এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  পরিবেশ

  • তাপবিদ্যুৎ বাড়ছে না, পরমাণু বিদ্যুৎও তাই (শেষ কিস্তি)

    প্রদীপ দত্ত
    আলোচনা | পরিবেশ | ১৪ জানুয়ারি ২০২২ | ১৬২২ বার পঠিত

  • উষ্ণায়ন বা জলবায়ু বদল এবং বায়ুদূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী কয়লা। কার্বন নিঃসরণের ৩০% হয় তা থেকে। এই দশকের মধ্যে যদি তা শূন্যে না আনা যায়, তাহলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি কোনোমতেই ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বেঁধে রাখা যাবে না। তবে শুধু কয়লাই নয়, গ্যাস ও তেলের ব্যবহারও বন্ধ করতে হবে।

    যদিও বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিচ্ছন্ন বিকল্প আজ সহজলভ্য, তবু, সৌর ও বায়ুবিদ্যু্ৎ হু হু করে বেড়ে উঠলেও, কেবল নবায়নযোগ্য শক্তির উৎপাদন বাড়িয়ে জলবায়ু-বদল রোখা যাবে না। এই কারণেই গত বছর (২০২১) ৩১ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় শীর্ষ সম্মেলনে (সিওপি-২৬) ১৯৭টি দেশ কয়লার ব্যবহার ‘ফেজ আউট’ করার বা বন্ধ করার অঙ্গীকার করতে চেয়েছিল, কিন্তু তা হয়নি। ভাষা বদলে অঙ্গীকারকে লঘু করার জন্য মূলত ভারত ও চিন দায়ী। শেষে, সম্মেলনে, কয়লা ‘ফেজ ডাউন’ করার কথা বলা হয়েছে।

    নব্বইয়ের দশক থেকেই রাষ্ট্রসঙ্ঘ কার্বন নিঃসরণের বিপদ, উষ্ণায়ন ও জলবায়ু বদল নিয়ে পৃথিবীকে সচেতন করছে। অথচ ২০০০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে পৃথিবীর তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১,০৬৬ গিগাওয়াট (১ গিগাওয়াট = ১০০০ মেগাওয়াট) থেকে বেড়ে হয়েছে ২,১২৫ গিগাওয়াট। কয়লা থেকে পৃথিবীর প্রায় চল্লিশ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। এ ছাড়া বিশ্বে ২৩৬ গিগাওয়াট ক্ষমতার কয়েকশ’ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির কাজ চলছে। আরও যা তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে, তার মোট ক্ষমতা – ৩৩৬ গিগাওয়াট। নির্মীয়মাণ কেন্দ্রের অর্ধেকের বেশি রয়েছে চিনে (১২৯ গিগাওয়াট)। আইইএ (ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি) জানিয়েছে যে পৃথিবীতে কয়লায় বিনিয়োগ শিখরে পৌঁছে এখন কমতে শুরু করেছে, ওদিকে তাপবিদ্যুৎ-কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার হার বেড়েছে। তারা আরও জানিয়েছে, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে বেঁধে রাখতে হলে, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। উন্নয়নশীল দেশকে পরিচ্ছন্ন বিদ্যুতের পথে চলতে আন্তর্জাতিক সাহায্যও দিতে হবে।

    গত বছর বাতাসে মিশেছে ৪০০০ কোটি টন কার্বন ডাই-অক্সাইড। ২০২১ সালের মে মাসে পৃথিবীর বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪১৯ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন)। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ৪০ লক্ষ বছরের মধ্যে এতটা বৃদ্ধি কখনও হয়নি। ইউরোপ, আমেরিকার নিঃসরণ কমলেও চিন ও ভারতে বাড়ছে। এখন চিন, আমেরিকা ও ভারতই সবচেয়ে বেশি নিঃসরণ করে। তারা কেউ তিরিশ সালের মধ্যে তা বন্ধ করবে না।

    জলবায়ু নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈজ্ঞানিক সংস্থা ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি) তিন বছর আগে এক রিপোর্টে বলেছিল, পৃথিবীর তাপমাত্রা শিল্প-সভ্যতার আগে যা ছিল, তার থেকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বেড়ে যেতে পারে; সেক্ষেত্রে যে বিপর্যয় নেমে আসবে, তা আর শোধরানো যাবে না। আরও বলেছিল, আমরা যদি এখনই পদক্ষেপ নিই, তাহলে সেই ক্ষতি সীমিত করার পথ রয়েছে।

    এ বছর আগস্ট মাসে (২০২১) আইপিসিসি নতুন রিপোর্টে বলেছে, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রির নীচে সীমিত করার সুযোগ কমে আসছে, এখন তা করতে গেলে অসাধারণ মাত্রার পদক্ষেপ নিতে হবে, এবং তাহলেও কোনও নিশ্চয়তা নেই। গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমানোর জন্য অতি দ্রুত অভাবনীয় কাঠামোগত পদক্ষেপ নিলে হয়তো সবচেয়ে ভয়ানক প্রভাব কিছুটা আটকানো যাবে। তবে অবস্থা যত খারাপই হোক – নীতি-নির্ধারক, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ জরুরি পদক্ষেপের মাধ্যমে অবস্থা তার চেয়েও খারাপ হওয়া থেকে বাঁচাতে পারে।

    এখন প্রায় প্রতিটি দেশেই সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ সবচেয়ে সস্তা। ২০০৮ সাল থেকে এই দুই ক্ষেত্রে জীবাশ্ম-জ্বালানির চেয়ে মোট বিনিয়োগ বেশি হচ্ছে। ২০১৪ সাল থেকে প্রতি বছর এই দুই শক্তির উৎপাদন ক্ষমতাও জীবাশ্ম-জ্বালানির চেয়ে অনেক বেশি বাড়ছে। ২০২০-র শেষে নবায়নযোগ্য শক্তির মোট উৎপাদন ক্ষমতা হয়েছে ২,৭৯৯ গিগাওয়াট। এরমধ্যে জলবিদ্যুৎ ১,২১১, সৌরবিদ্যুৎ ৭৫৪ এবং বায়ুবিদ্যুৎ ৭৪৩ গিগাওয়াট। সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ মোট বিদ্যুতের প্রায় দশ শতাংশ উৎপাদন করছে। তারপরও, আইইএ-র মতে, উষ্ণায়ন রোখার জন্য সৌর ও বায়ুবিদ্যুতের মত ক্ষেত্রে বর্তমান বিনিয়োগ যথেষ্ট নয়, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে বেঁধে রাখতে হলে ২০২৫ সালের মধ্যে বর্তমান হারের দ্বিগুণ বিনিয়োগ করতে হবে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, উষ্ণায়ন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা থামাতে হলে ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ অর্ধেক করে ফেলতে হবে। ২০৪০ সালের মধ্যে পৃথিবীর সব তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হবে।

    ২০১৯ সালে পৃথিবীর কয়লার চাহিদা কমেছিল। তার মূল কারণ, কোভিড মহামারী ও লক ডাউনের জন্য ইউরোপ, আমেরিকায় বিদ্যুতের চাহিদা কমেছিল। তাপবিদ্যুৎ শতকরা ৩ ভাগ কম উৎপাদন হয়েছে। তারপরও মোট নিঃসরণ হয়েছিল ৪০৫৭ কোটি টন, ২০১৮-র চেয়ে ২৫.৫ কোটি টন বা ০.৬% বেশি।

    ২০২০ সালে কোভিড-১৯-এর প্রভাবে অর্থনীতির নিম্নগতিতে পৃথিবীতে কয়লার চাহিদা কমেছে ৫%। তবে জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে ৬০ গিগাওয়াট। ওদিকে জলবিদ্যুৎ ছাড়াই নবায়নযোগ্য শক্তি বেড়েছে ২৬০ গিগাওয়াট। সৌরবিদ্যুৎ ১২৭, বায়ুবিদ্যুৎ ১১১ গিগাওয়াট। ২০২১ সালে আর্থিক উন্নতির সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে এবং শিল্পে কয়লার চাহিদা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে বাড়বে ৪.৫%। তবে ২০২৫ সালে মোট উৎপাদন ক্ষমতায় নবায়নযোগ্য শক্তিও কয়লার থেকে এগিয়ে থাকবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসই হবে প্রধান জীবাশ্ম জ্বালানি।

    আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন ঘোষণা করেছেন, তাঁর দেশ ২০৩৫ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষেত্র থেকে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনবে। আমেরিকার ৫৯ গিগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাচালিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ২০৩৫ সালের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে। ২০২১-এর সেপ্টেম্বরের শেষে তাদের কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ২১২ গিগাওয়াট। অনেক প্রদেশের ক্লিন এনার্জি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলতে গিয়ে কয়লা থেকে কার্বন নিঃসরণের জন্য অসংখ্য তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হয়েছে। গত দুই দশকে, গড়ে পঞ্চাশ বছর চালু থাকার পর ১০০ গিগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপর কার্বন নিঃসরণ কমানোর চাপ রয়েছেই, তাই ২০৩৫ সালের মধ্যে আরও বেশি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে সে দেশে জলবিদ্যু্ৎ সহ নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষমতা হয়েছে মোট বিদ্যুতের ২০%। প্রাকৃতিক গ্যাস পুড়িয়ে তৈরি হয় বিদ্যুতের ৪১%। কয়লা থেকে তাপবিদ্যুৎ ১৯% (দশ বছর আগে হত ৪৫%)। পরমাণুবিদ্যুৎ ২০%।

    বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতায় চিন কয়েক বছর আগেই আমেরিকাকে ছাপিয়ে গেছে। ২০২১ সালে হতে চলেছে ২১.৫ লক্ষ মেগাওয়াট, ভারতের (৩.৯০ লক্ষ মেগাওয়াট) পাঁচ গুণ। ২০২০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে চিনের কয়লা থেকে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন পাঁচগুণ বেড়ে হয়েছিল ১০০৫ গিগাওয়াট, পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক। ২০২০ সালে চিনের বায়ুবিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ৩০৮ গিগাওয়াটে পৌঁছেছে, সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা হয়েছে ২৫৩ গিগাওয়াট। তারা জানিয়েছে, ২০৬০ সালের মধ্যে দেশকে নিঃসরণ শূন্য করবে।

    ২০২০ সালে কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নতুন চুল্লি চালু করার ক্ষেত্রে প্রথম চিনের পরই রয়েছে ভারত। তবে দুই দেশের মধ্যে তফাতও বিপুল। চিনে কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও প্রস্তাবিত কেন্দ্রের সংখ্যা বেড়েই চলেছে, ভারতে ততটা নয়। ওই বেড়ে চলার জন্য বাকি পৃথিবীতে কয়লার ব্যবহার যে ক্রমেই কমছে, সেই ছবি ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। ২০২০ সালে চিন তাপবিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়েছে ৩৮.৪ গিগাওয়াট, মোট যা বেড়েছে তার ৭৬%। এ বছর চিনে তাপবিদ্যুৎ প্রায় একই পরিমাণ বাড়বে। চায়না ইলেক্ট্রিসিটি কাউন্সিল আশা করে, এ বছর দেশে ১৮০ গিগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা বাড়বে, তার মধ্যে ১৪০ গিগাওয়াটি হবে নবায়নযোগ্য শক্তি। মোট উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে হবে ২৩৭০ গিগাওয়াট। এ’কথাও বলা দরকার, যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতায় চিন রয়েছে সবার উপরে, আমেরিকার প্রায় দু’গুণ-এর কাছাকাছি। তারপরও এ বছর বিদ্যুতের অভাবে ব্যাপক লোডশেডিং হয়েছে, শিল্পে উৎপাদন ধাক্কা খেয়েছে। এমনই সর্বগ্রাসী তাদের উন্নয়ন।

    ইউরোপীয় ইউনিয়নে সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ - দুইয়েরই উৎপাদন ক্ষমতা ২০১৫ সালের দ্বিগুণ হয়েছে। ২০২০ সালে জীবাশ্ম-জ্বালানি থেকে ৩৭% বিদ্যুৎ এসেছে (কয়লা থেকে ১৩%), নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে ৩৮%। ২০৩০ সালের মধ্যে কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ করাই শুধু নয়, একই সময়ের মধ্যে গ্যাস এবং পরমাণুবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়াই তাদের লক্ষ্য।

    এবার নীচের আলোচনায় আমরা শুধু ভারতের কথাই বলব। এখানে বলা দরকার, যে ভারতের দ্বিগুণের বেশি নিঃসরণ করে আমেরিকা, চিন করে প্রায় পাঁচগুণ। ভারত জানিয়েছে, ২০৭০ সালের মধ্যে নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনবে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুতের শতকরা ৫০ ভাগ তৈরি হবে নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে, উৎপাদন ক্ষমতা হবে পাঁচ লক্ষ মেগাওয়াট।

    সেসব তো কথা। দেশের বাস্তব অবস্থাটা ক্ষতিয়ে দেখা যাক।

    ২০১৫ সালে প্যারিসের শীর্ষ সম্মেলনে ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন অনুযায়ী ভারত জানিয়েছিল, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০% বিদ্যুৎ অজীবাশ্ম শক্তি থেকে উৎপাদন করবে। আজ অজীবাশ্ম শক্তির উৎপাদন ক্ষমতা ১৫৬.৮৩ গিগাওয়াট, যা মোট ক্ষমতা ৩৯০.৮ গিগাওয়াটের ৪০.১%। নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষমতা ১৫০.০৫ গিগাওয়াট আর পরমাণু বিদ্যুতের ৬.৭৮ গিগাওয়াট। গ্লাসগোর সিওপি-তে ভারত জানিয়েছে ২০৩০ সালের মধ্যে অজীবাশ্ম শক্তির উৎপাদন ক্ষমতা ৫০০ গিগাওয়াট বাড়াবে।

    ভারতে কয়লা পুড়িয়ে উৎপাদিত হয় প্রায় ২ লক্ষ ২ হাজার মেগাওয়াট; কয়লা, গ্যাস সহ জীবাশ্ম জ্বালানির মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২ লক্ষ ৩৪ হাজার মেগাওয়াট; পরমাণুবিদ্যুৎ ৬৭৮০ মেগাওয়াট; জলবিদ্যুৎ ৪৬ হাজার; বাকি নবায়নযোগ্য শক্তি ১ লক্ষ ৩ হাজার মেগাওয়াট; বড় জলবিদ্যুৎ সহ নবায়নযোগ্য শক্তির মোট উৎপাদন ক্ষমতা ১ লক্ষ ৪৯ হাজার মেগাওয়াট। আরও ৬৩.৬৪ গিগাওয়াট-এর জন্য টেন্ডার ডাকার পর তৈরির কাজ শুরু হতে চলেছে। এছাড়া ৩২.০৬ গিগাওয়াটের জন্য টেন্ডার ডাকতে চলেছে। তার মানে কিছুদিনের মধ্যেই নবায়নযোগ্য শক্তির উৎপাদনক্ষমতা হবে ২ লক্ষ ১২ হাজার মেগাওয়াট। বাকি প্রায় এক দশকে ৩ লক্ষ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা যোগ করা মোটেও কঠিন নয়। ওদিকে পরিকল্পনা রয়েছে, জলবিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা হবে ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ মেগাওয়াট। সৌর ও বায়ুবিদ্যুতের নতুন লক্ষ্য পূরণ করতে ৬০,০০০ কোটি ডলার প্রয়োজন। কিন্তু টাকা আসবে কোথা থেকে? ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির একজিকিউটিভ ডিরেক্টরের মতে, নিঃসরণ কমানোর জন্য ভারত ও অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশকে আন্তর্জাতিক অর্থ সাহায্য করা দরকার। ওই লক্ষ্যে ভারতকে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সাহায্য করতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেনের তৎপরতায় কয়েকটি উন্নত দেশকে নিয়ে এক কোয়ালিশন তৈরি করা হয়েছে।

    দশ বছর আগেও আমরা কেউ ভাবিনি, যে ২০২১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎপাদন ক্ষমতা এক লক্ষ মেগাওয়াট ছাড়াবে। সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ যে নতুন তাপবিদ্যুতের অর্ধেক হবে তা-ও কল্পনা করতে পারিনি। গত পাঁচ বছরে শক্তি উৎপাদনে পরিবর্তন যেভাবে ঘটছে, সেই গতি বজায় থাকলে ২০৩০ সাল নাগাদ আমরা তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কবে বন্ধ করব – অবশ্যই সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারব। আন্তর্জাতিক চাপের দরকার হবে না, অর্থনৈতিক কারণেই তা হবে। এরই মধ্যে অদক্ষতা, বায়ুদূষণে ভূমিকা, পরিচালন খরচ বেশি বলে সেন্ট্রাল ইলেক্ট্রিসিটি বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী, পঁচিশ বছরের বেশি চালু ৫৪ গিগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ২০২৭ সালের মধ্যে বন্ধ করে দিতে হবে। আগামী দশকের মধ্যে সেই জায়গা ভরাবে নবায়নযোগ্য শক্তি, ব্যাটারি স্টোরেজ, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বর্ধিত লোড ফ্যাক্টর এবং কিছু সুদক্ষ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।

    ভারতে তাপবিদ্যুতের অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে বলে নতুন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অনেক প্রস্তাব ড্রইং বোর্ডে পড়ে রয়েছে। বায়ু ও সৌরবিদ্যুৎ তাপবিদ্যুতের চেয়ে অনেক সস্তা। অনেক রাজ্যেই সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় খুব কম খরচে, ইউনিট প্রতি ২.৪ থেকে ৩ টাকা দরে। বায়ুবিদ্যুতের ক্ষেত্রে নিম্নতম খরচ ২.৩৬ টাকা। বিদ্যুৎ মজুত প্রযুক্তির (ব্যাটারি) খরচও দিন দিন কমছে।

    ২০০০ সাল থেকে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে তিনগুণের বেশি। তবে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎপাদন ক্ষমতা অনেক বেড়েছে বলে ভারতের তাপবিদ্যুতের উল্লেখযোগ্য অংশ কাজেই লাগে না। কারণ বিদ্যুতের চাহিদা তেমন বাড়েনি। কার্বন নিঃসরণের বিপদ ছাড়াও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাপবিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য শক্তির তুলনায় অলাভজনক হয়ে উঠেছে। প্রায় ১০ গিগাওয়াট ক্ষমতার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র অর্থনৈতিক কারণে চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে, আরও ৩০ গিগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র অর্থনৈতিক চাপে রয়েছে। নবায়নযোগ্য শক্তির বিপ্লব তাপবিদ্যুৎকে ঋণের খাদের দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে। অনেক পরিকল্পিত প্রকল্প বাতিল করতে হয়েছে। তারপরও যেসব নতুন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির কাজ চলছে এবং যেসব কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে, তার মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৯৪ গিগাওয়াট। এরমধ্যে ৩৬ গিগাওয়াট ক্ষমতার নির্মীয়মাণ কেন্দ্র রয়েছে, ২০ গিগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্র তৈরির কাজ আর্থিক সমস্যার জন্য বন্ধ রয়েছে।

    ২০২০ সালে ভারতে কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে ২ গিগাওয়াট, বন্ধ হয়ে গেছে ১.৩ গিগাওয়াট। তার মানে বাস্তবে বেড়েছে মাত্র ০.৭ গিগাওয়াট। ২০১৫ এবং ২০২০ সালের মধ্যে কয়লা থেকে নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তাব ২৩৮.২ গিগাওয়াট থেকে কমে হয়েছে ২৯.৩ গিগাওয়াট, আর নির্মীয়মাণ কেন্দ্রের ক্ষমতা ৭১.৪ গিগাওয়াট থেকে কমে হয়েছে ৩৬.৬ গিগাওয়াট। বেশিরভাগই হবে সরকারি খরচে। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রস্তাবিত ২৯.৩ গিগাওয়াট ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিপুল ক্ষতির বোঝা বইতে হবে, কারণ তা কাজে না লাগার সম্ভাবনাই বেশি। দুই বিশেষজ্ঞ সংস্থা ক্লাইমেট রিসার্চ গ্রুপ এবং এম্বার-এর মতে এই খাতে খরচ হবে দু’লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার কোটি টাকা। যে অর্থ পরিচ্ছন্ন শক্তি, ব্যাটারি স্টোরেজ এবং গ্রিড শক্তিশালী করার কাজে লাগান যেত। ওই নতুন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র শুধু যে খরচসাপেক্ষ হবে এবং নবায়নযোগ্য শক্তির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠবে না – তা-ই নয়, বিদ্যুৎ গ্রাহককে বেশি টাকা গুনতে হবে, নতুন করে নন-পারফর্মিং সম্পত্তি বাড়ার ঝুঁকি বাড়বে। ভারতে প্রচুর বিদ্যুৎ জোগানের প্রয়োজন নেই, কারণ চাহিদা সেই মত বাড়ছে না। নতুন এইসব তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু না করা এবং পুরোনো কেন্দ্র বন্ধ করার মানে দাঁড়ায় – নবায়নযোগ্য শক্তির উৎপাদন ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্য বজায় থাকলে, শক্তি-নিরাপত্তা বিপন্ন না করেও, ২০২৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের তাপবিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা সর্বোচ্চ হবে।

    ভারতের এখন নতুন কোনও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রয়োজন নেই। ভবিষ্যতে অর্থনীতির চাকা তুমুল ভাবে ঘুরলেও তাই। অনেক বছর হল আমাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ষাট শতাংশ ক্যাপাসিটিতে (প্ল্যান্ট লোড ফ্যাক্টর) চলে। নানা রাজ্যের ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি পুরোনো চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত টাকা মেটাতেই নাজেহাল। উদ্বৃত্ত উৎপাদন ক্ষমতা, নতুন নবায়নযোগ্য শক্তি-প্রকল্প তৈরির ক্ষেত্রেও বাধা।

    শিল্পমহল বুঝেছে, যে তাপবিদ্যুতের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। তাই সরকারি সংস্থা ছাড়া কেউ নতুন করে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনিয়োগ করছে না। সম্প্রতি আদানি-আম্বানি-টাটা সৌরবিদ্যুতে বিপুল বিনিয়োগ করছে। এবার, দেশের সবচেয়ে বড় তাপবিদ্যুৎ উৎপাদক এবং তেল কোম্পানি নবায়নযোগ্য উন্নয়নে জুটি বাঁধছে। এনটিপিসি, ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের হয়ে নবায়নযোগ্য শক্তির উন্নয়ন এবং শক্তি মজুত করার ব্যবস্থা করবে। এ বিষয়ে দুই বড় সরকারি কোম্পানির জোট এই প্রথম। ইন্ডিয়ান অয়েল তাদের রিটেল কেন্দ্রে রুফটপ সোলার এবং ইভি চার্জিং স্টেশন করবে। তাদের পরিকল্পনা হল, নতুন প্রকল্পের শতকরা ৮৫ ভাগ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে আসবে। ২০১৯ সালে তারা এ-বাবদ প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেছে।

    এনটিপিসির ৭০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন-ক্ষমতার প্রায় পুরোটাই তাপবিদ্যুৎ; সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা খুবই কম, এক হাজার মেগাওয়াটের কিছু বেশি। সাম্প্রতিককালে তারা নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের জন্য ডাকা টেন্ডারে অংশ নিচ্ছে। এইভাবে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১-এর মার্চ পর্যন্ত চার হাজার তিনশ’ মেগাওয়াট উৎপাদনের বরাত পেয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের ৬০ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে।
    ভারতীয় রেলওয়ে আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে মোট ৪০ গিগাওয়াট নবায়নযোগ্য শক্তির জন্য টেন্ডার ডাকবে। নিজেদের ব্যবহৃত বিদ্যুতের সবটাই নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে উৎপাদন করে তারা শক্তি ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরশীল হতে চায়।

    শক্তি সাশ্রয়ী এলইডি বালব-এর ব্যাপক ব্যবহারের জন্য ভারতের কার্বন নিঃসরণ কমেছে বার্ষিক ৩.৮ কোটি টন। গাড়ির নিঃসরণ কমাতে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে দেশে ভারত-৬ নীতি চালু হয়েছে। নবায়নযোগ্য শক্তির উৎপাদন ক্ষমতা হয়েছে দেশের ৩৯%। বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রাকৃতিক গ্যাসের অংশ ৬% থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৫% করার পরিকল্পনা রয়েছে। জ্বালানি হিসেবে গ্যাসের ব্যবহার অনেক বেড়েছে। তবে ইদানীং প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বেড়ে এমন মহার্ঘ হয়েছে, যে দেশের গরিব মানুষ রান্নার জন্য ফের জীবাশ্ম-জ্বালানি – কয়লা, ঘুঁটে, কাঠ ও গাছের শুকনো ডালপালার ব্যাপক ব্যবহার শুরু করেছে।

    এই পরিস্থিতিতে চিনের উচিত ছিল, আমেরিকা ও ভারতের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে ২০৩০ সালের মধ্যে কয়লা পুড়িয়ে নিঃসরণ বন্ধ করা। গ্লাসগোয় কয়লা ফেজ আউট করা হবে সিদ্ধান্ত হলে সবচেয়ে বেশি চাপে পড়ত চিন, ভারত বা আমেরিকা নয়। সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার পরও তা হত প্রাথমিক পদক্ষেপ। মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের মাত্র কিছুটা সমাধান হত। অবস্থা এতটাই করুণ।

    (শেষ)




    সূত্রনির্দেশ:


    1. World Adds Record Renewable Capacity in 2020, Press Release, 5 April,
    2. Electricity Production Data
    3. World Energy Outlook 2021, Executive Summary
    4. 28% Of U.S. Coal Power Plants Plan To Retire By 2035, U.S. Energy Information Administration, (https://cleantechnica.com/author/useia/) 18 Dec 2021
    5. India Infrahub, India Achieves 40% Non-Fossil Based Installed Power Capacity With Over 150 GW Renewable Energy, Dec 5, 2021
    6. Power discoms' outstanding dues to gencos rise 1.3% to Rs 1,13,227 cr, PTI December 06, 2021,
    7. Reuters Staff, China seen using 6-7% more power in 2021, adding 140 GW renewable capacity, February 2, 2021,
    8. China Thermal Power Plant Market - Growth, Trends, Covid-19 Impact, And Forecasts (2022 - 2027)


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৪ জানুয়ারি ২০২২ | ১৬২২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অনিন্দিতা | ১৫ জানুয়ারি ২০২২ ১২:২৭502677
  • ভারত নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন ও ব্যবহারে ভাল ফল দেখাচ্ছে এবং ভারতের গ্লাসগোতে ফেজ আউট মেনে নেওয়া উচিত ছিল, এটাই কি লেখকের বক্তব্য? ভাল বুঝতে পারলাম না। 
    নীচে একটা লিংক দিলাম। কিছু নৈরাশ্যবাদী ও সন্দিগ্ধ মতামত রইল। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন