আঁকড়ে রেখেছে তোমাকে কারা,
মাৎসর্য , মোহ, মদ, লোভ, ক্রোধ, কাম,
হেঁটমুণ্ড ঊর্ধপদ শূন্য পরিণাম,
বিন্দু থেকে জন্মগ্রহণ,
সিন্ধু খুঁজে মরা,
মাটির গহন ক্রোড়ে অন্তে উপচে পড়া,
যা কিছু বাঁধন যাপন, ভেল্কিবাজি সার,
আগেও সুড়ঙ্গ ছিল,
শেষেও আঁধার।।
এ বিরাট দুনিয়া দুইপায়ে হেঁটে চলে,
১.ক্ষমতা ২.যৌনতা।
আমরা স্বীকার করি বা না করি এই দুই পায়ের উপরেই ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের সৃষ্টি থেকে এতদূর এগিয়ে আসার সম্পূর্ণ ইতিহাস।
যুগে যুগে দেশে দেশে ঘুরে ফিরে আসে এরই বিবিধ রূপ বিবিধ বিবর্তনজনিত আঙ্গিকে। কখনো ক্ষমতার দাবীতে হাসিল করা যৌনতা, কখনো যৌনতার দাবীতে হাসিল করা ক্ষমতা।।
পুরাণ ও মহাকাব্যের এপিঠ ওপিঠ ঘুরিয়ে তারই কাহিনীমালা দেশে দেশে যুগে যুগে....
যমুনায় নৌকা বাইছে এক কৃষ্ণবর্ণা অনিন্দ্যসুন্দরী কিশোরী। সবাই জানে সে জেলের মেয়ে, গায়ে বিতিকিচ্ছিরি আঁশটে মেছোগন্ধ। কিন্তু গায়ে এমন গন্ধ তো তাতে কী, তার টসটসে যৌবন চাখতে তো সব্বাই চায়, তা শরীরের গরম চাগাড় দিলে ওসব গন্ধবাস যে চুলোয় যায় তা জানে হর্মোন জাদুকর।।
কত্ত ঋষি মুনি দেখলাম গো, মুখে ইষ্টনাম, আড়ালে চাগাড়ে কাম।।
সত্যবতী খিলখিল করে হাসে। তা হ্যাঁ হে বাপু মুনিবর পরাশর, নায়ে চেপেছো বেশ করেছো, কড়ি ফ্যালো, পাড়ে ভিড়িয়ে দিই,ব্যস অঙ্ক শেষ, তা, ভারি শশ্রুগুম্ফের ফাঁক ফোক দিয়ে আমার বুকের দিকে অমন টুকুস টুকুস তাকাও কেন বাপু, কি চাই, খোলসা করে বলো দেখি গুরুঠাকুর।।
আহা গো! শুধু জ্ঞানপিপাসা মেটালেই চলবে শরীরকেও মাঝে মাঝে জল বাতাসা দিতে লাগে নাকি, তবে কিনা সংসার ধম্মের অনর্থক ঝামেলা, বালবাচ্চা পাল পোষ সে কী আর সোজা কাজ, ওসব রাজরাজড়া, ছাপোষা গেরস্তের কাজ, তুমি ঋষি মুনি, জ্ঞানগরিমা বিলিয়ে বেড়াও, সমাজ তোমায় মাথায় বসিয়ে রাখে, তোমার কী আর ওসব তুচ্ছ কাজের সময় আছে হাতে, তার চেয়ে চরৈবেতি চরৈবেতি যৌনতৃপ্তি ইতি উতি। ক্ষিদে পেলে জেলেনি আর মালিনী, যুতসই খাবার হলেই হলো।।
এতো আর প্রেম পিরিতি নয় যে মন নিয়ে অনর্থক নাড়াচাড়া হবে, মনে করে তার ভূতের বোঝা বয়ে বেড়াতে হবে, সে ভারি বিপদজনক জিনিস, তাতে শরীরের হিসেব নিকেশ এর চেয়ে মনের সুদ কষাকষি বেশি, ঋণ শুধতে শুধতেই দিনকাবার।।
তার চেয়ে এই ভালো,
ফ্যালো বীর্য, দায় শেষ,
না বয় মন, না থাকে রেশ,
কার পেটেতে কার ছা ভাসে,
গর্ভকথা সার, শিশ্ন জানে যোনির ক্ষিধে বাকি অন্ধকার।।
(সামনের পর্বে পরাশরমুনি-সত্যবতী- ব্যাসজন্মকথা)
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।