলা আমার করা)

    আমাদের আলোচনা সীমাবদ্ধ থাকবে মূলতঃ ১৯০৯-২১ সময়ের মধ্যে।

    সেলুলার জেলের বন্দীদের তখনকার অবস্থা

    ১৯০৯ সালে যুগান্তর দলের যে আটজন সাতজন ফাঁসির বদলে যাবজ্জীবন কারাবাসের শাস্তি পেয়ে আন্দামানে গেলেন। তাঁরা হলেন বারীন্দ্র, উপেন্দ্র, উল্লাসকর, হেমচন্দ্র, হৃষিকেশ কাঞ্জিলাল, ইন্দুভুষণ রায়, বিভূতিভূষণ এবং অবিনাশ।

    এ’ ব্যাপারে আমরা প্রথমে দেখব বারীন্দ্রনাথ ঘোষ (দ্য টেল অফ মাই এগজাইল), উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (নির্বাসিতের আত্মকথা) এবং উল্লাসকর দত্তের (টুয়েলভ ইয়ার্স অফ প্রিজন লাইফ) বইগুলোর বর্ণনা। কারণ তাঁরা সাভারকরের দু’বছর আগে থেকেই সেলুলারে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন এবং সাভারকরের থেকে দু’বছর বেশি সময় (১২ বছর) ওখানে কাটিয়েছেন।

    তারপর দেখব সাভারকরের নিজের স্মৃতি কী বলছে।

    এখানে উপেন্দ্রনাথের লেখা থেকে একটা ঘটনার কথা বলি। বারীন্দ্রনাথ ঘোষ ইংল্যান্ডে জন্মেছিলেন। ফলতঃ বৃটিশ আইনের চোখে তিনি ব্রিটিশ নাগরিক। অর্থাৎ তাঁর বিচার আলাদা করে ব্রিটিশ আইনে হাইকোর্টে হতে পারত। যখন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জিজ্ঞেস করলেন যে বারীন কি তাঁর ব্রিটিশ সাহেব হওয়ার বিশেষ অধিকার প্রয়োগ করতে চান, বারীন বললেন — নো! [3]

    উপেন্দ্রনাথের ‘নির্বাসিতের আত্মকথা’র ভূমিকায় সৈয়দ মুজতবা আলী জানিয়েছেন যে রবীন্দ্রনাথ ওই বইটি শান্তিনিকেতনের লাইব্রেরিতে রেখেছিলেন এবং ছাত্রদের থেকে জানতে চেয়েছিলেন কে কে ওই বইটা পড়েছে? তারপর বলেছিলেন বাংলায় অমন বই বিশেষ লেখা হয়নি।

    জেলে বন্দীদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা কেমন ছিল?

    বারীন বলছেন রস আইল্যান্ড, আবেরদীন জেটি ও হ্যারিয়েট পাহাড়ের সৌন্দর্য ঢেকে রাখে সেলুলার জেলের পশুর খোঁয়াড়ের মত সেল ও অমানুষিক জীবনযাত্রার বিভীষিকা।

    তিনতলা বাড়িটিতে ৭৮টি ছোট ছোট সেল।

    রোজকার কাজের মধ্যে ছিল নারকোলের ছোবড়া পেটানো, দড়ি পাকানো এবং ঘানিতে তেল বের করা। জেলের বাইরের কাজ ছিল আরও কষ্টদায়ক।

    উল্লাসকর লিখেছেন যে কলুর বলদ সারাদিন ঘানিতে ঘুরে ঘুরে যা সর্ষের তেল বের করে তা খুব বেশি করে ৮ সের মানে ১৬ পাউন্ডের বেশি হবে না। অথচ, আমাদের দৈনন্দিন টার্গেট দেওয়া হত এক মণ বা ৮০ পাউণ্ড! [4]

    একটু পান থেকে চূণ খসলেই পিঠে পড়ত চাবুক, লাঠির বাড়ি। শাস্তি হত ডান্ডা-বেড়ি, হাতকড়া, এবং চটের বস্তা পরে থাকা। হাসপাতালের ডাক্তাররা এই অত্যাচারে অপ্রত্যক্ষ ভাবে হলেও সাহায্য করত। এই অবস্থায় ইন্দুভূষণ রায় আত্মহত্যা করল, উল্লাসকর দত্ত এবং জ্যোতিষচন্দ্র পাল পাগল হয়ে গেল।

    উল্লাসকর আরও লিখেছেন যে ওঁর শরীরে নির্মমভাবে যে ইলেক্ট্রিক শক দেওয়া হয়েছিল তাতে সমস্ত শিরা-উপশিরা এবং স্নায়ু যেন ছিঁড়ে টুকরো টুকরো হয়ে গেছল। [5]

    বলা বাহুল্য, যে এই নরকবাস, আধপেটা রেশন, ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য মহামারী, বন্দীদের বাঁচার তাগিদে নানান ছল-কপট, চুকলি করতে শেখাল। মানুষের ভেতরের যা কিছু ভাল এবং যা কিছু মন্দ, বীরত্ব ও কাপুরুষতা, সবকিছু বাইরে বেরিয়ে এল।

    একজন বন্দী দশ-বারো বছরে প্রমোশন পেয়ে জমাদার হয়। তখন তার কাঁধে আঁটা হয় একটা লাল ব্যাজ, যাতে একটা পেতলের চাকতিতে ‘জমাদার’ লেখা। সে পেতে থাকে মাসে ৮ টাকা এবং দৈনিক রেশন।

    প্রত্যেক জমাদারের অধীনে থাকে ৪ বা ৫ জন ‘টিন্ডাল’। তাদের অমনই একটা লাল ব্যাজে পেতলের চাকতিতে পদের নাম লেখা। প্রত্যেক টিন্ডালের অধীনে ২০ থেকে ২৫ জন পেটি অফিসার, তাদের গায়ে শুধু একটা কালো ব্যাজ, কোন পেতলের চাকতি ছাড়া। [6]

    বন্দীদের গলায় ঝুলত নেক-টিকেট বা তিন ইঞ্চির একটি কাঠের চাকতি — আয়তাকার, গোল অথবা তেকোণা। তাতে লেখা থাকত বন্দীর সিরিয়াল নম্বর, শাস্তি শুরু হওয়ার দিন এবং কবে নাগাদ মেয়াদ শেষ হবে।

    জেলর ব্যারি ঘুরে বেড়াতেন তাঁর জমাদার, টিন্ডাল এবং পেটি অফিসারদের নিয়ে। কথায় কথায় শাস্তির ঘোষণা হত — ‘ছ’মাসের নির্জন কারাবাস’, ‘দু’পাউন্ড ছোবড়া পেটানো’, ‘এক বছর লক আপে’, ‘তেল পেষাই’ ইত্যাদি।

    কলকাতার প্রেসে আন্দামানের বন্দীদের কোন খবর প্রকাশিত হলে তাদের উপর নির্যাতন বেড়ে যেত। তবে মরিয়া মানুষের কয়েকবার লম্বা হরতালের পর রাজনৈতিক বন্দীরা তাঁদের কিছু অধিকার বা অন্যান্য সাধারণ কয়েদিদের মত কিছু সুবিধে আদায় করতে পেরেছিলেন।

    বারীন্দ্র লিপিবদ্ধ করেছেন এই বন্দীশালায় মানুষের অধঃপতনের কিছু কারণ।

    যেমন, জেলের ভেতরে পোড়খাওয়া অপরাধীদের সঙ্গ, কঠিন পরিশ্রম করার অনভ্যাস, পাইকারি হারে গাদাগুচ্ছের শাস্তির ব্যবস্থা, জবরদস্তির ব্রহ্মচর্য, ধর্মাচরণের অভাব, ভাল কাজের ইনসেন্টিভ না থাকা, শাস্তির অস্পষ্ট মেয়াদ এবং নানান আধিব্যাধির সুচিকিৎসার অভাব ইত্যাদি।

    দেখেছেন একটা বিড়ি পাওয়ার জন্যে বন্দীদের অনেক হীন সমঝোতা করতে।

    অনেক বন্দী শারীরিক শাস্তির সামনে মাথা নোয়ান নি।

    উল্লাসকর লিখেছেন, “You Talk of thirty lashes. ---You can try and cut me to pieces and see if you can get a job of work out of me, as long as I consider it wrong to do that”.[7]

    মানবেন্দ্রনাথ রায়, বিপ্লবী এবং র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট, লিখেছেন যে বারীন বলত, ’সবচেয়ে ভীরু লোকটাও হাসিমুখে ফাঁসির মঞ্চে চড়তে পারে যদি সে জানে যে গোটা দেশ হাততালি দেবে’। [8]

    এই পরিবেশে ৫০ বছর নরকবাস করতে হবে জেনে সাভারকর সেলুলার জেলে ঢুকলেন।

    দুই সাভারকরঃ দুই দশকের অন্তরালে

    বিনায়ক দামোদর সাভারকর সেলুলার জেলে ছিলেন প্রায় এক দশক, জুলাই ১৯১১ থেকে মে ১৯২১। আমাদের উপজীব্য এই এক দশকের কালাপানি ওঁর মধ্যে কী ধরণের পরিবর্তন নিয়ে এল।

    তাহলে দেখা যাক সাভারকর যখন আন্দামানে পৌঁছলেন, তখন ওঁর চিন্তাভাবনা কেমন ছিল।

    মাত্র দু’বছর আগে তাঁর মারাঠিতে লেখা সিপাহী বিদ্রোহের ইতিহাসের ইংরেজি সংস্করণ “দ্য ফার্স্ট ওয়ার অফ ইন্ডিপেন্ডেন্স — ১৮৫৭” (১৯০৯) প্রকাশিত হয়েছে এবং সঙ্গে সঙ্গেই ভারতে নিষিদ্ধ হয়েছে (ইংল্যান্ডে নয়)।

    এই লেখাটিতে প্রচলিত ইতিহাস লেখকের বিশ্লেষণের বদলে ছত্রে ছত্রে ফুটে বেরোচ্ছে একজন দেশপ্রেমিক ভারতীয় যুবকের পরাধীনতার জ্বালা ও ক্রোধ। লেখক নিঃসংশয় যে ভারতের সবচেয়ে বড় শত্রু হল ইংরেজ এবং তাদের তাড়াতে হবে অহিংস নয়, সশস্ত্র পন্থায়। বলছেন বৃটিশের অত্যাচারের বদলা নেওয়ার কথা।

    এই বই সেই সময় অনেক তরুণকে প্রেরণা যুগিয়েছিল। ভগত সিং এবং অরুণা আসফ আলীর নাম করা যেতে পারে যাঁরা পরবর্তী কালে সাভারকরের রাজনীতির বিপরীত পথে হাঁটলেও প্রথম যৌবনে এই বই পড়ে উদ্দীপ্ত হওয়ার কথা অকুণ্ঠ চিত্তে স্বীকার করেছেন।

    তখনও সাভারকর তাঁর ‘হিন্দুত্ব’এর বিশিষ্ট তত্ত্ব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না। তাঁর গুরু তিলকও না।

    সাভারকরের লেখায় ছিল এক স্বাধীন ঐক্যবদ্ধ ভারতের স্বপ্ন যেখানে হিন্দু মুসলিম হবে সমান অংশীদার। তাই একইসঙ্গে প্রশংসা করেন নানাসাহেব এবং হায়দার আলির, মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহের এবং মৌলভী আহমদ শাহের।

    “The danger to the independence of India was first perceived by Nana Farnavis of Poona and Hyder Sahib of Mysore” (pp: 13-14).

    “Nana’s programme was first to fight to make India free. He, also, felt that the meaning of ‘Hindusthan’ was thereafter the united nation of the adherents of Islam as well as Hinduism. --- So, now, the antagonism between the Hindus and the Mohamedans might be consigned to the past. --- For, they were both children of the soil of Hindusthan. Their names were different, but they were both children of the soil of Hindusthan. Their names were different, but they were all children of the same Mother India. ---- they were brothers by blood. ---- In short, the broad features of the policy of Nana Sahib and Azimullah were that the Hindus and the Mohomedans should unite and fight shoulder to shoulder for the independence of their country and that, when freedom was gained, the United States of India should be formed under the Indian rulers and princes” [9]

    এই অবস্থান থেকে উনি ঘোষণা করেন যে ইংরেজদের তাড়িয়ে দিল্লির মসনদে মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহকে আবার বসানো হলে সেটা কোনমতেই তাঁর ক্ষমতার ‘restoration’ হবে না। বরং সেটা হবে নতুন ঐক্যবদ্ধ ভারতে হিন্দু-মুসলমানের সম্মিলিত জনপ্রতিনিধিকে ক্ষমতায় বসানো। [10]

    কিন্তু সাভারকর সতর্ক যে কলোনিয়াল ব্রিটেন তাদের উপনিবেশকে দখলে রাখতে হিন্দু-মুসলমানের ঐক্যে ফাটল ধরাবে, বিভেদ সৃষ্টি করবে। হিন্দুদের উসকে দেবে মুসলমানের বিরুদ্ধে, একইভাবে মুসলমান্দের উসকে দেবে হিন্দুদের বিরুদ্ধে।

    তাইতিনি সাবধান করলেন হিন্দু ও সমাজকে — যেন তারা ইংরেজের ফাঁদে পা না দেয়। স্পষ্ট করে বলেন — ইংরেজরা কবে কথা দিয়ে কথা রেখেছে!

    কাজেই ভারতের মাটিতে হিন্দু বা মুসলমানের রক্ত না ঝরে যেন ইংরেজের রক্ত ঝরে দেশ স্বাধীন হয়।

    “The Englishmen will try now also their old work of deception, they will try to incite the Hindus to rise against Missalmans, and the Mohomedans to rise against the Hindus. But, Hindu Brothers! Do not fall into their nets. It is hardly necessary to tell our clever Hindu Brethren that the English never keep their promises” [11]

    উল্লেখযোগ্য, সাভারকর শুধু বইই লেখেন নি। তরুণদের মধ্যে তাঁর বাগ্মিতার আকর্ষণ ছিল অমোঘ। লণ্ডনে অল্পবয়েসি ছাত্র মদনলাল ধিংড়াকে উনি মানসিক ভাবে শহীদ হওয়ার জন্যে তৈরি করেন। ‘শহীদ’ই বটে! কারণ খোদ লণ্ডনে বৃটশদের সভাগারে ইংরেজ রাজপুরুষকে হত্যা করে বাঁচার সম্ভাবনা কোথায়? হয় সিকিউরিটি গার্ডদের গুলিতে মারা যাবে, নয় বন্দী হয়ে ফাঁসিতে ঝুলবে।

    মদনলাল যখন সাভারকরকে জিজ্ঞেস করলেন একজন তরুণ কখন শহীদ হতে পারে?
    জবাবে সাভারকর বলেছিলেন যখনই সে মন থেকে শহীদ হতে চাইবে।

    প্রথম লক্ষ্য দেওয়া হল লর্ড কার্জনকে (ভারতের প্রাক্তন ভাইসরয়, যিনি ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের জন্য কুখ্যাত) হত্যা করার।

    মদনলাল ব্যর্থ হলেন, কড়া সিকিউরিটি ভেদ করে তাঁর কাছে যেতে পারেন নি। সাভারকর তাকে তিরস্কার করে নতুন লক্ষ্য দিলেন – ইন্ডিয়া অফিসের সেক্রেটারি স্যর কার্জন উইলিকে হত্যা কর।

    মদনলাল সফল হলেন এবং শহীদ হলেন। সাভারকর মদনলালের পক্ষে প্রবন্ধ লিখলেন, ওর বয়ান আগে থাকতেই লিখে দিলেন। এভাবে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের নজরে পড়লেও তাঁকে টেকনিক্যালি ওই হত্যার মস্তিষ্ক হিসেবে অভিযুক্ত করা যায়নি। ব্যারিস্টার সাভারকর ক্রিমিনাল ল’ এর টেকনিক্যাল দিকটা ভালই জানতেন।

    জীবিত অবস্থায় কোথাও তিনি এব্যাপারে কোন তথ্য দিয়ে যান নি। কোথাও ওই ঘটনায় তাঁর নিজের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন নি।

    কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে স্বাধীন ভারতে বসে ধনঞ্জয় কীরকে দিয়ে তাঁর জীবনী লেখানোর সময় তাঁকে এই ব্যাপারে জানিয়ে দেন। কিন্তু সম্ভবতঃ তাঁর ইচ্ছানুযায়ী ওই ঘটনাটিতে সাভারকরের ভূমিকার কথা প্রথম তিনি বেঁচে থাকতে প্রকাশিত হয় নি। অর্থাৎ কীর জীবনীর প্রথম সংস্করণে (১৯৫০) এর উল্লেখ করেন নি।

    সাভারকরের মৃত্যুর পর ধনঞ্জয় কীর “সাভারকর” বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণে জানিয়েছেন যে লণ্ডনে কার্জন উইলিকে হত্যা করার জন্য মদনলাল ধিংড়াকে রিভলবার সাভারকরই দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন—‘এবার যদি ব্যর্থ হও তাহলে আর আমাকে তোমার মুখ দেখিও না’। [12]

    ইংরেজকে ভারতের মাটি থেকে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে বিতাড়নের দৃঢ় সংকল্প নিয়ে বিনায়ক দামোদর সাভারকর সেলুলার জেলে প্রবেশ করলেন।

    জেলার ব্যারি, একজন আইরিশম্যান। দু’বছর আগেই বারীন ঘোষকে বলেছিলেন — দেখতেই পাচ্ছ, এখানকার পাঁচিল বেশি উঁচু নয়। কেন জান? এখান থেকে পালিয়ে কেউ যেতে পারে না। চারদিকে হাজার মাইল সমুদ্রের জলরাশি। আর ছোট ছোট দ্বীপগুলোতে রয়েছে অসভ্য আদিবাসীরা । তাদের তিরের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া মুশকিল।

    ব্যারি সাভারকরকে প্রথমে ভদ্রভাবে বোঝাতে চাইলেন।

    দেখ, আমি ইংরেজ নই, আইরিশম্যান। কমবয়সে আমিও তোমার মত ভাবতাম যে আয়ারল্যান্ডকে সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের থেকে স্বাধীন করব। বয়সের সঙ্গে ভুল ভেঙেছে। তারচেয়ে সাংবিধানিক পথে আন্দোলন করে দেশবাসীর জন্যে অনেক সুবিধে আদায় করে তাদের ভাল করা যায়। তোমার মাত্র ২৬ বছর বয়েস। তুমিও ভেবে দেখ, ভুল পথ ছেড়ে ঠিক পথে এস।

    সাভারকর জবাব দিলেন যে ব্যারি আইরিশ না হয়ে ইংরেজ হলেও তাঁর কিছু এসে যেত না। আর বয়েস যখন কম, চিন্তা অন্যরকম হবেই। ব্যারি নিজের দেশের বিপ্লবী আন্দোলনের (ডি ‘ভ্যালেরার নেতৃত্বে আয়ারল্যান্ডের স্বাধীনতার জন্যে সশস্ত্র সিন ফিন আন্দোলন) নেতাদের কেন বোঝাতে পারেন নি?

    হতাশ ব্যারি বললেন – ঠিক আছে। এখানে নিয়ম মেনে চল, নইলে শাস্তি পাবে। আর পালাতে চেষ্টা কর না। চারদিকে কয়েকশ’ দ্বীপ। সেখানের কোন কোন আদিবাসীরা আবার নরমাংস ভক্ষক।

    সাভারকরের ঠাঁই হল ব্লক ৭ এর দোতলায়; তাঁর সেল নাম্বার ৫২ এবং কয়েদি টিকেট নাম্বার ৩২৭৭৮। এছাড়া গলার তক্তিতে লেখা ‘ডি’, অর্থাৎ ডেঞ্জারাস! খায়।

    এখানে একটা কথা বলি। আমি ১৯৯২ সালে, মানে সুনামির আগে সেলুলার জেলে গেছি এবং সাভারকরের সেলটি দেখে এসেছি। ওখান থেকে ফাঁসি দেওয়ার জায়গাটা বেশ দূরে। আদৌ সেল থেকে দেখা যায় না।

    আরেকটা কারণ হল, সেলে কোন জানলা নেই, অনেক উঁচুতে একটা ঘুলঘুলি রয়েছে এবং সামনে রয়েছে লম্বা টানা চওড়া বারান্দা, যা সবগুলো সেলের সামনে দিয়েই গেছে।

    কাজেই সেল থেকে উনি ফাঁসি দেওয়া দেখতে পেতেন এটি একটি গল্প মাত্র।

    ( চলবে )

    [1] পি সি জোশী এবং কে দামোদরন, “মার্ক্স কামস্‌ টু ইন্ডিয়া”, দিল্লি, ১৯৭৫, পৃঃ ২৬
    [2] অশোক মিশ্র, সাভারকর, পৃঃ ৬৭
    [3] উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যো, “নির্বাসিতের আত্মকথা”, পৃঃ ৫৮-৫৯
    [4] উল্লাসকর দত্ত, “টুয়েল্ভ ইয়ার্স অফ প্রিজন লাইফ” (১৯২৪), পৃঃ ২৮
    [5] ঐ, পৃঃ ৭০
    [6] উল্লাসকর দত্ত, “টুয়েল্ভ ইয়ার্স অফ প্রিজন লাইফ” (১৯২৪), পৃঃ ৩৩
    [7] ঐ, পৃঃ ৬৩
    [8] এম এন রায়, “যতীন্দ্রনাথ মুখার্জি” প্রবন্ধ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইণ্ডিয়া, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৯
    [9] Savarkar, “The First Indian War of Independence—1957”, pp—59, 60
    [10] ঐ, পৃঃ ২২৫-২২৬
    [11] Savarkar, “The First Indian War of Independence—1957”, pp: 140-41
    [12] ধনঞ্জয় কীর, “বীর সাভারকর”, পৃঃ ৫২

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • NB | 2405:8100:8000:5ca1::133:3b87 | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০১:০৬738412
  • সাভারকর যদি ওই দ্বীপান্তর ও অন্তরীণ জীবনের পরেও গান্ধিহত্যার মাস্টারমাইন্ড হবার ঝুঁকি নিয়ে থাকেন তবে তার মনের জোরকে কুর্নিশ। এ জিনিস সব শাসকের কাছেই বিপজ্জনক। নো ওয়ান্ডার ইংরেজরা সব পিটিশন রিজেক্ট করেছিল।
  • Amit | 103.6.116.9 | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৪৪738413
  • ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:৫১- ""যুদ্ধে মৃত্যু, রক্তপাত নানারকমের ভায়োলেন্স দেখতে হয়, মনের উপর চাপও পড়ে, মানুষ বিচলিত হয়, কিন্তু পালায় না, দয়াভিক্ষা করে না, যুদ্ধ ছাড়ে না। যদি করে, তার মানবিকতা নিয়ে কোন সন্দেহ করা যায় না ঠিকই, তবে তাকে বীর বলতে বলা যায় না। ""

    - একটু বেলাইনে হয়ে যাবে - কিন্তু ওপরের উত্তরে একটা কথা বলার ছিল। 
     
    প্রতিটা যুদ্ধে গাদা গাদা ডিফেকশন একেবারে সাধারণ ঘটনা। বীরত্বের যা গল্প বাজারে আসে , তার অনেকগুলো জাস্ট বানানো গল্পই। ১স্ট বা সেকেন্ড সেকেন্ড বিশ্বযুদ্ধে এক্সিস বা এলাইড ফোর্সের দুদিকেই প্রচুর সৈনিক যুদ্ধ ছেড়ে পালিয়েছিলো। ইভেন ভারত পাকিস্তান ৬৫ বা ৭১ যুদ্ধে অনেক সোলজার ইভেন হাই রাঙ্কের অফিসার রা প্রাণ বাঁচাতে যুদ্ধ ছেড়ে পালিয়েছিলো দুদিকেই। তাদের অনেকেই পরে মিলিটারী মেডেল পেয়েছে অন্য কোথাও কৃতিত্বের জন্যে। 
     
    আমার এক ​​​​​​​কলিগ ​​​​​​​নিজের ​​​​​​​দাদুর ​​​​​​​গল্প ​​​​​​​বলেছিলো। ​​​​​​​২ন্ড ওয়ার্ল্ড ​​​​​​​ওয়ার ​​​​​​​এ ​​​​​​​ব্রিটিশ ​​​​​​​আর্মির ​​​​​​​হয়ে ​​​​​​​ইস্ট এশিয়ায় যুদ্ধ ​​​​​​​করতে ​​​​​​​করতে ​​​​​​​অস্ট্রেলিয়ায় ​​​​​​​পালিয়ে ​​​​​​​আসে। ​​​​​​​পুরো ​​​​​​​উনট্রেসেবল ​​​​​​​হয়ে ​​​​​​​যায় ​​​​​​​নিজের ​​​​​​​নাম ​​​​​​​ধাম ​​​​​​​সব ​​​​​​​পাল্টে। ​​​​​​​ব্রিটেন এ ​​​​​​​নিজের ​​​​​​​বৌ ​​​​​​​ছেলের ​​​​​​​সাথেও ​​​​​​​কোনো ​​​​​​​যোগাযোগ ​​​​​​​রাখেনি। সবাই ভেবেছিলো যুদ্ধে মারা গেছে। অনেক বছর ​​​​​​​পরে ​​​​​​​আমার ​​​​​​​কলিগ ​​​​​​​এর বাবা মা ও অস্ট্রেলিয়ায় ​​​​​​​মাইগ্রেট ​​​​​​​করে ​​​​​​​আর ​​​​​​​আনসেস্ট্রি।কম ওয়েবসাইটে ​​​​​​​এ ​​​​​​​খুঁজে ​​​​​​​খুঁজে ​​​​​​​তাকে ​​​​​​​​​​​​​​বার ​​​​​​​করে। অবশ্য ​​​​​​​কন্টাক্ট ​​​​​​​করেনি ​​​​​​​আর- তদ্দিনে তিনি অন্য কারোর সাথে সেটলড। সুতরাং ​​​​​​​এগুলো ​​​​​​​নট ​​​​​​​দ্যাট আনকমন। 
     
    নিজের চাদ্দিকে যখন আকাশ থেকে ব্যোম পড়ে , নিজের কলিগ দের লাশ পড়ে যায় তখন অনেক সাহসী লোকেরও সাহস উড়ে যায়। এতে লজ্জার কিছু নেই। জাস্ট দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বেমক্কা মরে যাওয়াতে কি ক্রেডিট আছে ? বরং স্ট্রাটেজিক রিট্রিট করে পরে জেতার পসিশনে পৌঁছনো হয়তো বেটার সিদ্ধান্ত। সেটা ছাড়াও কেউ যদি জাস্ট নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্যেও পালায় তাতেও  লজ্জার কিছু দেখিনা। 
     
    নাজিদের সময়ে এলএসডি ব্যবহার করা হতো সোলজারদের ভয় মমতা সব সেন্স গুলোকে ভোঁতা করে দেওয়ার জন্যে যাতে ওদেরকে প্লেন রোবোটিক কিলিং মেশিনের মতো ব্যবহার করা যায়। পরে প্রত্যেকটা আর্মিতে এসব ড্রাগের রামপ্যান্ট ব্যবহার করা হয়েছে। নো ওয়ান্ডার এদের অনেকেই পরে পোস্ট ট্রমা সিনড্রোম এ ভোগে বা সুইসাইড করে। যখন ড্রাগ এর এফেক্ট চলে যায় তখন নিজের বা নিজের আশেপাশের কীর্তিকলাপ নিজের মন আর নিতে পারেনা। 
  • উজ্জ্বল | 2401:4900:4151:6b31:0:21:ce34:4101 | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:৪৭738414
  • সহমত। যুদ্ধের বিভীষিকা দেখে আত্মরক্ষার জন্য পালানো, বা প্রাণভিক্ষা চাওয়া, এসব সম্পুর্ন স্বাভাবিক। অনেকে প্রথমে বীরত্ব দেখিয়ে শেষ মুহূর্তে নার্ভ হারিয়ে ফেলে, খুব স্বাভাবিক ও মানবিক। strategic retreat ও খুব জরুরি, মরা মানুষ যুদ্ধ করতে পারে না, বরং সাময়িক ভাবে পিছিয়ে পরে আবার যুদ্ধ করার সুযোগ পাওয়া যায়। এসব নিয়ে কোন কথা নেই।

    অনেক সময় বীরত্ব জিনিসটা ব্রেইনওয়াশ করে মাথায় ঢোকানো হয়, বা ড্রাগ খাইয়ে। assassin কথাটাই hashsih ড্রাগ থেকে এসেছে। যুদ্ধের সময় যখন পালানোর পথ থাকে না, একটা বদলানো মানসিক অবস্থা তৈরি হয়, তখন মরিয়া হয়ে মানুষ লডাই করে। সেটাকে সত্যিকারের বীরত্ব বলা যায় কিনা, সেটা বিতর্কের বিষয়। সব ঠিক।

    তবে একটা কথা থেকেই যায়। কেউ কেউ খুব ভেবেচিন্তে প্রাণ দেয়। উদাহরণের অভাব নেই। যেমন ভেবেচিন্তে সব গোছগাছ করে, বিলিব্যবস্থা করে মানুষ আত্মহত্যাও করে। সেটাও তো প্রাণ দেয়া, শুধু যুদ্ধে নয় এই আর কি।

    যাহোক, যাঁরা যুদ্ধে পটাপট মরে, তারা হয়ত শুধু বীর নয়, নির্বোধ বীর। বীর শব্দটা তবু থেকে যাচ্ছে।
  • উজ্জ্বল | 2401:4900:4151:6b31:0:21:ce34:4101 | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:৫০738415
  • যুদ্ধ থেকে পালিয়ে যাওয়া, প্রাণভিক্ষা চাওয়া মানুষকে স্বাভাবিক বলতে আপত্রি নেই, বীর বলা যায় কি?
  • উজ্জ্বল | 2401:4900:4151:6b31:0:21:ce34:4101 | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:৫১738416
  • আপত্রি আপত্তি
  • উজ্জ্বল | 2401:4900:4151:6b31:0:21:ce34:4101 | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১১:০৯738417
  • প্রাণভিক্ষাপ্রাণভিক্ষা/দয়াভিক্ষা
  • উজ্জ্বল | 2401:4900:4151:6b31:0:21:ce34:4101 | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১১:২০738418
  • কেলেঙ্কারি। hashsih hashish
  • Ranjan Roy | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২৩:৩২738421
  • @ ফাঁসুড়ে,
      আপনার দেয়া বিবিসি নিউজ পোর্টালে সাংবাদিক নিরঞ্জন টাকলের বক্তব্য দেখলাম। কোন সোর্স উল্লেখ করেন নি।
     এটা বিবিসির নিজস্ব রিসার্চ নয় এবং আবারও বলছি তথ্যটি ভুল। 
    সেই সময়কার রাজবন্দীদের কারও লেখায়(সাভারকর, বারীন, উপেন্দ্র, ত্রৈলোক্য, শচীন্দ্র, ) এর উল্লেখ নেই। অর্থাৎ ওদের সেলের কাছেই ফাঁসি হত, তাঁদের দেখতে হত এবং তাঁরা বিচলিত হতেন।
       ১৯০৯ থেকে ১৯২১ পর্য্যন্ত কোন রাজবন্দীর ওখানে ফাঁসি হয় নি। যারা প্রতিমাসে দু'তিনজন করে ঝুলত তারা সবাই সাধারণ অপরাধী। এদের মৃত্যু বা শাস্তি রাজবন্দীদের অতটা প্রভাবিত করত বলে মনে হয় না। ঐতিহাসিক রমেশ চন্দ্র মজুমদার তাঁর লেখায় রাজবন্দীদের কীভাবে মানসিক দিক থেকে দুর্বল করার চেষ্টা করা হত--তা খোলাখুলি লিখেছেন, সাভারকরেরাও লিখেছেন। তাঁরা কোথাও এর উল্লেখ করেননি।
        
     ৩ আমি ১৯৯২ সালে এবং এলেবেলে ২০২০ সালে সেলুলার জেলে গিয়ে দেখেছিঃ 
      জাপানী বোমায় সাতটি উইং এর মধ্যে সম্ভবতঃ চারটি ধ্বংস হয়ে তিনটি টিকে আছে। সাভারকরের উইং এবং কক্ষটি অক্ষত। ফাঁসি দেওয়ার পুরনো জায়গাটি শুধু সাভারকরের কক্ষ কেন, সমস্ত উইং থেকেই দূরে।
     ৪ জানলার নীচে ফাঁসিকাঠ হাস্যকর।
     সাভারকরের কক্ষ দোতলায়। তার নীচে মানে নীচের তলার বন্দীর দেয়ালের প্রায় গায়ে। এভাবে কোন জেলেই ফাঁসি হয় না। কোলকাতার জেলেও না। 
     
    ৫ সাভারকর অকপটে লিখে গেছেন তাঁর মন ভাঙার কিছু কারণ। যেমন ইন্দুভুষণ রায়ের আত্মহত্যা। 
    বিচলিত সাভারকর ভাবতেন একদিন কি তাঁরও ওই দশা হবে? কখনও  উনিও কি মানসিক সন্তুলন হারিয়ে  আত্মহত্যার পথ বেছে নেবেন?
     ভাই, সাভারকর যা লিখে গেছেন সেটা বাদ দিয়ে যা লেখেন নি বা কাউকে বলেন নি --সেটা ধরে নিয়ে কল্পনা করলে ইতিহাসের উপাদান হয় না।
    আপনার দেয়া বিবিসির লিংক ঘাঁটলে আরও একটি ভুল গল্প পাওয়া যাবে। নীলাঞ্জন মুখোপাধ্যায়কে কোট করেঃ
    সেই ১৯০৬ সালে ইন্ডীয়া হাউসে সাভারকরের চিংড়ি মাছ রান্না করা এবং গান্ধীজির অভুক্ত থেকে ফিরে যাওয়া।
    এটাও বহুপ্রচারিত ভুল গল্প।
    এটা সাভারকর কোথাও বলেন নি। আর গান্ধীজি স্পষ্ট করে লিখে গেছেন যে লন্ডন শহরে সাভারকরের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতকার একবারই হয়েছিল-- ১৯০৬ সালে নয়, ১৯০৯ সালে। সাভারকরের লেখাতেও ওই ১৯০৯ সালই পাচ্ছি। 
     
    সঙ্গে থাকুন। এগুলো নিয়ে আলাদা করে একটা কিস্তি যথাসময়ে হবে।
  • Ranjan Roy | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০০:৪১738422
  • ধেত্তেরি!
    আমারই দোষে আগের পোস্ট উড়ে গেল, পরেরটা পেস্ট হল। যাকগে শর্টে সারছি।
     
    @অরণ্য, 
         সবচেয়ে আগে মিঃ ভোপটকর সাভারকরকে "স্বাতন্ত্র্যবীর" আখ্যা দেন। সেটাই পরে সংক্ষেপে শুধু "বীর" হয়ে যায়। এসব কখন কেন ঘটেছিল সেটা ঠিক সময়ে বলা হবে।
     তবে সাভারকরের এই টাইটেল বেশ পছন্দ ছিল। চিত্রগুপ্ত নাম দিয়ে নিজের জীবনী নিজে লেখার গল্প যথাসময়ে আসবে। 
     
    বন্ধুরা,
     আমার একটা কথা বলার ছিল।
     বীর, ভীতু, সাহসী, কাপুরুষ, ভা্‌ল মন্দ, --এসব তো অভিধা বা বিশেষণ। এগুলো ভ্যালু জাজমেন্ট। তাই বেশির ভাগ সময় এতে বক্তার মাইন্ডসেট এবং প্রেজুডিস কাজ করে। 
    ইতিহাস চর্চায় এটা এড়ানো অসম্ভব। কিন্তু সবচেয়ে আগে দরকার ফ্যাক্ট বা ঘটনাগুলোকে ঠিক করা। মিথ এবং গল্পকথার থেকে বাস্তবে কি ঘটেছিল সেটা আলাদা করা।
     আসুন, আমরা সবাই মিলে আগে তথ্য এবং পালটা তথ্যগুলোর বিশ্বাসনীয়তা কতখানি --সেটা খতিয়ে দেখি।
    তারপর নাহয় সবাই মিলে নিজের নিজের পছন্দমত পুজো করব বা নিন্দে করব।
     
    কিন্তু কোন ইতিহাসপুরুষকেই তাঁর সময় এবং প্রেক্ষিত থেকে বিচ্ছিন্ন করে চেরি পিকিং করলে তাঁকে বোঝা অসম্ভব হয়।
    একটা উদাহরণ দিচ্ছিঃ
    বেয়াল্লিশের আন্দোলনকে সাভারকর সমর্থন করেন নি। শুধু এই একটি ঘটনা থেকেই কি সাভারকরকে ইংরেজের চামচা বা ভীরু বলা যায় ? তখন তো আরও অনেকেই সমর্থন করেন নি, যেমন কমিউনিস্ট পার্টি, আম্বেদকর এবং জিন্না। 
    এঁদের প্রত্যেকেরই আলাদা এজেন্ডা, আলাদা কারণ ছিল।
     তাই দরকার কোন কাজ কেউ কেন করলেন  --সেটা বোঝা, সাভারকরের মানসকে বোঝা। যেমন কেসি গোড়াতে বলেছিলেন। 
    তারজন্যে আবার খিলাফত আন্দোলন এবং গান্ধীজির সমর্থনের লাভ্লোকসানের খতিয়ান দেখাও দরকার। ইতিহাস সাদাকালো রঙে বা সরল রেখায় চলে না।
    একই মানুষ একসময় নায়ক, অন্য সময়ে বা বদলে যাওয়া প্রেক্ষিতে খলনায়ক হয়ে যান।
     
    ধরুণ পুণের চাপেকর ব্রাদার্সের কথা। ১৮৯০  এর দশকে এঁরা ২২ জুন ১৮৯৭ তারিখে ব্রিটিশ অফিসিয়াল র‍্যান্ড এবং লেফটেন্যান্ট আয়ার্স্টকে গুলি করে হত্যা করেন নিজেরা ফাঁসিতে চড়েন।
     এটা কিন্তু দেশ স্বাধীন করার কোন আন্দোলন বা প্রোগ্রামের অঙ্গ ছিলনা।
     তখন পুণেতে প্লেগ মহামারী হয়ে দেখা দিলে র‍্যাণ্ড সৈনিক দিয়ে ঘরে ঘরে ঢুকে জোর করে ভ্যাকসিনেশন এবং রোগীদের কোয়ারান্টাইন করা ও মৃতদের আলাদা জায়গায় পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ জারি করেন। 
    এতে দেবস্থান এবং ধার্মিক রীতি রেওয়াজে হস্তক্ষেপের কারণে জনতা ক্ষূব্দ হয়।
    এইরকম প্রতিক্রিয়া কি আমরা গতবছরই কোভিডের সময় দেখি নি? সেটা তো ১২৫ বছর আগের কথা।
    চাপেকর ভাইয়েরা সেই রাগ থেকেই ওই দুটো হত্যা করেন। 
    আজ  মনে হতে পারে র‍্যান্ড ঠিক করেছিলেন কিন্তু কমিউনিটির আবেগের কথা ভেবে অনেক নমনীয় কৌশল দরকার ছিল।
     
    কাজেই চটপট লেবেল লাগানোর আগে দরকার চাল থেকে কাঁকর বেছে আলাদা করা। ইতিহাসের প্রমাণিত তথ্য আর মিথের তফাত চেনা।
     
  • hmm | 2405:8100:8000:5ca1::3b:a8c0 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০১:৪৭738423
  • সাভারকরের লেখা পড়ে থাকলে এটাও জানবেন যে মাঝেমধ্যেই ওনাদের সেল শিফট হত। সাভারকর মোটেই ঐ একটি সেলেই বরাবর থাকেননি।
  • Ranjan Roy | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:০৭738427
  • এমন দাবি কেউ করেনি। 
     ওনার জেল টিকিটের রেকর্ড  অনুযায়ী যে  cell টায়  সবচেয়ে বেশিদিন ছিলেন সেটাকেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গিয়ে বসে থেকে archana এবং dhyan করেছেন। 
     
    আমার কথা ফাঁসির জায়গাটা কোন cell এরই জানালার নিচে নয়  । এলে বাবুর পাঠানো ফটো দেখে নিন। 
    আপনি তো ওনার লেখা পড়তে বাদ দেন  নি। 
    দয়া করে জানাবেন কি ওই কাহিনীটা savarkar কোথায় লিখেছেন? কোন খণ্ড বা পাতায়?
    খোলা পাতায় মাফ চেয়ে আপনাকে ধন্যবাদ দেব। 
  • Amit | 103.6.116.9 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৩৬738429
  • ইতিহাসের ইভেন্টগুলোকে ক্লাসিফাই বা ইন্টারপ্রিট করা ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০০:৪১ এর চাল আর কাঁকর বাছা র মতো সরল রৈখিক কি ? সবাই কি একদম জিরো এক্সিস বা ​​​​​​​নিউট্রাল ​​​​​​​পজিশনে ​​​​​​​থেকে সবকিছু বিচার ​​​​​​​করেন বা করতে পারেন ? 
     
    যেমন চাপেকর ভাইদের ক্ষেত্রে দেশ স্বাধীন করার কোন আন্দোলন বা প্রোগ্রামের না থাকার কথা তোলা হলো। অর্থাৎ তারা ঠিক হয়তো দেশের স্বাধীনতার জন্যে শহীদ নন  এমন একটা পয়েন্ট সুক্ষভাবে ভাসানো হলো। 
     
    তো বাঙালি আবেগ ছেড়ে দিলে ক্ষুদিরাম প্রফুল্ল চাকির দুজন নিরীহ মহিলাকে ব্যোম মেরে ফাঁসিতে চড়াকে কেন এতো শহীদের ক্রেডিট দেওয়া হয় ? সে যতই যুক্তি আসুক কিংসফোর্ড কে মারতে গিয়ে হয়তো নাকি ভুল করে হয়ে গেছে। 
     
    এবার সেই যুক্তিতে তো  আজকে যেসব ইসলামিক টেররিস্ট গুলো কাশ্মীরে মিগ্র্যান্ট লেবারদের ওপর গুলি চালাচ্ছে কালকে তারাও যুক্তি দিতে পারে ওদেরকে আর্মির লোক ভেবে ভুল করে মেরেছিলো। কালকে বাইচান্স কাশ্মীর স্বাধীন হলে তারাও ওখানে সব শহীদ এর মর্যাদা পাবে। তো আমরাও কি সেই সুরে সুর মেলাবো ?
  • Ranjan Roy | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:১২738430
  • অমিত ভুল  বুঝেছেন। 
    আমি আবার বলছি-- যে যাকে ইচ্ছে martyr বা terrorist বলুন সেটা তার ভ্যালু judgement বা অবস্থান। 
    আমি বলছি আগে fact গুলো ঠিক করতে।  
    যেমন ক্ষুদিরাম প্রফুল্ল চাকী কে যুগান্তর দলের নির্দেশে Kingsford কে মারতে পাঠানো হয়েছিল। 
    যেমন অভিনব ভারতের নেতা savarkar এর  স্পষ্ট নির্দেশে কার্জন উইলিke মারতে মদন লাল কে  পাঠানো হয়েছিল।  এ দুটোই ভারতের মাটি থেকে ইংরেজ এর বিরুদ্ধে লড়াই এর প্রোগ্রাম এর অঙ্গ। 
    এই সব গুলো ফ্যাক্ট। কোন বিতর্ক নেই। 
     
    Chapekar brothers এর পেছনে কোন বিপ্লবী সংস্থার হাত ছিল  বলে জানিনা। বরং জোর করে টিকা লাগানো,  মেয়েদের গায়ে হাত দেয়া ইত্যাদি তাৎক্ষণিক রাগ কাজ করেছিল বলেই জানি। 
    আপনার কাছে অন্য তথ্য থাকলে জানিয়ে দিন ভুল শুধরে নেব। 
    এখানেই savarkar ও  Chapekar আলাদা। 
    আমি ফ্যাক্ট এর ব্যাপারে চাল নিয়ে কথা বলেছি ভ্যালু judgement নিয়ে নয় ।
    সেটা প্রত্যেকের নিজস্ব মতামত। 
  • Amit | 103.6.116.9 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:৪১738431
  • ওকে। তাহলে এখানে সাভারকর এর সেল নিয়ে ঠিক কোন ফ্যাক্ট টা খোঁজা হচ্ছে ? ছবিতে তো এস্টাব্লিশ করাই যায় যে কোনো সেল থেকেই হয়তো ফাঁসি দেখা যেতনা। তারপর ? 
  • Ranjan Roy | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:২৫738432
  • ছবি ছেড়ে দিন,  savarkar নিজেও এ নিয়ে কিছু বলেননি।  রাজনৈতিক বন্দি কেউই বলেননি। 
    আর এটা তো ফিজিক্যাল ফ্যাক্ট।  যার ইচ্ছে দেখে আসুন। 
    এবার পরের পর্ব আসবে। 
    তাতে savarkar এর মুখ থেকে শুনে নেব আসলে কোন কোন ঘটনা ওনাকে বিচলিত করেছিল। 
  • Rt | 2405:8100:8000:5ca1::261:85b9 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:১০738435
  • সেলুলার জেলের তিন না চারটে উইং ভাঙা হয়ে গেছে। সেগুলর লোকেশন কি ছিল, কোন কোন সেলে সাভারকর ছিলেন, কোন সময় কোথায় ফাঁসির ব্যবস্থা ছিল এগুলো জেনে গেলে ফিজিকালি ভেরিফাই করাই যায়।
  • এলেবেলে | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:৫৫738436
  • হুম, কেবল এইটাই বাকি ছিল। তা সেটাও দেওয়া গেল এবার। সাতটা উইং-ই দেখা যাচ্ছে তো? তো তাতে কি হেস্তনেস্ত হবে? নাকি রঞ্জনবাবুর পরের কিস্তির জন্য অপেক্ষা জারি থাকবে?
     
  • Ranjan Roy | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২২:৪৩738437
  • Rt
    আমার পয়েন্ট একদম আলাদা। 
      ফাঁসি দেখে মন ভেঙে যাওয়ার গল্পটি কেউ তো লেখেন নি! 
    Savarkar  Barindra,  Upendra,  sachindra,  Trailokya,  R C MAZUMDER কেউ না। 
    আমরা কেন নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে Savarkar  এর ঘাড়ে চাপাচ্ছি ?
    তার চেয়ে উনি যা বলেছেন সেটা নিয়ে ভাবলে ভালো হয় না?
     
  • ফাঁসুড়ে | 146.196.33.1 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:২৬738438
  • মদনলাল কে কার্জন কে হত্যা করতে পাঠানো , অসফল হলে বিদ্রূপ করে আবার পাহান এই বলে যে এবার ব্যর্থ হলে মুখ দেখাবে না অথচ নিজে না যাওয়া ,আন্দামান বাসের সময় জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অন্যদের উস্কানি দেয়া কিন্তু নিজে নেতৃত্ব দিতে অস্বীকার করা (এটা বারীন নিজে লিখেছেন) পরপর ছটা মুচলেকা দেওয়া পরে পথ পাল্টে নরম টার্গেট বেছে নেওয়া , নিজেই নিজের বীরত্ব নিয়ে আস্ফালন করা এসব থেকে সাভারকরের যে ছবিটা উঠে আসছে তার সঙ্গে ফাঁসি দেখে বিচলিত হবার গল্পটা চমৎকার মিলে যাচ্ছে , তাই এই পয়েন্টটা ঘুরেফিরে আসছে |
     
    জানি ছোট মুখে বড় কথা হয়ে যাবে ,তবু সেই মহাপুরুষের কথা ধার নিয়ে বলছি আমার ঘাট হইয়াছে | এই চুপ করলাম |
    পরের পর্বে  আসুন , অপেক্ষায় রইলাম 
     
     
  • Ranjan Roy | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬:০৫738439
  • আপাততঃ ভ্যালু judgement স্থগিত রেখে শুধু ফ্যাক্ট নিয়ে কথা হোক না!
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন