এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • কোডনেম: বারবারোসা - একটি পাঠ প্রতিক্রিয়া

    Tirtho Dasgupta লেখকের গ্রাহক হোন
    ২১ আগস্ট ২০২২ | ১১২০ বার পঠিত
  • কোডনেম: বারবারোসা
    ব্লিৎসক্রিগের প্রথম দশ দিন
     
    লেখক : শোভন চক্রবর্তী 
    প্রকাশক : বই চই পাব্লিকেশান 

    What is History ? - এই শিরোনামে ১৯৬১ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকটি ভাষণ দেন ব্রিটিশ ঐতিহাসিক ও কূটনীতিক Edward Hallet Carr | পরবর্তী কালে সেই ভাষণগুলিকে একত্রিত করে একই শিরোনামে যে বইটি প্রকাশ পায় সেটি আধুনিক সময়ে ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত তত্ত্বগুলির মধ্যে একটি | Carr বলেন তথ্য হলো বাজারে মাছওয়ালার কাছে পরে থাকা মাছের মতন | ঐতিহাসিক তার পছন্দ মতন মাছ বেছে নেন, বাড়ি যান, সেগুলো ধুয়ে মুছে রান্না করে নিজের মতন পরিবেশন করেন |অর্থাৎ ঐতিহাসিক যেভাবে তথ্য গুলি দেখছেন বা বুঝছেন, তিনি সেভাবেই সেগুলোকে ব্যাখ্যা করছেন | তার দৃষ্টিই ইতিহাস | ইতিহাস বস্তুনিষ্ট হতে পারেনা | কেননা তা সর্বদাই কোনো ব্যক্তিবিশেষ দ্বারা লিখিত হচ্ছে, সেই ব্যক্তির সামাজিক অবস্থান ও তার জীবিতকালের মূল্যবোধ ও বিশ্বাসের দ্বারা নির্ধারিত হচ্ছে | যদিও পরবর্তীকালে Carr -এর তত্ত্বের প্রবল ক্রিটিক ( Isaiah Berlin, Sir Geoffrey Elton প্রমুখ ) এসেছে তবুও ইতিহাস বোঝার ক্ষেত্রে সাবজেক্টিভ বা বিষয়গত দৃষ্টিকোণের গুরুত্ব কমেনি | বর্তমান যুগের পরিপ্রেক্ষিতে এই দুই ধারার দ্বন্দ আরো প্রকট হয়েছে এবং পোস্ট-ট্রুথ রাজনীতি এই দ্বন্দ্বকে একটি অন্য মাত্রা দিয়েছে |

    ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে এই বিতর্ক অন্য মোড় নিয়েছে যখন তা আকাদেমিক পরিসর ছেড়ে পপুলার হিস্ট্রি জঁরের মাধ্যমে ইতিহাস নিয়ে উৎসুক সাধারণ মানুষের জগতে প্রবেশ করেছে | আকাদেমিক ইতিহাসের সাথে এর প্রধান পার্থক্য হচ্ছে এর বর্ণনামূলক (narrative ) শৈলী এবং লেখক-ঐতিহাসিকের দৃষ্টিকোণ যা অধিকাংশ ক্ষেত্রে তার বর্ণিত ঐতিহাসিক চরিত্রটির দৃষ্টিভঙ্গি হয়ে ওঠে | লেখক- ঐতিহাসিক এক্ষেত্রে অতীতের দৃশ্যকল্প তৈরী করেন প্রামাণ্য তথ্যের ভিত্তিতে | পাঠকের মনে হয় তিনি যেন ওই ঐতিহাসিক ঘটনাকে সরাসরি প্রত্যক্ষ করছেন | চরিত্র ও ঘটনাবলী তার কাছে বস্তুবাদী সত্য হিসেবে উপস্থিত হয় | আকাদেমিক ইতিহাসের ক্ষেত্রে যেভাবে একই ঘটনা বা চরিত্রের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সম্ভাব্য ব্যাখ্যা বা ইতিহাস ও স্মৃতির আন্তর-সম্পর্কের জটিলতার চর্চা হয়ে থাকে এক্ষেত্রে কোনো একটি ধারাকেই প্রাতিষ্ঠিত করার প্রয়াস লক্ষ্য করা যায় ন্যারেটিভের স্বার্থে | ইতিহাসের অপেশাদার পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখাই এর প্রধান উদ্দেশ্য | ইতিহাস সম্পর্কিত বই পড়তে গিয়ে ইতিহাসের বস্তুবাদিতা ও ব্যক্তিবাদী দৃষ্টিকোণ এবং তা কিভাবে পপুলার হিস্ট্রি লেখকদের লেখায় পরিবেশিত হয়েছে তথ্য ও কল্পনার মিশ্রনে সেই বিষয়টি মাথায় রাখলে তা আমাদের মতো সাধারণ পাঠকদের ইতিহাস পাঠে সহায়তা করবে |

    বাংলাতে সেই অর্ধ-শতাব্দী আগে লেখা প্রখ্যাত সাংবাদিক বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংক্রান্ত বইগুলি ছাড়া পপুলার হিস্ট্রি জঁরে বাংলা ভাষায় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে কোনো বই পড়েছি বা দেখেছি বলে মনে পড়ছেনা | লেখক শোভন চক্রবর্তী, যিনি এস চক্রবর্তী নামেই অধিক পরিচিত ফেসবুকে, তার কোল্ডওয়ার স্টোরিজ নামে একটি গ্রুপ আছে, যেখানে তিনি অনেকদিন ধরেই এই নিয়ে লেখা-লেখি প্রকাশ করে চলেছেন | এস চক্রবর্তী সোভিয়েত ইউনিয়নেই থাকেন | তার প্রিয় হবি ‘দ্য বস’ মানে জোসেফ স্তালিন কে নিয়ে লেখা বই সংগ্রহ করা | কমিউনিজমের উপর বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধাশীল না হয়েও তিনি সোভিয়েত ইতিহাস আকণ্ঠ পান করেন | তা সে ইস্টার্ন ফ্রন্ট হোক অথবা চেরনোবিল |

    ২০২১ এ বইমেলা তে বেরিয়েছে কোডনেম বারবারোসা - নাৎসি জার্মানির বলশেভিক সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণের প্রথম দশদিন নিয়ে লেখা শোভন চক্রবর্তীর প্রথম বই | বিনা ভণিতায় জানিয়েছেন যে তার লেখার তথ্য সমস্তই সেকেন্ডারি সোর্স অর্থাৎ অন্যান্য লেখক বা ঐতিহাসিকদের তথ্যের উপর নির্ভর করে লিখিত | তিনি আরো জোর দিয়েছেন নব্বই দশকের পরে যে বইগুলি প্রকাশিত হয়েছে তাদের উপর | পূর্ব জার্মানি ও সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর দুই দেশের মহাফেজখানা গুলি গবেষকদের কাছে উন্মুক্ত হওয়াতে অনেক নতুন তথ্য মুক্তির আলো দেখেছে যা আমাদের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস নতুনভাবে দেখতে শিখিয়েছে |
    লেখক তার ব্যবহৃত সমস্ত তথ্যের একটি উল্ল্যেখ পঞ্জি দিয়েছেন গ্রন্থের শেষে যা আগ্রহী পাঠক কে এই বিষয়ে আরো পাঠে উৎসাহী করবে নিঃসন্দেহে | বইটির শ্রেষ্ঠ সম্পদ হলো এই তথ্যগুলি এবং তথ্যগুলির পরিবেশেনে উপযুক্ত অনুষঙ্গ যত্ন সহকারে পরিবেশন | পেশাদার ঐতিহাসিকদের মতো কোনো কোনো ক্ষেত্রে লেখক একটি তথ্যের বিভিন্ন সূত্র ও তার বিভিন্ন ব্যাখ্যা হাজির করেছে যা পাঠক কে সেই বিষয় নিজস্ব অনুসন্ধানে উৎসাহী করবে | এতো তথ্য দিয়ে বইটি সাজানো হলেও, তার ভারে পাঠক হাঁসফাঁস করে না , কাহিনীর গতি ও রুদ্ধ হয় না | তথ্য নির্বাচন ও সম্পাদনার ক্ষেত্রে এই দুর্লভ মুন্সিয়ানা নাতিদীর্ঘ এই বইটির অন্যতম সেরা সম্পদ |
    তেইশটি অধ্যায়ে বিভক্ত বইটি শুরু হচ্ছে 'দুই হুজুরের গপ্পো' দিয়ে, যেখানে এই ইস্টার্ন ফ্রন্টের যুদ্ধের দুই মূল কারিগর স্তালিন ও হিটলারের প্রথম জীবনের দুটি ঘটনা দিয়ে যা তাদের জীবনে সুদূরপ্রসারী ছাপ ফেলে যাবে এবং শেষ হচ্ছে আপাত উপসংহার অধ্যায়ে, যেখানে ব্লিৎসক্রিগের দশদিন পর স্তালিন রেডিওতে প্রথমবার মুখ খুলছেন জনগণের উদ্দেশ্যে, রুশ বাহিনী ট্যাকটিক্যাল রিট্রিট করছে, মস্কোর আকাশে বিপদের ছায়া ঘনীভূত হচ্ছে |

    মধ্যবর্তী ২১ টি অধ্যায়ে ১৯৩৯ -এ হওয়া মলোটভ-রিবেনট্রপ চুক্তি থেকে অপারেশন বারবারোসার প্রস্তুতি, স্তালিন কতৃক বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্র মারফত প্রাপ্ত তথ্যকে অগ্রাহ্য করে রুশ বাহিনীকে ব্যাটেল রেডি না রাখা, প্রথম আক্রমণের আগের ২৪ ঘন্টার রুদ্ধশ্বাস বর্ণনা, ব্রেস্ট-লিটভসক দুর্গের প্রবাদপ্রতিম যুদ্ধ, ডুবানো-ব্রডির বিখ্যাত ট্যাঙ্ক যুদ্ধ এবং সেই দশদিনে স্তালিন ও কমিউনিস্ট পার্টি পলিটব্যুরোর সংকট পুঙ্খানো-পুঙ্খ ভাবে তুলে ধরা হয়েছে মূলত তথ্যের আলোকে | মূল পর্বগুলি শুরুর আগে বিভিন্ন সামরিক পরিভাষা ও আধুনিক সেনাবাহিনীর গঠন সম্পর্কে একটি অধ্যায় আছে যা যুদ্ধের টেকনিক্যাল দিকগুলি সম্বন্ধে অজ্ঞ পাঠক কে বিশেষ সহায়তা করে | পুরো বইটিতেই যুদ্ধের টেকনাকালিটি খুব সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন লেখক | বইটি অধ্যায়, পর্ব ও বিভিন্ন অনুচ্ছেদে বিভক্ত | কিছু ক্ষেত্রে আমার একটু অসুবিধে হয়েছে এই বিভাজন বুঝতে কেননা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ছোট ছোট এক পাতা বা আধ পাতার আখ্যান দিয়ে পর্ব গুলি কোলাজের মতো সাজানো |

    নট ওয়ান স্টেপ বাকওয়ার্ডস : অর্ডার নম্বর ২২৭ - ১৯৪২ এর জুলাই মাসে স্তালিনগ্রাদ যুদ্ধের প্রাক্কালে জোসেফ ভিসারিওনোভিচ জুগ্যাসভিলি ওরফে স্তালিনের স্বাক্ষর করা এই স্টাফ অর্ডারটি লাল ফৌজ আত্মসমর্পন বা পাশ্চাদপসারণ করতে গেলে তাদের গুলি করে মারার আদেশ দেওয়া হয় | এক অসম্ভব যুদ্ধে জিতে যায় লাল ফৌজ | বিশ্ব-যুদ্ধের মোড় ঘুরে যায় | পশ্চিমি ঐতিহাসিকদের একটা বড় অংশ মনে করে স্তালিন এবং তার বুরোক্রেসি তাদের যুদ্ধ নীতিতে অনর্থক বহু প্রাণ বলিদান দিয়েছেন | আবার রাশিয়ান ঐতিহাসিকরা ও বামঘেঁষা ঐতিহাসিকেরা মনে করেন এই প্রাণ বলিদান দেয়ার সামর্থই লাল ফৌজ কে পরাজিত ইউরোপিয় শক্তি গুলির থেকে আলাদা করে | এইখানে এসে আবার E L Carr এর কথা মনে পড়বে | ইতিহাস কে লেখে ?শোভন চক্রবর্তী দেখাচ্ছেন স্তালিনের সিদ্ধান্তগুলি সেই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক ছিল | স্তালিনের যে সমস্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে বাম মহলেও প্রচুর বিতর্ক হয়েছে তার মধ্যে একটি মলোটভ- রিবেনট্রপ চুক্তি | শোভন বাবু স্তালিনের সমর্থনে যুক্তি দিচ্ছেন ওই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে তা সঠিক - কেননা সোভিয়েত তখন যুদ্ধের জন্য তৈরী ছিল না এবং স্তালিনের অঙ্ক বলছিল সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলি এই যুদ্ধে দুর্বল হয়ে পড়লে সেই দেশগুলিতে সমাজবাদী বিপ্লবের পথ সুগম হবে | আবার ১৯৪১ এ জার্মানি আক্রমণ তিনি বিশ্বাস করতে পারেন নি কেননা তার মনে হয়েছিল জার্মানি, রাশিয়ার পাঠানো খাবারের উপর নির্ভরশীল, দুটো ফ্রন্ট খুলবেনা | কিন্তু হিটলার স্তালিনের এই মনোভাব বুঝে গিয়ে তাকে ওভারট্রাম্প করতে পেরেছিলেন |
    শোভন বাবু মূলত তথ্যের উপর ভিত্তি করে লেখেন - তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত টানেন | কিন্তু স্তালিন ও কমিউনিস্ট পার্টির মূল্যায়নে মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী তত্ত্বের ও বিশেষ ভূমিকা থাকে | সেটি বোঝার ক্ষেত্রে লেখকের সীমাবদ্ধতা কিছুক্ষেত্রে তার তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা গুলিকে লঘু করে | যেমন স্তালিনের মনোভাব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পুঁজিবাদী ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের স্বরূপ |

    যুদ্ধের মতো গুরুগম্ভীর বিষয় হলেও লেখকের রসবোধ প্রশংসনীয় | সোভিয়েত মার্শাল কুলীক সম্মন্ধে লিখছেন - " কোনো একদিন সকালে এটা হতেই পারে, যে হঠাৎ করে কুলীকের জায়গা ভানিকভের সাথে রদ বদল করে, স্তালিন কুলীক কে গুলাগে ট্রান্সফার করলেন | কাজেই দফতরে নয় ; জায়গা যেটা পাকা করতে হবে, সেটা স্তালিনের মনে | আফসোস ! 'স্তালিনের মনে কারুর জায়গাই যে কখনো, কোনোদিন পাকা হয়না '- এই সরলরৈখিক সত্য সম্পর্কেও কুলীকের বিন্দুমাত্র স্বচ্ছ ধারণা নেই |"

    পুরো বইটি জুড়ে অসংখ্য তথ্য ছড়িয়ে আছে মণিমুক্তোর মতো | কয়েকটি উদাহরণ দেয়া যায় - যেমন ১৩ এপ্রিল ১৯৪১ রাশিয়া-জাপান অনাক্রমণ চুক্তি যেটি খুবই কম আলোচিত | জাপানি রাষ্ট্রদূত কে ছাড়তে স্তালিন স্বয়ং রেলস্টেশনে যাচ্ছেন সপারিষদ এবং সূরার নেশায় ঈষৎ টালমাটাল হয়ে | স্তালিনের নির্দেশে মধ্য - এশিয়াতে তৈমুর লঙের সমাধি খুঁড়ে দেহাবশেষ বার করা | রাশিয়া জুড়ে হঠাৎ করে মাশরুমের অভুতপূর্ব ফলন নাকি ভয়ঙ্কর যুদ্ধের সংকেত | রিবেনট্রপ যখন চুক্তি করতে মস্কো নামেন তখন বিমানবন্দরে উড়ছে অসংখ্য নাৎসি পতাকা লাল পতাকার পাশাপাশি | কিন্তু সোভিয়েত রাশিয়াতে এতো ফ্যাসিস্ট পতাকা জোগাড় হলো কিভাবে এতো তাড়াতাড়ি ? পাতাকাগুলি পাওয়া যায় একটি স্থানীয় ফিল্ম স্টুডিও থেকে যারা ফ্যাসিবিরোধী একটি সিনেমা বানাচ্ছিল |

    এই বইটির পরবর্তী সংস্করণে কতগুলি বিষয়ে নজর দিলে ভালো হয় | তার মধ্যে একটি হলো ভাষা | যদিও বইটির ভাষা খুবই ঝরঝরে, থ্রিলার ধর্মী কিন্তু অনাবশ্যক ইংরিজি শব্দের ব্যবহার এবং কথ্য ভাষার অনর্গল উপস্থিতি লেখনীর ভাষাটি লঘু করে করে ফেলেছে | কোনো কোনো সময় মনে হয় যেন ফেসবুকের পোস্ট পড়ছি | অথচ কিছু কিছু অংশে লেখকের পরিস্থিতি বর্ণনা, বিশেষত, যুদ্ধের কাউন্টডাউন অধ্যায়টি অনবদ্য | তথ্য সম্পাদনায় যে মনোযোগ দিয়েছেন, লেখনীর ভাষায় তা চোখে পড়েনি | কিছুক্ষেত্রে খাপছাড়া বাক্যবিন্যাস ও ব্যাকরণগত ত্রুটিও চোখে পড়েছে | বিভিন্ন পর্যায়ে ভাষার মধ্যে একটা অসামঞ্জস্যতা ও চোখে পড়েছে |
    তবে কোডনেম বারবারোসার সবচেয়ে বড় ত্রুটির জায়গাটি হলো সম্পাদনা | অজস্র মুদ্রণ প্রমাদে ভর্তি | একদমই প্রুফ দেখা হয়নি | যদিও শুনেছি বইমেলায় প্রকাশের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়োর জন্যে এমনটি হয়েছে | কিন্তু পাঠকের কাছে এই অজুহাত চলবে না | বইটিতে যে রেখাচিত্র গুলি ছাপা হয়েছে সেগুলির প্রতিও যত্ন নেয়া আবশ্যক ছিল | বিষয়বস্তু, আখ্যান ও তথ্যসম্ভার বইটি কে যে মানে তুলে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো সেখান থেকে এই ধরণের খামতিগুলো অপ্রত্যাশিত |

    অনেক ছোটবেলায় আমাদের বাড়িতে চকচকে পাতাওয়ালা, রঙিন ছবিতে ভর্তি, একটা বেশ বড় সাইজের পত্রিকা আসত | ঝরঝরে বাংলায় লেখা সেই পত্রিকার নামটি ছিল যে দেশ থেকে ছাপা হতো সেই দেশটির নামেই, সোভিয়েত ইউনিয়ন | সেই প্রথম সোভিয়েত ইউনিয়নের নাম শোনা | আমার জেঠু রাখতো সেই পত্রিকা | কেন রাখতো কে জানে, জেঠু কিন্তু কমিউনিস্ট ছিল না | যাইহোক, সেই জেঠুর কাছেই প্রথম শুনি জার্মানি নামক দেশটির কথাও - কার্ল হেইঞ্জ রুমানিগের ও আগে | জেঠু কাজ করতো আমতলার কাছে গন্টারম্যান পাইপস বলে একটি জার্মান কোম্পানিতে | সেখানে জেঠুর জার্মান কলিগরা বলেছিলো - দাশগুপ্ত, বেশি যুদ্ধ যুদ্ধ করো না, যুদ্ধ কি জিনিস, তোমরা দেখোনি, কল্পনাও করতে পারবে না | আমাদের দেশটা ধ্বংস হয়ে গেছিলো | সেখান থেকে ধীরে ধীরে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে অনেক কষ্টে, অনেক পরিশ্রমে, অনেক আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে |
    সেই জার্মানি বা সেই সোভিয়েত ইউনিয়ন দুটি রাষ্ট্রই এখন ইতিহাসের পাতায় | তাদের ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক সীমানা ও বদলে গেছে | তবুও সেই মহাসংঘর্ষের রেশ থেকে গেছে বর্তমান পৃথিবীতে | ইউরোপে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধকে অনেকেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে বাংলা ভাষায় বইপত্তর খুবই কম | সেদিক থেকে কোডনেম বারবারোসা একটি উল্ল্যেখযোগ্য সংযোজন | লেখক শোভন চক্রবর্তীর প্রথম বই হিসেবে এটি নিঃসন্দেহে একটি ধন্যবাদার্য্য প্রয়াস | আশা করবো লেখক ও প্রকাশক আরো এই সংক্রান্ত গ্রন্থ প্রকাশ করে আমাদের মতো ইতিহাস পিপাসু মানুষের আক্ষেপ মেটাবেন |

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dc | 2401:4900:1f2a:4325:9ee:1dd0:622f:1f44 | ২১ আগস্ট ২০২২ ২১:২৩511245
  • এই বইটা কি অনলাইনে পাওয়া যাবে? পিডিএফ বা কিন্ডল এডিশান হিসেবে? সেকেন্ড ওয়ার্লড ওয়ার নিয়ে আমার বিশেষ আগ্রহ আছে। 
  • এস চক্রবর্তী | 103.75.160.110 | ২১ আগস্ট ২০২২ ২২:০২511248
  • আপনাকে  ধন্যবাদ  তীর্থ । 
  • dc | 2401:4900:1f2a:6f43:90f4:8528:2653:87ca | ২১ আগস্ট ২০২২ ২২:০৩511249
  • ভাবতে অবাক লাগে, অপারেশান বারবারোসা মাত্র ছমাস স্থায়ী হয়েছিল। অথচ এই যুদ্ধের ফলে বিংশ শতাব্দীর ইতিহাসের মোড় ঘুরে গেছিল। নাজিরা ওভারহোয়েল্মিং অ্যাডভান্টেজ নিয়ে শুরু করেছিল। এই যুদ্ধে মানুষের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশী মানুষ হতাহত হয়েছিল। কিন্তু নাজিরা শেষরক্ষা করতে পারেনি, ইনডমিটেবল রেড আর্মির কাছে হেরে গেছিল। 
     
    এই ছয় মাসের প্রতিটা দিন নিয়ে আলাদা আলাদা কাহিনী লেখা যায়। স্ট্র‌্যাটেজিক ভিউ, ট্যাকটিকাল ভিউ, অপারেশানস, লজিস্টিক্স, আর্মি মুভমেন্ট, অফেনসিভ আর কাউন্টার অফেন্সিভ - এই প্রতিটা বিষয়ে একেকটা আলমারি ভর্তি বই লিখে ফেলা হয়েছে। ওয়ান ​​​​​​​অফ ​​​​​​​দ্য ​​​​​​​গ্রেটেস্ট ​​​​​​​ক্যাম্পেনস ​​​​​​​ইন ​​​​​​​​​​​হিস্টরি। 
     
     
  • Tirtho Dasgupta | ২২ আগস্ট ২০২২ ০৪:০৭511255
  • @dc হ্যাঁ পাওয়া যাবে বোধহয় । boichoi.com এ দেখতে পারেন । 
  • Tirtho Dasgupta | ২২ আগস্ট ২০২২ ০৪:১০511256
  • হ্যাঁ । পুরো ইস্টার্ন ফ্রন্টটাই খুব ইন্টারেস্টিং । এই বইটির শেষে যে বিবলিওগ্রাফি আছে ওটা ধরে ধরে সংগ্রহ করে পড়া যায় ।
     
  • Tirtho Dasgupta | ২২ আগস্ট ২০২২ ০৪:১২511257
  • @এস চক্রবর্তী - উপরের কমেন্ট টা দেখুন । ওনাকে জানিয়ে দিন একটু কোথায় পাওয়া যাবে বইটি ।
  • dc | 2401:4900:1f2b:3771:5188:d43c:6a6e:5afa | ২২ আগস্ট ২০২২ ০৮:৫৪511259
  • বইচইতে গিয়ে নানান কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করলাম, কিন্তু বইটা পেলাম না। যাই হোক, তীর্থবাবুকে ধন্যবাদ। 
  • dc | 2401:4900:1cd0:1bb4:4b5:f8ca:3003:57cd | ২৩ আগস্ট ২০২২ ০৭:০৭511282
  • ধন্যবাদ। বইটা কিনে ফেল্লাম, তবে পিডিএফ বা কিন্ডল এডিশান থাকলে আরও ভালো হতো। 
  • Debanjan Banerjee | ২৫ আগস্ট ২০২২ ১২:৪১511336
  • অসাধারণ হয়েছে এই লেখাটি l আমিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এই অধ্যায়টি জানতে খুবই আগ্রহী l বাংলা ভাষাতে এইরকম একটি বিষয় নিয়ে তুলে ধরার জন্য অনেক ধন্যবাদ l.                                                            Acchha আমাদের এখানে একটি অতি সরলীকৃত ধারণা হলো যে স্তালিন ও হিটলার আসলে একই রকম সাম্রাজ্যবাদী l এই নিয়ে একটু আলোচনা হলে ভালো হতো l.                                                                             আরো একটি ব্যাপার হচ্ছে যে স্তালিন যিনি রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চ কে আগে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন শুনেছি যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে সেই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে দিয়েছিলেন যোদ্ধাদের মনোবল বাড়াতে l.   এই ব্যাপারটি কতদূর সত্যি হতে পারে ? 
  • dc | 2401:4900:1f2b:62b4:10b0:ad4:bdda:126c | ২৬ আগস্ট ২০২২ ১৩:৫১511376
  • বইটা খানিক আগে হাতে পেলাম। বহু বহুকাল পর কাগজে লেখা বই পড়বো, আজকাল সবই পিডিএফ পড়ি। 
     
    প্রোডাকশান কোয়ালিটি ভালো লাগলো। ভালো বাঁধাই, ভালো ফন্ট, ভালো কাগজ ইত্যাদি। দাম কি আরেকটু বেশী রাখা যেতো না? তাহলে একদম প্রফেশনাল কোয়ালিটির হতে পারতো (এটা একেবারেই আমার পার্সোনাল ওপিনিয়ন, বাংলা বইএর দাম নিয়ে কোন ধারনা নেই)। 
     
    যে কারনে এই পোস্ট করাঃ বইটা খুলেই দেখি মুখবন্ধের ওপর কার্ল সাগানের কোট! অবিশ্বাস্য রকম ভালো লাগলো :-) 
     
    এবার পড়তে শুরু করবো। 
  • Tirtho Dasgupta | ২৭ আগস্ট ২০২২ ০৩:৫০511385
  • @guru হ্যাঁ, এটাই লেখকের গ্রুপ |
  • Tirtho Dasgupta | ২৭ আগস্ট ২০২২ ০৪:৩০511389
  • @debanjan bannerjee
    স্তালিন কে হিটলার -এর সাথে একাসনে বসানো পশ্চিমি ঐতিহাসিকদের একাংশ রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে করে থাকেন | এটা ঠিক স্তালিনের নেতৃত্বে সোভিয়েত পুরো পূর্ব-ইউরোপ কে নিজেদের প্রভাবে নিয়ে আসে যুদ্ধের পর | প্রায় প্রতিটি দেশেই  সোভিয়েত অনুমোদিত সরকার স্থাপিত হয় | কিন্তু পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যেমন ব্রিটেন, ফ্রান্স, স্পেন ইত্যাদিরা এবং হিটলারের জার্মানি যে অর্থে সাম্রাজ্যবাদী সোভিয়েত তেমন নয় | সোভিয়েত রাজনৈতিক ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করত মূলত | অনেকে একে সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ (socialist imperialism ) ও বলে থাকেন |

    স্তালিন বিশ্বযুদ্ধের সময় অর্থডক্স চার্চ নিয়ে ডিগবাজি খান পুরো, এটা ঠিক | ১৯৩৭ এর সেন্সাসেও দেখা গেছিলো প্রায় ৫৭ % রাশিয়ান ঈশ্বর বিশ্বাসী | তাই মস্কো আক্রমণের প্রাক্কালে তিনি চার্চ এর উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন এই শর্তে তারা জনগণকে দেশাত্ববোধে উদ্ভুদ্ধ করবে এবং সোভিয়েত পার্টি ও প্রশাসনের পজিটিভ প্রচার করবে জনসমক্ষে | 
  • এস চক্রবর্তী | 103.75.160.110 | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২২:১২511875
  • @Debanjan ব্যানার্জী  এটা দশ দিনের যুদ্ধ  তাই এখনও স্তালিনের বিভিন্ন কাজকর্ম সেই ভাবে সামনে আসেনি। তবে পরবর্তী ধাপে আপনি স্তালিনের কয়েকটি কাজকর্মের দিশা সম্পর্কে জানতে পারবেন। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন