মোহিনীবাবুর চুরাশি বছর বয়স হল। তার স্ত্রীর বয়স উনআশি।দুজনেরই শরীর বাতে পঙ্গু । তাছাড়া বয়সজনিত হাজারো আদিব্যধি শরীর জুড়ে বসে আছে। তাদের একটা ছেলে, একটা মেয়ে ছিল। দুজনই আর নেই। একজন ক্যানসারে গেছে, একজন পথ দুর্ঘটনায় নীলরতন সরকার হসপিটালে। সন্তানশোকের ছুঁচ এখন আর অহোরাত্র ফোটে না। তবে প্রায়শই নীরব দুপুরে বা গহন রাত্রে উথলে ওঠে দু:খসাগর। আছড়ে পড়ে বুকের তটে। বুড়োবুড়ির এ সংসারে বোধহয় আর কেউ নেই। থাকলেও তারা সম্পর্ক এড়িয়েই চলে। তারা বুদ্ধিমান লোক। কে নেবে এসব দ মেরে যাওয়া জবুথবু বুড়োবুড়ির ঝক্কি। যাতায়াত করলেই তো ঘাড়ে এসে পড়বে এসব উটকো হ্যাপা। অনাদৃত অবহেলিত থাকতে থাকতে মোহিনীমোহনবাবু এবং তার জীবনসঙ্গিনী নিরুপমাদেবীর পরষ্পরের ওপর নির্ভরশীলতা দিনে দিনে প্রবলভাবে বেড়ে উঠেছে। পরষ্পরে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকতে চায়। দুজন দুজনকে মিনিট পাঁচেক দেখতে না পেলেই উৎকন্ঠায় অধীর হয়ে ওঠেন। একজন চলে গেলে আর একজনের যে কি হবে কে জানে।
বুড়োর পেনশানের টাকায় কোনমতে খাওয়ার খরচটা চলে যায়। তবে ওষুধবিষুধ এবং ডাক্তার বদ্যির পাহাড়প্রমাণ খরচ সামলাতে গিয়ে ওদের হিমসিম খেতে হয় নিরন্তর।
এই দুই কামরার একতলার ফ্ল্যাটটা চাকরি থাকতে থাকতে কোনরকমে করে ফেলতে পেরেছিলেন মোহিনীবাবু তাই রক্ষে। নইলে সমস্যা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠত। তবে হ্যাঁ, পাড়ার লোক যে মন্দ তা বলা যায় না। দরকারে পাশে এসে দাঁড়ায়। দোকান থেকে এটা ওটা এনে দেয়। তেমন অসুস্থ হলে ডাক্তারও ডেকে দেয়। তবে ওইটুকুই , তার বেশি কিছু নয়।
উল্টোডাঙায় স্পন্দনের পাশের বাড়িতেই বুড়োবুড়ি থাকে।প্রায় প্রতিদিনই বাড়ি ঢোকার মুখে স্পন্দনের সঙ্গে চোখাচোখি হয় প্রবীণ দম্পতির । ক্ষণিকের দেখা এবং নীরব কুশল বিনিময়ের বেশি আর কিছু হয়নি এখনও। একাকিত্ব এবং বিড়ম্বনার ধূসরতা মাখা দুজোড়া চোখ। কিভাবে তাদের পাশে দাঁড়ান যায় তা ভাবতে ভাবতেই কেটে গেল অনেকগুলো বছর।
বয়স এগিয়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের কোষগুলো গুচ্ছে গুচ্ছে মুমূর্ষু হতে থাকে।
ইদানীং কেমন যেন বয়সজনিত এলোমেলো ভাব দেখা দিয়েছে মোহিনীমোহন ভট্টাচার্যের ।ছেলের জন্য পথ চেয়ে বসে থাকে বিকেল হলেই । বিকেল হলেই মাথায় কিসের পাক লাগে। রাস্তার ধারে একতলার ঘরে জানলায় বসে বসে মিনিটে মিনিটে তার বৌকে জিজ্ঞাসা করেন , ‘ কটা বাজল গো ? বাবলুর তো আসার টাইম হয়ে গেছে। এখনও তো এল না। আসবে আসবে.... এই তো এল বলে ..... ‘
এইসব শুনে নিরুপমা কাঁদতে থাকেন।স্বামীর গায়ে হাত বোলাতে বোলাতে বলতে থাকেন, ‘ ওগো তুমি এমন কেন করছ গো.... বাবলু তো কবেই আমাদের ছেড়ে চলে গেছে .... তুমি কি জান না ..... ‘ । দুটি অসহায় মানুষ বিকেলের মরা আলোয় একতলার জানলায় বসে থাকেন। রাত নেমে গেলে মোহিনীবাবু আবার নিজের মধ্যে ফিরে আসেন। এক একটি মানুষের জীবন এক একটি বুদ্বুদের মতো। কবে কখন মিলিয়ে যায় কেই বা বলতে পারে। রাত আটটা বাজতে না বাজতে ঘুমিয়ে পড়েন মোহিনীবাবু। নিরুপমার ঘুম আসে না কিছুতেই। স্বামীর ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে ঘরে আলো জ্বালিয়ে বসে থাকেন। ভয়ে তার বুক দুরদুর করতে থাকে। শেষের দিনটা তো নিশ্চিতভাবেই এগিয়ে আসছে। একজন চলে গেলে আর একজন কার কাছে থাকবে। নি:সঙ্গ এক নির্জন দ্বীপের বাসিন্দা তারা। রাত গভীর হয়। রাস্তার কুকুরগুলো থেকে থেকে উৎকট চেঁচামেচি করতে থাকে । শেষ রাতের দিকে নিরুপমার চোখের পাতা ভারি হয়ে আসে। দিনের আলো ফুটে কটা চড়াই নাকোর চাকোর কিচিরমিচির শুরু করলে তার বুকে সাময়িক স্বস্তি ফিরে আসে।রান্নাঘরে ঢুকে কাজে লেগে পড়েন। প্রায় সত্তর বছর ধরে যে কাজে তার বিরামবিহীন আনাগোনা। তাছাড়া মোহিনীবাবু তার সহধর্মিনীর হাতের রান্না ছাড়া অন্য কোন রান্না মুখে তোলেন না। তিনি ঠি ক বুঝতে পারেন এটা নিরুপমার পাকানো খানা নয়। ঘড়ি ধরে বিকেল পাঁচটা বিকেল বাজলেই তার বুকের ভিতর শঙ্কার বোলতা চাক বাঁধতে থাকে। এই বুঝি মোহিনীমোহনের চোখে ঘোর লাগা শুরু হল, শুরু হল পনের বছর আগে দুনিয়া থেকে অন্তর্হিত ছেলের বাড়ি ফেরার প্রতীক্ষায় বসে থাকা।
........ ........... .........
স্পন্দনের কাছে মেল এসেছে জি এনএ-তে শুভ সর্বসম্মতিক্রমে সিলেক্টেড হয়েছে এবং শুভর বিদেশযাত্রা সংক্রান্ত কাগজপত্র তৈরি করতে অনুরোধ করেছে । এ ব্যাপারে তাদের কোন সাহায্য দরকার হলে সেটা জানাতে বলেছে। কিন্তু স্পন্দনের এ ব্যাপারে কোন তাড়া হুড়ো করার ইচ্ছে নেই। অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনে সুরিন্দরের পুনর্বহাল হওয়ার প্রতীক্ষা করছে। হাওয়া যেদিকে ঘুরছে সেটা যে হবেই সে ব্যাপারে তার কোন সন্দেহ নেই। সেটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। জিএনএ-র কাছে সাত দিন সময় চেয়েছে স্পন্দন সিদ্ধান্ত নেবার জন্য।
এর মধ্যে সুরিন্দর একদিন ফোন করেছিল। সে বলল শুভকে দুশো এবং চারশো মিটারের জন্যও ট্রেন করতে। তার মতে, ওই দুটো ইভেন্টে ‘পোটেনশিয়াল’ ছেলের খুব অভাব।
এর মধ্যে স্পন্দন একদিন মধ্যমগ্রামে গেল ব্রজেনবাবু এবং শুভর বাবা দেবেশের সঙ্গে দেখা করার জন্য। শুভর ভবিষ্যতের ব্যাপারে তাদের সঙ্গেও আলোচনার দরকার আছে। পায়েল বলল, ‘ ওখানে যাচ্ছ যখন শুভকে কদিনের জন্য নিয়ে এস না ..... এখানে দেশবন্ধু পার্কে ওকে কদিন ট্রেন করতেও পারবে।’
ব্রজেন বক্সী শুভকে আর হোটেলের কাজ করাতে চায় না। বলেন, ‘ এসব কাজ আর করিস না তুই.... তোর অন্য অনেক কাজ বাকি। তুই তাতে মন দে, যাতে ওগুলোর মুখে ঝামা ঘষে দিতে পারিস। ‘ওগুলো’ বলতে কাদের বোঝাতে চান ব্রজেনবাবু শুভর কাছে ঠি ক পরিষ্কার নয়। তার কন্টকময় জীবনবৃত্তের জন্য
কাকে কাকে দায়ী করা উচিৎ সে
ঠি ক বুঝতে পারে না। তাদের গাঁয়ের সবার জীবনই তো এরকম। এর বাইরে আর কি হতে পারে তার মাথায় আসে না। খুব জোরে দৌড়তে পারাটা যে কোন কাজ হতে পারে সে এটা স্পন্দন স্যারের কাছেই প্রথম শুনল।সে যাই হোক, এই একটা ব্যাপারে সে ব্রজেনবাবুর কথা মান্য করেনি। তৃপ্তি হোটেলে ভর দুপুরের ডাল ভাত মাছের ভরভূর খদ্দের সামলানোয় ডুবে আছে যথারীতি।
স্পন্দনকে দেখে শুভ ছুটে এল। ব্রজেনবাবু একগাল হেসে বলে উঠলেন, ‘ আরে আরে ..... আসুন আসুন ..... কি আশ্চর্য ! এক্ষুণি আপনার কথাই ভাবছিলাম। তারপর .... কি খবর .... ওদিকে কাজ কিছু এগোল ? ‘
ঘটনাক্রমে দেবেশ নস্করও ওখানে বসে ছিল তখন। সে বলল, ‘নমস্কার বাবু , বড় উপকার করলেন যা হোক .... এরপর যা ভাল বোঝেন .... ছেলেটার দায়িত্ব তো এখন আপনাদের হাতে .... দ্যাখেন ..... ‘
দেবেশের কথাবার্তার ধরণ চিরকালই এরকম। ঠি ক পুরোপুরি খোলসা হয় না।
স্পন্দন বলল, ‘ না মানে .... এখনও কিছু ঠিক করে উঠতে পারিনি। বিদেশে গিয়ে ট্রেনিং নেবার সুযোগটা হাতে এসেছে। কিন্তু আমরা ভাবছি দেশে থেকে এবারের অলিম্পিক স্কোয়াডে ঢোকার আর একটা চেষ্টা করা হবে কিনা। সামনের বুধবার জামশেদপুরে একটা বড় অ্যাথলেটিক্স মিট আছে — অল ইন্ডিয়া আনডার এইট্টিন ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড কমপিটিশান । ওখানে আমি শুভর নাম দিয়েছি। একশো ছাড়াও চারশো মিটার রেসেও নাম লিখিয়েছি ওর। ওখানে ভাল ফল করতে পারলে অবশ্যই দু একটা ভাল স্পনসর পাওয়া যাবে। স্পনসর ছাড়া এগোন মুশ্কিল আছে। কারণ অ্যাথলেটিক্সকে পেশা করতে হলে তো অন্যান্য কাজ ছেড়ে ওকে তো শুধু এই খেলাটা নিয়েই থাকতে হবে। রোজগার বন্ধ হয়ে গেলে ওদের চলবে কি করে .... কাজেই ..... । সে যাই হোক, আমি বলছিলাম যে আজ আমি শুভকে
দুচারদিনের জন্য আমার ওখানে নিয়ে যাই .... একটু ট্রেনিং-ও হবে আর পায়েলের সঙ্গে দেখাও হবে .... কি বলেন ?’
—- ‘ দুজনেই একযোগে যা বলল তার মানে হয়, আমরা আর কি বলব .... আপনি যা ভাল বোঝেন .... ‘
ভোর সাড়ে পাঁচটার সময়ে শুভকে দেশবন্ধু পার্কে নিয়ে গিয়ে চারশো মিটারের প্র্যাকটিস করাল প্রায় আধঘন্টা। সাতচল্লিশ সেকেন্ডের মতো টাইমিং হল। ওটা আর একটু কমানোর দরকার। স্পন্দন ভাবল নিয়মমাফিক এগোতে গেলে একটা ডায়েট চার্ট করার দরকার এক্ষুণি। সঠিক ডায়ের্ট চার্ট ছাড়া একজন অ্যাথলিটের জীবনে যে কোন মুহুর্তে যবনিকা নেমে আসতে পারে। বোন,টেন্ডন, মাসল, লিগামেন্ট, জয়েন্ট এই পাঁচের যথাযথ অর্কেস্ট্রেশানে বাঁধা আছে এক অ্যাথলিটের গতি, তাল,ছন্দ এবং টিকে থাকার মেয়াদ। কলতান বসু একজন দক্ষ স্পোর্টস মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং স্পোর্টস ডায়েটিশিয়ান। কলতানের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল প্রায় পনের বছর আগে। সুকিয়া স্ট্রীটে বাড়ি ও চেম্বার। স্পন্দনের খেলোয়াড় জীবনে অনেক পরামর্শ নিয়েছে কলতানের কাছ থেকে। আপাতত: নিজের পকেট থেকেই এসব টাকা খরচ করতে হবে যতদিন না শুভ স্পনসর পাচ্ছে। অবশ্য সাময়িকভাবে ব্রজেনবাবুর সাহায্য নেওয়া যায়।কিন্তু পায়েল বলল, ‘ না না এসব ব্যাপারে ওনাকে বিরক্ত করা
ঠি ক হবে না। এগুলো আমাদেরই সামলাতে হবে। স্পন্সরটা পাওয়া খুব দরকার।
— ‘ হ্যাঁ সেটাই । জামশেদপুরের পারফর্মেন্সটা খুব ইমপর্ট্যান্ট হয়ে গেল.... ‘
— ‘ তুমি বরং সুরিন্দরের সঙ্গে কনসাল্ট করতে পার এ ব্যাপারে।’
পায়েল মন্তব্য করে।
— ‘ হ্যাঁ সেটাই ভাবছি । ‘
শুভকে কালই তার বাড়িতে নিয়ে এসেছে স্পন্দন। পায়েল খুব খুশি আর সান্টু একেবারে আহ্লাদে আটখানা। সবসময়ে শুভর সঙ্গে সেঁটে বসে আছে।
রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রীট দিয়ে হেঁটে উল্টোডাঙা রোডে এসে বাঁদিকে একটু হেঁটে ব্রীজের ওপর উঠল স্পন্দন আর শুভ। সকাল সাতটার নরম রোদ্দুর ছড়িয়ে আছে চতুর্দিকে। পাশে ব্যস্ত রাস্তার ব্যস্ত যান চলাচল, ব্যস্ত লোকজন। বাগজোলা খালের শীর্ণ মলিন জলে ঝিকিমিকি আলো পড়েছে।
স্পন্দন জামশেদপুরের স্টেডিয়ামটার প্রতিটি ঘাস চেনে। অনেক দৌড় দৌড়েছে সে ওই স্টেডিয়ামে। ভোরের হাওয়ায় ভেসে আসে স্মৃতির পালতোলা নৌকো।মজবুত পাল লাগানো আর এক নতুন নৌকো ভাসিয়ে দিতে চায় দূর দূর পাল্লার একটানা বৈঠা টানার জন্য। ঘামে জবজবে দুটো শরীর । হাঁটতে হাঁটতে স্পন্দন আর শুভ আরও ঘেমে গেছে। স্পন্দনের তবু থামা নেই। একটানা বকেই চলেছে। স্টেডিয়ামের প্রতিটি ঘাস চেনে সে।
— ‘ হানড্রেড আর ফোর হানড্রেড দুটোতেই নামতে হবে কিন্তু। ফোর হানড্রেডের টাইমিংটা আর একটু নামা.... এই সিজনে ওখানে ওয়েদার বেশ স্মুথ ,কমফোর্টেবল .... অসুবিধে হবে না আশা করি । ব্রিদিং এক্সারসাইজ করছিস তো । ওটা কিন্তু ডেলি করবি, দিনে অন্তত চারবার। ভীষণ উপকার পাবি। লাংঙের ক্যাপাসিটি অনেক বেড়ে যায়।
দুজনে ব্রীজের নীচে নামল। এতটা হাঁটা সেটাও ফুসফুসের জোর বাড়ানোর জন্য।
তারপর একটুখানি গেলেই রাস্তার ওপর বাঁ হাতে রাস্তার ওপর স্পন্দনদের ফ্ল্যাট। তার ঠিক আগে আর একটা বাড়ি। শুভর চোখে পড়ল তার একতলার ঘরের জানলায় একজন দাদু আর একজন দিদা। শুভকে দেখে মোহিনীমোহন হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠলেন , ‘ ওই .... ওই তো বাবলু দেশবন্ধু পার্ক থেকে ফুটবল খেলে এল .... আয় আয়.... এত দেরি হল কেন....’
শুভ জানলার সামনে দাঁড়িয়ে গেল।স্পন্দনও দাঁড়িয়ে রইল মাথা নীচু করে । নিরুপমা দেবী কাঁদতে কাঁদতে স্পন্দনের দিকে চেয়ে বললেন , ‘ দেখ না বাবা ..... আজ সকাল থেকেই শুরু করেছে.... আমি কি করব, কার কাছে যাব বলতে পার বাবা .... ।
হেমন্তের মনোরম সকালে যেন গভীর বিষাদের আঁচড় লাগল ।স্পন্দন অসহায় নীরবতায় আচ্ছন্ন হয়ে মাথা হেঁট করে দাঁড়িয়ে রইল । শুভর মাথা থেকে পা পর্যন্ত এক তীব্র বিদ্যুৎ শিহরণ প্রবাহিত হয়ে গেল। বিদ্যুচ্চমকের মতো মনের আকাশ চিরে অগ্নি আভাসে চমকিত হল একটা মুখ। সুদূর স্মৃতিতে আবছা ধূসর হয়ে যাওয়া তার মায়ের মুখের ছবি। দুরন্ত, অপ্রতিরোধ্য এক কিশোর স্প্রিনটার জানলার কাছে এগিয়ে গেল। হাতের মধ্যে নিয়ে সযত্নে ধরে থাকল মোহিনী ভট্টাচার্যের হাত। অনেকক্ষণ ধরে তার চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে অস্ফূটে বলল, ‘ তোমায় আমি মাঠে নিয়ে যাব দাদু। তোমার জন্য একটা দৌড় দৌড়ব। আমি আর তো কিছু পারি না .....’
নিরুপমা ভিজে চোখে নিষ্পলকে তাকিয়ে রইলেন শুভর দিকে। নির্জন মনোদ্বীপের বাসিন্দা মোহিনীবাবুর মুখে কি জানি কেন জীবনের উত্তাপমাখা এক টুকরো অনাবিল হাসি ফুটে উঠল সহসা।
( পরের অংশ পরের পর্বে )
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।